একঃ
- এখন থেকে আমরা 'তুমি' করে বলা প্রাকটিস করব।
তুই খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে কথাটা বলার চেষ্টা করলি। অথচ আমি তোর অদ্ভুত সুন্দর মুখটাতে আদর কিংবা মায়া ছাড়া কিছুই দেখলাম না। তাই হেসে বললাম।
- কেন? হঠাৎ।
- বিয়ের পর যদি জামাই বউকে তুই তুই করে বলে- লোকে কী বলবে বল্ তো?
- আমরা কী জামাই বউ হয়ে গেছি না কি?
- ফাইজলামি করলে মাইর খাবি কিন্তু!
তোর মুখটায় কয়েকটা লজ্জার রেখা দেখা গেল।
আদর মাখা মুখে- লজ্জার ছায়া মনে হয় অনেক বেশি সুন্দর লাগে। তাই না?
দুইঃ
টাইগার পাসের পাহাড়টা। নামটা কী যেন?
ইদানীং স্মৃতিশক্তিটা কেমন প্রতারণা শুরু করেছে। কী বিচ্ছিরি অবস্থা। যখন প্রয়োজন হবে না- তখন দেখা যাবে পৃথিবীর সব পাহাড়কে সে নামে ডাকা শুরু করেছি। আর এখন- কিছুতেই নামটা মনে পড়ছে না।
যাক গে! পাহাড়টায় আমি আর তুই বসে আছি। আমার হাতে আটশ টাকা দামের একটা বাংলাদেশি গীটার। হাজারবার গাওয়া গানটা আবার শুরু করলাম। শীতের সকাল গাছের পাতা হয়তবা ঝরে যাবে- থাকব হয়ে আমি নীলাকাশ। তুই কানে আঙুল দিলি।
- এটা কোন গান হল?
- আমার ভাল্লাগে। তোর শুনতে ইচ্ছে না করলে কানে তুলা দিয়ে রাখ্।
- উঁ... পাহাড়ের মাঝখানে আমাকে তুলা কে দিবে?
রাত দেড়টায় বাসায় ফোন করলি।
- তোর ঐ পচা গানটা গা তো?
- কোন পচা গান?
- ঢং করিস না। তাড়াতাড়ি গা।
- তাহলে পচা বলবি না আর?
- পচাই তো। ঘুম আসছে না বলে শুনতে চাচ্ছি। পচা জিনিস শুনলে আমার ঘুম ভালো হয়। হি হি হি...
হঠাৎ কোত্থেকে আম্মু বলে ওঠে।
- এত রাতে ফোন করেছে কে রে?
আমি আম্মুকে কোন একটা মিথ্যে কথা বলে দিই।
এমনই একটা মুখের দিকে চেয়ে কেউ কেউ বিশ্ব সংসার তছনছ করে ১০৮ টি নীলপদ্ম নিয়ে আসতে পারে- আমি না হয় মিথ্যা কথা বললাম।
তিনঃ
আইডিয়াটা তোর। এরকম অদ্ভুত আইডিয়া তোর মাথা থেকেই বের হওয়া সম্ভব। সদ্য- সাততলা হওয়া 'ভি আই পি টাওয়ার'এর রিক্সা দাঁড় করালাম আমরা। লজ্জায় আমার দিশেহারা অবস্থা। তোকে বললাম।
- তুই প্রথমে বল।
- না। আমি না- তুই বল।
- আমি বলতে পারব না। তুই বললে বল- নইলে চলে যাই।
লজ্জায় তোর মুখ লাল হয়ে উঠল। এক হাত আমার হাতে রেখে অন্যহাত ভি আই পি টাওয়ারের দিকে দিয়ে - ফিসফিসিয়ে বললি।
- আমি তোকে ভালোবাসি।
এরপর আমিও বললাম।
চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধেক রিক্সায় ঘুরলাম আমরা। প্রত্যেকটা উঁচু বিল্ডিংয়ের সামনে রিক্সা দাঁড় করিয়ে দুজন দুজনকে খুব মিথ্যে কথাটা বললাম।
ভাগ্যিস - উঁচু বিল্ডিং চট্টগ্রাম শহরে তখন খুব বেশি ছিল না। নইলে সেই মিথ্যে কথাটা কত হাজার বার বলতে হত তোকে- ভেবে দেখেছিস!
[[........................................................................
এই সময়কার কথাগুলো বলতে ইচ্ছে করছে না..............................................]
তিন বছর পরঃ
দুই বছর পর তার সাথে আমার দেখা হল। বসুন্ধরা সিটি'র সামনে। সে অনেক কান্নাকাটি করল। বলল আর কখনো ওরকম করবে না। আমি তার দিকে ভালো করে তাকালাম না। কেন জানি তাকাতে ইচ্ছে করছিল না।
যে মুখে অসংখ্য বার শুধু আদরে হাত রেখেছিলাম- সে মুখটায় শুধু একটা চড় দিলাম আমি। সে কিছু বলল না। মাথা নীচু করে কাঁদতে লাগল শুধু। আমি আর কোন কথা না বলে বাসার দিকে রওনা দিলাম। বাসায় গিয়ে কার্ড খেলব। তারপর পড়তে বসব। সামনেই ইউনিভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা। কিছুই পড়া হয় নি।
----------------------------------------------------------------------------
এরপর বহুদিন আমার হাত অবশ হয়েছিল।
হয়ত এখনো রয়েছে।
নাহলে এসব কথা লিখতে গিয়ে সবকিছু এমন আঁকাবাঁকা হয়ে যায় কেন?
মন্তব্য
ভালই তো প্রেম চলছিল। কি হোল হঠাত্? চড় মারার মত এত সাংঘাতিক কি হয়েছিল? ভাল কথা- আমার এক বন্ধু একবার একটি মেয়েকে চড় মেরেছিল। সেই চড় খেয়ে মেয়েটি তার প্রেমে পড়ে যায়। আশাকরি তেমন কোন কিছু একটা হোক।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
চড় মারার ঘটনাটা ২০০৫ এর।
এখন ২০০৮...
সুতরাং বুঝতেই পারছেন।
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
পাহাড়ে উঠে প্রেমিকার সাথে গীটার নিয়ে গান-- নিশ্চই খুব মজা?
হায় রে মজা...
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
দোস্ত আবেগে ইমোশনাল হয়ে গেলাম। আচ্ছা এইটা কার কথা কইতাছস?
----------------------------------
এস খেলি নতুন এক খেলা
দু' দলের হেরে যাবার প্রতিযোগিতা...
হায়রে আবেগ...
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
বসুন্ধরা সিটির সামনে চড় দিলেন? বাব্বা সাহস আছে আপনার !
কি মাঝি? ডরাইলা?
হায়রে সাহস...
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
- দেরীতে হইলেও লাইনে আসছেন, তার লাইগ্যা শুভকামনা।
লাইন বাঁকা ত্যাঁড়া হইলেও সমস্যা নাই, পড়া গেছে। আর মনের ভিতরের লাইন ত্যাঁড়া হইয়া থাকলে একটা গানের কথা শুনেন।
"আমার লাইন হইয়া যায় আঁকাবাঁকা, ভালো না হাতের লেখা-
আসো যদি বাঁশবাগানে, আবার হইবে দেখা"
তবে আপনার ক্ষেত্রে আবার দেখা না হওয়াই ভালো। মাইয়া মানুষ থাইকা যতো দূরে থাকোন যায় ততোই বৃহষ্পতি। এইটা আমার না, জ্ঞানীজনের কথা!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ বস একেবারে হাঁচা কথা কইছেন। কথায় আছে না ... ভুইল্যা গেসি।
তয় মাঝে মইধ্যে একটু আধটু ইয়ে ভালোই লাগে।
কী কন?
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
- 'ইয়ে' তো সবসময়ই ভালো, তবে 'ঐটা' কোন সময়েই ভালো না!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বস...আপনের প্রত্যেকটা কথা হইল আমার জন্য একেকটা দার্শনিক বুলি
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
প্রথমে টাইটেল পড়ে ভাবছিলাম চুমু/কামড়। পড়ার পর দেখি চড়।
কি মাঝি? ডরাইলা?
হায় রে...
আমার মত পোড়াকপাইল্যা কয়ডা আছে?
এখন পর্যন্ত একবারও কামড়াইতে পারলাম না...
আপনে নিশ্চয় পোড়াকপাইল্যা না?
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
---------------------------------
এসো খেলি নতুন এক খেলা
দু'দলের হেরে যাবার প্রতিযোগিতা...
যে যায়, সে একেবারে যায়
ভালোবাসার বীজ ফেলে না কেউ
কখনো কোথাও।...
লেখাটা একটু এলোমেলো হলেও বেশ ভালো লাগলো।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
থ্যাংকু
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
হায়রে দুনিয়া...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
হায়রে মনুষ্যজাতি (ইস্পিশালি নারী জাতি- থুক্কু 'মেয়ে' জাতি)
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
দোস্ত, এই জীবনে খুব কম মানুষই পাওয়া যাইব যারা প্রথম বলেই ছক্কা পিটাইছে।
বেশির ভাগই আমার, তোর মত।প্রথম বলের লাইন লেংথ ঠিক মত বুঝতে পারেনা।
তোর এখন কেমন লাগে জানিনা।আসলে নিজের দুঃখ নিজে ছাড়া আর কেউ তার ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেনা।
তয় প্রার্থনা করি নেক্সট টাইম চড়ের বদলে যেন অরিজিনাল আদরের দাগ কাটতে পারিস
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
বুকের মধ্যে আস্ত একটা নদী নিয়ে ঘুরি
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
হাচা কথা কইছস
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
তোর এই ডায়লগ গুলো লিখে রাখব। এত সুন্দর কথাগুলো সবসময় দুঃখের হয় কেন?
---------------
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা
কথাগুলা সুন্দর হতে পারে...
কিন্তু কিছু মানুষের বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
প্রথমে টাইটেল ভুল পড়েছিলাম: চাদরের দাগ ভেবেছি। তখন থেকেই মাথায় ধরছিলো না, চাদরে দাগ দুইবার কিভাবে সম্ভব, যদি পাত্রী একই হয়। গল্প পড়ে বুঝলাম, চাদর না আদর, আর চড়ই সমস্ত আদরের উৎস।
পাঠকের অভিযোগ, এত চমৎকার একটা গল্প আরেকটু গুছিয়ে লিখলে কি হতো?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
গল্প হইলে হয়ত কিছুটা গুছিয়ে লিখতে পারতাম।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
'গল্প নয় সত্যি' হলে আরো ডিটেলস জানতে চাই। মানে 'ঢেউ'টা কোনদিক দিয়ে এসে কোনদিক দিয়ে চলে গেছে, এইডা ক্লিয়ার হওয়া দরকার।
ভালোবাসা হলো নদীর ঢেউয়ের মত। এক ঢেউ চলে যাবে, নতুন আসা ঢেউয়ের অপেক্ষা করতে হবে। পুরোনো ঢেউটা যদি একটা চমৎকার গল্প দিয়ে যায়, তাহলে ওটাই পড়ে থাকবে লাভের খাতায়। এত ক্ষণস্থায়ী মানুষের জীবন! এটুকু লাভই যদি না হলো, .......
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
খুব সত্যি কয়েকটা কথা বললেন।
কিন্তু মন এত খারাপ হয়ে যায় কেন?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ভালোবাসা থেকে শেষ পর্যন্ত . . . . ! ঠিকাছে, ধরে নিই- ওটা আদরেরই দাগ।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
এতক্ষণ পর একজন পাইলাম...যে আসল ঘটনা ধরতে পারছে
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
নতুন মন্তব্য করুন