ইমনের ফুটবল

পরিবর্তনশীল এর ছবি
লিখেছেন পরিবর্তনশীল (তারিখ: বুধ, ২৬/০৩/২০০৮ - ১২:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

''my last salutations are to them...
who knew me imperfect and loved me...''

ঐ দলের গোলকীপার রাজা বেশ একটা ভাব নিয়ে গোল-বার... মানে দুই পাশে দুই স্যাণ্ডল রাখা সীমানার সামনে দাঁড়িয়েছে। আমি দুরু দুরু বুকে পেনাল্টি নিতে বলটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। পেনাল্টি কিক নিতে আমার সবসময়ই ভয় লাগে। তার ওপর আজ মাঠের বাইরে দিশা আর কয়েকটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যদি মিস্‌ করি তাহলে লজ্জায় মরে যাওয়া ছাড়া- উপায় থাকবে না। অন্য মেয়েগুলোকে নিয়ে আমার কোন মাথা-ব্যথা নেই। যত সমস্যা ঐ দিশাটাকে নিয়ে। ওর ওপর প্রচণ্ড রাগ হল। কী দরকার ছিল...এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের খেলা দেখার! টুর্ণামেন্ট-ফুর্নামেন্ট হলে না হয় একটা কথা ছিল। মেয়েটা এখনো কী জানে না ... সে আশেপাশে থাকলে আমার পায়ের নীচের মাঠ কাঁপতে থাকে!

আমি স্বাভাবিকভাবেই পেনাল্টি মিস করলাম। হাসান বলে উঠল...
- গাধা... যেটা পারিস না ওইটা করতে যাস কেন?
আমি আড় চোখে দিশার দিকে তাকালাম। ইস! এমন একটা দিনে কিনা পেনাল্টিটা মিস হতে হল!

খেলা শেষে আমি দিশাকে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম...
- কেমন আছিস?
- হুঁ। ভালো... তোর কি অবস্থা...গাধা?
- এই তো!
কথাটা বলে আমি দিশার দিকে বোকার মত হা করে তাকিয়ে থাকলাম...
- তুই তো ভালোই খেলিস। পেনাল্টি মিস করলি কেন?...গাধা
- এমনি!
দিশা হি হি করে হেসে উঠল...
- এমনি এমনি কি কেউ পেনাল্টি মিস করে? আচ্ছা যাই এখন... মা বকবে। ভালো থাকিস, গাধা।
মাগরিবের আযান শুরু হয়েছে। আমার মনটা খারাপ হয়ে উঠল। দিশা আমাকে গাধা বলে ডাকে কেন??

দেশের অবস্থা নাকি ভালো না। আব্বুরা বসে বসে এসব কথা বলে। আর সারাদিন রেডিওতে খবর শোনে। পাকিস্তানিরা আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। আব্বু বলে দিয়েছে...যেন বাড়ি থেকে বের না হই।
স্কুলও বন্ধ। স্কুল যখন খোলা ছিল..যেতে ইচ্ছে হত না। আর এখন ইমরান...আতিক ওদেরকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে।
হোমওয়ার্ক করতে হয় না... পরীক্ষার কথা চিন্তা করে ভয় পেতে হয় না... আমার অসহ্য লাগে। আব্বু বাসায় না থাকলেই আমি বেরিয়ে যাই। দিশাদের বাসার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকি।

সন্ধ্যে সাতটার দিকে হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে বাড়িতে ঢুকল। আম্মুকে ডেকে বলল...
- শাহানা...এখানে আর থাকা যাবে না।
আম্মু আব্বুর অবস্থা দেখে ভয় পেল...
- কী হয়েছে তোমার? শান্ত হয়ে বস। এক গ্লাস লেবুর শরবত দেই?
- আরে রাখ তোমার লেবুর শরবত। মিলিটারি আসছে।
আম্মু এমনভাবে আমাকে কাছে টেনে নিল...মিলিটারি বুঝি আমাদের বাসায় চলে এসেছে। ঠিক তখন আমার একটা কথা মনে হল... আমার ফুটবলটা মাঠে ফেলে এসেছি...
আব্বু বলে চলেছে...
- আর থাকা যাবে না...জিনিসপত্র গুছায়ে নাও...কালই চলে যাব।
আব্বু চিরকালই ভীতু প্রকৃতির। অল্পতেই অস্থির হয়ে যায়। কিন্তু ঠিক এখন- আম্মুর গায়ের ঘ্রাণ নিতে নিতে আমার মনে হল... সামনে সত্যিই আমাদের ভয়ংকর বিপদ।

রাত দশটার দিকে আব্বুরা বাতি নিভিয়ে দিতেই আমি বাড়ি থেকে বের হলাম। ফুটবলটা নিয়ে আসতে হবে। আমাদের বাড়ি থেকে মাঠে যেতে পনের মিনিটের মত লাগে। আমি দৌড়াতে শুরু করলাম। মাঝপথে দিশাদের বাড়ি। যে দিশার সামনে আসলে আমার সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়- সেই দিশা।

দিশাদের বাড়ির সামনে এসে...আমি কান্নাকাটির আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমার বুকটা ধ্বক করে উঠল। দিশার কিছু হয়নি তো?

যে কাজটা করতে... কখনো সাহস পাই নি... এই অদ্ভুত রাতে সে কাজটাই আমি করে ফেললাম। দিশাদের বাড়িতে কড়া নাড়লাম... ভেতর থেকে কান্নাকাটির শব্দ আরো বেড়ে গেল।
- কে??...কে???
- চাচা... আমি ইমন।
- কোন ইমন??
আমি কিছু বলার আগেই দরজা খুলে গেল। দিশা দাঁড়িয়ে আছে। এই প্রথম আমি দিশার চোখে জল দেখলাম। জিজ্ঞেস করলাম...
- কী হয়েছে?
- ভাইয়া...বাড়ি আসে নি।
বলে দিশা ঝরঝর করে কেঁদে উঠল। রনি ভাইয়া বাড়ি আসে নি? আমি কি বলব বুঝতে পারলাম না। ভাইয়ের জন্য কান্না করা একটা মানুষকে স্বান্ত্বনার কোন কথা বলা যায় না...আর সে মানুষটা যদি হয় খুব প্রিয় কেউ...তাহলে অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকা ছাড়া- আর কী করার থাকে?
দিশার আব্বু আমাকে বললেন...
- খোকা... বাড়ি যাও।
আমার খুব ইচ্ছে হল...আজ রাতে দিশার পাশে বসে থাকতে। দিশার দিকে তাকিয়ে বললাম...
- দিশা... আমরা মনে হয় কাল চলে যাব...এখান থেকে।
দিশা কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে রইল। অদ্ভুতভাবে বলল...
- ভালো থাকিস।
আমি দৌড়ানো শুরু করলাম। দিশাকে আমি চোখের জল দেখাতে চাই না।
ফুটবলের কথা আমার মনে রইল না। আমি বাড়ির দিকে ছুটলাম। আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
বাড়ি ফিরেই আম্মুর চিৎকার শুনতে পেলাম... আমার ছেলে কই গেছে?...আমার ছেলে কই গেছে?...আব্বু আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল...আমাকে পাগলের মত মারতে শুরু করল।
- হারামজাদা কই গেছিলি? ...
আম্মু ছুটে আসল... ছেড়ে দাও বলছি... আমি নিচু কণ্ঠে বললাম... দিশার ভাইয়া চলে গেছে... দিশা খুব কাঁদছে...দিশা খুব কাঁদছে।

এর পরেরদিনই আমরা বাসে আমাদের গ্রামের বাড়ি...ভালুকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। মাঝপথে মিলিটারি চেকপোস্ট পড়েছিল। মিলিটারি এবং দুইটা বাংলায় কথা বলা লোক... আমার আব্বুকে আর কয়েকটা মানুষকে বাস থেকে নিয়ে গিয়েছিল। আব্বুর শেষ যে কথাটা আমার কানে এসেছিল সেটা হল...
- আমাকে মাফ করে দিস...বাপ... আমাকে মাফ করে দিস।

ভালুকায় মা'কে রেখে এক রাতের আঁধারে আমি যুদ্ধে গিয়েছিলাম।
আমাদের কমান্ডার মাহবুব ভাই আমাকে বাচ্চা বলে ডাকতেন। আমার মন খারাপ থাকলে...জড়িয়ে ধরে বলতেন...
- মা'র কথা মনে পড়ে?...বাচ্চা।
আমি জমির আইলের আড়ালে অস্ত্র হাতে লুকিয়ে থেকে... আমার মা'র কথা মনে করতাম...আমার বাবা'র কথা মনে করতাম...আমা'র দিশার কথা মনে করতাম... মাঠে ফেলে আসা আমার ফুটবলটার কথা মনে করতাম।

ঘাটাইলে এক যুদ্ধে লাল রক্ত নিয়ে আমার কোলে শুয়ে মাহবুব ভাই আমাকে বলেছিলেন...
- বাচ্চা...আমি জানি তুই একদিন অনেক বড় হবি। কথা দে... সেদিন তুই পৃথিবীর সব মানুষকে আমার গল্প বলবি!

মা কিংবা দিশার সাথে আমার আর কখনো দেখা হয় না। তবে যুদ্ধের পর দিশাদের বাসায় আমি আমার ফুটবলটা খুঁজে পাই। ভালোবাসার গান গেয়ে যাওয়া এক বিকেলে... ফুটবলটা আমি নদীতে ফেলে দিই এবং পাগলের মত কাঁদি।

এখনো আমি আমার মাকে খুঁজে বেড়াই... দিশাকে খুঁজে বেড়াই। হয়ত কোন একদিন কোন এক রাস্তায় দিশার সাথে আমার দেখা হবে। এতদিন পরেও দিশা আমাকে চিনতে পারবে... মা আমাকে চিনতে পারবে।

পাখির মত নরম কণ্ঠে দিশা আমাকে বলবে...
- ভালো আছিস? গাধা!

[[ মুক্তিযুদ্ধের পনের বছর পর আমার জন্ম। সেই অদ্ভুত মানুষগুলো কিংবা সেই অদ্ভুত দিনগুলোকে ছুঁতে পারা আমার জন্য হয়ত অসম্ভব। কিন্তু আমার কল্পনা করতে ভালো লাগে... সেই কল্পনায় যদি কিছু ত্রুটি থেকে যায়... আশা করি সবাই সেটা ক্ষমার খাতায় লিখে রাখবেন। সবার কাছ থেকে ক্ষমা পেতে পেতে স্বভাবটাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে ইদানীং...]]


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।মনে হলো মুক্তিযুদ্ধ অনেক কাছ থেকে দেখে লিখেছেন।আবারও চোখের কোনায় পানি জমে গেছে।
-নিরিবিলি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

বলে লাভ নাই...
আসলে এই গল্পটা কিছুই হয় নাই।
আমি জানি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

উদ্দেশ্যহীন এর ছবি

এতো সুন্দর লেখেন কি করে!
গাধাটার জন্য রইলো এক ফোঁটা চোখের জল।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

গাধাটার কাছে পৌঁছে দিলাম
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

রায়হান আবীর এর ছবি

পড়লাম...ইমনের আবেগটা উঠে এসেছে দারুন ভাবে...
(বিপ্লব) দাগাইলাম।।
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কী দিয়া দাগাইলি???
চক নাকি পার্মানেন্ট মার্কার দিয়া?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অনুভূতিগুলো জীবন্ত, সবসময়। দরজা থেকে দিশা'র কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসা, বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া বাবা'র চোখে রাখা চোখ, রাতের আঁধারে মায়ের পা ছুঁয়ে যুদ্ধে চলে যাওয়া- এই অনুভূতিগুলো চিরন্তন।

দিশা থেকে আর কখনোই শোনা হবে না "ভালো থাকিস গাধা", বাবা হোমওয়ার্কের জন্য পেটাবে না, মা খাওয়া নিয়ে ঘ্যানর ঘ্যানর করবে না আর- একেকটা কষ্টের অদ্ভুত মিশেলে বাস্তবতার স্যুপ। বুকের মধ্যে কয়েকটনী সেই কষ্ট চেপে ধরেও ঢকঢক করে গিলে যেতে হয়। সময়ের প্রয়োজন যে!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

পরিবর্তনশীল এর ছবি

অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যের গুরু (বিপ্লব) দিলাম
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

তারেক এর ছবি

যথারীতি ভালো লাগল। ব্রাভো!
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ধন্যবাদ ফিঙে ভাই!!!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অমিত আহমেদ এর ছবি

লেখাটা ভালো লেগেছে।
মুক্তিযুদ্ধ এত বড় একটা ব্যাপার যে গতকালকের আগ পর্যন্ত আমি একাত্তর নিয়ে লিখতে সাহস পাইনি। মনে হয়েছে যদি বলতে না পারি, যদি ভুল করে ফেলি। যে কাজটা করতে আমার এতদিন লেগেছে সে কাজটা তুমি নিমিষে করে ফেলেছো।
পরিবর্তনশীলকে স্যালুট!


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভাইয়া...লেখাটা দেওয়ার আগ পর্যন্ত আমার ভয় ভয় লাগছিল।
মনে হচ্ছিল...মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটা মানুষের আকাশ ছোঁয়ার অপচেষ্টা।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে... সেই ভয় কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

শিক্ষানবিস এর ছবি

গল্পটা খুবই ভালো হয়েছে। আবার প্রমাণিত হল যে, মারা গেলেও ক্ষতি নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশই হয়তো এতোদিনে মারা গেছেন, সেই সময়ের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা যাদের আছে তারাও একে একে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু এই গল্পটি পড়ে মনে হল, অসুবিধা নেই, আপনারা চলে গেলেও মানবতা আপনাদের ধরে রাখবে। এটাই বোধহয় মানব জীবনের অর্থ। একটা মানুষ বেঁচে থাকবে মানবতার মাঝে। স্বস্তি পেলাম, মুক্তিযুদ্ধ মানবতার মাঝে টিকে থাকবে।

পরিবর্তনশীলকে অনুরোধ করবো অনেক অনেক লিখতে। থিমের পাশাপাশি লেখাগুলোতে যেন এমনই আবেদন থাকে। পুরোদস্তুর গল্পকার হয়ে উঠছে পরিবর্তনশীল। তাকে যেকোন থিম, তথ্য, প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করবো।

কনফুসিয়াস এর ছবি

মহিব/পরিবর্তনশীলের অনেকগুলো গল্প ;-অনেকগুলোই, এত দ্রুত আর কোন সচলের গল্প আসে না এখানে, এরকম একজন লেখক পাওয়াটা বেশ ভাল খবর- সেই গল্পগুলো পর পর পড়ার পড়ে মিশ্র অনুভুতি হলো।
যে কোন বিষয় নিয়ে গল্প ভাবা, এবং তারপরে সেটা চমৎকার করে লিখে ফেলাটা বিরাট গুণ, আমার চেনাজানা আরেকজন প্রিয় লেখকের মাঝে এই গুণ প্রবল- আনোয়ার সাদাত শিমুল- নানা কারণেই তিনি আমার ঈর্ষার পাত্র।
মহিবের মধ্যেও প্রায় একই বৈশিষ্ট্য রয়েছে, টের পেয়েছি, তবে সেটা শেষমেষ গোছানো হয়ে উঠছে না।
মহিবের বর্ণনায় এক রকম সারল্য আছে, তবে ভাষার সারল্যর কিছু পর্যায় বা ধাপ আছে বলে মনে করি। কোন কোন লেখায় সরলতাটা আসে খুব আত্মবিশ্বাসী হয়ে, কোথাও সেটা আসে নড়বড়ে ভঙ্গিতে। মহিবের উচিৎ হবে তার নিজের ধরণটিকে খুঁজে বের করে তাঁর প্রতি মনোযোগী হওয়া।
প্রায় সব লেখাতেই একটা তাড়াহুড়া টের পেয়েছি, শেষ করবার তাড়া, মাথায় যে গল্পটা এসেছে সেটা বলে ফেলবার তাড়া। কিন্তু গল্প শুধু একটা গল্পই নয়, মূল গল্পটা অস্থি হলে, তাতে হাড়-মাংস যোগ করা যায়, চোখ নাক মুখ বসিয়ে একটা সুন্দর রূপ দেয়া যায়। তাই বলবো, বাপু হে, রয়েসয়ে, রয়েসয়ে।
আমি যেটা বুঝলাম, মহিবের প্লটের কোন অভাব নেই বা নিকট ভবিষ্যতে হবেও না। এক্ষেত্রে আমার একটাই পরামর্শ হবে, প্লট মাথায় আসা মাত্রই সেটা চট করে গল্প না বানিয়ে, প্লটটাকে কয়েকদিন রোদে ফেলে রাখা, খানিক নাড়াচাড়া করা, তারপরে ভালো একটা প্রস্তুতি নিয়ে গল্পটা শেষ করা। যেন পড়বার পরে আমাদের মনে এই দুঃখবোধ না জাগে, আহা রে, আরেকটু মনোযোগ দিলেই এই চমৎকার 'কাহিনি'টা সত্যি কি সুন্দর একটা 'গল্প' হতে পারতো!
---
মহিবের জন্যে চিরকালীন শুভকামনা।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কনফুসিয়াস ভাই আর শিক্ষানবিস,
দুজনের মন্তব্যই আমার হৃদয়ের মাঝে গেঁথে গেল।।
আমারও এই জিনিসটাই মনে হয়...
খুব বেশি চঞ্চল আমি।
আশা করি একদিন আপনাদের আশার প্রতিদান দিতে পারব। আরো খোলামেলা মন্তব্য চাই শুধু...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পরিবর্তনশীলের লেখা আমার ভালো লাগে, তাই আগ্রহ নিয়ে পড়ি। আগের এক পোস্টে (নষ্ট- মেয়ে) উপদেশটাইপ কমেন্টও হয়তো করে ফেলেছিলাম।
সেটাই বলি - ভালো প্লট নষ্ট হয়ে যায়। কাহিনীটা গল্প হয় না। উপরে কনফুসিয়াস বলেছেন তাড়াহুড়ার কারণে এমন হচ্ছে। আমিও বলবো - তাই।

এই গল্পটির কথা বলি - খুব কোমল কিছু মানুষের সম্মিলন। ভালো লেগেছে।

পরিবর্তনশীলকে বলি, এই যে কনফুসিয়াস - উনাকে আমি সব্যসাচী লেখক, আগামীর সৈয়দ হক বলেছিলাম, বছর খানেক আগে; অন্য কোথাও। গদ্য পদ্য নিবন্ধে দারুন পারদর্শী। সমালোচক হিসাবেও দূর্দান্ত।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভাইয়া...
প্লট যা নষ্ট হয়েছে তা থাক না।
তবে আগামীতে আমার কোন গল্প পড়ে আপনাদের দুঃখবোধ হবে না...
এই কথা দিচ্ছি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

দ্রোহী এর ছবি

গল্প ভালো লেগেছে।

কনফু আর শিমুল যা বলেছে তা মেনে চলতে পারলে ভবিষ্যত ফকফকা।


কি মাঝি? ডরাইলা?

পরিবর্তনশীল এর ছবি

অবশ্যই মেনে চলব...
পরবর্তী লেখা থেকেই দেখবেন।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- দ্রোহী যা বলেছেন সেটা মনে রাখলে অন্তত লেখিয়ে জীবনে কখনো লোডশেডিং হবে না!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।