রাহাতের বুকের ভেতর প্রচণ্ড শব্দ হচ্ছে।
আর কয়েক মিনিট পরে সে তার জীবনের প্রথম চুরিটা করবে। সুতরাং বুকের মধ্যে শব্দ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এই মুহুর্তে রাহাত লাইব্রেরির এক পাশে চেয়ারে বসে চোখের সামনে ম্যাগাজিন ধরে আছে। লাইব্রেরিতে খুব একটা মানুষজন নেই। চুরি করাটা তেমন একটা সমস্যা হবে না- রাহাত নিজের মনকে আবার বলল।
লাইব্রেরির কেয়ার টেকার আজমল ভাই রেফারেন্স সেকশানের সামনে সোফায় বসে আছেন। ঠিক দুইটায় আজমল ভাই সিগারেট খাওয়ারব জন্য বের হবেন। তখনই রাহাত কাজটা করবে। সাহিত্য সেকশানের সবচেয়ে নতুন আকর্ষণ- রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড রচনাবলী।
এইবারের বইমেলায় রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড রচনাবলী প্রকাশিত হলো। রাহাত প্রায় প্রত্যেকদিন বাংলা একাডেমী'র স্টলে দাঁড়িয়ে বইটার দিকে তাকিয়ে থাকত। প্রথম কয়েকদিন একটু পরেই কিনবে- এমন একটা ভাব নিয়ে বইটা উলটে পালটে দেখত। প্রায় পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বইটা কেনার কথা সে চিন্তাও করতে পারে নি। বাবাকে লজ্জার মাথা খেয়ে বলে ফেলেছিল...
- বাবা, আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে পারবা?
রাহাত ভালো করেই জানে বাবাকে পাঁচ টাকাও হিসেব করে খরচ করতে হয়। বাবা রাহাতকে বলেছিলেন...
- কী করবি- এত টাকা দিয়ে?
রাহাত রবীন্দ্র রচনাবলীর কথা বলল। রাহাতের কথা শুনে বাবা একটু লজ্জা পেলেন যেন। সে রাতে বাবা রাহাতের জন্য রবীন্দ্রনাথের ''সেরা তিনটি উপন্যাস'' বইটি নিয়ে এসেছিলেন।
বইমেলার শেষের দিকে এসে রাহাত সিদ্ধান্ত নেয়- রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড রচনাবলী সে চুরি করবে। বইমেলা শেষে যখন পাবলিক লাইব্রেরিতে বইটা আসল- রাহাত ইস্যু করার চেষ্টা করল। আজমল ভাই বললেন- এই বই ইস্যু করা যাবে না।
আজমল ভাই বের হওয়ার সাথে সাথেই রাহাত সাহিত্য সেকশানের সামনে এসে দাঁড়াল। শেলফে আলোকিত হয়ে থাকা রবীন্দ্র রচনাবলীতে হাত দিতেই রাহাতের কাঁপতে শুরু করল। সে স্পষ্ট বুঝতে পারল এত বিশাল বই শার্টের ভেতরে করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। কাঁপা কাঁপা হাতেই রাহাত বই শার্টের মাঝখানে লুকিয়ে ফেলল। শার্টের মাঝখানে কিছু একটার উপস্থিতি পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু রাহাত তেমন একটা পাত্তা দিল না। সে সোজা লাইব্রেরির গেটের দিকে হাঁটা শুরু করল। রাহাতের মনে হচ্ছে- আশেপাশের সবাই সবকিছু বুঝতে পারছে। ভদ্রতা করে কিছু বলছে না।
গেট থেকে বাইরে পা রেখেছে। এমন সময় রাহাতের আত্না কেঁপে উঠল। আজমল ভাই দাঁড়িয়ে আছেন। রাহাতকে দেখে আজমল ভাই একটু হাসলেন...
- কী খবর?
রাহাত কথা বলতে পারছে না। তার গলা শুকিয়ে গেছে। মাথা নীচু করেই রাহাত দেখতে পেল- শার্টের ফাঁক দিয়ে রবীন্দ্র রচনাবলী উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আজমল ভাইয়ের দিকে রাহাত কেঁদে ফেলল...
- সরি, আজমল ভাই। সরি...
আজমল ভাই রাহাতের হাত থেকে বইটা নিয়ে কাঁধে হাত রাখলেন...
- আরে বোকা ছেলে, কান্না করে কেন?
রাহাত পাগলের মত কাঁদছে। লজ্জায় ওর মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আজমল ভাই রাহাতের কাঁধে হাতটা আরো শক্ত করে ধরলেন...
- আচ্ছা পাগল ছেলে তো! আমার দিকে তাকাও...
রাহাত ভেজা চোখে আজমল ভাইয়ের দিকে তাকাল।
- শোন। তোমার বয়েসী ছেলেরা তো এখন লাইব্রেরিতেই আসে না। বই চুরি তো দূরের কথা। আর চুরি করলেও কী নেয় জান? সিনেমা'র ম্যাগাজিন।
আজমল ভাই একটু থামেন। হাসেন একটু...
- বুঝলা- অনেক বছর ধরে লাইব্রেরির চাকরি করছি। এই লাইব্রেরির প্রত্যেকটা বই আমার কাছে সন্তানের মত। তুমি এই বইটা নিয়ে যাচ্ছিলা- তার মানে এই বইটাকে তুমি ভালোবাস। আমার যদি সামর্থ্য থাকত- আমি বইটা তোমাকে দিয়ে দিতাম।
এই ঘটনার পর প্রায় প্রত্যেকদিন রাহাত পাবলিক লাইব্রেরিতে যেত। আজমল ভাই রাহাতকে ভালো ভালো বই পড়তে দিতেন। এবং একদিন আজমল ভাই রাহাতকে রবীন্দ্র রচনাবলী উপহার দিলেন। বললেন...
- আজ থেকে তোমার আর লাইব্রেরিতে আসার দরকার নেই। যেদিন এই রচনাবলীর প্রত্যেকটা শব্দ তুমি মনের ভেতর নিতে পারবে- সেদিন আসবে... আমি থাকব।
এরপর রাহাতের সাথে আজমল ভাইয়ের আর কখনোই দেখা হয় নি। শুনতে পাওয়া যায়- মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে রাহাত তার মেয়ের হাতে রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড রচনাবলী তুলে দিয়েছিল। আরও শুনতে পাওয়া যায়- রাহাত তার মেয়েকে জীবনের এই গল্প শুনিয়ে বলেছিল...
- বুঝলি মা। রবীন্দ্রনাথের সব লেখা মনের ভেতরে গেঁথে ফেলব- এই সামর্থ্য আমার নেই। তোকে এই বইটা দিলাম। আমরা সবাই মিলে কিছুটা হলেও যদি তাঁর সৃষ্টি ধরে রাখি... পৃথিবীর আর অজানা থাকবেনা- সাহিত্যের আকাশে সবচে উজ্জ্বল নক্ষত্রের অধিকারী আমরাই,
[এই লেখার সবকিছুই কাল্পনিক]
মন্তব্য
শেষ টা কি অন্যরকম হতে পারতো?
ঠিক করে দিয়েছি আপু।
অনেক ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমার প্রায় দুই শ বই মারিং পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা
আমার একটা আজব টাইপের ওভার জ্যাকেট ছিল। বিশাল সাইজের
ওটা পরে কোমরের ফিতা টাইট করে বেঁধে ফেললে পেটে পিঠে দশ বারোটা বই ছেড়ে দিলেও টের পাওয়া যেত না
আমি শীতের আগে থেকে এবং শীত চলে যাবারও অনেক পর পর্যন্ত ওই জ্যাকেটটা কয়েক বছর নিয়মিত পরতাম
একবার সিলেট পাবলিক লাইব্রেরি থেকে প্লেটোর সংলাপ বইটা নিয়ে বের হয়ে আসছি এমন সময় পত্রিকা পড়া এক পাবলিক আমাকে ধরে ফেলল। লাইব্রেরিয়ানকে ডাক দিলো। লাইব্রেরিয়ান আসার পরে আমি বইটা দিয়ে দিলাম। কিন্তু তখনই সেই পত্রিপাড়া পাবলিক বলে উঠল- দেখে তো ভালো মানুষ মনে হয়। বই চুরি করেন কেন?
সাথে সাথে আমারও মাথা গেলো বিগড়ে। বললাম- কোনো ছোটলোক বই চুরি করে না। বই ভদ্রলোকরাই চুরি করে। দেন বইটা দেন
বলে লাইব্রেরিয়ানের হাত থেকে বইটা টেনে গটগট কের বের হয়ে চলে আসলাম
সেই বইটা এখনও আমার কাছে আছে
০২
তখন পড়ি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। কলেজে সাংস্কৃতিক সপ্তাহের আবৃত্তির জন্য ইংরেজি কবিতা খোঁজা হচ্ছে। আমি প্রস্তাব করলাম এ্যাডগার এলেন পোর ড্রিম উইদিন এর ড্রিম কবিতা
প্রিন্সিপাল হাসান ওয়ায়েজ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন- তোমার কাছে কবিতাটা আছে?
- আছে
_ কাল তুমি কবিতাটা আমাকে দেখাবে
পরদিন আমি বইটা নিয়ে স্যারের কাছে গেলাম। স্যার কবিতাটা পড়ে দপ্তরিকে ডাক দিলেন ফটোকপি করানোর জন্য। দপ্তরি আসতে আসতে তিনি বইটা উল্টাতে লাগলেন। দুয়েক পাতা উল্টাতেই দেখা গেলো ওটাতে সিলেট এমসি কলেজের সিল মারা। তিনি প্রথম পাতা ওল্টালেন। ওপরে আমার নাম লেখা এবং পাতার মধ্যে কলেজ লাইব্রেরির সিল মারা। তিনি চশমার উপর দিয়ে চোখ বের করে আমার দিকে তাকালেন। আমি বললাম- স্যার এগুলো লাইব্রেরিতে পড়ে পড়ে নষ্ট হয়। কেউ পড়ে না। এজন্য নিয়ে গেলাম
স্যার আমাকে বইটা ফেরত দিয়ে বললেন- তুমি নিজে কবিতাটার একটা ফটোকপি আমাকে দেবে। আর বইটা যেন কেউ না দেখে...
সেই বই থেকেই এ্যলেন পোর অনেকগুলো কবিতা অনুবাদ করেছিলাম আমি
বইটা এখনও আছে আমার কাছে
০৩
তখনও এ্যানসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা কাগজে ছাপা হতো। এক ভদ্রলোক পুরো সেট নিয়ে এলেন এক আঁতেল সচিবকে ঘুষ দেবার জন্য। আমাকে ডেকে নিয়ে খুব গর্ব করে দেখালেন পুরো সেট
সেটটা রাখা ছিল পল্টনে একটা বন্ধ দোকানে
আমি পরের দিন এক চাবি বানানোর লোককে সেখানে নিয়ে শাটারের তালা খুলে পুরো সেটটা ভ্যানে তুলে হাওয়া...
এখনও সেই সেটটার মালিক আমি। যদিও এখন আমি ব্রিটানিকার সিডি ইউজ করি
আমার বই চুরি'র অভিষেক হয় ক্লাস টুতে। প্রথম যে বইটা চুরি করেছিলাম... সেটা হলো সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের একটা বই। নাম খুব সম্ভবত ''ইতি তোমার মা''
এরপর কালে কালে কত বই যে চুরি করেছি তার কোন হিসেব নেই।
পৃথিবীতে দুইটা জিনিস চুরি করলে শান্তি পাওয়া যায়...
একটা হলো বই।
আরেকটা কোন বালিকা'র মন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
যাক! দুইটাতেই শান্তি পাইছি! হেহেহেহে।
ফেরারী ফেরদৌস
মজাক! ১ এবং ৩ ফাটাফাটি!
ফেরারী ফেরদৌস
লীলেনদা বইচোর না ডাকাত!!!
কি মাঝি? ডরাইলা?
দ্রোহীদা রেডি হন। লীলেন ভাইয়ের কাহিনী নিয়া একটা থ্রিলার মুভি বানাতে হবে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বি-সা-কে'র বই কে ফেরৎ দেয় নাই?@দ্রোহী
লীলেনের কিচ্ছা পড়ে আমারও বলার ইচ্ছে হচ্ছে। কারণ ওই স্বাদ আমিও পেয়েছি কিছু। তবে ওঁর শিষ্য কাতারের আমি। বড়োজোর ৫০টা মেরেছি।
জেলা ও উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিগুলো বই চুরির জন্য খুবই উৎকৃষ্ট জায়গা। কালেকশনও ভালো ওদের। যদিও লীলেনের মতো বইচোর বছরখানেক যে লাইব্রেরিতে চলাফেরা করবে, সে লাইব্রেরির কালেকশনে ফাল্গুনীর উপন্যাস ছাড়া কিছু বেঁচে যাবার কথা নয়।
আমি নিজের জেলা-উপজেলার লাইব্রেরি ছাড়া মেরেছি ঢাকা ও খুলনার পাবলিক লাইব্রেরি থেকে। আমার কায়দাও ছিল লীলেনের মতো। ২০০০ সালের পরে আর বই মারি নি।
আমি কখনো ধরা পড়িনি, তবে দুয়েকবার সন্দেহের চোখ পড়েছে আমার উপর, কিন্তু অভিব্যক্তি ছিল খাঁটি পাঠকের, তাই হয়ত বেঁচে গেছি।
আমার নিজের লাইব্রেরি থেকে বই মারিংও কম হয় নি। এটার পন্থা অবশ্য অন্য। পড়বার জন্য ধারে নিল, আর দিল না তো দিলই না। এখন আর বই ধার দেই না। একেবারেই না।
বলি যে, কিনবার টাকা না থাকলে নিয়ে যাও, কিন্তু মাগার বই দিব না।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
খাইছে! সবার বই চুরি'র কাহিনী নিয়ে একটা বই প্রকাশ করে ফেলা যাবে। আর যে বইটা আমি সবার আগে চুরি করব।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ঞ্ঝ্যোঁ
এটার মানে হইলো জট্টিল
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ঞগ্ণটঁ।
এইটার মানে হলো ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ঞ্ঝৌঁ @ সন্ন্যাসী'জি
এসএসসি পাস করার পর থেকে বই চুরি করা হয় নাই। কিছুদিন আগে পাবলিক লাইব্রেরীতে একটা বই পড়ে খুব ইচ্ছা হচ্ছিল বইটা নিয়ে দৌড় দেয়ার। পরে লাইব্রেরী বাইরের সিড়িটার কথা চিন্তা করে আর সাহস পেলাম না
তুই চুরি করতে পারস এইটা কারো মাথায় আসবে না... সো, দৌড় লাগাইতে পারতিস...
@অয়ন ভাই, দৌড় লাগাইলে কিন্তু সব শেষ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
লেখা এবং সবার মন্তব্য তুখোড় হইছে।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
আপনেও আপনার কাহিনী ছাড়েন। বই চুরি করেন নাই কখনো?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
কইতাছি, কইতাছি...
একবার বিসাকের কাজে রংপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে এক ভদ্রলোক (প্রকাশক) বড় ২ কার্টন বই (সংখ্যায় দু'শরও বেশি) দিয়ে শ্যামলীতে এক বাসায় পৌঁছে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। 'এতো ভারি মুশকিল দেখছি' - মুখের ভাবখানা এমন রাখলেও ভেতরে ভেতরে আনন্দে আটখানা হয়ে গেলাম। ভদ্রলোককে কৃতজ্ঞতার নাগপাশে দ্রুত আবদ্ধ করতে নির্ধারিত তারিখের একদিন আগেই বইয়ের কার্টন দুটো নিয়ে রওয়ানা দিলাম রংপুর থেকে। তারপর...
হা হা হা... হো হো হো ... ইয়াহু... হুররে..
পরের দিনই কাতর স্বরে, বেদনাময় শব্দমালায় তাকে সব ঘটনা খুলে বললাম - কিভারে ফেরীঘাটে লঞ্চ পারাপারের সময় কার্টন দুটো নদীতে পরে গেলো... ইত্যাদি ইত্যাদি।
কার্টনে প্রায় সব বইয়েরই একাধিক কপি ছিলো ... সব বইয়ের ১ কপি করে রেখে বাকি বইগুলো নীলক্ষেত নিয়ে পিছ দরে বেচে দিয়েছিলাম এবং আরও অনেক পছন্দের পুরনো বই কিনে নিয়ে অপার স্বর্গীয় আনন্দে ঘরে ফিরেছিলাম।
কপাল ভালো - ভদ্রলোক নিতান্তই ভদ্রলোক ছিলেন - ক্ষতিপূরণ দাবি করেন নাই।
এটাই সবচেয়ে বড় দাও মারার ঘটনা। এ ছাড়াও টুকিটাকি আরও অসংখ্য আছে। লীলেন ভাই আমার থেকে খুব বেশী এগিয়ে আছেন বলে মনেহয় না। পিছিয়েও থাকতে পারেন।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
মজা পাইলাম...
লীলেন ভাইরে গুরু না মাইনা কোনো উপায় দেখতেসি না...
আমি বই চুরি করসি শুধু ইন্টারে পড়ার সময়... আমাদের লাইব্রেরী স্যার আমারে ভারী পসন্দ করতেন... সময় সুযোগ পাইলেই চাপাবাজি শুরু.. বেশিরভাগ সময়েই আমার শার্টের ভিতরে শেক্সপীয়ারের কোনো একটা প্লে বা বিশ শতকের সুররিয়ালিসমের কোনো ম্যানিফেস্টো... ঐ বই লইয়াই স্যারের লগে আলাপ চালায় যাইতাম... এইভাবে আমি শেক্সপীয়ারের সবগুলা প্লে যোগাড় করে ফেলসিলাম...
দু'বছরে আমি লাইব্রেরীর আলমারীর পিছনে থাকা যত ভাল বই পচতেসিল, প্রায় সবই ফুটাই দিতে সক্ষম হই... এর মধ্যে লিটারেচার ফর রাইটিং নামের বইটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সংগ্রহ। গত পাঁচ শতকের আংরেজী সাহিত্যের ক্রিটিসিজম এর মেথডলজিক্যাল উপায়ে আমার হাতেখড়ি এই বইয়ে। এখনো আসে।
ইন্টারে কোনো এক বাংলা সেকেন্ড পেপার পরীক্ষায় লাইব্রেরী উন্নয়নের জন্যে একটা দরখাস্ত লিখতে বলা হয়। আমার পুরা ক্লাস-এর কেউই এইটা লিখতে ভুলে নাই যে সম্প্রতি লাইব্রেরী থেকে গুরুত্বপূর্ণ বই খোয়া যাচ্ছে এবং এই ব্যাপারে ব্যাবস্থা নিতে প্রত্যেকেই সুপারিশ করে। কেউ আমার নাম উল্লেখ করে নাই যদিও...
আহা!সেই বই চুরির দিনগুলি! ক্যাডেট কলেজের লাইব্রেরি থেকে কত হাজার বার বই ফুটাইছি! তারপর তিন গোয়েন্দার প্রায় সব বই-ই পড়ছি আমাদের পাড়ার বুক প্লাস লাইব্রেরি থেকে নিয়া। টাকা ছাড়া নিয়া।
ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে অপারেশন করেন নাই কখনো?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
- কলেজের লাইব্রেরীতে রসময় বাবুর কোনো কালেকশন ছিলো না বলে সেসময় চুরিতে সুবিধা করতে পারিনি। অন্যসব বই, ঐ বয়সে চুরি করা আমার ধাতের মনে হয় নাই। তবে সুন্দরী বালিকার মন নামক বস্তুটা হলে, বিবেচনা করেছি বটে!
___________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নীলক্ষেত কি দোষ করছিল?
কি মাঝি? ডরাইলা?
- ঐ গুলা হালারা চিপায় লুকাইয়া রাখতো। তয় অভিসারিকা আর চিকিৎসা সাময়িকীর বিরাট 'লাইব্রেরী' আছিলো একসময়। একদিন মা আমারে রাঙো হাত পাকড়ে আব্বার কাছে রিমান্ডে পাঠাইছে আর সের দরে ওগুলা সেল করে দিছে।
___________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তিন-চারজন মিলে গেলে দোকানদার দিশা রাখতে পারতো না। এই ফাঁকে দুই/তিনটা গুপ্ত স্যারের নোট হাপিশ করা কোন ব্যাপার নাকি?
কি মাঝি? ডরাইলা?
- সব শালাই আছিলো অতীব সাহসী(!)। অপারেশনে নাই। তয় যোগাড় কইরা আইনা দিলে হালারা পিছে বইসা পড়তো আর ভদ্রস্যারের হাতে "কটবিহাইন্ড" হইতো।
___________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহারে কত কষ্ট করতাম! ফার্মগেট থেকে ওয়ারী গিয়া "খেলুড়েবালক" পত্রিকাখানা নিয়া আসতে হত।
কি মাঝি? ডরাইলা?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
জীবনে কিস্যু করলাম না। না করলাম বই চুরি, না করলাম বালিকার মন চুরি
জীবনটাই বৃথা।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ঠিক কইছেন...হালায় জীবনটাই বৃথা...
@পরিবর্তনশীল
বরাবরের মতোই ভাল্লাগছে...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
@রেনেট ভাইঃ আপনি হইলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় কাম অধিনায়ক। আপনে এসব লইয়া চিন্তা কইরেন না।
বিপ্রদাকে ধন্যবাদ। আপনি কী বই চুরি টুরি করেন নাই?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ধন্যবাদ,পরিবর্তনশীল।
চালিয়ে যাও।
কী চালিয়ে যাব?
বই চুরি করা। আইচ্ছা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ভালো লাগল ... আমি কখনও বই চুরি করিনি কিন্তু অনেক বই হারায়ে ফেলসি, কবে যে কে বই নিত পরে আর মনে থাকত না।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
না, আপনারে দিয়া হইব না। জীবনে কোনদিন বই চুরি করলেন না...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বই চুরি কম করি নাই জীবনে... কিন্তু তারচেয়ে হাজারগুন বেশি বই চুরি হইছে আমার নিজের। স্কুলে থাকতেই পাড়ার লাইব্রেরিতে তুলে দিছিলাম আমার সেবা হুমায়ুন আর মিলন কালেকশন... ভাড়া দিয়া টাকা আসবে... সেই টাকায় কেনা হবে নয়া বই... কিন্তু বছর শেষে লাইব্রেরিও গেলো... বইও গেলো সব... টাকার নামে ছয়ছালি।
তারপর ভাবলাম নিজেই পাঠাগার গড়ুম। এক ফ্রেন্ডের বাপের পরিত্যক্ত স'মিল ছিলো... সেই স'মিলে তিন ফ্রেন্ড মিইলা চালু করলাম বন্ধু পাঠাগার। (পরে আরো তিনজন যুক্ত হইছিলো) নিজেদের বই রাখলাম... ১ টাকা কইরা ভাড়া দেই... বিকালে পাঠাগারে বইসা বইসা পড়ি আর মাছি মারি। কয়েক মাস পরে পাঠাগার উঠলো... উদ্যোক্তা যেহেতু আমি... শেয়ার হোল্ডারদের (!) বই বুঝায়ে দিতে দিতে দেখি আমার বই নাই... গোটা দশেক বই নিয়া ফিরছিলাম।
এছাড়া মেট্রিক ইন্টার পরীক্ষার পরে আমার বাড়িতে লাইন লাগতো বই ধার নিতে... তার অধিকাংশই ফেরত আসতো না। আমার এককালীন ভ্রাম্যমান জীবনের জন্যও বহু বই হারাইছে...
তবে সবশেষ বড় ক্ষতিটা হইছে সম্প্রতি... আমি অনেক বছর যাবতই উত্তরায় থাকি। মিরপুরে আদি বাড়িতে বিশাল বইয়ের ভান্ডার... আলসেমিতে সেগুলা আনা হইতেছিলো না... ধীরে ধীরে নষ্ট হইলো... লোকজন নিয়া গেলো... একসময় সবই শেষ হইয়া যাওনের আগে শখানেক আনতে পারলাম... সেই বইগুলার জন্য খুব কষ্ট হয়। আহারে...
কেন্দ্রের স্টলে থাকতেই সন্ধ্যায় ভিড়ের চাপে অন্যান্য দোকান থেকে বই মারা নিয়মিত ছিলো। আমার এক ফ্রেন্ড সে বই মারতে ওস্তাদ না... কিন্তু শামসুর রাহমানের কবিতা সমগ্রটা তার বড় মনে ধরছে... ধরলো আমারে... দোস্ত এইটা মাইরা দে... তুই তো পারস। আমি তারে নিয়া গেলাম... বই মারলাম অভিজ্ঞ হাতে... কিন্তু ঐ শালা এমন ওভারএ্যাক্টিং শুরু করলো যে ধরা খাইলাম... এবং দোকানদার আমারে চিইনা ফালাইলো... লজ্জিত মুখে বই ফেরত দিলাম... তারপর পুরা মাস কেন্দ্রের স্টলে দোকানদারি করছি আর সেই দোকানদার আইলে আসতেছি বইলা ভাগছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি তো লীলেন ভাইয়ের চেয়ে কম যান না। আপনারে নিয়াও সিনেমা বানানো লাগবে একটা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ঐ মিয়া... যা কইছেন কইছেন আর কয়েন না... লীলেনদা হইলো ওস্তাদ লোক... তারে তো এই বিচারে একটা নোবেল দিতে লাগে। আমি তো ভাবতেছি দেখা হইলে শিষ্যত্ব ভিক্ষা চামু... তবে জীবনেও আমার বাড়িতে ঢুকতে দিমু না (অবশিষ্ট যে কয়খান পুস্তক আছে সেগুলা সযত্নে থাকুক অন্তত) {অবশ্য আবার ভাবতেছি লীলেনদার যা ক্যারিশমা... উনি দূর থেকাই কোনও উপায় বাইর কইরা আমার পুস্তক দখল করেন কি না কে জানে?}______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এখন টেকনিক চেঞ্জ করে ফেলেছি
কারো কালেকশনের বই পছন্দ হলে নারী বাহিনী দিয়ে ধার করিয়ে আনি
(আমি হিসেব করে দেখেছি বইয়ের কোনো আড়ৎদারই আমাকে বই দিতে চায় না)
তারপর মেরে দেই
এবং আড়ৎদাররা কোনোদিনও কোনো মেয়ের কাছে বই ফেরত চায় না পাছে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়
এই টেকনিকে আমার ফিল্ম ইস্কুলের তিনজন মাস্টরের এগারোটা বই মেরে দিয়েছি
হালারা বইগুলা ফটোকপির জন্য দেয়াতো দূরের কথা। ধরতেই দেয় না
পরে দুইটা মাইয়ারে পাঠালাম
ব্যাস
গদগদ হয়ে বই দিয়ে দিলো
সেই বই এখন আমার বাসায়
খোঁজ নিয়ে জেনেছি হালারা একবারের জন্যও মাইয়াগুলারে বই ফেরত দিবার কথা বলেনি
উল্টা বলে- কেউতো একগুলো পড়ে না...
তোমার কিছু লাগলে আমাকে বলো...
বইগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় না
বেশ আরামেই এখন ওই বইগুলো আমার বাসায় ধুলোবালি খাচ্ছে
০২
আপনার বাসার ঠিকানাটা একটু দেনতো...
দুয়েকটারে পাঠাই...
আপনে তো ডেনজেরাস লোক... মেয়ে দিয়ে বই মেরে দেন!?!
ঠিকাছে মেয়ে পাঠান আগে দেখি... তারপর নাহয় বিবেচনা করা যাবেনে... বই আর কত মূল্যবান? জীবনে তো কম গেলো না...
ঠিক আছে... আপনে পাঠায়ে দিয়েন... আপনার রচিত দুইখান গল্পগ্রন্থ আমার সংগ্রহে আছে (বড় মূল্যবান কালেকশন)... আমি সেগুলা তাদেরে দিয়া দিবোনে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- আগে মেয়ে পাঠান।
কী দিবো সেইটা পরের বিবেচনা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ... আগে তো মেয়ে পাঠান... তার্পরে কি করতে হয় না হয় আমি বুঝুম...
_________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালা মানুষ সাইজ্জা আছিলাম, দিলো তো সবাই মিল্যা আমার পুরান কথা মনে কইরা।
সুনামগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির কতো ক্লাসিক বই যে... আহা, তিন/চার বছর আগের নুহের বন্যা যেটা হলো, শহরের বাসায় বুক পানি ! সব ডুবে গেলো ! আমি তখন নোয়াখালী ক্ষুন্নিবৃত্তিতে। খবর পেয়ে যখন গেলাম- ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী ইহধাম....!
অনেক অর্থ নাশ হয়েছে জীবনে, গা করিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত লাইব্রেরি আমার জলে ডুবে আমাকেও নিঃস্ব হবার জ্বালা কী তা বুঝিয়ে দিয়ে গেলো।
এখন অবশ্য বই কিনি। তবু সেই গ্রন্থভাণ্ডারের কথা কি আদৌ ভুলতে পারবো কখনো !
চোর ধরানো পোস্টের জন্য অভিনন্দন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আরেকটা পাইলাম- বই চোর!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
সব মিলিয়ে
লেখার জন্য মহিবকে ঞ্ঝ্যোঁ...
আমরা কয়েক বন্ধু মিলে একবার বইমেলা থেকে বই চুরি করেছিলাম। ক্লাসমেট আরাফাতের আব্বা হলো কাকলী প্রকাশনীর মালিক। আরাফাতরে নিয়া ওনার দোকানে গেছি। যাইয়া দোকানের লোকটারে একটা বইয়ের নাম বলে বললাম, ভাই এই বইটা তো আপনার দোকানে নাই...বইটা একটু আইনা দেন। উনি বই আনতে গেলো দোকান খালি রাইখা। আমরা নগদে ডিসপ্লে থেকে ৫ টা বই ফু্টাই দিলাম। আরাফাতও টের পায় নাই।
একদোকান থেকে পাঁচটা পাবার সাফল্যে আমরা তখন উত্তেজিত। তারপর গেলাম ইন্ডিয়ান একটা প্রকাশনীতে। ব্যাটাদের কালেকশন ঝটিল। কিন্তু কড়া নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। ভালো বই মারার কোন চান্স নাই। তাও আমরা হাতানোর জন্য ইমদাদুল হক মিলনের একটা মোটাসোটা বই ফুটাই দিলাম। নায়ক নামের সেই বইটা অবশ্য পড়া হয়নি...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।
ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।
সচলায়তন দেখি কঠিন সব ওস্তাদে ওস্তাদে ভরপুর !
এখন মনে হচ্ছে, বই চুরি করি নাই?
হায় ! জীবনে কিছুই করা হয় নাই।
আফসোস...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
কী যে মজা! খালি একবার চুরি কইরা দেখেন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ঠিক ঠিক !
বুদ্ধিটা মন্দ না।
বেটার লেইট দ্যান নেভার।
আপনের বইগুলান জানি কই রাখেন...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমার/আমাদের হাতে খড়ি কুয়াশা দিয়া। আমাদের তিন বন্ধুর ত্রি-স্টার লাইব্রেরি ছিল তার জন্য যৌথ উদ্দ্যোগে কাজ সারতাম নিউমার্কেট বা নীলক্ষেত থেইক্কা। তারপর বইমেলাত আছেই। তবে মেইন টার্গেট ছিল ফুটপাথের দোকান, কারণ বড় দোকানে সুবিধা করতে পারতাম না। তবে বইমেলায় বই চুরি ইজি বেশি।
পৃথিবীতে দুইটা জিনিস চুরি করলে শান্তি পাওয়া যায়...
একটা হলো বই।
আরেকটা কোন বালিকা'র মন।----লা জবাব হইছে
এজাজ
সচলয়াতন কি বই-চোরায়তনে রুপান্তরিত হইতাছে নাকি!!!
মহিব, সব বই চোরদের খোঁজ জানার অসাধারণ উপায় বের করার জন্য ধন্যবাদ এখন থেকে নিজের লাইব্রেরী আরো সাবধানের রাখতে হবে...
আমি কখনো বই চুরি করি নাই কিন্তু অনেকে আমার বই তাহাদের নিজের মনে করিয়া মারিং করিয়া দিছে সেই দুঃখে আমি এখন কাউকে বই ধার দেইনা আর অতি আপন না হইলে পড়তেও দেইনা।
তবে, বই পড়ার দোষে আমার "মা" আমারে অনেকদিন খাবার দেয় নাই, মা বলতো বই পড়ে পেট ভড়ছে না (!!) এখন খাবার নাই :(। তার অভিযোগ আমি নাকি বই পড়ার সময় দুনিয়ার-দারির কোন খোঁজ রাখিনা আর বরাবরের মতো আমার উত্তর থাকতো "মা সব কাজই তো গভীর মনোযোগ দিয়া করা উচিৎ"। এই উত্তরে মা'র রাগ বাড়ছে বৈ কমে নাই কোনদিন। তবে আমার যে কোন পরিবর্তন হইছে তা কিন্তু না, আমি এখনো আগের মতোই মনোযোগের সহিত গ্রোগ্রাসে বই গিলি
কল্পনা আক্তার
....................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
থানা শহরের সুলভ লাইব্রেরী, অনেক বয়স্ক একজন মালিক কিছু পুরান, ময়লা বই আর সাপ্তাহিক পত্রিকা নিয়ে বসে থাকতো। আমি তখন ১ নং সরকারি শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশ করে সুগারমিল হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছি। মাত্র দুষ্টু বই পড়তে শিখেছি। আর সুলভ লাইব্রেরী ছিলো আমাদের দুষ্টু বই এর প্রধান যোগানদাতাদের একটা। আর কত..... ১৫/২০ টাকায় কিনতে হতো একটা, ২/৩ বন্ধুর চাঁদা তোলা টাকা দিয়ে অনেক দুষ্টু বই কিনেছি। সবসময় কি আর হাতে টাকা থাকে?
একদিন.....
মাথা আউলা ঝাউলা... জাবেদ, তনু, সজিব সবার কাছে ঢু মারলাম- দোস্ত আছে নাকি? সবার উত্তর- না নেই। পকেট খালি.. কি করি? কোন উপায় না দেখে সোজা সুলভ লাইব্রেরী, উদ্দেশ্য একটা দুষ্টু বই যদি হাপিশ করা যায়। চাঁচা ৪/৫ টি বই আমাকে দেখতে দিলেন। - আরো কয়েকটা দেখান, বলতেই মালিক চাঁচা পেছন ঘুরলেন নতুন কিছু বই বের করার জন্য এই সুযোগে আমি লিলেন ভাই এর মতো জ্যাকেট নয় শার্টের মধ্যে একটা দুষ্টু বই চালান করে দিতে গেলাম আর মন্দ কপালের কারনে চাঁচার হাতে কট হইলাম। -তোর বাপের নাম কি? ও... তুই মাষ্টারের ছেলে... তোর বাপরে জানাবো তুই বই চুরি করিস।
মাথা আউলা ঝাউলা... বাবা যদি জানে, আমি শ্যাশ। প্রচন্ড ভয়ে ভয়ে বাবা আসার আগেই দুপুরের ভাত খেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি, ২/৩ দিন চেষ্টা করি বাবার সামনে না পড়তে। আমার দিকে বাবা তাকালেই মনে হয় এখনই বলবে- তুমি নাকি দুষ্টু বই চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছো?
মাথা ঠান্ডা...... সহজ বিষয়টি বুঝতে আমার অনেকদিন লেগেছে- ট্যেকনিক্যালি সুলভ লাইব্রেরীর চাঁচা কোন ভাবেই বাবাকে বলতে পারবে না, কারন বাবা কে বলতে আসলে অনিবার্য প্রশ্ন- কি বই চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছি।... চাঁচা কি আর বলতে পারবে গুপ্ত স্যারের দুষ্টু বই!
নতুন মন্তব্য করুন