আমাদের মধ্যে রীতিমত যুদ্ধ হতো তখন।
মা'কে ভাগাভাগি করে নিতে যুদ্ধ করতাম আমরা।
মা যখন একটা মেলামাইনের থালাতে ভাত মেখে নিত-
আমরা সবাই ছুটে যেতাম। কার মুখে মুঠোয় ভাত নেওয়া হাতটি প্রথমে যাবে
সেটা নিয়ে ঝগড়া হতো আমাদের।
আমাকে আগে দিলে ছোট্টু কাঁদত-
বুবু আগে পেলে আমি কাঁদতাম অনেক করে।
বাবা অনেক রাতে বাড়ি ফিরতেন।
তাই-
মাকে আমরা খেতে দেখিনি কখনো।
রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে পায়ের পাতায় মায়ের কোলের স্পর্শ না পেলে
ঘুম আসত না আমাদের।
মায়ের আঁচলের গন্ধ বুকে না এলে
ঘুম আসত না আমাদের।
সমান ভাবে সেই গন্ধ- সেই স্পর্শ মা ভাগ করে দিতেন আমাদের মাঝে।
মাকে ভাগাভাগি করে
একসময় ঘুমিয়ে পড়তাম তাই-
মাকে আমরা ঘুমোতে দেখিনি কখনো।
এরপর অনেকদিন পেরিয়ে গেল-
আমরা বড় হলাম।
বাবা মারা গেলেন একদিন। নিয়মের মত।
বুবু'র চলে যেতে হলো অন্যের বাড়িতে - বউ হয়ে।
বাবা মারা যাওয়ার পরে- কয়েকদিন মা'কে ভাত খেতে দেখলাম।
ঝাপসা চোখ সম্বল করে।
তবে ঘুম রয়ে গেল আগের মতন।
ঝাপসা চোখে বোধহয় ঘুম আসে না।
সেদিন বুবু'র একটা মেয়েও হয়েছে।
প্রতি ঈদে বুবু ও'র আগের বাড়ি যায়। নিয়ম করে।
বুবু মায়ের সাথে শুতে পারে না। ওকে বরের সাথে শুতে হয়-
বাড়িতে গেলেও।
মা এখন বুবু'র পাশে শুতে পারে না আর।
ছোট্টু আমাদের বংশের সবচে মেধাবী ছেলে-
সে এখন বিলেতে আছে।
বিএসসিটা শেষ করে ছোট্টু এখন-
মাস্টার্সের পথে।
হয়ত ওদেশের নাগরিকও হয়ে যাবে একদিন।
মা এখন ছোট্টুর দেখা পায় না।
এদিকে
আমি খুব একটা সুবিধে করতে পারিনি জীবনে।
এই শহরেই দশটা পাঁচটা আপিস করে-
আমার দিন চলে যায়।
নিয়ম করে প্রতি মাসে- টাকা পাঠানোও চলে
গ্রামের ঠিকানায়।
রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে সেই যুদ্ধের কথা মনে করার
অবকাশ আমি পাই না বলে
ক্লান্ত নয়ন জোড়ায় ঘুম আসতেও দেরি হয়না তেমন একটা।
শুধু
সেই ভাগফল -
মেলানো হয়না কোনদিন।
সেই ভাগফল মেলানো হয়না
কোন রাতে।
মন্তব্য
এই ভাগফল কখনোই মেলে না। দুরন্ত কিছু অবশিষ্ট একে মিলতে দেয় না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হুমম...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বুকটা খা খা করল,
চোখদুটো ঝাপসা হয়ে আসলে।
মা'র থেকে অনেক দূরে বসে আছি -
এখানে মায়ের হাতের ভাতও নেই
মায়ের কোলের গন্ধও নেই।
শুধু দুই এক দিন পরপর ফোনে কন্ঠস্বর শুনি।
ভালো লাগল।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ব্লগর-ব্লগর ট্যাগ দেখে নিশ্চিত হলাম এইটা আসলে "ব্লগর-ব্লগর" না।
তোমার বিভিন্ন লেখায় একটা জিনিস আমি বুঝতে পারসি, মা'কে তুমি অসম্ভব ভালবাসো, যার কোন সীমা নাই।
সিনেমার ভাষায় একটা চরম সত্যি কথা বলি: সব মায়েরই মনে হয় মনে মনে একটা স্বপ্ন থাকে, তোমার মতো ছেলে পাওয়ার!
একটা জিনিস বাদ দিসো, দশটা-পাঁচটা অফিস কইরা বাসায় ফিরলে ঘুম পাড়ায় কে এখন?
হৈ মিয়া, লেখাটা ভাল হইছে।
থ্যাংকু বস।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
হুম..................... ভাল লাগল ব্লগর ব্লগর ।
নিবিড়
থ্যাংকু।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
খুব ভালো লাগলো।মন ছুঁয়ে গেলো।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
অনেক ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ব্লগরব্লগর ট্যাগ বদলা... এইটা হুকুম... যেইটা লিখসস, সেইটা লিখ ...
বেশি ভাল লাগলে আর ভাল লাগে না...
ভাইজান- ডর করে তো!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এত সহজ করে এত সুন্দর আর গভীর অনুভূতির কথা লিখলেন! বুকের ভেতরে হাহাকার করে ওঠে। অনেক ভালো লাগলো।
সুন্দর করে আর লিখতে পারলাম কই?
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
...মায়েদের নিয়ে যেকোন লেখাই ভালো হয়...আর তুমি লিখলে হয় অসাধারন...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
অনেক ধন্যবাদ...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এইটা একটা (সেইরকম) কবিতা হইসে । পছন্দের পোস্ট ...
--------------------------------------------------------
কারা যেন চলে গেছে দূরে...বহুদূরে..আর ফিরবে না জানি । কোন কারন ছাড়াই , কোন যুক্তি ছাড়াই চুপচাপ হয়ে গেছে সারিবদ্ধ প্রাণ গুলো । জানি , আমাকেও আসতে হবে এই বিষন্ন নগরীতে..একদিন.. কোনদিন --মলাগোফরুমা
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
এত ভালো লাগছে? থ্যাংকু।
-----'----------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
একটা ভালোলাগা কষ্ট...
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
খারাপ না একেবারে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
অতি আবেগপূর্ণ লেখা, তারপরেও মা'কে নিয়ে লেখা তাই পাঁচ দিলাম।
ভালো।
কী করব? আবেগ ছাড়া আর কোন উপাদান তো নেই আমার কাছে।
--------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এতোদিন পর এই ভয়ংকর ধরনের খাঁ খাঁ করা লেখা দেয়ার সাহস দিয়েছে কে আপনাকে!!!!
আপনার অসাধারন লেখার অপেক্ষায় আমি বরাবর থাকি। সব সময়ের মতো আজও ভালো লাগলো লেখা পড়ে তবে, কেমন যেন মন খারাপ হয়ে গেল...হয়তো পাছে নিজের মায়ের কাছ থেকে কখনো আলাদা হতে হয় সেই ভয়ে।
কল্পনা আক্তার
..............................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
থাকেন কই আপ্নে?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
মায়ের থেকে থাকি হাজার হাজার মাইল দূরে। বুঝতেই পারছেন কেমন লাগে!
এরকম একটা অসম্ভব মন খারাপ করা অসাধারণ লেখার না-ইনসাফিটা করলেন ক্যাম্নে...
দুঃখিত এবং ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আগের মতো.............
আগের মতো............. বাজে লেখা
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
- ইন্তিখাব দিনারের একটা এ্যাড ছিলো। খুব সম্ভবতঃ গুঁড়া মশলার। ঐটারে সামান্য রিমেক করলে এমন হয়-
পাটাপুতায় মশলা পেষার মায়ের কষ্টে ছেলের মন পুড়ে। মায়ের হাত ধরে ছেলে বলে, "মাগো তোমার আর কষ্ট করে পাটাপুতা ঘষতে হবে না!"
মা খুশী হন। হাতের তালুর উল্টো পিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছে ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন, "কেনো রে খোকা আমার জন্যে তাহলে রাঁধূনী গুঁড়া মশলা এনেছিস বুঝি?"
ছেলে তর্জনী নেড়ে বসা থেকে উঠতে উঠতে বলে, "রাঁধূনী আমি এনেছি, তবে মশলা নয়গো মা। তোমার জন্য একেবারে জলজ্যান্ত রাঁধূনী"। বলেই খোকা সরে যায় একটু বাম দিকে, কিংবা ডান দিকে।
এমন অবস্থায় ক্যামেরা ঘোলাটে হয়ে যায়। আবছা আবছা দেখা যায় শাশুড়ি নববধূকে জড়িয়ে ধরেছেন, আশীর্বাদ করছেন। স্ক্রীনের সামনে ঠিক তখনি লেখা ভেসে উঠবে আর অরূপের মতো মোটা গলায় কেউ পেছনে সেটা আবৃত্তি করবে, "রাঁধূনী, আমরা মশলায় না মমতায় বিশ্বাসী!"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
অপুর্ব লেখা পরিবর্তনশীল
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অনেক ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আপনাকে আমার গুণ্ডা ভাড়া করে পিটাইতে মন চায়.. কসম!
লেখেন না কেনু স্যার?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন