আজ দুপুরে খাবার পরে একটা মুরগী জবাই করার ছুরি দিয়ে নিজের হাতটা কাটলাম। যখন ছুরিটা হাতে বসিয়েছি তখন একবার ভাবলাম পালিয়ে যাই। আমার প্রেমিকার দরকার নেই। কিন্তু তবুও কাটলাম নিজের ডানহাত। সবসময় ডানহাত ব্যবহারের অভ্যাস। বামহাত দিয়ে ছুরি চালাতে অসুবিধে হয়। অনেক সাবধানতা বামহাতে নিয়েও কোন লাভ হলো না। কিছুটা বেঁকে গেল শেষ পর্যন্ত। হাতের তালুর উপরের একটা অংশ অন্য অংশের চেয়ে বড় হয়ে আছে।
অবন্তী আমার অর্ধেক হাতটা হাতে নিতে নিতে হাসল একটু। বলল...
- জানো? আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না- শুধুমাত্র আমার জন্য তুমি একটা হাত কেটে ফেললে। তুমি আমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসো । তাই না?
আমি হে হে করে হাসার চেষ্টা করি। যার অর্থ এটা কোন ব্যাপারই না। তোমার জন্য আমি নিজেকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলব। একটা হাত তো ছেলেমানুষী ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু অবন্তীর সামনে আমার হে হে হাসি আর হাসি হয়না। শুধু মাত্র দুটো শব্দই মনে হয়।
- হে হে।
অবন্তী হয় বুঝতে পারে না। অথবা না বোঝার ভান করে। আমার কাটা ডানহাতে চাপ দেয়।
- এই। হাসছ কেন?
- তোমাকে অনেক ভালোবাসি তো। তাই।
বলে বামহাত দিয়ে অবন্তীর কপাল ছুঁতে যাই। ওর কপালের ওপরে একগোছা চুল কোত্থেকে উড়ে এসেছে। কপাল ছোঁয়া হয় না। অবন্তী সরে যায়।
- কী করছ? আবার আমাকে ছুঁতে চাও। এক হাত কাটতে হলো। তবুও বুঝি শিক্ষা হলো না।
তাই তো। আমি তো অবন্তীকে কখনো ছুঁতে পারব না। শুধু অবন্তী যদি কখনো করুণা করে আমাকে ছোঁয়- তাহলে সেই ছোঁয়া নিতে পারব। এই যেমন- এখন আমার কাটাহাতে সে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আবার দেখ- ভালোবাসার মত একটা কণ্ঠস্বরে বলছে-
- কী বিশ্রী করে হাতটা কেটেছ? এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে। দাঁড়াও সুন্দর করে কেটে দিই। আমার কাছে বিদেশি ছুরি আছে। অনেক আগে গিফট পেয়েছিলাম।
আমি মুগ্ধ হয়ে অবন্তীর দিকে তাকাই। মুখটা হাসি হাসি করে আছে। গালে টোল পড়ি পড়ি করেও পড়ছে না। আমার খুব ছুঁতে ইচ্ছে করে- সেই প্রায় টোল পড়া মুখটা। এই পড়ন্ত বিকেলে চাঁদের আলো যেন অবন্তীর অধর থেকে সমস্ত দেহ আলোকিত করে রেখেছে। সেই আলোয় আমার মুখ ডুবাতে ইচ্ছে করে। কিন্তু নিজেকে আমি সংযত রাখি। হয়ত এমন একদিন আসবে- যেদিন ওকে স্পর্শ করলে আমার - স্পর্শকারী শরীরের কোন অংশ বিসর্জন দিবে না। আসবে। নিশ্চয়ই আসবে।
অবন্তী ওর বিদেশি ছুরি নিয়ে আসে। বারান্দায় আমরা দুজন এসে বসি। বিকেলের রোদ লুকিয়ে পড়ছে সামনের সারি সারি দালান কোঠার আড়ালে। সিটি কর্পোরেশনের রোপণ করা সারি সারি গাছের ছায়ায়। আমার সামনে বিদেশি ছুরি নিয়ে বসে থাকা এক মানবীর কোলে।
আমি হাত বাড়িয়ে দিই। অবন্তী আমার এবড়ো থেবড়ো করে কাটা হাত সুন্দর করে কেটে দেয় বিদেশি ছুরি দিয়ে। আমার এতটুকু কষ্ট হয় না। বরং ক্ষণিকের জন্য আমি ওর ভালোবাসা বুঝে নিতে চাই। এত মানুষের পৃথিবীতে আমার শরীরই শুধু কাটবে কেন অবন্তী? আমি আলাদা কেউ?
ভালোবাসার তীব্রতায় আমি অবন্তীকে ছুঁয়ে ফেলি আমার বামহাত দিয়ে। অবন্তী তাকায় আমার দিকে। এখন ওকে আমার বামহাত কেটে ফেলতে হবে। আমার তো ডানহাত নেই- যে আমি আমার বামহাত কেটে ফেলে দিব।
আমি আরো এগিয়ে যাই। ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করি অবন্তী'র ঠোঁট। অবন্তী আমার ঠোঁটটাও কেটে নেয়। আমার ঠোঁট আর কোনদিন অবন্তীকে ছোঁবে না। আমার ঠোঁট আর কোনদিন কাউকে ছোঁবে না।
আমি ঠিক করে ফেলি- আজ এখানে বসে শরীরের প্রত্যেকটা অংশ আমি বিসর্জন দেব। অবন্তীকে বলি একথা। অবন্তী একটু মায়া দেখায় কী? আমাকে বলে কেন?...
- এত বেশি তোমার ভালোবাসা? এত বেশি! আমাকে এত ভালোবেসে তোমার লাভটা কী হচ্ছে?
একথা বলতে অবন্তী আমার বুকের একটু অংশ কেটে নেয়। বিদেশি ছুরি'র বেশ ধার আছে। সহজেই কেটে যায়। আমি অবন্তীর চুলের গন্ধ নিতে চেষ্টা করি। এত মিষ্টি কেন এই ঘ্রাণ! এত মিষ্টি কেন! কাটা ঠোঁটে আমার ঠিকমত কথা বের হতে চায় না। তাও বলি...
- একটা কথা রাখবে আমার?
- বলো।
- যে চোখ দিয়ে তোমাকে দেখি- তোমার হাসি দেখি- তোমার কপালে উড়ে আসা দুই একটা চুল দেখি- সেই চোখ দুটি কোনদিন আমাকে ফেলে দিতে হবে না। বলো...
মন্তব্য
অবন্তীর একটা ফটুক দেন । পোস্টের সাথে...।
চিন্তার বিষয়!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বাহ কঠিন প্রেম মনে হচ্ছে।
তাই তো মনে হয়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ইয়াল্লা। ভুলে ব্লগর ব্লগর ট্যাগ চইলা আসছে। নাউযুবিল্লাহ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
তোমার লুঙ্গির গল্প শেষ না কইরা প্রেমের গল্প শুরু করো কোন সাহসে? তাছাড়া এই যে এক গল্প ঝুলাইয়া রাইখা আরেকটা শুরু করা, এইটা তো আমার কপিরাইটেড ইশটাইল। হুঁশিয়ার! আগে লুঙ্গি পরে প্রেম।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভাইজান। হুট করে মনে একটু প্রেমভাব জেগে উঠছিল। তাই এই অপচেষ্টা। কপিরাইট মাইরা দিতে চাইছি মাফ করে দেওয়া যায় না?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
- আগে লুঙ্গি পরে প্রেম? ব্যাপারটা কেমন উলটা হয়ে গেলো না?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আস্তাগফিরুল্লাহ!
গুরু এই ডায়ালগ মাথায় আসল ক্যাম্নে?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমার্নার্ভ খুব্দুর্বল। এমন্কাহিনী পড়লেই ডর্লাগে!
ক্যাঞ্জানি, রবি উইলিয়ামসের Rock DJ-র ভিডিওর্কথা মনে হৈল।
লুঙ্গি উঁচায়া বৈসা থাকলে ক্যাম্নে কী!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আমারও ডর্লাগে।
লুঙ্গী অচিরেই নামাবার ব্যবস্তা করতেছি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
লুঙ্গি উঁচায়া বইসা আছেন নাকি আপ্নে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
গল্পের শেষটা পইড়া চর্যার একটা পদ স্মরণে আসলো...
''কাগা, সব তন খাইয়ো,
চুন চুন খাইয়ো মাস,
দু নয়না মাত রাখিয়ো
পর দেখিন দি আঁশ''
সেই সাথে একটা গানো স্মরণে আসিলো...
''শুধু চোখ দুটো মাটি খেয়ো না
সারা জীবন তারে দেখার সাধ
মিটবে না গো মিটবে না''
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চর্যাপদের লাইনগুলা দারুণ লাগল।
আর গল্পটা লেখার পর গানের লাইঙ্গুলা আমার মনে আসছিল। এজন্য গল্প ট্যাগটা দিতে চাই নাই। কিন্তু ব্লগর ব্লগর দিলে সবাই সন্দেহ করবে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
প্রেমের চাইতে তো কষ্ট বেশি !
সকাল থেকে দুইবার পড়লাম তোমার লেখাটা।
এত কষ্ট কিসের শুনি !!! সাথে অবন্তীর একটা ছবি পেলে খারাপ হতোনা।
--------------------------------------------------------
এই গল্প আমারে নিয়ে লেখা না ভাইজান। আমার এক বন্ধুরে নিয়া লেখা। ব্যাটা মহৎ টাইপ প্রেমিক আছিল। হেরে জিগায় দেখতে হবে- মনে হয় ফুটু দিতে রাজি হবে না। তাও বইলা দেখি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
পুরাটা শেষ করতে পারি নাই...
_______________
বোকা মানুষ
ডরাইছেন নাকি?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এইসব কাটাকুটি, রক্তারক্তি ভাল্লাগে না
__________
বোকা মানুষ
আরে বস, কাটাকাটি রক্তারক্তির কিছু নাই। পুরাটা পড়লে কিলিয়ার হইয়া যাইত।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
তুমি মিয়া এইসব বাদ দিয়া "অ্যারোমা" কাহিনী লেখো! আপাতত অল আইজ আর অন ইয়োর লুঙ্গি
_______________
বোকা মানুষ
লুঙ্গির গল্প না দিয়া পীড়িতের গফ্।
খেলুম না...।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
প্রেমের গল্প পইড়া বলার মত কিছু খুইজা পাই না। এইবারও পাইতেছি না। তাই এতক্ষণ কমেন্টাই নাই।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
গুড বয়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমি ও হিমুর সাথে একমত।
এটা আমি আগেই অনুমান করেছিলাম। সিরিজ খেলাপী হওয়া চলবে না ।
কী অনুমান করছিলেন?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এইটা কি লিখলা ? এইসব কি ? আমি একদম রক্তারক্তি দেখা, শোনা, পড়া সয্য করতে পারিনি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
আমিও পারিনা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
সিরিজ খেলাপি...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অফলাইনে পড়ছিলাম (তোর পিসিতে সেইভ করা ফাইলটা)। হেব্বি লাগছিল। জানায়া গেলাম।
=============================
তু লাল পাহাড়ীর দেশে যা!
রাঙ্গা মাটির দেশে যা!
ইতাক তুরে মানাইছে না গ!
ইক্কেবারে মানাইসে না গ!
নতুন মন্তব্য করুন