- আন্টি। আমি একটু ওদিকে যাই। দেখা হবে আবার...
- কী আশ্চর্য! আমাকে আন্টি ডাকছেন কেন?
বুদ্ধিমতী-পর্যবেক্ষিকা- রূপবতী খ্যাঁক করে উঠলো মনে হয়। আমি তেমন একটা কানে নেই না। বারো তেরো বছরের ছেলেটা আবার উচ্চ কম্পাংকে চেঁচিয়ে উঠল...
- আ...ন...টি... কোলে নাও তোমার বাচ্চাকে... বাঁদর একটা।
আমার বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশের সুন্দর সুন্দর মেয়েদের হয় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে - অথবা বয়ফ্রেণ্ডের ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে। আমরাই শুধু গাধার মতো পড়ে আছি। এবার সিরিয়াসলি চিন্তা ভাবনা শুরু করতে হবে। আমি লুংগী ধরে উঠতে উঠতে বুদ্ধিমতীর ভাগ্নীদের দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করি। অলওয়েজ অন দ্য সেফ সাইড।
চেয়ার থেকে পুরোপুরি ওঠার ঠিক আগ মুহুর্তেই বুঝতে পারি সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমার লুংগীর গিট বেশ ভালোভাবেই ছুটে গেছে। হাঁটতে শুরু করলে যে কোন মুহুর্তে খসে পড়তে পারে। চেয়ারে বসা আর ওঠার মাঝামাঝি একটা অবস্থানে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে থাকি আর মনে মনে সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করি। উঠে হাঁটা শুরু করব? একটু রিস্ক হয়ে যায়। নাকি নির্লজ্জের মতো ওদের সামনেই লুংগীর গিট শক্ত করা শুরু করব। একটু বেঁকে অবস্থায় স্থির হয়ে ছিলাম বোধহয়। লাস্যময়ীর কণ্ঠ শোনা যায়। রিনরিনে কণ্ঠস্বর...
- কোন সমস্যা ভাইয়া?
আমি বেকুবের মত একটু হাসি। আরে না... সমস্যা কীসের? আর মনের মধ্যে একটা কথা আসি আসি করে। হিমু ভাইয়ের কোন লেখায় পড়েছিলাম। রাজপথে পরেছি লুংগী... বাতাসে কী ভয়?... সাথে সাথেই আমি পুরোপুরি দাঁড়িয়ে যাই আর ক্লাসিকাল ভঙ্গিতে লুংগীর গিট ঠিক করা শুরু করি। লাস্যময়ী মাথা নিচু করে। লজ্জা পায় বোধহয়। আমি অবাক হয়ে খেয়াল করি- আমার কোন লজ্জা হয় না। বরং লাস্যময়ীর উদ্দেশ্যে আয়েশ করে বলি...
- তুমি এতো লজ্জা পাচ্ছ কেন? লুংগীর গিট আলগা হয়ে গেছে তো আমার...
এই কথায় বাঁধ ভেঙ্গে যায়। নদী থেকে খল খল করে যেন পানি ছুটা শুরু করে। বালিকার দল চুড়ির শব্দে খিল খিল করে হেসে দেয়।
ওদিকে আংকেল তেলেবেগুণে জ্বলে আছেন। আমাদের জন্য নাকি কেউই খাবার পাচ্ছে না। নিজেদের টেবিল ফিরে এসে আংকেলের গর্জন শোনা যায়। কানে ঢোকে না গর্জন। মন উদাস হয়ে আছে।
লুংগী পরলে মনে উদাস ভাব জেগে ওঠে। স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।
মাটির একটা ঘর। রাত আটটা। চারদিকে ঝিঁঝিঁ পোকা আর ব্যাঙের ডাক। মাটির ঘরের দাওয়া। সেখানে দুটো পিড়ি পাতা আছে। একটাতে আমি লুংগী পরে বসে আছি। গলায় একটা গামছা ঝুলানো। আরেকটায় আমার বউ। বউ আমার পাতে মাছের মাথা তুলে দেয়। আমি বলি... আর খাবো না গো... বউ খিল খিল করে হেসে ওঠে... শাড়ির আঁচল খসে পড়ে সে হাসির ঠ্যালায়... আকাশে মেঘ গুড় গুড় শোনা যায়... পান বানায়ে দিই একটা... জর্দা দেব নাকি গো?... না না জর্দা খাবো না... অন্তর জ্বালা করে... বউ পানের পিক ফেলে উঠোনে... ঠিক তখনি বৃষ্টি নেমে আসে। যেন সুযোগ খুঁজছিল। বউ পানের পিক ফেললেই সে নেমে আসবে।
খাবারের প্লেট নিয়ে উঠে পড়ি। সময় শেষ হয়ে যাবে। খেয়ে দেয়ে টাকাটা একটু কাটাকাটি করে নেয়া যাক। আংকেলের টেবিলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চোখাচোখি হয়। হাসি। আংকেল আমাকে ডাক দিয়ে ওঠেন...
- একটু শুনে যান তো।
আমি এগিয়ে যাই। শুনে আসা যাক- কী বলতে চান ভদ্রলোক। আমি গ্রামীন ফোনের কাস্টমার কেয়ারের লোকদের মত বলি...
- জ্বী 'বেলুন'।
- আপনি লুংগী পরে আসছেন কেন? বাজি ধরে আসছেন?
- জ্বী না চাচা। এমনেই পরছি? আপনি প্যাণ্ট পরছেন কেন? বাজি ধরে আসছেন?
সামনে এগোতে এগোতে লোকটার কথা শুনি। স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলছে। বেশ বুঝদার একটা ভাব।
- ম্যানার ট্যনার কিছু জানে না...
'মিস্টার ম্যানার' কে একটা শিক্ষা দেওয়া দরকার হয়ে পড়েছে। খাবারের টেবিলে এ আলোচনা হতে থাকে। এই দায়িত্ব তুহিনকেই নিতে হয়। পুঁথিগত শিক্ষা বাদে অন্যান্য শিক্ষায় ওর বেশ দখল। এবং তুহিনের আইডিয়ার ফল হিসেবে একটু ফাজলামি করা হলো মিস্টার ম্যানারের সাথে। শিক্ষাও দেয়া হলো কিছুটা!
এরপর খাবারের টেবিলে বসে আমাকে একটা একটা ছোটখাট সাক্ষাৎকার দিতে হয়। মেয়েদের সাথে কী কী কথা বললাম- কোন পর্যায়ে গিয়েছিল আলোচনা- এ সব। আমি বলি...
- এতকিছু মনে আছে নাকি? কার সাথে কী কথা কইলাম...
তারপর দ্য গ্রেট ট্রাজেডি শোনাই। হৃদ্যতাপূর্ণ আলাপ সালাপ। আড়চোখে তাকানো এবং আবিস্কার করা- তার একটা বাচ্চা আছে। রাব্বানী আরেকটু হলে কেঁদেই দেয়।
- আমাদের কপালেই খালি এমন ক্যান হয় দোস্ত? উল্টাও তো হইতে পারতো!
- উলটা মানে?
- ধর এক মাইয়া তোর প্রেমে পড়লো। পরে দেখা গেল তুই বাচ্চার বাপ...
- ঐ। টানছস নাকি?
সামনে পড়ে থাকা স্যুপ দুই চামচ মুখে দিয়ে আমি টিস্যুতে মুখ মুছি। এমন সময় সেই লাস্যময়ী আমাদের টেবিলের পাশে এসে দাঁড়ায়।
- ভাইয়া একটু শুনে যান না?
পোলাপাইন অবাক হয়ে তাকায়। আমি নায়কের মতো উঠে দাঁড়াই...
- ওহ, শিওর।
বলতে বলতে লাস্যময়ীর পাশে গিয়ে দাঁড়াই। হঠাৎ করে সে চমকে ওঠে...
- কী অদ্ভূত! আপনার লুংগী গেল কই? আপনি না লুংগী পরে ছিলেন? প্যাণ্ট কোত্থেকে এলো?
এরপর আর কী করা? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লাস্যময়ীকে সেই গল্প শোনাতে হয়। কেন আমার লুংগীর স্থলে হাঁটু পর্যন্ত একটা প্যান্ট এসে পড়েছে...
(প্যাঁপ... প্যাঁপ... পিঁপ... বাকী অংশ রাত দশটার ইংরেজী সংবাদের পর। )
মন্তব্য
হাহাহাহা
জটিলস্য ম্যান, জটিলস্য।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
তাই নাকি, ম্যান?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বুঝতে পারলাম না। কোন ধরনের প্যান্ট ছিল এইটা? ইনভিজিবল বহু কিছুর নাম শুনছি প্যান্টের নাম তো শুনি নাই
এটাই তো রহস্য।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
সবটা পইড়া নেই পরে কমু..........
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আইচ্ছ্যা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
তোমার আর লেখা ঝুলায়া রাখার অভ্যাস গেলো না...
কাল লাঞ্চ করলাম অ্যারোমা-তে। একবার ভাবলাম ওয়েইটারকে জিজ্ঞেস করি লুঙ্গি পরা কেউ কয়েকদিন আগে আইসা কোন কেলেঙ্কারি কইরা গেছে কী না! তাইলে আর তোমার মেগা সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করা লাগতো না... কিন্তু ভাবলাম একতা কাপুর স্টাইলে যতোই তুমি রাবারের মতো সিরিজ টানো না কেন, এইটা পড়তেই আরাম, এইটাতেই মজা
তবে প্রথম পর্ব থেকেই বুঝসিলাম যে লুঙ্গির নিচে প্যান্ট থাকবে...
এরোমাতে একা গেছিলেন নাকি? সঙ্গে কেউ ছিল।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
সাথে দুই কলিগ ছিলো... ওইখানে যায়া দুই বালিকারে পাইসিলাম...
কলিগ দুইজনই কী মেয়ে নাকি একজন?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
তা কমু ক্যান!
আগে লেখা শেষ করো, তারপর বলবো
সাড়ে দশটা কিন্তু বাজতেসে... তোমার পরের পর্ব আসার সময় হয়া গেছে কিন্তু!
হুম...... তাইলে এই পর্ব লেখে কত পাইলেন ? ইনকাম তো এইভাবে ভালই হইতাছে , যাক রাত সাড় দশটায় দেখা হবে ।
নিবিড়
এইভাবে খোঁচা দিলেন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আরে মাইন্ড খাইলেন নাকি ? আমারো কিছু সিরিয়াল নামানোর ইচ্ছা আছে তাই খোজ নিলাম আরকি
নিবিড়
খুব মজা পেলাম।
আমিও আনন্দিত।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আবারো ঝুলাইছে.....এই লোকটার টেংরী (ঠ্যাং বা নলি) ভাইংন্গা ফালান উচিত
ওই খালাম্মা আফনেরে লুঙ্গি পড়া চিড়িয়া ঠাউড়াইয়া আফনের লগে ফটুক তুলবার আইছিল নাকি
.....................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
এখন কওন যাইবো না।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এতো কইরা কইলাম লুঙ্গির নিচে কিছু পড়িস না... একটুও শুনলি না...
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
তোরে নিয়া চিন্তার মইধ্যে আছি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমিও তরে নিয়া চিন্তায় আছি। যেমনে মানুষরে ঝুলায়া রাখতাছস কবে যে খোদাতালা বেজার হয়া তরেও ঝুলায়া দেয় তাই ভাবতাছি।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
কারেকশন ... তুফানে বেঁধেছি লুঙ্গি, বাতাসে কী ভয়।
এই পর্বটা বেশি বড় হয়ে গেলো না?
হাঁটুপানির জলদস্যু
হে হে। একটু ভুল হয়ে গেছে। অসুবিধা নাই- মূল্ভাব ঠিক ছিল।
পর্বটা বড় মনে হওয়ার কারণ আছে। ভুলে দুই পর্ব একসাথে পোস্ট করে দিছি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আগের পর্বের সাথে মিলিয়ে এই পর্বটা পড়লাম
দারুণ এগোচ্ছে
কিন্তু নামটা বোধহয় ঠিক হয়নি সিরিজটার
হে হে। একটা নাম দিয়া দ্যান। নামের ব্যাপারে আবার আমার দুর্বলতা আছে।
সিলেট রে সিলেট।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
পুরাটা না বুঝলে নামায়ন কীভাবে করি?
আর সিলেটে কী সমস্যা?
কেউ মাইর দিয়েছে?
ভেতরে না বাইরে?
জীবনে একটাই স্বপ্ন। একটা সিলেটী কন্যা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ঐ পোলা পরের পর্ব কই ? লুঙ্গী কই গেল ?
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
রাত দশটার সংবাদ শেষ হয়ে রাত বারটার সংবাদও পার হয়ে গেছে অনেক আগে । পরের খন্ড চাই
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
সিনেমায় দেখা যায় এরকম ... গুন্ডারা নায়িকাকে আধঘন্টা বৃষ্টির মধ্যে ধাওয়া করার পর ধর্ষণ করার চেষ্টা করে দশমিনিট। শাড়িটাড়ি ছিঁড়ে যায় তখন। একচল্লিশতম মিনিটে চিক্না টিঙটিঙা নায়ক দেয়াল ভাইঙা অকুস্থলে ঢোকে রোকনোদ্দৌলার বুলডোজারের মতো। তারপর পিটায়। নায়িকা দুই হাতে ব্লাউজ ঢেকে এককোণে দাঁড়িয়ে কাঁপতে থাকে। মারপিট শেষে নায়ক তার জ্যাকেট খুলে নায়িকাকে ঢেকে দেয়, সেইটা তিন অ্যাঙ্গেল থেকে ঢিশঢিশঢিশ মিউজিকসহ দেখানো হয়।
আমাদের পরিবর্তনশীল ঐ কাজটিই করেছে। কোন বিপন্না তরুণীর আব্রু বাঁচাতে গিয়ে লুঙ্গি খুলে দিয়েছে। সম্ভবত এর গেঞ্জিটা ঐ তরুণীর গায়ে টাইট হতো বেশি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মি: ম্যানারকে কি শিক্ষা দিলেন তার বিস্তারিত বিবরন দেন।
ডাইনোসরডা কই গেল ??
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
তামশা নাকি?
লুঙ্গি গেলো কই??
তার জায়গায় থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আইলো কোত্থিকা?
জাতি এই প্রশ্নের জবাব চায়...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
নির্লুঙ্গি হয়ে উলঙ্গ হলে খবরিছিলো!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ঝুলায়ে না রাইখা তাড়াতাড়ি ছাড়।
স্পার্টাকাস
নতুন মন্তব্য করুন