ঘোড়শালে ব্লগিং করা যায় নাই- তাই।

পরিবর্তনশীল এর ছবি
লিখেছেন পরিবর্তনশীল (তারিখ: শনি, ০৮/১১/২০০৮ - ৮:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক.

ভালোই হলো ঘোড়াশাল ট্যুর। সকালে ক্লাসে বসে ঘুমালাম- সন্ধ্যায় রাস্তায় শর্টপিচ ক্রিকেট খেলা হলো- রাতে সিনেমা হলে গেলাম ছবি ভক্ষণ করতে আর এক টাকা বোর্ডে থ্রি কার্ড খেললাম সারারাত। সুখ যেন উথলায়ে পড়লো এই ছয়দিন।

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিশাল এলাকা জুড়ে। মেইন গেট থেকে আমাদের ক্লাসরুমের রিকশা ভাড়া পঁচিশ টাকা - এমনই তার দৈর্ঘ্য। প্রথম দিন যাওয়ার সময় অবশ্য একটু বুকটা খালি খালি লাগছিল- গত তিনবছরে পিসিহীনা খুব কম দিনই থেকেছি, কম রাতই কাটিয়েছি। কিন্তু যখন বাস থেকে নামা হলো দল বেঁধে- গেটের বাইরের দোকানটায় চা সিগারেট খাওয়া হলো- আর দেখলাম গেটের ঠিক সামনেই রঙিন সব পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে- ''জলসা সিনেমা হল'' মনটা ফুড়ুৎ করে উঠল। বুঝলাম ভালোই যাবে সামনের কয়েকদিন।
পাওয়ার স্টেশনের সাথে লাগোয়া নদী। শীতলক্ষ্যা যার নাম। চারপাশে কেমন গ্রাম গ্রাম গন্ধ। আমাদের বোর্ডবাজারে যে গন্ধ পাওয়া যায় না। সমগ্র ঢাকা শহরে যে গন্ধ খুঁজে পাবে না।

কাপড় চোপড় নিয়ে আমাদের থাকার জায়গায় উঠলাম। বেশ পছন্দ হলো। একে বলে ব্যাচেলার্স কোয়ার্টার। যদিও আমরা ঢোকার মুহুর্তে উপর তলা থেকে এক নারী মূর্তি জানালা দিয়ে উঁকি দিল। তবুও ব্যাচেলার্স কোয়ার্টার। আর আমরা ব্যাচেলার্স।

দুই.

ক্লাসের সময় সকাল দশটা থেকে একটা। দুপুর তিনটা থেকে পাঁচটা। একেকটা ক্লাসে একেকজন স্যার আসতেন একেকটা বিষয়ে তালিম দিতে। কেউ পাওয়ার জেনারেশন- কেউ পাওয়ার প্রটেকশন - কেউ পাওয়ার মেজারমেন্ট। কিছুতেই অবশ্য পার্থক্য তৈরি হতো না। চার পাঁচজন ভালো ছাত্র বাদে বাকীরা পেছনে বসার জন্য যুদ্ধ করি। ক্লাসে বসে কেউ ঝিমাই- কেউ মোবাইলের হেডফোন কানে লাগিয়ে বসে থাকে- কেউ গল্পের বই পড়ে আর কেউ মোবাইলে গেম খেলি।
এমিল অবশ্য এদিক থেকে পুরাপুরি ইউনিক। সে ক্লাসে বসেই ফোনে কথা বলে। এ কথা আশপাশ থেকে শুনতে পাওয়া অসাধ্য। আমি অনেকবার বলতে গেলে কান ঠেকিয়ে দিয়েছি। কোন লাভ হয় না।
- ঐ। তুই কী আসলেই ফোনে কথা কস?
ফোনের ওপাশ থেকে যে মেয়ে কথা বলছে খেয়াল করলে তার কথা একটু শোনা যায়। কিন্তু এমিলের কথা না।

বিকেলে থাকত পাওয়ার প্ল্যাণ্ট ভিজিট। বিশাল বিশাল টারবাইন বয়লার জেনারেটর। দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমি পরের জন্মে ইঞ্জিয়ারিং-এ ভর্তি হবো না।

তিন.

ব্যাচেলার্স কোয়ার্টারের সামনে ছিল মাঠ। বিকেলে দেখতাম কলোনীর বাচ্চারা নানান রকম খেলায় মেতে ওঠে। একটা মাঠেই ক্রিকেট। ক্রিকেট পিচের মাঝখানে আবার গোল বার। ফুটবলও চলছে পাশাপাশি। এক পাশে মেয়েরাও খেলছে।
তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত আমাদের পাওয়ার প্ল্যাণ্ট ভিজিট হয়। এরপর আমি মাঠের পাশে এসে বসে থাকি। ওদের খেলা দেখি। মাঝে মধ্যে সিগারেট ধরাই। কয়েকজন অবাক হয়ে থাকায় সিগারেটের দিকে। হয়ত কানে কানে দুইজন বলাবলি করে- দেখ। লোকটা কী খারাপ ! সিগারেট খায়- আজ থেকে অনেক বছর আগে আমি যেমন বলতাম।
মাঝে মধ্যে সিগারেটটা ড্রেনে ছুঁড়ে মারি। লজ্জা হয় খুব। বড় হয়ে যাওয়র লজ্জা।

আরেকবার যদি তোমাদের দলে নাও খেলায়। বন্ধু তোমায় এ গান শোনাব বিকেল বেলায়।

সন্ধ্যার পর শুরু হয় আমাদের ক্রিকেট। এটা অবশ্য মাঠে নয়। মাঠের পাশে যে রাস্তা আছে সেখানে। পাওয়ার স্টেশনের কলোনী বলে বিদ্যুৎ কখনো উধাও হয়ে যায় না। রাস্তার পাশে বড় বড় লাইটের আলোয় আমরা ক্রিকেট খেলি। শর্টপিচ ক্রিকেট।
দুই তিন হাত পাশে বল উড়ে গেলেই আউট। মনে মনে ভাবি- এ খেলা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের প্লেয়ারদের নিয়মিত খেলা বাধ্যতামূলক করা উচিত। গ্রাউণ্ড শট খেলা শিখবে।

চার.

রাতের খাবারের পর নিয়ম করে গানের আসর বসে। গলা ফাটিয়ে গান গাই। কোন মিস্তরী নাও বানাইছে রে... কেমন দেহা যাই। আমাদের গানের শব্দে ঘোড়াশাল পাওয়ার স্টেশন কাঁপতে থাকে। আমার জীবনের সবচে আনন্দময় মূহুর্ত এইসব গানের আসর। পোলাপাইন বলে...
- ঐ গানটা বাজা।
আমি গোজামিল দিয়ে একটা বাজিয়ে দিই। পোলাপাইন মনের সুখে গাইতে থাকে। কেউ কেউ আবার গানের আসর থেকে উঠে যায় হঠাৎ করে। কারো বউ- কারো গার্লফ্রেণ্ড- কারো জাস্ট ফ্রেণ্ড ফোন করে। তবুও গানের আসর থামে না। কত বাহারের গান আমরা একই গলায় গেয়ে ফেলি।
গানের আসরে ফোক গান গাওয়া হয় বেশি। দল বেঁধে ফোক গান গাওয়ার কোন তুলনা হয় না। বাউলা কে বানাইলরে- হাসন রাজারে বাউলা- কে বানাইল রে?... কিংবা চঞ্চল মন আমার শোনে না কথা... চঞ্চল মন আমার শোনে না কথা...
সবুজ ভাই... জীতু ভাইদের বিশেষ গানগুলো আমাদের ঠোঁটে এসে আটকে থাকে। চলো আজ ছুটে যাই- বাঁধন হারিয়ে অজানায়। আমি ঘরের হইনি বাহির আমায় টানে- আমি তোমার হইনি আকাশটা জানে... এক হাতে... না থাক।

পাঁচ.

এরপর শুরু হয় থ্রি কার্ড খেলা। রাত বারোটার দিকে খেলতে বসি। প্রথমেই বলে নেয়া হয়- সকালে ক্লাস আছে, খেলা দুইটা পর্যন্ত চলবে। এবং ভোর পর্যন্ত খেলা হয়। এক টাকা করে বোর্ড। যে সবচে বেশি টাকা জিতে তার মুখটা কালো হয়ে যায়। কারণ এই টাকা দিয়ে সবাইকে খাওয়াতে হবে।
তবুও খেলার উত্তেজনা কমে না। মুতাসিম কার্ড দেয়ার সময় কিভাবে যেন গুড ডিল করে ফেলে প্রত্যেকবার। সবাই খেপে ওঠে... আর যদি জোকার লাগাইছস!...
হাতে ট্রয় নিয়েও জামী কল দেয় না মাঝে মধ্যে। কল নেওয়া মানে মানসিক যন্ত্রণা। ও'র মানসিক যন্ত্রণা নিতে ইচ্ছে করে না।

এরই ফাঁকে আমি মাঝে মধ্যে মোবাইলে সচলায়তনে উঁকি দিই। কিছু লেখা পড়ি। মোবাইলে বাংলা লেখা অনেক ঝামেলা বলে কমেণ্ট করা হয় না।

শেষ দিন ছিল ভাইভা। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেনে স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন...
- চট্টগ্রামের একজন বিখ্যাত লেখকের নাম বলো।
আমি দাঁত সব বের করে বললাম...
- কেন স্যার? আমি।
আমার দাঁত বের করা দেখে স্যারও দাঁত বের করে দিলেন। বললেন...
- তাই নাকি? বই বের হইছে?
- না স্যার। আমি সচলায়তনে লিখি।
এরপর স্যারকে প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে সচলায়তন নিয়ে একটা ছোটখাট লেকচার দিয়ে ফেলি। স্যার হাসি হাসি মুখে শোনেন। বুঝি- ইন্টারনেটের সাথে স্যারের তেমন সখ্যতা নেই।

সাত.

এখানে সিনেমা হলে দেখা বাংলা সিনেমা থাকার কথা ছিল। কিন্তু আজ আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। মেগা সিরিয়াল ''জঙ্গল থেকে গুলশান''এর দর্শকদের কাছ থেকেও
একটা মাইর পাওনা আছে।

আট.

ঘোড়াশাল থেকে আসার পর মনটা কেমন হয়ে আছে। আইইউটির হল থেকে বিকেল বেলা বাচ্চাদের কিচির মিচির শোনা যায় না। কম্পিউটারের সামনে বসে আছি। পুরা ব্লকে আমি একা। কেউ বাসায়- কেউ ঢাকায়- কেউ ঘোড়াশালে।
কামরুল ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু না দেখা মুভি পেয়ে গেছি। মহসীন মাকমালবাফের মেয়ে সামিরা মাকমালবফের ''at five in the afternoon''। সত্যজিতের ''গণশত্রু''''। আন্দেই তারকোভস্কির ''সোলারিস''। আব্বাস কিয়ারোস্তামি'র ''and life goes on''। দেখতে ইচ্ছে করছে আবার করছে না। prison break আর heroes এর শেষ কয়েকটা পর্বও দেখা বাকী।
আর্সেনাল- ম্যানিউ-এর খেলা চলছে। দেখতে ইচ্ছে করে না একা একা। ফার্স্ট ইয়ারে সবাই মিলে প্রজেক্ট্র স্ক্রীনে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার কথা মনে পড়ে।

হলের বাইরে ০৪ ব্যাচের ভাইয়ারা গোল হয়ে বসে আছে। কাল পরশুর পর আর দেখা যাবে না ভাইয়াদের। আমরা এখন আইইউটির সবচে সিনিয়ার ব্যাচ। ফোর্থ ইয়ার।

ফার্স্ট ইয়ারে স্বপ্ন দেখতাম কবে ফোর্থ ইয়ার হবো। আর এখন ভাবছি আমার আইইউটি জীবনে শেষ হওয়ার পথে। বোর্ডবাজার জীবন শেষ হওয়ার পথে। ছয় বছর পর ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় পাগলের মত কেঁদেছিলাম।
আজ তিন বছর পর- একটা কথা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছি। আইইউটিতে চার বছর পর আমাকে সে কান্নার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।


মন্তব্য

রায়হান আবীর এর ছবি

ওয়াও আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা, এই চরিত্রের নায়ক মহিব, হাউকাম!!!!

দিনের বেলাটা মনে হয় তোদের একটু বোরিং কাটছে...না গেলেই হয়। রুমে বইসা ঘুমাইতি। এমন নিশ্চই কেউ কেউ না কেউ করছে। এমিলের কথা কওনের স্টাইলটা আসলেই ইউনিক আছে।

টিউশনী শুধু করছি একটা। ক্লাস নাইনের স্টুডেন্ট। প্রথমদিন ওরে পড়াইতে বসে মনে মনে চিন্তা করলাম আমি কত বছর আগে ক্লাস নাইনের ছাত্র ছিলাম। প্রায় আট বছর। আট বছর, চিন্তা করসস ব্যাপারটা। মনে হচ্ছে সেইদিন। শালা বড় হয়ে যাচ্ছি আসলেই। ভাল্লাগেনা।

জাস্ট ফ্রেণ্ড হো হো হো

আরেকবার কই এই ব্লগের নায়ক মহিব এইটা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। হাউকাম!! তুই থ্রি-কার্ড খেলছস?? ক্যাম্নে কী??

বাহ তোর মোবাইলে বাংলা দেখা যায়...খুব ভালো। আমার মোবাইলটারে দিয়া পার্লাম না।

আমিও সচলে লিখি... দেঁতো হাসি

ওই শালা তোরা আসলেই গেছস ছিনামা দেখতে। মনে হয় না। আমি শুনলাম তোদের গেট থেকে বাইর হতে দেয় নাই। চোখ টিপি

একটা জিনিস আমার মনে হয় ক্যাডেট কলেজে পড়ার কারণে আইইউটি থেকে বের হবার সময় তেমন একটা দুঃখ হবে না, মন খারাপও হবেনা। কারণটা আরেকদিন কমুনে।

লেখা খুবি ভালো হইছে।

=============================

পরিবর্তনশীল এর ছবি

রুমে বইসা ঘুমাইতাম ক্যাম্নে? ক রুমে শুইয়া ঘুমাইতি। দেঁতো হাসি
জীবনটাই তো একটা জুয়া। জুয়া খেললে কী আর আসে যায়। চিন্তিত

ছিনেমা দেখছি। নাম হইল বিয়ের প্রস্তাব। দুনিয়ার সব জায়গায় ফার্স্তে গেট দিয়ে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেয় না। ব্যবস্থা করে নিতে হয়। চোখ টিপি

আমার কাছে ক্যাডেট কলেজ আর আইইউটি একই তারে বান্ধা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

রায়হান আবীর এর ছবি

দোস্ত তুই আবার আগের মহিব হইয়া যাইস না, আমি আইইউটিতে আইসা তোরে একবার দেইখখা নেই। দেঁতো হাসি

=============================

অতিথি লেখক এর ছবি

মুহিব তুই কি জানিস তোর মাঝে এমন কিছু আছে যা অনেকের মাঝেই নাই। তোর লেখা পড়ে আবার ঘোড়াশালে জেতে ইচ্ছে করছে রে!
দিলরুবার কথা লিখলিনা কেন? কি যে পেইনফুল মহিলা ছিলরে ভাই!
তোর লেখা আমি সারাজীবন পড়তে চাই। আর আমি ইচ্ছা করে গুড ডিল করতাম না। কেমন করে যেন হয়ে যেত আর সবার ঝাড়ি খেতে হত।

রায়হান আবীর এর ছবি

আরে আলামিন নাকি? হো হো হো

=============================

পরিবর্তনশীল এর ছবি

রায়হান খবর্দার। উল্টাপালটা কিস্যু বলবি না। দেঁতো হাসি

মুবি- সচলায়তনে স্বাগতম। কমেণ্ট করছস। এবার লেখা শুরু কর। তাড়াতাড়ি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

আলমগীর এর ছবি

+৫×

পরিবর্তনশীল এর ছবি

থ্যাংকু।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঘোড়াশালে ঘোড়ার ঘাস কাটা শেষ?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পরিবর্তনশীল এর ছবি

হ। তয় আরো ঘাস কাটতাম চাই।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আহারে আমার বিদায় বেলা মনে পড়ে গেল। একটা কান্নাকাটি মার্কা পোস্ট দিতে হবে দেখি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

পরিবর্তনশীল এর ছবি

দিয়ে দ্যান। বহুদিন প্রাণ খুলে কান্নাকাটি করা হয় না।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম... আইইউটি লাইফ তাইলে প্রায় শেষ ? আমি কার্ড শিখার অনেক চেষ্টা নিছিলাম কিন্তু দেখলাম এক জায়গায় এতখন বসা আমার পক্ষে সম্ভব না তাই আর হয় নায় মন খারাপ মন খারাপ । লেখা ভাল লাগছে আর গুলশান এর পরের কাহিনি পাইলে ভাল হইত ।
নিবিড়

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কার্ডের নেশা বড়ই খ্রাপ। টাইম নষ্ট করায়। খেইলেন না।
গুলশানের কথা এখনো মনে আছে?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

জীবনের সব পর্বের শেষেই চোখ ভিজে আসে। কিন্তু একটা শেষ না হলে পরেরটি শুরু হবে কিভাবে?
লেখাটি বরাবরের মতোই ভাল। পড়ে মাথার ভিতরে অনেক স্মৃতিরা নড়েচড়ে উঠলো।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আপনি লেখেন না এ কেন? খুব মিস করি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

স্বপ্নাহত এর ছবি

ঘোড়াশালে আমরা যে কোয়ার্টারে আছি ঐখানে আসছিলি? নট ব্যাড দোস্ত। অনেক গাছপালা, আর অনেক পাখি। দেঁতো হাসি
খালি ইন্সট্রাক্টরগুলা খাটায় মারতেসে।
এখনো খারাপ কাটতেসেনা। দেখা যাক সামনে কি আছে।

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

তোদের ক্লাস তো নাকি মাত্র দুই ঘণ্টা। আমাদের পাঁচ ঘণ্টা কইরা ছিল।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

চট্টগ্রামের একজন বিখ্যাত লেখকের নাম বলো।
আমি দাঁত সব বের করে বললাম...
- কেন স্যার? আমি।

চমৎকার !
প্রকৌশলী হওয়ার পর পুরোপুরি লেখক হয়ে যাও।
তখন ইচ্ছে মতো লিখতে পারবে । এসব যন্ত্রপাতি নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এরকম হইলে তো বেঁচে যাইতাম।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

বিপ্রতীপ এর ছবি

মহিব,
ঘোড়াশাল সার কারখানায় অবশ্য একবার গেছিলাম। তবে একদিনের জন্য। চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা ট্যুরের কথা মনে করাইয়া দিলা... সেই ব্লগবিহীন শুধু বন্ধুময় দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য **********
(এইখানে এতোগুলো তারা দেয়ার সুযোগ নাই মন খারাপ )

মন থেকে একখান কথা কই। তোমার মতো ছেলে ক্যান যে এইসব বালছালের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে মেধার অপচয় করে বুঝি না। তুমি লেখালেখিটা ছেড়ে দিও না কখনও...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com

পরিবর্তনশীল এর ছবি

লজ্জা দিয়েন না ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ঘোড়াশাল ছিলো আমার আড্ডার একটা জায়গা। দেশে থাকাকালীন এদিক দিয়ে বাড়িতে ফিরতাম যাত্রাবাড়ির ঐদিককার জ্যাম এড়াতে। ফেরীতে, বেশিরভাগ সময় রিজার্ভ নৌকা নিয়ে গুদারা পার হয়ে এপাশে এসে রেললাইনের ওপর দিয়ে হাঁটতাম। ঘোড়াশালের একটা দোকানে আগুন সিঙ্গারা পাওয়া যায়, পরেরবার গেলে ঐখান থেকে ঠোঙা ভর্তি সিঙ্গারা নিয়ে রেললাইনের পরে হেঁটে দেইখেন। ব্যাপক মজা!

স্বপ্নাহত'র মতো প্রকৃতি নিয়াও কিছু লেখেন। 'গাছ আর পাখি' সম্পর্কেও আমরা জ্ঞান আহরণ করি কিছু! চোখ টিপি

বিদায়ের সময় খারাপ লাগলে 'আইতাছে সময়ে'র ব্যাপারে জোর করে থ্রীল অনুভব করতে থাকবেন। হুদাই মনে করবেন আনেওয়ালা কাল একজন জ্বলজ্বল ললনার সাথে টক্কর লাগতে যাচ্ছে আপনার। মন দেখবেন টর্ণেডোর মতোন গতিতে ভালো হয়ে গেছে, এইটা পরীক্ষিত! চোখ টিপি

আর কী লিখুম? দেখা হইলে মাইর পাওনা রইলেন। কিয়ের লাইগ্যা, সেইটা তো নিজেই লেইখা গেছেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কবে হইব দেখা? সম্ভাবনা তো দেহি না।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

মজাদার। কিন্তুক কথা হইলো...
গল্প-টল্প লেখা ছেড়ে দিলেন নাকি? ওদিকে এমনিতেই আপনার পায়ে ছেঁড়া স্যান্ডেল, তার ওপর লুঙ্গিও পড়েছে খসে... আমরা, আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীরা, বড়োই টেনশনে আছি!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পরিবর্তনশীল এর ছবি

টেনশ্ন কইরেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে। হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

দ্রোহী এর ছবি

হুম............পোলাপাইনরে বড় ঈর্ষা হয়!!!!!!!!!!!!!


কী ব্লগার? ডরাইলা?

পরিবর্তনশীল এর ছবি

হ। পোলাপাইন বড়ই সুখে আছে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

কুচ্ছিত হাঁসের ছানা এর ছবি

ক্যাডায় জানি কইছিল,আইইউটি লাইফের সবচেয়ে মজার টাইমটা হল ঘোড়াশালের টাইম। আসার দিন এতটাই খারাপ লাগবে টের পাইনি। মাত্র ছয়দিনেই যে একটা জায়গাকে এতটা পছন্দ করা যেতে পারে, ভাবি নি।

ফোর্থ ইয়ারে উঠাটা এনজয় করতে পারছি না একদমই। ভাইয়া দেরকে দেখলাম একটু আগে যার যার গাড়িতে তাদের সবকিছু তুলে নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে এই লাল দেয়ালে ঘেরা স্বর্গ থেকে। দেখে ঠিক এক বছর পরের কথা মনে পড়ে গেল। নাহ,ভাল্লাগতেছে না একদম।

"দুনিয়ার সব জায়গায় ফার্স্তে গেট দিয়ে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেয় না। ব্যবস্থা করে নিতে হয়। "

পুলাপান খ্রাপ হৈআ গ্যাসে চোখ টিপি

মুবাইলে কতা কওয়ায় এক লম্বোর যেই হালায় আছিল, হ্যার নামই তো কইলি না। সেইডা আর কেউ না, আমাগো ক্যাপটেন প্ল্যানেট ওরফে হেড বয় ওরফে গুরুপ ক্যাপটিন ওরফে প্রেমিক পুরুষ "নিয়াম মিয়া"

দোছ, চল আবার যাই ঘুরাশালে। গিয়া ঘুরা না দেখি, ঘুরার ঘাস তো কাটবার পারুম।

*******************************
আমার শরীর জুড়ে বৃষ্টি নামে, অভিমানের নদীর তীরে
শুধু তোমায় বলতে ভালবাসি, আমি বারেবার আসব ফিরে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভাগ্য ভালো তোদের গ্রুপটা আমাদের সাথে গেছিল। নাহইলে আমাদের যে গ্রুপ - তিনদিন পর হার্ট এটাক করতে হইত।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

কীর্তিনাশা এর ছবি

লেখায় আপনারে ৫ তারা দিলাম। চলুক

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

থ্যাংকু।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

রানা মেহের এর ছবি

ক্যাডেট ছাড়ুন আইইউটি ছাড়ুন
তবু যেন দেশ ছাড়ার যন্ত্রনায় আপনাদের না যেতে হয়।
সে যে কি কষ্ট বলে বোঝানো যাবেনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

পরিবর্তনশীল এর ছবি

মন খারাপ
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ঘোড়াশাল জায়গাটা অনেক সুন্দর। আমরা যখন গেলাম, অনেক মজা হইসিলো। কেলেঙ্কারিয়াস মজা! দেঁতো হাসি

- চট্টগ্রামের একজন বিখ্যাত লেখকের নাম বলো।
আমি দাঁত সব বের করে বললাম...
- কেন স্যার? আমি।

লেখা নিয়ে কী আর বলবো! তবে একটা জিনিস কী জানো, আমার কেন যেন মনে হয়, আরো বড়ো হয়ে তুমি অনেক বিখ্যাত কেউ হবা। আর আমরা, সচলের সবাই, একজন বড়ো মাপের লেখকের বেড়ে ওঠা খুব কাছ থেকে দেখতেসি। তবে শোন, আইইউটির ছেলেদের বেসিক সমস্যা হলো, এরা সাধারণত কোনকিছুতেই সহজে সিরিয়াস হয় না। লেখালেখি নিয়ে তাই কখনো হেলাফেলা কইরো না রে ভাই, সিরিয়াস হও এই বিষয়টাতে। চালায়া যাও...

তোমার জন্য মন থেকে অনেক দু'আ আর শুভকামনা থাকলো হাসি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

খুব লজ্জা পেলাম আপনার কমেন্ট পড়ে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।