আমার সাদাসিধে জীবনে এই টার্মটা খুব একটা আসে না। মাঝে মধ্যে কিছু আনন্দের ঘটনা ঘটে, আনন্দিত হই, হাসি, তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি। কিন্তু আনন্দে চক্ষে পানি নেমে আসা? হয় না খুব একটা।
১৯৯৭ সালের একবার খুশিতে চোখ ভিজে গিয়েছিল, মনে আছে। তখন বিকেল ছিল কী? ঐ যে এক বলে এক রান যখন দরকার ছিল। ঐ যে, ক্রিকেট বলটা প্যাডে কি ব্যাটে লাগিয়ে হাসিবুল হোসেন শান্ত দৌড় দিল পিচের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ঐ যে, আমরা কোটি কোটি মানুষ হাসিবুল হোসেন শান্তর সেই ঐতিহাসিক দৌড়ের সাথে সাথে পৃথিবীর দিকে গর্বিত পায়ে দৌড়াতে শুরু করলাম! বললাম, "দাঁড়াও! আমরা আসছি।"
আজকেও চোখ ভিজেছিল কী? এখন তো চোখে হাই পাওয়ারের চশমা, ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। তবু,অসাধারণভাবে ভারতকে সাইজ করার পর কী করব বুঝে উঠতে না পেরে আমরা যখন চাটগাঁর স্টেশন রোডের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলাম- নিধি যখন বারবার নুপূর আপু আর নজরুল ভাইকে বলছিল- সে মিছিল করবে, আনন্দ মিছিল- অদ্ভূত এক অনুভূতি নিয়ে দেখলাম আমার চশমার কাঁচ ভেদ করে সব কেমন যেন ঝাপসা লাগছে। বৃষ্টি পড়ছে নাকি? আনন্দ আর বিজয়ের বৃষ্টি!
আহ, ক্রিকেট! আহ, বাংলাদেশ!
বাঙালির যেমন ভাতের প্রতি টান, তেমন ক্রিকেটের প্রতিও। সেই ক্লাস ফাইভের কথা-ই বলি না কেন? বাংলা রচনার খাতায় লিখতাম ঠিকই- ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার কিংবা শিক্ষক হতে চাই, অথচ মন পড়ে থাকতো বাসার সামনে নিজের মতো করে গড়ে তোলা স্টেডিয়ামে। যখন কল্পনাটা একেবারে উড়ে যেতে চাইত, তখন মনে মনে বহুবার খালেদ মাসুদ পাইলট কিংবা মোহাম্মদ রফিক হয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেছি, পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর পতাকাটা বুকে জড়িয়ে।
না, সামর্থ্যের অভাবে আমার ক্রিকেটার হওয়া হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যখনই মাঠে নেমেছে- কোটি কোটি মানুষের সাথে আমিও অদৃশ্য থেকে মাঠে নেমেছি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যতবার বলটাকে বাউন্ডারি বাইরে উড়িয়ে মেরেছে- আমিও অসীম এক উৎসবের দিকে উড়ে গেছি। বাংলাদোশের বোলাররা যখনই উইকেট পেয়ে বিজয়োল্লাস করেছে- আমিও মনে মনে বাংলায় চিৎকার করেছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যতবার মাথা উঁচু কিংবা নিচু করে মাঠ থেকে ফিরেছে- অগণিত মানুষের সাথে আমিও তাদের পাশে থেকে- পরের ম্যাচে মাথা উঁচু করেই মাঠে নামবার শপথ নিয়েছি।
পৃথিবীর মানুষকে প্রতিনিয়ত আমরা জানিয়ে দিয়েছি, বাংলার বাঘেরা বারবার গর্জে ওঠে এমন করে!
মন্তব্য
অতিরিক্ত আনন্দের মধ্যে কি লিখলাম জানি না! তবুও এই দিনটাকে কিছু একটা লিখে ধরে না রাখাটা মনে হইলো, পাপ!
ক্রিকেট দর্শক হিসেবে আমি পেশাদার।
আজকের জয়ের আনন্দের সাথে সাথে ফাইনালে খেলার হিসাব নিয়ে ব্যস্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসামান্য কাম ব্যাক (নাসির-সাকিব জুটি) এর পরে ম্যাচ হারের কষ্ট এখনো আজকের জয়ের চেয়ে বেশি। ভারতকে ২৮৯ এ আটকানোর পরে এই উইকেটে ইন্ডিয়ান অ্যাটাকের বিপক্ষে জয় প্রত্যাশিত ছিলো।
ধারাবাহিকভাবে জয় দরকার, এখানে ওখানে এক ম্যাচ দুই ম্যাচ জয় নিয়ে বেশি আনন্দ হয় না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমিও নিজেরে মোটামুটি পেশাদার দর্শক মনে করি!
কিন্তু আইজকার জয়টা আনন্দ টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি দিয়া দিল।
আমার ক্ষেত্রে আনন্দের চেয়ে 'সন্তুষ্টি' শব্দটা বেশি প্রয়োগযোগ্য। যে সামর্থ্য দলের আছে, সেই সামর্থ্য তারা মাঠে দেখিয়েছে, এটাই সন্তুষ্টির।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ঐদিনের সহজ ম্যাচটা জিততে পারলে ফাইনাল খেলতাম।
ঠিক। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ফাইনালের বাকি প্লেসের জন্য মাইরপিট করতো। এখন এমনকি শ্রীলংকাকে হারালেও আমাদের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত না। পাকিস্তানের সাথে বোনাস পয়েন্টসহ জিতলে ইন্ডিয়া ফাইনালে। আর শ্রীলংকার সাথে আমরা হারলে, ইন্ডিয়া এমনকি পাকিস্তানের সাথে হেরেও ফাইনাল খেলতে পারে। হেড-টু-হেডে থ্রিওয়ে টাই হবে, রানরেটে তিন দলের যারা এগিয়ে, তারাই ফাইনালে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হিসেব বলছে ভারত যদি হারে পাকিস্তানের কাছে, বাংলাদেশের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে বেশ অনেকটাই। শ্রীলঙ্কার সাথে জিতে গেলে তো কথাই নেই, হেরে গেলেও সেক্ষেত্রে ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আজকের ম্যাচের সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো গত একবছর ধরে ইন্ডিয়ানরা যে দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলো, সেটা তারা আনন্দের সাথে উদযাপন করতে পারবে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
একবছর ধরে কেনো বস ?? কি জন্যে অপেক্ষা ??
শচীনের শততম সেঞ্চুরি।
শচীনের আগের সেঞ্চুরিটা ছিলো গতবছর ১২ই মার্চে। ১০০তমটা পেতে ১ বছর ৪ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। পুরো ভারতই, ইন সাম এক্সটেন্ট পুরো ক্রিকেট বিশ্বই, অপেক্ষা করেছে।
অবশ্য টেন্ডুলকারের জন্য সমবেদনা। আজ সেঞ্চুরির পরে বরং তার সম্পর্কে সেই 'টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি মানে ভারতের হার' - এই ভুল কথাটা আরো জনপ্রিয়তা পাবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বাংলাদেশের যে কোন বড় অর্জনেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। হাতেতো তেমন কিছুই নেই, আছে ঐ আবেগটুকুই। ওটা নিয়েই বেঁচে আছি।
ধন্যবাদ, লেখাটার জন্য। গর্ব, বাংলাদেশ টাইগারদের জন্য।
সেটাই।
আজকের দিনটা অনন্য। কিন্তু ১১ তারিখের জ্বালা জুড়োবার নয়।
এশিয়া কাপ আমাকে কেবলই এক বছর আগের বিশ্বকাপের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। আজকের খেলায় মনে পড়ছিল ১১ মার্চে ইংল্যান্ডের সাথে আমাদের
খেলাটার কথা।
এমন কি হতে পারে না যে আমরা শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিলাম, ফাইনালে পৌঁছে গেলাম, জ্বালা জুড়োবার আরেকটা সুযোগ পেলাম, হতে পারে না?
স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কী?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
হবেই হবে। হতেই হবে।
facebook
জয়তু বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম!
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
ওরা জিতে বইলা মাঝে মাঝে দুঃখ ভরা দিনগুলাতে আমরা হাসতে পারি।
আমি খেলা দেখি নাই। ফেসবুকে লোকজনের স্ট্যাটাস ফিড দেখছিলাম। এক পর্যায়ে ঠিক করলাম, বাংলাদেশকে আজ জিতিয়ে দিতে হবে। তখন এক মগ চা নিয়ে চলে গেলাম ভাবনঘরে। ভাবলাম মিনিট দশেক। পাকসাফ হয়ে ফিরে এসে দেখি খেলার মোড় ঘুরে গেছে। অথচ এখন স্মার্ট লোকেরা এসে স্মার্ট স্মার্ট কথা বলছে। কেউ বলছে আশরাফুল নাই তাই। কেউ বলছে টিম এফোর্ট তাই। কেউ বলছে শচীনের বলখেকো সেঞ্চুরি তাই। অথচ স্মার্ট লোকেরা বোঝেই না যে আমি চা নিয়ে ভাবনঘরে ঢুকলে বাংলাদেশ জিততে বাধ্য।
পুরা ঘুমায় কাটাইছি। খেলা হৈতেছে এইটা আমার কানে গেলেও বাংলাদেশ ফেইল মারে। বাংলাদেশ জিতানোর জন্য বাইল্যকাল থেকে খেলা না দেখার এই আত্মত্যাগ করে আসতেছি।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
পরীক্ষা ছিল, বাসায় এসে হাইলাইট দেখে উত্তেজিত হয়েছি। শান্তি শান্তি। সচলে আর ফেস্বুকে আজ উৎসব।
এবার পরের দান!
শাফি।
হিমু ভাই, এইসব কইয়া লাভ নাই।
নিধির সাথে আমার দেইখা হইসেই বইলা বাংলাদেশ জিতসে। চিন্তা করতাসি নেক্সট ম্যাচ দেখার জন্য ঢাকায় যামু- নিধির লগে বইসা একসাথে খেলা দেখুম।
বাংলাদেশ না জিইতা যাইব কই?
খেলার রেজাল্ট জেনে বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশের জার্সি পরে আবার অফিসে আসছি। ভারতীয় গুলার নাকের সামনে দিয়ে ড্যাং ড্যাং করে ঘুরতেছি। এদের চেহারাগুলা দেখতে যা জুশ লাগতেছে না কি বলব??!!?!! খিক খিক খিক!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমার কাজের জায়গায় ৫৩০ জনের মাঝে ৩৭০ জনই ভারতীয়।
খেলা না দেখেই যে আনন্দ পাওয়া যায় আজকে বুঝলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
তানিম আউট হওয়ার পরে আর খেলা দেখার সুযোগ পাই নাই। পুরোটা সময়জুড়ে ভেতরে দেড্ডেহা-পাশ্সিয়া হৈতাছিলো। সুযোগ পাওয়ামাত্র ক্রিকইনফোর সাইটে হেডলাইন দেখেই সাত পাউন্ডের হার্টটা কয়েকটা বিট মিস করে ফেললো। মনেহলো, আমি মৈরাই যামুগা...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জন্মের সময় বেশ শক্ত একটা হার্ট নিয়াই জন্মাইছিলাম। বাংলাদেশের খেলার টেনশন নিতে নিতে সেই শক্ত হার্টের এখন নড়বড়ে অবস্থা।
শাফি।
আহারে ক্রিকেট! এই খেলা দেখার সৌভাগ্য হয় নাই। ছাত্র জীবনের পাট চুকলে সব সুযোগ কমতে থাকে ঃ(।, সকালে অফিসে গিয়েই খবরটি দেখলুম। পৈশাচিক আনন্দ পেলুম।
কাজে থাকলে ক্রিকইনফোতে লাইভ কমেন্ট্রি দেখি। ঐটার মজাও আলাদা।
ক্রিকইনফোতে বিস্তারিত পড়ার সময় আমারও ৯৭-এর কথা মনে পড়ছিল। কতো কি মন্তব্য করতে ইচ্ছা করছে, কিন্তু কিছুই লিখতে পারছি না। তবে বেশি কিছু বলতেও চাই না। আমি আবার কুফা লাগাতে (এখন অবশ্য মনে হচ্ছে এই দলে আরও অনেকেই আছেন) ওস্তাদ।
সাকিবের দর্শকদের উদ্দেশ্যে বাংলা বলাটা ভালো লেগেছে।
হুম।
হাইলাইটস্
...........................
Every Picture Tells a Story
এইসব সময়ে চারপাশে পটকা ফাটানোর আওয়াজ শুনে লোভ সামলানো মুশকিল হয়ে যায় মাঝেমাঝে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমার কাছে একটা বিষয় ঢুকছে না। ২৬২ করতে গিয়ে বাংলাদেশের সবাই স্টাম্প ছেড়ে দিয়ে এসে খেলেছিলো। আমার এখনো মনে আছে রাজ্জাকের উইকেট সে প্রথমের দিকে এসেই বড় সট খেলতে চেয়েছিলো আর আজ সবাই মাথা ঠান্ডা করে খেললো। আমার কাছে দুটা ম্যাচ দেখে মনে হলো এই ম্যাচ জেতার জন্য বাংলাদেশ তাদের পুরো ক্ষমতা দিয়ে খেলেছে যেটা তারা আগের ম্যাচে করেনি। আর এখন দেখতে হবে শ্রীলঙ্কার সাথে কারণ যদি শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশ হাড়ে তাহলে বলতে হবে কিছু একটা সমস্যা আছে এই ম্যাচে কারণ শ্রীলঙ্কাকে ভারত ও পাকিস্তান দুজনেই হারিয়েছে আর সেই ভারতকেই আবার বাংলাদেশ হারিয়েছে।
আমার তো মনে হচ্ছে এভাবেই হবার কথা ছিলো আর এতে বাংলাদেশের কৃতিত্ব নেই কারণ যদি এই ম্যাচে ভারত জিতে যেত, তাহলে পরের দুটা ম্যাচের কোনো ভ্যালুই থাকত না আর টিকেট কিনে কেউ দেখতেও আসত না।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আসরে বাংলাদেশ না থাকলেও কবে, কোন বিগ ম্যাচে গ্যালারি ফাঁকা ছিলো বলেনতো ভাইজান! তখন কি ট্রাকে করে, মুড়ি আর কলার লোভ দেখিয়ে স্টেডিয়ামে দর্শক এনেছে বিসিসিবি?
আর, আপনের মনে হওয়া হাওয়ানুযায়ী, এভাবেই যদি হবে, বাংলাদেশের কৃতিত্ব যদি নাই থাকবে তাইলে ভারতের ইনিংস বাংলাদেশের জন্য আপাত অসাধ্য ২৮৯-এ গিয়ে থামলো ক্যান? ১৮৯ কিংবা হুদা ৮৯ হলে মহাভারতের পাণ্ডবদের রথের চাকা কি উল্টা ঘুরতো? নাকি বলবেন যে ভারত 'এতো কম রান' কোনোদিনই করে নাই!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
রামছাগলের কথায় নাচেন কেলা?
ভারতের বিরুদ্ধে জেতার আনন্দের পাশাপাশি আফসোসও হচ্ছিল খুব, পাকিদের সাথে ওই ম্যাচটা ওভাবে হারার জন্য! দেখা যাক শ্রীলঙ্কার সাথে কী হয়। আশাবাদী।
নতুন মন্তব্য করুন