নদীমাতৃক
কিন্তু, হাত দুটো তোমার এত হ্রস্ব ছিল তখন- শত চেষ্টা করেও মেঘের চোখ থেকে ঝরে পড়া অজস্র জলকণার একটি বিন্দুকেও ছুঁয়ে দেখা হতো না। তোমার মন খারাপ হয়ে যেত। বৃষ্টির ওপর অভিমান হতো খুব। যেন বারান্দায়- পায়ের দশটা আঙুলের উপর ভর দিয়ে বৃষ্টি পানে হাত বাড়িয়ে দিয়েছ যে তুমি- তার আঙুলে পৌঁছোতে না পারা ঐ বৃষ্টিরই ব্যর্থতা, ঐ অজস্র জলরাশিরই ভুল।
বৃষ্টির ওপর অভিমান করে থাকা তোমার মুখ দেখে মা হাসতো। বলতো- "বোকা ! "
এই বলে মা তার দু'হাত বাড়িয়ে দিতো বৃষ্টির দিকে। তুমি আড়চোখে দেখতে- আকাশ থেকে জল গড়িয়ে তোমার মায়ের সবুজ কর'তলে পড়ছে। পড়ছে তো পড়ছেই।
খানিক পরে- বৃষ্টি ভেজা শেষে মা যখন তার দু'হাতের মুঠো তোমার সামনে মেলে ধরতো- তুমি অবাক বিস্ময়ে দেখতে- একটা নদী!
তুমি দেখতে একটা ছোট্ট নদী - তোমার মায়ের দু'হাতের কোলে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে। তুমি দেখতে- তোমার মায়ের চুলের প্রতিবিম্ব ঐ নদীর বুকে যেন জারুল গাছের ছায়া হয়ে তিরতির করে কাঁপছে!
ইদানীং বৃষ্টি এলেই তোমার সেই নদীটার কথা মনে পড়ে যায়, তাই নয় কী?
ইদানীং বৃষ্টি এলেই তোমার সেই ছোট্ট নদীটার কথা মনে পড়ে যায়, তাই নয় কী?
এখন এই অবেলায় ঘোর লাগা বর্ষণে তোমার বজ্রের মতোই আর্তনাদ করতে ইচ্ছে করে, তাই নয় কী?
এখন এই বর্ষার রাতে তোমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে-
"মা, আমি যদি সেই নদীর মতন হই?
মা, আমি যদি তোমার হাতে ছোট্ট নদী হই?
মা, যদি আমি নদী হয়ে তোমার হাতেই রই?
মাগো, প্রতি রাতে আমি যদি তোমার কর'তলে
সে নদীটায় নৌকো হয়ে একলা ভেসে রই?"
মন্তব্য
আমি ফাস্ট! মুহাহাহাহা...
লেখাটা বোধহয় নীড়পাতায় আসার আগেই পড়েছি। মুহাহাহাহা...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মন খারাপ করে দেয়ার মতো দুর্দান্তরকম ভালো একটা লেখা!
বৃষ্টি হচ্ছিল কিছুক্ষন আগে,দেখছিলাম, ভাবছিলাম । খুব বেশী ছুয়ে গেল মনটা ।
কিছুদূর পড়েই মনে হল আবৃত্তি করার মত একটা লেখা। থিসিস লেখা ফেলে হাঁসার মত ফ্যাসফ্যাসে গলায় পড়েও ফেললাম। চমতকার লাগল। মার জন্য মনটা কদিন ধরে বেশ খারাপ, সেটা আরো বেড়ে গেল।
আপনার আগের লেখাগুলি ও পড়েছি। কখনো বলা হয়নি, আজকে এই সুযোগে বলে যাই, আপনি খুবই ভাল একজন লেখক। আপনার লেখা আমার খুব ভাল লাগে। শুধু একটু কষ্ট করে আরেকটু নিয়মিত হোন, তাহলেই হবে।
বৃষ্টি আমার ভীষণ প্রিয়। খুব ছুঁয়ে গেল আমাকে, কিন্তু এত ছোট্ট কেন, পড়তে না পড়তেই শেষ হয়ে গেল যেন।
ট্যাগ ঠিক নাই, একদম ঠিক নাই। দারুণ একটা লেখা।
অকপট এবং দারুণ!
মায়াবী সুন্দর
ছুঁয়ে গেলো, লেখাটা পরাণের গহীনে ছুঁয়ে গেলো !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
"তুমি দেখতে একটা ছোট্ট নদী - তোমার মায়ের দু'হাতের কোলে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে।"
কি অদ্ভুত সুন্দর করে লিখেন আপনি!
এতোদিনেও আমার মুগ্ধতা বিন্দুমাত্র কমার সুযোগ পেলো না।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপনার লেখাটা পড়ে আমার ছোট্ট শিহানের ছোট ছোট হাত দিয়ে গ্রীলের ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির ফোঁটা স্পর্শ করার প্রানান্তকর দৃশ্যটা মনে পড়ে গেল।
পাতা জুড়ে মুগ্ধতা!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মুগ্ধতা... জারুল বুঝি আপনার খুব পছন্দ? আমার সবচাইতে পছন্দের ফুল জারুল। ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা
মাগো, প্রতি রাতে আমি যদি তোমার কর'তলে
সে নদীটায় নৌকো হয়ে একলা ভেসে রই?"
ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে গেছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
খুব সুন্দর।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অনেকদিন পর
অলস সময়
বাহ্ আরামদায়ক লেখা...!
এম্নে কেউ ল্যাখে ! মন খারাপ করিয়ে দেন খালি।
যান বৃষ্টি দেখেন।
নতুন মন্তব্য করুন