শুয়াচান পাখি অথবা মাইক্রো ক্রেডিটনামা-- (দুই পর্ব একসঙ্গে)

কুলদা রায় এর ছবি
লিখেছেন কুলদা রায় [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২০/০৭/২০১০ - ১১:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

............................................
প্রথম পর্ব--
............................................
কেউ রোদ কুড়ায়। কেউ ছায়া কুড়ায়। মাঝে মাঝে পাতা। কোন পাতা? আমপাতা জামপাতা-- বেনে বউ রূপকথা।। হি হি হি। জলকথা মলকথা। পদতল চুপকথা।। এরপর আকাশ। এরপর বাতাস। এরপর ধরনী, দ্বিধা হও গো মা জননী।এ প্রাণ রাখি কেমনে!

এইখানে এসে সুতো ফুরিয়ে গেছে। সুঁইটা চোখের সামনে ধরলে ফুটোর মধ্য দিয়ে দেখা গেল—বেলা বিলের মাঝখানে উঠে পড়েছে। দরিয়াবানু পাতিলের মধ্যে হাত দিয়ে বলল, ভাইগো, দুটো খুদ কুড়ো ফুটাই।
ততক্ষণে একটি তক্ষক সুড় সুড় করে উঠে গেছে তালগাছে। তালের গায়ে হলুদ বর্ণ আসতে শুরু করেছে। দূরে কোথাও টুব পাখি টুব টুব করে ডাকছে। একটি ডেকে উঠছে—ডুব। আরেকটি উত্তর দিচ্ছে—টুব। একটানা। তক্ষক ভ্রু কুঁচকে আছে। চুলোর উপরে টগবগ করে জল ফুটছে। একদলা লবণ খুঁজতে লেগেছে দরিয়াবানু। টুব পাখি দুটো দুরে সরে যাচ্ছে।

এ সময় ঘাট থেকে মঞ্জু মুন্সী হাঁক দিল, চাচীগো, খবর আছে।
দরিয়াবানু চুলার জ্বাল কমিয়ে দিয়েছে। জল শুকিয়ে এসেছে। সরা দিয়ে ঢেকে দিল। ফুস ফুস করে বাষ্প বের হচ্ছে। সোনাবরুর কপালে হালকা তাপ আছে। পাশ ফিরিয়ে শোয়ালো। বলল, বুনডি, ডালিম পাতা ভাইজা দিমুনে।
মঞ্জু মুন্সীর সঙ্গে পুতলি বেগম এসেছে। উত্তেজনায় টগবগ করছে। ফটাফট করে ছবি তুলছে দরিয়াবানুর ভিটেমাটির। তালগাছে বাবুই পাখির বাসা ঝুলছে। একটা হাতপা ছড়ানো গাবগাছ। এইখানে মুন্নির জাবনা ছিল। দড়িদড়া এখনো পড়ে আছে। একটা জগডুমুর গাছের ডাল জলের উপর ঝুঁকে আছে। পশ্চিম কোণে বাঁশঝাড়। একটু তফাতে পুকুর। জামগাছের কাণ্ড ঘিরে ডাইয়া পিড়ের বাসা। পুতলি বেগম নোট করছে, এইখানে একটি ডিপ টিউব ওয়েল—ফ্রেস ড্রিংকিং ওয়াটার। গলায় ঝোলানো গ্রীনকার্ড। ইহার পানি আর্সেনিকমুক্ত। চালটা পাল্টে দিতে হবে। খড়ের ছাউনি নট। টিন লাগবে—বাঘমার্কা ঢেউতোলা টিন। একটা মৌবাক্স। একটা দুধের গাই। সেনিটারি পায়খানা। এইখানে থেমে পুতলি বেগম বলে উঠল, ও বুড়ি, তোমার জন্য বায়োগ্যাস প্লান্ট।

মঞ্জু মুন্সীর তেষ্টা পেয়েছে। বুড়ির জলের কলসীর মুখ খোলা। একটু থেমে কলসীরটার দিকে আবার গেল। ওয়াটার বোতল আনতে ভুলে গেছে। পুতলি বেগম তার বোতলটি এগিয়ে দিয়ে বলল, আপনেরা কি যে করেন, আরেকটু ইসমার্ট হন। উইদাউট ওয়াটার বোতল-- নোট ট্যুর। জলবৎ তরলং।
নকশী কাঁথাটি বারান্দায় বিছানো আছে। নানা এ্যাঙেল থেকে পুতলি বেগম ফটো নিতে লাগল। ক্যামেরায় চোখ রেখে বলল, বুড়িগো, তুমারেতো বললাম, বোররাকের ছবি খাড়তে। কি করছ? শুঁয়াচান পাখি? চিনন যায় না। খাড়বা-- বোররাক উইড়া যাচ্ছে। উপ্রে লেখা—যাও পাখি বল তারে
সে যেন ভোলে না মোরে।

ভাই খুব পছন্দ করবে। ফাটাফাটি। পাখি যাও। ঝামেলা কইরো না। হি হি হি।
বলেই ব্যাগ থেকে দুটো বই আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল আর বায়োগ্যাস ব্যবহারের সুফল—বের করে কাঁথার ঘরে ভিতরে রাখল। আর রাখল ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ে হার্ডভার্ট উইনিভার্সিটির গবেষণাপাত্র। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা তর্জমা। এবং এক প্যাকেট রাজা কন্ডোম। আলট্রা থিন। ডটেড। বলল, বুড়ি ঘরে রাইখো।

--এইডা কি, সুতা নি?
--কন্ডোম। কনট্রাসেপটিভ। এ ছাড়া উপায় নাই। সেভ দি আর্থ। পৃথিবী বাঁচাও।
--কন্ডোম দিয়া কি করুম। আমি বেওয়া বুড়ি। তিনকাল গেছে। লগে নাবাল্লোগ নাতনী। সুতো দ্যাও। কাঁথাডা শ্যাষ করা দরকার।
আকাশের নিচে ধানক্ষেত। ফড়িং বসে আছে। সুতো না হলে কাঁথা শেষ হবে কিভাবে?

পুতলি বেগম গোছগাছ করতে করতে বললে, সুতো আনা হবে। ভাই আসার আগে কাঁথাডা শ্যাষ কইরো। কাপড় আর সুতো আনুম নে। চিন্তা নাই। ভাই দেখার পরে নতুন কাঁথা শুরু করবা। চিন্তা নাই। শুঁয়াচান পাখি নট। বোররাক উইড়া যাইতাছে। তেজি বোররাক। কেউ ধরতে পারে না। হাওয়ার আগে চরে। ভাই আসবে।
--ভাই কেডা, মুজিবর? শ্যাখ মজিবর?
--ব্যাকডেটেড। মজিবর হইব ক্যান। ডক্টর ইউনুস।
--ইউনুস নবী?
--বুড়ি দেখি কিছু জানে না। একদম ইললিটারেট। ইউনুস নবী না। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। বাপ অব মাইক্রো ক্রেডিট। নোবেল পাইছেন। ফ্রেন্ড অব ক্লিন্টন।
সোনাবরু ঘুমিয়ে পড়ার আগে বই দুটো নেড়ে চেড়ে দেখল। টিউবওয়েলের নিচে একটি বালিকা হাত দিয়ে জল খাচ্ছে। কানে হলুদ দুল। তুলতুল। ফুঁ দিয়ে ফোলাল আলট্রা থিন কনট্রাসেপটিভ। ডালিম পাতার ভাজি ঠোঁটে লেগে আছে। সেভ দি আর্থ। একটি তরমুজের চেয়েও বড় নিরাপদ বেলুন। উইড়া যাইওগো পঙ্খি কোনবা দূরের গাঁও। আইনা দিও আমার লাইগা ময়ূরপঙ্খি নাও।। ঘুমিয়ে পড়ার আগে সোনাবরু বেড়ার ফোঁকর দিয়ে দেখতে পেল বিলের উপর দিয়ে শুঁয়াচান পাখি উড়ে আসছে। হাওয়া থেকে সা সা করে নেমে এসেছে। জলের উপর বসেছে। ঠোঁট খুলে বক বক করে বলছে, মনে রেখ, ভুলো না আমায়।

এ সময় দরিয়াবানু পিছন দিক দিয়ে জাংলায় ঢুকে পড়েছে। মরিচগাছ থেকে বেছে বেছে লাল মরিচ তুলছে। দুটো ঢেঁড়শ বত্তি হওয়ার আগেই পট করে তুলে কোঁচড়ে রাখল। পুঁই লতাটিকে মাটি থেকে তুলে দিল ঝামটি গাছের উপর। পুকুর থেকে হাঁস দুটো গলা তুলে হাঁক দিয়েছে, পাক পাক পাক। শুষণী শাক তুলতে তুলতে ভুলে গেল, ফতে মোল্লার মেজ বিবি নটে শাক চেয়েছিল। টাকি মাছের মুড়ো দিয়ে নটে শাক খেতে খেতে মেঝ বিবি তাকে পুনরায় গর্ভধারণের বৃত্তান্ত বলতে চেয়েছে। ঘরামি বাড়ির মহাদেবের নাতিটির মুখে ভাতের মুড়ি ভেজে দিতে হবে। এ সময় মনে হল, পুকুরের জল থেকে ইউনুস নবী ইশরার করে ডাকছেন মাছটিকে। মাছটির পেটে লাল দাগ। আর কিছু দ্রুত হাতে করা শক্ত সেলাই। সেলাই দেখে মা জননী দ্বিধা হও। এ প্রাণ রাখিব কেমনে।

ঘাটে এসে মতিয়ার নীরবে ছোট বস্তাটি নৌকা থেকে নামাল। গামছার খুট দিয়ে কপালের ঘাম মুছল। ততক্ষণে তালগাছের মাথার কাছে তক্ষকটি বার দুয়েক জিহ্বা বের করে আকাশের দিকে তাকিয়েছে। সূর্য পাটে বসার আগে কেঁদে ফেলে। এইসব দেখে শুনে শুঁয়াচান পাখিটি জলের উপর থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে ডানা মেলে ওড়ে। গান গায়। মতিয়ার পাখিটি দেখতে দেখতে ডেকে ওঠে, সোনাবরু। সোনাবরু।

সোনাবরু তখনি পাশ ফিরতে ফিরতে শুনতে পেল বাপজান মুন্নীকে জাবনা দিতে দিতে বলছে, সোনাবরুর মা, এবার বকনা হবে মনে লয়। সোনাবরুর মা দ্রুত হাতে মুড়ি ভাজতে ভাজতে থেমে গেছে। বলছে, সোনা, বাটিটা নিয়া আয়। গরম গরম হুড়ুম খাইয়া নে মা।

মতিয়ার বস্তাটি নিয়ে ঘরে এল। লক্ষ্মীদিঘা ধান। মুড়ির ধান। মেয়ের কপালে হাত রেখে শ্বাস ফেলল ফোঁস করে। কানের পাশে চুল লতিয়ে উঠেছে। সোনাবরু ঘুমের ভিতরে ফিস ফিস করে বলে উঠল, আম্মি, আম্মি।
এই ফাঁকে দরিয়াবানু পুকুরঘাট থেকে আনাজগুলো ধুয়ে নিয়েছে। গলা তুলে বলল, মতি, জাম্বুরাটা নিয়া যাস, বাপ।

মতিয়ার বস্তাটির মুখ বেঁধে রাখল। হাঁস দুটো উঠোনে চুপ করে বসে আছে। ডানা থেকে জল পড়ছে টুপটাপ। বাক্সটির মুখ খুলে দিতেই নড়ে চড়ে উঠল। ভিতরে ঢুকে শেষবার পাক পাক করে হাঁক দিল। বাক্সর দরোজা টেনে দিয়ে দরিয়াবানু বলল, অ মতি, জাম্বুরাটা নে না বাপ। ছোট বিবিরে আসতি কইস। শ্বওরের ভিটা। না আসলি চলে!

নৌকাটি তালগাছের আড়াল হতে হতে মতিয়ার দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বর্ষার জল বাড়ে। সোনাবরু নিদ যায়। নিদ্রার ঘোরে বলে ওঠে, আম্মি আম্মি।

কোনবা দ্যাশে যাওরে পঙ্খি
কোনবা তোমার ঘর,
আমার খবর খবর লৈয়া যাইও
সেইনা তেপান্তর।।

এ সময় বিলের মাঝখান থেকে চাঁদ ওঠে। একটু জলে ভেজা। জলের গন্ধ পেয়ে ঝুপ করে লাফ মেরে ওঠে লবটুলি মাছ। মাছের পেটের কাছে লাল। কাটা দাগ। তাই দেখে বাঁশঝাড় থেকে দুটো পাতা হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ঝরে পড়ল। দরিয়াবানু পাতা দুটো কুড়োয়। তক্ষকের ছায়া খসে পড়ে। দরিয়াবানু যত্ন করে ছায়াটি কুড়োয়। আকাশ থেকে শুঁয়াচান পাখির মায়া ঝরে পড়ে। দরিয়াবানু ঝিমুতে ঝিমুতে মায়াটুকু কুড়িয়ে নেয়। এই মায়ার মর্ম অপার। সোনাবরুর চোখেমুখে এই মায়াটুকু দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ধরণী দ্বিধা হওগো মা জননী। এ প্রাণ রাখি কেমনে।

....................................
দ্বিতীয় পর্ব—
....................................

পুতলি বেগম সুইডেনে গিয়েছিল। রানী সিলভিয়া তার কাঁধে হাত রেখে ছবি তুলেছে। মাথায় স্বর্ণমুকুট নেই। মুখটি সোনাসোনা। পুতলি বেগমকে বলেছিল, হাসো। তোমাডের হাসি ডেখতে চাই।

এ সময় রানীকে একটি নকশী কাঁথা উপহার দেওয়া হয়েছিল। মিহিদানা সুতো দিয়ে বোনা। একটি মাঠ। নীচে নদী। উপরে মেঘ। চাঁদের আলোর মধ্যে ডানা মেলেছে—বোররাক। মৃন্ময়ী মুখ। হাসি হাসি। হাওয়ায় চুল উড়ছে। দেহটি ঘোড়ার। কেউ আটকে রাখতে পারে না। আলোর বেগে ছুটে যেতে পারে সাত আসমানে। এর মধ্যে একটি চাঁদ উঠেছে। ফুল ফুটেছে। হাতি নাচছে। রানী মুগ্ধ। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখলেন কাঁথাটিকে। বললেন, কে নির্মাণ করেছে এই কান্থা?
--দরিয়াবানু।
--ওকে, আমি টোমাডের ডরিয়াবানুকে ডেখতে যাইব। চান্দের আলোয়। ইন দি ফুল মুনলিট নাইট।

রানীর সঙ্গে এই সাক্ষাতের বিবরণী ইকনমি পত্রিকায়ও ছাপা করা হয়েছিল। হেড অফিসে বড় করে টানানো আছে। লেখা আছে, চাদেঁর আলোয় শান্তি বেড়ে উঠেছে। ইহার মৃত্যু নাই। মাইক্রো ক্রেডিট ফর পিচ।

এরপর থেকে পুতলি বেগম কমোড ব্যবহার ছাড়া বাহ্য ত্যাগ করতে পারে না। এইটুকু আনন্দ ছাড়া উন্নয়ন কঠিন। এই গল্প কর্মক্ষেত্রে মুখে মুখে প্রচারিত আছে। পুতলি বেগম--দি গ্রেট প্রোফাইল অফ শান্তি।

দরিয়াবানুর ঘরের পাশটিতে লাগানো হয়েছে একটি কমোড। সাদা মনোহর। পুষ্প অঙ্কিত আছে। বাইরে লেখা আছে—শান্তিখানা। এইখান থেকে একটি পাইপলাইন চলে গেছে বায়োগ্যাস প্লান্টে। রান্না করতে নো পাতা। নো কাঠ। গো টু গ্রীন।

একদিন বারী সিদ্দিকী এলেন। জাঙ্গালিয়া স্কুলের মাঠে গানের আসল জমে গেল। ওখানে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে গানের আসরে তিনি চক্ষু বুজে গাইলেন—
শুয়াচান পাখি, আমার শুয়াচান পাখি
আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি।
তুমি আমি জনম ভরে ছিলাম মাখামাখি
আজি কেন হইলে নীরব মেল দুটি আঁখি রে পাখি।

গানটি পল্লবিত হয়ে বিলের জলে থৈ থৈ করে নেমে গেল। ধানের উপর দিয়ে শিশির ঝরার মত ঝরে গেল। চাঁদনী রাতে এই সুরটি কণ্ঠে নয়—বাঁশিতে হবে। দরিয়াবানুর ভিটে থেকে একটু দূরে নলবনের আড়ালে বসবেন-- নৌকায় বসে বাঁশিতে সুর তুলবেন বারি সিদ্দিকী। রানী সিলভিয়া দেখবেন, আকাশ থেকে খসে আসা চাঁদের আলো কিভাবে নরম হয়ে জলের উপরে গলে নামে। সুতো হয়ে ভাসতে থাকে। দরিয়াবানু শুয়াচান পাখির রূপকথা বুনে যাবে নকশী কাঁথায়। এইটুকু ভেবে ভেবে পুতলি বেগমের চোখে জল এল। শান্তি বড় মনোহর।

চাল থেকে নেমে গেছে জীর্ণ খড়। খুব যত্ন করে বসানো হয়েছে ঝকঝকে টিন। হোগলার বেড়ার বদলে ব্রিকওয়াল। দেয়াল বেয়ে চালের উপরে হাওয়ায় দুলছে লাউডগা। কাঁচের জানালা দিয়ে চেয়ে আছে সেনাবরু। ঠোঁট নড়ছে। ফিস ফিস করে বলছে, আম্মি আম্মি।

এ সময় ছোট বিবি নৌকা থেকে নেমে এল। নাকের নোলক দুলে দুলে উঠেছে। ছোট পুটলিটা বুকের কাছে ধরা। ঘাট থেকে পাকা সিড়ি নেমে গেছে জলের গভীরে। দুটো মুরলী মাছ পায়ের পাতায় সুড়সুড়ি দিয়ে সরে গেল। তাই দেখে ঘাড় ফিরিয়ে বলে উঠেছে, পুতলি আফারে কইও। আমি পোলাউ রানতেও জানি।

মতিয়ার এ সময় হাটে যাবে। লগি ঠেলতে গিয়ে সোনাবরুর কথা মনে হল। মনে হল, মেয়টার সঙ্গে দেখা করে গেলে বেশ হত। ততক্ষণে নৌকা খালের মাঝখানে চলে গেছে। টলটলে জল। স্রোত উজিয়ে মঞ্জু মুন্সী খুব কাছে এসে পড়েছে। হাত নেড়ে বলল, মতি ভাই—একখান কথা।
মতিয়ার নৌকা থামিয়ে দিয়েছে। ট্রলার থেকে নেমে মঞ্জু মুন্সী ফিসফিস করে বলল, মতিভাই। মুন্নীরে কাল ভোরে নিয়ে আসুম নে। পুতলি আপা কইছেন, গবাদিপশু ছাড়া ভরভরন্তি সংসার ভাল দেখায় না। রানী সিলভিয়াকে বাংলাদেশের ভরভরন্তি সংসার দেখাবেন ভাই। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

মতিয়ার নিচের ঠোঁটটি কামড়ে ধরেছে। কপালে ঘাম জমেছে—মঞ্জু মুন্সী মতিয়ারের হাত দুটি আরও জোরে চেপে ধরে বলল, আপনের কাছে আমার মেলা অপরাধ হইছে। আপনে মাফ না দিলে কি করি ভাইসাব।
ততক্ষণে মতিয়ার লগি ঠেয়ে আরেকটু দূরে চলে গেছে। যেতে যেতে কানে আসছে, মুন্সী বাকরুদ্ধ গলায় ট্রলার থেকে বলে চলেছে, লোনতো ছিল মুন্নীর লাইগ্যাই। কিস্তি দিতি পারেন নাই। অফিস কৈল—আর আমি মুন্নীরে নিয়ে গেছিলাম। ভাইসাব। আমারে মাপ দিয়েন। আমি চাকরির দাস।

শেষ কথাগুলো ঠিক শোনা গেল না। কিছু শ্লেশ্ষা জড়ানো শব্দ। কিছুটা অপরাধ। মঞ্জু মুন্সী জানে কোন কোন মাফে চোখের জলের মত নুন লেগে থাকে। ক্ষতদেশে ভয়ানক জ্বালা করে ওঠে। এ রকম ভেবে তার খুব তেষ্টা পেয়ে গেল। আজও ঠিক ভুলে গেছে ওয়াটার বোতল আনতে। দুহাত ভরে খালের পানি চোখে মুখে নিতে নিতে দেখল, পুতলির বেগমের ট্রলারটা এসে গেছে। একটি ওয়াটার বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল, আরেকটু ইসমার্ট হন। নো বোতল। নো ট্যুর।
ছোট বিবি টিউ কল টিপে টিপে জল খেল। মুরগীর বাসা এসেছে—দোতলা। চারটি মুরগী কক কক করে ডাকছে। আর মোরগটি ফুল তুলে তীক্ষ্ণ চোখে বাইরে তাকিয়ে আছে। লোকজন ট্রলার থেকে একটি ঢেঁকি নামিয়ে রাখল। কে একজন ডায়নামো চালিয়ে দেখছে, বাঁশঝাড়ে মরিচ বাতি জোনাকির মত কতটা জ্বলে আর নেভে।

অমিতাভ রেজা ক্যামেরা ট্যামেরা ফিট করেছে। জুম করে বিলের মধ্যে একটি পাখির চিহ্ণ খুঁজতে লেগেছে। কাল জল। সবুজ ধানক্ষেত। আকাশ মেঘহীন। নীল। একটি পাখি বিন্দু থেকে বৃত্তের মত বড় হতে হতে উড়ে আসছে। বসছে ধানের ক্ষেতে। ডানা দুটো মেলা। বেজে উঠেছে—শুয়াচান পাখি। আর ফেড ইন হয়ে আসছে –দরিয়াবানুর কাঁথা। ক্ষুদ্র ঋণের সুসমাচার। আয়োজনে—ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া ওয়ার্ড।

অমিতাভ রেজা মাথা থেকে ক্যাপটা খুলে ফেলে বলল, একটি মেয়ে দরকার। হাসি হাসি মুখ। দি স্মাইলিং ফেস। যখন হাসি এল।

পুতলি বেগেম হি হি হি করে হাসতে হাসতে বলল, নো প্রবলেম রেজা ভাই। মাইয়া আছে। একদম ফেরেস। আপনে যেমুন যেমুন চাইছেন-সেই রকমই আছে। নইলে এনজিও করি ক্যান!

ছোট বিবি দুহাতে চুরি পরেছে। মাথায় খোপায় লাল ফুল। ধানী রঙ শাড়িটা পরে আসতেই অমিতাভ রেজা আবার মাথায় ক্যাপটা পরে নির। লুক থ্রু করছে। গুড। একটু বাঁদিকে। ক্যামেরা আকাশ থেকে প্যান করে নিচে নেমে আসছে।
পুতলি বেগম নেপথ্য থেকে বলতে শুরু করেছে—জমেলা খাতুন। বয়স বাইশ। যখন বিয়ে হয়েছেল তখন ১৫। স্বামী মতিয়ার তাকে তুলেছিল পড়ো পড়ো ঘরে। চুলো জ্বলে কি জ্বলে না। হত দরিদ্র শ্বাশুড়ি বৌয়ের মুখ দেখে বলে উঠেছিল, তুমি আমগো লম্মী আম্মা। তুমি আইছ। আমগো অভাব ফিরা যাইব এবার।

পুতলি বেগম বলছে, সে সময় জমেলা খাতুন ক্ষুদ্র ঋণের জন্য আবেদন করে। কিনে আনে কিছু সুতো। দুটো মুরগী। আর একটি গাভী। সেই থেকে শুরু। শ্বাশুড়ির কাছ থেকে বুনতে শিখেছে—বাংলার ঐতিহ্য নকশী কাঁথা বোনা। সে কাঁথায় রূপকথা হয়ে উঠেছে—অভাবী মানুষের স্বপ্ন নিয়ে জেগে ওঠার গান—দিন বদলের পালা। ক্ষুদ্র ঋণের গ্রুপ সে কাঁথা বিক্রি করে কপাল ফিরিয়েছে। ডিম দুধে পুষ্টি চাহিদা মিটে তাদের এনে দিয়েছে স্বচ্ছলতা। এটা এক সত্য ঘটনা। উত্তরাধুনিক রূপ বদলের রূপকথা।
পুতলি বেগম একটু থেমে আবার বলছে, আমরা এখন কথা বলছি, জমেলা খাতুনের সঙ্গে। জমেলা, আপনের এ সাফল্যের গোপন রহস্য কি?

ছোট বিবি ঠোঁটে একটু লিপিস্টিক ঘষছে। জাম গাছের ছায়ায় ছুতোর মিস্ত্রিরা বসাচ্ছে বাঁশের তৈরি ইজি চেয়ার। তার পাশে টি টেবিল। পুতলি বিবি কিছুটা বিরক্ত হয়ে ছোট বিবির হাত ধরে ঝাঁকি দিল। বলল, জমেলা, কথা কন না ক্যান?

ছিাট বিবির লিপিস্টিক একটু কড়া হয়েছে। লাল টক টক। কথা বললেই মুছে যেতে পারে। পুতলি বিবি একটু ধমকে বলল, কথা কন না ক্যান আপনে, জমেলা? দ্যাখেন না ডাইরেক্টর রেজা ভাই থাইম্যা গেছে!
--আমি জমেলা না। রমিজা খাতুন।
--আপনে জমেলা খাতুন। রমিজা খাতুন না।
--কী কন পুতলি আফা? জমেলা খাতুন আমার উনির বড় বিবি। তিনি ইন্তেকাল হইছেন। হ্যারপর আমারে আনছেন। আমার নাম রমিজা খাতুন।

ক্যামেরা চলছে। অভিতাভ রেজা গভীর মনযোগ দিয়ে শুট করে চলেছেন। পুতলি বেগম বাঁধানো খাতা বের করল। বলল, তুমি আইজ রমিজা খাতুন না। মতিয়ার রহমানের বিবি জমেলা খাতুন। সাং জাঙ্গালিয়া, ইউনিয়ন নিজড়া, উপজেলা গোপালগঞ্জ। এ ইস্টোরি জমেলা খাতুনের। তিনি আমগো কাছ থিকা মাইক্রো ক্রেডিট লইছিলেন। গরু কিনছিলেন। কাঁথার বিজিনিস শুরু করছিলেন। ঘরে খড়ের বদলে টিন এসেছে। টিউ কল এসেছে। এই তো জমেলা খাতুন।
--জমেলা খাতুন কিস্তিকিস্তি দেবার পারেন নাই। আপনেরা হের গরু মুন্নীরে লইয়া গেছেন। চাল থিকা টিন খুইল্যা লৈছেন। তিনি এই দুঃখে আত্মঘাতি হৈছেন। তিনি এখন ভুত হৈছেন। আমি ভতে ভয় করি। এইজন্য বিয়ার পরে এই বাড়ি আসি নাই। অন্য জায়গায় থাকি। এ বাড়ির কথা মনে হইলে দ্যাখতে পাই—জমেলা বুজি একটা মরা পাখির মতোন জলের উপরে ভাসতে আছে। উপরে চান্দের আলো। আমি রমিজা খাতুন। জমেলা খাতুন না।

এ সময় ট্রলার থেকে মুন্নীকে নামানো হচ্ছে। বহুদিন পরে পরিচিত ঘাটে এসে মুন্নী লাফ দিয়ে নেমে এল। বারান্দায় বিছানো ছিল দরিয়া বানুর নকশী কাঁথা। সুতোর জন্য ধানক্ষেতে এখনো বাতাস খেলে নাই। শুয়াচান পাখি জল থেকে ওড়ে নাই। পুতলি বেগম সেই সুতো আনবে বলেছে। মুন্নী কাঁথার উপরে মুখ ঘষে ঘষে ডেকে উঠছে--হাম্বা। হাম্বা।
ঘরের মধ্যে সোনাবরু পাশ ফিরছে। জানালা দিয়ে বিলের উপর থেকে হাওয়া আসছে। তাল গাছের মাথায় একটা তক্ষক জিব বের করে দেখছে। ক্যামেরা চলছে। বারী সিদ্দিকীর বাঁশি বাজছে। রাগ যোগ।

শুয়াচান পাখি, আমার শুয়াচান পাখি
আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি।
তুমি আমি জনম ভরে ছিলাম মাখামাখি
আজি কেন হইলে নীরব মেল দুটি আঁখি রে পাখি।
সোনাবরু বার দুই ফিসফিস করে বলল, আম্মি। আম্মি।

আর অমিতাভ রেজার ক্যামেরা প্যান করে রমিজা বেগমের চোখ উপর স্থির হয়ে গেছে। ঠোঁট কামড়ে ধরেছে। নাকের ডগাটা তির তির করে কাঁপছে। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে জল। কাজল লেপটে গেছে। পুকুর থেকে কি একটা পাখি উড়ে যাচ্ছে। ডেকে উঠছে – হিট্টি হিট্টি হিট্টি।। কে একজন জলের ভেতর থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে। জল তাকে টেনে ধরেছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্চে। বড় একটা গজার মাছ হা করে তেড়ে আসছে। হাসি হাসি মুখ। রমিজা বেগম হাস ফাস করতে করতে বলে উঠল—পানি খামু।

এ সময় দরিয়াবানুর ঢেড়শ তোলা সময়। দুটো মরিচ পেকে লাল হয়ে গেছে। লেবুগাছের গোড়ায় আজ আবার কিছু ছাই দিতে হবে। সুতো এলে বুনতে হবে—সবুজ সবুজ ধানক্ষেত। হাওয়ায় দুলছে। জল থেকে উড়ে যাচ্ছে শুয়াচান পাখি। বোররাক নয়। জলে ভেজা পাখি। ডাকে হিট্টি হিট্টি। বলে শুয়া চান পাখি, আপনেগো ঘরের টিনের চালে বসতে চাই গো মা জনননী। সোনাবরুরে মুড়ি ভাইজা দিবার মন চায়। মুন্নীর দুধ দিয়া সুড়ুৎ সুড়ুৎ কইড়া মুড়ি খাইতে চাই। এত্তো টুকু মাইয়া—উঠোনে ঘরতে ঘুরতে হাততালি দিউক। আর বলুক—অ পাখি, তুমি যাইবা কোনখানে?

জলের মধ্যে তখন একটু একটু চাঁদ উঠেছে। ফুল ফুটেছে। বাঁশি বাজছে। জেগে উঠেছে টিনের চাল। টিউকল। বহুদিন পরে বিছানা থেকে উঠে এসছে সোনাবরু। নাচতে নাচতে ঘুরছে উটৈানময়। পায়ে মল। ঝুম ঝুম করে বাজে। কি বাজে দেখতে পাখি ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলেছে। সব কিছু ঠিক ঠাক আছে।ও পাখি, তোমার চক্ষু দুটি নাই। জলে গলে যাচ্ছে লাল রঙ আর পাখিটি চেঁচিয়ে বলছে, সোনাবরু—যা,তুই পালিয়ে যা।পালিয়ে যা। সোনাবরু—চিৎকার করে উঠছে—অ, পাখি, তোমার চ্ক্ষু গেল কই?

সবুজ সুতো খুঁজতে খুঁজতে দরিয়াবানু পেরেশান। থেকে থেকে একটা গজার মাছ খুবলে খুবলে খাচ্ছে পুকুরের জলের ভেতরে শুয়ে থাকা শুয়োচান পাখির চোখ, নাক, মুখ। লম্বা চুল। তার নাকের নোকল ঘুতে ঘুরতে নেমে যাচ্ছে পুকুরের জলের গভীরে। নোলকটি গপ করে গিলে ফেলেছে আরেকটি মাছ। তাই দেখে অপার হয়ে সোনাবরু কেঁদে কেঁদে উঠছে আম্মি, আম্মি। আর কিছু নয়।
সুতো খুঁজতে খুঁজতে চাঁদের আলোয় ভাসতে ভাসতে রূপকথা আসতে আসতে কে এক ইউনুস নবী এই সময় মাছের পেটের মধ্যে বিড়বিড় করে বলছে—

লা ইলাহা ইল্লাহু আন্তা সোবানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জ্বলেমিন।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

"--ভাই কেডা, মুজিবর? শ্যাখ মজিবর?
--ব্যাকডেটেড। মজিবর হইব ক্যান। ডক্টর ইউনুস।
--ইউনুস নবী?
--বুড়ি দেখি কিছু জানে না। একদম ইললিটারেট। ইউনুস নবী না। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। বাপ অব মাইক্রো ক্রেডিট। নোবেল পাইছেন। ফ্রেন্ড অব ক্লিন্টন।"

দাদা আপনি পারেন বটে!!
বলতে গেলে অনেক কিছু বলতে হবে, শুধু এটুকু বলছি- এ বিষয়ের এমন সুন্দর বাস্তব চিত্রায়ন আমি খুব কম দেখেছি।
লেখাটা শেয়ার করছি!

কাজী মামুন

সৈয়দ আফসার এর ছবি

ভাল লাগল।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মাথার মধ্যে গোলামী নিয়া কিসু লোক বিশ্বজয় কইরা ফেলসে... দীর্ঘশ্বাস, এই বিশ্বটা কার! গল্প ভালো লাগসে।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কুলদা রায় এর ছবি

অনিন্দ্য, আমি সত্যি চরিত্র নিয়ে লিখছি--কোথাও কি ভুল হচ্ছে?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ভুল হয় নাই দাদা ... সত্যিই তো লিখসেন।

কমেন্টের প্রথম বাক্যটা সরাসরি আপ্নের গল্পের সাথে প্রাসঙ্গিক না। রিফ্লেক্সের থেকে লিখসি ...
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অসাধারণ একটা গল্প

নুরুজজামান মাহদি এর ছবি

অনেক ভালো হয়েছে লেখাটা। ধন্যবাদ আপনাকে ক্ষুদ্র ঋণের বাস্তব অবস্থাটা তুলে ধরার জন্য। বাংলাদেশে এই রকম অনেক উদাহরন আছে যারা এই ক্ষুদ্র ঋণের শিকার।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

অসাধারণ।

-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

কুলদা রায় এর ছবি

ধন্যবাদ।
এই গল্পটি একদম কাঁচা। এডিট করি নি লেখার পরে। এটি পড়ে আমার এক বন্ধু বললেন, এটা একটু কঙ্কাল কঙ্কাল লাগছে। মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে আরও গভীরে যেতে পারতাম। সেটা যাই নি। আপনি কী মনে করেন মাহবুব লীলেন, অনিন্দ্য, শুভাশীষ-- আমার বন্ধুটি কি ঠিক বলেছেন?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মাংস লাগাইতে গিয়া আজাইরা স্থুল করবেন ক্যান ... এখনই ঠিকাসে
__________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কুলদা রায় এর ছবি

অনিন্দ্য, আমিতো প্লান করে লিখি না। লিখতে লিখতে ভাবি--ভাবতে ভাবতে লিখি। এর মধ্যে ব্যক্তি আমার পরিপ্রেক্ষিত কখনো কখনো কথা কয়ে উঠে। তখন কিছুটা কনসেন্ট্রশন ক্ষুণ্ন হয় বটে। এইজন্য মাঝে মাঝে ধ্বন্দে পড়ি।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

তাসনীম এর ছবি

অসাধারণ...

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

Goutam  এর ছবি

এমন একটা লেখা যা পড়তে অনেক ভাল লাগে

সুরঞ্জনা এর ছবি

প্রথম পর্ব অসাধারণ লেগেছিল।
দ্বিতীয় পর্ব ঠিক আছে। হাসি
............................................................................................
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয়

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

জামিলা হাসান এর ছবি

অপুর্ব!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।