আমার একখান ফটোক আঁকছেন সুজনদা। সুজন চৌধুরী। কানাডাবাসী। উনি আঁকেন ভাল। সত্যিকারের যাদু আছে ওনার হাতে।
আমার একটি ছবি এঁকেছিলেন আমার প্রয়াত শিল্পী বন্ধু প্রতিক সাইফুল। তখন বোধ হয় ১৯৮৯ সাল টাল হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছিল। কোন এক ছাত্র সংগঠন কোনো লোকজন না পেয়ে আমার নাম ওদের প্যানেলে সাহিত্য সম্পাদক হিসাবে দিয়েছিল। এদিকে আমি নাই। আমার ঘোর খোঁজাখুঁজি চলছিল। আমি তখন আমার বন্ধুর সঙ্গে শিল্পীসঙ্গ করে বেড়াচ্ছি। ক্যাম্পাসে এসে টের পাই--নির্বাচন হচ্ছে। আমি প্রার্থী। একেবারে এরে কেরে অবস্থা।
লোকজন বলে, তুমি দেখছি--তাউড়া মাল। পার্টিরে ডুবাইতে চাও নাকি? কোন পার্টিতে ছিলাম যে তারে ডোবানোর প্রশ্ন আসে? ভাই, ডিমে আমার এলার্জি আছে। আমি ডিম খাই না। অই সংগঠনের প্রধান নেতার নাম ছিল আসাদুল আমিন দাদন। দাদন ভাই বলিতে সবাই অজ্ঞান। তার বড়ভাইও নাকি অতীব শ্রদ্ধায় দাদনভাই নামেই সম্বোধন করতেন। তিনি সকালে উঠিয়া ডিমসহযোগে বিপ্লব ভোজন করতেন। আর ভাবিতেন--বিপ্লব করিতে হইলে নেতার ভামূর্তি তৈরি করিতে হইবে। এইজন্য আর সগলে মরিয়া যাউক-অথবা বাঁচিল কি মরিল তাহা ধর্তব্য নহে, নেতাকে বাঁচিতে হইবে--ঠিঁক মতো চাগিবে হইবে। সগলে বাঁচিলে বিপ্লব হইবে না। কিন্তু নেতা বাচিলে বিপ্লব আসিবে। ইহা নিশ্চিত ১০১%। তিনি ধন্য। এই কথা শ্রবণপূর্বক পঞ্চগড়ের এক নেতা সোভিয়েত ইউনিয়নের এক হোটেল প্রাণপাত করেছিলেন। তার বিপ্লবনসিব হোক। আমেন।
এই তত্ত্ব দাদনতত্ত্ব হিসাবে স্বীকৃতি পায় নাই। তবে কাহারও নামে নিশ্চয়ই স্বীকৃত আছে। গবেষণা প্রয়োজন।
এই রকম পরিস্থিতিতে জনাব দাদন সাহেববের ভাবমূর্তিখানা অভঙ্গুর রাখার জন্য লোকে ধরল--বাপু নামিয়া পড়। কিছু প্রচার প্রপাগান্ডা কর। হারিলে তুমি হারিবে। জিতিলে নেতা জিতিবে। তাহার মুখ উজ্জ্বল হইবে। তাহার পোঙায় তারাবাতি ঝলিবে। এই কথা শুনি আর আমি জলছত্রে মধুপুরে জঙ্গল এবং মধুকূপি ঘাস নিয়ে গবেষণা করি।
তখন আমাকে এক খাটো মহিলা কিঞ্চিৎ গুপ্ত পেয়ার করিত বলিয়া কথিত। তিনি উদ্বিঘ্ন হয়ে প্রতিককে ধরলেন, কাকু--কুলদাতো একজন হতচ্ছাড়া--ওরে কে পোছে। কিন্তু দাদন ভাইকে আপোছা করিলে তার খবর আছে। আপনে কিছু করেন। তিনি সিরাজগঞ্জের ভাষায় কথা কহেন। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছেন বলে শ্রুত। আমার বন্ধুটি হুম বলে আশে পাশে তাকালেন। কারা কারা সব কলকি নিয়ে হাজির। ভুম বলিয়া প্রতিক একটি কাগজে অধমের একটি প্রতিকৃতি খাড়লেন। তিনি গোটা গোটা করে লিখলেন--ইনি কুলদা রায়। অসুবিধাজনক। ইহাকে ভোট দেওয়া ঠিক নহে।
নির্বাচনের পরে ক্যাম্পাসে এসে দেখেছি--ফটোকটা ছিল আধখানা। লোকে তাহাকে আধখানা শহীদ বলিয়া গন্য করেছেন। বাকী আধখানার শোকে ফটোকের নিচে কেহ কেহ পুশ্পাঞ্জলি দিয়ে গিয়েছে। বিড় বিড় করে বলেছে সাশ্রু নয়নে--তাহার নরকবাস নিশ্চিত হোক। আমেন।
নোট : এই আধখানা শহীদী ফটোকের জোরে কুলদা রায় নাম্মী এক হতভাগা বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে সাহিত্য সম্পাদক পদে সর্বোধিক ভোট প্রাপ্ত হয়েছিল। দাদন ভাই নেতার মুখ উজ্জ্বল হয়েছিল। আর তাহার পোঙার জোনাকি পোকাগুলো এত সামর্থবতী হয়েছিল যে তাহা তখন আর জোনাকি নহে--মশালে পরিণত হয়েছে। মশাগণের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে। কুট কুট করে কামড়ে দিয়ে বড় জ্বালায়। তাহা কুলদা রায়কে মশাই জ্ঞানে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার রাজনীতি এইখানে অশ্বত্থামা ইতি গজ। একটু রোদন করিতেছি। একটু দম লিন। পৃথিবী অনন্ত দুঃখের জায়গা। নরক। আ আ হা হা রে রে...
এই দুঃখ বিবেচনা করে অধম কয়েকখানা আত্মচরিত্র ফটো আঁকিয়াছিল। তখন বলপয়েন্ট যুগ শুরু হয়েছে। তাহাতে তাহার বন্ধু প্রতিক সাইফুল সত্যিকারে প্রয়াত হয়েছিলেন। ঈশ্বর তার জন্য বেহেস্তের শিল্পাঙ্গণ নিশ্চিত করুন। আপনি অপার দয়াময়।
সুজন চৌধুরী নামে এক অখ্যাত শিল্পী আছে। তার ভারী অহংকার। সব সময় মুখ ভার করে বসে থাকেন। সময় পেলে ক্যারিকেচার করেন। তিনি কুলদা রায়ের আরেকখানা ফটোক খেড়ে পাঠিয়েছেন। ইচ্ছা এই ফটোক খাড়িবার ইসলায় অখ্যাত হইতে বিখ্যাত হইবেন। খুব ঘড়েল। জানি তাহার এই অপচেষ্টা শহীদ হইবে।
আমার হাইতির জানেমন বেলমর্ণ ফটোক দেখে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে ছিল। মুখে কথা নাই। কহিলাম, প্রিয়ে তোমার কি সিক কল প্রয়োজন?
বেলমর্ণ কিছু কহিল না। অপাঙ্গে তাকাইল না। তার হাইজে চলে গেল। সুজন চৌধুরীর খবর আছে! হাইজ থেকে তার করে কহিল--লোকটা তুমারে চিনিল কেমনে? একশো এক পারসেন্ট সহি। উনি কি তোমার মায়ের পেটের ভাই?
--তাছাড়া আর কি। সহোদর না হলে কি আমাকে এত গভীরভাবে চিনতে পারে, বেলমর্ণ?
মন্তব্য
অন্য ছবিদুটো এরকম ভ্যাবা চ্যাকা মার্কা হল কেন? কি করিলে উহা ঠিক করা যায়। প্রিয় এডমিন--ঠিক করে দিন। একা সুজনদা নাম কামাবেন--ইহা তো ঠিক নহে। অন্যদেরও সুযোগ দিতে হইবেক।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
দুর্ধর্ষ খোমার অধিকারী ও আঁকিয়ে দুজনকেই উত্তম জাঝা।
কি মাঝি, ডরাইলা?
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
সুজন্দা লুক ভালু না।
আমার একটা খোমা আঁকছিল, খোমা ভালু হইছে মাগার আপনারটার মতো তাতে রঙ লাগায় নাই। কঞ্জুসের হাড়ি। কম্পু থাইকা ফিরি রঙ দিব, সেইটাতেও কঞ্জুসি।
আমার রঙ কই, আমার রঙ দে দে ঠাকুর।
গব্বর সিং : ওরে ও শাম্বা, বাসন্তির লাচবেক।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনি সুজন্দারে পাইলেন কৈ? আহারে, পুলাডায় বর বালো সবি আঁকত।
অন্তত কেউ তো আপনার ছবি একেছে (আর জিতেছেন নির্বাচনেও), আমি কিন্তু শিশিরের সামনে থেকেও ছবি আঁকাতে পারি নি। সেদিক বিচারে আপনি মহাধন্যবান বটেক।
আর, সুজন্দার ছবির প্রশংসা কি আর করবো, যতই বলবো, ততই কম হবে।
এনিওয়ে, চিয়ার্স এন্ড চিয়াও!
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
সুজন্দা কি খালি মানুষের খোমাই আঁকেন?
না হাতে পায়ে ধরলে আমার মত গর্দভের খোমাও এঁকে দেবেন?
কবে যে সুজনদার খোমাখানা দেখবো?(sigh)
সুজনদা খুব ব্যবসায়ী লুক। বিনা লাভে নো খোমা। পুরা ক্ষমা দাবী করে বসবেন।
আমাকে এইটার জন্য পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তি এবং বাংলা গানের ১০০ বছরের দুষ্প্রাপ্য পুরানা গান স্বত্বত্যাগ করিয়া দান করতে হইছে।
ফেল কড়ি--মাখ তেল।
হুম।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
খোমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে সবইসুন্দর
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সুজন্দা রক্স!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
খোমা ভালো হইছে, খোমা দেখে আপনাকে একটু একটু চিনতে পারছি।
...........................
Every Picture Tells a Story
খোমাধীকারীরে অভিনন্দন।
খোমাশিল্পিরে জাঝা।
---- মনজুর এলাহী ----
দিক্কার, তিব্ব দিক্কার
পোস্টে ডবল মাইনাস
আমি বড় হয়ে এইবার কুলদাদাদা হবো গো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
যাহোক, হিংসাবশত ৫ দিয়ে গেলাম... দুর্দান্ত হইছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হিক্কার হিক্কার।
আমি জালি হইলে নজরুল ভাই হইতাম...
জালি মানে জাল নহে--নবীন (জালি লাউ, জালি কুমড়া)
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আমার মুখে লঙ কই ! পোস্টে মাইনাস !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কী আর করতাম...বইসা বইসা আফসুস খাই!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
সুজনদা! দারুণ হয়েছে। ক্যারিকেচার কেমনে আঁকে, এ বিষয়ে কিছু লেখেন প্লিজ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সুজন্দা আবারও প্রমাণ করল খোমায় কিঞ্চিত দাড়িগোঁফ না থাকলে তার খোমার্টুন ভালো হয় না
(সুজন্দা জীবনেও নারীবাদী হইতে পারব না। আফসুস)
সুন্দর...
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
নতুন মন্তব্য করুন