প্রথম পর্বের আলোচনায় বোঝা গেল ফরিদা আখতার জিন ব্যাংক বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি প্রতারণা করে বলেছেন—এই জিন ব্যাংকের মাধ্যমে ইরি হাজার হাজার ধান বীজ নিয়ে এই বীজগুলোকে জিম্মি করেছে। আসল সত্য হল--যে বীজ এখনো মাঠে আছে—যে বীজও জিন ব্যাংকে রাখা আছে।
১। কোন বীজ হারিয়ে গেলে বা বিলুপ্ত হয়ে গেলে জিন ব্যাংক থেকে আবার তা ফিরিয়ে আনা যাবে। বিলুপ্ত হওয়ার আশংকাটি নেই।
২। এই সংরক্ষিত জাতগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখা আছে। সে জন্য এই জাতগুলো শুধু বাংলাদেশে কেন—পৃথিবীর যে কোন দেশে ঐ জাতের উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেলে সেখানে চাষের জন্য নির্বাচন করা যাবে।
এখন বৈশিষ্ঠ বলতে দুধরনের বৈশিষ্ট্য আছে। একটি হল বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য--একে ফিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়। যেমন ফরহাদ মজহার দেখতে খাটো। এইটা হল তার ফিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য। অথবা তার একটি চোখ একটু লক্ষ্মী ট্যারা। দই. জিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য। যেমন ফরহাদ মজহারের শরীরের কোষগুলিকে বিশ্লেষণ করে তার ক্রোমোজমের মধ্যে যে সকল জিনেটিক বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে সেগুলোকে জিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়। যেমন ফরহাদ মজহার যে বাটপার ধরনের লোক—সে বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী যে জিনটি তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে এসেছে—সেই জিনের ধরন, তার রাসায়নিক গঠন, অবস্থান ইত্যাদি। এটা করা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। এই জিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য বের কাজটি করা গেলে তখন উন্নত জাতের ধান বীজ বের করা অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে ওঠে।
তাহলে জিন ব্যাংকে ধান বীজ রাখা অন্যায়টা কোথায়? জিন ব্যাংক বীজকে জিম্মি করে রাখতে পারে না। আর দুনিয়াতে জিন ব্যাংক একটি মাত্র নেই। সব দেশেই আছে। সুতরাং ইরি যদি কোন বীজ দিতে না চায়—তাহলে ব্রি’র কাছ থেকে পাওয়া যাবে। সবোর্পরি মাঠে তো আছে।
সুতরাং ফরিদা আখতার এন্ড গং জিন ব্যাংক সম্পর্কে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। সাধারণ পাঠক তাদের লেখা থেকে জিন ব্যাংক বিষয়ে ভুল ধারণা নেবে। তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করবে।
আধুনিক ধান ফলন বাড়াতে পারে নি বলে তিনি দাবী করেছেন। খাদ্য ঘাটতি এখনো রয়ে গেছে। এই প্রসঙ্গে কাজী মামুনের একটি নোটে আলাপ করেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম--
কৃষক সব সময়ই লাভ ক্ষতি বিবেচনা করেই প্রযুক্তি গ্রহণ করে। সুতরাং আমি বা ফরহাদ মজহার কি বলব বা বলেছি--তাতে কৃষকের কিছু আসে যায় না।
ধরা যাক পঞ্চাশ সালের কথা। তখন লোক সংখ্যা ছিল মাত্র চার কোটির মত। তখনও আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের লোক সংখ্যা সাড়ে সাত কোটি হল। তখনও প্রায় একই পরিমান খাদ্য ঘাটতি ছিল। কিন্তু লোক সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু জমি কমেছে। সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানীর পরিমাণ পঞ্চাশ সালের সমান ছিল। তার মানে উৎপাদন ডাবল হয়ে গেছে। আবার ২০০০ সালে লোকসংখ্যা তের কোটির দিকে হল। তখন কিন্তু খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এই যে দিন দিন জমি কমছে, কিন্তু খাদ্য উৎপাদন দুইগুন, চারগুণ বেড়েছে আরও বাড়বে বা বাড়ানোর প্রয়োজন হবে তখন দেখা দরকার কি প্রকারে এটা বেড়েছে। এটা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উচ্ছ ফলনশীল ধান চাষের কারণেই বেড়েছে। এই বাড়াটা কি অন্যায়? না প্রাণ বাঁচানোর জন্য জরুরী ছিল?
ধরা যাক বরিশালের বাঁশফুল চিকন একটি জনপ্রিয় ধান। এই ধানটি মাঝারি উঁচু জমিতে চাষ হত। ফলন একরে ১৫/১৬ মন হত। এই জাতটির বাজারমূল্য ভালই ছিল। কিন্তু জাতটি এখন কৃষকের পছন্দ নয়। কারণ এই জাত চাষ করে তার চাহিদা মিটছে না। তার বদলে মন্তেশ্বর ধানটির চাষ কিন্তু বেড়ে গেছে অনেকগুন। কারণ মন্তেশ্বরের উৎপাদন একর প্রতি ৪০-৪৫ মন। তাছাড়া মন্তেশ্বর শুধু মাঝারি উঁচু নয়- কিছুটা মাঝারি নিচু জমিতেও চাষ করা যায়। এইভাবে মানুষের প্রয়োজনের কাছে পুরণো অনেক কিছুই বদলে যায়। এতো গেল, আমন ধানের কথা। বোরো ধানের বেলা দেখুন, সোনা গাইয়া যাতের ফলন মাত্র ২০ মন একর প্রতি। কিন্তু ব্রিধান ২৯ এর ফলন একরে একশ মন। তাহলে কৃষক কেন এই সোনাগাইয়া চাষ করবে? কেন তাকে বলা হবে--তুমি বাপু উচ্চফলনশীল জাতের চাষ করো না? এই উচ্চফলনশীল ধান চাষ করেই কৃষকগণ এখন পায়ে স্যাণ্ডেল পরছেন। নতুন শার্ট পরতে পারেছেন।
ধরা যাক একটা কুমড়া গাছ থেকে আপনি কুমড়া আবাদ করতে চান। যদি বড় কুমড়া চান তাহলে গাছে একটি মাত্র কুমড়া রেখে বাকিগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে। আর যদি এক গাছ থেকে অনেকগুলো কুমড়ো চান তাহলে অনেকগুলো কুমড়া গাছে রেখে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে খুমড়োগুলো ছোট হয়ে যাবে। এখন আপনি যদি আরও কুমড়ো, আরও বড়ো কুমড়া চান তাহলে? তখনতো আপনাকে গাছের জন্য বেশি বেশি খাবার দিতে হবে। উন্নত জাতের চিন্তা করতে হবে। প্রশ্ন হল এই উন্নত জাত কি আকাশ থেকে আসবে? যদি আসে তবে অসুবিধা কি?
পাজাম নামে একটি ধান এক সময় বিদেশ থেকে এসেছিল। উত্তর বঙ্গে ভালই চাষ হয়। পাজামের ফলন এবং বাজার দর এবং মানুষের চাহিদা বেশি হওয়ার কারনেই পাজাম জাতটি মানুষের সমাদর পেয়েছে।
বিনা (BINA) এই পাজাম জাতটার মধ্যে একটি পরিবর্তন আনল। ধানে সাধারণত ৮% আমিষ থাকে। বিনার বিজ্ঞানীগণ এই আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে ১২%এ নিয়ে গেলেন। জাতটির নাম দিলেন বিনাশাইল। জাতটির আরেকটি গুণ হল, পানি সহ্য করার ক্ষমতাও আছে। এখন প্রশ্ন হল--এই যে জাতে যে নতুন বৈশিষ্ট্য বিনার বিজ্ঞানীরা প্রযুক্ত করলেন তা কিভাবে? এটা নাম হল-- মিউটেশন। জিনের মধ্যে একটি পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছেন যাকে ওনারা বলছেন মিউটেশন।
এইটা কি ক্ষতিকর? আমাদের স্বাস্থ্যের উপর কোনো ক্ষতি করছে? এই প্রশ্নটার জবাব হল, প্রকৃতিতে এই ধরনের মিউটেশন স্বাভাবিক ঘটনা। যেমন বজ্রপাত হলে, বা বিদ্যুৎ চমকালে যে ধরনের রেডিয়েশন প্রক্ষিপ্ত হয়--তাতে অনেক ফসলের মধ্যে, প্রাণীর মধ্যেও ক্রিয়া প্রক্রিয়া ঘটে। মিউটেশন ঘটে যায়। যেমন হরি ধান নামে একটি উন্নত জাত নিয়ে শাইখ সিরাজ খুব হৈ চে করলেন। এই হরিধানও হয়তো এরকম মিউটেশনের ঘটনা হবে হয়তো। হরিবাবু ধানটির উচ্চ ফলনশীলতা খেয়াল করে তা গ্রহণ বা নির্বাচন করেছেন।
যে কাজটি প্রকৃতি করে উন্মুক্ত মাঠে সে কাজটি বিজ্ঞানীরা করছেন তার সংরক্ষিত ল্যাবে। এটা বললাম এ কারণে যে, আমরা যদি এই কায়দাটি সম্পর্কে ধারণা না রাখি, তাহলে মরহাদ মজহার বলবেন যে, না না, এই সব উচ্চ ফলনশীল ধান আমাদের জৈব বৈচিত্রকে নষ্ট করছে। এবং তিনি এই প্রচারটিই করছেন। এটার একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা পরে।
......................................................
প্রথম পর্ব পড়ুন : উচ্চ ফলনশীল ধান বিষয়ে কিছু কথাবার্তা-- মজহারীয় আস্ফলন : পর্ব/১
* পাক্ষিক চিন্তা পত্রিকায় ফরিদা আখতারের প্রবন্ধটির লিংক--
http://www.chintaa.com/index.php/chinta/showAerticle/114/bangla
মন্তব্য
ফম স্যারের কিছু উদ্দেশ্যের ইঙ্গিততো গত আলোচনার মন্তব্যে দিয়েছি। লুঙ্গি পরে ঘুরলেই সাধক হওয়া যায়না। চাটগাইয়া সওদাগররাও সবাই লুঙ্গি পরে ঘোরে।
রাতঃস্মরণীয়
অপেক্ষায় ছিলাম। মিডিয়া সাপোর্ট পাওয়া ফরহাদ মজহারেরা আমাদের কৃষি গবেষণা'র জন্য কতটা হুমকি, এটা অনুধাবন এর জন্য এই সিরিজটা ছিল খুবই প্রয়োজনীয় ছিল।
শুধুমাত্র বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর তাদের এন জি ও গুলোর স্বার্থে তারা আমাদের ভাগ্য নিয়ে খেলছে! চলুক... দাদা!
জিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য। যেমন ফরহাদ মজহারের শরীরের কোষগুলিকে বিশ্লেষণ করে তার ক্রোমোজমের মধ্যে যে সকল জিনেটিক বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে সেগুলোকে জিনোটাইপিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়। যেমন ফরহাদ মজহার যে বাটপার ধরনের লোক—সে বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী যে জিনটি তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে এসেছে—সেই জিনের ধরন, তার রাসায়নিক গঠন, অবস্থান ইত্যাদি।
হা হা হা হু হু হু.........................
সব কিছুই ভাল বলেছেন কিন্তু উচ্চ ফলনশীল hybrid জাতের ধানের যে সকল সমস্যার শোনা যায় সে সব কিছু যানালে ভাল হয়।
কি কি সমস্যার কথা শুনেছেন সেগুলো যদি বলেন--তাহলে আলাপ করতে সুবিধা হয়। আশা করছি আপনি সেগুলো বলবেন।
আর এটা একটা সিরিজ আকারে চলবে--সুতরাং আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।
আপনাকে একটু ধরিয়ে দেই, ফরিদা আখতার তার লেখায় বলেছেন-উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত খাটো করে ফেলেছেন, প্রচুর সার, কীট নাশক, পানি সেচ দরকার---এগুলো নিয়ে আগামী পর্বে আলোচনা করব।
আপনাকে ধন্যবাদ।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
অতি গুরুত্বপূর্ণ ও চমৎকার একটা সিরিজ হচ্ছে। মনযোগ দিয়ে পড়ছি।
কি মাঝি, ডরাইলা?
Mahmuda Nasrin August 30 at 11:19pm
দাদা, আমার মন্তব্যটি খানিকটা বড় হয়ে গিয়েছে। মন্তব্য আকারে ফেসবুক নিচ্ছে না। আবার আপনার ওয়ালে শেয়ার দিতে চাইলাম-তাও দেখালো লেখাটি ১০০০ ক্যারেক্টারের বেশী হয়ে গেছে। তাই মেসেজ আকারে দিলাম।
দাদা, খুবই সম্মানিত বোধ করছি আমাকে নোটগুলি পড়ে মন্তব্যের আমন্ত্রন জানানোর জন্য। মুলত আপনার সিরিজ টি জেনেটিক্স এবং বাযোটেকনোলজী তথা প্ল্যান্ট জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর বিষয়গুলোকে খুব সহজবোধ্য করে দিয়েছে সকলের কাছে। যারা বিজ্ঞানের ছাত্র নন তারাও সহজে বুঝবেন বিষয়গুলো। এখন আসি ফরিদা আখতারের কথায়। আমি ২০০৪ সালে একটি এনজিওতে চাকরি নিয়ে আমার কর্মজীবন শুরু করি। তখন থেকে ফরিদা আখতারের লেখা পড়ি। মনসান্টো-সিনজেন্টা সম্পর্কে তাঁর একটি লেখা দিয়ে আমার পড়া শুরু। প্রথমদিকে ভাবতাম-আ-হা! এই পান খাওয়া চিকন-চাকন মহিলাটি আমাদের কৃষি আর কৃষকের কথা কত দরদ দিয়ে ভাবেন। কিন্তু দিনে দিনে বুঝেছি- তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একই ছাদের নীচে বাস করেও পরস্পর বিরোধী লেখাও লিখেছেন। এতে তাদের ঘরে কখনো অশান্তির আগুন জ্বলেনি। তারা সরকার আর দাতা গোষ্ঠী উভয়কেই খুশী করতে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। শ্যামও রইলো কুলও বাঁচলো। এতে তাদের ঘরে বিদেশী পয়সা এসেছে। তাদের জীবনে আমোদের তারাবাতি জ্বলেছে। বিভ্রান্ত হয়েছি আমরা বিদগ্ধ পাঠকরা। তাই এখন যখন পত্রিকায় তাদের লেখা পড়ি কিংবা টকশোতে তাদের কথা বলতে দেখি-আমার কাছে তাদেরকে ওজনহীন মনে হয়।
ইরি ও ব্রির ভূমিকা আপনি যেটা দিয়েছেন তাই যথেস্ট মনে করছি। সত্যিই এসব প্রতিষ্ঠানের অবদান না থাকলে আমাদের দেশেও মানুষ রাস্তাঘাটে না খেয়ে মরে পড়ে থাকত। ফরহাদ মজহার এবং ফরিদা আখতাররা যখন হাবিজাবি লিখেন আমাদের বিজ্ঞানীরা তখন তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখে থাকেন। ফলে এসব বাকোয়াজের জবাব দেয়ার সময় তাদের নেই, দরকারও নেই।
আমি জেনেটিক্স এর ছাত্রী ছিলাম। থিসিস এর গবেষনাও ছিলো বাযোটেকনোলজী তথা প্ল্যান্ট জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর উপর। আমি আমার এম এস পর্যায়ের গবেষনায় সরিষা বীজের আবরনের হলুদ রং এর জন্য দায়ী জীনটি সনাক্ত করে তা কালো বীজের জাতে ইনসার্ট করে বীজের বর্ণ পরিবর্তনের প্রটোকল দাঁড় করিয়েছিলাম। তখন এসাইনমেন্ট করতে হয়েছিলো জেনেটিকালি মডিফাইড ক্রপ বা ফুডগুলোর বায়োসেফটি বিষয়ে। তখনো এবং একনো মনে প্রশ্ন রয়েছে বায়োসেফটি বিষয়ে। কারন ইউরোপ-আমেরিকানরা অনেক ব্যায়বহুল গবেষনা করে জিএম ফুড তৈরী করলো, বাজারেও আনলো কিন্তু নিজেরা তা খাবেনা বা কিনবেনা। কেনো? তারা আফ্রিকার বা বিশ্বের গরীব দেশগুলোর মানুষকে সেগুলো খাইযে তা প্রূফ করবে। গরিব দেশের মানুষগুলো তো এমনিতেই না খেয়ে মারা যায়। এবার না হয় খেয়ে মরলো! অবশ্য নাও মরতে পারে। গবেষণা শেষে তা প্রমান হবে। সম্প্রতি ইরির মহাপরিচালক রবার্ট এস জিগলার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাঁর পরিকল্পনা গোল্ডেন রাইস বাংলাদেশে আনার। কেন বাংলাদেশে, কেন অন্য কোন দেশে নয়? কেবল বাংলাদেশের মানুষেরই ভিটামিন এ এর অভাব? আমি যা বলতে চাই তা হচ্ছে-চুড়ান্ত গবেষণা করার পর যা বায়োসেফটি প্রমান করবে তা বিশ্বের সকলে গ্রহন করবে।
জীব বৈচিত্র আমরা সকলে মিলে আমাদের অপকর্ম দিয়েই নষ্ট করছি। এতে আমার আপনার পাশাপাশি আলোচ্য দুই ফ ব্যাক্তিত্বও রয়েছেন। এজন্য কৃষি গবেষণা বা উচ্চ ফলনশীল জাত দায়ী নয়।
আর একটি কথা- সময়ের প্রেক্ষিতে মানুষের জন্য যেটা জরুরী প্রকৃতি সেটাকে সবসময় টিকিয়ে রেখেছে- যা কাজে আসছেনা তা আপছে পিছনে পড়ে গিয়েছে। তাই দেশী জাত, সুগন্ধি আর চিকন চাল বলে চিৎকার করে কোন লাভ নেই যদি না তার ফলন মাত্রা আমার প্রয়োজন মেটাতে পারে। বরং সেসব বৈশিষ্ট সমন্বয়ে যদি নতুন কিছু আসে বিজ্ঞানীদের কল্যানে তা সকলের জন্যই কল্যাণময়। তবে কি, আমারে দেশ থেকে সংগ্হীত জাতের বৈশিষ্ট নিয়ে গবেষনা করে অন্য দেশ বা কোম্পানী যেন পেটেন্ট নিয়ে আমার দেশকেই ক্রেতা না বানায়- ইরি যেন সেই সুযোগটি কোন কোম্পানীকে না দেয় এটা আমার মত একজন ক্ষুদ্র কৃষিবিদের ছোট্ট আবেদন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
চুড়ান্ত গবেষণা করার পর যা বায়োসেফটি প্রমান করবে তা বিশ্বের সকলে গ্রহন করবে।
আর শুধু পেটে ভাত নেই বলেই সেসব গবেষনার গিনিপিগ হবে বাংলাদেশী গরীবমানুষ? বিনোদন আর কাকে বলে...
"তাই দেশী জাত, সুগন্ধি আর চিকন চাল বলে চিৎকার করে কোন লাভ নেই যদি না তার ফলন মাত্রা আমার প্রয়োজন মেটাতে পারে।"
I do not agree exactly. We need to preserve these even at higher price (not for all, only those who can pay; eg. several times of average one).
I mostly agree with other part. Thanks.
দাদা, লেখাটা সেইরকম হইতেছে। চালায়া যান। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
পড়ছি আপনার সিরিজ। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম, যেখানে আপনার তুহিনকে বলা মন্তব্য অনুযায়ী উচ্চফলনশীন ধানের দোষগুণ নিয়ে আলোচনা করবেন।
এই প্রশ্নের আপনি এই যে উত্তরটা দিলেন, সেটা আমার মতে সরলীকরণ হয়ে গেল। প্রকৃতিতে মিউটেশন স্বাভাবিক ঘটনা। সত্যি। কিন্তু সেগুলোর তো ভাল-খারাপ দুই দিকই থাকে। এবং উচ্চশ্রেণীর জীব যে একধরণের প্রিসিশন ইনস্ট্রুমেন্ট, তাতে বরং অধিকাংশ মিউটেশনগুলির সিস্টেমকে ঘেঁটে দেবার সম্ভাবনা সিস্টেমের উন্নতি করার থেকে বেশি। অবশ্যই অনেক নিউট্রাল মিউটেশনও আছে। আমরা বরং কেবল এক আধ ক্ষেত্রেই উন্নততর প্রজাতি পাই, যখন একটা দুর্লভ ভালো মিউটেশনের উপর প্রাকৃতিক নির্বাচন কাজ করে একটা নতুন প্রজাতি তৈরি করে। তাই জিনের উপর পরিবর্তন র্যান্ডমলি ঘটালে খারাপ হবার সম্ভাবনাই বেশি।
এইবার আসি সেই ধরণের মিউটেশনের কথায়, যেটা ঘটানো হয়েছে কোনো একটা ফিনোটিপিক বৈশিষ্টের উন্নতিসাধনের জন্যই, পূর্ব গবেষণা থেকে জেনে। সেক্ষেত্রে মুশকিলটা হল, অধিকাংশ জিনেরই একাধিক এফেক্ট থাকে, যাকে বলে প্লিওট্রপি। সেক্ষেত্রে হয়ত আপনার পছন্দের কোনো ফিনোটাইপে সে কিছু উন্নতি ঘটায়, তাই জন্য আপনি তাকে বেছে এনে আপনার ধানে বসাচ্ছেন; সেটা ছাড়া সে যে আর কোনো ফিনোটাইপে কিছু অবনতি ঘটায় না, তা কে বলতে পারে? সেকেন্ডারি এফেক্টগুলো নিয়ে তো অত গবেষণা হয় না। এইটাই জিএম শস্য সম্বন্ধে আপত্তি, আশা করব পরবর্তী কোনো পর্বে এটা নিয়ে বিস্তারিত লিখবেন।
আপনার সিরিজটা পড়ছি, ভাল হচছে। তবে জিনোটাইপের ব্যআপারে একটু কথা আছে। মানুষের স্বভাব চরিত্র কেমন হবে, তা জীন দিয়ে নিররধারিত হয়না বলেই জানি, এটা হয়্ত কোন রোগের বিরূদ্ধে সহজাত প্রতিরোধ দিয়ে বুঝানো যেত।
সজল
জীবের স্বভাব চরিত্র জীন নিয়ন্ত্রণ করে। জীনের বিষয়গুলি নিয়ে পরে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
জেনেটিক্স এর কিছু সহজপাঠ নিচ্ছি আপনার লেখায়। মানলাম ফরিদা তুলসীপাতাটি নয়। কিন্তু 'পাপী' ফরিদা গিবত করেছে বলে ইরি'র গা থেকে ভুর ভুর করে নিশ্পাপ বেলী ফুলের সুবাস বেরুবেনা।
আপনি বলছেন কৃষিতে বিজ্ঞানের অবদানের কথা। অনস্বীকার্য। কিন্তু ইরিকে জ্ঞানবিজ্ঞানের ত্রানকর্তা ও নিঃস্বার্থ হাতেম তাঈ বলতে পারছি না। ইরির উতপত্তিটি কোন সময়ে হল, কেন হল, কার টাকায় হল - এগুলোর মধ্যেও কিছু কিছু ইঙ্গীত থাকতে পারে। এটুকে মনে রাখতে হবে, যেখানে পুঁজি-পূজা হয়না, সেখানে অন্তত এশীয়া/ফোর্ড/রকফেলার ফাউন্ডেশানের টাকা ঢোকে না। ৫০-৭০ দশকগুলোতে পূর্ব এশিয়া/ইন্দোচীন এলাকায় এশিয়া/ফোর্ড/রকফেলার ফাউন্ডেশানগুলোর আসল কার্যকলাপ ও মহত উদ্যেশ্যের সাথে অনেকেই আমেরিকার বিশ্বজয়ের খায়েশের যোগসাজস খুঁজেছে, কেউ কেউ পেয়েছেও। আরসব বড় ভাতখোরের দেশ যেমন ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া বাদ দিয়ে ইরি কেন ফিলিপাইনে, সেটাও ভেবে দেখতে পারেন।
আপনি হয়ত জানেন, ৬০-৭০ এর দশকে বরলাউগ এর মত আমেরিকার কিছু অমার্কিনসুলভ বিজ্ঞানী যখন গরীব দেশগুলোতে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে সবুজ ও সাদা বিপ্লবের অনুঘটক হচ্ছেন, ঠিক তখনি রকফেলারের টাকায় হারার সিজিআইএআর গড়ে তোলে। বরলাউগ-হারারের ঐতিহাসিক কাইজার পুঁথিপাঠ অন্য আরেকদিন করব।
এরকম 'নিঃস্বার্থ' ইরি ও তার বাবা সিজিআইএআর যখন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সাথে দহরম মহরম করে তখন আমাদের অবাক হওয়ার অবকাশ থাকেনা। পাট জিনোম আলাপে যেটা বলেছিলাম। জি এম ফসলের বীজ ব্যাবসায়ীর বানিজ্যিক কাঠামো (বিজনেস মডেল) টাই দাঁড়িয়ে আছে কৃষককে প্রতিবছর তাদের দোকানে বীজ কিনতে ফিরিয়ে আনার খেমতার ওপর। একবার বীজ কিনে যদি কৃষক পরের বছরের বীজের ব্যাবস্থা করে ফেলতে পারে, তাহলে আর মনসান্টোর মত কোম্পানীর শেয়ার আমার আর আপনার পেনশান ফান্ড থেকে কেনা হবেনা। ইরির অর্থায়নের মাত্র ১.৬% আসছে মনসান্টো (এই নামটাই শুধু মনে আসছে) বা এরকম বানিজ্যিক প্রতিষ্টান থেকে, এখানে, আর ৬০% আসছে অবানিজ্যিক খাত থেকে। যে অবানিজ্যিক খাত থেকে টাকাগুলো যে উদ্যেশ্যে আসে, সেগুলোর পাশকাটিয়ে ইরি যখন মন্সান্টো/সিন্জেন্টাকে মাথায় নিয়ে নাচে, তখনই ডালের মধ্যে কালো কালো কি যেন নড়েচরে ওঠে।
সুনির্দিষ্ট ভাবে, ইরি এর বানিজ্যিক বন্ধুদের বানিজ্যিক উদ্যেশ্যে ঢুকতে সহায়তা করে। উদাহরন হিসাবে সিবা/সিঞ্জেন্টার কথা বলতে পারি।
'ইরির হাত ধরে আছে বলেই আমাদের দেশে মূলত আমদানী নির্ভর সিবা/নোভার্টিস/সিঞ্জেন্টার রাজত্ব চলছে, নইলে দেশী ওযুধ কম্পানীরা দেশীয় উতপাদনেই দেশী কৃ্ষকের প্রয়োজন মেটাতে পারত ', এ বক্তব্যের বিপরীতে কারো কোন তথ্য থাকলে জানাবেন।
ইরি ও ইরির বানিজ্যিক বন্ধুদের উফশী, পরিবেশবান্ধব, রোগ-দুর্যোগে উতরে যাওয়া ফসলের বীজ ও চাষপযুক্তি কৃষককে যদি বিনা পয়সায় পেতে দেখি, তাহলে কিন্তু ইরি দিকে আর সন্দেহের আঙ্গুল ওঠেনা।
কাউকেই হাতেম তাই বলার দরকার নেই।
এক্ষেত্রে শুধু ইরিকে দোষ দিয়ে লাভ কি? বিদেশী টাকার ফ্রি দেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য থাকতে পারে অসম্ভব কিছু নয়। যেমন ফরহাদ মজহার যে উবিনীগ, নয়াকৃষি আন্দোলন, প্রবর্তনা করছেন--এই টাকার উৎস কি? এই টাকাগুলোর প্রদানের ক্ষেত্রে সেই সব উৎসগুলোর স্বার্থ কি? আর কি শর্ত মেনে তিনি এইটাকাগুলো নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন? এই প্রশ্নগুলো আসাটা খুব স্বাভাবিক আপনার মন্তব্যের সম্পূরক হিসাবে।
ফরহাদ মজহার রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করেছেন ঠাকুরের বেটা বলে এবং সাদ কামালীকে নিয়োগ করেছেন--রবীন্দ্র শ্রাদ্ধ কর্মটির দায়িত্ব পালনের জন্য--সেই রবীন্দ্রনাথের এবং তাঁর দাদাজান, বাবাজান, পুত্র, কন্যাদের খরচের প্রতিটি পাই পয়সার হিসাব রয়েছে এবং যে কেউই এগুলো দেখতে পারেন। তারা স্বচ্ছতা রেখেছেন। কিন্তু এই এনজিও সাইজীঁরা দৈন্যবশত এরকম হিসেবের খাতাটা কেন খোলেন নি? কেন তাদের টাকা পয়সা আয়ন-ব্যয়ন নেই এবং উদ্দেশ্য গুপ্ত?
ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য এটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই দায়িত্ব অত্যন্ত সফল ভাবে পালন করছেন আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীগণ। আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীগণ কি দায়িত্বহীন হবেন? তাদের বেতনতো সরকার দেয়। বিদেশী সংস্থা দেয় না। বিদেশী সংস্থার বেতন কড়ি মাধুকরি সবই পান ফরহাদ মজহাররা। সুতরাং দায় থাকলে মজহারদের থাকতে পারে--কৃষি বিজ্ঞানীদের নয়।
ইরি কেন ফিলিপাইনে? সোজা কথা ফিলিপাইনে ধানের আবাদ বেশি--সেজন্য ওখানেই হওয়ার কথা। আলু গবেষণা কেন্দ্রটি কি পাকিস্থানে? গম গবেসণা কেন্দ্র? যে দেশে যার চাষ বেশি সাধারণত সেখানেই সেই ধরনের গবেসণা কেন্দ্র স্থাপিত হবে--এটা খুব স্বাভাবিক। সুতরাং ইরি'র স্থান নির্বাচনটা সঠিক। মূল ঘটনা হল--ইরি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আয়ূব খান সাহেবরা বাঙালিদের দেশে এই আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রটি হোক--তা চায় নি। পরবর্তীকালে ব্রি স্থাপিত হয় পূর্ব পাকিস্থানে। ব্রি'র বিজ্ঞানীগণ বাঙালি। আমাদের আকাঙ্ক্ষা এবং চাহিদা অনুসারে তারা গবেষণা করেন। দেশে জাতীয় গবেষণা সিস্টেম (NRS) আছে। সেখানে কৃষক, কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ী, উৎপাদক, কৃষি সম্প্রসারণবিদ, কৃষিবিদ, পরিবেশবিদ--প্রমুখ প্রতিনিধি আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেখানে কৃষকদের তথ্য চাহিদা নিরুপণ করে সে আলোকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সুতরাং এক্ষত্রে কৃষি বিজ্ঞানীগণ দায়িত্বহীন হয়ে অন্ধের মত খারাপ শক্তির হয়ে কাজ করবেন এটা ধারণা করাটা বোকামী।
বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় থাকা কালে ফরহাদ মজহার সরকারের কৃষি বিষয়ক নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করতেন। তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে ঘোরাঘুরি করেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বই পুস্তকে লেখা আছে উবিনীগ, এমডি ফরহাদ মজহার ফোন ৮১১১৪৬৫, ৯১২৩৪০২।
সিনজেন্টাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকারের। বিজ্ঞানীদের উপরে চাপানোর মানে কি? বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে বিজ্ঞানীদের সংযুক্ত করা হাস্যকর।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
ফরহাদ চাইলে জাহান্নামে যেতে পারে।
আমার বক্তব্য ছিল ইরি ও এর গবেষনার লগ্নিকার ও খদ্দের দের নিয়ে। মানুষ বিজ্ঞানী হলে তার বিষয়বুদ্ধি লোপ পায়, একথা মানি কি করে? নামের গোড়ায় বিজ্ঞানী লেখা আছে বলে বানিজ্য আর আর্থিক মুনাফার ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেনা, এমন প্রজাতির বেড়াল শুধু বাংলাদেশেই জন্মায়।
গবেষার লগ্নিকার ও খদ্দেরদের বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা হয়েছে। আগামীতে আরও আলাপ করার ইচ্ছে আছে। তবে আমার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার আলোচনা আশা করছি।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
কৃষিবিদ বলেই হয়তো লেখাটা এড়াতে পারলাম না । পরিবেশবান্ধব কৃষির সাথে চাহিদানির্ভর কৃষির সংঘর্ষের শেষ শিকার আমাদের পরিবেশ নয়তো কৃষক। আর প্রযুক্তি মাত্রই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত । এ বিষয়েও কিছু লেখা দরকার ছিল । সেক্ষেত্রে, আক্রমণাত্মক আচরণের চেয়ে নিরপেক্ষ তথ্যনির্ভর লেখা পাঠকদের বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচায় বলে মনে করছি।
হাসিব ভাই গত লেখায় যেমনটা বলেছেন, "দেশের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে কেউ যদি যুক্তির য়্যাকাদেমিক মেরিট হারায় সেটা বিপ্লব না হয়ে প্রতিবিপ্লব হয়।"
আপনি সেই দৃষ্টিকোন থেকে তাদের তুলোধুনো করতেই পারেন।তবে কৃষির কর্পোরেটাইজেশন নিয়ে কথা বলাও কি অবৈজ্ঞানিক!
এটা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উচ্ছ ফলনশীল ধান চাষের কারণেই বেড়েছে। এই বাড়াটা কি অন্যায়? না প্রাণ বাঁচানোর জন্য জরুরী ছিল?
অবশ্যই প্রাণ বাঁচানো জরুরী।কিন্তু প্রশ্ন কাদের প্রাণ!
এই উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ যদি বহুজাতিক কোম্পানীর সীডফার্ম থেকে কিনতে যদি দরিদ্র চাষার জান বের হয়ে যায় তাহলে কাদের প্রাণ বাচানোর কথা বলছেন!!!
কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির বিস্তার নিয়ে "নাহু নাহু" করার যেমন যুক্তি নাই, তেমনি এইটার কর্পোরেটাইজেশনের বিপক্ষেও আস্ফালন করার দরকার আছে বৈকি।
মজহার সাহেব কর্পোরেটাইজেশনের বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে যেমন কৃষিতে প্রযুক্তির বিস্তার নাকচ করে দিচ্ছেন, আপনি বিপরীতভাবে প্রুযুক্তির বিস্তারে কথা বলতে গিয়ে এর "পিটফল" কর্পোরেটাইজেশনের ব্যাপারে নিরব।
দুটোই শেষ বিচারে আমার কাছে একি মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশে বীজবাণিজ্যের চেহারাটা সম্পর্কে কোনো ধারণা দিতে পারেন কি? কৃষক এখন বীজ পায় কিংবা কেনে কোত্থেকে?
গুড পয়েন্ট। এটা নিয়ে লিখব।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আমি কোন কৃষিবিদ নই বা এ ব্যাপারে আমার জ্ঞান শূণ্যের কোঠায়। তবে একজন কৌতুহলী পাঠক হিসেবে কিছু ভাবনা এরকম হয়-
কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চয়ই জীববৈচিত্র্য নষ্ট করছে ঠিকই, কিন্তু সময়ের প্রয়োজন আমাদেরকে তো পূরণ করতেই হবে। এখানে স্বভাবতই চলে আসে কর্পোরেটাইজেশনের বিষয়।
আমরা যদি এভাবে ভাবি, আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থায় এককালের সেই যে গরুরগাড়ি সংস্কৃতি, তাকে কিন্তু প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান গ্রাস এসে এলোমেলো করে দিয়েছে দ্রতগামী গাড়ি বা আধুনিক যানবাহনের আমদানি ঘটিয়ে ! তা কতোটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হয়েছে, তা আমরা সহজেই বুঝতে পারি। তাতে সংস্কৃতি গেল গেল বলে আহাজারি করতেই পারি, কিন্তু সেটা সময়োপযোগী হবে না বলেই বিশ্বাস। তাহলে কী দাঁড়ালো ? বাংলার আবহমান সংস্কৃতি নাই ! এখন প্রতিবছর বহু মানুষ সড়ক দুর্ঘটায় মারা যায় যা গরুরগাড়িতে এরকম ঘটতো না। আবার গরুরগাড়ি পরিবেশ দুষণও ঘটাতো না, অথচ পরিবেশ দূষণে এখন কতো বিচিত্র সব রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে ! এছাড়া উল্লেখযোগ্য বিষয়টা হচ্ছে গরুরগাড়ি বানানোর জন্যে কোন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দরকার ছিলো না, একজন কৃষক বা গাড়োয়ান বা কামার-মিস্ত্রি মিলে এরকম গাড়ি প্রয়োজনে যত খুশি বানিয়ে নিতে পারতো সাধ্যানুযায়ী। কিন্তু এখন এরা চাইলেই একটা আধুনিক বাহন বানাতে পারবে না তারা, সংগতি সাধ্যকে অতিক্রম করে চলে গেছে। অর্থাৎ আমরা ইচ্ছা অনিচ্ছায় যেভাবেই হোক সভ্যতার প্রয়োজন বা বিলাসী-রাস্তায় ঠিকই কর্পোরেট জগতের বন্দী হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে কর্পোরেটাইজেশনটা আসলে সভ্যতার সাথে প্যারালাল একটা গতিশীল প্রক্রিয়া। চাইলেই এখন যেমন পেছনে ফেরা সম্ভব নয় বা চাওয়াটাও একটা নির্বুদ্ধিতা হবে, তেমনি আধুনিক সুবিধা ভোগ করে কর্পোরেটাইজেশনের গোষ্ঠী উদ্ধার করাটাও আত্মপ্রতারণার মতো হবে।
তবে আমাদের চাওয়াটা হয়তো এরকম হতে পারে যে, প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করবো এবং কোন আধিপত্যবাদী শক্তির হাতে বন্দী থেকে নয়। কিন্তু এটা কি সম্ভব ? এটা সম্ভব যদি আমরা আমাদের বিজ্ঞান গবেষণা খাতটিকে চলমান বিজ্ঞানের লেভেলে পৌছানোর লক্ষ্য নিয়ে যথাযথ উৎসাহ, মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় পেট্রোনাইজ করতে পারি। যে দু'পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আছি তা যদি শরীরকে বহন করার সামর্থ না রাখে, ক্র্যাচ বা ছড়ি তো লাগবেই ! কর্পোরেট ক্র্যাচকে যতই গালাগালি করি, গোটা জীবন তো কেউ বিছানায় শুয়ে থাকতে পারে না !
ধন্যবাদ পোস্ট ও মন্তব্যকারীদের, যারা এই বিষয়ের ভাবনাটাকে গতিশীল করতে সহায়তা করছেন। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল খাবো, কিন্তু সাইড-ইফেক্ট নেবো না তা কিভাবে সম্ভব ? যন্ত্র-সভ্যতার ধ্বজা হাতে নিয়ে যে চাকার আবিষ্কার আমাদেরকে সভ্য করে তুলেছে, সেটাই এখন দৃশ্যমান বা অদৃশ্যরূপে আমাদের জীবন, জীবিকা ও সভ্যতাকে দুষ্টচক্রে বেঁধে ফেলেছে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমি একটা জিনিস বুঝি না। ধরা যাক, জিনগত পরিবর্তন করা হলে কৃষককে সেই বীজ বছর বছর গিয়ে কারো কাছ থেকে কিনতে হবে, যেহেতু মিউটেশনটা প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বিজ্ঞানীরা। তো এই জিনগত পরিবর্তনের কাজটা বাংলাদেশের কোনো কৃষি গবেষণা পক্ষ করলে সেই বীজের মালিকানা তো বাংলাদেশের জনগণের হবে। তখন বছর বছর আর মনসান্তো বালসান্তো চ্যাটসান্তোর কাছ থেকে কিছু কিনতে হবে না। কৃষককে সেই বীজ সরবরাহ করবে সরকার। এরকমটা হয় কি? না হলে কেন হয় না?
মাইকেল স্পেক্টার টেডের এই প্রেজেন্টেশনে কর্পোরেটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বলছেন তবে একটু সাবধানতার সাথে, যেন কোনভাবেই বিজ্ঞানের প্রভাবকে অস্বীকার না করা হয়। জিএম ফুড নিয়ে অনেকে এলার্মিস্ট ধারণা পোষন করেন যা একেবারেই অবৈজ্ঞানিক।
বন্দনা শিবার কাজ সম্পর্কে কেউ কী কিছু পোস্ট করতে পারেন?
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
আমি একজন পাঠক হিসেবে এই সিরিজে যা চাই:
[১] সঠিক বানানে গোছানো লেখা।
[২] মিস্টার অ্যাণ্ড মিসেস ফরহাদ মগবাজারের কীর্তিকলাপের বিশ্লেষণ। তবে বিদ্রুপের ভারে আলোচনা যেন চাপা না পড়ে।
[৩] বাংলাদেশে কৃষিতে প্রযুক্তির প্রয়োগে শামিল পক্ষগুলোর ওপর একটা ওভারভিউ। ধরে নিন পাঠক একজন কৃষিমূর্খ। তার সামনে একজন ধানচাষীকে দাঁড় করিয়ে দিন খালি হাতে। এরপর একে একে গোটা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে তাকে হাঁটিয়ে পার করুন। আমরা বুঝতে পারবো কখন কীভাবে কে এসে কৃষককে সাহায্য করছে বা সাহায্যের নাম করে গোয়া মারছে।
[৪] বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা দেশে বসে ধানের যেসব জিনগত পরিবর্তন সাধন করছেন, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত। এসব ধানের বীজ কীভাবে কৃষক পান?
গুড সাজেশন। আশা করছি--করা যাবে।
আপনি বীজ পরিস্থিতি জানতে চাচ্ছিলেন। বীজ নিয়ে একটি পর্ব আলোচনা করা যেতে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
চলুক, পড়তে থাকি। সব গুলো খণ্ড না পড়ে মন্তব্য করব।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
রণদীপম বসু,
আপনি উদাহরণ ঠিক যুতসই হয়নাই।যোগাযোগ অবশ্যই অতিপ্রয়োজনীয় ব্যাপার, কিন্তু সেটা কিন্তু মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে পড়েনা।
আপনি অবশ্যই প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন, কর্পোরেটর দ্বারস্থ হতে পারেন কিন্তু নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে থাকবে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা শহরে গাড়ী চলাচল আর জ্যামের যে হতচ্ছাড়া গরুর গাড়ী আর বাসের একই সময় লাগবে।বাংলাদেশের মতো ভয়ংকর ভাবে জনবহুল একটা দেশ কম খরচে নিরাপদে বেশি লোক পরিবহনের একমাত্র উপায় ছিলো রেল ব্যবস্থা। কিন্তু বিশ্বব্যাংক, এডিবি'র মতো কর্পোরেট বেশ্যাদের শর্ত আর পরামর্শে বানানো হলো রাস্তা...হাজার হাজার কিমি রাস্তা। মজহার মতো কোন বাটপারও যদি এইসবের প্রতিবাদ করতো রেলওয়েকে এইভাবে এতিম করা সম্ভব হৈতো না বোধ হয়, হলেও আমরা কিছু জানতাম ।
এরচেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ণ কৃষিখাতকেও যদি কর্পোরেটের দ্বারস্থ(ইতমধ্যে অনেকটাই হয়ে গেছে) করেন, তাইলে তো বীজ কেনার জন্য কৃষককে হাত পাততে হবে।এমনিতে টাকা দিয়ে কিনে সার পেতেই তাদের দফারফা হয়ে যায়।
কৃষিকর্পোরেটদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার লিংক দেওয়া যায়।এইখানে আপাতত হাইতির কৃষকদের প্রতিবাদ মনসান্টোর বিরুদ্ধে।তাও কিন্তু মনসান্টো বীজটা ডোনাশন হিসেবে দিয়েছিলো! আফসুস আমাদের মোর্যাল ঐ দূর্ভিক্ষ পীড়ির হাইতিয়ানদের চেয়ে দুর্বল।
http://bethanjohnwriter.wordpress.com/2010/06/15/haiti-farmers-protest-against-monsanto-hybrid-seed/
@হিমু, উত্তরবঙ্গের অনেক জেলায় কৃষককে গাঁটের পয়সায় দেশীয় কোম্পানী থেকে বীজ কিনতে হয়।বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা কোম্পানী'র গুলোর নাম ঠিক খেয়াল নাই, তবে একমি, ব্রাক, স্কয়ার এদের নাম দেখেছি মনে হয়।তাও ভালো মনসান্টো এখনো পৌছায় নি কিংবা হয়তো ইতমধ্যে মাঠে নেমে গেছে আমরা জানিনা।
সিরিজ পড়ছি। আশা করছি পরবর্তী পর্বগুলোতে আরো পরিষ্কার হবে নিজের কাছে। একটি ব্যাপারে দ্বিমত নেই যে জেনেটিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাকৃতিক নির্বাচন খুবই ধীরগতির। বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে যদি কৃত্রিম পদ্ধতিতে উন্নত প্রজাতি পাওয়া যায় সেটাকে গ্রহণ করাটাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় হবে। আমি যতটুকু বুঝি তর্ক হচ্ছে প্রযুক্তিকে যখন কিছু মানুষ কুক্ষিগত করে রাখে সেটা নিয়ে। মানুষের মূল আপত্তি মনে হয় সেখানেই। সেটা সব ক্ষেত্রেই আছে এবং থাকবে।
আমার দ্বিমত ছিল আপনার ফেনোটাইপ ও জেনোটাইপ বৈশিষ্ট্যের উদাহরণে। যদিও এই বিষয়ের লোক নই আমি, তারপরেও বিবর্তন নিয়ে আগ্রহ থাকার কারণে আমার কাছে আপনার এই উদাহরণ দু'টো যথার্থ মনে হয়নি। ফেনোটাইপ ও জেনেটাইপের পার্থক্য যতটুকু বুঝেছি তাতে ফেনোটাইপ নির্দিষ্ট করবে কোন জেনোটাইপটি ডমিনেণ্ট হবে সেই ব্যাপারটি। ফেনোটাইপ অনেকটা পরিবেশ/চারিপাশের প্রভাবের উপর নির্ভর করবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় একই জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের টুইনের কথা। একই টুইন ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন ফেনোটাইপ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে পারে, অথবা জেনেটিকালি একজন লম্বা/খাটো দু'ই ধরণের জিন পেতে পারি কিন্তু খাটোটাই প্রকট হওয়াতে সেটাই ফেনোটাইপ হয়ে গেল। সেই হিসেবে আপনার প্রদত্ত খাটো/ট্যারা বৈশিষ্ট দু'টি ফেনোটাইপ এবং জেনোটাইপ দু'ই।
আর বাটপারের যে জিনের কথা বললেন সেরকম জিনের অস্তিত্ব এখনো আবিষ্কার হয়েছে বলে আমার জানা নেই। মানুষের আচরণ বোঝার জন্য বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহৃত হচ্ছে বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানে, কিন্তু ভাল আচরণ বা খারাপ আচরণের জন্য সেরকম কোন প্রকার জিনের কথা বিজ্ঞানীরা এখনো বলেনি। তাই আমার মতে সেরকম ইম্প্রেশন দেওয়াটা ঠিক নয়।
সিরিজ চলুক।
জিন প্রকার। একটি হল প্রকট বা ডমিনেন্ট, আরেকটি হল--প্রচ্ছন্ন বা রেসেসিভ। প্রকট জিনটি প্রকাশিত হয়। আর প্রচ্ছন্ন জিনটি চুপ করে থাকে।
জিনের মেকআপ অনুসারে প্রকাশিত বৈশিষ্ট্যকে ফেনোটাইপ বলে।
The total set of alleles possessed by an organism. (Alleles are genes, which may be different or identical, that occupy matching sites on each of a pair of chromosomes.) Expression of these is responsible for the phenotype of the individual, which can be modified by environmental pressures.
Pheno derives from the Greek for display: the phenotype is the manifestation of the genetic make-up of the individual.
‘Old Blue Eyes’ was the name given by many to Frank Sinatra. Having blue eyes is a trait that was part of his phenotype and is genetically determined, dependent on the genetic material derived from both parents. Of course a person's parents do not necessarily both have the same coloured eyes, and an individual may receive eye colour genes specifying different colours from their mother and father. In this situation one gene has dominance over the other gene, which is said to be recessive. Recessive genes can of course be passed on to progeny, and may be expressed in the next generation if dominance is not present.
Eye colour and hair colour are simple traits, but much more complex traits, such as general body form and appearance, result from the complex interplay of many genes derived from both parents. Many children grown up to look very like their mother or father, while most resemble neither very closely because of the considerable mix of the genetic material. Nuture is also able to modify the phenotype — for example, someone with the genetic make-up to express an obese phenotype would not do so if malnourished.
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
জ্বি, আমিও তো একই কথাই বলেছি। সেই হিসেবে আপনার প্রদত্ত উদাহরণ গুলোকে সুনির্দিষ্ট করেছি।
কিন্তু, আপনি কিন্তু খারাপ চরিত্র এবং ভাল চরিত্রের জিনের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। ফেনোটাইপ নিয়ে আমার আপত্তি বেশি নেই। খাটো বা ট্যারা সেটা অবশ্যই ফেনোটাইপ বৈশিষ্ট্য তবে সেখানে জ়িনের অবদানও থাকে সেটা পরিষ্কারের উদ্দেশ্যেই মন্তব্যটি করা।
কিন্তু ভাল চরিত্র বা মন্দ চরিত্রের জন্য জিন দায়ী কিনা সেটা এখনো প্রামানিত নয়। তাই অপ্রমানিত বিষয়কে একটি বিজ্ঞানের লেখায় একজন বিজ্ঞানী প্রকাশ করলে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌছায়। আমার আপত্তি সেখানে। যদি আপনার বক্তব্যের স্বপক্ষে কোন তথ্য থাকে তবে সেটা এখানে দিলে নিজের ভুল ভাঙ্গে। আর যদি সেটা না থাকে তবে ব্যাপারটি পাঠকের কাছে পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমি মনে করি লেখকের।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
বিজ্ঞানের মত কঠিন বিষয়কে সহজ করে বলার ঝক্কি অনেক।
ভাল চরিত্র আর মন্দ চরিত্র জিন নির্ধারণ করে। জিনের কাজই তো এইসব। তবে এর সঙ্গে পরিবেশের একটা আন্তঃক্রিয়া আছে। যেমন ধরা--একটা কুমড়া ৪০ পাউন্ড ওজন হওয়ার কথা। সে ধরনের জিন নিয়েই যে জন্মেছে। যদি সব কিছু ঠিকঠাক মত থাকে--তাহলে ৪০ পাউন্ডই হবে। কিন্তু দেখা দেখা গেল মাটিতে পানির অভাব, বা খাদ্যের অভাব হল--তখন তো ৪০ পাউন্ড হবে না। তা কমে যাবে। অথবা রোগের ধরল। এক পাউন্ডের মধ্যেই তার অবস্থা কেরাসিন।
এখন একজন চোরের বিশিষ্ট্য নিয়ে যে ছেলে বা মেয়ে জন্মেছে তার তো চোর হওয়ার। তবে পরিবেশ তাকে কিছুটা পাল্টে দিতে পারে। যেমন তিনি হয়তো সাধুসঙ্গে আর টাকা পয়সা চুরি করছেন না। কিন্তু তিনি হয়তো সাহিত্য চুরি করছেন--সঙ্গীত চুরি করছেন। এই রকম হতে পারে। অথবা বড় চোর থেকে ছোট চোর হবেন। অথবা পরিবেশের গুণে চোর থেকে ডাকাত হয়ে গেলেন। ইত্যাদি। এগুলোকে পলিজিন ইন্টার্যাকশন বলে।
আরকেটু মজা করে বলা যেতে পারে--এধারকা মাল ওধারকে করবেন। মার্কসবাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদ ঢোকাবেন। লালন শাহ ছিলেন সারা জীবন সর্বোতোভাবে অসাম্প্রদায়িক--কিন্তু লালনকে ব্যাখ্যা করার সময়ে জঙ্গবাদি তত্ত্ব চুরি করে ঢুকিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করবেন লালন সাম্প্রদায়িক বিপ্লবী ছিলেন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
কেউ কি চোরের বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মাতে পারে? মানে চোরের বৈশিষ্ট্য কি জেনেটিক? একে নির্ধারণ করে এমন জিন আছে নাকি? আপনার কথায় অনেকটা অনুমিত যে এটা আছে। কিন্তু স্বাধীন ভাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন, এমনটা প্রমাণিত না। আমিও তাই ভাবছি। মানুষের প্রতিটা আচরণের জন্যে জেনটিপিক ইনফ্লুয়েন্স খোঁজা কাজের কি? অনেকে সহজাতভাবে ব্লগ লেখে। আবার অনেকে লেখে না। এখন ব্লগারের বৈশিষ্ট্য নিয়ে নিয়ে কি কেউ জন্মায়? এগুলো সব প্রশ্ন। সন্দেহ হলো, চোর, বাটপার, ব্লগারের বৈশিষ্ট্য নিয়ে কেউ জন্মায় না, অন্তত তেমনটা প্রমাণিত না। ভুল ভাঙালে উপকার।
আর উদাহরণে বিদ্রুপ ভাব আছে। অনেকে যারা ব্যাপারগুলো জানেন না, তারা বিদ্রুপের কারণে বিজ্ঞান আর মজহার সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গির ভুল দুইটাই ধরতে ব্যর্থ হতে পারে।
বিজ্ঞানের মত কঠিন বিষয়কে সহজ ভাবে লেখার ঝক্কি অনেক স্বীকার করি, তাই সব সময়ে চেষ্টা করি যেটা নিশ্চিত নয় সেটা বলা থেক বিরত থাকি। প্রমানিত বিষয় সম্পর্কেই বলার চেষ্টা করি। একই কথা বলা যায় ইতিহাস বিষয়েও।
আপনি আমাকে কোন তথ্য দিচ্ছেন না, কোন রেফারেন্স দিচ্ছেন নে যে এরকম কোন জিন বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন কিনা যেটা দিয়ে বলা যাবে লোকটির চোরের বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নিয়েছেন। এই ভাবে চিন্তাটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং এটি এখনো অপ্রমানিত।
জিনের কাজ এই সব ঠিকই আছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট জিন দায়ী নয় কারোর চরিত্রের জন্য। এখানে অনেকগুলো জিন, পরিবেশ সবকিছু কাজ করে। এই বিষয়টি আমি আপনাকে পরিষ্কার করতে চাচ্ছিলাম। আমিই না হয় কিছু তথ্য দিইঃ
How do genes influence behavior? এই লেখা থেকে কিছু উদ্ধৃতি দিচ্ছিঃ
আরেকটা লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিইঃ
যা হোক আমার যা বলার সেটা আমার মন্তব্যেই বলে দিলাম তথ্য সহকারে।
কুলদা,
খুঁটে-খুঁটে পড়ছি।
আর মজহারীয় পাঠ তো
অনেক আগ থেকেই নিচ্ছি...
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকুন।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
বন্দনা শিবা হচ্ছেন ইন্ডিয়ান ফরহাদ মজহার। তিনিও প্রধানত এনজিও করে কোটিপতি। মুখে ফেমিনিজম ইকোফেমিনিজম গ্রান্ড-ইকোফেমিনিজম টাইপের হইহল্লা করে স্টেজ গরম করেন। এদের দুজনেরই গভীর দার্শনিক জায়গাটা (যেটা তারা বিভিন্ন বিদেশী সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের ভাবগম্ভীর আলুচুনায় খালাস করেন) মোটাদাগে (মৃদু ফারাকসহ) এক…খুবই সংক্ষেপে জিনিসটা হলো, আজকের দুনিয়ার যাবতীয় বিপর্যয়ের কারণ মূলত শিল্পায়ন বিজ্ঞান ইত্যদি…অতএব কাস্তে কোদাল নিয়ে চলো গ্রামে ফিরে যাই…খুব কৌশলে তারা (এ জাতীয় এনজিও ধারাগুলো) আসল ব্যাপার্টা পাশ কাটিয়ে যায়…সেটা হলো, বিজ্ঞান বা শিল্পায়ন না; মূলত দুনিয়ার আজকের সর্বনাশের কারণ মুনাফাকেন্দ্রিক উতপাদন ব্যবস্থা (পুঁজিবাদ)…মুনাফাকে সর্বোচ্চকরণের এই হিংস্রশীতল বিশ্বব্যবস্থার প্রশ্নটাকে এইসকল এনজিওধারা না দেখার ভান করে…
কাজেই বন্দনা শিবা নয় বরং মীরা নন্দা’র (Meera Nanda) কাজ নিয়ে কেউ দয়া করে পোস্ট/আলোচনা করতে পারেন…বয়সে অত্যন্ত তরুণ এই লেখক/এক্টিভিস্ট ভারতীয় সমাজ পোস্টমডার্নিজম/গ্লোবালাইজেশনের হাত ধরে কীভাবে বেশি বেশি হিন্দুত্ত্ববাদাক্রান্ত হচ্ছে; তা খাপখোলা দক্ষতায় লিখে চলেছেন…
ডোবারব্যাং
এতক্ষণে বোঝা গেল, মজহার শিবানী নামের কবিতাটা কাকে নিয়ে লিখেছে। এই যে মজহারীয় হিন্দু পুরান নিয়ে কাম কাজ এইটা নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
এখন একজন চোরের বিশিষ্ট্য নিয়ে যে ছেলে বা মেয়ে জন্মেছে তার তো চোর হওয়ার।
ভাই আপনি কি জেনেশুনে এইসব বলছেন, এইগুলো তো প্রলাপ মনে হচ্ছে। মজহার যদি চোরের জিন নিয়ে জন্মায়, তাইলে হের সমালোচনা করে কি হবে! এইটা তো তার জিনের দোষ, তার কিই বা করার আছে!
কেউ রাজাকার হলে, তারও কোন দোষ নাই, কারন তার জিনে ছিলো সে রাজাকার হবে! তারে আর গালি দিয়ে কি হবে!
আচ্ছা জিন আর কি নির্ধারণ করে! কেউ লেখক হবে, কে ব্লগার হবে,কে খুনী হবে,কে নেশাখোর হবে!
অদৃষ্টবাদিরাও আপনার মতো এতো স্পষ্ট করে বলেনা বোধহয়।
যাইহোক, আমি এইযে মন্তব্যটা লিখলাম।এইটা আমার জিনে লেখা ছিল
একজন জিন বিশেষজ্ঞ মাহমুদা নাসরিন মন্তব্য করেছেন--
Mahmuda Nasrin September 2 at 9:50am
অতিথি লেখক মঙ্গল লিখেছেন-'মানুষের স্বভাব চরিত্র কেমন হবে, তা জীন দিয়ে নিররধারিত হয়না বলেই জানি'
এটা ভুল কথা। মানুষের যাবতীয় গুনাবলী তা চেহারা, স্বভাব, চরিত্র, রোগ সব-সবকিছু জীন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। তবে পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার কারনে জিন লেবেলে বিভিন্ন পরিবর্তনের কারনে একেকটা মানুষ একক রকম। এমনকি হুবুহু বাবা মায়ের মতও নয়।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনার মন্তব্য অসাধারণ। আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনি আমার মন্তব্যের একটি অংশ নিয়ে আলাপ করেছেন। এ কারণেই প্রলাপ মনে হচ্ছে। পুরোটা পড়লেই আমার কথার মর্মটা বুঝতে পারবেন।
আমি কিন্তু বলিনি--তিনি চোর হবেন। বলেছি--তার চোর হওয়ার কথা। এই চুরি কর্মটি কি কেবল টাকা চুরি করার বিষয় হবে? চুরি কর্মটি আরও নানাপ্রকারের হতে পারে। তার একটি ব্যাখ্যা আমি দিয়েছি।
আরও বলেছি--পলিজিন ইন্টার্যাকশনের বিষয়। পরিবেশগত উপাদানগুলো তার বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তনে প্রভাব বিস্তার করে। আরও রয়েছে--রেসেসিভ বা প্রচ্ছন্ন জিনগুলোর কখনো কখনো প্রকট বা ডমিনেন্ট জিনের মত আচরণ। রয়েছে মিউটেশনের মত ঘটনার প্রভাব।
জীবের স্বভাব জিনের গুণগত বা কোয়ালেটিভিভ বৈশিষ্ট্য। আর চুলের রং, দৈর্ঘ, প্রশ্ন, ওজন, রং, এগুলো হল--পরিমাণবাচক বৈশিষ্ট্য। গুণগত বৈশিষ্ট্যর কারণ পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতির। একটা জিনিস খেয়াল করেন--আমি আমার মন্তব্যে মজা শব্দটি ব্যবহার করেছি। মজহার আসলে মজার লোক। 'ঋণাত্মক মজার' বলতে পারেন। তাকে নিয়ে মজা করতে গিয়েই জিনোটাইপ আর ফেনোটাইপের একটি উদাহরণ দিয়েছিলাম। মজা হিসাবেই ধরে নেবেন। তবে সিরিয়াস আলোচনায় এ ধরনের উদাহরণ না দেওয়াই সঠিক। এটা আমি খেয়াল রাখব আগামী আলোচনাতে। এ ব্যাপারে হিমুর পরামর্শ প্রণিধানযোগ্য।
আমাদের আলোচনাটি মুল প্রতিপাদ্যে রাখা দরকার। ধন্যবাদ।
.......................................
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আমি একবার উবিনিগ অফিসে গিয়েছিলাম। সেটা ১৯৯২ সনের কথা। বিসিএস পরীক্ষার রেজাল্ট হয়েছে ১৭ আগস্ট ১৯৯২। বেশ কমাস চলে গেল নিয়োগপত্র আসছে না, এমসসি পরীক্ষাটাও পিছিয়ে গেল। তাই পত্রিকায় সার্কুলার দেখে দরখাস্ত করে পরীক্ষা দিতে গেয়ে দেখলাম সেটা উবিনিগ অফিস। মনে হয় শ্যামলীর একটা ভাড়া বাসা। এক মহিলা আমার সার্টিফিকেট দেখে মৌখিক পরীক্ষা নিল। সে কথা বলতে শুরু করল উফশী ধান, সার ইর্তাদির বিরুদ্ধে। লেগে গেলাম তর্ক বিতর্ক। কথা শুনে খুব রাগও হলো। চলে এলাম। ভাবছিলাম যদি নিয়োগপত্র দেয়ও তবুও চাকরি করব না। আসতে আসতে উবিনিগ এর বাংলা বের করলাম যা হলো - উন্নয়ন বিমুখ নিরীক্ষা ও গবেষণা।
নতুন মন্তব্য করুন