আমার দাদার নাম কানু। আমার নাম খানু। মানু হলে বেশ মানাত। মানু নামে বেশ মান্যতা আছে। কানু-মানু দুই ভাই—কাহারো সঙ্গে ঝামেলা নাই।
খানু শব্দের সঙ্গে খান খান করে ভেঙে যাওয়ার সম্পর্ক আছে। এজন্য মার কাছে এই নামটা খুব অপছন্দ। মা ডাকত খোকন। আর বাবা—বুড়হা। ওরে আমার বুড়হা। তুই অতি কুড়হা। কী অসাধারণ মিল করে ঝিলমিল। এখন মনে হয়—আমার বাবাঠাকুর কাকচরিত জানতেন। জানতেন বলেই আমার ভবিষ্যতটা অনেক আগেই দেখে ফেলেছিলেন। আহা, আমি কেনো আমার বাবা মত হলাম না!
সেকালে অমিতাভ বচ্চন সবে উদিত হচ্ছেন। লম্বা ঢ্যাঙা মানুষটি তখন আনন্দ নামে একটি সিনেমার দুই নম্বর নায়ক। এক নম্বর চকলেট হিরো রাজেশ খান্না। রাজেশ খান্না বাঙালি পুত্র। নাম আনন্দ। খদ্দরের পাঞ্জাবী পরা। বগলের নিচে ঝোলা। পায়ে কোলাপুরি চটি। ফটফটিয়ে চলেন আর ডাক্তার অমিতাভকে চমকে দিয়ে বলেন---এ বাবুমশাই।
এ অমিতাভ বাবুমশাইয়ের মন খারাপ। তার রুগীর ব্লাড ক্যান্সার। রুগী লোকটি কবি। কবি বলেই মহাআনন্দে থাকেন। ক্যান্সার রোগটি নিয়ে বেশ মজা করেন। সবাইকে পটাতে পারেন। সেকালে কোনো সুন্দরী নায়িকা মুম্বাইতে ছিল না। থাকলে তিনিও নিশ্চয়ই পটে যেতেন। কিন্তু ছবিতে সেরকম কোনো ঘটনটা নাই। তাই এমত সিদ্ধান্ত হয় যে ছবিটা হবে নায়িকাবিহীন। এ বিষয়ে পরিচালক বাঙালিবাবু হৃষিকেশ মুখার্জীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। বলেন তো মুখার্জীবাবু—হিন্দি সিনেমা—অথচ নায়িকা নাই—এর পিছনের অর্জিনাল রহস্য কি? আপনি কি নারী বিদ্বেষী?
হৃষিকেশবাবু পোড়খাওয়া ঘাগু লোক। তিনি ফস করে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনাগো লগে তসলিমা নাসরিন নাইতো?
--না, নাই। তিনি অখনো জন্মগ্রহণই করেন নাই। তার বাবা রজব আলী ডাক্তার ইয়াংকালে ময়মনসিংহ শহরের বাত্তির কলের কাছে এক বাড়িতে রুগী দেখছেন।
--গুড। হৃষিকেশবাবু সাবধানে পাইপ ধরালেন। বললেন, বুঝলে, অরিজিনাল রহস্য বলে কিছু নাই। তবে সেকালে মুম্বাই বলে কোনো পদার্থ ছিল না। ছিল বোম্বে। বোম্বে শহরে বোম্বেটেরা ঘিজ ঘিজ করত। ফলে সন্দরী মেয়েরা বোম্বাই ছেড়ে মুম্বাই চলে গিয়েছিল। বোম্বে শহরে সুন্দরী মেয়ে কোথায় পাব যে তাকে ধরে বেঁধে নায়িকা বানাবো?
এরপরে আর কথা নাই। স্রেফ একজন নায়িকার অভাবে ব্যাটা নায়ক রাজেশ খান্নার বেঁচে থাকার কোনো মানে হয় না। সুতরাং নায়ক রাজেশ খান্না অই ক্যান্সার রোগেই মারা গেল। তারমানে সিনেমাভর্তি শুধু কান্না। কান্না। আর কান্না। কাঁদতে কাঁদতে নাকি ক্যামেরা ম্যানের লগেও খোদ ক্যামেরাটাও কাঁদতে কাঁদতে চেতনা হারিয়ে ফেলেছিল। সেকালে কত আজব ঘটনাই ঘটতে পারত। আজব বটে গুজব নয়।
একাল হলে পরিচালকবাবুর দশা কি হত—ভেবে আতঙ্কিত হই। যাক বাবা, সেকাল বলে কথা। বাঁচা গেছে।
২.
আমার দাদার নাম কনক। আমার নাম খোকন। দাদা গৌরাঙ্গ স্বভাবের লোক ছিল। আর আমি কৃষ্ণাঙ্গ। গৌরাঙ্গ কৃষ্ণাঙ্গ নাচে।
বৈরাগী পলায় বাঁচে।।
দাদা নাচানাচির মধ্যে নাই। এ্কটু রাফ এন্ড টাফ। বেশ বুঝেশুনে একটা ভাব নিয়ে চলা শুরু করল। লম্বা ঢ্যাঙ্গা। এই ভাবের নাম অমিতাভ। দাদা একটা খেলনা পিস্তলও যোগাড় করে নিয়েছিল। কারণে অকারণে আঙুলে বসিয়ে মুখ দিয়ে ঠাসাও ঠাসাও শব্দ করত। আর ফু দিয়ে তার কল্পিত ধোঁয়া নেভাত।
দাদা দেখতে অমিতাভ বচ্চনের মত। এই নিয়ে পাড়ায় কিছু কানাঘুষা ছিল। আমাদের পাড়ায় দুর্গাপূজার বিসর্জনের রাতে এটা টের পেয়েছিলাম।
সেদিন বিসর্জন শেষে ফিরতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল। আমরা নানা কায়দায় জিলিপি খাচ্ছি। ঠোঁটের পাশ দিয়ে ঘন রস টপ টপ করে ঝরছে। কুসুমকুটিরের সামনে এসে দেখা গেল,স্ট্রিট লাইটটা জ্বলছে অভূতপূর্বভাবে। (অভূতপূর্ব= যাহা পূর্বে ঘটে নাই)। একটু দাঁড়িয়ে যেতে হল। কারণ এই বিসর্জনের রাত্তিরে ইলেকট্রিকের আলোর নিচে দোতলা টিনের দশাসই কুসুমকুটিরের সামনে শোলে সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছে।
শেষ দৃশ্যের আগে। পাহাড়ের মাঝখানে বাসন্তি নূপুর পরে দাঁড়িয়ে আছে। দঁড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে ধর্মেন্দ্র ওরফে ভিরুকে। ভিরুর দিকে অনেকগুলো বন্দুক তাক করা। মেরে ফেলা হবে। ভিলেন গব্বর সিং ঢুলু ঢুলু করে ঢুলছে। ভিরুর নায়িকা বাসন্তিকে সাফ সাফ বলে দিয়েছে—যতক্ষণ নাচবে, ততক্ষণ ভিরু বেঁচে থাকবে। থেমে গেলেই ঠাসাও। ঠাসাও। ভিরু বলছে—নারে বাসন্তি, তুই নাচবি না। আমার জান গেলেও এই গব্বর সিংহের সামনে নাচবি না।
বাসন্তি নূপুর পরে দাঁড়িয়ে আছে। এই দৃশ্যে বোতল ভাঙার ব্যাপার আছে। আগে বোতল ভাঙা হবে—তার পর বাসন্তি নাচবে—ও যব তক হ্যায় জানে যাহা ম্যায় নাচুঙ্গি।ভিরুর কথা শুনবে না। পরিচালক রমেশ সিপ্পি বলেছেন এইখানে নাচতে হবে—তাই নাচতে এসেছে। আর এখন নাচের বদলে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বাসন্তির মেজাজটা ত্যাড়া হয়ে যাচ্ছে। ফুসফুস করে বিড়ি টানছে। বলছে--আব্বে ও গব্বর সিং, তুরা হালায় ক্যালায় গেলা ক্যান। বোতল ভাঙো। নাইচা বাড়ি যাই। দেছো দশ ট্যাহা। এই ট্যাহা দিয়া কি সারা রাইত আঙায়া থাকুম? মোগো শরীল কী শরীল না?
এই শরীলের প্রশ্নে গোবিন্দ আর নিখিল কাকু ওরফে বাপব্যাটা দুজনেই নড়ে চড়ে উঠল। এতক্ষণ ধরে বাপব্যাটা দুজনে গলাগলি করে ঢুলছিল। গেবিন্দর মা বছর পাচেক আগে মারা গেছেন। সবে গোবিন্দ লায়েক হয়ে উঠেছে। বাপের সঙ্গে বাজারে সারাদিন গামছা বিক্রি করে। আর রাতে হরেকেষ্টোর দোকান হয়ে গলাগলি করে ফেরে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে দুজনে জড়ানো গলায় গান গায়--বাপব্যাটা ভাই ভাই। হ্যার উপ্রে সম্পর্ক নাই। নো কমপ্লেইন।
বিসর্জনের রাত্রে আমাদের কুসুমকুটিরের সামনে এই শোলে সিনেমায় নিখিলকাকু গব্বর সিং।মেরে কেটে তার এই পার্টের তুলনা হয় না। এ ব্যাপারে গোবিন্দর দাদুকেষ্ট সা-ও বারান্দায় উঁকি মেরে দেখে গেছেন। মাথা নেড়ে বলেছেন—প্রযোজকের এলেম আছে বটে। সবাই গব্বর সিং হতে পারে না। নিখিলকাকু পারে। কিন্তু নিখিলকাকুর ছেলে গোবিন্দ কি? ধর্মেন্দ্র? সেটা কি মানবে ওর বাবা গব্বর সিংহ—যখন প্রশ্নটা বাসন্তিকে নিয়ে? বাসন্তিকে কে পাবে—বাপে?—না, ব্যাটায়? এটা একটা অমিমাসিংত দার্শনিক প্রশ্ন। রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য একটা ডুয়েল লড়ার আয়োজন করতে হবে। তারপরও কি সমাধান আসবে? বাপব্যাটা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রশ্নের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। দর্শন কখনো মীমাংসার প্যাঁচ খোলে না। নতুন নতুন প্যাঁচ কষায় মাত্র। কখনো লাঠিকে সাপ—আবার সাপকে লাঠি বলে তত্ত্ব দেয়। সোজা করে বলে না—কোনো লাঠি না, একটা হিলহিলে সাপ। এইটা নিয়ে এত চিন্তা কিসের। সাপটার মাথায় লাঠি দিয়ে টুক করে একটা বাড়ি মারো। শ্যাষ। নো দর্শন। জারিজুরি খতম। আর যদি সাপ না হয়ে লাঠি হয়—তাহলে তো ল্যাঠা চুকেই গেল। লাঠি দিয়ে ডাংগুলি খেলা শুরু করগে বাপ। ন্যারেটিভ বা ন্যারেটিভের ডিসকোর্স-- এইসব গাঞ্জাখুরি ভাব মারতেছো ক্যান? দুই পয়সার বৈরাগী—ভাত কহে অন্ন।
কিন্তু এই বিসর্জনের রাতে, ফকফকা ইলেকট্রিকের আলোর নিচে, কুসুমকুটিরের সামনে রাস্তার মোড়ে গোবিন্দর বাপ বা গোবিন্দ বোতল ভাঙে কি প্রকারে? সেকালে চক্ষুলজ্জা বলে তো একটা শব্দ ছিল। নাহলে নায়িকা ছাড়া রাজেশ খান্না আনন্দ সিনেমা করল কোন সাহসে?
বিসর্জন শেষে লোকজন তখনও ফিরছে। কোথাও ঢ্যাং ঢ্যাং করে ঢাকের বাদ্যি বাজছে। অখিল সা জানালা খুলে দাদা নিখিল সার পার্ট দেখছে। ভুলু চাচা ঘুম ভেঙে সুরা ইয়াসিন পড়ছেন। এমপি কাজী সাহেব ছাদের উপরে হাই তুলছেন। কুসুমকুটিরের নিচতলায় গোবিন্দর দাদু কেষ্ট সা ঠোঁট থেকে মেদোমাছি তাড়াচ্ছেন। আর ডালুপিসিরা ফিসফিস করে বলছে—এ মা—এযে বাপব্যাটা দুজনে এক লগে? শরমটরম নাই?
৩.
বাসন্তি বিড়িটায় একটা দীর্ঘ টান মেরে বলল, বাবুরা, দেরী করতাছ ক্যান। বোতল কই? বোতল বাইর করো। তোমরা না পারো—আমিই ভাঙতাছি।
আসল জায়গায় হাত দিয়েছে বাসন্তি। বোতল তো শ্যাষ। বাপব্যাটা দুভাই বোতল টোতল পথেই শেষ করে এসেছে। এইটা কি অখনো থাকনের কথা?
তারপরও আরেকটি সত্য আছে। সেটা হল—তারা তো সত্যি সত্যি বোতল টানে নি। বাপব্যাটা সারাদিন খাটাখাটনির পরে একটু ফূর্তি করে। বোতলে কি চলে? হরেকেস্টোর পুরো এক বালতি দিশি গিলে ফেলেছে। আসলে তো আমাদের এলাকার লোকজন কখনো বোতলে অভ্যস্ত না। বোতল মানে হল বোতলে বন্দি মাল। মালই যদি আসল ঘটনা তাইলে খামোখা কেডা বোতল কেনে। বোতলের কত হ্যাপা—সাইজ দেখে বোতল কেনো, ছিপি খোলো, ছিপিতে গরু না শুয়োর আছে—সেইটা নিয়ে ভাবনা করো—কঠিন মীমাংসা। এত ভাবনা যদি করতেই হয়—তাহলে লোকে মাল খাবে কেন? ফ্যালো কড়ি—খাও মাল। মাতাল হওয়ার আগে দার্শনিক হওনের দরকার নাই। সব মাতালই মাতাল হওয়ার পরে বিগ বিগ দার্শনিক। শালা সক্রেটিস, শালা প্লেটো না সলিমুল্লাহ খানের আফলাতুন, সঙ করে শঙ্করাচার্য, শালা মার্কস না ম্যাও যে ঢং (মাফ করবেন কমরেডবৃন্দ—সাবঅল্টার্ন লেখা বলে সাবাল্টার্ন শব্দ প্রয়োগে দোষণীয় নয়), দেরী করে আসা দেরীদা, ফুকফুক করে বিড়ি টানা ফুকো মায় ডিকস্ট্রাকশনবাদি গায়ত্রীরানী স্পিভাক পর্যন্ত মাতালের মাথায় এক লগে ডিসকোর্স করে ইন্টারকোর্স করে—নো কস্ট প্রোগ্রাম : ফ্রি।
এদিকে বোতলের অভাবে কুসুমকুটিরের সামনে বাসন্তির নাচাও হচ্ছে না। দাঁড়িয়েও থাকা যাচ্ছে না। টাইম ফিনিস হচ্ছে। তার আরও কয়েকটা খ্যাপ আছে। বাসন্তি একটু হেলে দুলে হেটে এসে গোবিন্দর বাপের বুক পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিল। কয়েকটি তাজা নোট বের করে তার ব্লাউজের ভেতরে রেখে দিল। নোটগুলো তাজা কিন্তু দিশি ঘ্রাণে ভুরভরন্ত। গোবিন্দর দাদুর ঠোঁটে যে সব মাছি লুটেপুটে হড়কে ছিল—তাড়া উড়ে এসে বাসন্তির সেই ঐতিহাসিক ব্লাউজের আশেপাশে ঘুরে ঘুরে উড়তে লাগল। আর বাসন্তি চারিদিকে একবার ঠম্মক মেরে তাকিয়ে হাঁটা শুরু করল। ভিড়টা সরে পথ করে দিল।
আমার কানুদাদা এই ভিড়ের মধ্যেই পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পা দুটো একটুখানি ফাঁক করা। হাতটা প্যান্টের পকেটে। পকেটের মধ্যে সেই খেলনা পিস্তলটি। সবাই সরে গেলেও অমিতাভের পাড়াতো সংস্কৃরণ দাদা কিন্তু ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বাসন্তির পথ রোধ করে। একে বলে নায়ক। ব্লক বাস্টার হিরো নাম্বার ওয়ান। তুই এভাবে পাড়া ইজ্জত ঠুসে দিয়ে তুই চলে যেতে পারিস না বাসন্তি!
বাসন্তি দাদার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেল। দাদার টেরিকটা অমিতাভমার্কা চুলে একটা ঝাঁকি মেরে বলল, তুই কেঠারে-- মাল?
সবাই ভেবেছিল দাদা বলবে—হ্যায় জয় হু—শোলেকা হিরো জয়। অমিতাভ বচ্চন। তারপর টাস টাস –ঠাসাও ঠাঁসাও মব্দ। ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দেবে পিস্তরটির নল থেকে বের হওয়া ধোঁয়া।
কিন্তু দাদার মুখে কোনো রা নেই। দাদা থরথর করে কাঁপছে। মাথা নূয়ে পড়েছে। হাতদুটো পকেটে নেই। ল্যাতপ্যাত করে ঝুলছে। আর খেলনা পিস্তলটা ঢপ করে মাটিতে পড়ে ভেঙে খান খান হয়ে গেছে। জোড়াতালি দিয়ে আর কদিন চলে।
দাদা কিছু বলছে না দেখে আমি কেঁদে ফেলেছি। দাদাকে ধরে বলছি—এই যে আমার দাদা। এই যে আমার দাদা কানু।
বাসন্তি দাদার কান ছেড়ে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকাল। প্রশ্ন করল, তুই কেঠা গো কালা কেষ্ট?
--আমি, আমি—বুড়হা। বুড়হা আমার নাম।
কানু মানু গানু আর সব শতনাম নাম ভুলে গেছি। বুড়হা নামটি শুধু মনে আছে।
বাসন্তি আঁচল দিয়ে আমার নাক মুছে দিল খুব যত্ন করে। একটু হাসি দিয়ে বলল, তাইলে তরা বুইড়াই থাইকস। বেশি বাড়িস না। ঝড়ে ভাইঙা যাবি। গুলি করনের আগেই যদি পেচ্ছাব কইরা দিস রে বাপ—সত্যি সত্যি গুলিকরণের সময় কি করবি তরা, মনু?
সেই থেকে আমরা দুইভাই বুইড়া হয়ে আছে। নড়ি না চড়ি না। সাতে পাঁচে থাকি না। কোনো সময় চক্ষু মেলেও দেখি না—গোবিন্দর বাবা গব্বর সিং গোবিন্দর গলা ধরে হাঁটছে। গোবিন্দ বলছে—বোতল নাইতো অখন কি করি।
--অখন তুই গুলি খা রে শাম্বা। গুলি খা।
এখন গোবিন্দ থেকে থেকে গুলি খায়। আর গোবিন্দর বাবা নিখিল সা কুসুমকুটিরের নিচতলায় গোবিন্দর দাদুর বিছানায় শুয়ে শুয়ে বালতি খায়। আর গোবিন্দর পোলা সবে লায়েক হয়ে উঠে ঢপ খায়।
ঢপ কেত্তোনের কথা অমৃতসমান।
কুলদা রায় ভনে শুনে পূণ্যবান।।
মন্তব্য
আখতরুজ্জামান ইলিয়াস এবং প্রশান্ত মৃধা'র লেখার স্বাদ পেলাম।
আখতরুজ্জামান ইলিয়াস এবং প্রশান্ত মৃধা'র লেখার স্বাদ পেলাম।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ লেখক। তার খোয়াবনামার তুল্য খুব কমই আছে।
প্রশান্ত মৃধার লেখা কখনো পড়ি নাই। ওনার লেখার লিংক থাকলে দেন। পড়ে দেখি।
ধন্যবাদ।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
নেট-এ ডিজিটাল মৃধা পাওয়া যায় কিনা জানি না। কিন্তু 'শুদ্ধস্বর' থেকে তাঁর অনেকগুলো বই বের হয়েছে।
শুদ্ধস্বরের বই যোগাড় করা আমার পক্ষে কঠিন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
এই ইটের ইমোটার মানে কি? এটা কি ইটের মতো শক্ত লেখা নাকি রে ভাই?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনার গল্পে নিজের অনেক কথা ঢুকে যায় বলে অনেক সময় বুঝতে কিছুটা সমস্যা লাগে। তারপরেও আপনার ভাষার টানে শেষ পর্যন্ত পড়া যায়।
মুম্বাই নামকরণ বছর পনের আগের ঘটনা (১৯৯৫ সালে শিবসেনার চাপে এই নামকরণ)। তারপরেও কিছু নাম মনে হয় পালটায় নাই। যেমন বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, কিংবা ইনফর্মাল শব্দ বলিউড ( বোম্বে+ হলিউড থেকে বানানো)।
ভিন্নধারা গল্পে ভিন্ন আমেজ।
চরিত্রগুলো ভিন্নমাত্রায় ভাঙতে পারলে আরো সু-মধুর হত বলে মনে করি। গল্পে নিজেকে বড় মারপ্যাচের মধ্যে রাখতে কি পছন্দ করেন ?
এটা কোনো অর্থেই গল্প নয়। এটা আমার পাড়ার ঘটনা। মনে হল একটু স্মৃতিচারণ করি।
এইগুলো নিয়ে কখনো সময় পেলে সত্যিকারের গল্প লিখব। আমি না লিখলেও অন্য কেউ লিখবেন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
ক্ষ্যাপলেন ক্যা?
এই যে লীলেনদা কথা বলে উঠেছেন।
সবাই ডিসকোর্স নিয়ে লিখছেন। আমিও একটা লিখলাম। ডিসকোর্সের বাংলা নাম দিছেন সলিমুল্লাহ খান--সন্ধ্যাভাষা। আমি একটু রাত্রিভাষা করে দিলাম।
রাগ করব কেন? রাতে রাগারাগির সময় না। রাগ করলে কিছু ঝামেলা আছে। এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনি দারুন লিখেন।
নতুন মন্তব্য করুন