কুলদা রায়
এমএমআর জালাল
জমিদারির খোঁজে--------------------
কলিমখানের : জন্মসূত্র--হত্যাসূত্র-------------------------------------
বঙ্গীয় শব্দার্থ কোষে ৩৮৯ পৃষ্ঠায় কলিম খান রবি চক্রবর্তী লিখেছেন : জমি--(জমিদার, জমী, জমীন, জমীনদান)
জমি শব্দটি এসেছে জম থেকে। জম অর্থ—গতিশীল যাহাতে।
জমি—পৃথিবী, ভূতল, মাটি, কৃষিক্ষেত্র, চাষের ভূঁই, কাপড়ের পিঠ (Surface) বা বুননি (Texture), চিত্রপটের তলদেশ (Ground)। জমিদার—ভূস্বামী, রাজা। Land—অর্থে জমি এবং Landlord-অর্থে জমিদার শব্দটি প্রচলিত।
যতদূর বোঝা যায়, ভূতলের অংশ বা কৃষিক্ষেত্রের লেনদেন শুরু শুরু হওয়ার পরেই জমি ও জায়গা শব্দদুটির সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, দুটি শব্দের ভিতরেই ‘ই’ বা গতিশীলতা রয়েছে। জমি-তে ই-কার রয়েছে সরাসির, জায়গাতে ই রয়েছে ‘য়’—এর ভিতরে। কিন্তু কলিম খানের প্রশ্ন হল—জমিজায়গা গতি পায় কিভাবে?
তিনি বলছেন, জমিজায়গা হেঁটে-চলে বেড়ায় না। একবস্তা ধান কাউকে দিয়ে দেওয়ার মতো জমিজায়গা কাউকে হাতে তুলে দেওয়া যায় না, কেউ তা কাঁধে করে স্থানান্তরে নিয়ে যেতেও পারে না। অথচ একালের মানুষ মাত্রেই জানেন, জমিজায়গা দিয়ে দেওয়া যায়, দান করা যায়, বিক্রি করা যায় এবং অন্যে তা নিয়েও নিতে পারে। কী করে তা সম্ভব হয়?
কার্যত জমিদান, জমিক্রয় ইত্যাদি ব্যাপার মানবসভ্যতার একটা অদ্ভুত আবিষ্কার। বিষয়টিকে বুঝবার জন্য কলিম খান বলেন, সর্বাগ্রে জানা চাই, ভূতলের কি কোনো অধিকারী বা মালিক হয়? হ্যা, হয়। ভূতল যাদের অস্তিত্বের ভিত্তি, তেমন সমস্ত জড় ও জীবই ভূতলের প্রতিটি বিন্দুর অধিকারী। জড় থেকে জীবের আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্রমান্বয়ে উচ্চতর উত্তরণের সমস্ত ধাপে পেরিয়ে এই ভূতল মানুষের সৃষ্টি করেছে। সেই কারণে এই পার্থিব জগৎ হল অস্তিত্বের মাতা, মানুষ হল তার শ্রেষ্ঠ সন্তান; তার সর্বাধিক আত্মনিয়ন্ত্রণক্ষম বুদ্ধিমান ছেলে; অন্যেরা তুলনায় কম আত্মনিয়ন্ত্রণক্ষম। যে নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সে অন্যের সাহায্যে সাহায্য স্বভাবতই করতে পারে না। মানুষই একমাত্র পারে এই বিশ্বের সকল জীব ও জড়কে রক্ষা করে সবাইকে নিয়ে চলতে। ফলত, ভূতলকে কিভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে তার সিন্ধান্ত নেওয়ার অধিকার জন্মে যায়। ফলত, বিশ্বের সমস্ত মানুষ সমগ্র ভূতলের প্রতিটি বিন্দুর মালিক হয়ে যায়। আর, এই মালিকানার ধারণা চলে আদিম যুগ থেকে মহেঞ্জোদাড়োর যুগ পর্যন্ত। এই সময় পর্যন্ত ভূতল হাঁটা-চলা করতে পারেনি, গতিশীল হয়নি।
কিন্তু সুবিধাবাদিতার পাল্লায় পড়ে সেই মানুষ একদিন আত্মকলহে জড়িয়ে পড়ে। পরমাপ্রকৃতি তাকে সাধারণভাবে ‘শিবতার’ এবং প্রয়োজনে ‘দক্ষতার’ ব্যবহার করবার যোগ্যতা দিয়েছিল। নিজের নাবালকত্বের কারণে সে অপ্রয়োজনেও দক্ষতার ব্যবহার শুরু করে দেয়। এর অনিবার্য ফলস্বরূপ মানবসমাজে মৌলবিবাদের জন্ম হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় সম্প্রদায় ও সম্প্রদায় পরিচালক মহর্ষিদের বা জ্ঞানীমানুষদের। সেই সম্প্রদায় সৃষ্টির কালে আদি জ্ঞানীগণকে বা কশ্যপকে পৃথিবী দান করে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে যায়; আদিম যৌথসমাজের প্রতিটি মানুষ তাদের তিনটি অধিকার জ্ঞানীগণকে দান করে দেয়; যার তৃতীয়টি ছিল ভূতলের উপর প্রত্যেক মানূষের নিজ নিজ অধিকার। ভূতলের অংশ বা জমির হাঁটা-চলার সূত্রপাত হয়ে যায় সেই থেকে। এই অবস্থাতেই কেটে আরও হাজার বছর।
তারপর একদিন মহর্ষি (জ্ঞানী, ব্রাহ্মণ, মন্দির-চার্চ-মঠ-মন্দিরের অধিকারী) তাঁর অধিকারের ভূমির দেখভাল করার জন্য রাজা নিয়োগ করেন, অর্থাৎ রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়। রাজা ও রাজার সাগরেদ রূপে সামন্তগণ জমির দেখভালের দায়িত্বও পেয়ে যান, কিন্তু তারা তো আর চাষ করেন না। অতএব তারা সে অধিকার দিয়ে দেন রায়তদের। এরপর এক রাজা আরেক রাজাকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসে, দেখভালের কাঁধবদল হতে থাকে; যদিও গোড়ায় থেকে যায় আদি জ্ঞানজীবী মন্দির-মঠ-চার্চ-মসজিদ এবং শেষ সীমায় থেকে যায় একই রায়ত। এর মাঝে জমির যে লেনদেন চলতে থাকে, তা কেবলমাত্র দেখভালের-চাষাবাদের অধিকারের লেনদেন।
মুগলদের জমিদারি বেত্তান্ত--------------------------------------
মুগল আমলে জমিদার বলতে প্রকৃত চাষির ঊর্ধ্বে সকল খাজনা গ্রাহককে বোঝানো হতো। প্রকৃত চাষি জমিদার নয়, কারণ সে কখনও তার জমি খাজনা বা ভাড়ায় অন্য কাউকে প্রদান করে না। জমিদাররা শুধু খাজনা আদায়ের স্বত্বাধিকারী, জমির স্বত্বাধিকারী নয়। পক্ষান্তরে, জমির মালিকদের বলা হতো রায়ত বা চাষি যাদের নামে জমাবন্দি বা রেন্ট-রোল তৈরি হতো। এই ধারণায় জমিদারগণ রাজস্বের চাষি ছিল মাত্র। এরা ছিল সরকার এবং হুজুরি(স্বতন্ত্র) তালুকদার ব্যতীত নিম্নস্তরের রাজস্ব চাষিদের মধ্যস্থ পক্ষ। হুজুরি তালুকদারগণ খালসায় (খাজাঞ্চি খানায়) সরাসরি রাজস্ব প্রদান করত।
জমিদার এই পদবি বা শব্দটি ভূঁইয়া বা ভূপতি নামে যে দেশীয় পারিভাষিক শব্দটি প্রচলিত আছে তার সরাসরি প্রতিশব্দ বলা যায়। এই ভূঁইয়া বা ভূপতিরা ছিল ভারতের প্রাক্-মুগল আমলের বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারসূত্রে জমির মালিক। মুগলগণ তৎকালে প্রচলিত ভূমি ব্যবস্থাকে তাদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থায় রূপান্তর করে। অবশ্য চিরাচরিত ক্ষমতা ও উৎপাদনের উপায়গুলি তেমন বিশেষ পরিবর্তিত হয় নি।
টোডর মল্লর বন্দোবস্ত (১৫৮২) যা দূরবর্তী বাংলা সুবায় একদিন জমিদারি পদ্ধতির সূচনা করেছিল, তা ১৬৫৮ সন পর্যন্ত বজায় থাকে। এই সময়ে বাংলার সুবাহদার শাহ সুজার (১৬৫৭) রাজস্ব বন্দোবস্তের মাধ্যমে জমিদারি ব্যবস্থায় কিছুটা বল সঞ্চার হয়। এরপর ১৭২২ সনে সুবাহদার মুর্শিদ কুলির মালজমিনি (ভূমি রাজস্ব) পদ্ধতি প্রচলিত হয়। সরকারি রাজস্ব সর্বাধিক করা ও রাজস্বের নিয়মিত পরিশোধ নিশ্চিত করার জন্য মুর্শিদ কুলি বাংলা প্রদেশকে পূর্ববর্তী চৌত্রিশটি সরকারের পরিবর্তে তেরটি চাকলায় (প্রশাসনিক বিভাগ) ভাগ করেন। আর সেসঙ্গে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র জমিদারদের চাকলাদারের এখতিয়ারাধীন করেন। এই চাকলাদারগণ মনোনীত হন বৃহৎ জমিদারবর্গ থেকে আর তারা জমির মালিক হিসেবে নয় অধস্তনদের তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। তাদের কাজ ছিল দক্ষতার সঙ্গে রাজস্বের আদায় ও সংগ্রহ নিশ্চিত করা। তবে প্রধান জমিদারগণকে রাজস্বের রাজকীয় অংশের জন্য খালসা বা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের কাছে জবাবদিহি করার ফলে তাদের সনাতন ক্ষমতা ও মর্যাদাগত অবস্থান আরও বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও প্রতিভাবান জমিদারগণকে বিভিন্ন সরকারি পদে নিযুক্তির যে প্রস্তাব দেওয়া হয় তার ফলে রাজদরবারে তাদের অবস্থানগত মর্যাদা বৃদ্ধি ও সেসঙ্গে তাদের নিজ স্বার্থকে আরও এগিয়ে নেবার সম্ভাবনা অনেক দূর প্রসারিত হয়। রাজস্ব ব্যবস্থাপকের ভূমিকা থেকে জমিদারে রূপান্তরিত হওয়ার এই প্রক্রিয়াটি আঠারো শতকের মাঝামাঝি নাগাদ সম্পূর্ণ হয়।
সময়ের চিত্র : ফ্রম শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের শাহজাদা দারাশুকো থেকে---------------------------------------
কোটচাঁদপুর সরকার যশোহরের একটি মহাল। মোট পরিমাণ ফল ৮৩২০ বিঘা। আকবর বাদশার আমলে স্থির হয়েছিল—লড়াই-হামলার সময়—মহাল কোটচাঁদপুর আগ্রাকে দেবে ২০০ ঘোড়সওয়ার আর ১০১ জন পদাতী। .ঘোড়সওয়ার বা পদাতী দিতে না পারলেও মহান কোটচাঁদপুর শাহী খাজনা-খানায় পুরো মুল্য ধরে দিত—ফৌজদারের হাদ দিয়ে। কড়ায়-ক্রান্তিতে। আশরাফিতে—মোহরে।
লেখাটিতে একজন পথিককে দেখা যাচ্ছে। তিনি পায়ে হেঁটে আসছেন কোটচাঁদপুরের দিকে। হাঁটতে হাঁটতে এক সময় পথিক দাঁড়িয়ে পড়লেন। তার পায়ের ফাঁক দিয়ে দুটি বনমোরগ ছুটে পালাল। দূরে বনশুয়োরের ঘোত ঘোত। পথিক এক একই বলে উঠলেন, আগে এখানে একটা গাঁ ছিল। এখন নেই। মুছে গেছে। বসতি মুছে যাওয়ার পরে এখানে বোধ হয় কোনওখানে মানুষজন মানত করতে আসে। তাদের মানত করা মুরগিগুলো এখন বনমোরগ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে বনজঙ্গল বেড়ে যাওয়ায় বনশুয়োর এসে জুটেছে।
পথিক জানেন, কোটচাঁদপুরে রাত জেগে থাকত। তাঁতীরা খটখট করত। নেই। শুন্য। ভিটেমাটি। জঙ্গল। গ্রামটি মুছে গিয়েছিল—মগদের লুটপাটের কারণে। পথিকের চার ভাইপোকে মগরা ধরে নিয়েছিল। আর নিয়ে গিয়েছিল বাড়ির কিশোরী মেয়েটিকে। এদেরকে দাস হিসেবে বেঁচে দেওয়া হয়েছে সেসময়ে। সে সময়ের শাসকবর্গ মগ দস্যুদের দমনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রজারা বাঁচল কি মরল এটা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল প্রজাদের কাছ থকে খাজনা আদায় করা।
সে সময় মুর্শিদ কুলি খাঁ বলছিলেন, বাদশার পাওনা হল-বিঘা পিছু চার মণ গম, চার মণ যব, আড়াই মণ সরষে, সাড়ে তিনমন ছোলা বা মটর আর ছমন কলাই। কিন্তু জমিতে যদি পেঁয়াজ, লেবু, শাকসবজি ফলে—তাহলে নগদ তনখায় খাজনা দিতে হবে। এছাড়াও নীল, পান, তেতুল, গাজা, চুবড়া আলু, শাকালু, লাউ, কুমড়ো ফলানের নগদে খাজনা চাই। এসব হিসেব করার জন্য কানুনগোরা গ্রামে গ্রামে যায়। গরু মোষ রক্ষায় গোসেমারি খাজনা চালু কর হয়েছিল। ফলবান গাছের উপর খাজনা, সরদবক্তি, শান্তি রাখতে দারোখানা খাজনা, সরাফি, হাসিলবাজার—সব রকম খাজনার পাশাপাশি গাঁজা, কম্বল, তেল, কাঁচা চামড়ার উপরেও কর বসেছে প্রয়োজনে।
মুগল বনাম বণিক : দ্বৈতশাসন---------------------------------------------
১৭৫৭ সালে সিরাজউদদৌলা ইংরেজ বণিকদের হাতে পরাজিত হওয়া পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলা বিহার এবং ওড়িশার দেওয়ানী লাভ করে ১৭৬৫ সালে। এই সময় থেকে আরম্ভ করে কিছুকাল একই সঙ্গে চলতে থাকে নবাব এবং কোম্পানীর দ্বৈতশাসন।
ইরানী ভাগ্যান্বেষী রেজা খানকে নবাবের নায়েমে নাজিম করে শাসন ব্যবস্থা চালানো হয়। তাকে দেশীয় আইন-কানুন ও প্রথা অনুযায়ী দেশ শাসন করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থাটি ১৭৬৭ সন অবধি ভালভাবেই কার্যকর ছিল। ঐ বছরেই ক্লাইভ এদেশ থেকে চূড়ান্তভাবে বিদায় নেন। ক্লাইভের সমর্থনে রেজা খান দক্ষতার সাথেই কোম্পানির রাজ্য শাসনে সক্ষম হন। তবে পৃষ্ঠপোষক ক্লাইভ-এর নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের পর রেজা খানকে ফোর্ট উইলিয়ামের উচ্চাভিলাষী কর্মকর্তাদের চরম বিরোধিতা মোকাবেলা করতে হয়। ফোর্ট উইলিয়ামের এসব কর্মকর্তা রাতারাতি ধনী হবার বাসনায় রেজা খানের প্রভাব-প্রতিপত্তি হ্রাসে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠেন। তারা পর্যায়ক্রমে রেজা খানের হাত থেকে প্রশাসন নিজেদের হাতে তুলে নেন। তাদের এ হস্তক্ষেপের বিষয় প্রথম স্পষ্ট হয়ে ওঠে বিভিন্ন জেলায় ইউরোপীয় তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের মাধ্যমে। রেজা খান অভিযোগ করতে থাকেন যে এই নবনিযুক্ত কর্মকর্তারা পল্লী অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে কোম্পানি কর্মকর্তারা দেশের পল্লী জনপদগুলিতে লুটপাট চালাচ্ছে।
এর ফলে রাজস্বের দাবি রাতারাতি বেড়ে যায়। ১৭৬৪ সালে যেখানে ভূমি রাজস্ব ছিল মাত্র ৮১ লাখ টাকা, সেখানে পরের বছর তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৪৮ লাখে। আর সাত বছর পরে ১৭৭৩ সালে এই রাজস্ব ধার্য হয় ৩ কোটি টাকা। এই অতিরিক্ত রাজস্বের দাবিতে বাংলার কৃষি ব্যবস্থা য় রীতিমত বিপর্যয় ঘটে। এ সময় একটি অসাধারণ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। দুর্ভিক্ষটির নাম ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। এই ছিয়াত্তর বাংলা সন ১১৭৬, ইংএরজি হিসেবে ১৭৭০ সালের প্রথম দিকে। এই দুর্ভিক্ষে চাষীদের অর্ধেকই মারা গিয়েছিল। আর মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগই প্রাণ হারান। অতিরিক্ত রাজস্বের দাবিতে জমিদাররা অত্যাচার শুরু করেন। তাতে অতিষ্ট হয়ে অধিকাংশ চাষী অন্যত্র পালিয়ে যান। বাংলার দুই-তৃতীয়াংশ ফসলি জমি লোকের অভাবে ঝোপ-জঙ্গলময় হয়ে ওঠে।
১৭৮১ সালের একটি পার্লামেন্টারি কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল, একমাত্র রংপুরের উর্বর জমি ছেড়ে ৩০ হাজার পরিবার কোচবিচার চলে গিয়েছিল। এভাবে চাষীরা অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ায় এবং মারা যাওয়ায় জমিও হয়ে পড়েছিল অনাবাদি। ফলে রাজস্ব আদায়ে একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল।
কোম্পানির পরিচালক সভার নির্দেশের (২৮ই আগস্ট, ১৭৭১) আওতায় কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ম কাউন্সিল দেওয়ানি প্রশাসনের ক্ষেত্রে নিজেকেই সুবা বাংলার জন্য সর্বোচ্চ সরকার ঘোষণা করে। নায়েব দেওয়ান রেজা খানকে পদচ্যুত করে দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে কারারুদ্ধ করা হয়।
---------------------------------------
লেখাসূত্র--
১. রবি ঠাকুর, রাহাজানি এবং রবীন্দ্র পূজারীবৃন্দ: ফরিদ আহমদ ও অভিজিৎ রায়
২. রবীন্দ্রনাথের জমিদারগিরি—জমিদারের রবীন্দ্রগিরি : প্রথম পর্ব
গ্রন্থসূত্র :
---------
১. রবিজীবনী--প্রশান্তকুমার পাল . ২.রবিজীবনকথা--প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় . ৩. রবীন্দ্রনাথের আত্মীয়স্বজন -- সমীর সেনগুপ্ত . ৪. ছিন্নপত্র : রবীন্দ্রনাথ . ৫. হাজার বছরের বাঙাল সংস্কৃতি গোলাম মুরশিদ . ৬. জমিদার রবীন্দ্রনাথ : শিলাইদহ পর্ব : অমিতাভ চৌধু রী. ৭. রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ . ৮. স্মৃতিসম্পুট, রবীন্দ্রস্মৃতি; পুরাতনী--ইন্দিরা দেবী : .৯.এইখানে গান নিয়ে আলোচনা চলিতেছে: কুলদা রায় . ১০. শাহজাদা দারাশুকো : শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় . ১. বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ : কলিম খান ও রবি চক্রবর্তী
কুলদা রায় ও এমএমআর জালাল লিখিত রবীন্দ্রবিরোধিতার স্বরূপ সিরিজের লিংক
--------------------------------------------------------------------------------------------
১. বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা ও রবীন্দ্রনাথ : 'গ্রহগণ জীবের আবাসভূমি' থেকে 'বিশ্বপরিচয়'---
[url=http: //www.sachalayatan.com/node/41831]প্রথম পর্ব [/url]: লিংক
দ্বিতীয় পর্ব: লিংক
তৃতীয় পর্ব
২. আমি কোথায় পাব তারে থেকে আমার সোনার বাংলা :
৩. রবীন্দ্রবিরোধিতার স্বরূপ : পাকিস্তান পর্ব :
৪. রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন নাই : প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
৫. রবীন্দ্রনাথের জমিদারগিরি—জমিদারের রবীন্দ্রগিরি : প্রথম পর্ব
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন