বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষার সঙ্গে আয়বর্দ্ধকমূলক কার্যক্রমের উদাহরণ হিসাবে ছাত্রলীগকে সকলের সামনে শক্ত পায়ে দাঁড় করিয়েছে। এ সফলতার পাশাপাশি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধিতে চলতে পারে না। কোচিং শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে পাল্টে দিতে পারে। এ ব্যাপারে জামাতে ইসলামীর ছাত্র শিবির জাতিকে পথ দেখিয়েছে। তারা কোচিং ব্যবসা প্রকাশ্যে চালু করেছিল। এখনো চালু আছে। তারাই দেশে উচ্চশিক্ষার পাইপলাইনে ছেলেপিলেকে প্রবেশের সুযোগ এনে দিয়েছে। এর আগে বা পরে কেউ কোনোদিন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেত না। রেটিনা, মেটিনার নিরলস কোচিংদানের ফলে ছেলেপেলেরা উচ্চশিক্ষার দরোজায় যেতে পারছে। দেশ ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আমলা পাচ্ছে। আগে এগুলো বিদেশ থেকে আমদানী করতে হত।
এই কোচিং শিক্ষাটাকে সরকারীভাবে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার পূর্ব ঘোষণা হিসাবে এ বৎসর সরকার একুশে পদকপ্রাপ্তদের মনোনয়নের তালিকায় এমন একজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন--তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল অতি সততার সঙ্গে ছেলেপেলেদের পরীক্ষায় পাশের জন্য কোচিং করানো। সফলতাও ১০১% নিশ্চিত।
মার্কিন দেশের শিক্ষা বিভাগ শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, প্যারাটিচার, সাবস্টিটিউট টিচার নামের অসংখ্যপ্রকার শিক্ষকের ব্যবস্থা রেখেছে। এমনকি শিক্ষা বিভাগ বাড়িতে ফ্রি হাউস টিউটর পাঠিয়ে হোম ওয়ার্ক করার ব্যবস্থা করছে প্রাইমারী, হাইস্কুল লেভেলে। সে শিক্ষাব্যবস্থারও গলতি বের করে কিছু সৃষ্টিশীল বাঙ্গালী বাংলাদেশের কোচিং শিক্ষাকে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে গৃহ থেকে রাস্তায় গ্রোসারীর ছাদে দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। তারা সেখানে বাংলা ভাষা, সাহিত্য--এসব কিছুই নয়--ক্লাশের পাঠ্যবিষয়গুলির হোমওয়ার্ক করতে ছেলেপিলেকে সহাযোগিতা করছে ব্যাচে ব্যাচে। নানা ধরনের ক্লাশ টেস্ট করিয়ে তাদের নানাধরনের স্কুল এক্সামের দরোজায় যেতে সাহস দিচ্ছে। এর আগে কোনো বাংলাদেশী মার্কিন দেশের উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হতে পারে নি। এইসব কোচিং প্রতিষ্ঠান আসার পরেই বাংলাদেশীরা মার্কিন দেশের বিভিন্ন কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাচ্ছে। চান্স না পেলে এদেরকে গ্রোসারিতে কাজ করা লাগত। এদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা পেয়ে এইসব ছেলেপিলেরা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে উন্নয়নে অবদান রাখছে। উন্নয়নের ফলে পুরো বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে। এই সফলতার অবদান এইসব কোচিং প্রতিষ্ঠানের।
দুএকটা কোচিং গ্রোসারির মালিকের ডঃ ডিগ্রীও আছে। প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক ভ্রমণকালে এইসব কোচিং মালিকের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন। তিনি নিজে এই ডঃ ডিগ্রী পছন্দ করেন। তিনি জানেন কোচিং শিক্ষার প্রসারতার উপরেই দেশের ডঃ ডিগ্রী বাড়া কাজটা নির্ভর করছে। তার কয়েকটি ডঃ আছে। কিন্তু তার উচ্চশিক্ষিত ছেলে বা মেয়ের কারোরই ডঃ নাই। তবে কোচিং পেলে তারাও পাওয়ার পাইপলাইনে যেতে পারবে।
এসব বিষয় বিবেচনা করে সরকার--এ বছর নিউ ইয়র্কের এক কোচিং ব্যবসায়ীকে একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন দান করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত ভীষণ সৃষ্টিশীল ঘটা। আগামী সরকারের জন্য এইকটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
মন্তব্য
সরকার ভাইয়ার প্রতি আমার আকুল আবেদন, আনিসুল ভাইয়াকে একুশে পদকে ভূষিত করুন। সাহিত্যে বা সাংবাদিকতায় বা চলচ্চিত্রে সম্ভব না হলে গান-নাচ-চিত্রাঙ্কণ যে কোনো বিভাগে। তাহলে অকালমৃত ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণের উছিলায় "মা"-এর বিজ্ঞাপন পড়ার গ্লানি থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ নাজাত পাবে। প্লিজ সরকার ভাইয়া, প্লিজ।
হিম্ভাই, আপনার কন্ঠ আর মতিকন্ঠ একই সুরে গাঁথা।
তাও ভালো কালের কণ্ঠের কথা কন্নাই!
কাকে ইঙ্গিত করলেন বুঝলাম না। কে এই ভদ্রলোক ? ড. মনসুরুল আলম খান ??
এবারের তালিকা -
ভাষা আন্দোলনে মমতাজ বেগম (মরণোত্তর);
শিল্পকলায় মোবিনুল আজিম (মরণোত্তর),
তারেক মাসুদ (মরণোত্তর),
ড. ইনামুল হক, মামুনুর রশীদ এবং অধ্যাপক ড. করুণাময় গোস্বামী;
সাংবাদিকতায় এহতেশাম হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর),
আশফাক মুনীর চৌধুরী (মিশুক মুনীর) (মরণোত্তর) ও
হাবিবুর রহমান মিলন।
শিক্ষায় অধ্যাপক ড. অজয় কুমার রায়,
ড. মনসুরুল আলম খান,
ড. একে নাজমুল করিম (মরণোত্তর);
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক বরেণ চক্রবর্তী;
সমাজসেবায় শ্রীমৎ শুদ্ধানন্দ মহাথের এবং
ভাষা ও সাহিত্যে ড. হুমায়ুন আজাদ (মরণোত্তর)।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
নতুন মন্তব্য করুন