কুলদা রায়
এমএমআর জালাল
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ—৫
বঙ্গবঙ্গ আন্দোলনে ছাত্রসমাজের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। ছাত্রদের এই আন্দোলনটা কঠোর হাতে দমনের চেষ্টা করে বৃটিশরাজ। ২২ অক্টোবর দি স্টেটসম্যান পত্রিকার সরকার একটি সার্কুলার জারি করে সকলপ্রকার স্কুল-কলেজের ছাত্রদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা হয় এবং নানাবিধ শাস্তির বিধান করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ভয় দেখানো হয় যদি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখা যায় তাহলে তার সরকারী সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। সরকারের এই ঘোষণায় কোলকাতায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার আবদুল রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয় গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবটি রবীন্দ্রনাথ আগে থেকেই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন—শিক্ষাকে সরকারী আওতামুক্ত রাখতে হবে। তাহলে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর ইচ্ছে মত ছড়ি ঘোরাতে পারবে না। দেশের মানুষ সমাজের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে পারবে—তাদের জন্য কোন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার। কবিকল্পনা বলে রাজনীতিকরা রবীন্দ্রনাথের এই প্রস্তাবে কখনই কর্ণপাত করেননি।
১৯০৫ সালের ২৭ অক্টোবর পটলডাঙায় সহস্র ছাত্রের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রবীন্দ্রনাথ সভাপতিত্ব করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রস্তাব সকলের সামনে বিষদভাবে আবার তুলে ধরেন। সে সভায় সিটি কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শচীন্দ্রনাথ বসু সরকারী সার্কুলারটি প্রত্যাখ্যান করেন। বলেন, আমরা কোলকাতার ছাত্রবৃন্দ সম্মিলিত হইয়া প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, যদি গভর্নমেন্টের বিশ্ববিদ্যালয় আমাদিগকে পরিত্যাগ করিতেও হয় তাহাও স্বীকার করি, তথাপি স্বদেশ সেবারূপ যে মহাব্রত আমরা গ্রহণ করিয়াছি তাহা কখনো পরিত্যাগ করিব না।
সে সভায় রবীন্দ্রনাথ বলেন, আমাদের সমাজ যদি নিজেদের বিদ্যাদানের ভার নিজে গ্রহণ না করে, তবে এক দিন ঠকিতে হইবে। আজকার এই অবমাননা যে নূতন তাহা নহে, অনেকদিন হইতেই ইহার সূত্র আরম্ভ হইয়াছে। আমাদের উচ্চ শিক্ষার উপর গভর্নমেন্টের অনুকূল দৃষ্টি নাই; সুতরাং গভর্নমেন্ট যদি এই পরোয়ানা প্রত্যাহারও করেন, তবুও আমরা তাহাদের হাতে শিক্ষার ভার সমর্পণ করিয়া শান্ত থাকিতে পরিব না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা আমাদের অন্তকরণকে অস্থি মজ্জায় একেবারে দাসত্বে অভিভূত করিয়া ফেলিয়াছে। তাই আমাদের নিজেদের শিক্ষার ভার নিজেদের হাতে রাখিতে হইবে।
২৯ অক্টোবর বাংলার ভগিনীদের জাতীয় ধনভাণ্ডারে দান করার আহ্বান করে আবেদন প্রচার করা হয়। আবেদনপত্রটিতে স্বাক্ষর করেন—শ্রী শিশিরকুমার ঘোষ, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, জগদিন্দ্রনাথ রায়, নলিনীবিহারী সরকার, মতিলাল ঘোষ, ভূপেন্দ্রনাথ বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সূর্যকান্ত আচার্যচৌধুরী, নবাব আবদুল সোভান চৌধুরী, কুমার সতীশচন্দ্র সিংহ ও গগণেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ব্যধি ও প্রতিকার : :--
২৬ অক্টোবর মল্লিকবাজার ট্রাম ডিপোর কাছে ব্যারিস্টার আবদুল রসুলের সভাপতিত্বে স্বদেশী সভায় যোগদান করেন রবীন্দ্রনাথ। সভাটিতে প্রধানত মুসলমানদের উপস্থিতিই ছিল প্রধান। সেদিনের রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যটি ব্যধি ও প্রতিকার প্রবন্ধে ছাপা হয়েছিল। এখানে তিনি মূলত হিন্দু-মুসলমান বিরোধের পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, আজ আমরা সকলেই এই কথা বলিয়া আক্ষেপ করিতেছি যে, ইংরেজ মুসলমানদিগকে গোপনে হিন্দুর বিরুদ্ধে উত্তজিত করিয়া দিয়াছে। কথাটা যদি সত্যিই হয় তবে ইংরেজদের উপর রাগ করিব কেন? দেশের মধ্যে যতগুলো সুযোগ আছে তাহা নিজের দিকে টানিবে না, এই ইংরেজকে এতোবড়ো নির্বোধ বলিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া থাকিব এমন কি কারণ ঘটিয়াছে।
মুসলমানকে যে হিন্দুর বিরুদ্ধে লাগান যাইতে পারে এই তথ্যটাই ভাবিয়া দেখিবার বিষয়, কে লাগাইল সেটা গুরুতর বিষয় নয়। শনি তো ছিদ্র না পাইলে প্রবেশ করিতে পারে না। অতএব শনির চেয়ে ছিদ্র সম্বন্ধেই সাবধান হইতে হইবে। আমাদের মধ্যে যেখানে পাপ আছে সেখানে জোর করিবেই—আজ যদি না করে তো কাল করিবে, এক শত্রু যদি না করে তো অন্য শত্রু করিবে—এতএব শত্রুকে দোষ না দিয়া পাপকেই ধিক্কার দিতে হইবে।
তিনি বলেন, মিথ্যা কথা বলিবার কোনো প্রয়োজন নাই। এবার আমাদিগকে স্বীকার করিতেই হইবে হিন্দু-মুসলমানের মাঝে একটা বিরোধ আছে। আমরা যে কেবল স্বতন্ত্র তাহা নহে। আমরা বিরুদ্ধ।
এরপর তিনি এই ভেদব্যাধির কারণটি বর্ণনা করছেন--
আমরা বহুশত বৎসর পাশে পাশে বসিয়া এক ক্ষেত্রের ফল, এক সূর্যের আলোক ভোগ করিয়া আসিয়াছি, আমরা এক ভাষায় কথা কই, আমরা একই সুখদুঃখে মানুষ, তবু প্রতিবেশীর সঙ্গে প্রতিবেশীর যে সম্বন্ধ, যাহা ধর্মবিহীত, তাহা আমাদের মধ্যে হয় নাই। আমাদের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরিয়া এমন-একটি পাপ আমরা পোষণ করিয়াছি, একত্রে মিলিয়াও আমরা বিচ্ছেদকে ঠেকাইতে পারি নাই। এ পাপকে ঈশ্বর কোনোমতেই ক্ষমা করিতে পারেন না।
পূর্ববঙ্গে জমিদারী পরিচালনা করতে যখন এসেছিলেন তখন প্রথম দিনেই তিনি দেখেছিলেন ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী অনুসারে আলাদা আলাদা বসার স্থান। সেই দিনই এই ব্যবস্থার উচ্ছেদ করেছিলেন তার জমিদারী থেকে। সে অভিজ্ঞতার আলোকে কবি বলেন--
আমরা জানি, বাংলাদেশের অনেক স্থানে এক ফরাশে হিন্দু-মুসলমান বসে না—ঘরে মুসলমান আসিলে জাজিমের এক অংশ তুলিয়া দেওয়া হয়। হুঁকার জল ফেলিয়া দেওয়া হয়।
এক করিবার বেলায় বলিয়া থাকি, কী করা যায়, শাস্ত্র তো মানিতে হইবে। অথচ শাস্ত্রে হিন্দু-মুসলমান সম্বন্ধে পরস্পরকে এমন করিয়া ঘৃণা করিবার বিধান তো দেখি না। যদি-বা শাস্ত্রের সেই বিধানই হয়—তবে সে শাস্ত্র লইয়া স্বদেশ-স্বজাতি-স্বরাজের প্রতিষ্ঠা কোনোদিন হইবে না। মানুষকে ঘৃণা করা যে ধর্মের নিয়ম, প্রতিবেশীর হাতে জল খাইলে যাহাদের পরকাল নষ্ট হয়, পরকে অপমান করিয়া যাহাদিগকে জাতিরক্ষা করিতে হইবে, পরের হাতে চিরদিন অপমানিত না হইয়া তাহাদের গতি নাই। তাহারা যাহাদিগকে ম্লেচ্ছ বলিয়া অবজ্ঞা করিতেছে সেই ম্লেচ্ছের অবজ্ঞা তাহাদের সহ্য করিতেই হইবে।
তিনি এই সময়ের হিন্দু নেতৃবৃন্দের ভেদাশ্রিত আন্তকরণ দেখে ব্যাথিত হয়েছিলেন। এ কারণে তিনি দেখেছিলেন, এভাবে চলতে থাকলে এই ভেদের বীজটি একদিন বিষবৃক্ষে পরিণত হবে। বিচ্ছেদটি চূড়ান্ত হবে হৃদয়ে, দেশবিচ্ছেদে, সংস্কৃতি বিচ্ছেদে, মনুষ্যত্ব বিচ্ছেদে। ভয়ঙ্করভাবে নিপীড়িতরা পীড়কদের উপর প্রতিশোধ নেবে। কবি বলেন, একদিন
মানুষকে মানুষ বলিয়া গণ্য করা যাহাদের অভ্যাস নহে, পরস্পরের অধিকার যাহারা সূক্ষাতিসূক্ষভাবে সীমাবদ্ধ রাখিবার কাজে ব্যাপৃত—যাহারা সামান্য স্খলনেই আপনার লোককেই ত্যাগ করিতেই জানে, পরকে গ্রহণ করিতে জানে না—সাধারণ মানুষের প্রতি সামান্য শিষ্টতার নমস্কারেও যাহাদের বাধা আছে—মানুষের সংসর্গ নানা আকারে বাঁচাইয়া চলিতে যাহাদিগকে সর্বদা সতর্ক থাকিতে হয়—মনুষ্যত্ব হিসাবে তাহাদিগকে দুর্বল হইতেই হইবে। যাহারা নিজেকেই নিজে খণ্ডিত করিয়া রাখিয়াছে, ঐক্যনীতি অপেক্ষা ভেদবুদ্ধি যাহাদের বেশি দৈন্য অপমান ও অধীনতার হাত হইতে তাহারা কোনোদিন নিষ্কৃতি পাইবে না।
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের আরও কিছু ত্রুটির কথাটাও তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ। বয়কট ও স্বরাজ মন্ত্র গ্রহণের মধ্যে দিয়ে ধরা পড়েছে এই আন্দোলনের প্রধান শত্রু ইংরেজের চেয়ে নিজেরাই নিজেদের ভেদ সম্পর্কটাই বড় শত্রু। বাইরের ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে দেখা গেল নিজেদের মধ্যেই একটা যুদ্ধ লেগে আছে। এই আত্মকলহ বজায় রেখে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, আজ আমাদের ইংরেজী পড়া শহরের লোক যখন নিরক্ষর গ্রামের লোকের কাছে গিয়া বলে ‘আমরা উভয়ে ভাই’—তখন এই কথাটার মানে সে বেচারা কিছুতেই বুঝিতে পারে না। যাহাদিগকে আমরা ‘চাষা বেটা’বলিয়া জানি, যাহাদের সুখদুঃখের মূল্য আমাদের কাছে অতি সামান্য, যাহাদের অবস্থা জানিতে হইলে আমাদিগকে গবর্ণমেন্টের প্রকাশিত তথ্যতালিকা পড়িতে হয়, সুদিনে-দুর্দিনে আমরা যাহাদের ছায়া মাড়াই না, আজ হঠাৎ ইংরেজের প্রতি আস্পর্দ্দা প্রকাশ করিবার বেলায় তাহাদের নিকট ভাই-সম্পর্কের পরিচয় দিয়া তাহাদিগকে চড়া দামে জিনিস কিনিতে ও গুর্খার গুতা খাইতে আহ্বান করিলে আমাদের উদ্দেশ্যের প্রতি সন্দেহ জন্মিবার কথা। সন্দেহ জন্মিয়াও ছিল। কোনো বিখ্যাত স্বদেশী প্রচারকের নিকট শুনিয়াছি যে, পূর্ববঙ্গে মুসলমান শ্রোতারা তাঁহাদের বক্তৃতা শুনিয়া পরস্পর বলাবলি করিয়াছে যে, বাবুরা বোধ করি বিপদে ঠেকিয়াছে। এই বাবুদের উদ্দেশ্যসাধনের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া, কিছু সুবিধার জন্য ঐক্যের কথা বলা এবং ঐক্যের আগ্রহে হৃদয়ের যোগ না থাকায় এই বয়কট বা স্বরাজের আন্দোলনটা সাধারণ মানুষের কাছে অর্থহীন হয়ে উঠেছে বলে রবীন্দ্রনাথ মনে করেছেন।
এই রকম একটি পরিস্থিতিতে বিদেশী রাজা চলিয়া গেলেই দেশ যে আমাদের স্বদেশ হয়ে উঠবে এটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। দেশের লোককেই দেশের সকল মানুষের অন্ন-বস্ত্র-সুখস্বাস্থ্য-শিক্ষাদীক্ষা দানে সর্বপ্রধান সহায় হতে হবে। দুঃখে বিপদে দেশের মানুষই সকল মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িতে হবে—কেবল সুবিধায় নয়। অসুবিধায়ও। অসুবিধায়ও ভাই বলে তাঁর কাছে যেতে হবে। তবেই স্বরাজ সম্ভব। অন্য কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে কবি বলেন।
কবির এই চিন্তাটা ছিল প্রচলিত রাজনীতিকদের চেয়ে ভিন্ন। শুধু ভিন্ন বলাটা সঙ্গত হয় না—বলা উচিৎ একেবারে তাঁদের বিপরীত চিন্তার প্রকাশ। নেতারা যখন বঙ্গবঙ্গ আন্দোলনকে তাঁদের সাময়িক সুবিধার কর্মনীতি হিসেবে গ্রহণ করছে—সেখানে একটা সুদূর প্রসারী চিন্তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তাকে উপস্থান করেছেন, উল্টো পথে হাঁটছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : ছাত্রসমাজ প্রস্তুত--দোদুল্যমান রাজনীতিক ::--
২৭ অক্টোবর রবীন্দ্রনাথ কোলকাতায় ফিরে আসেন। সেখানে ফিল্ড এন্ড একাডেমী ভবনে সদস্য ও ছাত্রদের সান্ধ্যসম্মিলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবঙ্গ ব্যাপারটি সর্বজনীন বলেই ছাত্ররা যোগদান করবে—এটা খুব স্বাভাবিক। নেতাদের ত্যাগ স্বীকার যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের পাঁজনের শক্তিকে সংহত করা গেলে নেতারাও যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত হবেন। জাতীয় ধনভাণ্ডারের ইংরেজি নাম National Fund না রেখে বঙ্গভাণ্ডার রাখার প্রস্তাব করেন এই সভায়। তাঁর মতে স্বদেশী কলকারখানা গড়ে তোলা গেলে স্বদেশী দ্রব্যের যোগান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আমাদের শিক্ষাকে স্বাধীন করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়লয প্রতিষ্ঠার সময় এসেছে। গভর্নমেন্টের সম্মন ও চাকরীর মায়া ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে ছাত্রদের পরামর্শ দেন। যদি ছাত্ররা প্রস্তুত থাকে এই ত্যাগ স্বীকারে তাহলে নেতারা বাধ্য হবে তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে।
৫ নভেম্বর বিকেলে ডন সোসাইটিতে দুহাজার ছাত্রের উপস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথ বলেন, বাংলাদেশে আজ নবজীবনের সূত্রপাত হয়েছে। বিদেশী বর্জন ও স্বাধীন স্বদেশী শিক্ষার দ্বিমুখী সংকল্পকে আশ্রয় করে চলেছে বাংলা। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় শুরুতেই জীবিকোপার্জনের ব্যবস্থা, অভিভাবকদের মতগঠন, ইঞ্জিয়ারিং ডাক্তারি ভূবিদ্যা ইত্যাদি বিষয় চালু করা না গেলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ইংরেজের বিশ্বিদ্যালয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশেও যেতে হবে।
এ সময়কার সভায় রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যসমূহ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের রাজনৈতিক দিকের চেয়ে জাতীয় শিক্ষার আন্দোলনে বেশী সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। তবে পাশাপাশি তিনি স্বদেশী গান লিখছেন, স্বদেশী দ্রব্য প্রস্তুত ও প্রচারেও তিনি বিস্তৃতভাবে অংশ নিচ্ছেন এই সময়ে।
১ লা নভেম্বর সারাদেশে Proclamation Day পালিত হয়। রংপুরে বন্দে মাতরম গানটি গাওয়ার অভিযোগে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট টি এমোরসন প্রায় ২০০ জন ছাত্রকে ৫ টাকা হারে জরিমান করেন। খবরটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ৪ নভেম্বর। গোলদিঘির পাড়ে সেদিনই এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা সংকোচন পরওয়ানা বিরোধী সমিতি বা Anti Circular Society তৎক্ষণাৎ গঠিত হয়। গভর্নমেন্টের বিশ্ববিদ্যালয় পরিত্যাগ করে ছাত্রদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হওয়ার আবেদন জানানো হয় এই জমায়েতে। ৫ নভেম্বর বগুড়ার নবাব আবদুল সোভান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজনীতিক সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিন্দা করে বক্তব্য রাখে। কিন্তু উপস্থিত ছাত্র-জনতা এই নিন্দা পছন্দ করে নি। তারা পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বক্তব্য অসমাপ্ত রেখেই বসিয়ে দেয়।
৭ নভেম্বর এন্টি সার্কুলার সোসাইটির পক্ষ থেকে শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু ও জাপান-ফেরত ইঞ্জিনিয়ার রমাকান্ত রায় রংপুরে যান। সেখানে ছাত্রসভায় প্রস্তাবিত জাতীয় বিশ্বদ্যালয়ের অধীনে রংপুর জাতীয় বিদ্যালয় প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ৮ নভেম্বর ঔপন্যাসিক ব্যারিস্টার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়কে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়। রংপুরের ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবটিকে বিবেচনা করতে বাধ্য করে।
৯ নভেম্বর মাদারীপুরে পূর্ববঙ্গে ছোটো লাট র্যামফিল্ড ফুলারের আদেশে কয়েকজন ছাত্রকে বেত মারার শাস্তি দেওয়া দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা বন্দে মাতরম বলেছিল। এই খবর কোলকাতায় পৌঁছালে গোলদিঘিতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সুবোধচন্দ্র মল্লিক এক লক্ষ টাকা দানে ঘোষণা করেন প্রস্তাবিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে। সভায় বক্তব্য রাখেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, বিপিনচন্দ্র পাল, চিত্তরঞ্জন দাস, মৌলবী আবুল হোসেন প্রমুখ। তারা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। ছাত্ররা সুবোধ মল্লিককে রাজা উপাধীতে ঘোষণা করে।
১০ নভেম্বর গোলদিঘিতে আরেকটি ছাত্রজনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ময়মনসিংহ-গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী পাঁচ লক্ষ টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দেন। ১১ নভেম্বর ১০ হাজার ছাত্রের উপস্থিতিতে আশুতোষ চৌধুরী ছাত্রদের অনুরোধ করেন, তারা যেন বি.এ. ও এম.এ পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকার সংকল্প ত্যাগ করে। তখনো জাতীয় বিশ্বিবদ্যালয় বিষয়ে নেতাদের দোদুল্যমানতা ছিল। ১৩ নভেম্বর পান্তির মাঠে বিরাট জনসভায় আশুতোষ চৌধুরী, সিস্টার নিবেদিতা, অশ্বিনীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন। ছাত্রদের দাবীর মুখে আশুতোষ চৌধুরী জানান—নেতারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য চেষ্টা করছেন।
১৬ নভেম্বর বিকেল তিনটায় পার্ক স্ট্রিটে বেঙ্গল ল্যান্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভায় জাতীয়ভাবে এবং জাতীয় তত্ত্বাবধানে সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক এবং কারিগরী এই ত্রিবিধ শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি জাতীয় শিক্ষা সমাজ কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে রবীন্দ্রনাথ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আরেকটি প্রস্তাবে ছাত্রদের পরীক্ষা বর্জনের সংকল্প ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এই সভায় National Council of Education এর জন্য একজন ভদ্রলোক পাঁচলক্ষ টাকা বা বার্ষিক কুড়ি হাজার টাকার আয়ের ভূ-সম্পত্তি, একজন নগদে দুই লক্ষ টাকা ও একটি সুন্দর বাড়ি, একজন নগদ এক লক্ষ টাকা ও অপর একজন বার্ষিক ত্রিশ হাজার টাকা আয়ের সম্পত্তি দেওযার কথা ঘোষণা করেন। এই সভায় রবীন্দ্রনাথ উপস্থিত ছিলেন। ডঃ রাসবিহারী ঘোষ, স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভূপেন্দ্রনাথ বসু, আশুতোষ চৌধুরী, প্রমথ চৌধরী, মহম্মদ এ গজনভি, ডাঃ নীলরতন সরকার, মৌলবী আবদুল মজিদ, মৌলবী শামসুল হুদা, রেভারেন্ড নাগ, সুবোধচন্দ্র মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনে মতবিরোধ ::--
১৭ নভেম্বর স্বদেশী শিক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রণাসভার সিদ্ধান্তের জন্য পান্তির মাঠে সমবেত হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিনন্দন জানানোর জন্য সভাস্থলে পত্রপুষ্পে শোভিত করা হয়েছিল। মঞ্চে ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যাঞ্চেলর স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাক্তার রাসবিহারী ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ। তৎকালীন সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কোলকাতা রিপন কলেজের মালিক। তাঁর কর্মকাণ্ডে ছাত্রজনতা তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারছিল না। তিনি বলেন, আমি শুনিয়াছি কেহ কেহ বলিতেছেন যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইলে রিপন কলেজের ক্ষতি হইতে পারে এই আশঙ্কায় আমি ইহার প্রতিবন্ধকতা করিব—আমি বলিতে পারি যে যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইবে তখন রিপন কলেজই সর্ব্বপ্রথমে তাহার অন্তর্ভুক্ত হইবে। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রদের কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তখনই ত্যাগ না করার পরামর্শ দেন। তার এই দুকূল বজায় রাখার পরামর্শটি উপস্থিত ছাত্ররা পছন্দ করেনি। তারা তাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানায়। দেশের ছাত্রসমাজ, সাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবীগণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে থাকলেও রাজনীতিকরা তাদের সুবিধাবাদিতার কারণে এই দাবী নিয়ে ইংরেজদের বেশি ঘাটাতে চায় নাই। পরিহাসের বিষয় হল, ১৯০৬ সালে আগস্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন হলে রিপন কলেজসহ বাংলার কোনো কলেজই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়নি। পরে এইভাবে জনগণের আকাঙ্খা জাতীয় সুবিধাবাদি রাজনীতিকদের হাতে মার খায়।
২৪ নভেম্বর পান্তির মাঠে আর একটি ছাত্রসভায় বিপিনচন্দ্র পাল, মৌলবী লিয়াকত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেখানে দ্বিতীয় প্রস্তাবটির কঠোর সমালোচনা করে বলা হয়—আজ যদি রংপুরের ছাত্রগণকে ফেলিয়া কলিকাতার ছাত্ররা পরীক্ষায় উপস্থিত হন তবে গবর্নমেন্ট যে বঙ্গব্যবচ্ছেদ করিতে পারেন নাই, বাঙালি নিজেই সেই বঙ্গব্যবচ্ছেদ করিবেন।
হতাশার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের আশা:--
এই পর্যায়ে এসে দেখা যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নে মতবিরোধ সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রবীন্দ্রনাথ এইসব মতবিরোধ সত্বেও প্রস্তাবিত শিক্ষা কমিটিকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে যেতে থাকেন। তিনি আশা করে আছেন বঙ্গবঙ্গের এই জাগরণের মধ্যে আর কিছু না হোক অন্তত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠবে। এটা গড়ে উঠলে দেশের মানুষ তাদের আত্মশক্তি বুঝতে পারবে। প্রকৃত স্বদেশ গড়ে তুলবে। ১৯ নভেম্বর কমিটি খসড়া পরিকল্পনাটিকে চূড়ান্ত রূপ দেয়। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়কে ২৬ নভেম্বর রবীন্দ্রনাথ একটি চিঠিতে জানাচ্ছেন, হীরেন্দ্রবাবু, মোহিনীবাবু...নীররতন সরকার (প্রভৃতি) মিলিয়া সংকল্পিত (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের) নিয়ম ও গঠনে (প্রণালী প্রণয়নে) নিযুক্ত ছিলাম---(যখন) ছাত্রগণ এক সংকল্প গ্রহণ করিয়াছেন তখন নিষ্ফল আশঙ্কা বোধ হয় মন হইতে দূর করিয়া দেওয়া যাইতে পারে। আমি তো অনেকদিন হইতে ঔদাসীন্য ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আশাপথ চাহিয়া কাজ করিয়া যাইতেছি---বর্ত্তমান উদ্যোগও যদি ব্যর্থ হয় তবু আমি আশা ছাড়িবনা। দেশের কল্যাণের জন্য যখন অন্য পথ নাই তখন বারবার প্রতিহত হইয়াও এই একই লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হইতেই হইবে।
শিক্ষার আন্দোলন নামে সে সময়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ পুস্তিকাটির ভূমিকা লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে স্বদেশী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য যে-সকল সভা সমিতি বসিয়াছে, তাহার মধ্যে নানা মতের, নানা বয়সের, নানা দলের লোক সমবেত হইয়াছেন। ইঁহারা সকলে মিলিয়া যাহা কিছু স্থির করিতেছেন, তাহা ইঁহাদের প্রত্যেকেরই সম্পূর্ণ মনঃপুত হইতে পারে না। এই-সকল সমিতির সঙ্গে বর্তমান লেখকেরও যোগ ছিল। প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের যে শিক্ষাপ্রণালী ও নিয়ম নির্ধারিত হইয়াছে, লেখকের যদি সম্পুর্ণ স্বাধীনতা থাকিত তবে ঠিক সেরূপ হইত না সন্দেহ নাই; কিন্তু তাহা লইয়া লেখক বিবাদ করিতে প্রস্তুত নহেন। তিনি কাজ আরম্ভ হওয়াকেই সকলের চেয়ে বেশি করেন। যদি তাঁহার মনোমতো প্রণালীই বাস্তবিক সর্বোৎকৃষ্ট হয়, তবে কাজ আরম্ভ হইলে পর সে-প্রণালীর প্রবর্তন যথাকালে সম্ভবপর হইবে, এ ধৈর্য তাঁহাকে রক্ষা করিতেই হইবে।
মন্তব্য
#প্রথমেই আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি মনোজ্ঞ এবং ঝরঝরে ভাষায় ক্রমাগত লেখাটি এগিয়ে নেয়ার জন্য, দারুনস!
>আপনার লেখাগুলো কোন মলাটবন্দি বই হয়ে এলে বোধহয় আরো বেশি ভাল লাগত, জানিনা আপনি সে ব্যবস্থা করবেন কিনা?
>আগ্রহ বরাবরের মতোই আটকে আছে, এগিয়ে চলুন দারুনভাবে, আমরা পেছন পেছন আছি।
#ভালবাসা সর্বক্ষণ।।।
পুনশ্চ: হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আপনার মন্তব্যটি আমাকে কিছুটা হতাশ করেছে, আপনার নিকট থেকে আমি আরো গুরুত্বপূর্ন ও সচল মন্তব্য আশা করি।।
আরেকটি পর্বে শেষ হবে বঙ্গভঙ্গ পর্বটি। এরপরে আমরা পল্লীপূনর্গঠন পর্বে চলে যাব।
মলাট বন্দী হবে কিনা সেটা আমাদের মাথায় নেই। আমরা রবীন্দ্রবিরোধীতার স্বরূপঅন্বেষণ করছি মাত্র।
সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
হুমায়ূন আহমদ কেন যে কারো সঙ্গে দ্বিমত হতে পারে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মোকাবেলা করা দরকার। হুমায়ূন আহমদ লিখেছেন তার বোধ বিবেচনা ও উদ্দেশ্য থেকে। হাসান মোর্শেদ তাঁর মতো করে লেখাটিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আরও অনেকে করছেন মন্তব্যকলামে। এভাবে আরও অনেকে লিখবেন। নেট থেকে পত্রিকার পাতায়। আমি মনে করি হুমায়ূনকে রুখে দাঁড়াতে হলে হুমায়ূনের চেয়েও বেশি সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে হবে অনেক লেখককে। সেটা তরুণদের মধ্যে থেকেই সম্ভব। সেটা হবেও। সে কারণে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আপনাকে ধন্যবাদ।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আশরাফুল কবীর, এক পোস্টের আলোচনা আরেক পোস্টে করার তো দরকার দেখি না। আপনি হাসান মোরশেদের পোস্টে মিথস্ক্রিয়ায় অংশ নেন। ঐখানে কুলদা রায় স্পষ্টভাবে তার অবস্থান ব্যখ্যা করছেন। অন্যান্য মন্তব্যদাতাও সেক্ষেত্রে আপনার ও কুলদা রায়ের বির্তকে পুষ্টি যোগাতে পারবে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
#থন্যবাদ অনিন্দ ভাই, সুন্দর সচেতনতামূলক মন্তব্যের মাধ্যমে স্মরিয়ে দেয়ার জন্য।।।আসলে খেয়ালই ছিলনা, কুলদার পোষ্ট পড়তে পড়তে হারিয়েছিলাম আর তার ঠিক পরেই মন্তব্যটি করে ফেলেছি, বোঝা যাচ্ছে ভুল হয়েছে, অচল হওয়ার কারনে মুছা যাচ্ছেনা। ধন্যবাদ আপনাকে তবে অন্যান্য মন্তব্যদাতাও সেক্ষেত্রে আপনার ও কুলদা রায়ের বির্তকে পুষ্টি যোগাতে পারবে। এ অংশটুকু একটু বেশি বলে ফেলেছেন, বিতর্ক করার কোন ইচ্ছে নেই আমার।।।
আমি মনে করি হুমায়ূনকে রুখে দাঁড়াতে হলে হুমায়ূনের চেয়েও বেশি সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে হবে অনেক লেখককে। সেটা তরুণদের মধ্যে থেকেই সম্ভব। সেটা হবেও। সে কারণে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
#অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আশরাফুল কবীর
সিরিজটা বই হিসাবে আসুক, আগামী মেলাতেই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আসলে এই সিরিজটা বই আকারে না আসলে খুবই অন্যায় হবে, লেখকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ রইল মলাট বন্দী করার।
নতুন মন্তব্য করুন