• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

পেয়ারা বাগানে মুক্তিযুদ্ধ : রক্তে রাঙা রূপসী বাংলা/ তিন

কুলদা রায় এর ছবি
লিখেছেন কুলদা রায় [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৩/০৪/২০১৩ - ৫:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ব্রজেন্দ্রনাথ মল্লিক

(বরিশালের পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলাইয় আটঘর কুড়িয়ানায় দেশের সবচেয়ে বড় পেয়ারাবাগান অবস্থিত। এর পাশাপাশি বানারীপাড়া ও ঝালকাঠির কিছু অংশেও পেয়ারা বাগান আছে। এই এলাকাগুলো হিন্দু সম্প্রদায়ের নমশুদ্র অধ্যুষিত। একাত্তর সালে এই পেয়ারা বাগানে পাকবাহিনী নৃশংস গণহত্যা চালায়। সেখানে গড়ে ওঠে মুক্তিবাহিনী। তাদের মধ্যে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের টিম পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এই পাকবাহিনীর গণহত্যা আর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের কাহিনীটি বলেছেন নারী মুক্তিযোদ্ধা বিভা মল্লিক। তার দাদা ব্রজেন্দ্রনাথ মল্লিক ঊনসত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। কুড়িয়ানা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন একাত্তরে। তাঁর অনুলিখনেই বিভা মল্লিক, শিখা, সুনন্দাদের মুক্তিযুদ্ধের ডাইরী ধারাবাহিকভাবে সচলায়তনে প্রকাশিত হচ্ছে। এই ডাইরী লিখিত হয় ১৯৭৮-৮০ সালের দিকে।)
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব

পর্ব তিন
কুড়িয়ানায় খানসেনাদের প্রথম আগমণ
-------------------------------------------

শরীফ মিয়া ফিক ফিক করে হাসছিলেন আর হুকোতে তামাক টানছিলেন। মরিয়ম বিবি বাইরে থকে বারান্দায় এল। সে বলল, মিয়া সাহেবের চোখে মুখে খুশীর ফোয়ারা? ঘটনা কি?
শরীফ মিয়া ফুক করে তামাকের ধোঁয়া ছাড়লেন। বললেন, আমাদের পীর শুধু নামেই পীর, পেটে বুদ্ধি নাই মোটেও।
মরিয়ম বিবির মুখ হা হয়ে গেল। বললেন, একি কইলেন। এতো বড় পীর তার পেটে বুদ্ধি নাই!
--বুদ্ধি ছিল, মিলিটারির কথা শুনে সব বুদ্ধি মগজ থেকে ধোঁয়া হয়ে বেরিয়ে গেছে।
--মিলিটারি!

এতক্ষণ হাসির কারণটা বিবিজানের কাছে বলতে না পেরে স্বস্তি ছিল না শরীফ মিয়ার। তিনিখানা স্পীডবোটে পাকমিলিটারি আসছে। তার মধ্যে থাকবেন স্বয়ং ক্যাপ্টেন, তারা সকাল দেষ্টায় যাবে কুড়িয়ানায়। তাতে পীরসাহেবের উদ্বেগ, এবং কী বুদ্ধি করে তিনি জয়নালকে তাদের সঙ্গে পাঠাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন—সব খবরই বলে ফেললেন বিবিজানের কাছে।

এই সব খবর বিবিজানের কাছ থেকে পেয়ে গেল হাসেম। হাসেম একখানা হাত চিঠি লিখে তা সঙ্গে সঙ্গে পাচার করে দিল যৈজ্ঞকাকার হাতে। যৈজ্ঞকাকা কালুকে দিয়ে তা সরাসরি পাঠিয়ে দিল ক্যাপ্টেন বেগের কাছে।

আমাদের এলাকার কোনো হিন্দু তখন মুসলমান-এলাকায় বের হতে সাহস পেত না। তার মধ্যেও যৈজ্ঞকাকা, কালু এবং আরও কিছু লোক ওদের এলাকার মধ্যে হাটে বাজারে যেত। এর একটা কারণ আছে।

লেঃ জেঃ নিয়াজী স্বয়ং এসেছিলেন বরিশাল সদরে। আর্মির লোকজন এবং রাজাকারদের নিয়ে এক মিটিং-এ সাব্যস্ত হয়, হিন্দু-মালাউন সফ কাফের। এরা সবাই মিসক্রিয়ান্ট—সবই ভারতের দালাল। ‘কুফফর খতম কর’—এই হল মিলিটারিদের প্রতি তার পরিস্কার নির্দেশ। কিন্তু পীরসাহেব জানতেন কিছু পেশাদারি হিন্দু রয়েছে, ওরা কামার, কুমার, জেলে, নাপিত, ধোপা। এসব পেশাদারি লোক মুসলমানদের মধ্যে নেই, এদের ছাড়া হাট-বাজার এমনকি সমাজই চলতে পারে না। পীরসাহেব তার অসংখ্য মুরীদদের মধ্যে এসব বুঝিয়ে এক ফতোয়া জারী করে দিলেন, কামার, কুমার, জেলে, নাপিত, ধোঁপারা খাঁটি হিন্দু নয়। তাদের উপর কোনো অত্যাচার করা চলবে না। তারা নিরিবিলিতে বাজার-হাট করতে পারবে। মিলিটারি এলেও যাতে তাদের কোনো বিপদ না হয় তার জন্য একখানা করে নিরাপত্তা পরিচয়পত্র দেওয়া হল মেজরের সই করা। যার জন্য যৈজ্ঞকাকা আর কালুর চলাফেরায় কোনো বাধা ছিল না।

মাস দেড়েক আগে আমাদের মুক্তি বাহিনীর ট্রেনিং শুরু হয়েছিল। কদিন আগে ক্যাপ্টেন আমাদের ট্রেনিং দেখতে এসেছিলেন। দুদিন হল নীরদ স্যারকে নিয়ে তিনি কোথায় চলে গেছেন। বেগ সাহেব শিখাকে করে দিয়ে গেছেন আমাদের ছয় নং মেয়ে গ্রুপের ক্যাপ্টেন। নীরোদ স্যার এ দুদিন নেই বলে আমাদের মেয়ে গ্রুপ শিখার চার্জেই রয়েছি।

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেছি। কিছুক্ষণ পরেই মার্চ করার সময়। হাত-মুখ ধুয়ে আমরা যার যার পোশাক-আশাক পরে তৈরি হচ্ছি। এর মধ্যেই রিসিভারে খস খস করে শব্দ হল। বোঝা গেল ব্যাটারি চার্জ করে রিং করা হচ্ছে। প্রভা রিসিভার ধরেই শিখাকে ডাকল। কেন্দ্রীয় সেক্টর থেকে স্বয়ং বেগ বলছেন। শিখা ছুটে এসে রিসিভার ধরল। বলল, হ্যাঁ স্যার, আমি শিখা বলছি..., স্যার আমরা সবাই একই জায়গায় আছি।

শিখা ফোন রেখে দিল। আমরা সবাই উদ্গ্রীব হয়ে শিখার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। শিখা বলল, কেউ দূরে যাবে না। সবাই সতর্ক থাক। যে-কোনো মুহূর্তে জরুরী অবস্থা দেখা দিতে পারে। পরবর্তী খবর একটু পরেই জানা যাবে।

একটু পরেই আবার খবর, আজ দশটায় মিলিটারি আসবে। আমরা সবাই যেন এলার্ট থাকি।

খানিকটা উত্তেজনা অনুভব করলাম। জীবনে এরকম অর্ডার কোনোদিন পাই নি। মুক্তিবাহিনীতে এই প্রথম সরাসরি মিলিটারির বিরুধে চার্জ নেবার অর্ডার। টমিগানের ট্রিগারে বারে বারে হাত লাগাচ্ছি। ভাবছি ঠিক সময় ট্রিগার টানতে পারব তো?

শিখা বলল, কী ভাবছিস? আগে থাকতেই কিছু খেয়ে নিতে হয়। সবাইকে কালকের রুটিগুলো খেয়ে নিতে বল।

সবাই হাতে হাতে রুটি নিয়েছি আমরা। হঠাৎ রিসিভার বেজে উঠল। শিখা রিসিভার ধরেই ছিল। এবারের খবর আরো জরুরি। জনসাধারণ সবাই যেন পেয়ারা বাগানের মধ্যে ইন্টেরিয়ারে চলে যায়। খালের পারে সদর রাস্তায় যেন কোনো লোক না থাকে।

আমাদের পশ্চিম দিকে এক নম্বর ভিজিলেন্স গ্রুপ কাজ করছিল। তাদের একজন খাঁটি খবর নিয়ে এল স্বরূপকাঠি থানা থেকে। সে বলল, তিনখানা স্পীডবোট স্বরূপকাঠি-থানার ঘাটে। জন ত্রিশেক খান সেনা থাকবে সেই বোটে। মাঝের বোটে থাকবেন তাদের ক্যাপ্টেন। পরে তার নামটা জানতে পেরেছিলাম—তিনিই ক্যাপ্টেন এজাজ। তারা ঠিক দশটায় স্টার্ট দেবে কুড়িয়ানার উদ্দেশ্যে থানার ঘাট থেকে।

সন্ধ্যা নদী থেকে উঠে এসেছে স্বরূপকাঠি খাল। সেই খালের উত্তর পারে স্বরূপকাঠি থানা। থানা বরাবর সেই খালে এসে মিলেছে কুড়িয়ানার বড় খালের সঙ্গে। এই দুই খালকে যোগ করেছে কুড়িয়ানার ভারানি খাল। সেই ভারানি খালের পরিসর খুবই কম। তা থেকে কোনো লঞ্চ যেতে পারে না। স্পীডবোট চলতে পারে—তাও স্পীড কমিয়ে।

সে ভারানি খালটা হল মুক্তিবাহিনীর এক নম্বর গ্রুপের অধীন। গ্রুপ কমান্ডার মোহাম্মদ সেলিম। আমাদের সেলিম ভাই। কেন্দ্রীয় গ্রুপের সঙ্গে এক নম্বর এবং ছয় নম্বর মেয়ে গ্রুপের একটাই ফোন লাইন। খস খস করে বেজে উঠল রিসিভার। কেন্দ্রীয় গ্রুপ থেকে খবর আসছে--স্বয়ং বেগের অর্ডার। একই লাইন বলে আমরাও শুনতে পাচ্ছি। বেগসাহেব বলছেন, এক্ষুণি তৈরি থাকতে হবে ছয় নম্বরকে বারোখানা হ্যান্ডগ্রেনেড নিয়ে। কুড়িয়ানা ভারানি খালের উত্তর পারে মণ্ডলদের বিরাট পেয়ারা বাগান। সেখানে থাকতে হবে আত্মগোপন করে। মিলিটারি বোট যখন খালের মধ্যে ঢুকবে তখন নয়-- ফিরতি পথে যাবার সময় চার্জ করতে হবে গ্রেনেড। আসার সময় শুধু ওয়াচ রাখতে হবে ছোট্ট খালে ঢুকে স্পীড কতটা কমিয়ে তারা বোট চালাচ্ছে। সেই হিসেব ক্যালকুলেশন করে রেডি থাকতে হবে। ফেরার পথে যেই স্পীড কমে যাবে বোটের, তখনি করতে হবে গ্রেনেড চার্জ। প্রতি বোটের জন্য একটি গ্রেনেডই যথেষ্ট। তবুও একটা যদি মিস হয়? তাই প্রতি বোটের উপর ডাবল চার্জ করতে হবে পর পর।

একটু পরেই ক্যাপ্টেন বেগ আবার বলছেন, এখনি ভারানি খালের পারে তৈরি থাক। পেয়ারা গাছের আড়ালে বস্তে হবে ঝোপের মধ্যে। ছোট খাল, কোনো অসুবিধা নেই। ফিরতি পথে স্পীড কমে এলে চার্জ করতে হবে।

এক নম্বর গ্রুপ থেকে উত্তর দিচ্ছে সেলিম, কোনো চিন্তা নেই স্যার, ছয়জনকেই পাঠিয়েছি—তিনটা গ্রুপে।
--তুমি ওয়াচ করছ তো? ওরা ঠিকমত এগিয়ে যাচ্ছে কিনা।
--আমি রেডি স্যার। ওদের পিছনে পিছন যাচ্ছি।
--কাকে কাকে পাঠিয়েছ?
--সুজিত, নুরু, মীর্জা, নির্মল, ঝংকার আর ধীরেন।
--পিছনে তুমি আনোয়ারকে সঙ্গে নিও।
--হ্যাঁ, আমি এখনই যাচ্ছি।

কুড়িয়ানা থেকে আটঘর। একখানা সোজা খালের বাঁক। প্রায় দেড় কিলোমিটার হবে। এই খালের পারে আমাদের মুক্তি বাহিনী তিনটে গ্রুপ রয়েছে। এক নম্বর গ্রুপ হল কুড়িয়ানা স্কুলের পশ্চিম পাশে। তাদের উপর হল গ্রেনেড চার্জ করার আদেশ। দু’নম্বর গ্রুপ রয়েছে বাঁকের মাথায় আটঘরের পুলের গোড়ায়, খালের দক্ষিণ পারে। আর আমরা ছয় নম্বর মেয়ে গ্রুপ পজিশন নিয়েছি এই দুই গ্রুপের মাঝ বরাবর।

দুই নম্বর এবং আমাদের ছয় নম্বর গ্রুপের উপর নির্দেশ হল, আমরা নদীর পারে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তা পেরিয়ে একটু দূরে পজিশন নেব। আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। আমাদের কাজ হল ওদের স্পীডবোটের কার্জকলাপ লক্ষ করা। আর আমাদের কাছাকাছি কোথাও পাকসেনা নামলে সুযোগ বুঝে গ্রেনেড চার্জ এবং র‍্যান্ডম ফায়ারিং করা।

রাস্তার পাশে নারকেল সুপারির একটা পুরানো ভিটা। সেখানে দুটো মঠ আছে পাশাপাশি। দুটোই সমাধি মন্দির। জোড়া মঠের মাঝখানে কার্নিশের উপর উঠে বসল শিখা। রাস্তা বা খালের দিক থেকে তাকে দেখা যায় না। পাশেই ঢেকিলতা, কচুবন এবং ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পজিশন নিয়েছি।

পাশেই নবীন জেঠার ঘর। জেঠা জেঠির সঙ্গে ঝগড়া করছেন টের পেলাম। তাঁদের ঝগড়ার বিষয় আজকের এই মিলিটারি আসার ঘটনা। জেঠি জেঠাকে বললেন, ওগো শুনছ, আইজ নাকি মিলিটারি আইবো?
--আয় নাকি তোমার বাড়ি। খাইয়া দাইয়া আর কাম নাইত মিলিটারির।
--কথাডা এক্কেরে হাইস্যা উড়াইয়া দিলা? আমি হাঁচা কতা কইলাম কি না তাই।
--তুমি হাঁচা কথা ছাড়া মিছা কথা কবেই বা কইলা? জেঠা জেঠিকে ঠেস দিয়ে কথা বলেন।
জেঠি এবার একটু জোরে বলেন, হাঁচা না তয় কী? ও হিস্যার গ্যানা, রাজেন সবাই পেয়ারা বাগানে চইল্যা গ্যাছে। লও, আমরা দক্ষিণ কোলায় (মাঠ) যাই।
--ইচ্ছা থাকলে তুমি যাও। মিলিটারি আইবো, চেনো, মিলিটারি কারে কয়?
--আহা, আমি চিনুমডা কি? বেবাকে কইল—
--যারা কইল তাগো লগে পালাও গিয়া। এই বিলের মধ্যে—আইবো মিলিটারি। যত রাজ্যের গুজব।
-ও বাড়ির নগেন ঠাকুরপোই তো খবরটা কইল। হেও তো পোলা-মাইয়া লইয়া বাগানে চইল্যা গ্যাছে।

নগেন কাকা আমাদের স্কুলের শিক্ষক। জেঠি তার দোহাই দিয়ে খবরটার সত্যতা প্রমাণ করতে চায়।

নবীন জেঠা তার উত্তরে বলেন, ঐ নগার কথা? ও এট্টা মাইয়াছেইলা সব সময়ই মিনমিন করে। যাও, ঐ নগার লগে ইঁদুরের গর্তে ঢোকো গিয়া তুমিও। বলেই নবীন জেঠা বেড়া থেকে হুঁকো হাতে নিয়ে বারান্দায় উঠে যান তামাক সাজতে।
জেঠি তার কথা শেষ কথা বলেন, কইলে তো শোনবা না, মিলিটারি আইলে আর দৌড়ানোর সময় পাইবানা, কইয়া রাখলাম।

এঁদের কথায় আমরা ডিস্টার্বড হচ্ছি। এদের রান্নাঘরের লাগ পিছনেই আমরা পজিশন নিয়ে রয়েছি। প্রভা বলল, শিখাদি, আমি ওদের এখান থেকে সরে যেতে বলে আসি। বলেই নিভা, শেফালি আর মায়াকে নিয়ে জেঠার উঠোনে গিয়ে দাঁড়াল । জেঠি তখন ঝুড়ি হাতে গোয়াল ঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। এস.এল.আর হাতে মেয়েদের দেখতে পায়ে ওমা বলেই বসে পড়ল সেখানে।

জেঠা কল্কিতে আগুন তুলছেন। টান দিতে যাবেন হুঁকোতে। বললেন, কী হইল, মিলিটারি আইল নাকি? বলেই উঠোনে দুপা দিয়ে—এদের চেহারা দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন তিনি। ঠিক সেই মুহুর্তেই আমরা পশ্চিম দিকে স্পীড-বোটের শব্দ শুনতে পেলাম। সঙ্গে সঙ্গেই কয়েক রাউন্ড ফায়ারিং। শব্দটা একেবারে কানের কাছেই।

--ওরে বাবারে। বলে জেঠি লাফিয়ে পড়লেন গোয়াল ঘরের পাশে ডোবাটার মধ্যে। জেঠার হাতের হুকো পড়ে গড়িয়ে গেল। তিনিও গড়িয়ে পড়লেন জেঠির গায়ের উপর। প্রভারা উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে পজিশন নিল।

আমি শিখাকে জিজ্ঞেস করলাম, গ্রেনেড চার্জ কি হল নাকি? আর তো শব্দ শুনছি না।

শিখা মঠের কার্নিশের উপর। জোড়ামঠের ফাঁকা দিয়ে তাকিয়ে ছিল। ও ব্যস্তভাবে বলে উঠল, একটা লোক গুলি খেয়েছে, আর বউটা—

কথা শেষ হবার আগেই সাঁ করে তিন খানা স্পিডবোট পশ্চিম দিক থেকে পুব দিকে বেরিয়ে গেল। আমরা দেখলাম জন ত্রিশেক খান সেনা রয়েছে তাতে।
মাথা উঁচু করে দেখলাম একটা ছোটো নৌকো খালের মধ্যে বেহাল হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। কে একজন সাঁতার কেটে খালের এপারে আমাদের দিকেই আসছে।
শিখা বলল, আমি ঠিকই দেখেছি লোকটা গুলি খেলো আর বাচ্চা ছেলেটা ছিটকে খালে পড়ে গেল। হয়ত তার গায়েও গুলি লেগেছিল। আর বউটা ঝাঁপিয়ে পড়েছে জলে। বউটা বেঁচে গেছে।

আমরা খালের কাছে এগিয়ে যাই। চরের উপর এলিয়ে পড়া বউটাকে ধরে তুলি। দেখে যেন চিনি চিনি মনে হল আমার। সে তখন ফুলঝরার মত কাঁপছে। তার কথা বলার শক্তি নেই। তাকে ধরে নবীন জেঠার ছোট্ট উঠোনে নিয়ে এলাম।

নবীব জেঠা কাঁপতে কাঁপতে জিজ্ঞেস করলেন, কী হইল?
আমি বললাম, একটা লোক গুলি খেয়ে জলে ছিটকে পড়েছে,। আর তার ছেলেটা—

জেঠি বউটার দিকে তাকাতেই তার চোখ দুটো বড় হয়ে গেল। তিনি বলে উঠলেন, এ যে আমাগো ওপারের নরেনের বউ।

আমিও চিনতে পারলাম। উত্তর পারের নরেন হালদারের বউ। এবারে ফায়ারিং-এর শব্দের মানেটা বুঝতে পারলাম। নরেনদা তার বউ আর বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে নৌকায় করে এপারে আসছিল। সেই মুহুর্তেই খান সেনারা এসে পড়ে। তারা প্রায় আধ কিলোমিটার দূর থেকে গুলি করেছে। অব্যর্থ নিশানা-অব্যর্থ লক্ষ্য। গুলি খেয়ে খালে ছিটকে পড়ে নরেনদা।

জেঠিকে দেখতে পেয়ে আমার খোকা, আমার খোকা বলেই পড়ে গেল নরেনদার বউ।

জেঠি একটু সুর চড়িয়ে বললেন, আয় হায়রে, নরেন মইর্যান গেল, বাচ্চা পোলাডাও গেল, বউডার কী হবে রে? জেঠাকে উদ্ধেশ্য করে জেঠি সুর আর একটু চড়ালেন, আমি যে এত কথা কই তা শোনবা না, এখন দ্যাখলা তো তুমি—আমার কথা হাঁচা না---

আর বউটা কেবল আমার খোকা—আমার কী হবে রে, বলে কপাল চাপড়াতে লাগল।

আমি তাদের কথা বলতে বারণ করছি। তাতেও জেঠির সুর চড়েই যাচ্ছে। সে প্রায় আধা পাগলের মত চিৎকার আর সঙ্গে সঙ্গে কাঁপুনি তো আছেই।
শিখা এস.এল.আর এর ব্যারেল জেঠির দিকে ঘুরিয়ে বলল, চুপ করুন। নইলে বাকি গুলিটা আমরাই দিচ্ছি। যান, তাড়াতাড়ি, এই বউদিকে নিয়ে চলে যান—একদম পেয়ারা বাগানের ভিতর।

নরেনের বউকে ধরে জেঠি চলল দক্ষিণ দিকে। তার পিছনে পিছন কাঁপতে কাঁপতে চললেন সাহসী নবীন জেঠা। জেঠির মুখ চলতেই থাকে। কিছুদূর যাবার পরেও শুনতে পাচ্ছি জেঠির গলা, ওরে বাবা, এ মাইয়ারা কম নাকি? এক্কেরে মিলিটারির লাহান তেজ। তুই কান্দিস না বউ, মোরাও কি আর বাঁচুম? ওগো শুনছ, মিলিটারির হাতেও কি ঐ রকম বন্দুক আছে?
--আরে লও দেহি, আর বন্দুকে কাম নাই। জেঠার উত্তর আমাদের কানে আসে।

কয়েক মিনিট পরে স্পীডবোটের শব্দ মিলিয়ে গেল। পূব দিকে অনেক দূরে ফায়ারিংএর শব্দ টের পেলাম। আমরা শুধু বসে বসে অপেক্ষা করছি। খানিক পরে স্পীডবোট তিনখানা সাঁ করে পশ্চিমদিকে বেরিয়ে গেল।

আমরা কান পেতে আছি। হ্যান্ড গ্রেনেড চার্জ হলে শব্দ টের পাব। পাল্টা ফাইট হলে দুর্দান্ত ফায়ারিং হবে। তখন বুকের মধ্যে একটা ভয়ঙ্কর উত্তেজনা।
কিন্তু না, কোনো শব্দই টের পেলাম না।

আমি বললাম, কী হল শিখা, কোনো শব্দ টের পাচ্ছি না।
--বোঝা তো যাচ্ছে না কিছুই। শিখারও নিস্পৃহ জবাব।

আধঘণ্টা চলে গেল। আমাদের কাছে কোনো খবর এলো না। আমরা তখন আমাদের আস্তানার দিকে ফিরব কিনা ভাবছি। দেখি ঝঙ্কার আর ধীরেন এদিকেই আসছে। আমরা তিন তালি বাজালাম।

ওরা কাছে আমাদের কাছে এল। শিখা জিজ্ঞেস করল, ধীরেনদা, খবর কী?
ধীরেন বলল, জান শিখাদি, কী উত্তেজনা নিয়ে ঝোপের মধ্যে পজিশন নিয়ে ছিলাম। সামনে ওরা ছ’জন—হাতে ছ-খানা গ্রেনেড। পিছনে হেল্পিং গ্রুপে ছিলাম আমরা চারজন। একদম রেডি। রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করে আছি। ঠিক সেই মুহূর্তেই পিছনে জোড়া জোড়া করে হাততালি।
--চারটে হাততালি। আমরা সবাই অবাক।
--হ্যাঁ, চারটে হাততালি। আর পিছন ফিরে দেখি জাহাঙ্গীর সাহেব দাঁড়িয়ে।
--জাহাঙ্গীর সাহেব। এবারে অবাক হই আমরা।
--হ্যাঁ, জাহাঙ্গীর বলেই তো ...থেমে গেল ওরা। তা-না হলে গ্রেনেড চার্জ করেই বসত।

জাহাঙ্গীর হলেন ক্যাপ্টেন বেগের খোদ এসিস্ট্যান্ট নম্বর ওয়ান। মারাত্মক জরুরি ব্যাপার হলে বেগসাহেব সেখানে জাহাঙ্গীরকে পাঠান।

জোড়া জোড়া চারটে হাততালি হল স্টপ অর্ডারের ইঙ্গিত। যেমন তিনটে হাততালির শব্দ হল—‘আমরা এখানে আছি’ খবরটা নিজেদের লোককে জানিয়ে দেওয়া। পাঁচটা শব্দ হল বিপদ সঙ্কেত। অর্থাৎ আমরা বিপদে পড়েছি—আমাদের সাহায্য করো।

ঠিক সন্ধ্যার সময় শুনেছিলাম আসল ঘটনা। ক্যাপ্টেন বেগ এসেছিলেন এক নম্বর গ্রুপে। রাতে নিরোদ স্যারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন আমাদের এলাকার ক’জন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাঁদের আলাপ-আলোচনায় কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। পরে নীরোদ স্যারের মুখে শুনেছিলাম পুরো ঘটনাটা।

সামরিক আর বেসামরিক—দুটো শব্দ। এরা সম্পুর্ণ আলাদা দুটো জাত। একের যেটা কর্তব্য অন্যের কাছে তা করা অন্যায়। একের কাছে যা নীতি অন্যের কাছে তা দুর্নীতি। যার জন্য সামরিক বিভাগ সব সময় স্বয়ং সম্পুর্ণ থাকে। সিভিল মানুষের সঙ্গে তারা কোনো যোগাযোগ রাখে না। জনসাধারণ পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকে। তাদের আছে আবেগ, আছে অনুভূতি। কিন্তু মিলিটারিদের কাছে আবেগ অনুভূতির কোনো স্থান নেই। অনুভূতি প্রবণ মন নিয়ে মিলিটারি কি যুদ্ধ করতে পারে?

ক্যাপ্টেন বেগ ভুল করেছিলেন সেকথা বলব না। তবে আমাদের এলাকার দুর্গতি আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। আমাদের এলাকার লোকজনও মর্মে মর্মে উপলদ্ধি করেছিল ব্যাপারটা। জনসাধারণের কথা রাখতে গিয়ে বেগসাহেব তিনবার তাঁর অর্ডার তুলে নিয়েছিলেন—সরে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের নীতি থেকে। তাতে এই এলাকার জনগণের লাভ কিছুই হয়নি। বরং লোকসান হয়েছিল আমাদের। অন্তত আরও কিছু খানসেনাদের সমাধি রচনা করতে পারতাম আটঘর-কুড়িয়ানার গভীর বিলে।

আমরা মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো ব্যবস্থা ছিল না। প্রতি পদক্ষেপে জনসাধারণের সাহায্য আমাদের দরকার। তাই বেগসাহেব জনগণের অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারেন নি। প্রথম দিনেই আমাদের এলাকায় খান সেনাদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে গিয়ে অর্ডার তুলে নিতে হয়েছিল তাঁকে। তুলে নিয়েছিলেন গভীর দুঃখে। তিরিশ জন খানসেনা একেবারে হাতের মুঠোর মধ্যে এসেও বেরিয়ে গেল বিনা বাঁধায়।

ধূর্ত শরীফ মিয়া বুদ্ধি খাটিয়ে পীরের পরিবর্তে জয়নালকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মিলিটারির সঙ্গে। জয়নাল জানত আটঘর-কুড়িয়ানার মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং চলছে।
মিলিটারির সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর কোনো সংঘর্ষ হলে দুই দলের মাঝখানে পড়ে জয়নালের বিপদ হবে বেশি। তাই জয়নালও এক বুদ্ধি বাতলালো। আমাদের এলাকার রজনীবাবু একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। জয়নাল তার কাছে একখানা চিঠি লিখল। সে চিঠির বয়ান ছিল—
রজনীবাবু,
আমি আপনাদের আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আপনাদেরই লোক। আমি ইউনিয়নটাকে ভালোবাসি। তাই আপনাদের হিন্দু এলাকাটাকে বাঁচাবার জন্য গতকাল পীর সাহেবের কাছে গিয়েছিলাম। পীর সাহেব আমার প্রস্তাবে রাজী হয়েছেন। আমরা খানসেনাদের বলেছি—আটঘর-কুড়িয়ানায় কোনো দুশমন বা দুস্কৃতকারী নেই। মিলিটারিরা এলাকাটাকে সরেজমিনে দেখতে আসছেন। তাতে আপনাদের ভয় নেই। আমি সঙ্গে থাকব। মিলিটারি যদি আঁচ করতে পারে যে ওখানে মুক্তিবাহিনী আছে, অথবা কেউ যদি তাদের সামান্যতমও ক্ষতি করার চেষ্টা করে তবে কিন্তু আপনাদের এলাকার ধ্বংস ডেকে আনবেন। আমি চেষ্টা করব আটঘর-কুড়িয়ানা এলাকাকে বাঁচাতে।
ইতি—জয়নাল মিয়া।

কামার,কুমোর জেলে মিলে সার আটখানা হিন্দুর দোকান তখন খোলা ছিল স্বরূপকাঠি বাজারে। তাদের কাছে পীরের পরিচয় পত্রও আছে। তাদের একজনকে দিয়ে জয়নাল মিয়া চিঠিটা পাঠিয়ে দিল রজনী বাবুর কাছে।

কথাটা সঙ্গে সঙ্গে চাউর হয়ে গেল আমাদের এলাকায়। এলাকার জনগণ গিয়ে ধরেছিল নগেনবাবু, অরুণবাবু এবং দাদাকে। এঁদের কথায় ক্যাপ্টেন বেগ মূল্য দেবেন এই ছিল এলাকাবাসীর ধারণা। আগেও একটা ব্যাপারে বেগ সাহেব অনুরোধ রেখেছিলেন।

সময় থাকতেই তারা তিনজন গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন বেগের কাছে। মিলিটারিকে বাঁধা না দেবার জন্য সনির্বন্ধ অনুরোধ জানালেন তাঁকে।

বেগসাহেব কথাগুলো শুনে দাদার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, এখনও আপনারা পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন, মাস্টারবাবু?
দাদা বেগকে বলেছিলেন, আমার কথা নয় মি. বেগ। কিন্তু সাধারণ মানুষতো তাই চায়।
ক্যাপ্টেন বেগ বললেন, এখনো আপনারা যার যার বাড়িতে আছেন। কিন্তু যে ছেলেরা বাড়িঘর ত্যাগ করে মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করেছে, বাবা-মা, আত্মীয়-বন্ধু ভুলে, না খেয়ে, না ঘুমিয়ে নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছে, তাদের কথা ভাবছেন কিছু?

দাদা কিছু জবাব দিতে পারলেন না। অরুণবাবু বললেন, সবই বুঝি মি. বেগ। কিন্তু সব লোক যদি বুঝে বসে আপনারাই এলাকা ধ্বংসের কারণ, তাহলে তো তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাবেন না। এবং লোকজনও সব পালিয়ে যাবে। আমাদের একটা অনুরোধ আমাদের ইউনিয়নের এলাকাটুকুর বাইরে যা করার করুন। শুনে ক্যাপ্টেন বেগ স্তব্ধ হয়ে বসেছিলেন কয়েক সেকেন্ড। তিনি ডাকলেন তাঁর প্রধান সহকারী জাহাঙ্গীরকে। তিনি তাকে বললেন, তাড়াতাড়ি চলে যাও জাহাঙ্গীর—ওদেরকে স্টপ অর্ডার জানাও।

জাহাঙ্গীর চলে গেলে বেগ সাহেব বললেন, আপনাদের ইউনিয়ন এলাকার মধ্যে আমরা খান সেনাদের বাঁধা দেব না। তবে এলাকার বাইরের ব্যাপারে আপনারা কোনো অনুরোধ কখনও করবেন না।

পরে একদিন কথা প্রসঙ্গে ক্যাপ্টেন বেগ দাদাকে বলেছিলেন, জানেন মাস্টারবাবু, সেদিন কেন আপনাদের অনুরোধে গ্রেনেড চার্জ করা বন্ধ করেছিলাম? তবে শুনুন, আমি মুসলমান হয়ে আপনাদের হিন্দু এলাকার ধ্বংসের কারণ হবো এই চিন্তা আপনারা করবেন সেই ভয়েই যে আমার অর্ডার তুলে নিয়েছি—তা নয়। আমরা মুক্তিযোদ্ধা আমরা হিন্দুও –মুসলিমও নই। আমাদের কর্তব্যবোধের কাছে হিন্দু-মুসলমান সব সমান। আমরা জানি খানসেনারা আপনাদের এলাকা ধ্বংস করবেই। মরবেন আপনারা ঠিকই—কেউই বাঁচতে পারবেন না। তবে আমরা খানসেনাদের বাধা দেবার পরে যদি মরেন, মরার মুহুর্তে ক্যাপ্টেন বেগকে একটা অভিশাপ দিয়ে মরবেন। আর বলবেন ঐ লোকটার জন্য মরলাম। আমি তাই বাধা দেবার অর্ডার তুলে নিলাম। এবং আপনাদের ইউনিয়নের মধ্যে বাধা দেব না বলেও কথা দিয়েছি। এখন যদি খানসেনাদের হাতে মরেন, তবে গুলিটা খাবার পরে ক্যাপ্টেন বেগের কথা এই বিলে স্মরণ করবেন, নাঃ, বেগ বুঝেছিল ঠিকই। মরলাম, তবে শত্রু একজন মেরে মরাই ভালো ছিল।

(চলছে)


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

(Y)

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৌরভ কবীর এর ছবি

(জাঝা) (Y)

"মরবেন আপনারা ঠিকই—কেউই বাঁচতে পারবেন না।"

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

নরাধম এর ছবি

(Y)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।