'ফিলিং ওয়ান্ডারফুল'-ইটিং ফ্রায়েড চিকেন এন্ড ফ্রেন্চ ফ্রাইস এট কেএফসি উইদ অমুক এন্ড তমুক।
আপডেট দিবে ভালো কথা, কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এই মানুষটি গলির মাথার কাশেমের দোকানে বসে পেয়াঁজু খেতে খেতে আপডেট দেয় না, তখন সেল ফোনের স্ট্যাটাস বক্স বন্ধ হয়ে যায় সন্দ করি।
বসুন্ধরা সিটি বা যমুনা ফিউচার পার্কে গেলে চেক-ইন হবে নিশ্চিত কিন্তু গাউসিয়া বা এলিফ্যান্ট রোডে শপিং করলে এখন আর কেউ চেক-ইন দেয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনা। ইদানিং দেখছি, মানুষজন পারসোনাতে গেলেও চেক-ইন দেয়, এমনকি ছেলেরা পর্যন্ত পারসোনা এডামস থেকে চেক-ইন দেয়। এসব যখনি দেখি মানুষের বুদ্ধিমত্তা দেখে মুগ্ধ হই, অভিভূত হই।
স্ট্যাটাস আপডেট বা চেক-ইন দেয়াটা সিলেক্টিভ, গপ্প করার মতো বা নিজেকে গর্বিত ভাবার মতো বিষয়গুলো চৌধুরী শরাফতের ধারা বর্ণনার মতো নিয়মিত বিরতিতে লিখিত আকারে আপডেট হতে থাকে।
২. ক্রিকেটার সাকিব অশ্লীল এবং অগ্রহনযোগ্য অঙ্গভঙ্গি করে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হলো, আপনার এক ফেসবুক বন্ধুর স্ট্যাটাস নাজিল হলো,
ইন্ডিয়ার সাথে পরাজয় নিশ্চিত করার জন্য বাকশালী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নাম্বার ওয়ান সাকিবকে সরিয়ে দেয়া হলো।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া হয়ে গেলে এই কথাটা সে মতি পত্রিকায় মন্তব্য আকারে দিয়ে আসতে ভুলবেনা, আর মতিমন্ডলী আপনার মন্তব্য না ছাপালেও আপনার বন্ধুর এ মন্তব্য না ছাপানোর মতো ভুল করবেনা।
৩. পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে, গালে-কপালে-হাতে পাকি পতাকা এঁকে শয়ে শয়ে পাকি বরাহশাবকেরা স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে দিচ্ছে। আপনি প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন, কিন্তু আপনার বন্ধু ঠিকই বলে চলছে,
খেলা খেলার জায়গায়, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। আর যারা স্টেডিয়ামে এমন করছে তাদের ঘৃণা করলেতো হবেনা, তাদের বুঝাতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
বন্ধুর মন্তব্যে শাহরুখ ওয়াহিদের গন্ধ পাচ্ছেন নিশ্চিত। হ্যা, মনে রাখুন আপনার আশেপাশে এরকম মানুষই বেশি, অনেক বেশি।
৪. ক্রিকেটার জিয়া টি২০ বিশ্বকাপের দলে নেই, এটা নিয়ে ক্রিকেটভক্তদের রাগ থাকতে পারে। কিন্তু একশ্রেনীর ভক্ত বেশ জোরেশোরেই বলবে,
জিয়ার নামের জন্যই বাকশালী সরকার তাকে দলে রাখেনি।
যদিও তারা জানে যে, এশিয়া কাপে জিয়া ভাল খেলার অনেক আগেই টি২০ বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করা হয়েছে।
৫. শীতবস্ত্র বিতরণের কর্মসূচিতে আর্থিকভাবে অংশগ্রহনের জন্য এক বন্ধুকে অনুরোধ করলেন, সে পকেটের অবস্থা সুবিধার না বলে কেটে পড়লো। দুদিন পরই সে এ আর রহমানের কনসার্ট থেকে চেক-ইন দিলো।
আর আপনার যে বন্ধুটি কনসার্ট দেখতে যায়নি বা যেতে পারেনি সে আশিকি মুভির রোমান্টিক গান শুনতে শুনতে কি-বোর্ড ফাটায়া স্ট্যাটাস দিচ্ছে,
ভারতের তাঁবেদার এই আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের শিল্পীদের মূল্য না দিয়ে ভারতীয় শিল্পীকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছে।
এই শ্রেণীর কেউই তপন চৌধুরী বা ফাহমিদা নবীর কনসার্টে ৫ টাকা টিকেটেও ঢুকবেনা।
৬. মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের হারিয়ে যাওয়া উড়োজাহাজ খুঁজতে বঙ্গোপসাগরে তল্লাশি শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারও তাতে যোগ দিচ্ছে। আপনার কাছে এটা নীতিগত মানবিক সিদ্ধান্ত, কিন্তু আপনারই কোন বন্ধু হয়তো বলছে,
খুজতে বের হইছে ভাল কথা । কিন্তু এই বিমান হারানোর দোষ জামাত-শিবির-বিএনপি কে দিতে গিয়ে পরক্ষ ভাবে বাংলাদেশের ঘারে যেন না ফেলা হয় ।
কিংবা
এক ইলিয়াস রে খুঁইজা বাইর করতে পারেনা,সাগর-রুনির খুনী ধরতে পারল না আর বিমান খুইজা বাইর করব।গাঁজাখুরি গল্প আর কত শুনবো।
এমন মন্তব্য দেখে আপনি মাননীয় স্পীকার হতে না পারলেও ডেপুটি স্পীকার হয়ে যাবেন নিশ্চিত।
সবকিছুই সাংঘর্ষিক, চারদিকে মতলববাজ দেখি, কিছু একটা করার চেয়ে দেখানোতে আগ্রহী মানুষে চারপাশটা গিজগিজ করছে। প্রচন্ড আশাবাদী মানুষ আমি হতাশ হই, হতাশ হতে হতে যখন বিধ্বস্ত অবস্থা তখন আশাবাদী হবার মতো কিছু খুঁজে পাই, সেটাকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার সাধ জাগে। এমন একটি আশাবাদী হবার মতো খবর একজন অনয়ের গল্প ।
মহিউদ্দিন বাবুল নামের মহান মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা, এমন কিছু মানুষ আছে বলেই বেঁচে থাকার আকর্ষণ বাড়ে, ভাল কিছু করার প্রতি তীব্র আগ্রহ তৈরী হয়।
মন্তব্য
দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায় যারা, তারা কী বোর্ডে ঝড় তুলেই ক্ষান্ত থাকে না, ঝড়টাকে জায়গা মত নিয়েও যায়। এরাই দেশ মাতৃকার সত্যিকারের সন্তান, অন্যদের মত জারজ নয়। এরা এবং কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষগুলো দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে বলেই দেশের যেটুকু এগুয়ে যাওয়া সেটা আর মন্ত্রী- নেতাদের গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়ানো সম্ভব হচ্ছে।
একটা কথা - আরেক শ্রেণির মতলববাজদের কিছু উদাহরণ আসলে আরো ভালো লাগতো।
____________________________
মতলববাজ ভন্ডদের নিয়ে আপনিও লিখে ফেলুন একটা লেখা।
----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য
পেঁয়াজুখোরদের স্ট্যাটাস বিনোদনের জন্য মন্দ কী! এগুলোরও দরকার আছে।
হাসির দমকে ছাই উড়ে গেলে খাঁটি সোনার মত যেসব মানুষেরা দিনশেষে আমাদের মনটা আশা আর আনন্দে ভরিয়ে দেন
সচল সাবরিনা, সালমা আর মহিউদ্দিন বাবুলেরা তাঁদের দলে। এমন মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে যুতসই শব্দ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। অনেক শ্রদ্ধা তাঁদের প্রতি। অয়নের জন্য অনেক শুভকামনা। ধন্যবাদ শব্দ পথিক লেখাটি শেয়ার করার জন্য।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আয়নামতি।
----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য
এক তুখোড় তরুণীর বিয়ের পরদিনের [সম্ভবত ঘুম থেকে উঠে চোখ খোলার সঙ্গেসঙ্গেই দেওয়া ] স্ট্যাটাস ছিল 'বিয়া কৈরা লাইসি'! চেক ইন, রিলেশনশিপ এইসব আপ-টু-ডেট রাখা এতো ট্রেন্ডি ফ্যাশন এখন! মজা লাগে দেখতে। খি খি।
লেখায়
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন