আসুন একটা ইশতেহার লিখি

সুফি ফারুক এর ছবি
লিখেছেন সুফি ফারুক [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৩/১১/২০১৩ - ৩:৩৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বছর দশেক আগের কথা। তখন নিজে সিস্টেম এডমিনিস্ট্রেটর ছিলাম। বিভিন্ন জায়গায় লিনাক্স, নেটওয়ার্কিংয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে বেড়াতাম, বেশিরভাগই পয়সা ছাড়া। এর দেওয়া ভেন্যু, তার খাওয়া এভাবেই চলছিলো। সে রকমই এক কাজে বিনা পয়সায় সরকারি একটি ভেন্যুর আশায় এক সরকারি আমলার কাছে গিয়েছিলাম। সদ্য চাকুরিতে যোগ দেওয়া নবীন সেই সরকারি কর্মকর্তা আমাকে বসিয়ে রেখে খবরের কাগজ পড়ে, চা খেয়ে, ঢেকুর তুলে, বাসায় বৌয়ের সাথে কথা বলে বিরক্ত-মুখে কথা বলার অনুমতি দিলেন। আমি চেষ্টা করলাম তাকে ভেন্যুর দরকারটা বুঝিয়ে বলার। তিনি বিন্দুমাত্র চেষ্টা করলেন বলে মনে হল না। তবে আমাকে মোটামুটি হাইকোর্ট, সংসদ ভবন দেখিয়ে হোয়াইট হাউসে নিয়ে গেলেন। নিয়ে গিয়ে থামলেন না, আরও বলতে লাগলেন। ওই মুহুর্তে আমার ওয়ার্কশপ করার ইচ্ছে তো দুরে যাক, কম্পিউটার নামক বেহুদা জিনিসের সঙ্গে নিজের সম্পর্কটাই অর্থহীন মনে হতে লাগলো।

আর এখন। সচিব-যুগ্ম সচিবরা মনোযোগ দিয়ে ট্রেনিংয়ে আইটি নিয়ে আমাদের কথাবার্তা শুনছে। দেশের বিভিন্নস্থানে জেলা প্রশাসকরা আমাদের আইটি, আউটসোর্সিং, বিপিও নিয়ে কর্মশালা বিষয়ে নিজেরাই চরম উৎসাহ দেখাচ্ছে। শুধু ফ্রি ভেন্যুই তারা দিচ্ছে না, থাকা-খাওয়া ঘোরা-ফেরার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন।

অথচ আমি এই সময়ের মধ্যে কোন লাটসাহেব হয়ে পড়িনি। একই মানুষ আছি। তাহলে হয়েছেটা কি? শুধুই সময়ের পরিবর্তন? নাকি আমলারা সবাই এই কয় বছরে তথ্য প্রযুক্তি সচেতন হয়ে গেছেন?

আমার মনে হয়, কোনটাই না। যেটা হয়েছে, তা হলো তথ্য প্রযুক্তিকে সরকারের নিজস্ব এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ। তখনকার সরকারে এটার আলাদা কোন গুরুত্ব ছিল না। এখনকার সরকারের এটা মুল গুরুত্ব-খাতের একটা। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি বোঝে এটা সরকারের গুরুত্ব খাত, বা এই কাজটা নিয়ে হৈচৈ করলে উপরওয়ালারা খুশি হতে পারেন, তখন সেটা জীবন দিয়ে করে। মাঝে মধ্যে করতে গিয়ে অতিরিক্ত করেও ফেলে। আর আজ আমলাদের আমাদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে এত নেক দৃষ্টির কারণ ওটাই।

আওয়ামীলীগ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কতখানি সফল, সেই বিতর্কে যাবো না। আমি যে পরিবর্তনটুকু দেখেছি তা হল আমরা এখন মন্ত্রী-আমলাদের ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের কথা বলে তাদের উপরে চাপ প্রয়োগ করতে পারছি। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের প্রচারনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ শব্দটা যুক্ত না করলে হয়তো এটা এত সহজ হতো না।

সামনে দশম জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে আসছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করবে। শুনেছি শুধু আওয়ামী লীগই না, বিএনপিসহ সব দলই নির্বাচনী ইশতেহারে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছে। এগুলো খুবই শুভ লক্ষণ। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো শুধু ইতিবাচকভাবে ভাবলেই সবকিছু হয়ে যাবে না। তাদেরকে বুঝতে হবে, এই খাতে কি কি করা দরকার, কি করলে ভাল হয়, কি করা একদম উচিৎ হবে না। তবে তাদেরকে সেটা বোঝাবে কে? ওই সব আমলা? এপেক্স বডি? নাকি ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালানো হুজুররা? ওদের কাউকে দিয়ে যে সত্যিকার সমস্যাটা এড্রেস করা যাবে না, সেটা বারবার প্রমাণিত। সঠিক তথ্য পেতে হলে, এই খাতের পেশাজীবীদের কাছ আসতে হবে। সরকারি নীতির কারণে নিত্য যাদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তাদের চেয়ে এ কথা কে ভাল জানবে?

সে কারণেই ভাবছি -- আমরা অনলাইনের সবাই (তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী ও ভোক্তা) একত্রিত হয়ে একটি আইসিটি মেনুফেস্টো তৈরি করলে কেমন হয়? বিভিন্ন তর্ক-বিতর্কের মধ্যে একটা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়ে যাবে। এরপর সেটা ইন্টারনেট দিয়ে ভেসে দলগুলোর কাছে পৌঁছে যাবে।

আমার মনে হয় অনলাইন (ব্লগ, ফেবু. ইত্যাদি) থেকে যদি একটা আইসিটি মেনুফেস্ট প্রস্তাব তৈরি হয়, সেটা একটা বিরল ঘটনা হবে। দলগুলো সেটা গ্রহণ করুক আর না করুক, তাদের ভেতর একটা চাপ তৈরি হবে।

এটা নিয়ে কি আলাপ শুরু করা যায়? মেনুফেস্টো তৈরিতে অভিজ্ঞ এরকম লোকজন এটা সমন্বয় করলে আমরা পেশাজিবী ওপিনিয়ন দিয়ে সহায়তা করতে পারি। বন্ধুদেরকেও খবরটা পৌছে দিতে পারি।

দেশের বিভিন্ন যায়গায় ঘোরার সময় পেশাজিদের সাথে কথা বলে কিছু নোট নিয়েছিলাম। ঠিক মেনুফেস্টো ফর্মেটে না। শুধুমাত্র পয়েন্টগুলো পড়ে দেখার জন্য যুক্ত করে দিলাম।

1. তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন:
1.1. ইন্টারনেট:
1.1.1. ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে হাই-স্পিড ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করার জন্য - প্রতিটি উপজেলা শহরে, ঢাকার দামে আইএসপি পর্যায়ে ইন্টারনেট সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। মানে এমন ব্যাস্থা করতে হবে যাতে বিটিসিএল বা যেকোন আইআইজি উপজেলা শহরে ঢাকার দামে ব্যন্ডউইথ বিক্রি করতে পারে। এজন্য প্রয়োজনে সরকারি প্রকল্পের আওতায় ব্যাকবোন-ব্যাকহল তৈরি করতে হবে।

1.2. ডট বিডি ডোমেইন ব্যাবস্থাপনা:
1.2.1. রেজিস্টেশন ও ব্যবস্থাপনা (অর্ডার, অ্যাপ্রুভাল, পেমেন্ট ইত্যাদি) অন্য টিএলডির মতো করতে হবে।
1.2.2. সরকারি, বেসরকারি যে ব্যাবস্থাপনাতেই আসুক আন্তর্যাতিক মানের SLA নিশ্চিত করতে হবে।

1.3. ইলেক্ট্রনিক নাম্বার ম্যাপিং সিস্টেম বা এনাম :
1.3.1. আমাদের দেশে ইলেকট্রনিক নাম্বার ম্যাপিং সিস্টেম বা এনামে বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।

1.4. পি কে আই:
1.4.1. পিকেআই নিয়ে রিকমান্ডেশন যুক্ত করতে হবে। (যারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন তারা যুক্ত করলে সুবিধা হয়)

1.5. ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার:
1.5.1. আমাদের ভবিষ্যত তথ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচোনায় রেখে একটি আন্তর্জাতিক মানের টায়ার ৪ ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার তৈরি করতে হবে। যেখোনে আন্তর্যাতিক মানের – পিপল, প্রসেস, টেকনোলোজির সমন্বয় করে নিদ্রিষ্ট SLA র গ্যারান্টি দিয়ে সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।
1.5.2. দেশের অপর দুটি প্রান্তে ন্যাশনাল ডেটা সেন্টারের অন্তত দুটি ডিআর সাইট তৈরি করতে হবে।

1.6. টেলিকম:
1.6.1. প্রতিটি টেলিকম কম্পানিকে ইনফ্রা কনসোলিডেশনে বাধ্য করতে হবে। অন্তত এক্সেস নেটওয়ার্ক। তাদের নেটওয়ার্কের মাসলবাজি বন্ধ করতে হবে। তারা খেলুক মার্কেটিং আর প্রডাক্ট ইনোভেশনে।
1.6.2. টেলিকম কম্পানিগুলোকে নাম্বার পোর্টেবিলিটির নির্দিষ্ট তারিখ দেবার জন্য বাধ্য করতে হবে।

1.7. পেমেন্ট গেটওয়ে:
1.7.1. আভ্যন্তরীন ও বিদেশে পেমেন্ট আদান প্রদানের সম্পুর্ন ইলেকট্রনিক ও অটোমেটেড ব্যবস্থা করতে হবে।
1.7.2. পে-প্যাল বা এ ধরনের সার্ভিসকে আসার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

1.8. হাইটেক-পার্ক, ইনকিউবেটর স্থাপন:
1.8.1. আমাদের কালিয়াকোড় হাইটেক পার্কের বাস্তবায়ন করতে হবে।
1.8.2. জেলা পর্যায়ে হাই-টেক পার্ক নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে।
1.8.3. প্রতিটি বিভাগে একটি করে আইটি ইনকিউবেটর চালু করতে হবে। প্রতিটি জেলায় ইনকিউবেটর স্থাপনের কাজ শুরু করতে হবে।

2. রাষ্ট্রীয় পলিসি সাপোর্ট (আইন, নীতিমালা, প্রবিধানমালা নীতি):
2.1. ইন্ডাস্ট্রি স্বীকৃতি:
2.1.1. বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিকে শিল্প বললেও এটার প্রকৃত শিল্পস্বীকৃতি নাই। কারণ এ খাতে উদ্ভাবন বা মেধা সম্পত্তির ব্যাংকিং ব্যবস্থায় দু পয়সার মূল্য নেই। তাই এই সম্পত্তির মূল্যমান তৈরি এবং অ্যাসেটি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
2.1.2. ফ্রিলান্সিং শিল্পকে রপ্তানি-বানিজ্য হিসাবে গণ্য করে, সেই অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করতে হবে।

2.2. তথ্যপ্রযুক্তি-বীমা:
2.2.1. তথ্যপ্রযুক্তি পন্য, সেবা, মেশিনারিজ ও তথ্য – বীমা পলিসির আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

2.3. তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রির ট্যাক্স নীতি:
2.3.1. ৫ বছরের জন্য ইন্টারনেট সেবাকে ভ্যাট-ট্যাক্স মুক্ত করতে হবে।
2.3.2. ফ্রিল্যান্সারদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপরে বর্তমান কর অবিলম্বে বর্জন করতে হবে এবং আগামী ৭ বছর ট্যাক্স ফ্রি ঘোষনা করতে হবে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের ব্যবহারকৃত তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার বা নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
2.3.3. তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর মেয়াদে ট্যাক্স নীতি ঘোষনা করতে হবে।

2.4. ইন্টারনেটের মুল্য:
2.4.1. বর্তমান ইন্টারনেটের যে সরকারি মুল্য আছে, এটার নুন্যতম অর্ধৈক করতে হবে।

2.5. ইন্টারনাল আইটি কনজামশন:
2.5.1. ৫ বছরে বাংলাদেশ সরকারের ইন্টারনাল তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পন্যের কনজামশন মিনিমাম ৫০০% বাড়াতে হবে। এবং তার ৮০% করতে হবে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে।

2.6. আইন, পলিসি:
2.6.1. প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামে (পিপল, প্রসেস, টেকনোলোজি) স্টান্ডার্ড নির্ধারন করে দিতে হবে। ওই স্ট্যান্ডার্ডে অডিটেড হবার বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।
2.6.2. দেশের প্রচলিত আইনগুলোকে তথ্যপ্রযুক্তিবিশ্বে ব্যাবহার উপযোগী করতে হবে।

2.7. রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম:
2.7.1. বর্তমান প্রচলিত ওয়েব ভিত্তিক গণমাধ্যমে সরকারি কমার্শিয়াল বিজ্ঞাপন দেবার সুযোগ নেই। সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।

3. তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরি:
3.1. পলিসি লেভেলর কাজ:
3.1.1. কারিগরি শিক্ষা বোর্ড:
3.1.1.1. কারিগরি বোর্ডের কারিকুলামে ৬ মাস, ১ বছর এবং ২ বছর মেয়াদে ব্যবহারিক তথ্যপ্রযুক্তিক সর্বাধুনিক কোর্সসম‍ূহ চালু করতে হবে। সরকারি/বেসরকারি অনুমোদিত সকল প্রতিষ্ঠানসমুহে এই কোর্স চালু ব্যাবস্থা করতে হবে।
3.1.1.2. বোর্ডের সকল কারিকুলাম ৬ মাস পরপর যোগ্য কমিটি দিয়ে (ইন্ডাস্ট্রির লোক সহ) আপগ্রেট করার ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত কারিকুলাম আপডেট করার জন্য ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাথে কিছু বাধ্যবাধকতা সম্বলিত পলিসি করতে হবে।
3.1.1.3. বোর্ডের পেপার ওয়ার্ক ৫০% কমাতে হবে। বিশেষ করে দ‍ূর থেকে থেকে এসে করা কাজগুলো অটোমেটেড করতে হবে।
3.1.1.4. তথ্যপ্রযুক্তি পড়াবার জন্য প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ব্যবস্থা সহজতর করতে হবে। কমার্শিয়াল উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে হবে। কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে পরিক্ষার মাধ্যমে।
3.1.2. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়:
3.1.2.1. জাবিতে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবহারিক বিষয়ে (মাস্টার্স ইন কম্পিউটার/আইটি অ্যাপ্লিকেশন টাইপ) কোর্স খুলতে হবে। যেখানে সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের পাশাপাশি অন্য ব্যাকগ্রাউন্ডের গ্রাজুয়েটরা পড়ার সুযোগ পাবে।
3.1.3. অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়:
3.1.3.1. সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাবহারিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে স্বল্প ও দির্ঘমেয়াদে কোর্স খোলার ব্যাবস্থা করতে হবে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্ররা ছাড়া অন্যরাও পড়ার সুযোগ পাবে।
3.1.4. সরকারি অনান্য প্রশিক্ষন অর্গানগুলো:
3.1.4.1. সরকারের অনেক রিসোর্স সমৃদ্ধ অনেকগুলো ট্রেনিং অর্গান আছে। আধুনিক কোর্সের অভাবে সেগুলো প্রত্যাশিত জনবল তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই সকল ট্রেনিং অর্গানকে শর্ট টার্ম আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি কোর্স পরিচালনার জন্য যোগ্য করে তুলতে হবে এবং তাদেরকে দিয়ে ২ বছরের মাথায় কোর্স পরিচালনা শুরু করতে হবে।
3.1.5. বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমুহ:
3.1.5.1. প্রতিটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিকে সিএসর ফান্ড হোক আর আর প্রফিটের অংশই হোক, একটি নিদ্রিষ্ট অংশ জনশক্তি তৈরিতে ব্যবহার করতে বাধ্য করতে হবে।

3.2. শিক্ষা অবকাঠামোতে পরিবর্তন:
3.2.1. সকল বোর্ড ও জাবি’র অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহের, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সাবজেক্টিভ পরীক্ষা নেবার জন্য, সম্পুর্ন অটোমেটেড অনলাইন ব্যবস্থা করতে হবে।
3.2.2. প্রতিটি বিভাগে একটি তথ্যপ্রযুক্তি নলেজ সেন্টার তৈরি করতে হবে।
3.2.3. প্রতিটি বিভাগে সর্বাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্র্যাকটিক্যাল স্কিল টেস্টিং সেন্টার স্থাপন করতে হবে। প্রতিটি জেলা পর্যায়ে টেস্টিং সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করতে হবে।


মন্তব্য

স্পর্শ এর ছবি

দারুণ উদ্যোগ। তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা খাতটা বাদ গেছে। আমাদের দেশীয় নানান সমস্যা সমাধানে দেশের প্রযুক্তিবিদদেরই গবেষণা করতে হবে। বাইরের কেউ এসে সমাধান করে দিয়ে যাবে না।

ইশতেহারটা কমপ্লিট হলে ভালোই হবে। রাজনৈতিক দলগুলো চোথা মারতে পারবে এ থেকে। তাতেও ভালো।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

Zahir Raihan এর ছবি

দারুণ উদ্যোগ।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

চলুক

সুবোধ অবোধ এর ছবি

হাততালি
অসাধারণ কার্যকর একটি উদ্যোগ!!

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ চিন্তা-ভাবনার পরে এই লেখা। হুম, এ নিয়ে ডিবেট-গোলটেবিল করে তারপরে কার্যকরের ব্যাপারে জনমত গঠন করা যেতে পারে। অভিনন্দন।
(নির্লিপ্ত নৃপতি)

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

চরম উদাস এর ছবি

চলুক অসাধারণ উদ্যোগ। দেখি কিছু যোগ করতে পারি কিনা।

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক
সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ, তবে আমার কাজের ধরণ অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি আর মানি ট্রান্সফার এর যথাযথ ব্যবস্থার অভাব বেশি বোধ করি।

*জাবি মানে তো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝিয়েছেন তাই না?

সুফি ফারুক এর ছবি

ধন্যবাদ।
প্রত্যেকের নিজের কাজের যায়গা থেকে মতামত দেয়াটা সবচেয়ে বেশি দরকার।

আপনার প্রয়োজনগুলোর কথা একটু গুছিয়ে দেবেন নাকি?

* জি। জাবি মানে জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝিয়েছি এখানে। লেখার পরে ভুলটা বুঝতে পেরেছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

মাসুদ সজীব

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

খুব, খুব, খুব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। কতটা বিস্তারিতে যাবো সেটা জানা থাকলে আমার নিজের কাজের ক্ষেত্র (1.4 - সিকিউরিটি) নিয়ে যতটা সম্ভব সাহায্যের জন্য আছি। নিজের কর্মক্ষেত্রে অনেক রকম ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হয়। সেগুলো পোর্ট করা কোনো ব্যাপারই না।

সুফি ফারুক এর ছবি

ইশতেহারে যোগ করার জন্য একটা টপ শিট দেয়া উচিৎ, যেখানে মোটা দাগে সবগুলো বিষয় থাকবে।
সেইসাথে সংযুক্ত থাকবে প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত (বোঝার সুবিধার্থে যতখানি ডিটেইল দেয়া উচিৎ)।

তাছাড়া তর্ক-বিতর্কের জন্যও বিস্তারিত তথ্য দরকার।
নির্বাচিত হয়ে সরকার বসার পরে - সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটিকে পুশ করার জন্যও বিস্তারিত লাগবে।

এবার সরকারের এ খাতের - স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের কর্মপরিকল্পনার সাথে, টাইমলাইন ও ডিপেন্ডেন্সি প্রকাশ করার ডিমান্ড করতে হবে। যেন আমরা ট্র্যাক করতে পারি।

তাই সব কিছু মিলিয়ে যতটা বিস্তারিত করা যায় ততটাই ভাল।

সম্ভব হয়ে তথ্য প্রযুক্তি (টেলিকম সহ) নিরাপত্তা বিষয়ে (ফিজিক্যাল-লজিকাল সবরকম) বিস্তারিত (পিপল, প্রসেস, টেকনোলজি সবগুলো ক্ষেত্র বিবেচনায় নিয়ে) একটা লেখা লিখুন।
বুলেট পয়েন্ট এবং পাশে সেটার আলোচনা থাকলে ভাল হয়।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

নিজের ক্ষেত্র নিয়ে আরেকটু বলি। একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তথ্যনিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি। এই দিকটা ভয়ংকর রকম অবহেলিত।

সুফি ফারুক এর ছবি

তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আছেই। তবে আমি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ক্ষতির চেয়ে বেশি চিন্তিত ইনোসেন্ট লোক ফেঁসে যাওয়া নিয়ে।

আইসিটিতে শাস্তি দেবার জন্য এ্যক্ট বানানো হচ্ছে। অথচ এই সম্পর্কিত অবকাঠামো (ফিজিক্যাল, প্রসেস, পলিসি, ম্যানপাওয়ার) ও সেটার পেরিয়ডিক অডিট বিষয়ে কোন কংক্রিট নীতিমালা থাকছে না।

এই অবস্থায় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যেকোনো লোককে জর্জ মিয়া সাজিয়ে দেয়া যাবে। অথচ প্রকৃত দোষী থেকে যাবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

তানিম এহসান এর ছবি

দারুণ উদ্যোগ। গ্রাম নির্ভর অবকাঠামো তৈরি করাটাও মনে হয় দরকার। বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যকেন্দ্র চালু হয়েছে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনায় সেগুলোকে আরও বেশি কার্যকর করা গেলে, গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে মনে ভাল হয়।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক

md sabbir biswas এর ছবি

সুফী ভাইয়ের লেখাটা চমৎকার এবং খুব সময়োপযোগী। অনেকগুলো পয়েন্টে আমি একমত; বাকিগুলোতে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করতে মন চায়। সেগুলোই লিখলাম মন্তব্যে,
১.১ একমত। আরো জানি: বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশ আমলে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত এবং বেশকিছু ইউনিয়ন পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করেছে। তবে তার ব্যবহার সীমিত। সকল ইউনিয়ন পর্যন্ত এটা বিস্তৃত হতে কাজ চলছে।
১.২ ডট বিডি ডোমেইন ব্যাবস্থাপনা: এটা আসলে খুবই দরকার এবং পেপারলেস প্রসেসে।
১.৪ পি কে আই: সম্পর্কিত প্রস্তুতিমূলক কাজ অনেকদূর এগিয়েছে।
১.৫ ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার: এ কাজও অনেকদূর এগিয়েছে। সম্ভবত টায়ার-৪ সার্টিফায়েড হয়েছে এটা।
১.৬ টেলিকম: খুবই একমত। আরো সংযোজন: ভয়েস বা ডাটা ব্যবহারে লিমিট আরোপ করা না থাকলে ভালো হতো।
১.৭ পেমেন্ট গেটওয়ে: একমত। আরো সংযোজন: পেপালের মতো আমাদের নিজস্ব বৈশ্বিক একটা ব্যবস্থা থাকা দরকার।
১.৮ হাইটেক-পার্ক, ইনকিউবেটর স্থাপন: কাজ খুব ধীরে চলে, দ্রুততা দরকার। আর সকল জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক বোধহয় বাস্তবসম্মত না। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো বাছাইকৃত কয়েকটি জেলায় করা যায়।
২.৩ ইন্টারনেটের মুল্য: একমত। আরো সংযোজন: স্পিড/ব্যান্ডউইডথ এর উপর মূল্য নির্ধারন করতে হবে, ব্যবহারের উপর নয়।
২.৭ রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম: সরকারি সব দপ্তরে এখন ওয়েবসাইট আছে। সেখানে নোটিশ বোর্ড বা বিজ্ঞাপন সেকশন আছে। ওখানেই বিজ্ঞাপন দেয়াটাই বোধহয় ভালো, অপচয় কমে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।