প্রিয় রসিয়া বন্ধু,
গান বাজনা বিষয়টা আমার - গরীবের জন্য ঘোড়া রোগের মতো।
গানের তেমন কিছু বুঝি না। কিন্তু সারাদিন গান শুনি, গান খাই, গান দেখি (স্বপ্নেও)।
লেকে কম্পোজার হয়, গাতক হয়, বাদক হয়, ক্রিটিক হয়। আমি জানি - আমাকে দিয়ে ওর কোনটাই হবে না।
কিন্তু গানের একটা কিছু নিয়ে তো থাকতে হবে।
অনেক চিন্তা করে দেখলাম - শ্রোতা হওয়া যেতে পারে। ১ নম্বর রসিক শ্রোতা।
ওই মাইন্ডসেট নিয়ে লেখাপড়া শুরু করেছিলাম।
ভাবছিলাম বওয়া কাম (sitting job), সহজেই পারবো।
কিন্তু এর মধ্যে ঢুকে দেখছি - ভাল শ্রোতা হয়ে ওঠা, বেগম জিয়া জামাতকে ছাড়ার মতই কঠিন
উপায় হিসেবে একটা ২ নম্বরি বুদ্ধি বের করলাম।
বুদ্ধিটা হল - কোন বিষয় বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায়, সে বিষয়ে একটা বই লিখে ফেলা (কে জানি কইছিল?)।
যেহেতু সপ্তকই ঠিকমতো চিনি না, তাই সঙ্গীত বিষয়ে বই লেখার মুরদ আমার হবেনা।
নিজেকে চেক দিয়ে - একটা চোথা লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম (পপি গাইড টাইপ)।
চোথার শিরনাম - গান খেকো। বিষয়বস্তু - কিভাবে হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শোনা শেখা যায়, মজা নেয়া যায়।
এই চোথাটির আশিক অন্য ব্লগে দেয়া হয়েছিল, তবে এখন থেকে শুধু সচলেই থাকবে।
পাকা রসিকদের কাছে ছোট্ট অনুরোধ। আপনারা দয়া করে ভুল ভ্রান্তি গুলো ধরিয়ে দেবেন।
সবাই মিলে নিশ্চয় একদিন শিখে যাব। সত্যিকারের রসিক হয়ে উঠবো
তো চলেন শুরু করি:
১. শাস্ত্রিয় সঙ্গীত (Classical Music)
সুরের মুল উৎস প্রকৃতি। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য থেকেই বিচিত্র সব সঙ্গীতের সৃষ্টি। বড় গোলাম আলি খাঁ সাহেব বলতেন “সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সব লোকালয়ে সুর ভাগ করে দিয়েছেন, প্রকৃতির অন্যান্য উপাদানের (element) মত করেই। কোথাও নদী দিয়েছেন, মরুভূমি দিয়েছেন, পাহাড় দিয়েছেন, দীর্ঘ বসন্ত দিয়েছেন, দীর্ঘ খরা দিয়েছেন। ওভাবেই ভাগ করে দিয়েছেন – নদীর, খরা, মরু, পাহাড়ের সুর”। এসব সুর একেকজন দক্ষ ওস্তাদদের হাতে পড়ে, ক্রমশ সুবিন্যস্ত একটি কাঠামোর রূপ নিয়েছে। তারা সেই সুরের কাঠামোর মধ্যে চমৎকার সব চলন (phrase) তৈরি করে, ওই সুরকে আরও সুন্দর, সুশোভিত হয়ে করে দিয়ে গেছেন। সেই সংকলনগুলো কালেকালে হয়ে উঠেছে শাস্ত্র। আমাদের আজকের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। তাই আপনি যদি রাগ পাহাড়ি তে কোন গান/বাজনা (composition) শোনেন, রাগের নাম না জানলেও, বলতে পারবেন এটা পাহাড়ি গান। অথবা যদি কখনও পাহাড়ি গান না শুনে থাকেন, তারপরেও পাহাড় এলাকায় বসে, রাগ পাহাড়ি তে যেকোনো গান/বাজনা শুনতে ভালবাসবেন।
প্রকৃতি ছাড়া, সুরের আর একটি বড় উৎস হচ্ছে মানুষের মন। স্থান, কাল, ঘটনা ভেদে আপনার মন যখন যে স্তরে থাকবে, আপনার কথাবার্তাতে সেই স্তরের ভাব-আবেগ (mood) প্রকাশ পাবে। তেমনিভাবে যাদের সুর আসে, তারা গলা খুললেই, ওই সময়ের ভাবাবেগ ধরা পড়বে। সঙ্গীতজ্ঞরা প্রকৃতির সুরের মতোকরে একইভাবে, মানুষের বিভিন্ন ধরনের ভাবাবেগকে, ভিন্ন ভিন্ন সুরের কাঠামোতে বেঁধে দিয়ে গেছেন। সেগুলোও কালেকালে আমাদের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অংশ হয়েছে।
পরবর্তী ওস্তাদ/পণ্ডিতেরা সেসব কাঠামোগুলো নিয়ে আরও গবেষণা করেছেন। কিভাবে গাইলে নিখুঁতভাবে রাগের ছবিটি ধরা দেবে, তার রূপরেখা উন্নয়ন করেছেন। এই রাগই আমাদের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মুল ভিত্তি। বংশপরম্পরায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত লেখা-পড়ার জন্য গ্রামার তৈরি করা হয়েছে। রাগ, ঠাট, জাতি, স্কেল - বিভিন্ন কারিগরি নাম দেয়া হয়েছে। এসবের সর্বশেষ কারিগরি রুপী আমাদের আজকের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। তাই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কোন আলাদা করে আবিষ্কার করা নতুন বিষয় না। বরং আমাদের আশপাশের প্রকৃতি আর জীবনআচারের মধ্যে ফুটে ওঠা বিভিন্ন ভাবাবেগের শ্রেণীবদ্ধ এবং শুদ্ধ সঙ্গীতরূপ।
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে, একটি নির্দিষ্ট ভাবাবেগ কে স্পষ্টতরে ফুটিয়ে তোলার জন্য, যে নির্দিষ্ট সুরের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোই বলে রাগ (*)। ভিন্ন ভিন্ন স্থান,কাল ও ভাবের জন্য স্বতন্ত্র রাগ।
যারা শুদ্ধ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন, তারা স্থান-কাল মাথায় রেখে, শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ভাবাবেগ কে প্রকাশের জন্য, শুদ্ধরুপে যেকোনো একটি রাগ গান/বাজান। এ ধরনের সঙ্গীতে শুদ্ধতার বিষয়টা খুব কঠোরতার সাথে নিশ্চিত করা হয়। শোনার বৈচিত্র্যের জন্য বা অন্য কোন কারণে নিয়ম ভাঙ্গা যায় না। এ ধরনের গানবাজনার অনুষ্ঠানকে আমরা - শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বা রাগ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান বলি।
শুদ্ধ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি, উপশাস্ত্রীয় সঙ্গীত (semi classical music) নামে একটি ধারা আছে। এই ধারা নির্দিষ্ট রাগের উপরে ভিত্তি করে, শ্রবণবৈচিত্র্য তৈরির জন্য অনেক রকম অলংকরণ (ornamentation) করা হয়। বিভিন্ন ধরনের অলঙ্করণের কারণে, মাঝে মধ্যে সামান্য রাগ ভ্রষ্ট হতে পারে। উপশাস্ত্রীয় সঙ্গীতে নিয়মকানুন শিথিল হলেও, রাগের মুল মেজাজটা ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়। শুদ্ধ গানের শ্রোতারা হালকা মেজাজে এধরনের সঙ্গীত শুনতে পছন্দ করেন। এই ধারা শুদ্ধ গানের শ্রোতাদের পাশাপাশি সাধারণ শ্রোতাদের মধ্যেও জনপ্রিয়।
আমাদের প্রচলিত সাধারণ গানগুলোও কিন্তু রাগের বাইরে নয়। গানের অংশগুলোকে আলাদা আলাদা করে ভেঙ্গে নিয়ে, বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ওই অংশগুলো কোন একটি রাগ চলনের সাথে মিলে যাবে। কিন্তু যেহেতু বহু রাগের অপরিমিত মিলমিশ হয় এবং কোন রাগের মুল মেজাজ ধরে রাখা হয় না, তাই এগেুলোকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কাতারে ফেলা যায় না। এ ধরনের গানকে শাস্ত্র অনুযায়ী বলা হয় “লঘু সঙ্গীত”।
২. ভারতিয় শাস্ত্রিয় সঙ্গীত
ভারতবর্ষে দুই ধরনের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রচলন আছে। ১) হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত (Hindustani classical বা North Indian style of Indian classical music) বা হিন্দুস্থানি সিস্টেম ২) কার্নাটিক সিস্টেম (Carnatic music বা South Indian style of Indian classical music)। দুটি ব্যবস্থাই স্বতন্ত্র এবং অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
কার্নাটিক সিস্টেম প্রচলিত আছে মূলত দক্ষিণ ভারতের - তামিল নাড়ু, কেরালা, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক রাজ্যে। ওখানকার প্রায় প্রতিটি পরিবারে, পারিবারিক শিক্ষা-সাংস্কৃতিক ও ধর্মের অংশ হিসেবে চর্চা হয়।
হিন্দুস্থানি সঙ্গীত রীতি মূলত মুঘলদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে ভারত ছাড়াও – বাংলাদেশে, নেপাল, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে প্রচলিত হয়েছে। আমাদের দেশের সব ধরনের গানবাজনা ওই রীতিতেই হয়। আমরা আমাদের এই নোটটি তৈরি করেছি হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত রীতি মেনে।
৩. হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
হিন্দুস্থানি সিস্টেম বা হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে আলাদা আলাদা ভাবাবেগের প্রকাশ করা হয় স্বতন্ত্র রাগ দিয়ে। রাগগুলো যথারীতি ঋতু, সময় এবং মেজাজ ভিত্তিক। কণ্ঠের পাশাপাশি হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত যন্ত্র সঙ্গীতে সমান জনপ্রিয়। তানপুরা তে সুর ধরে রেখে, তবলা বা পাখোয়াজকে তালবাদ্য হিসেবে ব্যাবহার করে পরিবেশন করা হয়।
এই রাগগুলোতে বিভিন্ন জনরার সঙ্গীতগুলো গাওয়া/বাজানো হয়। রাগের শুদ্ধতা বজায় রেখে – ধ্রুপদ, ধামার, খেয়াল, সাদরা, তারানা রীতির (genre) সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। হিন্দুস্থানি সঙ্গীতে উপশাস্ত্রীয় ধারাগুলোর মধ্যে – গজল, ঠুমরী, কাওয়ালি, টপ্পা, কাজরি, হরি, সুফি রীতিগুলো জনপ্রিয়। তাছাড়া উপশাস্ত্রীয় ধারায় আমাদের দেশে – রবীন্দ্র, নজরুল, কীর্তন গান রয়েছে। একসময় উপশাস্ত্রীয় ধারার অসখ্য প্লেব্যাক এবং আধুনিক গানও হয়েছে।
মন্তব্য
কার্নাটিক ও হিন্দুস্তানি সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য কি? লেখাটির জন্য ধন্যবাদ!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
তাহলে এই বিষয়ে সামান্য একটু বিস্তার করি:
হিন্দুস্থানি এবং কার্নাটিক - দুই ধরনের স্বতন্ত্র মিউজিক সিস্টেম। ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল যেরকম একটি ভিন্ন মিউজিক সিস্টেম, সেরকমই।
ওই দুটি সিস্টেমে পার্থক্য করার আগে আমাদের (হিন্দুস্থানি) সাথে ওয়েস্টার্ন মিউজিকের পার্থক্যের বিষয়টা একটু দেখে নিলে বুঝতে সুবিধা হতে পারে। যেমন আমাদের “ষড়জ” মানে ওয়েস্টার্ন মিউজিকে DO। জিনিস একই কিন্তু নাম আলাদা। ব্যাবহারও আলাদা। আমাদের সঙ্গীত মনোফোনিক বা হোমোফোনিক (একক মেলোডি ফর্মেট, বা একটি বেসিক সুর ধরে গান বাজনা হয়), ওয়েস্টার্ন মিউজিক পলিফোনিক (একাধিক মেলোডি নিয়ে হারমনি তৈরি করা হয়)। ওদের সঙ্গীতে টেম্পো একই রকম (মানে টেম্পোর ইন্টারভ্যাল একই রকম, যেটা শুধু স্লো বা ফাস্ট হতে পারে)। ওদের থামা নির্ভর করে, সুর, হারমনি এবং অন্য মিউজিসিয়ানের গাওয়া/বাজাবার উপরে। আমরা তাল বিভিন্ন ধরনের (টেম্পোর ইন্টারভ্যাল তালের বোল অনুযায়ী একেক সময় একেক রকম), তাই আমাদের মিউজিকের টেম্পোও বিভিন্ন ধরনের। আমাদের শুরু করা, থামা – সবই সেই তাল নির্ভর।
হিন্দুস্থানি এবং কার্নাটিক সিস্টেমে মিলের যায়গা হচ্ছে – দুটিতেই সুরের ভিত্তি রাগ (কার্নাটিক সিস্টেমে রাগ কে “মেল” বলে)। দু ধরনের সঙ্গীতই মনোফনিক ।
পার্থক্যের যায়গা হচ্ছে - স্বরের নাম আলাদা, স্বরের ব্যাবহারও আলাদা, গাওয়ার ভঙ্গীও আলাদা। হিন্দুস্থানি সিস্টেমে রাগ তৈরি হয় ১২ টি স্বরকে ইউনিট ধরে। কার্নাটিক রাগ তৈরি হয় ২২ টি শ্রুতি ধরে। এজন্য কার্নাটিক সিস্টেমে রাগের সংখ্যা হিন্দুস্থানি রাগের চেয়ে অনেক বেশি। আবার দুটি সিস্টেমে - একই নামে, একই স্বর ব্যাবহার করা রাগ থাকলেও, গাওয়ার ভঙ্গীর কারণে শুনতে এক রকম হয় না। হিন্দুস্থানি প্রতিটি রাগ সময় নির্ভর। কার্নাটিক রাগে এরকম সময় নির্ভরতা নেই।
এছাড়া আরও কিছু পার্থক্য আছে। তবে রসিক হিসেবে, এই পার্থক্য এরচেয়ে বেশি জানারও প্রয়োজনও হয়তো এই পর্যায়ে হবে না। তবে দেখি পরে একসময় সিস্টেমগুলোর পার্থক্য নিয়ে একটা পোস্ট দেয়া যায় কিনা।
কিছু অদ্ভূত ধারনা দেখেছি কারো কারো মধ্যে বয়স বাড়লে ধর্মকর্মে মন দেবো আর রাগভিত্তিক সঙ্গীত অনুষ্ঠান শুনবো/দেখবো যদিও এর যোগসূত্রটা ঠিক বুঝিনা। যদিও গানের গ'ও নাই আমার মধ্যে, আমিও একজন শ্রোতা এই সাহসে পোস্ট পড়ে ফেললাম বিজ্ঞজনেরা যা বলার বলবেন। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত/ হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এই দুটোতে এট্টু প্যাঁচ লেগে গেলো! ওটা নাম্বারিং'র কারনেই হয়ত বা। শুরুর দিকের ইতিহাস একটু হালকার উপরে ঝাপসা বলা হলে আরো জমতো মনে হয়(আপনি আবার বলেন না ভাই, গান কি দৈ নাকি জমবে? )।
মানে কবে, কার হাত ধরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গড়াপত্তন ইত্যাদি হাবিজাবি আর কী! ঘরানা আসবে নাকি গান খেকোর চোথায়?
শঙ্কর টাকের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে এমনই ফিদা হইলেন যে এর আঁতিপাতি জান্তে ভারত চলে গেলেন। আসলে রক্তে কারো কারো গান টান দেয় মনে হয়। শঙ্করের ব্যাপক পাঙ্খা আমি। তিনি কার্নাটিক রীতিই মূলত অনুসরন করেন। শুনেছেন তার কম্পোজিশান? চলুক আপনার গানের ভূঁড়িভোজন। শুভকামনা।
সঙ্গীত আর ধম্মকম্মের মিলের যায়গাটা সম্ভবত ইস্পিরিচুয়ালিটি। এই বিষয়টা ভাল বুঝলে বক্তৃতায় যেতাম। যেহেতু বুঝি না, তাই নিজের বুঝের কথাটা লিখলাম:
আমার মনে হয়, শরীর যখন খুব কথা কয় তখন - সোফিয়া লোরেনের স্তন, এলিজাবেথ টেলরের নিতম্ব, বৈজয়ন্তীমালার নগ্নরূপ (এ যুগের মানানসইদের দিয়ে রিপ্লেস করে নেবেন) ভেবে খুব সুখ হয়। ভোরের তাজা শিশিরে পা ডুবিয়ে সুখ হয়, কাঁটার মতো গায়ে গাঁথা অঘ্রানের বাতাস সুখ দেয়, অকুণ্ঠ পানাহারের সুখ সহ্য হয়, শরীরে শরীর মিশে সকাল গড়িয়ে রাত হবার সুখ থাকে, এরকম আরও মেলা সুখ থাকে। একটা বয়সে তো আর শরীর কথা কয় কয় না। কথা কয় ছানি, কাশি, আর্থাটিস ইত্যাদি। সেসময়ের সঙ্গী হতে পারে সঙ্গীত। খুব সুরেলা কণ্ঠের ঠিক সুরটা কানে লাগা, বা নিজের গলায় একটা সুর লাগার আনন্দ কিন্তু অর্গাজমিক
প্যাঁচ লাগার দায়টা আমার। নম্বরিং এর যায়গায় ২ নম্বরির বদলে ৩ নন্বরি হয়ে গেছে। আসলে কার্নাটিক নিয়ে আলোচনার দরকার নেই ভেবে মুল আউটলাইনে ফিরে গিয়েছিলাম।
ইতিহাসের বর্ণনা উইকিতে বেশ দেয়া আছে। তাই ওদিকে খুব একটা পা বাড়ালাম না। তবে প্রতিটি জনরা, ঘরানা, গায়কদের গল্পের সাথে ইতিহাসের কিছু ইন্টারেস্টিং পার্ট আসবে।
শঙ্কর টাকের শুনেছি। ভাল চেষ্টা
গান শুনতে ভালো লাগে, কিন্তু এসব শাস্ত্রের ব্যাপারে আমি ক-অক্ষর গোমাংস। আমার মা গান করতেন, বাসার হারমোনিয়ামে কয়েকটা 'কি' একসাথে চেপে ড্রাকুলা টাইপের হরর আওয়াজ বের করা একসময় বেশ ভালো বিনোদন ছিল আমার জন্য। অবশ্য, কিছু প্রিয় সুর (একুশে ফেব্রুয়ারি, পুরানো সেই দিনের কথা, ব্রেভহার্ট থিম ) বাজানো শিখেছিলাম একসময় (বেসিক ছাড়াই কোনটার পর কোন 'কি' টা চাপবো সেটা মুখস্থ করে)।
আর, উপমন্ত্রীর মত উপশাস্ত্রীয় বলে যে একটা আলাদা ধারা আছে সেটা জানলাম।
আরেকটা জিনিস,
আপনার ২ নম্বর পয়েন্টে আপনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের দুটো ভাগ (হিন্দুস্তানি আর কার্নাটিক) আছে বলেছেন। এরপর, হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত এর জন্য পয়েন্ট নং ৩ ব্যবহার করেছেন। এটা কি ২নং পয়েন্টের 'আন্ডারে* ' পরার কথা না?
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
*আন্ডার এর ভাল প্রতিশব্দ মাথায় আসছে না।
জী, ওটা ২নং পয়েন্টের 'আন্ডারে* ' পরার কথা
প্যাঁচ লাগার দায়টা আমার। নম্বরিং এর যায়গায় ২ নম্বরির বদলে ৩ নম্বরি হয়ে গেছে। আসলে কার্নাটিক নিয়ে আলোচনার দরকার নেই ভেবে মুল আউটলাইনে ফিরে গিয়েছিলাম।
রাগ হংসধ্বনি (Raag Hamsadhami):
কর্নাটক সিস্টেম বা উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত এর একটি রাগ।পাশ্চাত্য মতে একে পেন্টাটনিক মেজর স্কেল (Pentatonic Scale) বলা হয়ে থাকে। কারন এতে সংগীতের সাতটি নয়, বরং পাঁচটি স্বর ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
রাগটি সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যিখানে যে কোনও সময় বাজানো যায়।মূলত রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর (Second quarter of night) হলো উৎকৃষ্ট সময়।
এই রাগ ইউটিউবে শুনে গুগল করে সর্বমোট ৩৬৭টি রাগের লিস্ট পেয়েছিলাম।
আমার কাছে মনে হয় রাগ সঙ্গীতের মাধ্যমে বাস্তব ও অবাস্তব জীবনের মাঝে কেমন যেনো একটা সেতুবন্ধন তৈরী হয়ে যায়...
পন্ডিত হরি প্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশি আর ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলা... আহ! মাঝে মাঝে ভাবি এই পৃথিবীটা এত্ত সুন্দর কেন?
যার সুরে মরে, সেই শুধু জানে
হংসধ্বনিতে - ওস্তাদ রসিদ খান সাহেবের - "lagi lagan" নামে একটা বান্দিশ আছে। শুনে দেখতে পারেন।
এই রাগে ইমদাদখানি ঘরানার সিতারের ভাল কম্পোজিশন আছে। ওস্তাদ ইমরাত খাঁয়ের বা ওস্তাদ শহীদ পরভেজ খাঁয়ের কম্পোজিশন শুনতে পারেন।
নতুন মন্তব্য করুন