দেশপ্রেমের কারনিভ্যাল

পৃথ্বী এর ছবি
লিখেছেন পৃথ্বী [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/১২/২০১৪ - ২:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিজেকে কখনও দেশপ্রেমিক দাবি করি না। দেশের জন্য এখন পর্যন্ত স্বার্থ ত্যাগ করে কিছু করার রেকর্ড নাই, ভবিষ্যতেও হবার সম্ভাবনা কম, নিজেকে যতটুকু চিনি। এরপরেও কোথায় যেন একটা তাড়না বোধ হয়। সামাজিক কিংবা মূলস্রোতের মিডিয়ায় যখন সুশীল চর্বিতচর্বণে মুক্তিযুদ্ধের কোনও এসপেক্টকে লঘুকরণ করা হয়, নিহতের সংখ্যা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের “নিরপেক্ষ” বয়ান, তখন কেন যেন ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত বোধ করি। পিয়াস করিম কোনও টকশোতে কী বলল, বামায়াত ইসলামের কোনও রুকন মুক্তিযুদ্ধের “আওয়ামী” ন্যারেটিভের বাইরে গিয়ে “বিকল্প” ন্যারেটিভ ত্যাগ করতে বসল, তাতে আমার কিছু যাওয়া আসার কথা না; আর দশটা অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ মানুষের মতো আমিও ঢাকা শহরের কোনও নতুন শৌখিন food cart-এ গিয়ে সেলফি তুলে ভোগবাদিতায় মেতে উঠতে পারতাম, সামাজিক মিডিয়ায় সতীর্থদের এপ্রুভালের কাঙাল হতে পারতাম। কিন্তু ইউরোপীয় ফুটবল, হঠাৎ হঠাৎ চাগিয়ে ওঠা কোনও অনলাইন হুজুগ, কিংবা হ্যাংআউট-সেলফির চেয়ে আমার কাছে বেশি আগ্রহোদ্দীপক লাগে ৪৩ বছর আগের ঘটনা, আর বর্তমানে সেই ঘটনাকে পুনঃলিখনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অপপ্রয়াস। আশেপাশে কোনও ঘটনাকেই বিচ্ছিন্নভাবে দেখতে পারি না, আপাত বিচ্ছিন্নতার পর্দা ফুঁড়ে ঐতিহাসিক লেগ্যাসির অদৃশ্য তন্তুগুলো দৃশ্যমান করতে চাই। সহজভাবে বললে, খেলার সাথে রাজনীতি না মেশালে আমার ভাত হজম হয় না।

শিবিরের রগ কাটা উপেক্ষা করে মাঠে সক্রিয় থাকা, কিংবা গণজাগরণের প্রতিটা দিন অগণিত মানুষের মাঝে নির্ঘুম রাত কাটানোর মতো দেশপ্রেমিক নই। তবে জামায়াতি প্রবৃত্তির অপরাধে রক্তের বন্ধনকে হালকা করে ফেলার মনোভাব ধারণ করি, একসাথে বেড়ে ওঠা মানুষদেরকে দূরে ঠেলে কখনও না দেখা অনলাইনে সমমনা মানুষকে বরং আপন মনে হয়।

নিজেকে দেশপ্রেমিক দাবি করি না, কিন্তু কোথায় যেন একটা তাড়না বোধ করি।

ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস প্রভৃতি দিবসগুলা এখন খুব চাকচিক্যের সাথে উদযাপন হয়। সরকারের ব্যয়ক্ষমতা বেড়েছে, মানুষেরও। ফেসবুকে প্রফাইল পিক বদলানোর ইভেন্ট হয়, জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ার ইভেন্ট হয়। হ্যাশট্যাগের বিষ্ফোরণে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর সকল শত্রু ছিন্নভিন্ন হয়। দেখতে ভালই লাগে যে জীবনযাপনের পাশাপাশি প্রযুক্তি দেশপ্রেমকেও সহজ করে দিয়েছে।

গাড়িতে-বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা লাগানো, দেশাত্মবোধক গান-কবিতা শেয়ার দেওয়া, রাষ্ট্রীয় দিবস উদযাপনের কারনিভ্যালে সেলফি তোলা – এসবই মানতে পারতাম, যদি কারনিভ্যালে আগত পর্যটকরা ইতিহাসটাকেও একটু বুকে ধারণ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস “রাজনীতিকরণ” হয়েছে, সরকারবদলের সাথে সাথে পাঠ্যপুস্তক বদলানোতে আপনে “কনফিউজড” হয়ে গেছেন – এ ধরণের হাউকাউ আপনার প্রদর্শিত দেশপ্রেমের সাথে যায় না। হয়ত আমারই ভুল, দেশপ্রেম প্রদর্শনের কারনিভ্যাল স্পিরিটের সাথে হয়ত ইতিহাস ও রাজনীতিসচেতনতা মানানসই নয়। সারা বছর যাদেরকে “ইতিহাস ভুলে সামনে আগাও” ফতোয়া মাড়াতে দেখি, জামায়াতবান্ধবদের সাথে ভারসিটি কানেকশন-পাতানো ভাই-বিজ্ঞানপ্রেমী-কবিসাহিত্যিক-ধর্মবেত্তা প্রভৃতি দোহাই দিয়ে একই প্লাটফর্মে সহাবস্থান করতে দেখি, ছাগু পেইজের যাবতীয় গুজব ও “জাফর ইকবাল আর শাহবাগীরা এখন কুথায়” মার্কা কনটেন্ট ছড়াইতে দেখি, রাষ্ট্রীয় দিবসগুলাতে তাদের জাতীয়তাবাদী আহ্লাদ দেখলে বিবমিষা হয়। আপনি নিজেকে একটা কমিউনিটির সদস্য ভাবতাছেন কিন্তু সেই কমিউনিটিটা ইতিহাসের পরিক্রমায় কীভাবে উদ্ভূত হলো তার সম্পর্কে আপনার বিন্দুমাত্র ধারণা নাই, পাঠ্যপুস্তকের বাইরে পদার্পণের তীব্র অনীহা থেকে আপনি কথায় কথায় ইতিহাস বিষয়ে “কনফিউজড” হয়ে যান – এ ধরণের মনোবৃত্তি নিয়ে জাতীয়তাবাদী আহ্লাদ করাটা আমার কাছে তীব্র আপত্তিকর ঠেকে।

হয়ত মনে হচ্ছে আমি আরেকজনের ব্যক্তিগত গণ্ডিতে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছি, দেশপ্রেমের “সহিহ” প্রকাশভঙ্গি নিয়ে মোড়লগিরি করছি। দেশপ্রেমের হয়ত কোনও “সহিহ” প্রকাশভঙ্গি নেই, মারদাঙ্গা একটিভিজম না করেও ব্যক্তির মাঝে দেশপ্রেমের কিছুটা নির্যাস থাকতে পারে। তবে একমাত্র সহীহ প্রকাশভঙ্গি না থাকলেও কিছু ব্যাপার নির্দিষ্টভাবেই অগ্রহণযোগ্য। যেমন – একটা মানুষ নামাজকালাম না করেও খোদাভীরু হতে পারে, কিন্তু যেই লোক মসজিদে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বায়ূদূষণ ও কোলাহল করে বেড়ায় তাকে সেকুলার মানদন্ডেও ভদ্রলোক আখ্যা দেওয়া যায় না। রাষ্ট্রীয় দিবসগুলাকে কারনিভ্যালে রুপান্তর করা মানুষগুলোকে আমার এই কল্পিত অবমাননাকারীর প্রতিবিম্ব মনে হয়।

রাজনীতিবহির্ভূত, ইতিহাস-অচেতন দেশপ্রেম একটা অমূলক ধারণা। এই উদ্ভট ধারণাটির অবধারিত পরিণতি হলো একদিকে রাষ্ট্রীয় দিবসে হইহল্লা করা, আরেকদিকে মুক্তিযুদ্ধে নৃশংসতার মাত্রা কিংবা জামায়াতবান্ধবদের ব্যক্তিগত জীবনে-শিক্ষাজীবনে-কর্মজীবনে বর্জন করার প্রশ্নে সক্রেটিস বনে যাওয়া। জামায়াতিদের সবক্ষেত্রে বর্জন করা(বিশেষ করে পারিবারিক মণ্ডলে, রক্তের বন্ধনের প্রতি মানুষের দুর্বলতাকে অস্বীকার করা অনুচিত হবে) হয়ত সম্ভব হয়ে উঠে না, কিন্তু জামায়াতিদের বর্জন করার ব্যাপারে অন্তত নীতিগতভাবে দ্বিমত থাকা উচিত নয়। অরাজনৈতিক, ইতিহাসমূর্খ ব্যক্তির ন্যায় ফাঁপা কলসিতেই মুক্তিযুদ্ধপ্রীতি ও শুয়োরের সাথে সহবাসের এরুপ পরস্পরবিরোধী অবভাস সহাবস্থান করতে সক্ষম হয়।

প্রোফাইল পিকচার বদল আর বিশ্বরেকর্ড গড়ার এই কালে নাহয় আমরা একটা ভিন্ন প্রত্যয় করি – “এখন থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করার চেষ্টা করব”। কাজটা খুব কঠিন না; মূলধারা ’৭১ কিংবা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড:ফ্যাক্টস এন্ড ডকুমেন্টস জাতীয় বইয়ের গ্রন্থপুঞ্জি ঘাঁটলেই ইতিহাসের খোঁজে পথের সন্ধান মিলবে। ইতিহাস ও রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্কেও বহু দলিলের হদিস মিলে। সদিচ্ছাটাই মুখ্য।

মানুষের বেসিকটা আগে ঠিক হোক, তারপর প্রকাশভঙ্গির বৈচিত্র্যে কিংবা হুজুগের জোয়ারে কে কোথায় ভেসে গেল তাতে কারও কিছু যায় আসবে না।


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিমু এর ছবি

আমার মনে হয়, মানুষের মনে এখন একটা "বাদ পড়ে যাওয়া"র ভয় কাজ করে। বেঙ্গল মিউজিক ফেস্টিভ্যালে লোকে রাত জেগে হুমড়ি খেয়ে ঠ্যালাঠেলি করে সেলফি পোস্টে ব্যস্ত থাকে যে কারণে, দিবসভিত্তিক দেশপ্রেম-প্রকাশের-হুজুগটার কারণও একই, চলমান আলোচ্য থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা। মানুষ এখন তার সহচরদের মনোযোগের কাঙাল। বিজয় দিবস এখানে অনেক প্রসঙ্গের ভিড়ে আরেকটা প্রসঙ্গ, যেটাকে ঘিরে নিজেকে আরেকটু জাহির করা যায়।

এটা যদি আগামী কয়েক বছরে সেরে যায়, তাহলে ভালো। আর যদি একটা জনপদের হিস্টিরিয়া হয়ে ঘাড়ে চেপে বসে, তাহলে সমস্যা।

আমাদের মতো কোটি কোটি মানুষ নিয়েই দেশ। একটা ভালো বই পেলে নিজে পড়ুন, বন্ধুদের পড়ান, একটা ভালো গান শুনলে বন্ধুদের শুনতে দিন, একটা ভালো সিনেমা দেখলে আরো কয়েকজনকে দেখতে বলুন, একটা ভালো কবিতা পড়লে প্রিয়জনকে ফোন করে পড়ে শোনান। দেশ ভালো হয় তার মানুষ দিয়ে। শান্তিকালীন দেশপ্রেম মানে সুন্দরের সন্ধান আর প্রসার।

আমাদের সবার উদ্দেশে: গত এক বছরে সুন্দর কী সৃষ্টি করেছেন, ভাবুন। কোনো গান, কোনো কবিতা, কোনো ছবি, কোনো বিচ্ছিন্ন কথা? যদি মৌলিক কিছু করে না থাকেন, আপনার সম্বল যদি হয়ে থাকে শুধু আমি-আমি-আমি, তাহলে আপনি ভুল পথে আছেন।

ধুসর জলছবি এর ছবি

গুরু গুরু

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

কী সুন্দর করে বললেন!

চলুক

তিথীডোর এর ছবি

চলুক
পাঁচ তারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই লেখাটা ঠিক আছে চলুক চলুক চলুক

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

তানিম এহসান এর ছবি

মানুষের বেসিকটা আগে ঠিক হোক, তারপর প্রকাশভঙ্গীর বৈচিত্র্যে কিংবা হুজুগের জোয়াড়ে কে কোথায় ভেসে গেল তাতে কারও কিছু যায় আসবে না।

চলুক চলুক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মেঘলা মানুষ এর ছবি

কী জানি! দেশের জন্য সত্যি কিছু করতে পেরেছি/পারব কী না?

বেচারা দেশটার ভালো দেখার জন্য তো আপনার-আমার-আমাদের মত নাগরিক ছাড়া আর কেউ নেই।

মাসুদ সজীব এর ছবি

হুজুগের জোয়ারে এখন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বুদ্ধিজীবি দিবস ফলাও করে পালন করা হয় আর ফেসবুক ভরে যায় জাতীয় পতাকা আর বিজয়ের শুভেচ্ছায়। আমি এগুলোর ঠিক বিরোধী না, যার যেভাবে ইচ্ছে সে সেভাবে তার আবেগ-ভালোবাসা-অনুভূতি প্রকাশ করবে। তাহলে প্রশ্ন হলো বিষয়টা হুজগে বলা হলো কেন?

আবেগ আর দেশপ্রেম প্রকাশের খবু কম জায়গায় আমি রণাঙ্গনের ৭১ কে দেখেছি! বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বিনিময় হবে, রাস্তা বন্ধ করে র‌্যালি-আলোচনা হবে, কার কতবড় অবদান আলোচনা হবে অথচ সেখানে পরাজিত পাপিস্থানের কথা উঠে আসবে না, তাদের বর্বতা-নিষ্ঠুরতা-হত্যাযজ্ঞ আলোচিত হবে না, রাজাকারদের প্রতি ঘৃনা জানানো হবে না, এ কেমন কথা?

কে বা কারা রাজাকারদের বিচার বন্ধে ইনডিমিনটি আইন করেছিলো, কে তাদেরকে আবার দেশে ফেরত এনে পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করেছিলো, কারা তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলো.. এ আলোচনাগুলো না হলে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বিনিময় আর বিজয় দিবস পালন নেহাৎ একটি আনুষ্ঠানিকতা হয়ে যায়। পাপিস্থান-মুক্তিযুদ্ধ-রাজাকারদের ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করলে কেউ আওয়ামিলীগার হয়ে যায় না। বরং নিরপেক্ষতার নাম করে এগুলো আলোচনা না করা মানে মানুষকে সঠিক ইতিহাস থেকে দূরে রাখা! আর সেই ইতিহাস থেকে দূরে থেকে আনুষ্ঠনিকতার উৎসব চলেছে এখন সারাদেশে এমনকি ফেসবুকে।তাই দিবসগুলো পালন এখন হুজুগে হয়ে ওঠছে দিনে দিনে!

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

x

লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাজার অর্থনীতি মানুষকে durables-এর চেয়ে consumable-এর দিকে বেশি ধাবিত করে। এই প্রক্রিয়ায় মানুষের durables ক্রয়ের ক্ষমতাকে ক্রমাগত হ্রাস করা হয় বলে কিছু দিন পর পর এক একটা হাইপ তৈরি করা হয় বা consumable-কে নতুন আঙ্গিকে হাজির করা হয়। উপরে হিমুর বলা বাদ পড়ে যাবার ভয়টা ঐ হাইপের অংশ। এই চক্রব্যুহ থেকে মানুষ সহজে বের হতে পারবে না। তাকে বের হতে দেয়া হবে না।

আমি ব্যক্তিগতভাবে ইতিহাসের কিছু ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীয়তায় বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি এশিয়ায় তার নিজের ফর্মে রেনেসাঁ হওয়াটা আবশ্যক। ব্যক্তিগত জীবন দর্শন আর যাপন পদ্ধতি থেকে অনেক অদরকারী জিনিস ঝেঁটিয়ে বিদায় করার জন্য রেনেসাঁর বিকল্প নেই। আর ব্যক্তি জীবনে (ব্যষ্টিক) পরিবর্তন আসলে সামাজিক জীবনে (সামষ্টিক) জীবনে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।

একইভাবে প্রযুক্তির বর্তমান চেহারাতে এশিয়াতে শিল্প বিপ্লব, বুর্জোয়াঁ গণতান্ত্রিক বিপ্লব এগুলোও আবশ্যক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাহসিন রেজা এর ছবি

বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করার চেষ্টা করব.......

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

শাব্দিক এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নাশতারান এর ছবি

১) "শিবিরের রগ কাটা উপেক্ষা করে মাঠে সক্রিয় থাকা" অংশটা বুঝতে পারিনি। কিছু একটা মিস করে গেছি মনে হয়।

২) পড়ালেখা কঠিন কাজ। টাকা দিয়ে বিনোদন কেনা সে তুলনায় অনেক সহজ। তাছাড়া আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত অর্থকরী প্রশিক্ষণব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় প্রশিক্ষিত মানুষ চিন্তাভাবনার থেকে চোখ বুঁজে জীবনের রস আস্বাদনে আগ্রহী হবে এটাই সম্ভবত বাস্তবতা। যে দেশে জন্মযুদ্ধের পরে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য বিয়াল্লিশ বছর অপেক্ষা করতে হয়, যে স্বাধীন দেশের সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে যুদ্ধাপরাধীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ থাকে সেদেশের অন্তত দুটি প্রজন্ম ভীষণ গোলমেলে হবে এটাই কি স্বাভাবিক নয়? প্রযুক্তির কল্যাণে বরং তরুণ প্রজন্ম চেতনার একাত্মতাটুকু অনুভব করছে, নিজেদের ভাবনা ঝালিয়ে নিতে পারছে। ভবিষ্যত নিয়ে এখনো আশাবাদী হওয়ার ইচ্ছা রাখি।

৩) যেকোনো ধরনের সহজ রেকর্ড তৈরি করে বিশ্বদরবারে নাম তালিকাবদ্ধ করার চেষ্টার সাথে সেলফিঝড় তুলে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টার মধ্যে বিশেষ পার্থক্য পাই নাই। দুটোই মনোযোগ টানার কাঙাল প্রচেষ্টা। একটা সামষ্টিক, আরেকটা ব্যক্তিগত। কারণ সম্ভবত একটাই- নিজের উপর, নিজেদের উপর অনাস্থা। নিজেকে, নিজের শেকড়কে না জানলে আস্থার ঘাটতি হবে বৈকি!

[কিছু বানান আর টাইপোর তালিকা দিচ্ছি। চাইলে দেখতে পারেন।]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পৃথ্বী এর ছবি

বানানগুলা সংশোধন করেছি, ধন্যবাদ চলুক

১) "শিবিরের রগ কাটা উপেক্ষা করে মাঠে সক্রিয় থাকা" অংশটা বুঝতে পারিনি। কিছু একটা মিস করে গেছি মনে হয়।

গণজাগরণের সময় অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে মঞ্চে অবস্থান করেছিল, সিলেটে জগতজ্যোতি খুন হয়েছেন, বুয়েটের মেকানিক্যালের এক ছাত্র তো কোপ খেয়ে অর্ধেক হয়ে মারাই গিয়েছে, বুয়েট ছাত্রলীগের এক কর্মী ঢাকার বাইরে শিবির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে। একটিভিজম ও ছাত্ররাজনীতি অনেকেই করে, কিন্তু শিবিরের ক্রসহেয়ারে পড়ার মত কাজ যারা দুঃসাহসের সাথে করে যাচ্ছে তাদের কথা বললাম।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।