ফ্রস্ট/নিক্সন

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০২/২০০৯ - ১২:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

smallঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে বানানো সিনেমাগুলোর প্রতি বরাবরই আমার আলাদা একটা আগ্রহ কাজ করে, কারণ আমার কাছে মনে হয় এই সিনেমাগুলো বানানো তুলনামূলকভাবে অনেক কঠিন, এবং পরিশ্রমসাধ্যও বটে। কাহিনী নিয়ে প্রচুর গবেষণা করতে হয়, যত্নবান হতে হয় মূল ঘটনাপ্রবাহের প্রতি, নির্ভুলতা ও যথার্থতা বজায় রাখতে সচেষ্ট তো হতে হয়ই। চাইলেই চটকদার কোনো টুইস্ট যোগ করে যেমন কাহিনীর মোড় ঘুরিয়ে দেয়া যায় না, তেমনি ইচ্ছামতন চোখ-ধাঁধানো স্পেশাল-ইফেক্টও যোগ করা যায় না।


আরেকটা ব্যাপার হলো, এই ঘটনাগুলো যেহেতু অনেক মানুষেরই জানা, তাই ঐতিহাসিক কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে বানানো দর্শকনন্দিত একটি সিনেমার চূড়ান্ত সাফল্যের মানদন্ড হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে এর কারিগরী দিক, অভিনয়, চিত্রনাট্য এবং নির্মাণশৈলী।

কিছুদিন আগে যখন ফ্রস্ট/নিক্সন দেখতে বসি, দেখার আগে এর সম্পর্কে তিনটি তথ্য জানতাম। প্রথমত– এটি ডেভিড ফ্রস্টরিচার্ড নিক্সনের ১৯৭৭ সালের আলোচিত সেই সাক্ষাৎকারকে মূল উপজীব্য করে বানানো, দ্বিতীয়ত– গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা, অস্কারে সাড়া ফেলার পাশাপাশি দর্শক-সমালোচকদের কাছ থেকেও অর্জন করেছে ভূয়সী প্রশংসা, এবং তৃতীয়ত– এর পরিচালক রন হাওয়ার্ড। পরিচালক রন হাওয়ার্ডের প্রথম যে সিনেমাটি দেখি, সেটি ফার অ্যান্ড অ্যাওয়ে। মুগ্ধতার শুরু সেখানেই। এরপর একে একে আরো দেখি অ্যাপোলো–১৩, র‌্যানসাম, আ বিউটিফুল মাইন্ড, দ্য মিসিং, সিন্ডারেলা ম্যান, দ্য দা ভিঞ্চি কোড। প্রায় প্রত্যেকটা ছবিতেই পরিচালক হিসাবে তাঁর দক্ষতার ছাপ সুস্পষ্ট। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি “ফ্রস্ট/নিক্সনে”ও। সিনেমাটি মূলত ফ্রস্ট ও নিক্সনের সাক্ষাৎকারকেন্দ্রিক হলেও সব ছাপিয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, সেটি ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারী

ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারী–সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:

আমেরিকার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে কলঙ্কজনক একটি অধ্যায়। উপর্যুপরি রাজনৈতিক কেলেঙ্কারীর ফলে সৃষ্ট চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাবলীর সূত্রপাত ১৯৭২ সালের ১৭ জুন, প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের শাসনামলে, যখন ওয়াশিংটনের ওয়াটারগেট অফিস কমপ্লেক্সে অবস্থিত ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির প্রধান কার্যালয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় পাঁচজনকে। পরবর্তীতে গ্রেফতারের তালিকায় নাম ওঠে সন্দেহভাজন আরো দুইজনের। তদন্তে নামে এফবিআই, সিনেট ওয়াটারগেট কমিটি, হাউজ জুডিশিয়ারী কমিটি, এবং প্রেস। তদন্ত শুরু হবার সাথে সাথেই "কেঁচো খুঁড়তে সাপ" বেরোবার মতো একের পর এক বের হতে থাকে অবিশ্বাস্য ও নজিরবিহীন সব তথ্য। জানা যায়, ওয়াটারগেট কমপ্লেক্সে সেই অনুপ্রবেশ ছিল নিক্সন ও তাঁর সহযোগীদের দ্বারা সংঘটিত অসংখ্য অবৈধ কার্যকলাপের ক্ষুদ্র একটি অংশমাত্র, বরং তাঁর প্রচ্ছন্ন সম্মতিতে আরো ব্যাপক আকারে অপরাধ ও আইন লঙ্ঘনের সন্ধান পাওয়া যায়। জানা যায় তাঁর প্রেসিডেন্ট পদবলের অপব্যবহার করে আইনি সুশাসন ব্যাহত করার চেষ্টার কথা। ঘটনার ছয় দিনের মাথায় নিক্সন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে সব কুকীর্তি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু তা আর সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। দীর্ঘ দুই বছর ধরে নিক্সনের বিরূদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের পক্ষে জমা হতে থাকে স্বাক্ষ্য-প্রমাণ। মুখ খোলেন জড়িত অনেকেই। দেশ জুড়ে তৈরি হয় গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতি তীব্র অবিশ্বাস ও অনাস্থা, যার আঁচ শুধু আমেরিকাতেই নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় তুমুল বিতর্ক। এর জের ধরে এক পর্যায়ে, ১৯৭৪ সালের ৯ আগস্ট, নিক্সনকে আমেরিকার ইতিহাসের একমাত্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বেচ্ছায় পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। নিক্সনের উত্তরসূরী, তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর নিক্সনকে তাঁর বিরূদ্ধে আনীত সমস্ত অভিযোগ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রদান করেন। গুরুতর অপরাধ করেও নিক্সনকে শাস্তি পেতে না হওয়ায় এই সিদ্ধান্তে জনমনে অসন্তোষ রয়েই যায়। আর নিক্সনও তাঁর বিরূদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই স্বীকার করেন না, এমনকি কৃতকর্মের জন্য দুঃখপ্রকাশও না।


ডেভিড ফ্রস্ট ছিলেন ব্রিটিশ টক শো হোস্ট। নিক্সন যখন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান, ফ্রস্ট তখন অস্ট্রেলিয়ায় টিভি শো নিয়ে ব্যস্ত। টেলিভিশনের পর্দায় বিদায়ী নিক্সনকে দেখামাত্রই ফ্রস্টের মাথায় অদ্ভুত এক চিন্তা খেলে যায়। সাফল্য ও খ্যাতির শীর্ষে থাকা প্লেবয় ইমেজধারী ফ্রস্ট সিদ্ধান্ত নেয় প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সাক্ষাৎকার নেয়ার। তাঁর সেসময়কার অবস্থান বিবেচনা করলে এটাকে বেশ দুঃসাহসী ও কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তই বলা চলে।

চিন্তা জাগতে পারে– এক কালের দুর্দান্ত প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ট, যিনি যথেষ্ট দাম্ভিকও বটে, কেন ফ্রস্টের মতো সামান্য একজন টক শো হোস্টের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হবেন। এর কারণ মূলত তিনটি। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের ক্ষেত্রে ফ্রস্টের অনভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তাঁর দুর্বলতার সুযোগ নেয়া, একই সাথে নিজের হারানো ভাবমূর্তি পুনরূদ্ধার করে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য অবস্থানে তুলে ধরা, এবং সাক্ষাৎকারের বিনিময়ে লোভনীয় অংকের অর্থলাভ করা।


সাক্ষাৎকারটিকে প্রত্যেকটি দেড় ঘন্টাব্যাপী মোট চারটি পর্বে ভাগ করা হয়, যার সর্বশেষ পর্বে রাখা হয় ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারী। বাকি তিনটি পর্ব মূলত অভ্যন্তরীন কার্যকলাপ, বৈদেশিক নীতিমালা ও নিক্সনের আত্মজীবনীতে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। শেষ পর্বটি নিক্সনের জন্য ছিল সবচেয়ে স্পর্শকাতর, তাই বাকি তিনটি পর্বে তিনি ফ্রস্টের উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপনের মাধ্যমে নিজেকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।

উত্তেজনায় ফুটতে থাকা ফ্রস্ট তাঁর প্রযোজক জন বার্টকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকে সমান তালে। তথ্যগত গবেষণার কাজে সার্বক্ষণিক সহায়তা করার জন্য পাবলিক রেডিওর ওয়াশিংটন প্রতিনিধি বব জেলনিক এবং নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিম রেসটনকে নিয়োগ করা হয়। দলে আরো যোগ হয় সুন্দরী ক্যারোলাইন কুশিং।


সাক্ষাৎকার শুরু হওয়ার আগেই অর্থসংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় ফ্রস্টকে। বিভিন্ন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বিমুখ করে তাঁকে। তবে ভেঙে পড়ে না ফ্রস্ট। সব প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই একসময় ঘনিয়ে আসে সাক্ষাৎকার শুরুর দিনটি। প্রথম প্রশ্নের জবাবেই ফ্রস্টকে নিক্সন বুঝিয়ে দেন তিনি কোন ধাতুতে গড়া। একের পর এক প্রশ্নের মোকাবিলা করতে থাকেন দারুন আত্মবিশ্বাসের সাথে। এক পর্যায়ে ফ্রস্টের সঙ্গীদের মনে হতে থাকে সমস্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে যাচ্ছে। ফাটল ধরে বিশ্বাসে। কিন্তু ফ্রস্ট তাঁর হার-না-মানা মনোভাব বজায় রেখে লড়ে যান শেষ পর্যন্ত। উপভোগ্য এক দ্বৈরথ শেষে, অভূতপূর্ব এক দৃশ্যের অবতারণা হয়, ঘটে যায় এমন এক ঘটনা যার জন্য প্রস্তুত ছিল না অনেকেই।

রন হাওয়ার্ডের পরিচালনা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সিনেমাটি আগাগোড়াই গতিশীল, আর শেষের দিকে সৃষ্টি হয় টানটান উত্তেজনার, পরিণতি জানা সত্ত্বেও চোখ সরানো যায় না, যা পরিচালকের দক্ষতাই আরেকবার প্রমাণ করে। সিনেমার সবচেয়ে দুর্দান্ত দিক হলো অভিনেতাদের অভিনয়। বিশেষ করে নিক্সনের চরিত্রে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা অবিস্মরণীয় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। নিক্সনের সহজাত বলিষ্ঠতা, কাঠিন্য, আভিজাত্য, একরোখাভাব, এমনকি অনুশোচনা এবং অপরাধবোধও দারুন অভিব্যক্তিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। এর আগে পিটার মরগ্যানের লেখা মঞ্চ নাটক "ফ্রস্ট/নিক্সনে" (পরবর্তীতে এটাকেই চলচ্চিত্ররূপ দেন তিনি) নিক্সনের চরিত্রে অভিনয় করে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা জিতে নেন সম্মানজনক টনি অ্যাওয়ার্ড। ধারণা করা হয়, এবার অস্কারেও সেরা অভিনেতার পুরস্কার জেতার জোর দাবিদার হবেন তিনি। ফ্রস্টের চরিত্রে মাইকেল শীন যথারীতি দারুন অভিনয় করেছেন, কিন্তু অনেক সময়ই মনে হয়েছে যেন তিনি দ্য কুইনের ব্রিটিশ প্রেসিডেন্ট টনি ব্লেয়ারের চরিত্রের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। অন্যান্য চরিত্রগুলোতে স্যাম রকওয়েল, কেভিন বেকন, ম্যাথিউ ম্যাকফেইডেন, অলিভার প্ল্যাট, রেবেকা হল মনে রাখার মতো অভিনয় করেছেন। চমৎকার সংগীতায়োজনের কাজ করেছেন হান্স জিমার। কারিগরী দিক বিবেচনা করলে যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন ও সফল একটি সিনেমা বলা যায় একে।

সিনেমাটি অসম্ভব উপভোগ করেছি। সিনেমাটিতে বেশ কিছু অসংগতি বা ত্রুটি বাদ দিলে, সব মিলিয়ে বলা যায়, ফ্রস্ট/নিক্সন নিঃসন্দেহে গত বছরের সেরা সিনেমাগুলোর অন্যতম, এবং আশা করা যায় কেউই সিনেমাটি দেখে হতাশ হবেন না।




টরেন্ট ব্যবহার করে কেউ সিনেমাটা ডাউনলোড করতে চাইলে, টরেন্ট পাবেন এখানে


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হাসি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দেখলাম এই সেদিনই। দুর্দান্ত লেগেছে। অভিনয়, নির্দেশনা দু'টোই দারুন ছিল। সুযোগ হলে সবার দেখা উচিত। ফ্রস্টকে অনেকটা ব্লেয়ারের মত লাগছিল আমার কাছেও। অবশ্য অত বড় রোল করার পর তা থেকে বেরিয়ে আসা দুষ্কর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

একমত। আর সে তো একবার না, দুইবার ব্লেয়ারের চরিত্রায়ণ করেছে এ পর্যন্ত। দ্য ডীল এবং দ্য কুইন। তাই ওঁর জন্য ব্লেয়ারের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসা আসলেই দুষ্কর।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

২০০৬ সালে পিটার মর্গান রচিত ফ্রস্ট-নিক্সন নাটকটি প্রথম মঞ্চায়িত হয়েছিল লন্ডনের ক্ষুদ্র ডনমার থিয়েটারে। ২৫০ লোকের পিচ্চি মঞ্চ, পিচ্চি স্টেজ। এখানেই স্যাম মেন্ডেস (পরে 'আমেরিকান বিউটি' খ্যাত) প্রথম নাট্য পরিচালক হিসাবে সুনাম করেছিলেন।

যাই হোক, সেই আড়াই বছর আগে সেপ্টেম্বরের এক শনিবার বিকেলে ফ্রস্ট-নিক্সন মঞ্চে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। অভিনয়ে এই মাইকেল শীন আর ফ্র্যাংক ল্যাঞ্জেলা। দর্শকদের থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে অসাধারণ এই দুই অভিনেতার বাকযুদ্ধের মত শিহরণ-জাগানো অনুভূতি জীবনে খুব বেশী হয়নি। নিঃসন্দেহে লন্ডনে আমার দেখা সেরা নাটকগুলোর অন্যতম। সেই আতিশয্যে একটা পোস্টও লিখেছিলাম বাসায় এসে - ব্যক্তিগত ব্লগের পুরান পাতা ঘেঁটে পেলাম।

পরিচালক রন হাওয়ার্ড এসেছিলেন একদিন নাটকটি দেখতে। দেখার পরপরই মর্গানের থেকে ফিল্মি রাইটস কিনে নেন। তার ফলশ্রুতি আজকের এই সিনেমা।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ কথাগুলো শেয়ার করার জন্য। আপনার ভাগ্যে রীতিমত ঈর্ষা হচ্ছে! আর ইতিহাসভিত্তিক সিনেমার চিত্রনাট্যের ব্যাপারে পিটার মরগ্যান তো বেশ দক্ষ মনে হচ্ছে। "ফ্রস্ট/নিক্সন" ছাড়াও "দ্য ডীল", "দ্য কুইন", "দ্য লাস্ট কিং অভ স্কটল্যান্ড" - সবগুলোর চিত্রনাট্য তো তাঁর লেখা।

"গুড নাইট অ্যান্ড গুড লাক", "ললিতা"তে আগে দেখেছি ফ্র্যাঙ্কের কাজ, কিন্তু সেভাবে নজরে পড়েনি। কিন্তু এই সিনেমায় ওঁর অভিনয় দেখে আসলেই ভাষা পাচ্ছি না।

আপনার পোস্টটা পড়লাম। ইংরেজিতেও তো আপনি দুর্দান্ত লেখেন! খুব ভাল লাগল।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

সিনেমা আমার এমনিতেই কম দেখা হয়। আপনার আলোচনা পড়ে সিনেমাটি দেখার লোভ জাগলো। সময় করে দেখে নিবো ক্ষণ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পান্থ'দা, এই সিনেমাটা অবশ্যই দেইখেন সময় করে। এই আবজাব রিভিউ পড়ে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না কী ভয়াবহরকম উপভোগ্য একটা সিনেমা এটা। লাগলে আমার কাছ থেকেও নিতে পারেন।

আলাভোলা এর ছবি

চলুক

প্রহরীদা, যত দিন যাচ্ছে ততই আপনার লেখা আরো ভাল হচ্ছে।
সিনেমাটা দেখব। ধন্যবাদ।

===================
আয়রে ভোলা খেয়াল-খোলা
স্বপনদোলা নাচিয়ে আয়,
আয়রে পাগল আবোল তাবোল
মত্ত মাদল বাজিয়ে আয়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ ভোলু'দা। কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করলাম আপনার এই প্রশংসা, অনুপ্রেরণা। সিনেমাটা অবশ্যই দেখবেন, ভাল লাগবে আশা করি। ভাল থাকবেন।

কীর্তিনাশা এর ছবি

দেখতে হবে। বিশেষ করে এত দুর্দান্ত রিভিউ পড়ার পর তো কিছুতেই মিস করা যাবে না। চলুক

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অবশ্যই দেখবেন নাশু ভাই, দেখে পরে জানায়েন কেমন লাগল। পোস্টে যে টরেন্টের লিংকটা আছে, এটার প্রিন্ট বেশ ভাল। সাইজ ৮০০ মেগাবাইটের একটু বেশি। ডাউনলোড না করতে চাইলে, আমার কাছ থেকে নিয়েও দেখতে পারেন হাসি

ঝরাপাতা এর ছবি

রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ডি.এল. দিই দেখি।


নিজের ফুলদানীতে যারা পৃথিবীর সব ফুলকে আঁটাতে চায় তারা মুদি; কবি নয়। কবির কাজ ফুল ফুটিয়ে যাওয়া তার চলার পথে পথে। সে ফুল কাকে গন্ধ দিলো, কার খোঁপায় বা ফুলদানীতে উঠলো তা দেখা তার কাজ নয়।
___________________________ [বুদ্ধদেব গুহ]


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। আশা করি সিনেমাটা আপনার ভাল লাগবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ধারায়, বলা ভালো এই এক-ই কেলেঙ্কারী আরো একটি ছবি রয়েছে। অনেকে নিশ্চয় দেখেছেন, ডাস্টিন হফম্যান আর রবার্ট রেডফোর্ড এর 'অল দ্যা প্রেসিডেন্টস ম্যান', তবে সেখানে ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে ওয়াটারগেট সংক্রান্ত মুল ঘটনা উদ্ধারের জন্যে দুই সাংবাদিকের জবানীতে, নিক্সনের দিক থেকে এর কোনো ঘটনা ফূটিয়ে তোলা হয়নি। আপনার পোস্ট চমতকার লাগলো, মনে হচ্ছে এই ছবিটা দেখে ওয়াটারগেট সম্পর্কে আরো কিছু বিস্তারিত জানবো।
(শব্দশিল্পী)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

"অল দ্য প্রেসিডেন্ট'স মেন" সিনেমাটাও খুব ভাল। নিক্সনের জীবনের উপর ভিত্তি করে বানানো আরেকটা সিনেমা আছে, অলিভার স্টোনের – নিক্সন। এইটা অবশ্য দেখিনি।

হ্যাঁ, সিনেমাটা দেখলে ওয়াটারগেট স্ক্যান্ডাল সম্পর্কে আরো জানতে পারবেন। পাশাপাশি ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কম্বোডিয়ায় আক্রমণ, খেমার রুঝের গণহত্যা, ইত্যাদি অনেক বিষয়েও জানতে পারবেন কিছুটা।

ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।

খেকশিয়াল এর ছবি

এইটা আমার লিস্ট এ আছে, আগে দেইখা লই পরে পোস্ট পরুম খাইছে

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পড়েন, না পড়েন, পরে কিন্তু অবশ্যই জানায়েন কেমন লাগল সিনেমাটা। তবে পোস্টটা পড়লেও মনে হয় খুব একটা মজা নষ্ট হতো না সিনেমার। কারণ কাহিনী নিয়ে তেমন একটা বলিনি কিছু, আর এমনিতেও তো এই কাহিনী অনেকেরই জানা খাইছে

অনিকেত এর ছবি

প্রহরী বস,

দুর্দান্ত লেখা দিয়েছ একটা! অনেকদিন থেকে ভাবছিলাম ছবিটা দেখব। তোমার এই ফাটাফাটি রিভিউ আমার কৌতুহল আরো উস্কে দিল।

বস, সত্যি বলছি, তোমার রিভিউ খুব ভাল হয়েছে।খুব ভাল!

ভাল থেকো-----

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সিনেমা দেখেছি/দেখি প্রচুর, তবে জীবনের প্রথম রিভিউ-জাতীয় কোন লেখা লিখলাম। জানি না আদৌ কতটা কী হয়েছে। আপনার মন্তব্যে অ-নে-ক ভাল লাগল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। দেখবেন সিনেমাটা। আশা করি ভাল লাগবে অবশ্যই।

আপনিও ভাল থাকবেন, অনিকেত'দা।

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

দেখিনাই মুভিটা দেখা লাগবো মনে হইতাসে ।
রিভিউটা দারুন লিখসেন বিডিআর ভাই !
-----------------------------

--------------------------------------------------------

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সময় করে দেইখা ফেলেন, ভাল্লাগবে আশা করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ, বাচ্চা ভূঁত।

তানবীরা এর ছবি

মানুষের জীবনে কতো সুখ, তিন ঘন্টা সময় কতো কাজে ব্যয় করতে পারে। আমিও জীবনে সুখ আনার চেষ্টা করবো, ফিলিম দেখার চেষ্টা করবো। স্লামডগটাও খারাপ হয় নাই, সেদিন দেখলাম ঃ-}

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আসলেই, সিনেমা দেখার চেয়ে সুখ আর নাই। আপনি তো মনে হয় হিন্দি সিনেমা দেখতে দেখতে ধরেই নিসেন যে- সিনেমা মানেই তিন ঘন্টার মামলা। এই সিনেমা কিন্তু দুই ঘন্টার খাইছে

দেখেন, বেশি বেশি ফিলিম দেখেন, সুখী হইতে পারবেন। স্লামডগের কথা আর বইলেন না, ভাল ছবি মানলাম, কিন্তু এত মাতামাতি দেখে মহাবিরক্ত। আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে এইটারে অস্কারেই পাঠাতাম না দেঁতো হাসি

আপনার "মাসাকালি"র খবর কী? শুভকামান থাকল।

তানবীরা এর ছবি

শুভকামান ????

জিনিসটা কি?

আমার লেগটা পাওয়া মাত্র পুল করা হয়, আমারে কেউ কেনো দেখতে পারে না?

যা লইয়া কথা কইবা কও, কিন্তু হিন্দী ফিলিমে হাত দিবা না কইলাম, কিন্তু

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

শুভকামান বোঝেন নাই? কীর্তিনাশা ভাইয়ের এই এক টাইপো যে কী হিট হয়ে গেছে! কেন, দেখেন নাই নানান পোস্টে সবাই আজকাল শুভকামনার বদলে শুভকামান দেয়! খাইছে

যারা আপনারে দেখতে পারে না, তারা মনে হয় অন্ধ চোখ টিপি

ওরে! হিন্দী ফিলিমের জন্য আপনার ভালোবাসা দেইখা ডরাইলাম পুরা! দেঁতো হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

সিনেমাটা দেখলাম মাত্র। অসাধারণ লাগল।

আপনার রিভিউ যে দারুন হয়েছে সেটা তো আগেই বলেছি।

বেশি কিছু লিখতে পারলাম না। লিনাক্সে আছি। প্রভাতে লিখতে কষ্ট।

=============================

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

প্রভাতে লিখতে কষ্ট হলে নিশীথেই না হয় লিখো চোখ টিপি

হুমম, ধন্যবাদ। হাসি

মধ্যসমুদ্রের কোলে এর ছবি

ভালো লাগলো আপনার মুভি রিভিউ।ফ্রাঙ্ক নি:সন্দেহে যোগ্য দাবীদার ছিলেন অস্কারের।
কিন্তু যখন দেখি স্লামডগের ঝুড়িতে গাদাগাদি পুরস্কার তখন খুব একটা আফসোস করি না।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে পুরনো লেখাটা খুঁজে বের করে পড়ার জন্য।

স্লামডগের এতো এতো অস্কার জেতাটা আমার কাছে কেন যেন একদমই "যোগ্য" মনে হয়নি।

s-s এর ছবি

ছবিটা দেখলাম, ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা সুপার্ব!

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

একমত।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। হাসি

আলাভোলা এর ছবি

দেখলাম। অসাধারণ লাগলো।
ছোট ভাই সিনেমা দেখার সময় বলছিলো ইনি (ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা) সত্যিকারের নিক্সন কিনা!!!

আগেও মনে হয় বলছিলাম, আবারো বলি, আপনার রিভিউটা ক্লাস হইছে। চলুক

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সত্যি বলতে, সিনেমাটা দেখার সময় আমারও ঠিক সেরকমই অনুভূতি হচ্ছিল, যেমনটা আপনার ভাইয়ের হইসিল। কী অসাধারণ অভিনয়টাই না করসে!

আসলে আমার নিজের কাছেও মনে হয় নাই রিভিউ(!)টা তেমন ভাল কিছু একটা হইসে। তারপরেও আপনার যে ভাল্লাগসে, এইটা জেনে খুব খুশি হইলাম আর প্রশংসায় কিঞ্চিতের চেয়ে একটু বেশিই লজ্জা পাইলাম লইজ্জা লাগে

ভাল থাকবেন। আপনার গুপী-বাঘার সিরিজটা চালায়া যায়েন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।