আমাদের চারপাশে আমরা যা কিছু দেখি, যা কিছু শুনি, অথবা যা কিছু অনুভব করি, তার ঠিক কতখানি সত্য? কতখানি বাস্তব? আমাদের ইন্দ্রিয় যে সবসময় বাস্তব সত্যটারই প্রতিফলন ঘটায়, জমাট আত্মবিশ্বাসের সাথে এমন দাবি কি আমরা কখনও করতে পারি? দাবি যদি করিও, তার স্বপক্ষে আমাদের আদৌ কি কোনো যুক্তি-প্রমাণ আছে? আর অকাট্য যুক্তি-প্রমাণ যদি থেকেও থাকে, অন্যদের কাছে তা আসলে ঠিক কতখানি গ্রহণযোগ্য? যদি না হয়, সেক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ করার জন্য, পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপোড়েন উপেক্ষা করে আমরা কতখানি অগ্রসর হতে প্রস্তুত আছি? হঠাৎ করে যদি কোনোদিন শুনতে হয় যে, আমরা যা কিছু দেখছি-শুনছি-অনুভব করছি, তার সবই ভ্রান্ত-কুহেলিকা, তাহলে আমাদের মানসিক অবস্থাটা কী হবে? কেমনই বা হবে আমাদের প্রতিক্রিয়া? কাকে বিশ্বাস করব আমরা? নিজেকে, নাকি অনবরত উল্টোটা বিশ্বাস করাতে চেষ্টারত আমাদের চারপাশের মানুষজনকে? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা– বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচালে কেমন হবে চেনা সম্পর্কগুলোর গাঁথুনি?
কোনটা সত্য, কোনটা বাস্তব, কিংবা এর বিপরীতটাই বা কোনটা – এমন সব আপেক্ষিকতার উর্দ্ধে গিয়ে উপরের প্রশ্নগুলো ও তার অনুসন্ধান নিয়ে, এবারের বইমেলায় আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন সৈয়দ দেলগীর। উন্মোচন করেছেন আমাদের সবার গহীনে লুকিয়ে থাকা এক অদেখা জগত, তাঁর 'অন্তস্থ পৃথিবী' উপন্যাসে, যেখানে নামটাই বলে দেয় অনেক কিছুই। 'সৈয়দ দেলগীর' নামটা অনেকের কাছেই অপরিচিত লাগতে পারে, তবে এই নামের আড়ালে থাকা মানুষটি আমাদের সবারই খুব পরিচিত, মিডিয়ার নিভৃতচারী মেধাবী ব্যক্তিত্ব এবং সচলায়তনের অন্যতম জনপ্রিয় সুলেখক– নজরুল ইসলাম, যার সরল গদ্য ও প্রাণখোলা লেখা বরাবরই মন জুগিয়ে আসছে সচলায়তনের সব পাঠকের।
ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদু বাস্তবময়তা। নিজের প্রথম উপন্যাসেই বিষয়বস্তু নির্বাচনে বেশ দক্ষতার ছাপ রেখেছেন সৈয়দ দেলগীর। গৎবাঁধা প্রচলিত প্রেমের সমীকরণে কাহিনীকে আবদ্ধ না করে, তিনি বাস্তব জগত ও স্বপ্ন জগতের দুর্দান্ত সহাবস্থান ঘটিয়েছেন পুরোপুরি ভিন্নধারার এই উপন্যাসটিতে। কাহিনী আবর্তিত হয়েছে প্রখ্যাত সমাজসেবী রেজওয়ানা তাহেরকে কেন্দ্র করে। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি উপলব্ধি করেন যে, তাঁর চারপাশের অতি পরিচিত পৃথিবীটা হঠাৎ করেই যেন বদলে গেছে আমূল, রঙে-রূপে-গন্ধে হয়ে উঠেছে একদম অবিশ্বাস্যরকম স্বপ্নীল। তিনি মনোমুগ্ধকর সব রঙের আধিক্য দেখতে পান তাঁকে ঘিরে, দেখতে পান শুধুই সৌন্দর্যের প্রাচুর্য। ময়লাভর্তি গাড়ি তাঁর চোখে ধরা দেয় বেলীফুলে পূর্ণ হয়ে। নোংরার মাঝেও তিনি পান ফুলের মিষ্টি গন্ধ। রাস্তায় বেরোলে দেখতে পান না দুর্বিষহ ট্র্যাফিক জ্যাম, শুনতে পান না কর্কশ হর্নের আওয়াজ। তারতম্যহীন তাঁর চিরচেনা সাদাকালো পৃথিবীটা বদলে গিয়ে পলকেই যেন চোখ-ধাঁধানো সব রঙে বর্ণিল হয়ে সেজে ওঠে, কেঁপে ওঠে মিষ্টি সুরের মুর্চ্ছনায়। কিন্তু তিনি যা দেখতে পান, তা আর কেউই দেখে না। তাঁর কথা বিশ্বাস করে না তাঁর অতি আপনজনেরাও। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাঁর মানসিক সুস্থতা, তৈরি হতে থাকে নানান দ্বন্দ্ব। এমনকি এই অদ্ভুত পরিবর্তনের ব্যাখ্যা মেলে না নামকরা সব ডাক্তারদের কাছেও। চোখের সামনে বদলে যেতে থাকে কাছের মানুষগুলো, কিন্তু বদলায় না রেজওয়ানা তাহেরের চারপাশে শ্বাসরূদ্ধকর সব রঙের খেলা।
কাহিনীটা সত্যিই চমৎকার। এতে বেশ নতুনত্ব আছে। শেষটাও খুবই চমকপ্রদ। অধিকাংশ পাঠকই কল্পনা করতে পারবে না এটা। তবে এ কথা বলতেই হবে, কাহিনীর ভিন্নতা বা চমৎকারিত্ব কিছু কিছু জায়গায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে চরিত্র রূপায়নের আপেক্ষিক দুর্বলতার কারণে। শুরু থেকেই মনে হয়েছে লেখায় তাড়াহুড়ার ছাপ ছিল সুস্পষ্ট। এটাও মনে হয়েছে যে, লেখক খুব তাড়াতাড়ি কাহিনীর গন্তব্যে পৌঁছুতে চেয়েছেন। এর ফলে চরিত্রগুলোর প্রতি যথাযোগ্য সুবিচার করা হয়নি বলা যেতে পারে। আরো পরিষ্কার করে বললে, অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেন চরিত্রগুলোর গভীরে প্রবেশ করলেন না, লেখকের বিরূদ্ধে এই অভিযোগ করার অবকাশ রয়েই যায়। স্বাভাবিকভাবেই একদম শুরু থেকেই রেজওয়ানা তাহেরের চারপাশের পৃথিবীটা বদলে যাওয়ার কথাই বলা হয়েছে খুব জোর দিয়ে। আর এই প্রবাহে, জাফর-জ্যোতি-জুঁই-মিথিলা – এই চরিত্রগুলোর সাথে লেখক একদমই সাদামাটাভাবে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন। এমনকি সবাই একই পরিবারের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও, শুরুর দিকে, রেজওয়ানা তাহেরের সাথে এদের সম্পর্কের পরিধি পরিমাপ না করতে পারার দরুন মনোযোগের একাংশ ব্যাহত হয় বেশ ভালভাবেই।
কাহিনী সম্পর্কে আগেই বলা হয়েছে, তবে আরেকটা ব্যাপার যোগ করা যেতে পারে তার সাথে, যেটা হলো– গতিময়তা, যার ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটো দিকই চোখে পড়েছে। সৈয়দ দেলগীরের জীবন্ত গদ্যের সুবাদে পড়তে গিয়ে কখনও একঘেয়েমিতে ভুগতে হয় না সত্যি। আগাগোড়াই চমৎকার লেগেছে পড়তে। বিশেষ করে 'জ্যোতির বাঘ হয়ে যেতে ইচ্ছা করা'র ব্যাপারটা খুবই দারুন লেগেছে। তবে সেইসঙ্গে এটাও বলা যেতে পারে– এক ঘটনা থেকে পরবর্তী ঘটনায় বেশ দ্রুততার সাথে লাফ দিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর ফলে সংলাপের বাইরে কাহিনী ডালপালা মেলার যথেষ্ট সুযোগ পায়নি। প্রাসঙ্গিক আরো বর্ণনা জুড়ে দিলে বা ঘটনার আরেকটু গভীরে ডুব দিলে, কাহিনী আরো পূর্ণতা পেত বলা যেতে পারে।
সৈয়দ দেলগীরের লেখার ঢং বরাবরই আকর্ষণীয়, ঈর্ষাজাগানিয়া। এর বাত্যয় ঘটেনি এখানেও। উপন্যাসটি আগাগোড়া সহজ ভাষায় লেখা। তবে অল্প কিছু জায়গায় বেশ নাটুকেপনা চোখে পড়েছে, ঘটনাবিন্যাসে ও সংলাপে। বেশ কিছু শব্দচয়ন তুলনামূলক দুর্বল লেগেছে। লেখায় ডটের (...) ব্যবহার বেশ চোখে পড়ার মতো। চোখে পড়েছে অসংখ্য বানান প্রমাদও। আশা করব, পরবর্তী মুদ্রনে এই প্রমাদগুলো ঠিক করা হবে। আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে বলতে চাই, কেউ হাসলেই 'হা হা হা হা' না লিখে কিছু জায়গায় বর্ণনার ছলে লিখলে, পুনরাবৃত্তিটা তেমন চোখে পড়ত না। আর উপন্যাসের কলেবর বেশ ছোট বলেই হয়ত 'আহ্', 'উফ্'-এর পুনরাবৃত্তিও চোখে পড়েছে বেশ। এসব ক্ষেত্রে চরিত্রগুলোর অনুভূতির একদম আক্ষরিক প্রকাশ ঘটানো হয়েছে বলে মনে হয়েছে।
সবকিছুর পরেও এ কথা না বললেই নয়– পুরো লেখাটাই আবেশিত হয়েছে অদ্ভুত এক জাদুবাস্তবময়তায়, যা মোহাবিষ্ট পাঠককে কখনও উৎকন্ঠায় ভোগাবে, কখনও তার কল্পনাকে নাড়া দেবে, দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য শেখাবে, হয়ত বা কখনও তাকে ভাবতে বাধ্য করবে তার চেনা জগত সম্পর্কে। আপেক্ষিকতার নিক্তিতে লেখক বাস্তবতা ও স্বপ্নময়তাকে মেপেছেন, এবং একই সাথে ভারসাম্যও রক্ষা করেছেন বেশ দক্ষতার সাথেই। আর এর কৃতিত্ব অবশ্যই তাঁর পাওনা, পুরোটাই।
তবে খুবই সংক্ষেপে পাঠ অনুভূতির কথা বলতে বললে বলব, খুবই আগ্রহের সাথে বইটা পড়েছি, উপভোগ করেছি এর কাহিনী বৈচিত্র্য, ঘটনাবিন্যাস এবং উপেক্ষণীয় সামান্য অতৃপ্তির কথা বাদ দিলে এটা যে আদ্যোপান্ত এক জমজমাট উপন্যাস, এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোনো অবকাশ নেই। সবাইকেই বইটি 'শুদ্ধস্বর' থেকে সংগ্রহ করে পড়তে অনুরোধ করব।
বইটির প্রচ্ছদ নিঃসন্দেহে চোখে পড়ার মতো। আসাদ আব্দুল্লাহর আলোকচিত্রে প্রচ্ছদের কাজ করেছেন লেখক নিজেই। চমৎকার মনকাড়া প্রচ্ছদের পাশাপাশি বইয়ের বাঁধাই, মুদ্রন ও অভ্যন্তরীন সজ্জা, সবকিছুই অত্যন্ত আকর্ষণীয়– যা অনেক বইয়ের ভিড়েও এই বইটিকে আলাদা একটা মাত্রা দিয়েছে বলা যেতে পারে। বইটির মূল্যের ব্যাপারে লেখক/প্রকাশকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বইয়ের ভেতরে ও উল্টো পিঠে দু'রকম মূল্য লেখা আছে, যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। ইতিমধ্যেই বইটি বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীতে এটি আরো জনপ্রিয়তা পাবে আশা করি, এবং সৈয়দ দেলগীরের কাছে প্রত্যাশা থাকবে এখন থেকে তিনি নিয়মিত আমাদের এরকম ব্যতিক্রমধর্মী ও চমৎকার সব লেখা উপহার দিবেন।
মন্তব্য
প্রহরীতো বড় হয়ে গেছে দেখছি। সাংবাদিকদের ঢং এ লেখা দিচ্ছে। একটু লেগ পুল করলাম, মাইন্ড খাইয়ো না আবার।
একজন প্রিয় সচলের বইয়ের রিভিউ পড়লাম আর একজন প্রিয় সচলের কছ থেকে, খুবই আনন্দের ব্যাপার। আসল বইটা পড়ে তবে বুঝতে পারব রিভিউ কেমন হয়েছে। কিন্তু পাচ তারা দিয়ে রাখলাম।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
খুব তো পিচ্চি-পিচ্চি করেন, দেখলেন তো কত্ত বড় হয়ে গেছি! এইবার তাহলে আপনার "প্রতিশ্রুতি" পূরণ করেন!
হা হা। মাইন্ড খাই নাই। তবে চান্স পাইলে আমিও আপনার পা ধরে পরে টানাটানি করব বলে দিলাম
আমার প্রথম বুক রিভিউতে একদম শুরুতেই খুব প্রিয় একজন সচলের মন্তব্য পেয়ে আমারও খুব ভাল লাগল। যদিও বই পড়লেই বুঝবেন রিভিউ ভাল হয়নি, কিন্তু তখন এই পাঁচ তারা আর ব্যাক করব না
বড়দের মত লেখা!
"আপনাকে বড় বলে বড় সে নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সে হয়"
লেখার ধরণ একটু বদলাবার চেষ্টা করে দেখলাম আর কী। ধন্যবাদ, "'বুড়া'দের মতো লেখা" না বলার জন্য।
প্রহরী বস, একেবারে বসের মত লেখা দিয়েছ।
নজু ভাইয়ের বই পড়তে পারার সুযোগ করে হবে জানিনা---কিন্তু তুমি যে বিশ্বস্ততার সাথে এবং নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিকোন থেকে এ সমালোচনা লিখেছ,তাতে করে--বইটা সম্পর্কে বেশ জমাট ধারনা পেলাম।
নজরুল ভাই আমাকে প্রতিনিয়ত আশ্চর্য করে চলেছেন। যখনই ভাবি---এই ব্যাটার সব কিছু জেনে ফেলেছি---ঠিক তখুনি একটা নতুন কিছু করে আমাকে ঘাবড়ে দেন। তার এই উপন্যাস প্রকাশ এ রকমই এক চমকপ্রদ ঘটনা।শুধু কী তাই---পুরা 'কোপাকুপি' টাইপের প্রচ্ছদ করেছেন! এক লোকের এত গুন থাকে কী করে??
নাহ নজরুল ভাই--আপনি আমাকে 'হতাশ' করলেন----
অনেক ধন্যবাদ অনিকেত'দা। বরাবরই অনুপ্রেরণা পাই আপনার কথায়।
নজরুল ভাই একজন মানুষ বটে! আপাদমস্তক প্রতিভায় ভরা! যতদূর জানি, সামনে তাঁর আরো অনেক অজানা জিনিস সামনে আসবে আমাদের। আমি নিশ্চিত তখন আপনি আরো অবাক হবেন।
আমারও একই প্রশ্ন- এক লোকের এত গুন থাকে কী করে??
বিডিআর তাঁর চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রন্থ-সমালোচকের পেশা গ্রহণ করবেন বলে বোধ হচ্ছে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
@সন্ন্যাসী'দা
ভাইজান কী পঁচাইলেন নাকি বুঝলাম না!
সমালোচকের পেশা আমার পক্ষে চাইলেও গ্রহণ করা সম্ভব না। কারণ- শোনা কথা- সেক্ষেত্রে নাকি অপারেশন করে মাথা থেকে সব ঘিলু বের করে ফেলে দিতে হবে
ধন্যবাদ।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
থ্যাংকু "'অ'-তে অমিত 'আ'-তে আহমেদ" ভাই
আপনার রিভিউ পড়ে খুব আগ্রহ হচ্ছে বইটি পড়ার। কিন্তু, আপাতত সব আগ্রহ জমা রাখতে হচ্ছে দেশে না আসা পর্যন্ত...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
অনেক ধন্যবাদ। বছর শেষেই তো দেশে আসবেন জানলাম, তখনই না হয় পড়বেন বইটা। তারপর মনে করে মতামত জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
আহারে, বইটা এখনো পড়ে উঠতে পারলাম, আজাইরা সব ঝামেলায় পইড়া। মোটে ১০/১২ পড়ে রেখে দিয়েছি বেডের এক কোনায়। নাহ্, আজকে বাসায় গিয়েই পড়া শুরু করতে হবে।
পড়া হইলে জানায়েন কেমন লাগল। (রিভিউ না, বইটা)
পড়ছি..সৈয়দ দেলগীরের 'অন্তস্থ পৃথিবী'।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
জলিল ভাই, পড়া হলে অনুভূতি শেয়ার করবেন।
কিনছি পৃথিবী। পড়া হয় নাই এখনও। তার আগেই পইড়া ফালাইলাম অতন্দ্র রিভিউ।
অতন্দ্র প্রহরী'র এই লেখার ধরন এবং ঢং সত্যিই বেশ গঠনমূলকতা আর বস্তুনিষ্ঠার আভাস দেয়।
দেখা যাক, পড়লে বোঝা যাবে- ব্যথা কতোটুকু পাই।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ওরে খাইসে! পৃথিবী কিনে ফেলসেন??
পড়েন নাই তো, তাই বোঝেন নাই। পড়া হইলে বুঝবেন "গঠনমূলকতা", "বস্তুনিষ্ঠা" - এসবের ধারেকাছ দিয়েও যায়নি রিভিউ। তবে বইটা পড়া হইলে জানায়েন কেমন লাগসে, কতটুকু ব্যথা পাইলেন, অথবা কতটুকু আরাম
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
বিডিআরের বুদ্ধি আছে, টাইমলি বিডিআরগিরি ছাইড়া গ্রন্থ-সমালোচক হয়ে গেছে
রিভিউ জাঝালো হয়েছে
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
হ
চেষ্টা করলাম আর কী, লাইফের ফার্স্ট কোনো বুক রিভিউ। ভয়ে ভয়েই পোস্টাইসিলাম। বেশ অনেকের মন্তব্য, বিশেষ করে তোমার, দেখে এনকারেজড হলাম। থ্যাংকস ম্যান।
রিভিউ অতি উত্তম হইছে।
প্রহরী এইটা কন্টিনিউ করলেই পারেন।
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ, কনফু ভাই।
আমি তো আপনার রিভিউয়ের বিরাট ফ্যান। তাই আপনার কাছে এই রিভিউ ভাল্লাগসে জেনে আমারও অনেক ভাল্লাগল। অনুপ্রাণিত হলাম খুব। জানি না কন্টিনিউ করা হবে নাকি, আমি কোনওকিছুই নিয়মিত করতে পারি না কেন যেন।
বালিকা সহযোগে ঘোরাঘুরি শুরু করার পর থেকে
অতন্দ্র প্রহরী সাহেব বিশাল 'ম্যাচিওর' হয়ে গেছেন।
লেখার জন্য জাঝা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমার সাথে ঘোরাঘুরি শুরু করেন, আপনিও বিশাল "ম্যাচিউর" হয়ে যাবেন
এই অধমের ব্লগে নিয়মিত পা রাখা ও মতামত ব্যক্ত করার জন্য প্রিয় রাপ্পুকে অনেক ধন্যবাদ।
কিন্তু আপনি লেখেন না কেন নিয়মিত???
গ্রন্থালোচনাটা দারুন হয়েছে প্রহরী ভাই।
পারলে এবারের মেলায় প্রকাশিত অন্যান্য বই নিয়েও এমন লেখা দেখতে চাই।
-----------------------------------
--------------------------------------------------------
অনেক ধন্যবাদ ভাই ভূঁতের বাচ্চা।
হয়ত ইতিমধ্যেই দেখতে পেয়েছেন- পান্থ'দা লিখেছেন, সাইফুল ভাই লিখেছেন, নজরুল ভাই লিখেছেন। পরিবর্তনশীলেরও লেখার কথা একটা। ধীরে ধীরে সব সচলের বই সম্পর্কেই রিভিউ চলে আসবে আশা করি।
আরে সারছে !
এইটা সত্যি সত্যি আমরার প্রহরী তো !!
আসলেই বড়োদের মতো লেখা হইছে।
(এই লেখা দিয়ে বোধহয় সে প্রমাণ করতে চায়, একজন বালিকার দায়িত্ব নেবার মতো যথেষ্ট বড়ো সে অলরেডি হয়ে গেছে। )
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
জ্বী আপু, আমি আপনাগোরই প্রহরী
ইচ্ছা করেই তো লেখার স্টাইল বদলানোর চেষ্টা করে দেখলাম আর কী, তাই একটু আঁতেল-মার্কা রিভিউ হয়ে গেল এইটা
এত কথা বললে হবে? বুঝতেই যখন পারসেন, এইবার তাহলে একটা বালিকা খুঁজে দেন না! কেউ আমারে কিছু দেয় না
কন্কি !
আপনেগো গুরুরে লাইনের পিছে ফালাইয়া আগেই কিছু খুঁইজা পাইতে চাইতেছেন !!
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
গুরুর ফর্ম খারাপ যাচ্ছে ইদানিং।
তাইলে এক কাজ করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দুইটা বালিকা খুঁজে দেন।
একটা গুরুর, একটা আমার।
সকলের অবগতির জন্য জানাইতেছি যে, এইগুলা হইলো অতন্দ্র প্রহরীর ষড়যন্ত্র।
আমি তার "টি" বাহিনীর দিকে নজর দিছিলাম বইলা সে আমার বই নিয়া এইসব আজেবাজে কথা লেখছে।
আদতে "অন্তস্থ পৃথিবী" অসাধারণ একটা উপন্যাস। শুধু ইংরেজীতে অনুদিত হইলেই এইটা নোবেল প্রাইজ পাবে। কনফার্ম।
অফ দ্য রেকর্ড: প্রহরী... লেখা অতি উত্তম হইছে। আমি ভাবছিলাম এবার অনেক অনেক বই নিয়া লেখবো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সে চেষ্টা করা বোকামী হবে। আপনারা এতো সুন্দর গ্রন্থালোচনা লেখেন কেম্নে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার কপালে কি খারাবি আছে তাই ভাবতেসি এখন তাইলে !!
------------------------------------
--------------------------------------------------------
মিয়া, বাঘের গুহায় ঢুকে আপনি বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকানোর চেষ্টা করসেন। আপনার যে কী হাল করব, রেডি হন খালি! খারাবির দেখসেন আর কী! মুহাহাহা...
@ নজু ভাই
এভাবে জনসম্মুখে হাটে হাড়ি ভেঙে না দিলেই কী হতো না?
এইবার বুঝসেন তো, টি-বাহিনীর দিকে নজর দিয়ে কী ভুল করসিলেন! আগেও সাবধান করসি, কানেই তোলেননি, এখন বোঝেন অবস্থা
অফ দ্য রেকর্ডের ব্যাপারে:
নজু ভাই, সত্যি বললে আপনার সাপোর্ট ছাড়া এই লেখাটা সম্ভব ছিল না। আপনাকে তাই বিশাল একটা ধন্যবাদ। মানুষটা আপনি জন্যই "কী থেকে কী লিখি, কী আবার মনে করে বসেন উনি" জাতীয় কথা মাথায়ই আসেনি। পুরোপুরি আনবায়াসড হয়ে, একদম ট্রুথফুলি লেখাটা লিখসি।
আমি তো এইটাই প্রথম লিখলাম। আসল রিভিউয়ার হলেন আমাদের কনফু ভাই, পান্থ'দা। তবে আপনার রিভিউ পড়তে চাই। তাড়াতাড়ি সিরিজ চালু করেন...
দেলগীর সাহেব
আমাকে কিছু টাকা পয়সা দিলেই
একটা নোবেল উপযোগী ইংরেজী সংস্করন নামিয়ে দেবো ইনশাল্লাহ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
পরে দেখা যাবে "ইনার ওয়ার্ল্ড বাই রানা মেহের" বইটা নোবেল প্রাইজ পাবে, আর নজু ভাই বসে বসে হাত কামড়াবে
প্রহরী ফাটাইছে
মেলায় এতগুলা বই কিনছি, কিন্তু পড়ার সময় করতে পারছি না
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অনেক ধন্যবাদ। খালি তো সিনেমা দেখেন আজকাল। এর ফাঁকেও, পারলে সময় বের করে টুকটাক বই পইড়েন, আর আমাদের জানায়েন আপনার পাঠ অনুভূতি সম্পর্কে।
- এই লেখা পড়ুম না। দেলগীর ভাই বই না পাঠাইলে তাঁর লেখা যেকোনো ব্লগেও 'কালো কমেন্ট' করে বিদ্রোহের সাক্ষর রেখে আসা হবে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন নাকি বস? দাবিদাওয়া না মানলে কি গুলি করা আরম্ভ করবেন?
বইমেলার সচলদের বই কেনার কোনো ব্যবস্থা করসেন? পাঠাতে হলে বলেন। এই গরীব তার সাধ্যমত আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
মূল বইটা পড়ি নাই এখনো, কাজেই আলোচনা পড়লে মজা পুরা পাওয়া যাবে না।
আমি আপাতত শাহাদুজ্জামান পাঠে হাবুডুবু...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমারও শাহাদুজ্জামান পড়ার খুব ইচ্ছা। কিনতে হবে দেখি।
নজু ভাইয়ের বইটা পড়া হইলে পরে জানায়া যায়েন কেমন লাগল...
রনি ভাই, পুরা কোপানি রিভিউ। আপনি দেখি পরিপূর্ণ একজন রিভিউকার হয়া উঠছেন।। কিন্তু আসল কথা- কোনটা বুঝছেন তো?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
মহিব, লজ্জা দিও না। বরং তোমার যে কথা ছিল শিমুল ভাই আর অমিত ভাইয়ের বইয়ের রিভিউ লিখবা, সেইটা তাড়াতাড়ি কর। নাইলে দেখবা অমিত ভাইয়ের বইয়ের রিভিউও লিখে ফেলবে কেউ তোমার আগেই। এই 'কেউ'টা আমিও হতে পারি কিন্তু
আসল কথা বুঝব না আবার?!
দেলগীর নজরুলের বইটার সবচে অভাবনীয় বিষয় হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি
দুর্দান্ত এক দৃষ্টিভিঙ্গিতে ঘটনা আর পরম্পরাগুলো সাজানো
০২
প্রহরী চারুকলায় ঘোরাঘুরি করার পরে চিত্রশিল্পী হতে না পারলেও বাক্যশিল্পী হয়ে উঠছে দুর্দান্তভাবে
ঠিকই বলেছেন।
০২
বুঝলাম, কেউ চায় না আমি একটু চারুকলায় গিয়ে শিল্প-সংস্কৃতির সংস্পর্শে থাকি! ঠিক আছে কী আর করা, গেলাম না আর ওখানে। তারচে বরং ধানমন্ডিতেই ঘুরব
অনেকদিন পর আপনার মন্তব্য এবং সেইসাথে বিরাট এক প্রশংসা পেয়ে যারপরনাই আনন্দিত হলাম।
মামুনের পাঠ প্রতিক্রিয়া পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
তাই নিজেরটা আলাদা পোস্টে লেখার লোভ সামলালাম। ভাবলাম একটু সময় নিয়েই লিখি...।
শুরুতেই মামুনকে ধন্যবাদ, এমন চমৎকার করে লেখার জন্য।
সৈয়দ দেলগীরের লেখা আমি পড়িনি কখনো। যদিও তিনি নজরুল ইসলাম নামেই সচলে পরিচিত এবং লিখেন, 'অন্তস্থ পৃথিবী' পড়া শুরু করার আগে আমি মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারি না।
যেটা হয় - চেনা জানা মানুষের লেখার সাথে পরিচয় থাকে, বহুল পঠিত লেখকের গদ্য বাক্য কিংবা কাহিনী চেনা লাগে। কিন্তু, নজরুল ইসলাম বা সৈয়দ দেলগীরের লেখা নিয়ে আমি কিছু মনে করতে পারি না। অথচ নজরুল ইসলাম ভীষণ রকম সচল। ভাবনায় হাতড়ে কেবল পাই, নজরুল ইসলাম অনেক অনেক কমেন্ট করেন, বিশাল বিশাল কমেন্ট করেন। যেগুলোয় তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বেশ বৈঠকী ভঙ্গিমায় চলে আসে - পড়তে ভালো লাগে। তাঁর কোনো গল্প কি পড়েছি? মনে পড়ে না। মনে পড়ে - হুটহাট করে কক্সবাজার চলে যাওয়ার গল্প, এক চুমুক বিয়ার খেয়ে কুমিল্লায় হড়হড় করে বমি করার কথা। এসব স্মৃতিকথায় কখনো সাহিত্য খোঁজা হয়নি। কিংবা বলা হয়নি, এ গল্পটি এরকম হলে ভালো হতো...।
মূলতঃ এ কারণেই রেজওয়ানা তাহের যখন রঙিণ পৃথিবী দেখেন, যখন শাওয়ার নিতে গিয়ে রঙের বন্যায় ভেসে যান, গাছের রঙ পালটে যায়, পালটে যায় ডাস্টবিনের ময়লা, সংবাদপত্রের শিরোনাম - দেশের গোলাপের বাম্পার ফলন হয়, কাকহীন শহরে কবুতর ডানা ঝাপ্টায় - তখন আমার মনে হয়, আমি এই প্রথম এই লেখকের লেখা পড়ছি। যাদুবাস্তবতা বোধে ব্যর্থ পাঠকের কাছে কাহিনীতে চমক লাগে - কী হবে এর পরে? কিংবা আসল সমস্যাটা কী? হুমায়ুন আহমেদ হলে হয়তো মিসির আলীকে আনা যেতো, কিংবা রেজওয়ানাকে খালা বানিয়ে হিমুকে ডাকা যেতো। সৈয়দ দেলগীর ওসবের পথে যান না। তাহলে কী হবে? ততক্ষণে উপন্যাসের অর্ধেক পড়া শেষ। রেজওয়ানা তাহেরের রোগ মুক্তি মিলছে না। আশে পাশে রটে যাচ্ছে জ্বীনে ধরেছে, গুজব ছড়ছে। এবার হুমায়ুন ভুলে মোহিত কামালের কথা মনে পড়ে। মনোরোগ এবং এসব সমস্যার সামাজিক অবস্থান শেষে 'যাহা করিতে হইবে' জ্ঞান দিয়ে মোহিত কামাল যেমন করেন, সৈয়দ দেলগীরও তেমন করবেন বলে আমার শংকা হয়। অথচ তা তিনি করেন না। আমি জানি সৈয়দ দেলগীর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নন, তিনি নাটক লিখেন। তাই নাটকীয় চমকের অপেক্ষায় থাকি। মনে হয় - বিদেশে ট্যুরে থাকা জাফরের অনুপস্থিতি এ সমস্যার মূল কারণ। জাফর ফিরলে এ সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। কীভাবে ঠিক হবে সেটা ভিন্ন কথা, লেখক ঠিক করে দিবেন, কারণ তিনি নাট্যকার। তিনিই পারবেন। এরপরে রোগের তীব্রতা বাড়ে, আর কাহিনী চক্কর খায় একই ঘুর্ণিতে। খানিক বিরক্তি লাগে এই ভেবে যে, লেখক এবার রেজওয়ানা তাহের নয়, পাঠককে নিয়ে খেলছেন। নানান মিডিয়ার সাংবাদিকরা পাশের বাড়ীর ছাদে উঠে, গাছের উপরে উঠে ক্যামেরায় ক্লিক করলে - কাহিনী গতি পায়। মনে হয়, পরিণতি সামনে আসবে। মিথিলা-ইশতি-জুই-জ্যোতিকে নিয়ে না ভাবলেই চলবে। কী এসে যায় ঐসব পাশ্বচরিত্রে? আমাদের চারপাশে তো কতো মানুষই থাকে, ভাবার ফুরসৎ পাওয়া যায় কতো খানি? শেষে ঘুমের ঔষধ খেয়ে এক সকালে রেজওয়ানার ঘুম ভাঙে। ঐ সকালে রেজওয়ানা আগের মতো হয়ে যায়, এই ধুলো, কাক, ডাস্টবিন, হর্ণের শব্দ, এই চিরচেনা শহর। এসব ভালো লাগে।
যাদুবাস্তবতার হিসাব নিকাশ অন্য কোথাও রেখে নিরেট বাস্তবতায় দেখি - আমাদের চারপাশে এত অসংগতি, এত না পাওয়া, এত সামাজিক জঞ্জাল - এগুলোর সাথে আমরা এমনভাবে মানিয়ে গেছি নিত্য যাপনে, ওগুলো সরিয়ে দেশে গোলাপের বাম্পার চাষ অবাস্তব মনে হয়। অথচ অমন হওয়ারই কথা ছিলো। কথা ছিলো মাঝ রাতে আমাদের শহরে ভেসে আসবে নিশিগন্ধার ঘ্রাণ, বরষার সকালে কদম ফুলে ছেয়ে যাবে এই শহর, এই শহরের মানুষ, অনেক অনেক রেজওয়ানা তাহের। এসব বিষণ্নতার সংগোপনে ছুঁয়ে যায় কাউকে কাউকে, আক্রান্ত করে; তেমনই একজন রেজওয়ানা। স্বপ্ন অথবা বাস্তবের এ জটিলতার গল্প 'অন্তস্থ পৃথিবী'।
অভিযোগ থাকতে পারে তাড়াহুড়া ছিলো কাহিনী নির্মাণে, গোসল/সিনান/শাওয়ার - দরজাঘাত এবং এরকম আরও কিছু শব্দ নিয়ে অমনোযোগিতা ছিলো। কিন্তু, কী-ই বা এসে যায় তাতে? গতিময় শহরে এমন গতিই চাই, প্রবল তাড়াহুড়া চাই। নাট্যকার বলে সৈয়দ দেলগীরের জন্য কাজটা সহজ হয়েছে। পাঠক হিসেবে এ জায়গাটিতেই একটি আনন্দের ব্যাপার পাই।
অভিনন্দন, শুভকামনা ব্লগার নজরুল ভাই - লেখক সৈয়দ দেলগীর।
অনেক ধন্যবাদ শিমুল ভাই। কিন্তু আমার কারণে আপনার এই চমৎকার রিভিউটা নীড়পাতার মুখ দেখল না, সেটা ভাবতেই খারাপ লাগছে কিছুটা। আলাদা পোস্টে দিতে পারতেন কিন্তু। এখনও দিতে পারেন। তাহলে "অন্তস্থ পৃথিবী"র পাঠ প্রতিক্রিয়া হিসাবে লেখাটার লিংক অন্যত্র ব্যবহার করা যেত।
আপনার লেখাটা পড়ে বুঝলাম পূর্ণাঙ্গ রিভিউ কাকে বলে। সত্যিই মুগ্ধ হলাম। দুর্দান্ত লেগেছে। সুযোগ থাকলে নিজের লেখাটাকেও বদলে নিতাম আপনার লেখার আদলে। কিন্তু সেটা যেহেতু এখন আর হবার নয়, তাই শুধু অকৃত্রিম মুগ্ধতা প্রকাশ করে যাই আরেকবারের মতো।
এই! এক ঝাঁক মেয়ের নামের মাঝে আমার নাম পড়লাম মনে হয়? এইবার পাইছি! বই হাতে পেলেই "বইস্থ চরিত্রের আকুতি" নামে রিভিউ লিখতে হবে।
হে যুবক! তুমি ভুল করিতেছ। এক ঝাঁক মেয়ে না, ওইখানে (রিভিউতে) মোটে দুইখানা মেয়ের নাম বলা হইয়াছে
শুরুতে আমারও তোমার মতোই ধারণা ছিল, পরে ভুল ভেঙেছিল।
যে-ব্যাক্তি তারুণ্যের পর যৌবনকেও পাশ কাটাইয়া একাকী প্রৌঢ়ত্বের ভয়ে কাঁপিতেছে, তাহার কাছে একাধিক ও এক ঝাঁক সমতুল। ইহা দম, সহায়, কপাল, ইত্যাদি সকল অর্থেই নিষ্ঠুর সত্যকথন!
সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আমি আর কী বলব বল... চোখ-কান খোলা রাখলেই, তোমার এই ভয়ানক খরা থেকে উত্তীর্ণ হবার পথ বাৎলানোর জন্য সুদক্ষ ও পূজনীয় রমণীমোহন ব্যক্তিবর্গের খোঁজ পেয়ে যাবা, এই কামনা করি
এইবার সাহিত্যে নোবেল পামু? ঠিক্কইরা বলেন,,,
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আশা রাখেন মিয়া, আপনি অবশ্যই "নো-বেল" প্রাইজ পাবেন
নজরুল ইসলাম এর সাথে পরিচিত ছিলাম আগ থেকেই। সৈয়দ দেলগীর এর সাথে পরিচিত হবো এখন। বইটি পড়তে শুরু করেছি...
পড়া শেষে সম্ভব হলে মতামত জানাবেন...
অবশ্যই...
বইটা আর ছাপা হয়না কেনু?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন