বাসায় এসে কার্ডের ভেতরে শুভেচ্ছাবার্তা লিখে বেরোলাম আবার সেটা পাঠাতে। কুরিয়ার সার্ভিসের দোকানে গিয়ে দেখি বন্ধ সেটা। ভরদুপুর। একটু দেরিই হয়ে গিয়েছিল। তবে ততক্ষণে অবশ্য শুক্রবারের জুম্মার নামাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। দলে দলে লোকজন মসজিদ থেকে ফিরছিল। ঠিক পাশের রেন্ট-এ-কারের দোকানের লোকটা নামাজ থেকে ফিরে এসে দোকান খুললেও কুরিয়ার সার্ভিসের লোক আর আসে না। আগের দুদিনের মেঘবৃষ্টির আড়াল থেকে সূর্যটা বের হয়ে আজ নিজের উপস্থিতি ভালোমতোই জানান দিচ্ছিল। ঘামছিলাম। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে উশখুশ পায়চারি করতেই পাশ থেকে শুনি কে যেন জিজ্ঞেস করলো, "দোকানের লোক কখন আসবে জানেন নাকি?"
"না", মাথা নাড়ি আমি।
একটা মেয়ে। হাতে গাঢ় রঙের দুমড়ানো কাগজ। কিছু খুচরো টাকা। পুরো মুখ ঢাকা। শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছিল।
"আপনি টাকা পাঠাইসেন?" মেয়েটা জিজ্ঞেস করে আবার।
"টাকা না। এটা পাঠাব।" হাতের প্যাকেটটার দিকে ইশারা করি আমি।
"ও!" মেয়েটা বলে, "আমি টাকা পাঠাইলাম দুইদিন আগে। অথচ দেখেন এখনও পৌঁছায় নাই। আমার ভাইয়ের পরীক্ষা। এত সময় যদি লাগে টাকা পাঠাইতে, তাইলে আর এদের দিয়া পাঠায়ে লাভ কী?"
"টাকা তো যতদূর জানি দ্রুতই পাঠানো যায় এদের মাধ্যমে, খুব বেশি তো সময় লাগে না।"
এটুকু শুনে মেয়েটা বলে ওঠে, "তাই তো। এর আগে একবার দশ হাজার টাকা পাঠাইলাম। ইমার্জেন্সিতে। একশ সত্তর টাকা চার্জ নিলো। সেইটা তাড়াতাড়িই পৌঁছাইসে। আরেকবার পাঠাইলাম চার হাজার টাকা। সেইটাও তাড়াতাড়িই গেল। ইমার্জেন্সিতে দিসিলাম। নরমাল দিলেই সময় লাগে। দুইদিন হয়া গেল এইবার, টাকা এখনও গেলই না। এইটা কোনো কথা হইলো!"
মেয়েটার ভেতরে তাড়া লক্ষ করি। নিজে থেকেই জানালো যে আড়াইটার সময় তার অফিস। অল্প সময়ের জন্য সে দুপুরে বের হতে পেরেছে। এর মধ্যে খোঁজ না পেলে আজ আর আসতে পারবে না। আবার হয়ত কাল আসতে হবে তাকে।
"অফিস কোথায় আপনার?" জিজ্ঞেস করি আমি।
মেয়েটা ছোট্ট করে জবাব দেয় "বাইশ তালা।"
আন্দাজ করলাম গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে সে। বহুতল একটা ভবন আছে এদিকে। তৈরি পোশাক বানায় ওখানে। কত তলা হতে পারে সেটা, ধারণা ছিল না, তবে মনে হলো বাইশ হলেও হতে পারে।
বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক তাকাই। বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। অল্প কিছু খোলা। রাস্তায় লোকজনও কম। খুব জরুরি কাজ ছাড়া কারুরই বেরোনোর কথা না অবশ্য ওরকম সময়ে। রোদের তাপে রাস্তা থেকে যেন গরম বাতাস মুখে এসে ঝাপটা মারে। জ্বলন্ত চুলার পাশে বসে থাকলে যেমন লাগে, অনেকটা তেমন। বাতাসে কাপড়কাচা সাবানের হালকা ঘ্রাণ। আর ধুলার। খানিক দূরে একটু ছায়া পেয়ে রিকশা থামিয়ে চালক দাঁড়িয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে দেখলাম। গামছায় ঘাম মুছে অল্প কিছুক্ষণ পরে মন্থর গতিতে রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে চলে গেল সে। পাশের কোনো একটা বাড়ি থেকে বেশ কয়েকজন বেরোলো দেখলাম। নানানবয়সী। হাতে ব্যাগ। পরনের সাজপোশাক দেখে মনে হলো কোথাও বেড়াতে যাচ্ছে। কোনো অনুষ্ঠানে হয়ত। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে রিকশা খুঁজছিল তারা।
কিছুক্ষণ পরপর কাউকে এদিকে এগোতে দেখলেই মনে হচ্ছিল যেন সে-ই দোকানের লোক। কিন্তু হতাশ করে দিয়ে তারা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল সবাই। অনেকক্ষণ পর একটা লোককে সরাসরি দোকানের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভাবলাম ইনিই হয়ত দোকানের লোক। কিন্তু না। কাছে এসে তিনি জানতে চাইলেন দোকান বন্ধ নাকি। জানালাম। চলে গেলেন তিনি।
রেন্ট-এ-কারের দোকানে ঢুকলো মেয়েটা। কী যেন কথা বলে এসে নিজেই আবার জানালো, "ভাই, দোকান খুলতে তো মনে হচ্ছে অনেক দেরি হবে। কী যে করি! আপনারটা কিন্তু নরমাল পাঠায়েন না। টাকা একটু বেশি লাগে লাগুক। ইমার্জেন্সিতে দিয়েন। তাইলে সময়মতো পাবে। আচ্ছা, আপনার কাছে ওদের ফোন নাম্বার আছে?"
"নাই", আবারও মাথা নাড়ি আমি।
"আমার কাছে একটা ছিল। কল দিসিলাম। বন্ধ।" মেয়েটা জানালো। "নামাজ শেষে খাইতেও যদি যায়, তাও তো এতক্ষণ লাগার কথা না! দুইজন লোক, একজন না আসুক, আরেকজন তো আসবে!" সে যে খুব চিন্তিত ও বিরক্ত, সেটা প্রকাশে কোনো লুকোছাপা ছিল না। আমিও পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম সেটা।
মেয়েটার কাছ থেকে দোকানের ফোন নম্বর চাইতেই সেই দুমড়ানো কাগজটা বাড়িয়ে দিলো সে। দেখি সেটা আসলে টাকা পাঠানোর রশিদ। নম্বরটা টুকে নিয়ে কল করলাম। দেখি ফোন বন্ধ। সেটা জানালাম মেয়েটাকে। সে একটু এগিয়ে রাস্তার দিকে যায়। তারপর দোকান বরাবর উপরের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ দেখে এসে জানায় যে ওখানে কোনো মোবাইল নম্বর দেয়া নেই। অন্য একটা নম্বর নাকি আছে। জিজ্ঞেস করলাম টিঅ্যান্ডটি নম্বর কি না। মাথা ঝাঁকালো সে। বললাম ওটা তো নিশ্চয়ই দোকানের নম্বর, ভেতরে থাকবে, কল করলে কেউ ধরবে না।
"আচ্ছা কয়টা বাজে?"
ঘড়িতে সময়টা দেখে নিয়ে জানাই, "দুইটা বিশ।"
"আমার তো যাইতেই লাগবে দশ মিনিট। এই কাগজটা কি পাশের দোকানে দিয়া যাবো? বুঝতেসি না।"
"না দেয়াই ভালো," বলি আমি। "যদি টাকাটা কোনো কারণে আপনার ভাই না পায়, আর আপনার কাছে এই কাগজটা না থাকে, আপনি তো পরে ওদেরকে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারবেন না। আপনার কাছে তো টাকা পাঠানোর কোনো রেকর্ডই থাকবে না।"
মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম, "আপনার অফিস কয়টা পর্যন্ত?"
"দশটা।"
"তাহলে তো আর তখন এসেও আপনি দোকান খোলা পাবেন না," বললাম আমি।
"সেইটাই তো সমস্যা!" মেয়েটা বলে, "টাকা অফিস থেকেও পাঠানো যায়। কিন্তু অনেক বড় ফর্ম পূরণ করা লাগে। ঝামেলা। এইখানে সেই ঝামেলা নাই। কিন্তু এরা আবার মাঝেমাঝেই এরকম দেরি করে।"
মেয়েটা আবারও রেন্ট-এ-কারের দোকানে গেল। কী কী যেন বললো। আমিও গেলাম। দোকানে বসে থাকা লোকটার কাছে জানতে চাইলাম কুরিয়ার সার্ভিসের দোকানটা খুলবে কখন। তিনি জানান চারটার দিকে হয়ত খুলবে। দোকানদার নামাজ শেষে হয়ত খেতে গেছে। তাই এত দেরি। দাঁড়িয়ে থেকে অহেতুক সময় নষ্ট না করে মেয়েটাকে চলে যেতে বললেন তিনি। জানালেন দোকানদার আসলে মেয়েটার কথা বলবেন তাকে।
বেরিয়ে এসে মেয়েটা আমাকে বলে, "ভাই, আমি তাইলে যাই।" নিজের নামটা জানিয়ে আমাকে আরও বলে, "আপনি থাকতে থাকতে যদি লোকটা আসে, তাইলে আমার কথা বইলেন যে ভাইয়ের কাছে টাকা পাঠাইসিলাম নওগাঁয়, সেইটা ও পায় নাই এখনও।"
আমি আশ্বাস দেই তাকে যে দোকানদারকে অবশ্যই তার কথা বলবো আমি।
মেয়েটা চলে যায়।
এরপর আমি একা একা দাঁড়িয়ে থাকি আরও কিছুক্ষণ। গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত লাগছিল খুব। সাথে ক্ষুধার ক্লান্তিও ছিল। এবং খুব অদ্ভুত ব্যাপার হলো, একা অপেক্ষা করতে খানিকটা খারাপও লাগছিল। মেয়েটার কথা মনে হলো। মনে হলো কোথায় যেন একটা যোগসূত্র আছে তার সাথে। কে জানে, কিছু কিছু ব্যাপারে মনে হয় ভীষণ আলাদারকম মানুষদেরও একইরকম অনুভূতি হয়।
আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে এলাম।
কোথাও পড়েছিলাম প্রিয়জনদের দেয়া সম্ভাব্য সবচেয়ে দামী উপহারের মধ্যে সবার উপরে থাকবে "সময়"। সেটা মনে পড়তে ভাবলাম, কার্ডটা যাকে পাঠাবো, তাকে যতটা সময় দিলাম নিজের, সে কি আদৌ বুঝবে সেটা? হয়ত না। কেউ কেউ বোঝে না। বা বুঝতে চায় না। চেষ্টাও করে না। তাদেরকে বোঝানোর জন্য প্রাণান্তকর যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, সেটা নিরেট নির্বুদ্ধিতা মনে হয়। কেন না বাস্তব জীবন সবসময় চলচ্চিত্রের সুখীসমাপ্তির মতো হয় না। কার্যত উল্টোটা হয়। বোকা বাক্সে ভালোবাসা যতই আকর্ষণীয় লাগুক না কেন, বোকা মানুষগুলোর ক্ষেত্রে আদতে সেটা চৈত্রের খরদুপুরের মতোই।
মন্তব্য
ভালো লাগলো লেখাটা।
কার্ডের পাশাপাশি ই-মেইলে এই লেখাটাও পাঠিয়ে দাও
মাঝে মাঝে সামান্য একটা কাজ সারাটাই অসামান্য মনে হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আসলেই, মাঝেমাঝে সহজ কাজও খুব কঠিন লাগে। আর, যে বোঝে না, সে বোঝেই না। লেখা পাঠালেও বুঝবে না।
- ঘ্যাচাং -
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ইদানিং ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানানো বাদ দিয়েছি। শুধু যাদের জন্মদিন মনে থাকে তাদেরকে খামে ভরে কিছু পাঠাবার চেষ্টা করি। কিন্তু কিন্তু কুরিয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে এত সময় ব্যয় করা হয় না।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানানো অনেকটাই দায়সারা গোছের, যদিও নিজেও করি এই কাজটা। তবে সেটা মোটামুটি তাদের সাথেই, যাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের রাস্তা অতটা সহজ না। খুব কাছের মানুষগুলোকে আলাদাভাবে জানানো হয়।
আর বোকা মানুষরা ছাড়া কেউই ওভাবে অত সময় ব্যয় করবে না।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আন্তরিক ধন্যবাদ, তিথী।
প্রহরী মাত্র একটা কার্ড পাঠাইছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
মাত্রই তো। সবই মাত্র। এক কোটি টাকা হলেও তো লিখতে হয় "মাত্র"।
আছেন কেমন?
(স্পর্শর মন্তব্যের উত্তর। ভুল করে এখানে এসেছিল।)
১।
লেখাটা ভালো লাগলো। নিজেই যেন কুরিয়ার সার্ভিসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম মনে হলো।
২।
কার্ডটা নিজ হাতে বানিয়ে দিলে না যে?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
(মন্তব্যটা কেন যেন উপরে চলে গিয়েছিল, সেটা এখানে দিয়ে দেই...)
১।
ধন্যবাদ।
২।
আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয় নি। তাই সময় ছিল না হাতে। সব মিলায়ে ব্যস্ততাও যাচ্ছে খুব। কিছুই করা হচ্ছে না সেভাবে।
পড়তে খুব ভাল লাগল।
সোজা পাঁচ তারা।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
চমৎকার লেখা
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
অনেক ধন্যবাদ।
কার্ডটা পৌঁছাইছে? কার্ডওয়ালীরে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
কালকে পাবে। আজ তো সব বন্ধ। দেখি কখনও সুযোগ হইলে আপনার শুভেচ্ছা পৌঁছায়ে দিবোনি।
এই বছরের কার্ডওয়ালির সাথে সাথে এর পরের বছর বাইশতালা-তেও একটা কুরিয়ার যাবে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বাইশতালার ঠিকানা রাখা হয় নি। ফোন নম্বরও না। নিয়ে রাখলে মনে হয় ভালো হতো। হা হা হা।
অপ্র'র লেখা দেখে মহানন্দে লগ-ইন করলাম, যে একটু ফাইজলামি করবো। কিন্তু লেখা পড়ে তো লজ্জায় পড়ে গেলাম, দৈনন্দিন জীবনের ছোট্ট ছোট্ট ঘটনা কী চমৎকার করেই না ফুটিয়ে তোল তুমি। আমি যে আসলেই লিখতে পারি না একদমই, লেখালেখিতে যে আমি আসলেই অদক্ষ, এইটা তোমার এরকম লেখাগুলো আর আরও কয়েকজন সচলের লেখা পড়ে পড়ে আমি প্রায়ই অনুভব করি।
লগ-ইন করে বসে বসে ভাবছিলাম যে কমেন্টে আসলে কী লিখবো... মনে পড়লো একবার একজনের জন্যে একটা শাল কিনেছিলাম, নিজের জন্যে একটা আর তার জন্যেও একই রকম একটা। ভেবেছিলাম সেই শীতে আমি তার শহরে গেলে তার জন্যে উপহার নিয়ে যাবো। ব্যস্ততায় নানান কারণে সুযোগ হয়নি যাবার। এখনো দু'বছর পরে শালটা আমি প্রতি শীতেই নিজেরটা বের করে পরার সময়ে দেখি, যত্ন করে প্যাকেট করা আছে সেরকমই, এখন আমি ইচ্ছা করলেই সেটা কুরিয়ার করতে পারি, কিন্তু আগ্রহটা মরে গেছে কেমন যেন...
আরেকবার একজনের জন্যে তার জন্মদিনের আগে তাড়াহুড়ো করে বই অর্ডার দিয়ে আনিয়েছিলাম একটা। কিন্তু তার ঠিকানা না জানায় পাঠানো হয়নি সেই বই। দু'বছর ধরে আমার শেলফে পড়ে আছে বইটা, সাথে পরের জন্মদিনের জন্যে কেনা আরও কিছু... মনে হয় কখনোই তাকে বইগুলো দেয়া হবে না আমার।
এক সময়ে তোমার মতন অনেক সময় নিয়ে সবার জন্যে বেছে বেছে কার্ড কিনতাম, সময়ের আগে পিছে পোস্ট করতাম। লম্বা লম্বা শুভেচ্ছা-বার্তা আর রাজ্যের যত খবর লিখে... এখন আর করা হয় না... এখন মাঝে মাঝে কারও কারও জন্যে হুট করে কিছু কেনা হয় তার খুব ভালো লাগবে ভেবে, তারপর সেটা আমার আলমারির আমার শেলফের কোন কোণে পড়ে থাকে অনন্তকাল ধরে...
ভাবছি, কেউ কি আমার কথা মনে করে এমন সময় খরচ করে কখনো, করেছে কি?
পুতুলগুলো কাদের জন্যে কিনেছিলে বলোনি, সেগুলোও কি কুরিয়ার হলো?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এগুলো এভাবে বাক্সবন্দি করে রাখার দরকার নাইতো। পাঠায়া দাও আমার ঠিকানায়।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
শাল না বই?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অপু ভাইকে শালটা দিও, আর বইগুলো আমাকে। ফেলে রেখে কী হবে!
আরে নাহ! অত সস্তা নাকি, আগে আমাকে চিঠিপত্তর পাঠাও তার পরে না?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধুর, সামান্য এই আবজাব লেখায় এরকম প্রশংসা করে তো উলটা তুমি আমাকে লজ্জায় ফেলে দিলা! ধন্যবাদ।
আমার ধারণা, তোমার জন্যও অবশ্যই কেউ না কেউ অনেক সময় খরচ করেছে। তুমি যেমনটা করেছ, কিন্তু তারা জানতে পারে নি। তেমনি তাদেরটাও হয়ত তুমি জানো নি।
হ্যাঁ, পুতুলগুলোও কুরিয়ার করেছিলাম। পেয়েছে, পরে জানতে পেরেছি।
সেরকম হলে বেশ হয়... মনে করো অনেকদিন পরে হঠাৎ দেখা হলো, তারপর কথায় কথায় সেই কথা জানা গেল, সুন্দর একটা ব্যাপার হয়!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আসলেই কিন্তু তাই। আমি নিজেই এরকম দুয়েকটা ব্যাপার জানতে পেরে বেশ আমোদিত হয়েছি।
ডুপ্লি ঘ্যাচাং___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কেউ যে একটা কার্ডের পেছনে আমার মতন এতো সময় ব্যয় করতে পারে-এই লেখাটা না পড়লে আমার বিশ্বাসই হতো না।
আশা করি কার্ডয়ালী কার্ডের মর্ম বুঝবে, আর না বুঝলে পরপর দুইটা হলুদ কার্ড সহকারে একটা লাল কার্ড দেখায় একদম মাঠের বাইরে
উপরে ভিরুর কমেন্টের রিপ্লাই দেন নাই কোন কারণে মিস করসেন মনে হয়, আমি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় দিলাম।
অনেকদিন পর লিখলেন, ভালো লাগলো লেখা পড়ে। আপনার মতন আমিও এমন সময় কাটিয়েছি, তবে ঐটা টেইলরের দোকানে আমার জামার জন্য
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
ভীরুর জবাব দিয়েছে তো, মন্তব্য লাফাং হয়ে উপরে চলে গেছে মনে হচ্ছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হা হা হা। মন্তব্য পড়ে মজা লাগল অনেক। লাল কার্ড দেখানোর আইডিয়া খুবই পছন্দ হইসে। বাস্তবায়ন করে ফেলতে পারি ঝোঁকের মাথায়!
কার্ডের পিছে তুমিও অনেক সময় ব্যয় করো নাকি? সেই কাহিনি সময় করে শুনতে চাই। টেইলরের দোকানেরটা না শুনলেও চলবে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জ্ঞানী লোকেরা বলে, প্রেমরোগে ধরলে গায়ে গতরে বিষণ্ণতা চাগাড় দিয়া ওঠে! বিডিআরের লেখার প্রতিটা লাইনের পরতে পরতে সিবা গেইগির 'বিষণ্ণতা একটি রোগ'এর বিজ্ঞাপন প্রবলভাবে লক্ষ্যণীয়। এখন দুয়ে দুয়ে চার মেলানোর কষ্টটা বাকীরা করুক!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অন্যরে কষ্ট কেন দিবেন! আপনিই বলে দেন নাহয়! ভালোই আছেন, না? অনেকদিন খোঁজখবর নাই কোনো।
লেখাটা ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অনেক ধন্যবাদ।
তারপরওতো কেউ আছে যারে পার্শেল পাঠানো যায়, যার জন্য বন্ধ দোকানের সামনে অনেকক্ষণ দাড়ানো যায়...
আরামদায়ক একটা লেখা।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
সেটাই। কেউ যে অন্তত আছে এখনও, কষ্টের মধ্যেও মাঝে মাঝে এতেই আনন্দ পাই।
ধন্যবাদ, বাউল ভাই।
আমিও তাই বিশ্বাস করি।
ধন্যবাদ।
ভাল লাগল লেখাটা ।
চমৎকার উপলব্ধি। পৃথিবীর সব বোকা মানুষের জীবনে শরতের স্নিগ্ধতা নেমে আসুক। আমিও সেই দলেই আছি কিনা।
যাক, আমি তাহলে একা নই। দলে অনেকেই আছেন দেখছি! ভালো থাকবেন আপনি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শেষটায় যেভাবে লিখলেন, এর থেকে যথাযথ বা ভালো করে লেখা সম্ভব না হয়ত। দারুন।
ক্রেসিডা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
হুম!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
দারুণ গল্প।
এটা আসলে গল্প না ভাই। বাস্তব জীবনের ঘটনা। ধন্যবাদ আপনাকে।
কাল রাতে এক সিনিয়র বন্ধুর সঙ্গে বৈশাখের গিফট নিয়ে ফাজলামো করছিলাম। সকালে মনের মুকুরেতে লেখাটা দেখে মজা লাগছে।
এইজন্যেই বোকার মতো সবাইকে গিফট দিতে নেই। বোঝার হলে ঐ এমনিই বুঝবে, নাহলে নাই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দারুণ!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন