এই বিষয়টি নিয়ে অনেক আগেই পত্রিকার পাতাগুলো সরব হয়েছিল। ফ্রান্সের একটি যাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য দেশের অনুল্লেখসংখ্যক পুরাতত্ত্ব সেখানে পাঠানো হবে বলে শোনা যায়। মূল্যবান এই সম্পদ যাতে সেখানে পাঠানো না হয় সে বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছিল। কিন্তু মামলার মধ্যেই যাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রত্ন-নিদর্শনগুলি গতকাল ফ্রান্সে পাঠানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
আমি অবাক হইনি যাদুঘর কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা থাকা সত্বেও এসব অমূল্য প্রত্ননিদর্শন বিদেশে পাঠানোর জন্য কেন দেশের এই দুর্যোগময় সময়টিকে বেছে নিল।
এই ব্লগে অনেক গুনী মানুষ আছেন, অনেক জ্ঞানী মানুষও আছেন। তদুপরি শিল্প-সাহিত্য নিয়ে অনেকেই আছেন যাঁদের লেখনীর মূল্য আমার মত সাধারন ব্লগারের চেয়ে অনেক বেশী।
আমার দেশের মানুষ যেখানে না খেয়ে আছে, ঘূর্ণিঝড়ে যেখানে তাদের মাথার উপর ছাউনিটা পর্যন্ত নেই, সেখানে প্রত্নতত্ত্ব হয়তো ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবুও যেসব অমূল্য সম্পদের সাথে মিশে আছে আমাদের সংস্কৃতি আর শৈল্পিক ঐতিহ্য সেখানে আমাদের একটু সরব হওয়া দরকার আছে বলে আমার মনে হয়। আপনারা কী ভাবছেন?
ছবিটি এখান থেকে নেয়া।
নিচে আজকের ইত্তেফাক থেকে খবরটা কপি করে দিলাম।
==========================
"আদালতে দায়ের করা মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই গতকাল শুক্রবার জাতীয় জাদুঘর থেকে মূল্যবান প্রত্ন-নিদর্শন ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্দেশ্যে কাভার্ড ভ্যানে তোলা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও প্রত্ন নিদর্শন প্রেরণ প্রতিরোধের দাবিতে বিক্ষোভরতদের সাথে সংঘর্ষ এবং শাহবাগ থানা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের মুখে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। গতকাল সকাল থেকেই জাতীয় জাদুঘরের মূল্যবান প্রত্ন-নিদর্শন ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্দেশ্যে কাভার্ড ভ্যানে তোলা শুরু করে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় জাদুঘরের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পাদন করা হয়। ফ্রান্সের গিমে মিউজিয়ামে প্রত্নতত্ত নিদর্শন প্রদর্শনের জন্য পাঠানোর প্রতিবাদে প্রত্ন-নিদর্শন পাচার প্রতিরোধ কমিটি’ গতকাল সকালে জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করে। এ প্রসঙ্গে শিল্পী নেসার হোসেন বলেন, ফ্রান্সের গিমে মিউজিয়ামে এদেশের মূল্যবান প্রত্ন-নিদর্শন নিয়ে যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাই অস্বচ্ছ। সরকার এ ব্যাপারে একটা কমিটি করে দিয়েছিল। কিন্তু কমিটির কোন সুপারিশই গিমে মিউজিয়াম রাখেনি। এছাড়া এ ব্যাপারে আদালতে মামলা চলছে। এ অবস্থায় কিভাবে সরকার প্রত্ন-নিদর্শন পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে? প্রত্ন নিদর্শনগুলোর পিছনে অমোচনীয় কালি দিয়ে কোন স্বাক্ষর করা নেই। ঠিক কতগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ফ্রান্সে পাঠানো হচ্ছে তারও কোন সঠিক হিসাব সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়নি।
এই প্রত্নতত্ত নিদর্শনগুলোর জন্য যে ইন্স্যুরেন্স মানি রাখা হয়েছে তা শিল্পী ভ্যান গগের একটি ছবির ইন্স্যুরেন্স মানির চেয়েও অনেক কম। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এই মূল্যবান প্রত্নতত্ত নিদর্শনগুলোর ১০টি বাক্সের প্রথম চালান আজ রাত ১২টা ৫ মিনিটে ফ্রান্স এয়ারলাইনসে নিয়ে যাওয়া হবে। বাকী ১৩টি বাক্সের দ্বিতীয় চালান খুব শিগগিরই নিয়ে যাওয়ার কথা। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের গিমে মিউজিয়ামে প্রত্ন-নিদর্শন পাঠানোর বিরোধিতা করে রাজশাহীর জেলা জজ আদালতে এডভোকেট ইয়াহিয়া এ বছরের ৯ জুলাই প্রথম মামলা দায়ের করেন। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর ড. এমএ কামাল ইউরি, সাবেক সচিব আ.কা.ম জাকারিয়া, শিশির ভট্টাচার্য প্রমুখ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ফ্রান্সের গিমে মিউজিয়ামে প্রত্ন-নিদর্শন পাঠানোর উপর ৭ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে সরকার এর বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ আরো ২ মাস বাড়িয়ে দেয়। এরপর সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলে সুপ্রিম কোর্ট কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে শুনানির জন্য ফুল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।
ফুল বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সেই স্থগিতাদেশ স্থগিত করে। এরপর সর্বশেষ ১১ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শামসুল ওয়ারেছ, নূরুল ইসলাম, মইনুদ্দিন খালেদ ঢাকা জেলা যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে ফ্রান্সে প্রত্ন-নিদর্শন না পাঠাতে মামলা দায়ের করেন।
এর প্রেক্ষিতে কোর্ট ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে ব্যক্তি হিসেবে এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে শোকজ করে। আগামী ১৫ জানুয়ারী এর পূর্ণাঙ্গ শুনানির তারিখ। কিন্তু এর আগেই তড়িঘড়ি করে এসব মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।" সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ১, ২০০৭।
মন্তব্য
কিন্তু উদ্দেশ্যটা কি?
কি বলে নেয়া হচ্ছে? এগুলোর প্রদর্শ্নী হবে ফ্রান্সে? প্রদর্শনীর পর ফিরিয়ে আনা হবে?
কিছু একটা কারন তো দেখানো হচ্ছে । প্রতিবাদ,মামলার বিবরন এসব দেখলাম কিন্তু পত্রিকার রিপোর্টে কোথাও সরকারের বক্তব্য চোখে পড়লোনা ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আসলে সব খবরইতো আমরা পাই পত্রিকা মারফত, তাই কোন সাংবাদিক ভাই যদি একটু বিস্তারিত জানাতেন তাহলে ভাল হতো।
আমি লন্ডনের বৃটিশ মিউজিইয়ামে অনেক বার গিয়েছি, বিশেষ করে মিশরের মমি ও পূরাকীর্তিগুলো আমাকে আকর্ষণ করত। কি নেই এই জাদুঘরে ? যে সামাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না , তার প্রতিটি প্রান্ত থেকে লুট করে এনেছে সে দেশের ঐতিহ্যের নিদর্শণগুলো । তখন কেউ ঠেকাবার ছিল না। দুঃখ বেশি হতো যখন দেখতাম ভারতীয় পূরাকীর্তি। তবু যেতাম, দেখতাম। লন্ডন টাওয়ারে কোহিনুর হীরা রানীর রত্নসম্ভারের অংশ হিসাবে দেখে উচ্চকন্ঠে গালি দিয়েছিলাম (বাংলাতে)।
যদি কেউ ভাবেন, ঠিক আছে, আমাদের পুরাকীর্তি এখন আমরা ফরাসীদেশে গিয়ে দেখব, তাহলে ভুল করবেন। এই বিশেষ মিউজিয়ামের বদনাম আছে তারা এরকম বিদেশী পুরাকীর্তি এনে, তার রেপ্লিকা বানিয়ে ফেরত দেয় সেই দেশকে, এবং আসলটি আকাশচুম্বী দামে বিরাট বড়লোক সৌখিন কালেক্টরের কাছে বিক্রি করে। সেখানে আপনার আমার প্রবেশাধিকার নেই।
যদি ফেরত আসার পরে কার্বন ডেটিং করে নেওয়া হয়, তাহলেই বোঝা যাবে, আসল না নকল। অবশ্য তালিকা যদি সম্পূর্ণ থাকে।
আমাদের সংস্কৃতি উপদেষ্টার নাম এবং তাঁর পুরনো কীর্তিগুলোর কথা নিশ্চয়ই সবাই জানেন।
এটাকে স্টিকি করলাম। সচলদের অনুরোধ করছি এই বিষয়ে আরো পোস্ট এবং আলোচনা করতে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
প্রত্নসম্পদ বিদেশে পাঠানোর জন্য স্বচ্ছতা এবং এ সব সম্পদের বীমা করার বিষয়টি জরুরি। জাতীয় জাদুকর (!) কর্তৃপক্ষের নিশ্চুপতা বিষয়টিকে আরো সন্দেহজনক করেছে।...
এদিকে বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ফ্রান্সে প্রতœœসম্পদ পাঠানোর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী শনিবারও ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে।
প্রতœসম্পদ পাঠানোর প্রতিবাদে শুক্রবারও তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। ওই দিনই প্রতœসম্পদ ফ্রান্সে পাঠানো হয়।
শনিবার সকাল থেকেই চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেলা পৌনে ১টার দিকে তারা 'প্রতœসম্পদ পাচারের' বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান লেখা ফেস্টুন-ব্যানার নিয়ে হাতে হাত রেখে চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পর্যন্ত অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার দিকে কর্মসূচি শেষ করে শিক্ষার্থীরা। ...
(অফটপিক: পোস্টটিকে স্টিকি করার জন্য সচলায়তন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বজলুর রহমানকে ধন্যবাদ । ধারনা পাওয়া গেলো ।
সুশান্তকে ধন্যবাদ লিংকগুলোর জন্য ।
বিপ্লব আপডেট জানাবেন ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বিষয়টি ও প্রতিবাদের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক পরে করবো তার আগে এখনকার জরুরি কর্তব্য সম্পর্কে বলি:
এই পদ্ধতি অস্বচ্ছ ছিলো এবং প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কে আমাদের আশংকার কথা জানিয়ে আমরা ফ্রান্সের মিডিয়ায় আবেদন জানাতে পারি।
গিমে মিউজিয়ামকেও তাদের জবাব ও এগুলো সংরক্ষণে যথাযথ নিশ্চয়তা দিতে বলতে পারি।
প্রত্নতত্ত্ব বিদেশের যাদুঘরে প্রদর্শনী হওয়াটা নতুন কিছু নয়। ইউরোপ ও আমেরিকার মিউজিয়ামগুলো মিশর, চীন, ভারতের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের অহরহ প্রদর্শনী চালায়। সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে আমরাও তা করতে দিতে পারি।
ব্যবস্থাপনার ত্রুটি যদি থেকে থাকে তবে সেটা সমাধানের উপায়ও নিশ্চয়ই আছে।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
- গিমে মিউজিয়াম কেনো শুনবে আমাদের কথা?
মিশর, চীন কিংবা ভারতের প্রত্নতাত্তিক সম্পদের প্রদর্শনী করার শুরুটা কি কোন ছুটির দিনে, সর্বোচ্চ আদালতকে উপেক্ষা করে হয় বিগ সি?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমিও একই কথা ভাবছিলাম। নিজ দেশের লোকেদের বুঝাতে পারছি না, অথবা বোঝানো দূরে থাকুক, তারা চোখের সামনে দিয়েই গোপনে গোপনে কি সব করে যাচ্ছে, সে সম্পর্কেও যেখানে কোন ধারণা পাচ্ছি না, সেখানে গিমে মিউজিয়ামকে কোন মুখে এসব কথা বলতে যাবো আমরা?
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
এ সম্পর্কে আরও মতামত ও যুক্তি খন্ডন পড়ুন এখান থেকে (অনেক বড় বলে তুলে দিচ্ছি না।
http://rezwanul.blogspot.com/2007/12/musee-guimet-controversy.html
আমার মনে হয় প্রতিবাদগুলোর ফোকাস ঠিক হয়নি। গিমে এই ১৮৯টা প্রত্নতত্ব খেয়ে ফেলতে পারবে না। প্রতিবাদ যথাযথ হলে তারা উগড়ে ফেলতে বাধ্য। কিন্তু এগুলোর সেইফটির বদলে প্রতিবাদ হল এগুলো না পাঠানোর জন্যে। এগুলো আন্তর্জাতিক ফোকাসে না এলে কোথাকার কোন সরকারী অফিসে পরে থেকে একসময় চুরি হয়ে যাবে দামী জিনিষগুলি আমরা জানতেও পারবনা। সেটি কি দেশের জন্যে বড় পাওয়া হবে? আর আমিও মনে করি প্রদর্শনীতে দোষের কিছু নেই। তবে এগুলো অবশ্যই সহি সালামতে ফেরত পেতে হবে। নাইলে আন্র্জাতিক ক্যাম্পেইন হবে। এত সহজ না এগুলো মেরে দেওয়া।
কনফুসিয়াসের কথাই ধরুন যদি চোখের আড়ালে এই ১৮৯টির বাইরে আরও প্রত্নতত্ব নিয়ে যায় আমরা কিভাবে জানব? টাকা দিয়ে তো অনেক কিছুই সম্ভব। কাজেই প্রতিবাদ অবশ্যই হবে। প্রশ্নগুলোর উত্তর ফ্রেন্চ সরকারের কাছে চাইব আমরা।
তবে ডিজিএফআই এর আগে বাগড়া দিয়েছিল এগুলো পাঠাতে। তাদেরও এসব প্রতিবাদে কোন হাত আছে কিনা দেখা দরকার।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
কোন একটা পত্রিকায় পড়লাম কিছু প্রত্নতত্ব মূল অবস্থান ছিল লোহার রডের সাথে এবং ফ্রান্সে নেওয়ার জন্য সেখান থেকে কেটে হয়েছে ফলে তা আর আগের মত করে বসানো যাবে না। আর কাটার সময়ও কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
বিষয় বৈচিত্র্য আনতে এটাকে আনস্টিকি করা হল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ভাল হয়েছে, কারণ মোরশেদ ভাই এই বিষয়ে নতুন একটা পোস্ট দিয়েছেন।
সরকার বিষয়টাতে একেবারেই নীরব। এটাও রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
সরকার এ বিষয়ে মোটেও নিশ্চুপ নয়, কেননা সরকারি উদ্যোগেই এ সব হচ্ছে! সরকার একটি স্পর্শকাতর সময় বেছে নিয়েছে, সারা দেশে যখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে এসেছে, তখন কে আর মাথা ঘামাবে এসব নিয়ে!
আমরা কেউই হয়তো জানি না, এইসব অমূল্য সব প্রত্নসম্পদের তালিকায় রয়েছে প্রজ্ঞাপারমিতা নামের একটি অমূল্য গ্রন্থ। এ রকম একটি গ্রন্থ যে কোনও চরম দরিদ্র জাতির জন্যেও পরম গৌরবের বিষয়। হ্যাঁ, এটি ঠিক, এরকম গ্রন্থ অনেক সময় প্রদর্শনীর জন্যে পাঠানো হয়। যেমন, কয়েক মাস আগেই ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে একটি দারুণ প্রদর্শনী হয়েছে, যেটির নাম স্যাকরেড,_ এই প্রদর্শনীতে প্রাচীন থেকে প্রাচীনতর ধর্মগ্রন্থগুলি সংগ্রহ করে প্রদর্শন করা হয়েছিল। এখানে ছিল এমন সব কুরআন শরীফের পৃষ্ঠা, যা অষ্টম শতাব্দীতে লেখা, ছিল হিব্রু ভাষায় লেখা ইহুদিদের প্রাচীন বাইবেলের স্ক্রল, ছিল খ্রিস্টানদের নিউ টেস্টামেন্ট-এর শুরুর দিককার বিভিন্ন সংস্করণ। এর কোনও কোনওটি ব্রিটিশ লাইব্রেরির নিজস্ব সংগ্রহ। কোনওটি আবার প্রদর্শনীর জন্যে নিয়ে আসা। কিন্তু স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বইটি কত পাতার, কোনখান থেকে আনা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
সমকাল নামের দৈনিকটিতে একটি লেখা পড়লাম শিকোয়া নাজনীনের এই প্রজ্ঞা পারমিতা নামে। যেসব প্রত্নসম্পদ পাঠানো হচ্ছে, তার কোনও পুর্ণাঙ্গ তালিকা করা হয় নি। সেখানে পূর্ণ প্রজ্ঞাপারমিতা পাঠানো হলেও উল্লেখ নেই কত পৃষ্ঠা পাঠানো হলো, ইত্যাদি ইত্যাদি...
এটি তো কেবল একটি মাত্র উদাহরণ, ফ্রান্সে গিয়েছে এবং যাচ্ছে আরও অজস্র সব সম্পদ!
আমাদের অনেকেই এ সরকার নিয়ে মুগ্ধ, কিন্তু এই মুগ্ধতার কোনও কারণ নেই, এ ঘটনা তার অন্যতম একটি নজির। জাদুঘর থেকে গোপনে ফ্রান্সে আমাদের প্রত্নসম্পদ পাঠানোর দিনটি একটি কালো দিন, ইতিহাসের কাছে, আমাদের কাছে, আমাদের ভবিষ্যতপ্রজন্মের কাছে এ জন্যে এই তত্ত্বাবধায়ক সামরিক সরকার দায়ী হয়ে রইবেন।
আমরাও অপরাধী হয়ে থাকব, যদি না এর প্রতিবাদে আরও সোচ্চার হয়ে উঠতে না পারি।
নতুন মন্তব্য করুন