জিনিসপত্রের দাম যে কী হারে বেড়েছে তা দেশের মানুষ ভালমতোই টের পাচ্ছে। কানাডায় বসে এতদিনে পত্রিকার খবর পড়েই বোঝার চেষ্টা করতাম। ইদানিং এখানে জিনিপত্রের দামের যে অবস্থা তাতে আমিও উত্তাপ টের পাচ্ছি। তাই সংক্ষেপে সচলদের সাথে শেয়ার করার জন্য এই পোস্ট। আপনাদের কার অভিজ্ঞতা কেমন তা জানলে ভালো লাগত। দ্রব্যমূল্য কানাডিয়ান ডলারে।
পাঁচ বছর আগের কথা
সদ্য প্রবাসী হওয়া মানুষের কাছে সবকিছুই টাকার অংকে হিসাব করার একটা প্রবণতা থাকে। সে কারণে ইউনিভার্সিটির বুকস্টোর থেকে কাগজ-কলম কিনতে গিয়েও মন খারাপ করে ফিরে এসেছি। বন্ধু মল্লিক (ভারতীয়) আসার সময় খাতা কলম সবকিছু নিয়ে এসেছে দেখে মনটা আরো বেশী খারাপ হতো। ৩ ডলার দিয়ে ২০০ পৃষ্ঠার খাতা কিনব এমনটা তো কখনোই ভাবিনি।
সেই সময়ও লংগ্রেইন চালের ৮-কেজির প্যাকেটের দাম ছিল ৪ ডলারের মত। এটিই এখানের সবচেয়ে সাধারণ মানের চাল আর দামেও সস্তা। অনেকটা দেশে যে ধরনের চাল খেতাম সেরকম। সরুও নয় আবার মোটাও নয়। মাঝারি ধরনের।
৪ লিটার ফুলক্রীম দুধ (এখানে বলে হোমো-মিল্ক, হোমোজিনিয়াস মিল্কের সংক্ষিপ্ত নাম) তখন ছিল ৩ ডলারের কিছু বেশী। ১ ডজন ডিম ছিল ২.০৯ ডলার। কিন্তু দেখুন দামের কী দ্রুত পরিবর্তন হলো:
সেপ্টেম্বর, ২০০৩
৮ কেজি সাধারণ চাল: ৪ ডলার থেকে ৪.৫ ডলার
৪ লিটার হোমো মিল্ক: ৩ থেকে ৩.১৯ ডলারের মত
১ ডজন ডিম: ২.০৯ ডলার
জানুয়ারী, ২০০৫
৮ কেজি সাধারণ চাল: ৫.৫ ডলার থেকে ৬ ডলার
৪ লিটার হোমো মিল্ক: ৪ ডলারের মত
১ ডজন ডিম: ২.১৯ ডলার
ফেব্রুয়ারি, ২০০৮
৮ কেজি সাধারণ চাল: ৬.৫ ডলার থেকে ৭ ডলার
৪ লিটার হোমো মিল্ক: ৪.৯৯ ডলার
১ ডজন ডিম: ২.৩৯ ডলার
জুন, ২০০৮
৮ কেজি সাধারণ চাল: ৯.৯৯ ডলার
৪ লিটার হোমো মিল্ক: ৫.৩৯ ডলার
১ ডজন ডিম: ২.৫৯ ডলার
জুলাই, ২০০৮
৮ কেজি সাধারণ চাল: ১৫.৯৯ ডলার
৪ লিটার হোমো মিল্ক: ৫.৪৯ ডলার
১ ডজন ডিম: ২.৭৯ ডলার
পাঁচ বছরে চালের দাম ৪ ডলার থেকে এখন উঠেছে ১৬ ডলারে। এখন রুটি খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
মন্তব্য
আমি বেশ কিছুদিন যাবৎ ভাতের বিকল্প অভ্যাস করছি। যদিও এখানে চালের দাম আবার কিছুটা কমেছে, ১.২৯ থেকে লাফিয়ে ১.৮৯ হয়ে গিয়েছিলো, আবার ১.৪৯ এ নেমেছে, কিন্তু গত বছরের তুলনায় ২০ সেন্ট বেড়েছে। আমি এখন ভাত মাঝে মাঝে খাই, বাকি সময়টা হয় নুডলস নয়তো রুটি-মাংস বা আলু-মাংস।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আগুন সবখানে।
আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
বাঙ্গাল তো, ভাত না খেলে চলে না। তবে ইদানিং অনেক কমিয়ে দিয়েছি ভাত খাওয়া। আমার ঘরে ঝড়টা যায় দুধ আর পেঁয়াজের উপর দিয়ে। ওয়ান অর দি আদার।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
- সবই সৃষ্টিকর্তার পেয়ারা বান্দাদের ইচ্ছা। ভেতো নাছারাও যাতে রোযা-কালামের দিকে মনোনিবেশ করে সেইজন্য এই ব্যবস্থা। দুনিয়া ভইরা গেছেগা জাহেলে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এখানেও চালের দাম ভয়ঙ্কর চড়া।
দুবছর আগে এক রিয়ালে ৪টা ডিম পাওয়া যেতো। এখন এক রিয়ালে দু'টো।
আমার ভাতের চিন্তা করতে হয় না। ভাত জাউ হয়ে যায়, নয়তো পুড়ে যায়। সেই যন্ত্রণায় ভাত ছেড়েছি। ইদানিং ডাল বা সালুন রান্না যাও এক আধটু শিখেছিলাম তাও ভুলে গেছি।
এক রিয়ালে (খবুজ) রুটি কিনি চারটা-পাঁচটার প্যাকেট। তিন বেলা চলে। ভাত খাইনা নয় মাসের বেশি। হা হা হা!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
ভাত খাই একবেলা। আরেক বেলা তৃণভোজী। সকালে দুধ মাস্ট। চালের দাম বেড়েছিলো, এখন কিছুটা কমেছে। ডিমের দামও বেড়েছে, অবশ্য ডিম খাওয়া হয় কদাচিৎ। দুধের শুধু দামই বাড়েনি, কয়েকদিন সাপলাইও দেখি বন্ধ ছিলো। দুধ ছাড়া বাঁচি কেমনে?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ডিম আবার কমছে। রেভেতে ৯৯ সেন্ট।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
বড় কষ্টের জায়গায় হাত দিলেন ভাই। ক'দিন আগে একটা ইন্ডিয়ান দোকানে গেছি চাল কিনতে। আমরা "কেরালা রাইস" নামের একটি মোটা চাল খাই। দোকনদার বললো, এক ব্যাগের বেশী চাল কিনতে পারবোনা, কেননা সবাই তাহলে চাল স্টক করে ফেলবে। এমন উদ্ভট কথা শুনিনি কখনো। শেষ পর্যন্ত তাই করতে হোল।
একবেলাই শুধু ভাত খাই, তাও যদি না পাই, তাহলে এ জীবন রেখে আর লাভ কি?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
পাশ্চাত্যে যারা থাকেন কর্ন ফ্লেক্স খান না কেন ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
হ ঠিক্কইছেন, রুটির দাম বেশি কেক খাইলেই তো হয়
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
কর্ণ ফ্লেক্স খাইতে খাইতে এখন আর ইচ্ছে করেনা। কেবল ভাত খাইতেই মনে হয় কোনদিন একঘেয়ে লাগবেনা। আজব বাংগালি হয়েছি ভাই।
আপনি তো পাঁচ বছরের কথা বললেন, আমার অবস্থাটা চিন্তা করেন ... জানুয়ারীতে এসে চাল কিনতাম (আমি আপনে মনে হয় একই প্যাকেট কিনতাম) ৭-৮ ডলারে, সেই প্যাকেট এখন ১৬ ডলার ... ছয় মাসে ১০০% ...
গতসপ্তায় ওয়ালমার্টে অন্য একটা চাল পেলাম, লংগ্রেইন, ইউএসের প্রোডাক্ট ... দাম তুলনামূলক অনেক কম, ১৮ কেজি প্যাকেট ২০ ডলার ... আরেকজনের কথায় ভরসা করে নিয়ে আসলাম দুই বস্তা, খেয়ে দেখি খারাপ না, দানা একটু ছোট এই যা ...
এই দুই বস্তা শেষ হওয়ার পরে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
আমার কাছের ওয়ালমার্টে কোন চালের বড় প্যাকেট পাওয়া যায়না। থাকলে ভালই হতো। ওয়ালমার্ট না থাকলে আমাদের জন্য এসব দেশে টেকাই মুশকিল হতো। ওয়ালমার্টের সুপারসেন্টার আমার এখান থেকে আধা ঘন্টার পথ।
মনের দুঃখে আমিও লিখেছিলাম
----------------------------------------------
রাজাকার, তুই দেশ ছাড়!
রাজাকারমুক্ত দেশ হোক আমার অঙ্গীকার।
লেখাটা দেখেছিলাম। তখন পড়ার সময় ছিলনা। এখন পড়ে নিলাম।
দেশের বাজারদর কী বিদেশে গিয়েও ঠেকলো।
মোটামুটি ধরনের চাল আগে কিছুদিন আগেও ইউক্রেনে পাওয়া যেতো এক ডলারে প্রায় দু'কেজি। এখন দুই ডলারে এক কেজি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
হুমম, সব জাগাতেই এমন অবস্থা
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সেকি প্রপ্রেমিক ভাই। আপনি একনও ভাত খান। ছি ছি
আসল কথা আমি এখন দুই বেলা খাই। ২ডলারে ৬টা বার্গার ব্রেড কিনি, দুপুর বেলা একটা কলা দিয়ে দুইটা বার্গার ব্রেড খাই। দুইদিন পর দেখি আর ভাল লাগে না (ধরে নিন ছোট ঘর অনিয়মিত হয়ে যায়)।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
এখন বুঝতাছি টিভিতে ক্যান এত বেশি আলু রান্দার প্রোগ্রাম দেহায় !!
ভাতে আমার বরাবরই অরুচি, এটা ছাড়া হাজার হাজার ভাল খাবার আছে কম দামে খাওয়া সম্ভব। আমাদের এখানে বাঙ্গালীরা ভাত খাওয়া কমালে আমি খুব খুশি হতাম। কেন জানেন ? পাকি হারামজাদাদের চালের ব্যবসা পরে যেত ধাম করে। আমার তো মনেহয় আমাদের এখানে পাকিরা যতনা চাল খায় তার থেকে বেশি আমরা ওদের মুনাফা দেই পাকি হারামিদের উৎপাদিত বাসমতি চাল কিনে।
--------------------------------------------------------
পাকিদের চাল আসে সত্য, তবে তারেচে বেশী আসে ভারত থেকে। বাংলাদেশ থেকে কোনো চাল এখানে আসেনা। ভাতের উপর চাপ আসলেই কমাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ থেকে আমাদের এখানে শুধু পোলাওয়ের চাল আসে। সাধারণ ভাতের চাল আসেনা। বাংলাদেশ থেকে আসবে কিভাবে যেখানে আভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
--------------------------------------------------------
যত যাই কন না কেন বসেরা, ভাতের উপরে কিসু নাই, মোটা চিকন লম্বা ছোট যে কোন চালই হোকনা কেন, কামুক দৃষ্টিতে ভাতের দিকে তাকাই আর কাছে পাইলেই ঝাপায় পড়ি
সাইফ
নতুন মন্তব্য করুন