ঘটনা ২০০৬ সালের শুরুর দিকের। কয়দিন আগে একা একা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছি। কানাডার অন্টারিওতে এধরনের লাইসেন্স পেতে এক বছর সময় লাগে। আর যারা মিনিস্ট্রি অনুমোদিত ইনস্ট্রাক্টরদের কাছে প্রশিক্ষণ নেয় তাদের জন্য ৮ মাস। যাই হোক, লাইসেন্স পাওয়ার পরে আর তর সয়না-- এখানে দেখি, সেখানে দেখি, কোথায় সস্তায় গাড়ি পাওয়া যায়। তখন ডিসেম্বরের শেষের দিক। সবাই ক্রিসমাস নিয়ে ব্যস্ত। গাড়ি আর খুঁজে পাইনা। এক সময় মনে হচ্ছিল গাড়ি যদি ওয়ালমার্টে পাওয়া যেত সেখান থেকেই কিনতাম (শোরুমে যাওয়ার কথা অবশ্য চিন্তাও করতাম না)। যাহোক, জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে গাড়ি কিনলাম এবং তার কিছুদিন পরেই শুরু হলো বিপত্তি।
চোদ্দ গুস্টির কেউ কোনদিন চার চাকার মোটরগাড়ি চালায়নি। সে কারণেই মনে হয় ড্রাইভিং সীটে বাঁকা হয়ে বসে থাকতে থাকতে দুই/তিন সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হলো ব্যাকপেইন। অবস্থা এমন যে চেয়ারে বসতে পারিনা, আবার বসলে উঠতে পারিনা।
ভার্সিটির মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে গেলাম এক্স-রে করাতে। তরুণী নার্স কাগজের মত কী একটা ধরিয়ে দিয়ে বলল গায়ের সব কিছু খুলে ফেলে ওটা পড়ে নিতে। শুনে আমার কান লাল হওয়ার অবস্থা। আমার মুখ দেখে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে পর্দা ওয়ালা একটা ঘর দেখিয়ে দিল। সেখানে ঢুকে কাগজের সেই জামা পড়ে দুই হাতে সেটাকে ধরে এক্স-রে টেবিলের উপর শুয়ে পড়লাম। একবার বাঁয়ে ঘুরে এক্স-রে করে আবার ডানে ঘুরে করে। আমি নার্সের নির্দেশ মোতাবেক এদিক ওদিক পোজ দেই আর সাবধানে কাগজ ধরে রাখি; পাছে আবার ই্জ্জত না চলে যায়।
এরা পেশেন্টকে এক্স-রে রিপোর্ট দেয়না, সরাসরি ডাক্তারের কাছে পাঠায়। এটাই নিয়ম। নার্স ৪-৫ দিন পরে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে পরামর্শ দিলেন।
এক সপ্তাহ পরে ডাক্তারের চেম্বারে হাজির হলাম। আমার রিপোর্ট তার হাতে, কিছুটা চিন্তিত। গম্ভীর এবং কৌতূহলী সুরে আমাকে যা জিজ্ঞেস করল তা এরকম:
ডাক্তার: আপনার মেরুদন্ডে যে সার্জারি হয়েছিল এবং সেখানে মেটাল ইমপ্ল্যান্ট করা আছে সেটা আগে বলেননি কেন?
আমি: (পুরাপুরি হতভম্ব, ব্যাটা বলে কি?) কি কইতেছেন আপনি?
ডাক্তার: হ্যাঁ, এইতো দেখুন আপনার এক্স-রে রিপোর্ট।
আমি কানাডা না বাংলাদেশে আছি চারাপাশটা দেখে সেটা বোঝার চেষ্টা করলাম। নিশ্চিত হওয়ার পরে বললাম, 'দেখেন মিয়া জীবনে আমার কোন সার্জারি হয়নি, আর আপনি বলছেন মেরুদন্ডে মেটাল ইমপ্ল্যান্টের কথা?'
ডাক্তারও তখন বুঝতে পারলো অন্য কারো এক্স-রে রিপোর্ট আমার নামে চলে এসেছে, ভুলে। আমি স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলি। বাংলাদেশকে এতদিন খালি খালিই কানাডার কাছে ছোট করেছি বলে কষ্ট লাগল। এখানেও এসব হয় তাহলে!
পরের ঘটনাবলি অব্শ্য কানাডার মতই দ্রুত ও নির্বিঘ্নে ঘটে গেল, তাই সেগুলা নাহয় না লিখি।
মন্তব্য
মেরুদন্ডে মেটাল ইমপ্ল্যান্ট করলে তো বিমানে চলাফেরা করাই একটা কিচ্ছা হয়ে যাবে। উঠতে বসতে সিকিউরিটির মিউজিক ফেস করতে হবে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ব্যাপারটা ভাবার মত। কারো যদি এমন হয় তার অবস্থার কথা চিন্তা করুন!
এইসব লোহা-লক্কড় শরীরে বান্ধা থাকলে এক্স-রে, সিটি স্ক্যানে পচুর গিয়ানজাম হয়। রিং চলে আসে একটা। এই রিং দূরীকরণের উপর আমার একবন্ধু কাজ করেছে এইবার কামরুল হাসান স্যার এর আন্ডারে। জার্নাল পেপার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
- সুন্দরী নার্সের ফোন নাম্বারটা নিয়ে আসতেন, কাজে লাগতো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হা হা হা!!!! মজার অভিগ্তা।
আসলে বাইরের চাকচিক্যখানা বাদ দিলে ভেতরে বাংলাদেশ, কানাডা, আমেরিকা সবই এক।
= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।
এইখানে আসার পর এক বড় ভাই বলেছিলেন, এখানে সবকিছুই বাংলাদেশের মতোই...পচুর গ্যায়ানজাম...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
ঘটনাটা অন্যখানে
আপনি মুগ্ধ হয়েছিলেন ড্রেস পরা সুন্দরী নার্স দেখে
আর সুন্দরী নার্সের মাথা বিগড়ে গিয়েছিল স্বচ্ছ কাগজ পরা আপনাকে দেখে
তাই একটু উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে আরকি
ও কিছু না
সুন্দরী নার্সের সামনে কাগজের নেংটি পরার সৌভাগ্যইবা কয়জনের হয়?
দেখ দেখ কী অবস্থা.. ধূগো দাদা দেখলেন সুন্দরী নার্স আর লীলেন চাচা দেখলেন স্বচ্ছ কাগজের পোষাক। হা হা ....
-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।
কানাডায় আসার আগে গুলশানে আমার মেডিকেলের কথা মনে পড়ে গেলো। আমিও বাচ্চা। নার্সও ইয়াং। সে সব চেক করে-টরে বলে, "জামা খুলেন।" আমি একটানে প্যান্টের জিপার খুলে বেল্টে সবে হাত দিয়েছি আর মেয়ে তাড়াহুড়ো করে বলে ওঠে, "শুধু শার্ট, শুধু শার্ট!"
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
সিরিজের এই পর্বে যা কিছু খোলাখুলি বাকি রয়ে গেছে আশা করি বাকি পর্বে আর সে অপুর্ণতা থাকবেনা
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
এরকম অভিজ্ঞতা আর হয়নি যে
- ছোট্ট একটা টিপস দেই ভাই।
ড্রাইভিং সিটে বসার পরে দুই হাত সামনে মেলে ধরুন। হাতের কব্জি স্টিয়ারিঙের উপরের অংশের বরাবর না আসা পর্যন্ত সিট এ্যাডজাস্ট করুন। এবার সিটটা সোজা করে এমন ভাবে রাখুন যেমনটা আপনি আপনার কম্প্যুটারের চেয়ারের ক্ষেত্রে করেন। অর্থাৎ সিটের পেছনটা সোজা করে রাখুন। এবার যতোখুশী ড্রাইভ করুন, কোনো সমস্যা হবে না।
হাতের মাপে স্টিয়ারিং এ্যাডজাস্টের এই নিয়মটা হলো ড্রাইভিং সিটে বসার প্রথম ব্যাকরনগত শিক্ষা। প্রথম প্রথম একটু ধোকা ধোকা লাগলেও পরে এর সুফল টের পাবেন।
অপশনাল হিসেবে সিটের মধ্যে শক্ত বেতের কাভার লাগাতে পারেন। না লাগালেও ক্ষতি নেই। কিন্তু যেহেতু একবার পেইন হয়েছে, শক্ত কিছুর আবরণ থাকলে আরাম পাবেন।
টিপসটা দিলাম কারণ জগতে আর কিছু না পারলেও ড্রাইভিংটা আমি ভালোই পারি। ওয়ান অফ দ্য বেস্ট না, বরং বেস্ট অফ দ্য বেস্ট দাবী করতে পারি নিজেকে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তাইলে বস, আমি ঠিকই দেখসিলাম! টিভিতে দেখলাম মাইকেল শুমাখার-রে হারায়া কোন এক বঙ্গদেশীয় এফ-১ জিতসে। জেতার পর বগলে দুই ললনা (কার না কার শালী আল্লাই জানে!) নিয়ে সে কি তার পোজ! ভাবসিলাম হাতে তার শ্যাম্পেনের বোতল, ভাল কইরা তাকায়া দেখি সেইটা গোপাল ভাঁড়ের বদনা জাতীয় কিছু! বস, আপনেরেই তাইলে দেখসি, নাকি, হাচা কথা কন তো!
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
কিভাবে এতো ভালো করে শিখলেন......দেশে থাকতে রামপুরা রোডের মুড়ির টিন অথবা এয়ারপোর্ট রোডের ৩ নম্বর বাস চালাইতেন নাকি...
কল্পনা আক্তার
..............................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
ভাবছিলাম আপনি এখানে রসিকতা করছেন। পরে বুঝলাম সিরিয়াস টিপস্ । অনেক ধন্যবাদ।
- নারে ভাই, রসিকতা না। আর রসিকতার মতো এতো বড় গুণ আমার কখনো ছিলোনা, হবেও না কোনোদিন। আগে তো তাও চেষ্টাটা করতাম, এখন বোধহয় আর সেই সাহসও নেই!
আপনার ড্রাইভিং নিয়ে লিখুন। আমি পড়বো মন দিয়ে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
লেখাটা খুবই মজার। শিরোনামে '১' দেখে আন্দাজ করছি এটা একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে। পরবর্তীতে আরো সুন্দরী নার্স, আরো কাগজীয় পোশাক, আরো চমকপ্রদ ঘটনা ঘটার অপেক্ষায়.....
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
আরো কয়েকটা লিখব। তবে আপনি যেমনটা আশা করছেন তেমনটা হয়তো হবে না। তবে এসবেও রং চড়িয়ে লেখা যায়, যদি হিমু কিংবা ধূ.গো কে দিয়ে সম্পাদনা করিয়ে নেয়া যায়।
ডাক্তার যখন বললো-
ডাক্তারের কথায় আপনার আপত্তি করা মোটেও ঠিক হয় নি। আপনি কি ডাক্তারের চেয়েও বেশি বুঝেন ?
কোথায় যেন কৌতুকটা পড়েছিলাম-
মর্গ থেকে লাশগুলোকে সদগতির জন্য গাড়িতে তোলা হচ্ছে। একটা লাশের কাছে আসতেই লাশ দিব্যি উঠে বসে বলছে, এসব কী ! হাসপাতাল থেকে আমাকে কোথায় নেয়া হচ্ছে ? সে যতই বলছে আমি মরি নাই আমি মরি নাই, লোকগুলো ততই তাকে ধমকাচ্ছে-
বেটা চুপ থাক্ ! তুই ডাক্তার থাইকাও বেশি বুঝস ? এই যে ডাক্তারের ডেথ সার্টিফিকেট আছে না !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বেশ হাসির কৌতুক।
ভাইয়া আমারও বেশ ব্যাকপেইন আছে, সাতার এর জন্য বেশ ভালো ব্যায়াম। আর ধূগো যেটা বলেছে সীট ঠিক করে বসা এর কোন বিকল্প নেই।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আমি ড্রাইভিং শেখার সময়েও ধুগো দাদার বলা কৌশলটা রপ্ত করি আমার ইন্সট্রাক্টরের কাছে থেকে। সুফল আসলেই পাচ্ছি। আপনিও করে দেখেন ভাল হবে।
লেখাডা মজা পাইছি। পরের পর্ব চাই।
--------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন