সচলায়তনে নতুন এক অতিথি এসেছেন। নাম তার ভুতুম। উনি এসেই আমাদের একবার অরোরা দেখাচ্ছেন তো আরেকবার নিয়ে যাচ্ছেন সুনীল কুহরে। অথচ নিজেই যে এক কুহরে বাস করেন সেটা কিন্তু বলছেননা। যাহোক, উনি যখন বলছেন না, আমি নিজ দায়িত্বেই ওনাকে খুঁজে বের করে আপনাদের সামনে হাজির করলাম। মালেশিয়ায় রিটন ভাই এবং অস্ট্রেলিয়ায় অরূপ ধরা পড়ার পরে এবার কানাডার জঙ্গলে ভুতুম ধরা পড়ল। তো আসুন দেখি ভুতুম দেখতে কেমন?
ভুতুম দেখতে গেলে বনে যেতে হবে। গেলাম। বনের মধ্যে ঢুকতেই অনেক বিকেল হয়ে গেল। আলসেমি কিছুটা দায়ী, আর বাকিটা প্রকৃতি। সকাল থেকেই টিপটিপ-টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে। এর মধ্যে আর যাই হোক, ক্যামেরা বের করতে আমি রাজি নই। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরেই গেলাম।
বনে ঢুকেই বুঝলাম আজ পাখি নাই। তবে বৃষ্টিস্নাত বন বিকেলের সোনা-রোদে ঝলমল করছে। বিকেলের রোদকে নাকি কনে দেখা আলো বলে। অনেকটা সেরকমই। তবে আলোর বিপরীত দিক থেকেও যে এত সুন্দর লাগে তা আগে তেমনভাবে লক্ষ্য করিনি।
ইতিউতি ঘোরার পরে পাখি না পেয়ে ফিরে আসবো এমন সময় দেখি কাষ্ঠকুহরে আমাদের ভুতুম বসে আছে। শরীরের পুরোটা ভিতরে রেখে শুধু গলা থেকে মাথাটা বাইরে বের করে বসে আছে। (ভুতুমের আবার গলা আছে নাকি? )
ছবি ৩: কাষ্ঠকুহরে ভুতুম (জুম করে দেখানো)
এমনই ক্যামোফ্লেজ নিয়ে বসে আছে যে ভাল করে লক্ষ্য না করায় এতদিন নজরেই পড়েনি। কী আশ্চর্য। একটু একটু কাছে যেতেই ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমিও হাল ছাড়িনা, ক্যামেরা তাক করে দাঁড়িয়েই থাকি। এরকম মিনিট দু্য়েক থাকার পরে আবার বেরিয়ে আসে। আমি চুপচাপ, একদম নড়িনা। আমি নড়ছি কিনা সেটা নিশ্চিত হয়ে আবার ধ্যানে মগ্ন হয়। সেই ফাঁকে নিচের ছবিটা তুলি। (দেখুন কাঠের সাথে কেমন মিশে আছে, কী চমৎকার ক্যামোফ্লেজ!)
তারপর এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে কয়েকটা ছবি তোলা গেল।
এদিকে সন্ধ্যা হয় হয় করছে, আলো কমে গেছে। একটু পরেই অন্ধকার নেমে এলে ভুতুমকে আর দেখা যাবেনা, কিন্তু ভুতুম আমাকে ঠিকই দেখতে পাবে। তারচে বরং বাড়ির দিকে এগোই।
*Eastern Screech-Owl (Otus asio) (বাংলা নাম দিতে হবে)
মন্তব্য
আপ্নেগো জ্বালায় গাছের ভিত্রেও অ্যাট্টু শান্তিতে থাকতে পারলাম না। এই জন্য "অধম জাঝা" দেয়া হইল! আরে ছবি তুলবেন আগে কইলে মুখে একটু মেনিকিউর-পেডিকিউর কইরা লইতাম।
৪ নম্বর ছবিটা যা হইছে না - এইরকম ছন্মবেশ!!! বাব্বাহ!!! সব ছবিই সৌন্দর্য।
আমার লেখা সৌন্দর্য তো হওয়া সম্ভব না, ছদ্মবেশী হইলেও হইতে পারে। না রে ভাই, ছবিগুলা আসলেই ঝাঁঝাঁলো হইছে।
সত্যি করে বলুন তো, আপনি হুতোম নাকি ভুতুম। নিজের পরিচয়টা আগে পরিষ্কার হোক।
বাংলাদেশে আগে লক্ষ্মীপেঁচা দেখা যেত। নজরুল হয়ত সেটাই দেখে থাকবেন।
হুতোম এবং ভুতুম দুইটাই মনে হয় ঠিক। হুতোম বোধহয় আসল শব্দ; আর ভুতুম শব্দটা লোকালাইজড, কিন্তু বেশি প্রচলিত। তাই না? পড়া এবং কষ্ট করে মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অসামান্য ছবি! এখানেও বৃষ্টিস্নাত দিন গেল। কী সুন্দর ঝকঝকে। ক্যামোফ্লাজটা দেখে ভয়ানক অবাক হলাম।
হুমম। ক্যামোফ্লেজের কারণেই এতদিন চোখে পড়েনি। এক বুড়ি আমাকে দেখিয়ে না দিলে আজকেও মিস করতাম।
৪,৫ খুবই সৌন্দর্য।
একবার অনেক রাত পর্যন্ত পানাহার করে সকালে গেছি পুরান ঢাকার এক বাড়িতে শুটিঙ করতে। গলির মাথায় মাইক্রো থামলো। আমি তখনো কিঞ্চিত নেশায়িত। কিন্তু মাইক্রো থেকে নামতেই সব নেশা কেটে গেলো। দেখি পাশের বাড়ির ছাদে একটা প্যাঁচা আমার দিকে ইয়া বড় বড় চোখ মেলে তাকিয়ে আছে।
খোদার কসম দারুন ডরাইলাম। তারপর দেখি সেই বাড়িতে হনুমান বান্দর থেকে নানান পাখি টাখি আরো অনেক কিছু। একটা চিড়িয়াখানা যেন... আমি তো অবাক।
তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম, আসল শুটিঙ শেষ কইরা তারপর এই বাড়ি শুট করুম। এবং করলামও। ঐটা ছিলো সাংবাদিক আবেদ খানদের পৈত্রিক বাড়ি। আবেদ খানের ভাতিজা একলাই থাকে ঐ বাড়িতে, পুরা চিড়িয়াখানা। সবচেয়ে মজা পাইছি তার ভিজিটিং কার্ড দেইখা। সেখানে তার পেশা লেখা "দার্শনিক"
সেই প্যাঁচাটা দারুণ কালারফুল ছিলো। তখন সাথে স্টিল ক্যামেরা ছিলো না। থাকলে ছবি তোলা যাইতো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কালারফুল প্যাঁচা তো থাকার কথা নয়। ওটা কি সাদাটে ছিল? তার উপর বাদামী ছোপ ছোপ? তাই যদি হয় তাহলে ওটাই লক্ষী পেঁচা। নিচে ছবি দিলাম।
বছর কয়েক আগের ঘটনা। ঠিক খেয়াল নাই, তবে হলুদ রঙটা চোখে লেগেছিলো খুব। হলুদ গাত্র প্যাঁচা নাই পিথিমিতে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সবুজ বাঘ থাকলে, হলুদ সাংবাদিক থাকলে, হলুদ পেঁচাও থাকতে পারে এইখানে অনেক ধরনের ছবি আছে।
অসাধারণ ছবি!
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
অসাধারণ মন্তব্য
চার নম্বর ছবিটা দেখে মনে হয় যেন ওটা কাঠের ভাস্কর্য!
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ধন্যবাদ পলাশদা।
অসাধারান ছবি!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
বাহ্ ভুতুমের সম্পর্কে লেখা পড়ে আমারও জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছিলো, এবারে আদ্যোপান্ত জানানোর জন্য আপনার মতোন ধৈর্য্যশীল আলোকচিত্রীকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না।
ভুতুমের ক্যামোফ্লেজ অসাধারণ লাগিচ্ছে, আসলেই আপনার প্রকৃতি দেখার চোক আছে ।
ভালৈছে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
সেই যে একটা বাংলা ছায়াছবির গান আছে না !-
'রাগলে তোমায় লাগে হুমুম পেঁচার মতো কালো' কথাটা তাহলে ঠিক না !
ছবিগুলা দুর্দান্ত হইছে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হা হা.. আর যাই হোক কালো রঙের হুতোম বা ভুতুম পেঁচা কখনো দেখেছি বলে মনে পড়ছেনা।
আরে ভুতুম ভাইতো দারুন ছদ্মবেশী
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কি সুন্দর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র!
আমি প্যাঁচা খুব পছন্দ করি৷
----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
একবার চাটগাঁর লোকাল পত্রিকায় খবর বেরুলো ফয়েজলেকে একটা বিরল সাদা পেচা ধরা পড়েছে সেটা এখন চিড়িয়াখানায় রাখা আছে। গিয়ে দেখলাম ঠিক সাদা না, সাদার মধ্যে হালকা বাদামী ছোপ আছে। আমি পেঁচাটেচা চিনি না, তাই বিবরনটা লিখে মেইল দিলাম পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম ভাইয়ের কাছে, ইনাম ভাই বললেন এই পাখীতো ইদুর ছাড়া কিছু খায় না। চিড়িয়াখানার কতৃপক্ষ কি খাওয়াচ্ছে? আমি জানালাম ওরা তো কলাটলা ট্রাই করতেছে। কিন্তু পেঁচামামা মুখভার করে বসে আছে। কিছুই খায় না। উনি বললেন ওদেরকে ইঁদুর খাওয়াতে বলেন, নইলে বাঁচবে না।
আমি মুশকিলে পড়লাম, পেচাকে ইঁদুর খাওয়াবে না বাদাম খাওয়াবে আমি বলার কেটা! তবু আবার গিয়ে আলগা ভাবসাব নিয়ে কিউরেটরকে বললাম, "দেখুন আমি একজন পাখি বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের সদস্য, এই পেঁচাটাকে ইন্দুর না খাওয়ালে ওটা মরে যাবে দুদিনেই, বার্ডস ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক আগামী পরশু বিরল পেঁচাটা দেখতে আসবেন। সুতরাং..............হুমমম"
হুমকিতে কিছু কাজ হল বোধ হয়, হাকডাক শুরু হলো। ওরে যা যেখান থেকে পারিস ইঁদুর ধরে আন, বার্ডস ক্লাবের সভাপতি আসতেছে।
আমি শান্তি নিয়ে ফিরে এলাম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তাও ভালো, ধরার সাথে সাথে ওটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেনি। আপনার তাৎক্ষণিক বুদ্ধির প্রয়োগের ফলে সেযাত্রা বেঁচে গিয়েছিল। আপনাকে ধন্যবাদ।
ভাই আপনি তো বিরাট 'হুমমম...' দাতা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এক হুমেই কিউরেটর কাইত। কিন্তু প্রশ্ন হলো পেঁচা ইঁদুর খায় সেটা কিউরেটর জানবেনা সে কেমন কথা?
পরে শুনেছি, আসলে টাকা দিলে তো গরু খাসী সব পাওয়া যায়, কিন্তু ইন্দুর পাবে কই। তাই সহজলভ্য কলা, বানরের বাজেট থেকে মেরে দেয়া। পেঁচা পোষা সহজ কাজ নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হা হা...............কি করবো বলুন সেই চাপাবাজিটা না করলে তো হুতোমের প্রান যাচ্ছিল।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ছবি ৩ আর ৪, এমনিতে দেখলে মনে হবে কাঠের কাজ। দারুণ তুলেছেন
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার কম্পিমেন্ট পেলে কার না ভালো লাগে!
৪ নাম্বার ছবিটা তো দারুণ!!!
সব্বাই কেন সারাক্ষণ তাদের বিভিন্ন রকম গুণের পরিচয় দিতে থাকবে? আমরা যারা কিচ্ছু পারি না, তারা কি বানের জলে ভেসে এসছি নাকি, আমাদের মনখ্রাপ হয় না?! আমি কিন্তু আসলেই ক্ষেপে যাচ্ছি আস্তে আস্তে ............
আমার তো লেখা হয়না, তাই সহজ কাজটাই করি আরকি।
- আমার ভুতুমের নাম শুনলেই হুতুমের কথা মনে হয়। আর হুতুমের কথা মনে হলে আমার ঘুটুমের কথা মনে পড়ে। ঘুটুমের কথা মনে হলে আমার গুতুমের কথা হৃদয়ে ভাসে। গুতুমের পিছলামির কথা মনে আসলেই আর থাকতে পারিনা। ডর করা শুরু করে!
অতএব, আমার ভুতুমে ভয় আছে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পিপিদা। তিন নম্বরটা জোশ। কিউট ভুতুম।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
এইটা আমারো বেশি ভালো লেগেছে। কেমন বিড়ালেরবাচ্চা-বিড়ালেরবাচ্চা ভাব।
ভুতুম নামটা যেমন কিউট, পিপিদার ছবিগুলাও খুব কিউট। ইশ, এরকম ছবি যদি তুলতে পারতাম
পারবেন পারবেন, লেগে থাকেন। ছবি তোলার জন্য ভালো ইকুইপমেন্ট দরকার হয়। আমি ১৫বছর পরে এসে একটা কিনতে পেরেছি। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, দেরীতে হলেও
নতুন মন্তব্য করুন