নগরে নিসর্গ শিরোনামে একটা ধারাবাহিক লেখা শুরু করব ভাবছি প্রায় ২-৩ বছর ধরে। আজ পর্যন্ত শুরু করতে পারিনি। শহুরে জীবনে প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া যতটা কঠিন ভেবেছিলাম, কানাডায় এসে পেয়েছি তার উল্টোটা। এখানে কয়েকটা বড় শহর বাদ দিলে শহর বলতে যা বোঝায় তা কনক্রিটের জঙ্গল নয়, বরং শান্ত একটা গ্রাম গ্রাম ভাব আছে। অধিকাংশ বিল্ডিংই ৪০-৫০ বছরের পুরানো, শুধু নিয়মিত সংস্কার আর সংরক্ষণের কারণেই এতদিন পরেও বসবাসের উপযোগী আছে।
বাড়িঘরের আশেপাশে তো বটেই, খোদ ডাউনটাউনের আশেপাশেই বড়বড় গাছওয়ালা পার্ক হরহামেশাই চোখে পড়ে। যত্নে লালিত এসব পার্কে মানুষের বসার জন্য সুন্দর কাঠের বেঞ্চ পাতা, পার্কিংয়ের জায়গা, ওয়াশরুম, পানি খাওয়ার ব্যবস্থা, আরো কত কিছু।
গ্রীষ্ম শুরু হলেও পার্কগুলোতে এখনো শীতের আমেজ কাটেনি। জংলা ঘাস হাঁটু পর্যন্ত বেড়েছে, কাটার কোন লক্ষণ নেই। জানিনা কবে পরিষ্কার করবে। টিউলিপ বেডে গাছগুলো নতুন করে ফুল ফোটানোর অপেক্ষা করছে।
ছবি ১: পপি ফুল (ফুলটা চিনিয়ে দেয়ার জন্য মূলত পাঠক-কে ধন্যবাদ)
ছবি ২: আলোর কুঁড়ি (পপি ফুলের কলি)
ছবি ৩: উপরে যে ফুলের ছবি, একটা তার কলি।
বিকেলের আলোটা এমনভাবে পড়েছে হঠাৎই মনে হলো সূর্যের বিপরীতে ছবি তুলে দেখি কেমন হয়। ফটোগ্রাফির কৌশল রপ্ত করতে অনুশীলনের বিকল্প নেই। থিউরী কপচিয়ে লাভ আছে, কিন্তু বাস্তবায়নের জন্য মাঠে নামতেই হবে। আলোর বিপরীতে বেশ কয়েকটা ছবি তুললাম, কোনকোনটা মোটামুটি মানের, তাই শেয়ার করছি।
বাড়ির কাছে স্যান্ডউইচ পার্ক। কয়েক সপ্তাহ আগে কানাডা রাজহাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে।
ছবি ৪: সিলুয়েট করতে চাইলাম, হলোনা। ব্যাকগ্রাউন্ডে সবুজ ঘাস রেখে সিলুয়েট করার চেষ্টা বোকামি।
ছবি ৫: সূর্যের বিপরীতে তোলার কারণে হাঁসের বাচ্চাগুলোর শরীরের চারপাশে একধরনের আলোর প্রভা সৃষ্টি হয়েছে।
ছবি ৬: কবুতরটা হাঁটতে হাঁটতে একেবারে কাছে চলে এলো। এসে নিজেই একটা চমৎকার কম্পোজিশনের সুযোগ করে দিল।
প্রায় দুই ঘন্টা ধরে সূর্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাঁসের বাচ্চার পিছনে ওৎ পেতে থেকে মাথা ধরে গেছে। নগরে নিসর্গ নিয়ে আজকেও লেখা হলোনা।
মন্তব্য
২,৩ আর ৬ নং ছবিগুলো বেশি ভালো লাগলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ, পান্থ।
ফুলগুলো দেখে তো পপি বলেই মনে হচ্ছে। মানে ক্যালিফোর্নিয়ান পপি নয়, ওগুলোতে পাপড়ি সিঙ্গল রো'তে থাকে। রেগুলার পপি।
আরে পাঠক, আপনি তো দুর্দান্ত। এত খুঁজলাম অথচ বেরই করতে পারিনি। হ্যাঁ, এটা পপিই, রেগুলার পপি। অনেক ধন্যবাদ।
দারুণ ছবি-ব্লগ, পিপি'দা! শিরোনামটা খুব পছন্দ হয়েছে। ঠিক এমন কিছুর পরিকল্পনা অনেক দিনের। আলাদা মজা পেলাম তাই ছবিগুলো দেখে।
বাস্তবায়ন করে ফেলেন। আমার আরেকটা পরিকল্পনা যেটা আর বাস্তবায়নের সুযোগ এই মুহূর্তে নেই-- দেয়াল লিখনের কালেকশন। দেখেন দেশে কেউ করতে পারি কী-না।
হাঁসের ছবিটা দারুণ হইছে।
সিলুয়েট কী ?
সিলুয়েট একটা বিশেষভাবে তোলা ছবি যাতে মূল বিষয়বস্তুর শুধু আউটলাইন আসে, পুরোটাই অন্ধকার থাকে, অথচ ব্যাকগ্রাউন্ড মোটামুটি পরিস্কার দেখা যাবে-- এমন। বিস্তারিত দেখুন উইকিতে।
শেষের ছবিটা বেশি জোস ...
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
- কী আর কইবাম পিপিদা,
নগরে নিসর্গ নিয়ে কোনো চুদুরভুদুর চইলত 'ন। তাত্তাড়ি লেখা চাই।
আর হ্যাঁ, দুই নাম্বার ফটুকটা আসলেই দুই নাম্বার। মানে কিঞ্চিৎ অশ্লীল!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দুই নাম্বারটা তাহলে দুই-নম্বরী হয়েছে বলছেন? হাঃ হাঃ হাঃ শুরুতে আমার মাথায় একদম আসেনি কেন আপনি কিঞ্চিৎ অশ্লীল বললেন। নীচে দ্রোহী'র মন্তব্য পড়ে বুঝলাম
ছবি ও লেখায় একরাশ মুগ্ধতা !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অনেক আনন্দিত, কীর্তিনাশা। ধন্যবাদ।
অসাধারণ সব ছবি!!!!!!!!!!!
দুই আর তিন নং ছবিতে ফুলের কলিগুলোকে দেখতে শুক্রাণুর মত লাগছে।
অসাধারণ মন্তব্য, থ্যাঙ্ক্যু
পপি ফুলের ছবিগুলো দেখে মাথা ঘুরে গেল। এরুম স্বর্গীয় ফুলের চাষ বন্ধ করার নিন্দা করি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তবে এই পপি থেকে ঐ জিনিস বোধ হয় হয়না। ঠিক জানিনা অবশ্য। বেশ কয়েক ধরনের পপি আছে, এর মধ্যে একটা হলো ৪ বা ৬ পাপড়ির পপি। আর উইকি থেকে দেখুন আফিম পপি।
আপনি এক কাজ করেন, ফোটোব্লগের স্ট্যান্ডার্ড ছবিসংখ্যার ফ্লোর ১০ এ নিয়ে আসেন।
মিনিমাম দশটা ছবি দিতে হবে, এই ধনুকভাঙা পণ করুন।
রাজহাঁস আর পপির কলির ছবি দারুণ এসেছে।
সচলায়তনে দেয়ার জন্য ১০টা ছবি বের করা একটু কঠিন আছে।
আমি আমার আগামী ফোটোব্লগের থিম ঠিক করেছি ঘাসফুল। এখানে পথের পাশে বেশ চওড়া ঘাসের চাপড়া থাকে, সেখানে প্রচুর ঘাসফুল ফোটে (বিশেষ করে কম্পোজিটায়ি ফ্যামিলির), সেগুলোর ছবি তুলে বেড়াচ্ছি। সবক'টার বাংলা নাম জানি না, এজন্যে নিজেই একটা করে বাংলা নাম বানিয়ে দেবো ঠিক করেছি। ঝামেলা হচ্ছে আমার পুরনো ২৮-৭০ মিমি লেন্সটা ক্যামেরার সাথে ঠিকমতো বনে না, ওর অ্যাপারচার সর্বোচ্চ হয়ে আছে, তাই সব ছবির ডেপথ অব ফিল্ড মারাত্মকরকম কম। ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারলে একটা দূরপাল্লার ইন্টারকন্টিনেন্টালব্যালিস্টিকলেন্স কিনবো ভাবছি।
আমারো একই অবস্থা- মন্দা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দেখা গেল অন্যদিকে টান পড়ে। ক্যাননের ১০০-৪০০এল-টা কেনার শখ বহুদিনের। এর মধ্যে অরূপ ১০-২২মিমি-এর লোভ লাগিয়ে দিয়েছে। ইদানিং মুস্তাফিজ ভাইয়ের ৭০-২০০/এফ২.৮ দেখে একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছি। টার্গেট ঠিক করতে পারছিনা। ডলারের মূল্যমান কানাডার সমান বা কাছাকাছি এলে হয়তো ১০০-৪০০ই কিনবো। দেখা যাক। আপনিও একটা কিনে ফেলেন। তবে আপনার যেহেতু ফুলের প্রতি আগ্রহ বেশী, ম্যক্রো ম্যাগনিফিকেশন বেশী আছে এমন লেন্স কিনতে পারেন।
পিপিদা, ক্যানন ৭০-২০০/এফ২.৮ লেন্সটা ১০০-৪০০ এর থেকে শার্প ছবি দেয়। স্রেফ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আর রেঞ্জ বাড়াতে হলে ৩০০ এফ ৪ এর সাথে ১.৪ কনভার্টার যোগ করতে পারেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হুম। আমিও পরে জেনেছি ১০০-৪০০ তেমন সুবিধার নয়। সবচেয় বড় সমস্যা হল স্লো। ৭০-২০০ এফ২.৮ কেনার সামর্থ নেই, ২০০০ ডলারের উপরে দাম। আমি মাঝে মাঝে ৩০০মিমি এফ/৪ এর চিন্তা করি। অবশ্য ২০১০ এর শেষে এসে কোনটিই কেনার কথা ভাবছি না।
...............................
নিসর্গ: বাংলার প্রকৃতি
২-৩-৫ নম্বরে যে আলোর খেলা সেটা কি প্রাকৃতিক, না আপনার দেয়া?
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
১০০% ন্যাচারাল। কোনো আর্টিফিশিয়াল রং বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়নি
আলোর বিপরীতে যেকোন রোমশ জিনিসের ছবি এরকম দেখাবে। মডেল ফটোগ্রাফিতে এরকম ছবি হয়তো দেখে থাকবেন, মডেলের চুলের চারপাশ দিয়ে একটা আলোর বর্ডার দেখা যায়, সেটা অবশ্য আর্টিফিশিয়াল লাইট দিয়ে করে। তবে আমারটা একেবারে প্রাকৃতিক।
৫ আর ৭ নংটা জবরদস্ত হইছে। হাঁস গুলারে তো পুরাই পরমহংস মনে হইতাছে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
মনে হচ্ছিল হাত দিয়ে ধরি। কিন্তু মা হাঁসগুলো বেশ আক্রমণাত্মক।
দারুণ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সুন্দর ছবি।
সুন্দর
দারুণ সব ছবি। বিশেষ করে শেষেরটা মারাত্মক রকম সুন্দর।
নতুন মন্তব্য করুন