কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম দূরে কোথাও ঘুরে আসি। সেপ্টেম্বর সেশন শুরু হয়ে গেল, অথচ কোথাও যাওয়া হলোনা। আবিয়াস-এর কাছ থেকে লন্ডনে ঘুরে যাওয়ার প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে লুফে নিলাম। এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে, ওয়েস্টার্ন দেখা হবে আর রুবিলালের খোঁজও নেয়া হবে।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ফল (Fall)-এর আমেজ ততটা পাওয়া যায়না। আমেজ না থাকলে কি হবে তাপমাত্রা এখনই ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। সেদিন ফলের জন্য হাহাকার করছিলাম। ভেজাভেজা হালকা বাতাস আর গোমরামুখো মেঘের আবরণে আকাশ ঢাকা থাকলেও সেদিন বেরিয়ে পড়েছিলাম প্রকৃতির রঙ দেখতে। প্রকৃতি নিরাশ করেনি, প্রকৃতি কখনোই নিরাশ করেনা। প্রকৃতির মাঝে যত বহুমাত্রিক সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তা সারা জীবন দেখলেও অতৃপ্তি রয়ে যাবে, একঘেয়ে লাগবেনা। হয়তো এক মাত্রা দেখতে দেখতেই সময় ফুরিয়ে যাবে।
হাইওয়েতে উঠেই ফলের আমেজ পেলাম। এমন সৌন্দর্য বাড়ির আশেপাশে সচরাচর দেখা যায়না। মুগ্ধ হয়ে দেখছি আর ভাবছি প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যদি জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যেতো, হয়তো ভালই হতো।
হাইওয়ে ধরে সোজা উত্তর-পূর্বে চলছি লন্ডনের উদ্দেশ্যে। একটু পরে পরে দুইপাশে সারি সারি ম্যাপলের বন। এক সারি টকটকে লাল, আরেক সারি পাকা আমের মতো হলুদাভ-কমলা, কতক উজ্জ্বল হলুদ, বাকী গুলো সবুজ। সকলে মিলে যেন একটি পরিবার-- কেউ বয়স্ক, কেউ যুবা, কেউবা নবীন। যেন আসন্ন উৎসবে যোগ দিতে নিজের গায়ে নিজেই রঙ করে রোদে শুকাতে দিয়েছে।
গাড়ি চলছে একশ-দশ কিলোমিটার গতিতে। চোখে ঝলক দিয়েই ম্যাপলের বন গুলো চলে যাচ্ছে পেছনে। সরে যাচ্ছে দ্রুত। তার পরই দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। দুপাশে যতদূর চোখ যায় ঝলমল করছে ভুট্টার ক্ষেত। স্থানে স্থানে বেড়া দেয়া সবুজ মাঠ, সেখানে গরুর পাল অলস ভাবে চরে বেড়াচ্ছে। বিদ্যুতের তারে হঠাৎ দু্য়েকটা ঈগলের মতো বড় পাখি চোখে পড়ে।
দেখছি আর ভাবছি প্রকৃতি এত মনোহর হয় কী করে। এত রূপ কিভাবে সে ধারণ করে। রবীন্দ্র সঙ্গীত বেজে চলছে। কত যে তুমি মনোহর মনই তাহা জানে... অসাধারণ এই গানটি যেন চারপাশের পরিবেশকেই সুরের ঢেউয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে। দ্রবীভূত হয়ে যাই অজানা আনন্দে, চোখে জল এসে যায়। কবিগুরু কাকে ভেবে এই গান লিখেছেন জানিনা, শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি; হারিয়ে যাই প্রকৃতি আর গানের ঐকতানে।
কত যে তুমি মনোহর মনই তাহা জানে,
হৃদয় মম থরোথরো কাঁপে তোমার গানে।
আজিকে এই প্রভাতবেলা মেঘের সাথে রোদের খেলা,
জলে নয়ন ভরোভরো চাহি তোমার পানে।
আলোর অধীর ঝিলিমিলি নদীর ঢেউয়ে ওঠে,
বনের হাসি খিলিখিলি পাতায় পাতায় ছোটে।
আকাশে ওই দেখি কী যে -- তোমার চোখের চাহনি যে,
সুনীল সুধা ঝরোঝরো ঝরে আমার প্রাণে।
|
লন্ডনে পৌঁছে আমরা একটা বীচে গিয়েছিলাম। সেটা অনেকটা কক্সবাজারের মত বীচ। ঢেউ গুলো প্রায় সেরকম সাইজের। তবে এত ঠান্ডা ছিলো যে ক্যামেরা বের করা কঠিন হচ্ছিল। সেখানের দুইটি ছবি:
ফলের আরো কয়টি ছবি:
মেঘলা দিনে একটুখানি রোদ উঠেছিল। দেয়ার মতো ছবি আসলে তুলতে পারিনি। তাও এই কয়টা মন্দের ভালো বলতে পারেন।
মন্তব্য
বস, ছবি কম কম লাগে ... আরো কয়েকটা দিলে ভালো লাগতো
আমি ভাবসিলাম এইবার ফাটায়ে ছবি তুলবো, কেন জানি হইলো না
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
একি হইল পিপিদা, ১ খান ছবি মাত্র? ২-৩ টা জুড়ে দেন আরো।
আপনার নতুন জোগ করা ছবিগুলার মাঝের ফলের প্রথম ছবিটা অনন্য, রিফ্লেকশন টা দেখে কেমন যেন একটা শান্তি শান্তি ভাব হইল।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কিংকং, সাইফ,
আরো কয়টা ছবি দিলাম। দেইখো পছন্দ না হলে আমার দোষ নাই কিন্তু তারচে বরং গানটা শোন, ভাল্লাগবে।
গান নিয়ে ব্যস্ত হইসেন কেন পিপিদা, আপনার ছবি দেখে চোখ জুড়ায়, প্রাণ ঠান্ডা হয়, অন্য কেউ হইলে ব্যঙ্গ করে বলতাম, "ধুর মিয়া কি সব ছবি দেন, দেখলে টাশকি লেগে যাই" কিন্তু সত্য কথা হইল যে, আপনার ছবি দেখে গিয়ে ক্যামেরা কিনে আপনার কাছে তালিম নিতে ইচ্ছা হয়। অসাধারন আপনে আর আপনার এই ক্যামেরাবাজী।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বীচের ছবিগুলো কি একটাও ভালো আসে নাই?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
একটাও ভালো আসেনি। সেখান থেকে দুটা দিলাম।
বীচের প্রথম ছবিটাতে আলো থাকলে আরো চমৎকার হতো...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই, ভাল লাগল, কিন্তু লেখার দৈর্ঘ্য এবং ছবির সংখ্যা দুইটিই কিছুটা হতাশ করল। শুরু হতে হতেই যেন শেষ হয়ে গেল।
১ আর ৪ নম্বর ছবি কোন বিশেষ কারনে ভীষণ স্মৃতিজাগানিয়া। ২ এবং ৩, ছবি হিসাবে ভাল হলেও সেই বিষণ্ন ভাব এনে দেয় (শীতকালের মেঘলাদিনে ইউরোপের পাথুরে দেয়ালগুলো আমাকে সবসময় বিষণ্ন করে)।
আনন্দময় হোক আপনার ইউরোপ ভ্রমন।
গান-ছবি-লেখা সবই ভালো লাগলো, তবে জনতার দাবীর সাথে একমত আরো ছবি চাই!!
খোদারিকসম!
: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: :
'Cinema is over' - Master Godard
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অবশেষে ফলের দেখা মিললো আপনার! ছবিলেখা ভালো লাগলো।
.............................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
২ নং ছবিটা গুল্লি হৈছে!
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ছবিটা দারুণ লাগলো!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ছবি গুলা দারুণ লাগল পিপিদা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
এবারের ছবিগুলো আপনার আগেরগুলোর মত অত ভালো লাগলো না। দুই আর তিন নম্বর ছবিদুটো সুন্দর হয়েছে।
ক্যানাডায় যে একটা লণ্ডন আছে এটা জানতে আমার বহু বছর লেগেছিলো।
জ্বী ভাই, প্রকৃতির যে অবস্থা এবার, ছবি তোলাই মুশকিল। গতকালই একটু রোদ উঠেছিল। ধন্যবাদ।
ক্যানাডায় প্রকৃতির এই বৈচিত্রপূর্ণ বদল সত্যিই অপূর্ব! শীতকাল এত বছরেও ভালোলাগাতে পারলাম না, তবে শীতের আগে, পরের সুন্দর পরিবর্তনের জন্য তা সয়ে যায়।
ছবি ভালো লাগলো!
দৃশ্য সুন্দর। কথন সুন্দর। সুর্বাঙ্গ সুন্দর।
মহসীন রেজা
- ফাঁকিবাজী, পুরাই ফাঁকিবাজী হইছে পিপিদা। কইষ্যা মাইনাস।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কী করতাম ভাই, তোলার মতো ছবি পাইনা তো।
- এইটা একটা কথা বললেন? হিমুরে দেখেন, ও তীরুদার বাড়িতে গিয়া সেই বাড়ির সিঁড়ির ফটুক পর্যন্ত তুলছে তেড়াবেঁকাকাইতচিৎ হইয়া। আর আপনে কন তোলার মতো জিনিষ পান না। বলি আপনার এলাকার সব জনগনী কি হলিডে করতে উত্তর মেরুতে মাইগ্রেট করছে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হা হা .. এরকম দিতে দিয়েই তো কইষ্যা মাইনাস খেলাম
নতুন মন্তব্য করুন