"কত টাকা হলে চলে?"-- প্রশ্নটা কি অবান্তর?
কারো কাছে হয়তো অবান্তর, কারো কাছে নয়। জীবন ধারণ করতে কত টাকা দরকার তার কোন সঠিক উত্তর সম্ভবত দেয়া সম্ভব নয়। টাকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কোন এক সময় পণ্যদ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যমেই জীবন-জীবিকা চালানো সম্ভব হলেও এখন কুলোটা দিয়ে মুলোটা নেয়ার দিন শেষ। বিনিময় এখন কাগজের নোটে। চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ক-টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে।
বাংলাদেশের সরকারী চাকুরীতে এক সময় বেতন স্কেল ছিল ৪৩০০ টাকা। তার পর সেটা বোধ হয় ৪৮০০ টাকায় উঠেছিল। আমার জানার পরিধি এ পর্যন্তই। এর পর একাধিক পে-স্কেল হয়েছে। বেতন বেড়েছে। কিন্তু সেই সাথে বেড়েছে মূল্যস্ফীতিও। ফলে বাড়তি বেতনে ক্রয়ক্ষমতা যে একই হারে বেড়েছে তা বলা যায় না।
পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফেরা কি সম্ভব? এটা কি কোন কার্যকর চিন্তা?
বুয়েটের এক সিনিয়র ভাই বলেছিলেন, "কবির, ১২ বছর আগে এই ভুল করেছিলাম" একই ভুল তুমি করো না।
এর ব্যতিক্রমও আছে। বুয়েটেরই আরেক ভাই পিএইচডি শেষে দেশে ফিরেছেন। ভালোই আছেন। আমার শিক্ষক পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরেছেন দেশকে অনেক কিছু দেয়ার আছে বলে। তার মতে, বেড়ানোর জন্য বিদেশ ভালো, থাকার জন্য নয়।
এ্যাডভাইজারকে বলেছিলাম, এতদিন বিদেশে থাকার পর দেশে ফেরা কঠিন হবে। উনি বলেছিলেন, আমরা (সমষ্টিক অর্থে) ফেরার জন্য এখানে আসিনি।
কিন্তু আমি জানি, আমি থাকার জন্য এখানে আসিনি। অন্তত প্রথম চার বছরে তেমনটাই পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি পরিকল্পনাতে গলদ ছিল। অন্তত এসপার ওসপার পরিকল্পনা করলেই বোধহয় ভালো হতো।
দূর থেকে দেশ সেবা?
এখন ইন্টারনেটের যুগ, সবকিছু ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়। যোগাযোগ এখন সবচেয়ে সহজ একটা জিনিস। বিদেশে বসেও দেশকে সেবা করা যায়। কিভাবে? নানা ভাবে। নির্ভর করে কী ধরনের কাজ, তার উপর।
দেশ ভীষণ টানে। ভীষণ। ৭ বছর হয় ঢাকা দেখিনা। কিন্তু সহসাই যে দেশে যেতে পারবো তেমন সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। সবকিছু উপেক্ষা করে গেলেও বাবা-মায়ের টান অমোঘ, উপেক্ষা করা যায় না।
দেশে নাকি সবকিছুর দাম ৭ বছর আগে যা দেখেছিলাম তা থেকে ৫-১০ গুন হয়ে গেছে। যেমন, যে রিক্সা ভাড়া আগে ১০ টাকা ছিল, সেটা নাকি এখন ৫০ টাকা। হবেই তো। তাদেরও তো খেয়ে পড়ে বাঁচতে হবে।
পড়ালেখা শেষের পথে এসে এই ভাবনাগুলোই কেবল ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশে যাব কি যাব না; গেলে কোথায় কী করবো; সংসার চালাবো কিভাবে; বাবার হোটেলে আর কতদিন খাবো; ইত্যাদি।
মাসে কত টাকা হলে সংসার চলবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে কার কতো প্রয়োজন তার উপর। আসলে প্রয়োজনের তো শেষ নেই। না, আসলে প্রয়োজনের শেষ আছে; খায়েশের শেষ নাই। আমরা অনেকেই হয়তো হিসাব কষি খায়েশ মেটানোর জন্য।
আচ্ছা দেখা যাক প্রয়োজন গুলো কি কি?
০ বাসা ভাড়া (৩ বেড রুম)
০ খাওয়া খরচ (কমপক্ষে ৬ + ১ শিশু)
০ বাচ্চার স্কুলের + স্টেশনারির খরচ
০ নিজের ও বাচ্চার যাতায়াত (বাস/রিক্সা/গাড়ি?)
০ বাচ্চার পোষাক
০ উৎসবে উপহার, বন্ধু বান্ধবের জন্মদিন, ইত্যাদি
০ পোষাক আশাক
০ উৎসব (ঈদ, বইমেলা, বৈশাখি মেলা, ইত্যাদি)
০ ভ্রমণ (গ্রামের বাড়ী যাওয়া, পর্যটন)
০ বাসা ভাড়া (৩ বেড রুম) : ২০-৩০ হাজার টাকা (?)
০ খাওয়া খরচ (কমপক্ষে ৬ + ১ শিশু) : ১০-১৫ হাজার (?)
০ বাচ্চার স্কুলের + স্টেশনারির খরচ : ৫-১০ হাজার (?)
০ নিজের ও বাচ্চার যাতায়াত (বাস/রিক্সা/গাড়ি?): ৫-৭ হাজার (গাড়ি ছাড়া), ১০-১৫ হাজার (গাড়ি থাকলে) (?)
মাসিক আনুমানিক: ৪০-৫০ হাজার থেকে ৭০-৮০ হাজার টাকা
০ বাচ্চার পোষাক: ৫ হাজার
০ উৎসবে উপহার, বন্ধু বান্ধবের জন্মদিন, ইত্যাদি: ২ হাজার
ষান্মাসিক আনুমানিক: ৭-১০ হাজার
০ পোষাক আশাক: ১০-১৫ হাজার(?)
০ উৎসব (ঈদ, বইমেলা, বৈশাখি মেলা, ইত্যাদি) : ৫০-৭০হাজার
০ ভ্রমণ (গ্রামের বাড়ী যাওয়া, পর্যটন) : ১০-২০ হাজার
বাৎসরিক আনুমানিক: ৭০-১০০ হাজার
৭০০ হাজার থেকে ১১০০ হাজার অর্থাৎ ৭-১১ লক্ষ টাকা
দেখা যাচ্ছে বছরে গড়ে ১২ লক্ষ টাকা লাগবে। এটা তো বিশাল খরচ। এ সম্পর্কে ঢাকায় যারা আছেন তারা কি কোন ফীডব্যাক দিতে পারেন? কোন খাত বাদ গিয়ে থাকলে দয়া করে সেটার উল্লেখ করুন।
সবাইকে নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা।
মন্তব্য
বিদেশ থেকে ফিরবেন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় পরিজনরা যে ধার নিতে আসবে সেই খরচটাও ধইরেন। বছর শেষে বাসে বা ট্রেনে বাড়ী ফিরলে কালো বাজারীর টিকেট আর ঘুষ দেয়ার টাকাও ধইরেন, নিজের ও বউয়ের টেলিফোন, বাসার ইন্টারনেট বিল ধরা হয়নি, বছরে দুই একবার কম্পিউটার নষ্ট হবে হার্ড ডিস্ক বদলাইবেন এখানেও কিছু ধইরেন, বাচ্চার স্কুলের এককালীন টিউশন ফি /সেশন ফি। বুয়েটের ছোট ভাইরা অনুষ্ঠান করবে বিদেশ ফেরত বড় ভাই আসছে....কিছু চান্দার টাকা দিবেন না ? সব শেষে হঠাৎ বউয়ের আবদার মেটানোর জন্য হুদা কামে ৫-৬ বার বানিজ্য মেলায় যাবেন আর অপ্রয়োজনীয় ক্রোকারিজ কিনবেন তার লাইগ্যা কিছু ব্যাকআপ মানিও রাইখেন ।
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
ধন্যবাদ ভাই। এত গুরুত্বপূর্ণ আইটেম বাদ পড়ে গেল কেমনে! যাই হোক, আমার হিসাব একটু বাড়িয়েই (?) ধরা আছে। ফোন আর ইন্টারনেট হবে আশা করি। তবে বাণিজ্যের ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে হবে।
বৈচিত্রময় একটা পোষ্ট। কিছু যোগ করছি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে:
বার্ষিক খরচের মধ্যে আরো আসবে-
১) ইনকামট্যাক্স। ১২ লাখ টাকার জন্য সরকারকে দিতে হবে অন্ততঃ দেড়লাখ টাকা।
২) মোবাইল আর ল্যাপটপ বাংলাদেশে বছরে একটা করে নষ্ট হয়। সেই খাতে আশিহাজার থেকে এক লাখ রাখেন।
৩) উৎসবের মধ্যে যদি কোরবানীর গরু ধরেন, তাহলে যোগ করেন আরো ৫০-৬০ হাজার।
৪) যদি আত্মীয় স্বজনের জন্য ঈদের কাপড়চোপড় কিনতে হয় তাহলে যোগ করেন আরো হাজার বিশেক।
৫) নিজের গাড়ি থাকলে গাড়ির বড় কোন একটা পার্টস নষ্ট হবে ধরে নিতে পারেন। সেই খাতে রাখেন কমপক্ষে ৭০ হাজার।
আপাততঃ এগুলোই মনে আসছে।
তবে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে সংসার চালাতে হলে অনেক কিছু লাগে, আবার উটপাখি হলে অনেক কিছুই লাগে না। এখানে মাসে ১০ হাজার টাকা দিয়েও কিছু মধ্যবিত্ত সংসার চলছে(এটি একটি অষ্টম আশ্চর্য বিস্ময়)। আবার এক লাখ টাকা দিয়েও কিছু মধ্যবিত্ত সংসার চলছে।(একসময় লাখ টাকার সংসারকে মনে হতো বিশাল বড়লোক, সেই দিন আর নাই, লাখটাকা খরচ করেও মধ্যবিত্ত জীবনই)
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ নীড়ভাই।
ঈদের খরচ যে এত বেশী তা আমার কল্পনাতেও ছিল না। আরো যে তালিকা আপনি দিলেন তাতে তো ভয় হচ্ছে।
আপনার তালিকাটা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট সংযোজন
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ভাইজান, আমি দেশে আসার আগে এত কিছু চিন্তা করিনাই। আসার আগে সিলেটে একটা চাকরি জোগাড় করে চলে আসছি। আপনি যেই হিসাব দিয়েছেন তার কাছাকাছি হিসেবে আমি চলি শুধু বাচ্চার খরচ ছাড়া (নাই তাই)। আসার আগে আশেপাশের মানুষেরা খালি বলত, "যাইতেস যাও, টিকতে পারবানা"। এত কিছু চিন্তা করে আসলে দেশে ফেরত আসা যাবেনা।
আমার মনে হচ্ছে, এককালীন কিছু খরচ (সংসার শুরু) বাদ দিলে, মাসে ২০-২২ হাজারের মধ্যে আল্লাহর রহমতে ভালই চলা যায়। কিছু জিনিষ ছাড় দেয়া লাগে- কিছু বিলাসীতা নাই বা করলাম, সবার সাথে আছি, দেশে আছি, সুখে আছি এটাই বড় আমার কাছে।
আর এমনতো না যে, একবারে অসম্ভব হলে আবার বিদেশ পাড়ি দেওয়া যাবেনা। অনেক বছর বিদেশে থেকে দেশের জন্য মন কেমন কেমন করলেও বিদেশে থেকে যেতে হবে কেন? আসুন দেশে আসুন, কিছুদিন থাকুন, দেখুন কেমন লাগে। তারপর নাহয় বিবেচনা করবেন।
এখন আর জুয়া খেলার সময় নাই রে ভাই। দেশে টিকতে না পারলে এখানে ফিরে কী করবো? এজন্যই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে মতামত চাইছি।
তবে এটাও ঠিক যে পরিস্থিতি যা-ই হোক, সেখানে অভিযোজিত হওয়া সম্ভব। নির্ভর করে আপনি সেটাতে রাজী আছে কিনা।
উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য
ঠিকই আছে হিসাব। গড়ে ১২লাখ টাকায় দেশে মোটামুটি একটা স্ট্যান্ডার্ডে চলা যায়। এবং যে বিদেশ থেকে একটা ডিগ্রি নিয়ে আসছে সে এই "বিশাল খরচ" করার মত টাকা আয়ও করতে পারবে। উল্টাভাবে বলা যায়, যে এই "বিশাল পরিমাণ টাকা" রোজগার করতে পারে এই "বিশাল খরচ"টাও তার জন্যই। দেশে ২৫-৩০হাজার টাকায়ও একটা পুরো পরিবার চলে, তারাও বাচ্চাদের পড়ায়, কাপড়চোপড় দেয়, মেলায় যায়, ঈদপূজাও করে।
কিছুটা খোঁজ নিয়েছি। আমাকে হয়তো মাস্টারি লাইনেই থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো একটা অপশন। কিন্তু সেখানেও এখন নাকি সূতা খুঁজতে হয়। দেখি কী করা যায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
পিপি, অল্প কথায় বলি। যা কিছু খরচের হিসাব দিয়েছেন তাকে ৩ দিয়ে গুণ করে হিসাব করবেন। দেশে যদি চাকুরী করেন বছরে একবার আপনার বেতন নাও বাড়তে পারে। আর বাড়লেও সেটা ১০%-২০% -এর মতো হবে। কিন্তু এক বছরে দেশে মূল্যস্ফীতি বলুন আর টাকার অবমূল্যায়ন বলুন সেটা ২৫% -এর উপরে হবে। মিডিয়ার খবরে আর কর্তারা মূল্যস্ফীতি বা অবমূল্যায়নের যা হিসাব দেন সেগুলোকে গোনায় ধরবেন না। আপনার বাবা বা মা বাজারে গেলে আপনাকে ফোন করতে বলবেন। তারপর আপনি দোকানদারকে ফোনে নানা প্রকার জিনিসের দাম জিজ্ঞেস করবেন। এক মাস অন্তর এই কাজটা করলে আপনি খরচের হিসাব কেমন হওয়া উচিত সেটা বুঝে যাবেন।
আরেকটা কথা, একটা দুর্ঘটনা খাত রাখবেন। এখানে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সড়ক দুর্ঘটনা, হাসপাতালে বিনা চিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, দুষনজনিত অসুস্থতা, ঘুষ, ইউটিলিটি সিস্টেম ভেঙে পড়া ইত্যাদি জনিত কারণে হঠাৎ করে যে খরচগুলো আপনার ঘাড়ে আসবে সেগুলোর ব্যয় নির্বাহ করার জন্য কিছু টাকা হাতে রাখবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার মত করে আরেকজন বলেছেন, অন্যখানে। সেরকম হলে আসলেই ভালোমতো চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জমানো টাকা বলে কিছু এখানে নেই। সেজন্য হয়তো কিছুদিন মিডল-ইস্টে কাজ করতে হবে। খালি হাতে দেশে আসাটা বোধহয় বোকামি হবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ঠিক এ কারণেই প্রকৃতিপ্রেমিকের ধার্য করা খাওয়া খরচের (১০-১৫ হাজার) খাতে অনেক কম ধরা হয়েছে মনে হল। বাজারে এখন আগুন এখাতে গড়ে ২৫- ৩০ হাজার ধরে রাখা উচিত।
দেশে যাওয়া বা বিদেশে থাকা - সিদ্ধান্ত যেটাই নেবেন কেরিয়ারের কথা ভেবেই এগোতে হবে।
ভাল থাকুন।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
বছর পাঁচেক আগে মেয়ের আকিকা করেছিলাম দেশে। বাজেটের চেয়ে খরচ হয়েছিল সাড়ে তিন হাজার কম। কিন্তু রাতে আকিকার বাসি খাওয়া খেয়ে সকাল বেলাতে ফুড পয়জনিং-এ একদম ধরাশায়ী। হাসপাতালে একদিন কাটিয়ে আসতে হয়েছিল - বিল আশ্চর্যভাবে - ঠিক সাড়ে তিন হাজার। অর্থাৎ বাজেটের পুরোটাই শেষ পর্যন্ত খরচ হলো।
সহজে একটা জিনিস বুঝলাম - যা আয় বা বাজেট করবেন তার পুরোটাই বা একটু বেশি খরচ হবে। একলাখ আয় করলে একলাখ, বিশ হাজার করলে বিশ হাজার। মার্কিন দেশ বা বাংলাদেশ সবখানে একই নিয়ম। টাকা সঞ্চয় বড় দুরূহ কাজ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি একটা বাস্তব কথা বলেছেন।
যারা বাহিরে চলে গেছেন, ওখানেই থাকা উচিত।আর যারা দেশে আছেন দেশে মনোযোগ দেন। অনিশ্চয়তার মধ্যে না যাওয়াই উচিত।
অনিশ্চয়তাই তো জীবন
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
উইদাউট স্কিল মানে প্রোফেশানালি আন-স্কিল্ড একজন মানুষ তাহলে কি করে সারভাইব করবেন? একজন প্রকৌশুলির পক্ষে না হয় এই বিরাট অঙ্কের টাকা; (সেটা বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকাই ধরলাম) বহন করা কোন রকমে সম্ভব হল। কিন্তু একজন সাধারণ প্রোফেশানালি আন-স্কিল্ড মানুষকে এই বিরাট অঙ্কের টাকা কোন প্রতিষ্ঠান দেবে?
ডাকঘর | ছবিঘর
টিভিতে সেদিন কে যেন বলছিল সে বারো-হাজার টাকায় সংসার চালায়। কিভাবে চালায় জানি না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভাইরে ঢাকায় টাকার বাপ-মা নাই। পোলাপানের জন্য এখানে থাকতেই হবে, নিজের প্রফেশনতো আছেই। আপনি যতই আয় করেন না কেন, আয়=ব্যায় হবেই (সাইড ইনকাম না থাকলে জমানো খুব মুশকিল)।
সাইড ইনকাম বলতে আলাদা ব্যবসা-বাণিজ্য বুঝিয়েছেন? বা কনসাল্টেন্সি টাইপের কিছু?
হাঁ, সেরকমই। এখানে বাইরে থেকে এসে একটা ভার্সিটিতে ফুল টাইম, আর বাকি ২-৩টা তে পার্টটাইম টিচার হিসেবে কাজ করে সাধারণত।
পিপিদা জিজ্ঞেস করছেন -"কত টাকা হলে চলে?"-- প্রশ্নটা কি অবান্তর?
আমার উত্তর - জ্বি, অবান্তর।
আয়া পড়েন
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
তাই?
আপনি তো ক্যাম্পাসের মানুষ। জুনিয়র ফ্যাকাল্টিরা চলে কেমনে?
দুয়েক বছর পরে ছোটখাট বাসা বরাদ্দ পায়। খরচ কমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে থাকলে যাতায়াত খরচও কমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী আপনি সম্ভবত ১টা কনসালটেন্সি করতে পারবেন। আজকাল স্বামী স্ত্রী দুইজনই কাজ করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। ইংরেজি স্কুলের খরচ বেশি। এবং আমার ব্যক্তিগত মত, এই খরচ অপ্রয়োজনীয়।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
তাসনীম ভাইয়ের সাথে একমত-- যা আয় বা বাজেট করবেন তার পুরোটাই বা একটু বেশি খরচ হবে। একলাখ আয় করলে একলাখ, বিশ হাজার করলে বিশ হাজার। মার্কিন দেশ বা বাংলাদেশ সবখানে একই নিয়ম। টাকা সঞ্চয় বড় দুরূহ কাজ।
facebook
আমি ফিন্যান্সের (প্রাক্তন) লোক। দেশে না থাকলেও যেহেতু দেশে বাবামার কাছে টাকা পাঠাই সেহেতু সাহস করে কিছু কথা বলি।
১. ঝুঁকি প্রসঙ্গটা আপনি পোস্টের হেডলাইনে আনলেও পোস্টে তেমন আনেননি। ষষ্ঠপান্ডব এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। আপনি সম্ভবত আমার থেকে একটু সিনিয়র। ধরে নিচ্ছি আপনার বৃদ্ধ বাবা মা আছেন। সন্তান আছে। এর মানে হলো আপনার এদের জন্য নির্ভরযোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে আপনার ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হবে। সঞ্চয় করতে হবে বাড়ি করার জন্য, গাড়ি কেনার জন্য, সন্তানের পড়ালেখার জন্য, পরিবারের কারো কোন চিকিতসার জন্য। এই সবগুলোই অবধারিত খরচ। আজ না হোক কাল আপনার ঘাড়ে এই খরচগুলো চাপবে।
২. সঞ্চয় করতে হবে এই জন্য যে রাষ্ট্র আপনাকে কোন সাপোর্ট দেবে না শিক্ষা (আপনার সন্তান ভাগ্যবান হলে সে সরকারি বিদ্যালয়ে/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে।), চিকিতসা ইত্যাদির ক্ষেত্রে। এবং এই দুই ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে বাস করা লোকদের যত বেশি টাকা তত বেশি ভালো সুবিধা এরকম একটা জিনিস মেনে নিতে হয় এবং এটা অবশ্যম্ভাবি বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে দিন দিন। পরিবারের সদস্যদের চিকিতসা সংক্রান্ত এরকম একটা ঝামেলায় পড়ার কারণে আমি দেশে ফিরিনি। সম্ভবত ফিরবোও না। আমি জানি আমি দেশে গেলে লাখখানেক টাকার বেতনে আমার বাবামার চিকিতসার খরচ দিতে পারবো না। ছোটভাইয়ের বাচ্চাটার চিকিতসার জন্য সাপোর্ট হিসেবে থাকতে পারবো না।
৩. বাংলাদেশে বাস করার আরো একটা সমস্যা আছে। 'সাধারণ মানুষ' হয়ে বাস করার কোন সুযোগ বাংলাদেশে নেই। আইনি সুবিধা, হাসপাতালে সিট পাওয়া, পাড়ার মাস্তানদের থেকে নিজে, নিজের স্ত্রী কন্যাকে বাঁচানো ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই আপনাকে 'অসাধারণ' কেউ হতে হবে। কানেকশন রাখতে হবে এদিক ওদিক। এরজন্য সেরকম আর্থিক ও সামাজিক সক্ষমতা থাকতে হয়। আমি একজন ব্লগারকে চিনি যার বাবা ভাই স্রেফ খুন হয়ে গেছে। কোন বিচার নেই। উপর তলায় সেরকম যোগাযোগ তৈরী করতে না পারলে আপনি এরকম ঝামেলায় পড়লে এরকমই অবস্থা হবে।
৪. সবচেয়ে নির্মম বিষয়টা হয় যখন আপনি বা আমি দেশে গেলে আমাদের কিছু হলে আমাদের ওপর নির্ভর করে যারা তাদের পরিণতি কী হবে। আজকের অর্থনীতিতে সন্তানসহ বিধবাদের জীবনটা দুর্বিষহ।
৫. এই সব সত্ত্বেও মানুষ দেশে ফেরে। দেশে মানুষ বসবাস করে। প্রশ্ন হলো আপনি এইসব ঝুঁকি নিয়ে দেশে বাস করতে রাজি কিনা। ঝুঁকি আপনার নিজের কাছে কতোটা সহনীয় সেটার ওপর নির্ভর করবে আপনার সিদ্ধান্ত কি হবে। আমার কাছে আমার ঝুঁকিগুলো অত্যন্ত মারাত্নক।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
চিন্তার বিষয়। এগুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
অসাধারণ, হাসিব! ঠিক এই বিষয়গুলো ভেবে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সেও লোকে কানাডা-অস্ট্রেলিয়া-নিউজীল্যান্ডে ইমিগ্রান্ট হয়ে চলে যায়। দেশে থাকার মানসিক শান্তি আছে ঠিকই, তার সাথে যেসব অশান্তি-উৎকণ্ঠা-অপমান-অভাব আছে সেগুলোর কথা লোকে স্বীকার করতে চায় না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
জার্মানিতে খুব বেশি ইমিগ্র্যান্ট নেই। আর বাংলাদেশ থেকে কাছে বলে অনেকেই প্রতি বছর ১মাসের জন্য দেশে যেতে পারে বলে এতোটা পরপর মনে হয় না। আমেরিকার অবস্থা ভিন্ন। খুব ভালো অবস্থায় না গেলে কেউ প্রতি বছর দেশে যাবার বিলাসিতা করতে পারে না। আমি টরেন্টোতে মাঝে দু'বার ঘুরে এসেছি। অনেক ইমিগ্রান্টই দেখলাম যারা শুধু নিজের পরিবারকে (বিশেষ করে সন্তানদের) আরেকটু ভালো রাখার জন্য নিজের বিশাল পদবীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে কানাডা পাড়ি দিয়েছেন। বাংলাদেশে ব্যাংকের ডিরেক্টর লেভেলের লোক পাইরেটেড সিডির দোকান দিয়েছেন, এনজিওর বড়কর্তা জ্যানিটর হিসেবে কাজ করছেন ইত্যাদি। দেশে পদ পদবী দিয়ে আসলে দিন শেষে পেট ভরে না। কানাডাতে নিজে না পারলেও সন্তানের জন্য রাষ্ট্র রয়েছে। বিকশিত হবার সমস্ত সুযোগ সে পাবে। এটা একটা বিশাল নির্ভরতা। অপরদিকে দেশে বৃদ্ধ বাবামাকে অপর্যাপ্ত বা সাবঅপটিমাল চিকিতসার মধ্যে রাখা, স্ত্রীর অপারেশনটা টাকার জন্য ভালো জায়গায় করাতে না পারা, ছেলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়নি, টাকার অভাবে ভালো প্রাইভেট ইউনিতে না দিতে পারা - এগুলো মেনে নিতে হয়। আপনার পারিবারিক সূত্রে আগে থেকেই ভালো একটা অবস্থান থাকলে একটা কথা। নিজের পা'টা যদি নিজেকে বানাতে হয় তাহলে এইসবের বিরুদ্ধে লড়াই করা খুব খুব কঠিন। আপনাকে হয় সব ভুলে মেনে নিতে হবে সবকিছু নতুবা বের হয়ে পড়তে হবে কোথাও।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই ঝুঁকির লিস্টিটা যে কতোটা সত্য এখন ভালোমতো বুঝি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
লেখাটা পড়ে ভয়াবহ দুশ্চিন্তায় পড়লাম যে ! টাকার কারনে তো শান্তিতে বেঁচে থাকা হারাম হয়ে যাবে দেখছি
মনে বড় আশা ছিল দেশে ফিরে যাব কয়েক বছর পর
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আমার জন্য বড়ই দরকারি একটা পোষ্ট। আমার নিজেরও এরকমই একটি ধারণা যে বছরে এক লাখের কাছাকাছি হলে চলে যাবে ভালো ভাবেই। আর ক্যাম্পাসেই যদি থাকি তবে আরেকটু কমে চলা যাবে। তবে, আপনার সাথে সহমত যে বাহির হতে কিছু টাকা না জমিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। যেটা বললেন, প্রয়োজনে দুই বছর মিডল ইস্টে চাকুরী করে কিছু জমিয়ে তারপর দেশে যেতে পারেন।
তবে তারচেয়েও বড় কথা দেশে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলে এতো হিসেব না করাই ভালো। হিসেব করলে দেশে যাওয়ার পেছনে যুক্তি কম। সুতরাং যত হিসেব করবেন ততো না যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। পাসপোর্ট যদি হয়ে থাকে তবে বিদেশে আপনি জীবনের যে কোন সময়েই আবার ব্যাক করতে পারবেন। হয়তো আবার শুণ্য থেকে শুরু করতে হবে। ঠিক শুণ্য থেকেই যে শুরু করতে হবে তাও নয় কিন্তু। মোটামোটি মানের একটি পোস্ট-ডক সারাজীবনেই পাওয়া যাবে। একটি পোস্ট-ডক নিয়ে চলে এসে তারপর আবার জীবন শুরু করা যেতেই পারে, যদি চান। বিদেশের অন্তত এইটি একটি সুবিধে। জীবনের যে কোন সময়েই এসে শুরু করতে পারেন, জব পেতে পারেন। স্কিল ওয়ার্কারদের জন্য এটা সমস্যা নয়। সমস্যা হয় যাদের এই দেশীয় ডিগ্রি নেই, দেশে বহুদিন জব করে বুড়ো বয়সে বিদেশে আসে, তাদের। সুতরাং যদি দেশে বাবা/মা থাকেন এবং তাদের জন্যে দেশে যেতে চান আমি বরং উৎসাহই দিবো। আমি নিজেও একই কারণেই যাচ্ছি।
আসলেই, হিসাব করতে গেলে খালি মাইনাস। কিন্তু তার পরেও কথা থাকে। দেখা যাক, কি হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এইটা তো জীবনানন্দের ভাষায় দারা-পুত্র-পরিবার সহ হিসাব পিপিদা। এই মূল উপাদান ছাড়া হিসাবটা কেমন দাঁড়ায়, সেইটাও দেখার বিষয়। অর্থ নিয়ে অনর্থক এতো কিছু চিন্তা করার দরকারটা কী!
আফটার অল, 'আইছি নেংটা, যামু নেংটা'- জনৈক মেম্বরজান!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হিসাব মেলেনা রে ভাই, কোনদিন মিলবে বলে মনে হয় না
বাংলাদেশ বড় কস্টলি। আচ্ছা, আপনি বাড়িভাড়ার জায়গায় একটা তিন বেড-রুমের ফ্ল্যাট কিনে থাকার চেষ্টা করেন না কেন? ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি কেনা আর মাসে মাসে বাড়ি ভাড়া দেওয়া একইরকম, তবে বাড়িটা বেচে দিলে আবার কিছু পয়সা আসে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এইটা আমিও চিন্তা করছিলাম।
এটাও মাথায় রাখলাম। অনেক ধন্যবাদ দিগন্ত দা।
ঢাকায় এখন প্রতি স্কয়ার মিটার ফ্ল্যাটের মূল্য নূন্যতম ৭০০ ডলার, সর্বোচ্চ ৪,২০০ ডলার পর্যন্ত শুনেছি। সেক্ষেত্রে ১৫০ স্কয়ার মিটারের একটা ফ্ল্যাট কেনার জন্য আপনাকে প্রায় দেড় লাখ ডলার পকেটে করে আনতে হবে। প্রবাসীদের কতোজন এটা পারবেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
না, এর ২৫% টাকা আনলেই হবে, বাকিটা ব্যাঙ্ক লোন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ব্যাঙ্ক লোন আপনি পাবেন কিনা সেটা একটা ব্যাপার। যদি পানও তাহলে ১৮%~২০% সুদে পাঁচ বছরে টাকা শোধ করতে হলে মাসিক কিস্তির পরিমান কত হবে? মাসে তিন হাজার ডলারের উপরে। সুদের হার নিয়ে, পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাংকের লিফলেটে যা লেখা থাকে বা এজেন্টরা যা বলে থাকে সেগুলো প্রায় সবৈর্ব মিথ্যা। আপনি এক মাস পরে গোটা লোন শোধ করতে চাইলেও আপনাকে পুরো এমাউন্টের উপর ষাট মাসের সুদ পরিশোধ করতে হবে। প্রভাবশালী না হয়ে বাংলাদেশে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার চেয়ে নিজের কপালে নিজেই হাতুরী দিয়ে বাড়ি মারা ভালো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অথবা ফ্ল্যাটের বিপরীতে ৭৫% লোন না হয় নেয়াই গেল। পাণ্ডব’দার দেয়া দাম অনুযায়ী ৭৫% মানে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা। মাত্র ১২% ইন্টারেস্টে ২০ বছরে (মানে ২৪০ মাসে) লোন রিপেমেন্ট করতে প্রতি মাসে দিতে হবে ৯৩,৫০০+ টাকা ... ২০ বছর ধরে।
হিসাব বুঝলাম না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত, আপনার জিমেইল চেক করুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুঝলাম। ১৫০,০০০ ডলার বাড়ির দাম হলে সেই বাড়ি ভাড়া ২০-৩০ হাজার টাকায় পাবেন না। ২০-৩০ হাজার টাকায় ভাড়া পাবেন এমন বাড়ির দাম কত?
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমি ঢাকার পরীবাগে থাকতাম। সেখানে ২০০০ স্কোয়ারফিটের বাসা ১কোটি বা তার কিছু বেশি। ১০% সুদে ইনিশিয়াল পেমেন্ট না করে ২০ বছরে মাসিক আপনাকে ১ লাখ টাকার মতো দিতে হবে। যদি লোন পান তাহলে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমি বলতে চেয়েছি আপনি যদি ৮৫,০০,০০০ টাকা লোন নেন তবে ১২% সুদে আপনি যদি ২০ বছরে রিপেমেন্ট করেন তবে মাসিক কিস্তি (EMI) আসবে ৯৩+ হাজার।
সুদের হার কেমন বাংলাদেশে? স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এর হোম-লোনের হিসাব দেখায় সাড়ে নয় শতাংশ।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে সুদের হার ১০ থেকে ১৬। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম। চাকুরীজীবিদের জন্য এইচএসবিসি কিংবা স্ট্যানচার্টের জন্য লোন পাওয়া বেশ সহজ (মজুরীর ২০ টাইমস কিংবা ম্যাক্স ১০,০০,০০০ এর জন্য একটা ইন্ট্রোডাকশন লেটারই যথেষ্ট।
খরচের লিস্টি দেখে কিছুটা ভড়কে গেলাম। তারপরেও তো অনেক টুকিটাকি বাদ গিয়েছে। নিজস্ব শখ (বইপত্র, ইলেক্ট্রনিক্স গ্যাজেট) ইত্যাদির হ্যাপাও কম না।
তবে পিপিদা - আমার বিশ্বাস একটু হিসাব করে চললে মাস চালানো খুব একটা কঠিন হবে না, বিশেষ করে আপনি যদি একটা ভাল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন। পরিসংখ্যানের গবেষক/শিক্ষকদের চাহিদা বেশ ভাল বলেই জানি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
প্রশ্নটা আসলে মাস চালানো নিয়ে না। একজন কোয়ালিফায়েড লোক কোথাও না কোথাও ঢুকে যেতে পারবেন সহজেই। মাস চালানো কোন ব্যাপার না। প্রশ্ন হলো অনিশ্চয়তা/ঝুঁকি কভার করার মতো যথেষ্ট কিনা সেগুলো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সুক্ষ একটা ভাবনা ছিল দেশে যাওনের কিন্তু আপনার তালিকা দেখে ভয় পেয়ে গেলাম । আপনার জন্য শুভকামনা
খুবই জরুরী পোস্ট পিপিদা। লিঙ্ক সেভ করে রাখলাম। আমার দেশে ফেরা হলেও চার-পাঁচ বছরের আগে না। সেক্ষত্রে মাসিক হিসেবটা খুব সহজেই তিন-চার লাখ হয়ে যেতেই পারে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ঢাকায়ই ফিরতে হবে?
মানে দেশে ফেরা আর ঢাকায় ফেরা আলাদা কিনা সেজন্যই বলছিলাম। অন্যথায় খরচের হিসেব সম্পুর্ণই ভিন্ন হবে।
এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পয়েন্ট।
ব্যাক্তিগতভাবে ঢাকা শহরের সাথে কখোনোই ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারিনা। আর তাইতো সূযোগ পেলেই বসের অনুমতি নিয়ে খুলনায় চলে যাই, ওয়ার্কিং ফ্রম হোম করি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ঢাকায় না ফিরে উপায় কী? স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কাজের জায়গা সবতো ঢাকাতেই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
কাজের কথা আলাদা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ঢাকাতেই বা ঢাকার গুলোই ভাল সেটা মানতে পারছিনা হাসিব ভাই। চিটাগং আর সিলেট দুই জায়গার থাকার সুবাদে অন্তত আমি এটা বলতে পারি।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
জানিনা, কোন দেশে আছেন। ধরলাম, নর্থ আমেরিকায়। ভালো ডিগ্রী থাকলে দেশে এসে মূলত টিচিং -এ ঢুকতে হবে। এছাড়া অল্পকিছু রিসার্চ সেন্টার ও আউটসোর্সিং ফার্ম বেশ ভালো স্যালারি দেয়- ১ এর কাছাকাছি। তবে লাইন জানতে হবে। টেকনিকাল লাইনের লোক হলে, বাড়তি কনসাল্টেন্সিওতে আরো এর দশগুণ কামাতে পারবেন, কয়েকদিন পর।
যদি দেশের জন্য মন কাঁদে সেই ক্ষেত্রে একটা কাজ করতে পারেন, নিজের উচ্চডিগ্রীটা ভাঙ্গিয়ে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ায় ট্রাই করতে পারেন। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো, চাইলেই চট করে দেশে আসতে পারবেন অল্প সময়ে, আবার দেশে থাকার 'কিছু' সমস্যা এড়াতে পারবেন।
আমি নিজে বেতন পাই ৩১ এর মত। এর বাইরে ছোটখাট কনসাল্টেন্সি আছে। অবশ্য লোক কম পরিবারে। তিনজন। মা-বউ-আমি। উৎসব বা দাওয়াতের ব্যাপারে কৃচ্ছতা সাধনের পরও অ্যাক্সিডেন্টাল কারণে খরচ প্রতিমাসেই বেড়ে যায়। ঝুঁকি আছে, তবুও ভালো আছি।
ভালো থাকাটা 'প্রায়' সম্পূর্ণ নিজের উপর। যেখানেই থাকেন, দেশে বা বিদেশে।
পিএইচডি কমিকসের একটা স্ট্রিপে পড়েছিলাম, আন্তর্জাতিক স্নাতকোত্তর ছাত্রছাত্রীদের শেষমেষ নিজের দেশ বলে কিছু থাকে না। যে দেশে পড়তে যায় সেই দেশও তাদের হয় না, আবার ফিরে এসে নিজের দেশটাও অচেনা হয়ে যায় অনেক অনেক ক্ষেত্রে।
জানি না সামনে কী আছে...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
কাইন্দেন না মেম্বর। দেশে ফেরার ক্ষেত্রে একটা ভালো খবর আরেকটা খারাপ খবর আছে। ভালো খবর হইলো, আমি হাল জুড়তে ও চইতে পারি। আর কিছু না পারলেও অন্তত হালচাষ কৈরা খাইতে পারুম।
আর খারাপ খবরটা হইলো, এখন গরু দিয়া হালচাষের দিন শ্যাষ। ট্রাক্টরের যুগ। আমি ট্রাক্টর চালাইতে পারি না!
আপনে বরং এক কাম করেন। পোলার ডায়াপার বদলানির রেট বাড়ায়া দেন। যতো অভিজ্ঞতা ততো বেশি দাম!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনার কি ঢাকাতেই ফিরতে হবে ? ঢাকার বাইরে কিন্তু এত বেশি লাগেনা। যেমন ধরুন উত্তরবঙ্গে ফুলকপি দু তিন টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, আর ঢাকায় এখনও বিশ/ পঁচিশ টাকায়। কাজেই এখানে খরচ অনেক বেশি। তবে যারা বাইরে থেকে ফিরে আসছেন তাদের জন্য আসলেও উপযুক্ত পারিশ্রমিক নিয়ে কোথাও কাজ করার জায়গার ভীষণ অভাব। কদিন আগে একজনকে বিরাট কোয়ালিফিকেশন নিয়ে এসেও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ঢুকবার জন্য যে পরিমাণ লবিং এবং হ্যাপা পোয়াতে দেখলাম তাতে ভয়ই পেয়ে গেছি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খণ্ডকালীন প্রবাস জীবন আর ভালো লাগছিলো তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দেশে আসার। সেটা সফল হয়েছে। আর বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। অনেকদিন আগে জনৈক মুরুব্বীর চাপে পড়ে কানাডিয়ার ইমিগ্রেশনের জন্যে দরখাস্ত জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি এবং আমার স্ত্রী একমত হয়েছি যে সুযোগ হলেও আমরা যাবোনা। তাছাড়া নেই মুরুব্বীও আজ আর ইহধামে নেই।
ঢাকায় খরচ সম্পর্কে মোটামুটি একটা আন্দাজ করা সম্ভব হলেও অনেক খরচ আছে আনপ্রেডিক্টেবল যেটা উপরের অনেকেই বলেছেন। বিশেষ করে হাসিবের কথাগুলো অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। ঢাকার জীবনযাত্রার পাশাপাশি পারিবারিক এবং সামাজিক দায়াবদ্ধতাগুলো, যেখানে খরচের বিষয়গুলো আসে, একটা সময়ে এসে চাপ বা বোঝা বলে মনে হতে পারে। সুতরাং ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। এছাড়া শখ এবং লেইজারের বিষয়গুলোকেও বাদ দেয়া যাবে না।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে পরামর্শ দেবো ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তার মধ্যে না যেতে। দেশে চলে আসলে হয়তো আপনার দিন চলে যাবে, খেয়ে-খর্চে ভালোই থাকবেন, তবু্ও অনেক অনিশ্চয়তা মাথা পেতে নিতে হবে। পয়সা পেলেও কতটুকু কনভেনিয়েন্স পাবেন তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
গতকাল থেকে অনেকবার ফিরে এসেছি আপনার পোস্টে, মন্তব্য গুলি বুঝতে চেষ্টা করেছি। মন্তব্য পড়লে তো আসার কোন কারণ দেখিনা। আরও ভাবুন।
আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি বিদেশে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অথচ বৈষয়িক বিচারে তার এবং তার স্ত্রীর চাকুরী থেকে প্রাপ্ত আয় আপনার হিসাবের কমপক্ষে ছয়গুণ…পরিবারের যাতায়াত, চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেয় অফিস। যার ঢাকায় পিতৃপ্রদত্ত দূটি বাড়ি এবং একটি প্লট আছে, একমাত্র সন্তান ছাড়া কাধে কোন দায়িত্ব নেই, আয় এই লেভেলের, তার সোস্যাল সিকিউরিটির দরকার নেই…। চল্লিশ এখনো ছোঁয়নি, দূজনেই উচ্চ শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, হাইলি কানেক্টেড রিলেশনরা আছে দেশের বিভিন্ন যায়গায় (পার্টিতে)। এই বিদেশ যাওয়া ব্লাইন্ড ডেট না, ‘রেকি ভিজিট’ করে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত… অথচ যেহেতু সেখানের ডিগ্রী নেই, ভাল চাকুরীর সম্ভাবনা কম…। সুতরাং আরও নিশ্চয়ই ফ্যাক্টর আছে…।
আরেকটা ফিডব্যাক, প্লিজ কেউ মজা করছি মনে করবেন না। আমার মুখের উপর কথাগুলো বলা হয়েছে তাই বিশ্বাস করতে হয় আরকি। তিনিও চল্লিশ ছোঁতে বাকি, ৬/৭ বছর কানাডাতে আছে। এই মাসের প্রথমে মাস খানেকের জন্য দেশে বেড়াতে এসেছে…… ওফ গড, এখানে থাকেন ক্যাম্নে, জ্যাম, মশা, ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়, ধুলা (সাদা শার্টের কলার একদিনে ময়লা হয়, কানাডাতে এক সপ্তাহেও… ) ডেঙ্গু, টাইফোয়েড… হয়ত তিনে আগেই ফিরে চলে যাবেন… । আমার মনে হয় আমি হয়ত অভিযোজিত হয়ে গেছি… তিনি ৬/৭ বছর পর এসে এই পরিবর্তন্টা দেখতে পারছেন… আমি তেমনটা দেখিনা।
তারপরও কখনো কখনো কেউ কেউ ফিরে আসে অনিশ্চয়তায়… কিসের টানে কী জানি। জীবন হয়ত তেমন লিনিয়্যার ইকুয়্যাশন না। কেউ কেউ হয়ত তেমন রেশন্যালও হতে পারেনি...।
বিদেশে থাকার অভিজ্ঞতা যেহেতু নেই, কম্পেয়ার করা যাবে না। আমার আগের চাকুরীতে আমাকে ১৫/২০ দিনের জন্য ইয়োরোপের হেডকোয়ার্টারে কাজ করতে হয়েছে মাঝে মাঝে … তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে গেলে কী হবে, রেভিনিউ জেনারটিং দেশ হিসাবে একটা ‘ভাব ছিল’ (এটা ক্যাপিটালিজমের যুগ )। তারপরও মনে হত আমি মেইনস্ট্রিমে নেই, কোথায় যেন একটা গ্যাপ…।
ধন্যবাদ নৈষাদ, এত সুন্দর মন্তব্যটি করার জন্য।
এত হিসাব-নিকাশ না করে আমার কাছে এই অ্যাটিচুডটা দারুণ মনে হয়! লিংক
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আপনার হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। কিন্তু আমার অবস্থানটা ব্যাখ্যা করলে হয়ত বোঝানো সহজ হতে পারে। অবশ্য নিজের এই অবস্থানটাও নিজের কাছে প্রহসন মনে হয় মাঝে মাঝে...
বাংলাদেশে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চাকুরী নেই। গুটিকয়েক বান্দা ইউনিকল বা ভালো কিছু জায়গায় চাকুরী পেলেও বেশীরভাগের অবস্থা খারাপ। আমিও ক্রমাগত ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম। দেশ ছাড়ার আগে চাকুরীর অফার ছিলো ডিবিবিএল এ।
দেশ ছেড়ে আসার সময় ফিরে যাবো কি যাবো এটা মাথায় ছিলো না। মার্স্টাস শেষের দিকে প্রফেসরের ঝামেলা, টাকা কড়ির ঝামেলা - সব কিছুর মাঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম খানিকটা চাকুরীর এক্সপিরিয়েন্স নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।
মার্স্টাস শেষে চাকুরীর ক্ষেত্রে দেখলাম আমি ঠিক যে ধরনের কাজ করতে চাই সেটাই করা সম্ভব। এবং ভালো বেতনে। উপরন্তু দিন বদলের সাথে সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম আমার লং টার্ম গোল কি হবে। আইডিয়ালি আমি একটা টেকনোলজি কোম্পানী সূচনা করতে চাই।
দেশে কি এটা করা সম্ভব? হয়ত। কিন্তু দেশের বেসিক ফ্রেইমওয়ার্ক এতো খারাপ যে আমি কিছু করতে গেলে গোঁড়া থেকে শুরু করতে হবে। (যেকারনে সচলায়তনের অনেক প্রজেক্ট স্ক্র্যাপ করতে হয়েছে)। অর্থাৎ একটি কোম্পানী চালু তৈরী করতে বেসিক সমস্যা সমাধাণের পিছনেই ৮০% রিসোর্স ব্যয় করতে হবে। অথচ এটা নিশ্চিত করার কথা ছিলো রাষ্ট্রের।
একই ধরণের কনফ্লিক্ট প্রযোজ্য আমার স্ত্রীর জন্যও।
আমার লং টার্ম গোল নিয়ে কনফ্লিক্ট ছাড়াও আরো কিছু বিষয় অনুভব করি। এখানে বেসিক নিডগুলো পূরণ করা আমার জন্য এখন খুব সহজ। দেশে এটা অনেকগুন কঠিন। উপরন্তু সব আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
তাছাড়া একটা ভালো এজ্যুকেশনের কতখানি মূল্য সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাই। আমার সন্তানের জন্য এই এজ্যুকেশন এখন হাতের নাগালে। দেশে ফিরে গিয়ে আমার সন্তানকে এতোখানি পিছনে ফেলতে চাইনা।
সুতরাং আমার ক্ষেত্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারনে আমি এই মুহুর্তে দেশে ফেরার কথা চিন্তা করছি না।
১) লং টার্ম ক্যারিয়ার এডভান্সমেন্ট
২) বেসিক চাহিদাগুলোর অপ্রতুলতা
৩) সন্তানের এজ্যুকেশন
দেশের জন্য মন খারাপ হয় ঠিকই। কিন্তু বাবা-মা, শ্বশুর-শ্বাশুড়ী নিয়মতি আসেন আমাদের কাছে। আর আমার ভাইয়ের পরিবার থাকে কাছাকাছি। তাই অতটা কষ্ট হয় না।
আপনার ক্ষেত্রে প্রায়োরিটিগুলো কি সেটা ঠিক করে কিভাবে সমাধাণ করবেন সেটা ঠিক করে নিলে মনে হয় ভালো হবে। খরচের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনার এজ্যুকেশনের তুলনায় ভালো চাকুরী পাবেন সহজেই। কিন্তু ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আপনি কি করতে চান সেটা আমার মতে বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
"বাংলাদেশে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চাকুরী নেই"
এখনকার জন্য কথাটা সত্য না। আমি ২০০৮ সালে বুয়েট থেকে পাশ করি। নিজের অভিজ্ঞতায় চাকুরীর বাজার খারাপ মনে হয় নাই। ঐ সময়ে বিএসসি পাশ যন্ত্রপ্রকৌশলীদের দেশে মোটামুটি ৫ পদের চাকুরী পেতে দেখেছি।
১। বহুজাতিক কোম্পানী - ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ইউনিকল, ইউনিলিভার, নেসলে, ক্যাটারপিলার (বাংলাক্যাট) ইত্যাদি।
২। দেশীয় কোম্পানী - স্কয়ার, রহিমআফরোজ, নাভানা, আরএফএল, বিওসি, ইস্টার্ন মেরিন, কাফকো ইত্যাদি।
৩। বিদ্যুৎ কেন্দ্র (দেশী/বিদেশী)।
৪। কন্সাল্টেন্সী ফার্ম, এনজিও ইত্যাদি।
৫। সরকারী চাকুরী।
এর মধ্যে, ১ আর ৩ এর বেতন হয় সবচেয়ে বেশী; শুরুতেই (বা ৬ মাসের মধ্যে) সাধারনতঃ ৪০-৫০,০০০+। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে চাকুরী করা ঠিক আরামদায়ক নয় (৮-৫টা নয়) বলে, লং টার্মে সবাই আগ্রহী হয় না। বহুজাতিক কোম্পানীতে সবাই চাকুরী পায় না ঠিক, কিন্তু ১৪০ জনের ভেতর সব মিলিয়ে ১০-১২ জন পেলেও মন্দ কি?
২ এর বেতন শুরু হয় ১৮-২০,০০০+ (বেশিও হতে পারে), কিন্তু ১-২ বছরের মধ্যে এটা আরো বাড়ে। সেটা নির্ভর করে কোম্পানী, কাজ আর আপনার অভিজ্ঞতার উপরে।
৪ এর বেতনের হিসাব পুরো গোলমেলে। কাউকে ১০,০০০ পেতেও শুনেছি, কাউকে ১০০,০০০।
তবে মোদ্দা কথা হলো, আমার সাথে পাশ করেছে, এমন কাউকে চাকুরী (নিজের ক্ষেত্রে) না পেতে দেখিনি। ২-৩ জন ব্যাঙ্কে চাকুরী করে, কিন্তু সেও এইসব যন্ত্র-পাতি ভাল্লাগে না তাই। পরের ব্যাচ গুলির ও প্রায় ১৯-২০ অবস্থা। পাশ করবার পরে চাকুরী পেতে সময় লাগে ২-৩ মাস (গড় হিসাব)।
শেষের প্যারার সাথে সহমত।
দেশে যারা থাকতে চাইছে, তারা তো থাকছেই। খুব খারাপ থাকতে কাউকে দেখি নাই।
অত জ্ঞানীগুণীজন আলোচনা করল কিন্তু কেউই বিড়ি আর রাঙা পানির বাজেট ধরতে কইল না
বিড়ি এখন ১৩০ টাকা প্যাকেট। আর রাঙা পানি এক বোতল কমপক্ষে হাজার তিনেক... অভ্যাস থাকলে বুইঝেন কিন্তুক
এতো চিন্তা করে কেউ কোনোদিন দেশে আসতে পারে নাই, আপনার যদি দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকে তাহলে এত হিসেব করে লাভ নেই...দেশে আসেন, মানিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। দেখবেন সব কিছু ভালো লাগবে...হিসেবটাও মিলে যাবে (আয়=ব্যয়)...
তবে আপনাদের কারো কারো লেখা পরে মনে হচ্ছে, আপনারা জীবনেও কোনো দিন এই দেশে ছিলেন না...দেশ খুব বেশি চেঞ্জ হয় নাই, আপনারা হয়েছেন...
ধুর! ৭ বছর টার্গেট ধরছি। এরপর যা আছে কপালে বলে দেশে চলে যাব। দেশে গেলে যেটা চোখে পড়ে সেটা হলো মানুষের অমার্জিত ব্যাবহার। আরো অনেক হ্যাপা আছে। কিন্তু বুকের মধ্যে একটা শান্তি থাকে।
আর টাকা জমাইলেই জমে। আমরা অনেক শখ আহ্লাদকে প্রয়োজন মনে করি। উদাহারণ দেই। আমি যদি আমেরিকায় আইফোন বা স্মার্টফোন ব্যাবহার করি আমার মাসে প্রায় ১৫০-২০০ডলার বিল দিতে হবে ফ্যামিলি প্ল্যানে। আর রেগুলার ফোন হলে ৫০-৭০ডলার। ২ বছরে কমসে কম ২৪০০ডলার বাঁচবে। আমি সারাক্ষণ ল্যাপ্টপ দিয়ে কানেক্টেড, আসলে আমার স্মার্টফোনের দরকার নাই, ভাবস ছাড়া।
একজন উপদেশ দিয়েছিলেন পড়াশুনা শেষ করে বের হবার সময় হাতে অন্তত ১০ হাজার ডলার সঞ্চয় রাখতে নানান খরচ লাগে। এইটা দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
যাঁরা সময় করে মূল্যবান মতামত রেখেছেন তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমি পরে একটা সারাংশ তৈরী করে মূল লেখার সাথে জুড়ে দিবো।
অসুস্থ থাকার কারণে পোস্টে মন্তব্য করা হয় নাই। এখন দেখি সবাই প্রায় সব কথাই বলে ফেলেছেন। খুব কাজের পোস্ট হয়েছে।
দেশ থেকে ফিজিকাল ডিস্ট্যান্স একটা বড় ফ্যাক্টর আমার মনে হয়। কালচারাল গ্যাপটাও। যেমন ধরেন মিডেল ইস্টে বা মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরে যারা কাজ করেন, তারা অপেক্ষাকৃত সন্তুষ্ট আছেন বোধ করি, তাদের জীবন এবং চয়েস নিয়ে। দেশ থেকে মাত্র ৪-৫ দূরে। দুবাইয়ে আমার এক ব্যাংকার বন্ধু দুই মাস পর পরই ঢাকা ঘুরে যায়। এটা মার্কিন কানাডিয়ানদের জন্যে স্বপ্নের মত।
আর কালচারাল/সাইকোলোজিকাল ডিস্ট্যান্স-টাও উপেক্ষা করার মত না। আমার মনে হয় শ্বেতাঙ্গ সমাজে খাপ খাইয়ে ৩০-৪০ বছর টিকে থাকা অনেক বেশী কঠিন - দুবাই আমিরাত বা মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরের তুলনায়। সেই সমাজগুলো আমার কাছে মনে হয় আমাদের মানসিকতা/সংস্কৃতির জন্যে আরেকটু অনুকূল। এটা আমার আন্দাজ।
আপনি যেহেতু টেকনিকাল লাইনের লোক, অবশ্যই এই পরের জায়গাগুলোতে একটা ৩-৪ বছরের ট্রাই আগে নিয়ে দেখতে পারেন। এমনও হতে পারে বাকি জীবনের জন্যেই সেগুলো একটা ভালো চয়েস হয়ে যেতে পারে। "শীতপ্রধাণ শ্বেতাঙ্গ দেশ" আসলে এক ধরনের দেশী মানুষের জন্যে নয়, এতটুকু এত বছর পরে সহজেই বলে দিতে পারি। সেটা খারাপও না ভালোও না। ইট ইস ওয়াট ইট ইস। আমি যেখানে থাকি, সেখানে যাদেরকে চিনতাম ৫-৬ বছর ধরে, মন্দার প্রকোপে প্রায় ৭৫% শতাংশ গত ১৮-২৪ মাসে বিদায় নিয়েছে, দেশে ফিরে গেছে। ওয়াইট কলার ওয়ার্কার বলেন, বা সদ্য পাশ স্টুডেন্ট। দেশে গিয়ে একদম বসে নেই কেউই।
তবে সহজেই টাকা বানানোর জন্যে বাংলাদেশ এখন বেহেশ্ত। যদি সেই হিম্মত আপনার থাকে। পাশ্চাত্যে যারা অভিবাসী চাকুরে এখন, সেই হতভাগারা কোনদিনই দেশের এই প্রকারের স্বাচ্ছল্যের চেহারা দেখবে না, যা কিনা বাংলাদেশে ধরেন একটা মাল্টিন্যাশনালের বড় এক্সিকিউটভ চিনে অভ্যস্ত। বা এমনকি অনেক দেশী ফার্মের চাকুরেরাও। টাকার কোন মা বাপ নেই এখানে আর। গ্রোথ ইকনমি আর ম্যাচিউর ইকনমির আসল তফাত।
আমিও দোটানায় আছি। হয়তো শেষমেষ মিডেল ইস্টেই যাবো। সেটাই মোটামুটি যুতসই লাগে দূরে থেকে। নাইলে সিং বা হংকং। যে নেয় আর কি। শেষ বিচারে সন্তানের সহজে সুশিক্ষা এবং সর্বোপরি কারনে-অকারনে ভালো চিকিতসার প্রতি access - এই জিনিসগুলো আমার কাছে মূল্যবান। দেশে নিকট পরিবারের চিকিতসা করাতে হয়েছে। এবং বিদেশে সরকারী হাসপাতালেও। দুটোর মধ্যে যেই আকাশপাতাল তফাত দেখেছি, তাতে আমার জন্যে বিষয়টা বেশ পরিষ্কার হয়ে গেছে।
এইটা নির্ভর করে আপনি কাদের কথা বলছেন। আত্মসম্মানবোধ থাকা লোকের মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিমতো কাজ করা কঠিন। ওরা বিদেশি গরীব দেশের লোকেদের মানুষ মনে করে বলে মনে হয়নি। এদিক দিয়ে শীতপ্রধান ইউরোপীয়ান দেশগুলো অবস্থা অনেক ভালো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দেশে ফিরতে হলে আপনাকে 'চরম বোকা' মানুষ হতে হবে।
নিজের কাছে আপনার জবাব তৈরী থাকলে ও আশেপাশের লোকজনের কাছে আপনাকে আপনার বোকামীর জবাবদিহীতা দিয়ে যেতে হবে প্রতিনিয়ত।
আমি এই 'চরম বোকা' মানুষদের একজন। আপনি সেরকম একজন হবেন কিনা- সিদ্ধান্ত আপনার। যদি জানতে চান-এই বোকামী করে আফসোস আছে কিনা আমার, উত্তর হলো- না! কারন নিজেকে ম্যানেজ করতে পেরেছি- জীবন একটা বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ।
গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা বিষয়- ফ্যামিলিম্যান হিসেবে ভাবীর সাথে বিষয়টা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী আলাপ আলোচনা করুন। সমস্ত ঝুঁকি সম্ভাবনা প্রকাশ করুন। সব বুঝে যদি উনি রাজি হন আপনার সিদ্ধান্ত তাহলে দেশে ফিরে বহুজাতিক ঝামেলা সামলাতে সাহায্য পাবেন।
অগ্রীম শুভ প্রত্যাবর্তন
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
প্লিজ দেশে আসবেন না। না আসতেই মেলা প্যাচাল। আসলে যে কি হবে!
সবগুলি মন্তব্যগুলি পড়ার পর নিজের 'জীবন-যৌবন' বৃথা মনে হইল...।
একই দোলাচলে আছি আমি।
আমাকে একজন বলেছেঃ দেশ কে ভালবাসুন, বিদেশে থাকুন।
সিঙ্গাপুরে থাকা খাওয়ার খরচ ও গড় আয় কি রকম?
নতুন মন্তব্য করুন