শহরের নাম গোল্ডেন। কলোরাডো স্টেইটের একটি শহর। ডাউনটাউন ডেনভার থেকে আধা ঘন্টার ড্রাইভ। এর আগে একবার গিয়েছিলাম--ছোট শহর, পরিপাটি করে সাজানো। হাইওয়ে থেকে গাড়ির জানালা দিয়ে দেখা যায় সুন্দর গোছানো চারপাশ।
গোল্ডেনের অন্যতম আকর্ষণ লুকআউট মাউন্টেন। প্রায় সাড়ে সাত হাজার ফুট উঁচু এই পর্বতটি নানা কারণে আকর্ষণীয়। যারা রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কে গিয়েছেন তারা আমার সাথে একমত হবেন যে লুকআউট মাউন্টেনে ওঠার সাথে রকি মাউন্টেনে ওঠার অনেক মিল আছে। বলা যায় লুক আউট মাউন্টেন রকি মাউন্টেনের ছোট ভার্সন। রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কে গেলে ১২ হাজার ফুটের উপরে গাড়ি চালানোর সুযোগ হয়। সে তুলনায় লুকআউট মাউন্টেন অনেক নিচু। তবে ওঠার রাস্তার প্রায় একই রকম -- আঁকা বাঁকা-- কখনো কাখনো ভি-টার্নের মতো রাস্তা বেঁকে গিয়েছে। তবে যে কারণেই হোক, গাড়ি নিয়ে উঠতে কোন সমস্যা হয়না। তেমন ভয়ও লাগে না যেটা রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কে গিয়ে হয়।
কলোরাডো স্কুল অব মাইনস এই শহরেই অবস্থিত। স্কুল অব মাইনস পেট্রোলিয়াম ইঞ্জনিয়ারিংএর জন্য আমেরিকার প্রথম ৩টি ইউনিভার্সিটির একটি। এই ইউনিভার্সিটিকে সংক্ষেপে মাইনস-ও বলে। লুকআউট মাউন্টেনের উপর ইংরেজী বর্ণ এম খোদাই করা আছে যেটা অনেক দূর থেকে দেখা যায়। www.mines.edu সাইটে গেলে ছবিটা দেখা যাবে। গুগল করলেও দেখা যাবে।
অক্টোবরের একদিন শেষ বিকেলে আমরা গিয়েছিলাম লুকআউট মাউন্টেনে। পর্বতের উপর উঠলে সেই পর্বতের আর কিছু দেখার থাকেনা। বরং পর্বত দেখতে হয় দূর থেকে। কিন্তু উঁচু পর্বতে উঠলে চারপাশটা খুবই ভালোমতো দেখা যায়। পর্বতের উপর জায়গায় জায়গায় গাড়ি থামিয়ে চারপাশ দেখার ব্যবস্থা করা আছে। আমরা একেবারে সাত হাজার ফুট উপরে উঠে সেরকম একটা জায়গায় পার্ক করলাম। তখন সন্ধ্যার প্রায় এক ঘন্টা বাকি। সূর্য ইতোমধ্যেই পশ্চিমে হেলে পড়েছে, দেখা যাচ্ছেনা। বরং রকি মাউন্টেনের পিছনে গিয়ে দূরের পাহাড়ের রিজগুলোকে আলোকিত করেছে। হালকা হলুদ কিংবা ছাই রঙা একটা আভা ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। আমি সুবিধামতো পজিশন নিয়ে কয়েকটা ছবি তুললাম।
সন্ধ্যার আকাশ ক্ষণে ক্ষণেই রং বদলায়। তাই সন্ধ্যা হয়ে এলে আকাশটা আর ততটা আকর্ষণীয় মনে হচ্ছিল না। সূর্য ডুবে গেলে রাতের গোল্ডেন ডাউনটাউন আলোর মেলায় আলোকিত হয়ে উঠল। সন্ধ্যার পরে পার্কটি বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমরাও বাড়ির পথে রওনা দিলাম।
লুকআউট মাউন্টেন ঘুরে এসে মনে হল অল্প জায়গার মধ্যে অনেক কিছু আছে। খুঁজলে হয়তো ছবি তোলার আরো ভালো জায়গা পাওয়া যাবে। শীতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। গেলে আবারো লেখা হবে।
৩। এই ছবিটা মুস্তাফিজ ভাই প্রসেস করেছেন। আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। ছবিটাতে শান্ত, মসৃণ একটা ভাব আছে যেটা অসাধারণ লাগছে।
লেখাটি সম্ভব হয়েছে সচল মুস্তাফিজ ভাইয়ের উৎসাহে। মুস্তাফিজ ভাইয়ের পরামর্শে ২ নাম্বার ছবিটাকে শেডেড সিল্যুয়েট করার চেষ্টা করেছি মাত্র। অনেক ধন্যবাদ, মুস্তাফিজ ভাই!
মন্তব্য
...........................
Every Picture Tells a Story
বেশতো! শীতের অপেক্ষায় রইলাম।
হুম। ধন্যবাদ ভাই।
ভাল লাগলো।
নাহ্! লেখা বা ছবি কোনটার পরিমাণেই পোষালো না। আর এই সব পাহাড়ে কি কোন পাখি বা প্রাণী নেই?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একেবারে ঠিক বলেছেন। শর্টকাট মারতে গিয়ে এই অবস্থা। আসলে একটা জায়গার উপর লিখতে গেলে অন্তত ৪-৫ বার সেখানে গিয়ে ছবির কালেকশন বানিয়ে তারপর ছবি পোস্ট করা উচিত।
এখানে হরিণ আছে, কিন্তু তাদের ছবি তুলতে গেলে খানিকটা লাক আর বেশ খানিকটা ধৈর্য/সময় লাগে। সেটা দিতে পারিনি। ওরকম লক্ষ্য নিয়েও যাওয়া হয়নি।
ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার প্রচেষ্টা থাকবে
ভালো লাগল, আপনাদের চোখেই বিশ্ব দেখি আমরা। ভালো থাকুন---
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
ফাঁকি দিলেন কিন্তু পিপিদা। সাদাকালো করা ছবিগুলো চমৎকার এসেছে। মুস্তাফিজ ভাইয়ের সিগনেচার এডিটিং।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
তা আর বলতে
সচলায়তন এমন স্ট্যান্ডার্ড তৈরী করেছে যে ফাঁকি মারারও উপায় নাই।
আরেকটু বেশি লেখা আর ছবি পেলে ভালো লাগত।
আপনি! ওয়াও। অনেক ধন্যবাদ, ভাই
ছবি গুলা অসাধারণ!
কিন্তু শুরু হওয়ার আগেই খুদাপেজ!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
লিখব, বড় করে লিখব--একটু সময় হলেই
তুষারে সব ঢেকে গেলে দেখার মত হবে মনে হচ্ছে।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আমিও আশায় আছি। দেখা যাক!
এর পরের বার আরো বড় করে লেখেন আর পারলে সাগর নিয়ে লেখেন প্লিজ। (ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, মিয়ামি ইত্যাদি ইত্যাদি...)
পাহাড় দেখতে দেখতে এত ত্যক্ত হয়ে আছি, ছবি দেখলেও ইচ্ছে করে কিনারে গিয়ে লাফ দিই!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সুন্দর কিন্তু আগের আমলের বিটিভির ঈদের নাটকের মত হল: ৯ টার নাটক বিজ্ঞাপন দেখাতে দেখাতে ৯:৪৫এ শুরু করে, তারপর ১০টার ইংরেজি সংবাদের বিরতি।
ছোট গল্পের মতই শুরু হতেই শেষ , পরেরটা নিশ্চয় বড় হবে
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
মুস্তাফিজ ভাইয়ের এডিটিংটা ফটো থেকে মাস্টারপিস আর্টে রূপান্তরিত হয়ে গেছে।
ফটো হিসেবে আপনার নিজের প্রসেস করাটা চমৎকার। তবে সামনের দিকে দুই পাশে ঝাপসা ডালগুলো একটু চোখে লাগে। এটা কোনভাবে গায়েব করে দেয়া যায় না? আই মিন, মুস্তাফিজ ভাইয়েরটার মত পুরোপুরি ব্ল্যাকআউট করে নয়, ফটোশপে?
হুম, কেমনে করা যায় তা জানিনা যে !
অনেক ভালো লাগা।
ছবিতে যুক্ত হয়েছে ভিন্ন মাত্রা।
শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ। সবসময়।
দীপংকর চন্দ
নতুন মন্তব্য করুন