১
১৯৮২ সালের আগের কথা। অথচ মনে হয় এই তো সেদিন। বাবার বদলি সূত্রে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া আসার আগে একটা স্কুলে যাওয়া আসা চলত। পাশের বাড়ির উর্দূভাষী সায়মা, আরশাদ আর আমরা দুটি ভাই-বোন একসাথে যেতাম। তেমন মনে পড়েনা, কেবল ছেঁড়া ছেঁড়া দুই একটা স্মৃতিই মনে গেঁথে রয়েছে। কি জানি প্রকৃতি ভালো লাগত বলেই কি-না, বাড়ির পেছনে কচু গাছের জংগলের দৃশ্যটাই কেবল ভুলিনি। দুইপাশে ভেজা ভেজা বড় বড় ঘাস আর তার মাঝখানদিয়ে পায়ে চলা পথ। সে পথ মাড়িয়ে একসময় হয়তো স্কুলে পৌঁছুতাম।
২
অক্টোবর ২০০৭। উত্তর আমেরিকার একটি স্কুলে যাচ্ছে আমার মেয়ে। এখনো ঠিকমত কথাই বলতে পারেনা। অথচ স্কুলে যাওয়ার জন্য তার কী তাড়না। সকালে ঘুম থেকে নিজেই উঠে রেডি হওয়ার জন্য খোঁচাখুঁচি শুরু করে। তার কাছে স্কুল মানেই আনন্দ, স্কুল মানেই খেলাধূলা। এর ফাঁকেই শিখে নিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়।
সোমবারে থ্যাংসগিভিং উপলক্ষ্যে ছুটি। তাই লম্বা উইকএন্ড। শুক্রবারে ক্লাস টিচার মিসেস ডয়েলের চিঠি এল। জিপলক ব্যাগে করে টাইপ করা চিঠি। বিষয়বস্তু খুবই সামান্য-- মেয়েকে নিয়ে শরতের এই উইকএন্ডে বাইরে বেরিয়ে পরিচিত গাছের ঝরা একটি পাতা কুড়াতে হবে। তারপর জিপলক ব্যাগে ভরে মঙ্গলবারে স্কুলে আনতে হবে। সেখানে আর সব বাচ্চাদের সাথে আতস কাঁচ দিয়ে এই পাতা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
পাতার শিরা উপশিরা দেখে শিশুরা কী বুঝবে বা না বুঝবে সে ভাবনা আমাকে ভাবায়না। আমি ফিরে যাই আমার শৈশবে, ভেজা ঘাসের মাঝখানদিয়ে পায়ে চলা পথ আর তার পাশে কচুগাছের ঝোপ। আহা, আমাকে যদি কেউ এভাবে প্রকৃতি দেখা শেখাত!
লেখাটি যা নিয়ে: ছোটবেলা, প্রকৃতির পাঠ।
মন্তব্য
আমাদের দেশে লজ্জ্বাবতী গাছে যে ফুল ধরে,এর কাছাকাছি কিছু কি ওখানে হয়?
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কীভাবে হবে হাসান ভাই, এখানে লজ্জা বলে কিছু কি আছে?
- ডলকলস বলে একটা ফুল হতো না?
বড় বড় সুরমা কঁচুগাছের ঝোপে দৌড়ে শৈশবের একটা বড় সময় কাটিয়েছি আমিও।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন