৩৫০ ডলারের টিকিট ও আমার ঈদ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি
লিখেছেন প্রকৃতিপ্রেমিক (তারিখ: রবি, ১৪/১০/২০০৭ - ৭:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঈদ মানে সবার সাথে ভাগাভাগি করে আনন্দোৎসব। কিন্তু উত্তরে এসে দেখি ঈদের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে এখানেও মতভেদ আছে। বিশেষত সৌদি অধ্যুষিত এলাকায় ঈদ হয় সৌদিকে অনুসরণ করে। সেই মত বৃহস্পতিবার দুপুরে খবর এল শুক্রবার ঈদ। অথচ আমেরিকা কানাডা বা ভু-গোলের অন্যান্য বসতি স্থানে ঈদ হবে শনিবার নয়তো রবিবার।

তাহলে শুক্রবারে ঈদ। আমার টিউটোরিয়াল আছে সকালে। এক প্রফেসরের এ্যাসাইনমেন্টের খাতা দেখে ফেরত দিতে হবে বিকালের মধ্যে। দুটা মিলিয়ে অন্তত ৬ ঘন্টার মামলা। তাহলে আমার ঈদ হবে কিভাবে?

আগের রাতে বাসায় ফিরে দেখি টিউটোরিয়ালের জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র অফিসেই রয়ে গেছে। সকালে ক্লাস নেয়ার জন্য কিছু অন্তত পড়ে যেতে হবে। ফাঁকিবাজির সুযোগ তো এখানে নাই। গাড়ি নিয়ে ডিপার্টমেন্টের সামনে একটা হ্যান্ডিক্যাপ্ড পার্কিং স্পেসে রেখে আমি গিয়েছি বিল্ডিংএর ভিতরে। যেহেতু একদুই মিনিটের মামলা, বউকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে গিয়েছি যাতে পার্কিং এনফোর্সমেন্টের অফিসার আসলে সে গাড়ি সরিয়ে নিতে পারে।

কপালটাও যা। এক মিনিটও মনে হয় হয়নি। ফিরে আসতে আসতে দেখি পার্কিং অফিসারের গাড়ি আমারটার পাশে। আমি আসতে আসতে তার টিকিট লেখা শেষ। আমাকে ওটা ধরিয়ে দিয়ে সে তার গাড়িতে উঠে বসল।

হ্যান্ডিক্যাপ্ড পার্কিং

আমি ভেবেছিলাম পয়ত্রিশ ডলারের পার্কিং টিকিট হবে হয়তো। কিন্তু ৩৫০ ডলার দেখে আমার চোখ দিয়ে কান্না চলে এল। ব্যাটাকে এত রিকোয়েষ্ট করলাম, কিন্তু তার একই কথা-- তার এখন কিছুই করার নেই। জীবনে একটা টিকিটও খেলামনা, আর খেলাম তো খেলাম ৩৫০ ডলারের একটাই খেলাম। তাও আবার ঈদের আগের রাতে। তো বোঝেন কেমন ঈদ করলাম।


মন্তব্য

দুর্বাশা তাপস এর ছবি

বংলাদেশের ট্রাফিক সার্জন্টদের কাছ থেকে ওদের অনেক কিছু শেখার আছে। যাহোক মূর্খের কাজ মূর্খ করেছে, টিকিট ধরিয়েছে হায়। দুঃখ কইরেন না। হাসি

==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এখানে মনে হয় ঐ ব্যবস্থা আছে। ঈদের দিন সকালে সিটি হলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে টিকিট রিভিও ফর্ম পূরণ করেছি। আসলে মাফই চেয়েছি। দেখা যাক, মাফ বা ডিসকাউন্ট দিলে ভাল। নাহলে কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যাবো। এসব দেশে তো ক্রাইম করেও পারডন পায়। আমি সেই আশায় আছি।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অলৌকিক ভাই, আপনার ঐ কাহিনীটা পড়েছি। আপনার মত অব্স্থা আর কারো যে হবেনা তা আমি নিশ্চিত। আপনি একটা ইউনিক পিস।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আহারে মন খারাপ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বাংলাদেশই ভালো ।গাড়ির আগে একটা স্টিকার লাগাবেন ,"সাংবাদিক" ।
যে সার্জেন্ট টিকিট দিতে আসবে,তারে এমুন ঝাড়ি মারবেন ...হাসি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ইস
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দ্রোহী এর ছবি

আহারে বেচারা।


কি মাঝি? ডরাইলা?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আয়হায় কন কি? আমি তো উইকএন্ডে হরহামেশাই ডিসএবলড স্পেসে পার্ক করি! খাইছে

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুউব সাবধান। ড্রাইভিং সীটে ভাবিকে বসিয়ে রাইখেন কিন্তু। নাইলে ৩৫০ ডলার। (আপনার ওখানেও কানাডার মতই হবার কথা)

অমিত আহমেদ এর ছবি

টিকেট না খাইলে কি ড্রাইভারের ইজ্জত থাকে?
এইবার আপনি জাতে উঠলেন।


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হা হা .. ঠিকই বলেছেন। তবে জাতে ওঠার খরচটা একটু বেশীই ধরেছে। চেষ্টা করছি মাফ পাওয়া বা খরচ কমানো যায় কি-না। সে চেষ্টা সফল হলে আপনাদের জানাবো। বিশেষ করে যারা এই পোস্টে কমেন্ট দিচ্ছেন তাঁরা নিশ্চই তাই কামনা করছেন।।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বাল্যকালে কলকাকলি করে যে ঈদি কামাইছেন তার কাফফারা দেন এইবার।
আপনারে কানে কানে একটা বুদ্ধি দেই। নেক্সট টাইম এমন কিছু হইলে দৌড়ে গিয়ে ওই ব্যাটা অফিসারকে জড়িয়ে ধরবেন। বলবেন যে আপনি নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। আপনি এখন হাঁটতে পারছেন দিব্যি অফিসারটির মতো। অথচো কালকেও পারেন নি। আপনি এতো খুশি, এতো খুশি যে ব্যাটাকে দুয়েকটা চুমা টুমাও দিয়ে দিতে পারেন।

ঘটনাটা করতে হবে খুবই আকষ্মিকভাবে। ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়ে দিতে হবে। নাইলে কিন্তু ফাইনের পরিমান ৭০০ হয়ে যেতে পারে।
সাথে অবশ্য বউ থাকলে একটু সমস্যা আছে। পুরুষ মানুষকে আপনি এমনে চুমা খাচ্ছেন দেখে হয়তো অন্য কিছুও ভেবে ফেলতে পারেন। চোখ টিপি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বাল্যকালে কলকাকলি করে যে ঈদি কামাইছেন তার কাফফারা দেন এইবার।

নারে ভাই, ঈদি টিদি কখোনোই সেভাবে কামানো হয়নি। ঈদি বলে যে একটা কথা আছে তা-ই জানতাম না। তবে ঈদের সময় আব্বা-আম্মা আর আমাদের বুড়া মা (আম্মার নানী! বিস্ময়করই বটে) আমাদের চকচকে নোটের টাকা দিতেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।