প্রবাসী বাংলাদেশীদের, বিশেষত ছেলেদের প্রবাস যাত্রার সময় কোন বইটা সুটকেসে থাকেই? অবশ্যই "রান্না খাদ্য পুষ্টি"!!
সিদ্দিকা কবীরের এই বইটা মোটামুটি সব প্রবাসগামীকেই ধরিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশের পুরুষেরা সাধারণত রান্নাঘরের ১০০ হাত দূরে থাকে, তাই রান্নার র-টা পর্যন্ত জানেনা। এরকম নাদান ব্যক্তিদের রক্ষাকর্ত্রী হিসাবে সিদ্দিকা কবীর তাঁর বইতে একেবারে গোড়া থেকে রান্নার কৌশল শিখিয়েছেন।
যত বইয়ের দোকানে খোঁজ করেছি, তারা সবাই বলেছে, এখনো তাদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের মধ্যে এটা রয়েছে।
আমার এই লেখাটি সিদ্দিকা কবীরের রান্না খাদ্য পুষ্টি বইকে উৎসর্গ করছি, আমার স্ত্রী বিদেশে আসার আগে একাকী রান্নার অনেক হাত পুড়ানো, মশলা ছিটানো সন্ধ্যার ত্রাণকর্তা হিসাবে।
সিদ্দিকা কবীরের আত্মজীবনী পড়েছিলাম এক পত্রিকার ঈদ সংখ্যাতে। এবারের আগের বার দেশে থাকাকালে ঐ জীবনীটা পড়ি। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে বাংলা উইকিপিডিয়ায় তাঁর যে জীবনী নিবন্ধটি লিখেছি, নীচে তুলে দিলাম।
সিদ্দিকা কবীর - বাংলা উইকিপিডিয়া
সিদ্দিকা কবীর (জন্ম মে ৭, ১৯৩৫, ঢাকা) একজন বাংলাদেশী পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ। তিনি তাঁর লেখা রন্ধনবিষয়ক বইগুলির জন্য বিখ্যাত।
সূচিপত্র
* ১ ব্যক্তিগত জীবন
* ২ শিক্ষা
* ৩ চাকরী জীবন
* ৪ রান্নার অনুষ্ঠান
* ৫ তথ্যসূত্র
১ ব্যক্তিগত জীবন
সিদ্দিকা কবীরের জন্ম পুরানো ঢাকার মকিম বাজারে, ১৯৩৫ সালের ৭ই মে। তাঁর পিতা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। সিদ্দিকা কবীরের মাতা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।
১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে সিদ্দিকা কবীর ব্যাংকার সৈয়দ আলী কবীরকে বিয়ে করেন।
২ শিক্ষা
সিদ্দিকা কবীর পড়াশোনা করেন প্রথমে ইডেন কলেজে। সেখান থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হন ও সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৬৩ সালে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান।
৩ চাকরী জীবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসাবে খন্ডকালীন চাকরীতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে মাস কাজ করেন। এর পর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। এখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহন করেন।
৪ রান্নার অনুষ্ঠান
১৯৬৫ সালে সরকারী প্রতিষ্ঠান হতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শিখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে "ঘরে বাইরে" নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন।
সিদ্দিকা কবীর তাঁর "রান্না খাদ্য পুষ্টি" বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশের সময় মুক্তধারা, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা এটি প্রকাশ করতে রাজী হয় নাই। পরে এটি নিজ খরচে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পর এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা, যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন, যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়।
৫ তথ্যসূত্র
* আত্মজৈবনিক রচনা, প্রথম আলো ঈদ সংখ্যা, ২০০৬।
মন্তব্য
লেখাটা পড়লাম। একটি গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে জানার সুযোগ হলো। তবে লেখাটাতে কিছু কিছু জায়গা পাঠযোগ্য হলো না। একটু কারেকশনের দরকার আছে।
--কতো মাস কাজ করেন বোঝা গেলো না।
এটা একটা উদাহরণ।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
সিদ্দিকা কবীর সম্পর্কে আমার পরিচিত নারী মহলের বক্তব্য হচ্ছে রিসিপিগুলো প্রাকটিকাল (অর্থাৎ উনি সহজ লভ্য উপকরণ ব্যবহার করেন) এবং খুব সহজ। ফলে রান্নায় অভ্যস্ত নয় এমন মানুষও সহজেই উৎরে যেতে পারেন। কাজেই প্রবাসী বাঙালীদের জন্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বই।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
যখনই আমি কোনকিছু রান্না করি (তাঁর বই সামনে মেলে রেখে) আর অতিথিরা বেশ প্রশংসা করেন তখন আমি বলি, "সব আমার খালাম্মার রেসিপি।"
তবে বইটিতে কিছু ঘরোয়া রান্নার বর্ননা থাকলে বেশ হতো। যেমন, ছোটমাছ কি শুঁটকি বা মুলোশাক ইত্যাদি।
আর রাগিব যদি কিছু মনে না করেন তবে বলি, লেখা ভাল হয়েছে তবে গুরুচণ্ডালী সম্পর্কে আরেকটু সাবধান হতে হবে।
শ্রদ্ধেয় সিদ্দিকা আন্টি হোম ইকনমিক্স কলেজে থাকাকালীন সময়ে আমার খালার সাথে তাঁর তুমুল সখ্য,আমার নানীর বেশ কিছু রেসিপি(যিনি আরেকজন কিংবদন্তীতুল্য রন্ধনশিল্পী ছিলেন)নিয়েও কাজ করেন,এই পুষ্টিবিদ ও গবেষণাবিদকে শ্রদ্ধা জানাই।মেয়ে বা ছেলে নয়, যে কোনো রান্না না জানা মানুষের বাইবেল, আমার মতো গো-মূর্খও "দারুণ রাঁধুনি" খেতাব পায় যার বইয়ে,তাঁকে সশ্রদ্ধ সালাম।
সিদ্দিকা কবীরের জন্য শ্রদ্ধা না জানিয়ে উপায় নেই। প্রথম সংসার শুরু করার পর জামাইসহ না খেয়ে থাকতে হবে এইরকম একটা আশংকাকে মিথ্যা করে ছেড়েছে এই বিশিষ্ট মহিলার বইটি। এক্কেবারে রান্না না জানা মানুষও এই বই থেকে সহজে রান্না শুরু এবং ভালো করতে পারে এটা বিশ্বাস করি। আসলেই তিনি শুধু শুধু ভংচং উপকরণের কথা লিখেন নি যেটা কিনা আমরা চিনিই না! যেসব খাবার আমরা নিজেদের বাড়িতে খেয়ে অভ্যস্ত সেই সমস্তই অতি সহজভাবে শিখিয়ে দেবার এই রন্ধনশিল্পীকের শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানাই।
রাগিব ভাইকে ধন্যবাদ তাঁকে নিয়ে লিখার জন্য।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
আমার কাছে ফার্স্ট এডিশন আছে ! ভাবছি আরো তিরিশ বছর পরে নিলামে তুলবো ।
"ত্রুটি সংশোধনের জন্য অশেষ ধন্যবাদ (তবে উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে জায়গামতো শুদ্ধ করে দিয়ে আসলে আরো খুশি হবো)। কী আর করবো বলুন, মিস্তিরি মানুষ, ইট কাঠ আর সার্কিট নিয়ে কাজ-কাম, ভাষায় তাই একটু কাঁচা। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।"
ভাষায় আপনি মোটেও কাঁচা নন। আপনার সব লেখা অতি আগ্রহের সাথে পড়ি ও উপভোগ করি।
উইকিপিডিয়ায় গিয়ে শুদ্ধ করার মত যোগ্যতা আমার নেই ভাই।
আর আপনি গণক মিস্তিরি, সেখানকার কোন কিছুই আমি বুঝি না। কাজেই...
নতুন মন্তব্য করুন