রশীদ হলের চিড়িয়াখানা - ৩ (পানি বিশারদ ও নেতা কাহিনী)

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: শুক্র, ১৮/০৪/২০০৮ - ৯:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুয়েটের সব হলগুলোর মধ্যে রশীদ হলের বদনাম একটু বেশিই, বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা এখান থেকেই হয়ে থাকে সেটা দুর্জনেরা বলে। কথাটা অবশ্য মিথ্যা না, আমার থাকার বছর কয়েকে যতবার পরীক্ষা পেছাবার আন্দোলন শুরু হয়েছে, ততোবারই সেটা শুরু হয়েছে রশীদ হলের ডাইনিং হল থেকে।

পরীক্ষা পেছানোর ফরমুলা খুব সহজ। পরীক্ষার আগের দুই সপ্তাহের যে প্রস্তুতি ছুটি নামের অদ্ভুত, অদ্বিতীয় পদ্ধতি আছে, সেই প্রস্তুতি ছুটির চার পাঁচদিনের মাথায় ডাইনিং হলে ঢোকার মুখে একটা কাগজ ফেলে রাখতে হবে, “অমুক-তমুক অজুহাতে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না, এই ব্যাপারে আগ্রহীরা সাক্ষর করুন”। আর সাথে গুটি কয়েক ভুয়া সাক্ষর। এর দুই দিনের মাথায় ডাইনিং এ খাওয়ার সময়ে উচ্চস্বরে বলাবলি করতে হবে, “পরীক্ষা তো এবার পিছিয়েই গেলো”। ব্যস, বুয়েটের হলে থাকা আঁতেলতম ছাত্রও এসব কথা শুনে ধরে নেবে, এটাই হবে, এবং পড়ালেখা বাদ দিয়ে টিউশনীতে চলে যাবে। এর আধা থেকে এক দিনের মাথায় হলের গেস্ট রুমে রাত ১টার দিকে একটা মিটিং ডেকে রাতের আঁধারে পরীক্ষা পেছানোর মিছিল বের করে, দুই একটা জানালা-টানালা ভাঙলেই কাজ সারা। দিন দুয়েকের মাথাতেই লাল রুটিন বা নীল রুটিন চলে আসবে।

আমাদের রশীদ হল থেকেই এভাবে শুরু হতো সব পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন। মিছিল বেরুতো রাতের আঁধারে, কারণ বুয়েটের আন্দোলনবাজ ছেলেপেলেরাও দিনের বেলা মিছিল করে চেহারা দেখাতে সাহস করে না। মিছিলগুলো হল থেকে হলে ঘুরে ঘুরে লোকজন বাড়ানোর চেষ্টা করতো, বুয়েটের আঁতেলতম হল সোহরাওয়ার্দী হলে অবশ্য ঢুকতে পারতোনা অধিকাংশ সময়েই, আর শেরে-বাংলার ছেলেপেলে পানি মারতো দুই হলের মধ্যকার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে।

পানি মারা অবশ্য বেশ মজার কাজ। পরীক্ষা পেছানোর মিছিল ছাড়াও নবীন বরণ, rag, লেভেল পুর্তি, এরকম অনেক বিষয় নিয়ে শোভাযাত্রা বেরুতো, সেই রাতের বেলাতেই। এই সব মিছিলে পানি মারাটা রীতিমতো বাধ্যতামূলক ছিলো হলের ছেলেপেলের জন্য। কেউ কেউ পানি মারাতে প্রচন্ড সুনিপুণ দক্ষতা অর্জন করেছিলো ... বালতি রেডি থাকতো, মিছিলের আওয়াজ পেলেই বালতিভরে প্রস্তুত। আর কীভাবে চারতলা থেকে হিসেব করে পানি মেরে লক্ষ্যভেদ করা যাবে, তাও এই পানি-বিশেষজ্ঞদের নখদর্পনে ... সব সময়ে মিছিল করা লোকজন ভেজা কাক হয়ে ফিরতো।

---

রশীদ হলের আরেকটা ব্যাপার ছিলো – নেতাধিক্য। মোটামুটি সব ছাত্র সংগঠনের ক্যাডার গোছের নেতারা ঘটনাচক্রে রশীদ হলের বাসিন্দা ছিলেন। আমরা যখন ঢুকি, তখন সেখানে ত্রাস-সৃষ্টিকারী নেতা ছিলেন শহীদুল্লাহ ভাই। গুজব ছিলো, শহীদুল্লাহ ভাই নাকি শুরুতে ছিলেন ছাত্রলীগের পাতি নেতা, ছিনতাই করার দায়ে ছয় মাস হাজতে কাটিয়ে ফেরত এসে শুরুতেই অস্ত্র সহ এক চেলাকে নিয়ে হলে হলে ঘুরেন, আর তখনকার ছাত্রলীগের বড়সড় নেতাদের চেলা দিয়ে চড় মারান। সেই থেকেই বুয়েটের ছেলেপেলে শহীদুল্লাহ ভাই আতংকে ভুগতো।

হলের মেস ম্যানেজার হয় দুজন ছাত্র, আর মেসের বাজার করার দায়িত্ব তাদের থাকে। হলের মাসিক ফিস্টের বাজেট থাকে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। ফিস্টের দিন সকালে ম্যানেজারের দায়িত্ব হলো সেই টাকাটা রাস্তার ওপারের সোনালী ব্যাংক থেকে তুলে হলে ফেরা, আর মেসের বাজার করা ছোকরাকে নিয়ে বাজারে যাওয়া। সেবার হঠাৎ শোনা গেলো, শহীদুল্লাহ ভাই ঘোরাফেরা করছে ম্যানেজারদের মোলাকাৎ করার জন্য। দুই গোবেচারা মেস ম্যানেজার রাস্তার ঠিক ওপারে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছে ঠিকই, কিন্তু ভয়ে আর ব্যাংক থেকে বেরুতে পারে না। অনেক পরে সাহস সঞ্চয় করে যখন বেরিয়ে মিনিট খানেকের হাঁটা পথের অর্ধেকটা এসেছে, তখনই পড়বি তো পড় শহীদুল্লাহ ভাইয়ের সামনে। ওনার “ঘোরাফেরা করাটা” অবশ্য আসলে গুজব ছিলো, কিন্তু মেস ম্যানেজার দুজনের দৌড়টাও দেখার মতো ছিলো বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

শহীদুল্লাহ ভাইয়ের এরকম কাহিনীগুলো সত্যি না মিথ্যা তা জানিনা। আমরা ক্লাস শুরুর কিছুদিন পরে কোনো কারণে ওনার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়, বিশাল দাঁড়ি রেখে ঘোরাফেরা করা আর আধ্যাত্মিক কথাবার্তা বলতে থাকেন। সবাই তখন ওনাকে আরো এড়িয়ে চলতে থাকে, কারণ সামনে পড়লেই আধা ঘণ্টা হাত চেপে ধরে বিশাল ধর্ম-বিষয়ক দার্শনিক আলোচনা করতে থাকতেন। আস্তে আস্তে এসব বাড়তে থাকে, একবার পরীক্ষা চলার সময়ে রাত বারোটায় আমার পাশের রুমে ঢুকে আস্তানা গাড়লেন, সারা রাত সেখানকার একজনার কম্পিউটারে বসে বসে উঁচু আওয়াজে হিন্দি সিনেমার গান দেখতে থাকলেন। রুমের এক জুনিয়র ছাত্রের করুণ পরিণতি হলো, সারা রাত না ঘুমাতে পেরে সকালে বেচারা পরীক্ষাটা মিস করে ফেললো ঘুম থেকে না উঠায়।

শহীদুল্লাহ ভাইকে পরে মাঝে মাঝে হলে ঘুরতে দেখতাম। জানিনা, আহসানউল্লাহ হলের সালাম ভাইয়ের মতো তাঁরও একই পরিণতি হয়েছিলো কি না। সালাম ভাই প্রায় চল্লিশোর্ধ মানুষ, কাঁচাপাকা দাঁড়ি রেখে শার্ট-ইন করে জুতা পরে ঘুরতেন আহসানুল্লাহ হলের আশে পাশে। শোনা যায়, প্রচন্ড মেধাবী ছিলেন, সত্তর বা আশির দশকে বুয়েটে পড়ার সময়ে প্রেমের ব্যর্থতায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকেই বুয়েটের রাস্তায় তাঁর বসবাস। সারাক্ষণ রাগত স্বরে অদৃশ্য কারো সাথে ঝগড়া করে চলতেন। আলমের দোকান সহ সব খানে সালাম ভাইয়ের ফ্রি খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো, ওনার ব্যাচের সবাই নাকি চাঁদা তুলে একটা ট্রাস্ট করে রেখেছে, যার থেকে বুয়েট এলাকার সব দোকানে সালাম ভাইয়ের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা আছে, ওনার সহপাঠী বুয়েটের অনেক সিনিয়র শিক্ষক মাঝে মাঝে খোঁজ নিতেন।

শহীদুল্লাহ ভাইয়ের জন্য হয়তো সেরকম কিছু হবে না।

--
পাদটীকা – শহীদুল্লাহ ভাইয়ের পরে রশীদ হল তথা বুয়েটের ক্যাডার উপাধি নেন মুকি ভাই। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বুয়েট এলাকার সব টেন্ডারের দেখভাল করা, নির্বাচনের সময়ে হলের ছেলেপেলেকে নিয়ে পিন্টুর সপক্ষে ভুয়া ভোট দেয়াতে নিয়ে যাওয়া সহ সব কিছুতেই সোৎসাহে নিয়োজিত ছিলেন। পরে অবশ্য সনি হত্যা মামলাতে মুকি ভাই প্রধান আসামী হন, বিচারে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার সময়েও পলাতক ছিলেন। জোটসরকার শেষের দিকে গোপনে মৃত্যুদণ্ড রহিত করে যাবৎজীবনে পালটে দেয়। এখনো সম্ভবত পলাতক। রশীদ হলে শহীদুল্লাহ-মুকীদের স্থান আজ কে নিয়েছে, তা অবশ্য জানিনা, তবে হয়তোবা আজও অব্যাহত রয়েছে এই পরম্পরা।


মন্তব্য

পুরুজিত এর ছবি

আমার পরীক্ষা পেছানোর কথা শুনলেই আমার রুমমেটের মুখের উজ্জ্বল হয়ে উঠা মনে পড়ে, কোন এক কারণে সে (আমিও কিছুটা) রাইজ অফ দ্য নেশন খেলার পাগল ছিলাম। পরীক্ষা পেছানো মানেই আরো কিছু উদ্ভট কম্বিনেশন বের করার সুযোগ পাওয়া। আমার আরেক বন্ধু রশীদ হলে থাকতো, সে ছিল আমাদের ইনফর্মার। বুয়েট জীবনে শুধু একবারই পরীক্ষা পেছাবে শুনেও শেষমেষ পেছায়নি। (সবাই চরম বাঁশ খেয়েছিল সেবার...)

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন বুয়েটে এই ট্র্যাডিশানটা উঠে গেছে। আমরা পরীক্ষা পেছানোর মিছিল্গুলো খুব মিস করি।
রাগিব ভাই আপনার ব্লগগুলো পড়ে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি। এই যেমন সালাম ভাইয়ের ব্যাপারটা...আমরা '০৩ ব্যাচ বুয়েটে এসে এমন মানসিক রোগী আরেকজনকে পেয়েছি - লায়ন ভাই। আপনিও চিনতে পারেন...

(রিজভী)

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হ্যা, লায়ন আমাদের ৯৫ ব্যচের। ওর সমস্যাটাও প্রেম ঘটিত।

দরাজ গলায় গান করতো। ওর সাথে জেমস এর গানে গলা মিলিয়ে অনেকদিন গেয়েছি। একসময় ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়াতো, পরে মানুষের আতঙ্ক আর করুণার পাত্র।

লেখাটা ভালো হয়েছে রাগিব ভাই। অনেক পেছনে চলে গেলাম হঠাৎ করেই।

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

অমিত এর ছবি

লায়ন ভাইয়ের এখন সালাম ভাইয়ের অবস্থা নাকি ?খাইসে

তানভীর এর ছবি

রশীদ হলের শরীফ লীগ থেকে ভিপি ইলেকশন করেছিল লায়নের বিপক্ষে। শরীফ অবশ্য ক্যাডার ছিল না। আমাদের আরো একটা শরীফ ছিল। চোখে চশমা- তাই এটা হল কানা শরীফ। আর নেতা শরীফ ক্যামনে একবার হাত ভেঙ্গে অনেক দিন হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে ছিল। তাই সে হয়ে গেল ভাঙ্গা শরীফ। কিছুদিন পর দুই জনের নাম থেকে শরীফ বাদ হয়ে শুধু কানা আর ভাঙ্গা নামদুটোই চিরস্থায়ী হয়ে গেল।

বুয়েটের আঁতেলতম হল সোহরাওয়ার্দী হলে ...

তা অবশ্য ঠিকই। আমার রুমমেট ছিল কম্পিউটারের রফিক ভাই, আর ইলেক্ট্রিকালের রুবাইয়াত। বাসায় থাকতাম যদিও কিন্তু কখনো হলে থাকার প্রয়োজন হলে এ দুই আঁতেলের সাথে থাকতে হবে চিন্তা করে নিজ রুমে কখনো থাকি নাই। ওরাও অবশ্য আমি থাকি না দেখে আমার উপর খুব খুশী ছিল। আমি হলে থাকি না টের পেয়ে পরে কর্তৃপক্ষ যখন আমার সিট বাতিল করে দিল, তখন আমার চেয়ে ওদের চিন্তাই বেশী হল রুমের ভাগ আরেকজনকে দিতে হবে বলে। সিটটা কিভাবে আমার নামে রাখা যায় সেটা নিয়ে ওরা আমাকে অনেক বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু আমি তখন সিট চলে যাওয়াতে মনে মনে খুশীই ছিলাম।

সিট যেভাবে পেয়েছিলাম সেটাও খুব মজার। শুরুতে আসলেই চট্টগ্রাম থাকি, ঢাকায় চাচার বাসা থেকে তখন ক্লাস করি। হলে সিটের জন্য দরখাস্ত করলাম। সিটের ইন্টারভিউতে প্রভোস্ট স্যার জিজ্ঞেস করলেন আমার সিটের কেন প্রয়োজন। করুণ মুখ করে বল্লাম, স্যার চাচার বাসার ড্রইং রুমে থাকি, পড়ালেখার অসুবিধা। ব্যস সিট মঞ্জুর হয়ে গেল। কিন্তু তখন সিটে উঠতে পারলাম না। আমার সিট ছাত্র ইউনিয়নের এক আদু ভাই নেতা দখল করে রেখেছে। প্রতিদিন রুমে যাই আর নেতাকে অনুরোধ করি, ভাই আমার সিট কবে দিবেন। ব্যাটা আমার গায়ে-মাথায় হাত বুলায়ে বলে, এই তো ভায়া আমার একটা চাকরী হবে শিগগির, হলেই তোমাকে সিট ছেড়ে দিব। বিরক্ত হয়ে এক সেমিস্টার পরে আম্মাকেই ঢাকা নিয়ে এসে বাসা করলাম। ততদিনে নেতা আমার সিট ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু আমার আর হলে থাকা হয় নি। ঐ সিটটা সোহরাওয়ার্দীর এক তলায় ছিল। সেকেন্ড ইয়ারে এলটমেন্টের সময় আমি হলে থাকি না জেনে রুবাইয়াত ওদের রুমে আমার নাম ঢুকিয়ে দিল। তখন এক তলা থেকে দুই তলায় গেলাম। এক তলার ঐ ভূতুড়ে রুমটাতে অবশ্য এক ঈদের দিন রাতে ছিলাম। কিন্তু সে অন্য এক বিশাল কাহিনী।

=============
"আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম"

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

জব্বর !

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

নজমুল আলবাব এর ছবি
সবজান্তা এর ছবি

পরীক্ষা পেছানোতে বুয়েটের বদনাম মনে হয় ঘুঁচতে শুরু করেছে। বর্তমান ভিসি প্রমাণ করে দিয়েছেন, জিদ কিংবা রাজনৈতিক আদেশের বশবর্তী না হয়ে, শুধু মাত্র একটু যুক্তি আর বুদ্ধির সাহায্যে সিদ্ধান্ত নিলে বুয়েটের ছাত্রদের নিয়ন্ত্রন করাটা কতখানি সহজ।

আমি অন্য একটা ব্লগে বলেছিলাম ( যেটা অধিকাংশ বুয়েট ছাত্রই বলে থাকে ), যে ছাত্রগুলি তাদের শিক্ষাজীবনের ১২ বছর পরীক্ষাকে এত ঘৃনা করেনি, পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে মিছিলের কথা স্বপ্নেও ভাবেনি, তারা যদি রাতারাতি এমন হয়ে পড়ে তাহলে দোষ কি শুধুই ছাত্রদের ? আশা করা যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতেই পরীক্ষা পেছানো সুদূর অতীতের কাহিনী হয়ে যাবে বুয়েটে।
---------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

ফারুক হাসান এর ছবি

পাঁচটি বছর অকাতরে তিতুমীর-শেরেবাংলা বিখ্যাত চিপায় চারতলা থেকে পানি ঢেলেছি কত মিছিলে! নয়ন ভাইয়ের সেই ট্রেনিং, কত ডিগ্রিতে কত বেগে আর কতসময় আগে বালতির পানি খালাস করলে মিছিলের সবচেয়ে ঘনবসতিকে ভেজানো যাবে- সে কি ভোলা যায়! যারা গোলা ছুড়তে অক্ষম তাদেরকে রাখা হত সাপ্লাই চেইনে, রুম থেকে বালতি এনে একের পর এক পানি ভর্তে থাকত, আর আমরা সামনে 'তোপ দাগাও' বাহিনী!
আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মত দৈবাত কারেন্ট গেলে তিতুমীর বনাম শেরেবাংলা ঐতিহাসিক গালাগালিতে কতরাত যে সামিল থেকেছি! আমার রুমমেট জাভেদ, যার অভিনব গালি উদ্ভাবনের ক্ষমতা দেখে যে কোনো শিল্পী লজ্জা পেত, সেই জাভেদ আজ কত ভদ্র!

লায়ন ভাইয়ের সাথে যত মজার, করুণ এবং দারুণ স্মৃতি আছে, তা লিখতে গেলে আলাদা পোষ্ট দিতে হবে।
রাগিব ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, পুরানো স্মৃতি জাগিয়ে দেবার জন্য।

----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

তানভীর এর ছবি

লায়নকে নিয়ে আমার একটা পুরনো লেখা ছিল। ভাবছি এখানে পোস্ট করে দিব চিন্তিত

=============
"আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম"

স্বপ্নাহত এর ছবি

চলুক

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

থার্ড আই এর ছবি

রশীদ হলের ক্যান্টিনের ফাও খাওয়া কাহিনী কবে আসবে..??

আমাদের ডিইউ'র পোলাপানের অতি পছন্দের ছিলো রশীদ হলের ক্যান্টিন। রাত দশটার পর টিউশনী করে হলে ফিরে হল মেসের খাবার শেষ, কিন্তু রশীদ হলের খাবার শেষ হয়না।
আর এস এম হলের ছাত্র হবার সুবাদেতো রশীদ হলের খাবারের স্বাদ হামেশাই নিতাম।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

রশীদ হলকে নিয়ে লেখা চলুক। পানি মারার বিষয়টা আসলেই চরম মজার ছিলো। তবে কারেন্ট চলে গেলে আন্তঃহল গালি প্রতিযোগিতার চেয়ে মজার জিনিস আর হয় না। হাসি

শহীদুল্লাহ ভাইকে নিয়ে লেখা বিষয়গুলো আরেকটু জেনে নিয়ে লিখলে ভালো হতো। যেমন, মেস ম্যানেজার সম্পর্কিত ব্যাপারটা। রশীদ হলের মেস ম্যানেজারদের অনেকেই টাকা মারতো, প্রভোস্টেরা কেন মাসের পর মাস তাদেরকেই আবার মেস চালাতে দিতেন, তা এক রহস্য বটে! তবে মেস ম্যানেজারদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে শহীদুল্লাহ ভাইয়ের পলাশী যাওয়ার প্রয়োজন সম্ভবত ছিলো না, হলে বসেই কাজটা করার মত প্রভাব উনার ছিলো।

আর পরীক্ষা পেছানোর সাথে "পড়ালেখা বাদ দিয়ে টিউশনিতে যাওয়ার" কনসেপ্টটা সম্ভবত বুয়েটের টীচারশ্রেণীর আবিষ্কার, সত্যের সাথে এই তত্ত্বের বিরোধ কতোটা বেশি, এই তত্ত্বের উদ্ভাবকেরা তা না জানারই কথা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো
-নিরিবিলি

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হায় মেধাবীগণ!

বুয়েটের এইসব অকথিত অধ্যায় তুলে ধরার জন্য রাগিব ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।