৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের কয়েকজনে গিয়েছিলেন খেতে কলকাতার এক রেস্তোঁরাতে। পেটপুরে ভাত খাবার পরে বেয়ারাকে “পানি” দিতে বলাতে রেস্তোঁরার গোঁড়া মালিক সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে জেরা করেছিলেন, “আপনারা কি মোহামেডান”?
জবাবে রসিক এক খেলোয়াড় বলেছিলেন, “কী যে বলেন দাদা, মোহামেডান হতে যাবো কেনো!! আমরা সবাই ভিক্টোরিয়ান”*।
এক বাঙালি জাতি, সেই চর্যাপদের আমল থেকে বাংলা বলতে বলতে কখন যেনো নিজের অজান্তেই ভাষাকে ভাগ করে ফেলেছে ধর্মীয় লেবাসে।
--
জল নাকি পানি, এই বিতর্ক এই ভেদাভেদ এখন প্রকট হয়ে গেছে পূর্ব আর পশ্চিমবঙ্গে, আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে মুসলিম প্রধান এবং হিন্দু প্রধান এলাকাতে। এক সময় অর্কুট নামের ব্যর্থ সোশাল নেটওয়ার্কের এক কমিউনিটির সদস্য ছিলাম, যার মূল প্রতিপাদ্য ছিলো (কাগজে কলমে), দুই বাংলার মিলন সাগর। কিন্তু ঘটিদের বাগে পেলে বাঙালেরা যেমন সাইজ করে, সেই কমিউনিটিতে হাতে গোনা দুই বাংলাদেশীর একজন হওয়াতে আমি হাড়ে হাড়ে টের পেলাম, উল্টোটাও সত্য। বাংলাদেশ = মুসলিম = সন্ত্রাসী এই ফরমুলাতে ধাতানী দেয়ার এক পর্যায়ে মস্তান দাদা যে থিওরি দিলেন, তা এরকম – বাংলাদেশের বাংলা আর বিশুদ্ধ বাংলা নেই, তা এখন উর্দুঘেষা বাংলাতে পরিণত হয়ে গেছে, যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই “জল” এর বদলে “পানি” বলে, যা নাকি খাস উর্দু থেকে চাপানো হয়েছে।
ঘটি পশ্চিমবঙ্গবাসীদের এই তত্ত্ব আগেও শুনেছি ... কেবল আমিই শুনেছি তা না, আমাদের বাঙাল গর্ব সুনীল গাঙ্গুলীকেও শুনতে হয়েছে বহুকাল। হাজার হলেও সুনীল ফরিদপুরের খাস বাঙাল, ৪৭ এর দেশ বিভাগের পরে যখন তাঁর স্থায়ী নিবাস কলকাতায়, তখন তাঁকেও “পানি” নিয়ে উপহাসের স্বীকার হতে হয়েছে। আত্মজীবনী “অর্ধেক জীবন” বইটাতে সুনীল “পানি” শব্দের এই “ধর্মীয় লেবাস” সম্পর্কে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন, কেননা পানি শব্দটি আদতে সংস্কৃত মূল “পান্য” থেকে এসেছে বাংলাতে, তার পাশাপাশি হিন্দুস্থানীতে (ও তার অধুনা সন্তান হিন্দি ও উর্দুতে)। এক মূল সংস্কৃত ভাষা থেকে আসা জল হয়ে গেলো “খাঁটি বাংলা”, আর “পানি” হয়ে পড়লো “মুসলমানী (বিকৃত) বাংলা”, পশ্চিমবঙ্গে (এবং হয়তো পূর্ববঙ্গেও) প্রচলিত এই ধর্ম-শব্দ-ধারনার কারণ কী, সুনীল প্রশ্ন করেছেন সেখানে।
---
সুনীলের প্রশ্নটা আমাকেও ভাবায়, বাংলাতে আরবী শব্দ যে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ নির্বিশেষে সবাই ব্যবহার করেন না, তা নয়। “কাগজ”, “কলম”, এরকম আরবী শব্দ ব্যবহারে তো কারোরই কোনো আপত্তি নেই। নেই আপত্তি “আইন” শব্দটিতে, কিন্তু সংস্কৃত পানি শব্দটি কীভাবে হয়ে গেলো “মুসলমান”, আর জল হয়ে গেলো “হিন্দু”?
পারিবারিক সম্পর্কের শব্দগুলো চুড়ান্ত রকমের ধর্ম-ভিত্তিক, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সম্ভবত কেউই “আম্মা” বা “আব্বা” বলেননা, যেমন মুসলমানেরা বলেননা “পিসি”। পশ্চিমবঙ্গে সম্ভবত “ভাইয়া” শব্দটি সর্বত্র মুসলমান শব্দ বলেই বিবেচিত হয়, (গল্পে নাটকে মুসলমান চরিত্রগুলোর মুখেই আসে দেখি)। অথচ আরেকটু পশ্চিমে গেলেই হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সবাই ভাইয়া বলে চলে। ভাই শব্দটি কোথা থেকে এসেছে, অ-ভাষাবিদ আমার পক্ষে জোরসে বলা অত সহজ নয়, কিন্তু প্রায় নিশ্চিত যে সংস্কৃত “ভ্রাতঃ” শব্দ থেকেই এটা এসেছে, ইন্দো-ইয়ুরোপীয় সংযোগের সুবাদে যার ইংরেজি রূপ “ব্রাদার”। তাহলে ভাইয়া কেনো মুসলমান আর দাদা হলো হিন্দু?
বাংলার এই ধর্মীয় শব্দভেদ তাহলে এলো কীভাবে? বাংলার পশ্চিমের এলাকাগুলো সব সময়ে যে মুসলিম শাসকদের অধীনে ছিলো, তাও নয়, বরং বাংলার চাইতে ভারতের সেই সব এলাকায় মোগল পাঠান শাসকদের শাসন চলেছে অনেক বেশি। খোদ বাংলাদেশ তথা পূর্ববঙ্গেও সর্বত্র মুসলিম শাসন ছড়িয়ে যায় নি, তার পরেও কেনো পূর্ববঙ্গের ভাষায় তথাকথিত “মুসলিম” বাংলার আধিক্য, যেখানে পশ্চিমবঙ্গে তথাকথিত “শুদ্ধ” শব্দের ব্যাপকতা বেশি?
--
কলকাতার সেই হোটেল মালিক জল আর পানিতে ধর্ম চিনতে চেষ্টা করেছিলেন। দাদা আর ভাই, জল আর পানি, -- কেমন করে যেন বাংলা শব্দগুলো চাপা পড়েছে ধর্মের লেবাসে, তাই গোসল আর স্নানে, নিমন্ত্রণ আর দাওয়াতে আমরা চিনে নেবার চেষ্টা করি মানুষের ধর্মীয় পরিচয়, এক লহমায় ফেলে দেই স্টেরিওটাইপে। সেই স্টেরিওটাইপ আমাদের মন মানসে নিয়ে আসে মরিচ, কিংবা স্থানভেদে লংকার ঝাল, কিংবা লবন অথবা নুনের মতো স্বাদ।
-----------------------------
[পাদটীকা ১] ভাষার উপরে উপরের লেখাটিতে বিস্তর “সম্ভবত” ব্যবহার করা হয়েছে, কারণ অনেকটাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। কুপমন্ডুক হিসাবে আমার দৃষ্টিসীমা একটু সীমাবদ্ধ, কাজেই অনেক শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণাটিও সেরকম। দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন।
[পাদটীকা ২] সেই সময়ে ঢাকার দুই বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব ছিলো মোহামেডান আর ভিক্টোরিয়া
[পাদটীকা ৩] বাংলা উইকিতে এই সংক্রান্ত ঝামেলা বাঁধার আগেই আমরা ভাবছি, ব্রিটিশ-আর-আমেরিকান বানানের/শব্দের মতো রীতিটা হয়তো বেছে নিবো। অর্থাৎ কেউ একটা বানান/শব্দ বেছে নিয়ে নিবন্ধ শুরু করলে সেটা "ঠিক" করার চেষ্টা হবে না, আর এলাকা ভিত্তিক বিষয়বুঝে শব্দ/বানান ব্যবহার করা হবে। দেখা যাক, এই ব্যাপারে শেষমেশ কী ঠিক করা চলে।
মন্তব্য
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অসাধারণ পোষ্ট। একেবারে মনের কথা ।
ধন্যবাধ রাগিব ভাই।
এরকম ধর্মে-জড়িয়ে-যাওয়া শব্দের একটা তালিকা করতে পারলে মন্দ হতো না।
দারুন
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভালো লাগলো আপনার প্রকাশভঙ্গী
অর্কুটের ঐ দাদাদের ভাগ্য ভালো ঐখানে এটিমের কোন শাখা নাই ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
Mohashoy Hasib,ami apnar ebong Ragib soho onnano der lekha montro mugho r moto pori ar ekti blog e..ja apnara SAMU boley thaken.
Ei samprodayik parthoko ta kintu khali amader ekhaney i noy ..apnara o eki doshey doshi..
Eki Voshyo Eki Chaar
Dosh Gun Kobo Kar ?
Dhyonobad
- কাগু কী কৈলেন বুঝে আইলো না। প্রথমে নরমালী পরার চেষ্টা করলাম, সুবিধা করতরআলম না, তারপর বানান কইরা পড়া ধর্লা, এইবারো সুবিধয় হইলো না!
কই কি, আংরেজী হরফে (বেঙ্গলী) ল্যাখলে কী লেখলেন সেইটা হয় তর্জমা কইরা দিয়েন নাইলে আরেকটু পয়-পরিষ্কার কইরা ল্যাখিয়েন, যাতে ম্যাঙ্গোপিপোলের বোধের এ্যান্টেনায় 'ক্যাচ' খায়। আর সবচাইতে ভালো হয়, কাগু যদি বঙ্গীয় হরফে ল্যাখার ক্ষীণ চেষ্টা করেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পশ্চিম বাংলা আর বাংলাদেশের বাংলায় নতুন আরেকটা শব্দ বোধহয় যোগ হতে যাচ্ছে। তা হলো- নাস্তা
এই শব্দটা পশ্চিম বাংলার লোকজন ব্যবহার করে না
ওরা বলে টিফিন
নাস্তা বললেই জিজ্ঞেস করে- বাংলাদেশ থেকে এসছেন?
(আমি জানি না অন্যদের অভিজ্ঞতা কী? তবে বেশ কবার আমি এই অভিজ্ঞতায় পড়েছি)
০২
আমার হিসেবে ধর্ম দিয়ে অঞ্চল আর ভাষাকে ইনডিকেট করা আর ভাষা দিয়ে ধর্মকে ইনডিকেট করাটা দেশ বিভাগের পর থেকেই শুরু হয়েছে
এর আগে পর্যন্ত এই বিভাজনটা প্রায় অসম্ভব ছিল
কারন ব্রিটিশ পূর্ব রাজারা মুসলিম থাকলেও তাদের প্রধান লেখকরা (প্রশাসনিক)ছিলেন কায়স্থ হিন্দু। আবার তাদের প্রধান প্রজা শ্রেণী ছিল হিন্দু ধর্মের
আবার পরে যেখানে জমিদাররা ছিলেন হিন্দু (বাংলাদেশ অঞ্চলে) দেখা গেছে প্রজাশ্রেণীর সিংহভাগ মুসলিম
দেশ বিভাগের পরেই ভারতজুড়ে হিন্দু জমিদারের বেশিরভাগ প্রজা হিন্দু আর মুসলিম জমিদারের বেশিরভাগ প্রজা মুসলিম এবং হিন্দু প্রধান এলাকার সরকার হিন্দু (বেশিরভাগ) এবং মুসলিম প্রধান এলাকার সরকার মুসলিম হওয়া শুরু করায় ইন্ডিয়া হয়ে পড়ে হিন্দুদের দেশ অবধারিতভাবে ইন্ডিয়ার বাঙালি অঞ্চলের ভাষাটা হয়ে যায় হিন্দু বাংলা আর
পাকিস্তান এবং পরে বাংলাদেশের বাঙালিদের ভাষাটা হয়ে পড়ে মুসলিম বাংলা
অথচ বাংলার মধ্যে অঞ্চল ভিত্তিক শব্দের পার্থক্য আগেও যেমন ছিল এখনও আছে
(কপাল ভালো যে বাংলাদেশের নোয়াখালি চিটাগাং বরিশাল সিলেট এগুলোতে বিশেষ ধরনের আলাদ কোনো ধর্মের প্রধান্য নেই না হলে কারো মুখে এই ভাষা আবিষ্কার করে তার বাড়ি জিজ্ঞেস না করে আমরা হয়তো জিজ্ঞেস করতাম- ভাই আপনি কি ইহুদি?)
নাস্তা = জলখাবার।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
ব্যাবহারগত পার্থক্যও রয়েছে।
আমরা বলবো: খেতে মজা!
ওরা বলবে: খেতে ভালো!
ওদের কাছে মজা শব্দটি আনন্দের সাখে সম্পৃক্ত। ´যেমন, " এই জোকটি শুনে মজা পেয়েছি"।
আপনার লেখাটি ভালো লাগলো খুব।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
চিকন শব্দটা এইরকম আরেকটা শব্দ । এইটা পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন অর্থ বহন করে । তবে এর সাথে ধর্মের সম্পর্ক নেই । প্রচলনগত পার্থক্য ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এরকম আরেকটি বিষয় পোশাক, বিশেষ করে পাঞ্জাবি। শ্মশ্রুমণ্ডিত মুখাবয়বের সাথে খদ্দেরের পাঞ্জাবির প্রতি এককালে বিশেষ অনুরক্ত ছিলাম। এই দাঁড়ি আর পাঞ্জাবি নিয়ে চাকুরি সূত্রে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কত অদ্ভুত সব অবস্থায় যে পড়তে হয়েছে আমাকে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বিষয় এবং প্রকাশভঙ্গী চমৎকার লাগল! তবে "ঘটি পশ্চিমবঙ্গবাসীদের" শব্দটা ব্যবহার করায় মনে হল আপনার একটা সুক্ষ্ণ রাগ ফুটে উঠেছে। আশা করি আমার ধারনা ভুল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
"জল/পানি" - পশ্চিমবঙ্গীয় মুসলিমেরা সাধারণত জলই বলেন। বাঙালীরা যে পানি বলে এই ধারণাটা বাংলাদেশ টিভি ছাড়া আর কোনো সূত্র থেকে আমার জানার উপায় ছিল না, তবে পরে দেখেছি পশ্চিমবঙ্গেও লোকজনে বলে কিছু কিছু জায়গায়। তবে আমার মনে পড়ে মা ছোটোবেলায় বলেছিল ব্যাপারটা।
"স্নান/গোসল
নিমন্ত্রণ/দাওয়াত
জলখাবার/নাস্তা"
এই তিনটে শব্দ আমার মনে হয় না পশ্চিমবঙ্গীয় মুসলিমেরা ব্যবহার করেন খুব একটা। আমি কখনওই শুনি নি। অথচ বাংলাদেশের হিন্দুরাও এগুলো ব্যবহার করেন।
"নুন/লবন
লংকা/মরিচ
বাতাবী লেবু/জাম্বুরা"
খুবই ইন্টারেস্টিং কিন্তু এই তিনটে শব্দ হিন্দু-মুসলিম কিভাবে হল জানি না। এগুলো পশ্চিমবঙ্গে বাঙাল-ঘটি আলাদা করতে ব্যবহার হয় ... বুঝতেই পারছেন পূর্ববঙ্গে হিন্দু-মুসলমান সবাই এগুলোই ব্যবহার করত।
"মাংস/গোস্ত"
সেকি, আমি তো গোস্ত মানে গরুর মাংস জানি !! আপনাকে ধন্যবাদ আমার ভুল ভাঙানোর জন্য।
"পরিবারবাচক সব শব্দ।" - এগুলোই আলাদা। আমি এখনও মুসলিম পরিবারবাচক সব শব্দ জেনে উঠতে পারি নি। জেনে ফেলব আস্তে আস্তে সচলায়তনের কল্যাণে ।
আর আমি লিখেছি আরেকটা কমেন্টে, মূল সমস্যা রেসিজম যা এখনও কয়েকশো বছর ধরে আমাদের সমাজে থাকবে। আস্তে আস্তে চলেও যাবে।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
A+ লেখা।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
খুবই ভালো লেখা
চলুক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
- সেরম
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ইফতারের আগে পড়তে বসেছিলাম। ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় চলে যেতে হয়েছিল। মন পড়ে ছিল লেখাটায়। এখন ফিরে এসে আবার প্রথম থেকে পড়ে শেষ করলাম।
ভাইয়া, কাকতালীয় ভাবে এই বিষয়টা নিয়েই আমার একটা উপন্যাসে লিখছি। যদিও আমার প্রেক্ষাপটটা বাংলাদেশ নিয়ে। দেশে যদি কেউ দিদি বা বৌদি বলে তাহলে কেমন করে যেন সবাই তাকায়। সবাই বলে হিন্দু হিন্দু একটা ভাব নাকি। অথচ অন্টি বললে কিন্তু খ্রিস্টান খ্রিস্টান ভাব আসে না! সব সমস্যা যেন এই বাংলাতেই। ভাষাটাকে আমরা ধর্মের মধ্যে ফেলে বিভক্ত করে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত। হিন্দী মুভিতে দেখি ভাইয়া, পানি, খালা ইত্যাদি ব্যবহার করে। তখন কিন্তু সেটা মুসলিমদের ভাষা হয়ে যায় না। কিন্তু বাংলায় এলেই যত সমস্যার শুরু।
ব্রিটিশ এবং এ্যামেরিকান ভাষার শব্দের পার্থক্য কখনও কখনও বিস্তর হয়ে যায়। যেমন এশিয়ান শব্দটা দিয়ে ব্রিটিশ ইংলিশে বোঝায় বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্থানের মানুষদের। আর অ্যামেরিকায় মূলত চাইনিজদের। তবে এই পার্থক্যের কারণও রয়েছে। দূরত্বটাকে অগ্রাহ্য করার উপায় নেই। কিন্তু দুই বাংলাতো দুই আয়ারল্যান্ডের মত। দুটো ভিন্ন পাসপোর্ট হওয়ার পরও আয়ারল্যান্ড যদি একটা দেশ হয়ে থাকতে পারে, তবে বাংলা কেন পারলো না? এখানে কেন এই বিভাজণ? ভাবতেই কষ্ট লাগে।
চমৎকার একটা লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
টুইটার
নতুন মন্তব্য করুন