গল্প কিন্তু রেচেলকে ঘিরে নয়, তার বোন কিম ছবির মুখ্য চরিত্র। ঘটনা সব ঘটে বিবাহ-পূর্ব ও পরবর্তী সময়কালে। ছবির কাঠামো Monsoon Wedding-এর মতো খানিকটা, তবে দৃষ্টিকোণ ভিন্ন। গল্প খুব সামান্যই, এবং প্রিভিউতে চলচ্চিত্রকার বিশেষ কিছু লুকোন নি।
Anne Hathaway একমাত্র চেনা নাম, যাঁর অসামান্য অভিনয় সেরা অভিনেত্রীর অ্যাকাডেমি মনোনয়নে স্বীকৃত। মাদকাসক্তের চরিত্রের অন্য রঙগুলোও তিনি হারাতে দেন নি। ছবিটা হাতে-ধরা ক্যামেরায় তোলা, মেজাজ পুরোপুরিই ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবির। ঢিলেঢালা সম্পাদনার জন্য সে ব্যাপারটা আরো প্রতিভাত। এবং এডিটিং-এর প্রসঙ্গে এটা প্রশংসা হিসেবে বলছি না।
বিবাহবাসর এক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট, ভাঙাচোরা কতগুলো সম্পর্কের কাহিনী শোনানোর জন্য ব্যবহৃত। অপরাধবোধে প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত একটি যুবতী যে নেশাকে হয়তো নিয়ন্ত্রণে এনেছে কিন্তু জীবনের ছন্দ আর খুঁজে পায় না, এবং তার পরিবার যারা একটি গভীর দুঃখকে সহ্য করার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়, এদের জীবনের গল্প এটা। সুখের উৎসবে দুঃখের অশ্রু মিশে যায়, অজস্র awkward moments ভেঙে দেয় লৌকিকতার সীমানা। এই সব ঘিরেই ছবিটা এগোয়। আমার প্রিয় ছবির তালিকায় একে রাখবো না, কিন্তু ভালো ছবি নিঃসন্দেহে ।
--------------------------------------------------------------------------------------
Rachel Getting Married (2008)
Direction: Jonathan Demme (Philadelphia, The Silence of the Lambs)
Cast: Anne Hathaway, Rosemarie DeWitt, Bill Irwin
মন্তব্য
মাত্র কিছু দিন আগে ছবিটি দেখেছি। আমার বেশ লেগেছিল। আপনার রিভিউটিও বেশ লাগল। ছোট্ট, বাহুল্যবর্জিত।কিন্তু একইসাথে ইনফরমেটিভ।
এ্যান হ্যাথেওয়ে নতুন মুখগুলোর মাঝে নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। Princess Diary তে যে মেয়েটি তার আনাড়িপনা আর সরল মন নিয়ে আমাদের মন কেড়ে নেয়,Havoc এ সেই সাদা-সিধে মেয়েটিকে দেখি বখে যাওয়া আত্মপরিচয়হীন উদ্ভ্রান্ত তরুনী হিসেবে। দেখি, এবং ভীত হই।Devil wears Prada তে সকলের প্রিয় মেরিল স্ট্রীপের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে যাওয়া হ্যাথেওয়ে Get Smart এ সম্পুর্ন ভিন্ন মেজাজে হাজির---40 year old virgin খ্যাত ষ্টীভ ক্যারেলের dead pan comic এর সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের হাসিয়ে দিয়ে যান তিনি। শুধু তাই নয়,এবার অস্কার অনুষ্ঠানে নিজে নেচে-গেয়ে সকলকে মুগ্ধ করে দিয়েছেন। আর সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন তো ছিলোই।
উঠতি নায়িকাদের মাঝে, তাই আমার মনে হয়, এ্যান সবচাইতে বর্ণিল এবং সব চাইতে বেশি ভাঙ্গা গড়ার ভেতর দিয়ে গেছেন। এই ছবিতেও বাকী সকলকে এমনকি Debra Winger কে পর্যন্ত ছায়ায় ফেলে কাজ করেছেন তিনি।
যারা ছবিটি দেখেননি এখনো, অনুরোধ রইল শিগগির দেখে ফেলার।হ্যাথেওয়ের অভিনয়, চমৎকার ব্যাক গ্রাঊন্ড স্কোর আর আমাদের চলমান জীবনের দিকে একটা তরতাজা দৃষ্টিভঙ্গী---এই ছবিটিকে কেবল উপভোগ্য করেনি, অবসরে কিছু চিন্তার খোরাকও যোগাবে।
শুভেচ্ছা---
ধন্যবাদ অনিকেত। অ্যান হ্যাথেও েয়র সম্পর্কে খাঁটি কথা লিখেছেন। এবারের অ্যাকাডেমি অনুষ্ঠানে মেরিল স্ট্রিপও অনেক প্রশংসা করেছেন এঁর অভিনয়-ক্ষমতার। তাছাড়া তিনি একজন শিক্ষণপ্রাপ্ত সোপ্রানো যার প্রমাণও ঐ অনুষ্ঠানেই দেখা গেছে।
এই ছবির পরিবারটির Multi-Culti দৃষ্টিভঙ্গী আমি বোঝার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু সুবিধা করতে পারি নি বিশেষ। ককেশান ও অ্যাফ্রো-আমেরিকান দুটি পরিবারের বিবাহ-অনুষ্ঠানের সাজসজ্জা, খাদ্যপানীয় সব ভারতীয় রীতিতে কেন কে জানে। ক্রেডিটসে কোনো ভারতীয় নাম দেখতে পেলাম না, সঙ্গীতের মধ্যে "সাম্বা ফর শিভা" জাতীয় গান থাকলেও সবই অভারতীয়দের সৃষ্টি। সংস্কৃতির মেলবন্ধন দেখলে আমি খুশি হই, এই ব্যাপারটাকে এমন নৈর্ব্যক্তিকভাবে দেখানোটা আরো ভালো ব্যাপার।
এছাড়া ঘটনার স্থান হল কানেক্টিকাটের এমন একটি কাউন্টি যা আমেরিকার ধনীতমগুলোর একটা। এরও কোনো তাৎপর্য আছে কিনা জানি না। পরিবারটি স্বচ্ছল হলেও তেমন কিছু ধনাঢ্য বলে মনে হয় না, অন্তত বিবাহবাসরের জাঁকজমক দেখে তো তেমন কিছু মনে হলো না। কেউ কোনো ব্যাখ্যা জানলে বা খুঁজে পেলে জানাবেন।
যেহেতু আমি সিনেমাটা দেখছি, সেহেতু লেখাটা আর একটু বড় হইলে কী অসুবিধা ছিল?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
হে হে, এ যাত্রায় মাফ করে দিন। এ সিনেমাটা টাটকা বলেই সংক্ষেপে লিখেছিলাম, অনেকেরই দেখা এবং তরতাজা স্মৃতি, কাজেই বেশী 'বোর' করব না ভেবে।
দেখিবার লিস্টে টুকিয়া রাখিলাম।
Before Sunset দেখলাম, দারুণ লেগেছে
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আনন্দ পেলাম জেনে। আশা করি এটাও ভালো লাগবে।
কাল আরেকটা সিনেমার কথা লিখবো, এক হাঙ্গেরিয়ান ভৌগোলিকের গল্প। এতো কথা আছে ঐ ছবিটার প্রসঙ্গে যে কোনটা ছাড়বো আর কোনটা রাখবো ভেবে পাচ্ছি না।
ইয়ে, মানে আর কী, এই সিনেমাটা না আমার কেন জানি খুব একটা পছন্দ হয় নাই।
পয়েন্ট বাই পয়েন্ট ডিটেইল বললাম না, তবে সিনেমাটা ভীষণ অ্যাভারেজ মনে হয়েছে। আসলে শিল্প ব্যাপারটাই বুঝি এরকম। কখন কোনটা কেন যে ভাল লেগে যায়, আর অপছন্দও, কে বলতে পারে।
আপনার পরবর্তী রিভিউয়ের অপেক্ষায়...
আমার মতও আপনার সাথে অনেকটাই মেলে। কিন্তু যেহেতু এটা নতুন ছবি, তাই দেখামাত্রই লিখে ফেললাম, কিন্তু একে প্রিয় মুভির তালিকায় আনবো না। কিমের বেদনা স্পর্শ করে ঠিকই, এবং আমি এই রকম মাদকাসক্ত অনেককে মোটামুটি কাছ থেকে দেখেছি বলে কিছুটা বুঝতেও পেরেছি তাদের অনুভূতি। তবু এ কথা মনে হয় যে ছবিটি সেই স্তরে উত্তীর্ণ হতে পারে না যেখানে গেলে আমরা একে মাস্টারপিস বলতে পারি। আমার ব্যক্তিগত মতে এর সমাপ্তিটিও খুব ইমপ্রেসিভ কিছু নয়। ছবিটির দৈর্ঘ্য কিছু বেশী, কাজেই এ ব্যাপারে প্রত্যাশাও কিছু বেশী ছিল।
আরেকটি কথা, বড়লোক যেমন ছুটিতে বেড়াতে গেলে কুটিরে থাকার বিলাসিতা দেখায়, এ ছবির নামী পরিচালকের পক্ষে ইন্ডি ছবি বানানোটাও সেই রকম এক বিলাস। ভদ্রলোক বেশ বড় বাজেটের ছবি বানানোর পর সখ করে হ্যান্ড-হেল্ড ক্যামেরায় সিনেমা বানালেন। এতে করে শাদি-ভিডিওর এফেক্ট এসেছে, তবে সেটা এমন কি মোক্ষলাভ সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ই্য়ে, আমি ছবিটি শেষ করতে পারি নাই, তবে এই না যে ছবিটা ভাল নয়, হাতে ধরা ক্যামেরা এত বেশি কাপছিল যে, অসুস্হ লাগছিল।
হা হা, মজা পেলাম শুনে।
তবে অনেক ছবিই এই কায়দায় তৈরী হচ্ছে, রিয়ালিস্টিক এফেক্ট আনার জন্য, কাজেই এই ট্রেন্ড চট্ করে যাবে না।
ব্যাবেল -ও তো মনে হয় এভাবেই শুট করা...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
প্রিয় ছবি
এই সিনেমাটা আমি শেষ করতে পারি নাই
মূলত পাঠক কে ধন্যবাদ। নিয়মিত সিনেমা রিভিউ দেবার জন্য ...
আপনারা যে ভালোবেসে পড়ছেন এ জন্য আপনাদেরকেও অনেক ধন্যবাদ।
মূলোদা, আপনাকে মনে পড়ে
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
নতুন মন্তব্য করুন