আমি কখনো মরুভূমি দেখিনি। রাজস্থানে গেছি দু'বার কিন্তু দিগন্ত অবধি ধূ ধূ করা বালির সমুদ্র দেখা হয় নি। তবে ছবি দেখেছি অনেক, স্থির ও চলমান। আর দেখেছি মরুভূমির মানচিত্র, যার আরেক নাম English Patient.
পাঠক ও দর্শক হিসেবে নীতির আগে আমি নান্দনিকতাকে স্থান দিই, কাজেই আগেভাগেই জানাই, এই সিনেমা ও বই, দুটোই অনৈতিকতার দোষে দুষ্ট। এখানে নীতি ও সততার খোঁজ নেহাৎ পন্ডশ্রম হবে। এক সমালোচক লিখেছেনও দেখলাম এক জায়গায়, "Yes, it's beautifully shot, well-acted, and rich with history lessons. But how can we cheer for heroes who sell out their friends and nation for an extramarital affair?" নায়কের নামে জয়ধ্বনি দেবার ইচ্ছে আমার নেই, তবে এমন কবিতার মতো উপন্যাস ও তার অসাধারণ চলচ্চিত্রায়ণ দেখে যে মুগ্ধতার জন্ম হয়, এই লেখা তারই প্রকাশের চেষ্টা। আমি ছবিটা দেখেছি প্রথমে, তারপরে উপন্যাসপাঠ। খুব বড় নয় বই হিসেবে, সওয়া তিনশো পাতার পেপারব্যাক। একটানা পড়া হয় না আজকাল, বরং মাঝে মাঝে যে কোনো একটা পাতা খুলে খানিকটা পাঠ করি, বেশ কবিতার মতো লাগে। সিনেমার কথা শুরু করার আগে সেই খেলাটা খেলি চলুন একবার, যে কোনো পাতা খুলে খানিকটা পড়া যাক আপনাদের সাথে।
হলঘরের অন্ধকারে দেশলাই জ্বালালো সে,
তারপর ছোঁয়ালো সলতের গায় ।
আলো উঠে এলো তার কাঁধের উপরে,
বসেছে সে হাঁটুর ভরেতে ।
হাতদুটি রাখলো সে ঊরুর উপরে,
গন্ধকের গন্ধে শ্বাস নিলো ।
মনে হলো তার, সে
আলোতেও যেন শ্বাস নিলো ।
বিশেষ কিছু বদলাই নি, মূলটা এইরকম-
She lights a match in the dark hall and moves it onto the wick of the candle. Light lifts itself on to her shoulders. She is on her knees. She puts her hands on her thighs and breathes in the smell of sulphur. She imagines she also breathes in light. (পৃষ্ঠা ১৬, পিকাডোর সংস্করণ ২০০২)
বই আর সিনেমা দুটোই গাদাখানেক পুরস্কার জিতেছে, তার কথায় আর যাচ্ছি না। অসাধারণ অভিনয়, পরিচালনা, সিনেমাটোগ্রাফি ইত্যাদির কথাও শুরু হলে ফুরোবে না। তার চাইতে ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাই বলি, যার অনেকটাই ভিসুয়াল। সিনেমাটা দেখেছি অনেকদিন হলো, কিন্তু দুখানা ছবি স্পষ্ট ভেসে আছে চোখে। এক, আদিম গুহাচিত্রের কপি করা হচ্ছে তুলি-রঙে কাগজের উপর, টলটলে লাল রঙ কাগজে সেই আদিম মানবকের শরীরী ভঙ্গি এঁকে যাচ্ছে, আর বলে চলেছে মানুষের অপরিবর্তনীয় আদিম প্রবৃত্তির কথা। আরেকটা ছবি মরুভূমির বালুরাশির আলোছায়ার, আকাশের উঁচু থেকে সেই হিজিবিজি ছবি তার দুর্বোধ্য ভাষায় এক গল্প শুরু করে। এক যাযাবরের গল্প, যে ভালোবেসে ছিলো এক নারীকে, সভ্য জগতের নীতিবোধের সীমানা অতিক্রম ক'রে।
কাহিনীতে আছে দুটি প্রেমের আখ্যান, যার একটি অতীতের, ম'রেও মরে না যে অতীত তার গর্ভে লুকোনো এক প্রেম। আর অন্যটি বর্তমানের, যার পাত্রপাত্রীরা নিজেরাও সেই প্রেমের বঁেচে থাকার সম্ভাবনায় সন্দিহান। এই দুই গল্পের মাঝে সেতু বাঁধে এক সম্পর্ক, দগ্ধদেহ এক পুরুষ ও তার সেবায় নিযুক্ত এক নার্সের মধ্যে সেই সম্পর্কের বাস। এ কোনো নারী-পুরুষের সনাতন প্রেম নয়, এ সম্পর্ক অশরীরী, এমন কি ভাষাতীত প্রায়। আমার ব্যক্তিগত অনুভূতির হিসেবে এই সম্পর্কটিই সবচাইতে প্রিয়।
ছবির পটভূমি ও পাত্রপাত্রী এতো বৈচিত্র্যময়, মনে হয় আজকের যুগের ডাইভার্সিটির জয়গান যেন। হাঙ্গেরিয়ান সেই দগ্ধদেহ ভূগোলবেত্তা যাকে ভুল করে ইংরেজ ভাবা হয়, ফ্রেঞ্চ-কানাডিয়ান এক নার্স, ব্রিটিশ সেনানীর এক ভারতীয় সৈন্য, এবং এক কানাডিয়ান তস্কর, এই চার জন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইটালিতে একটি জীর্ণ ভিলায় গল্প শুরু করে। গল্প চলে যায় সাহারার মরুভূমিতে, Count László de Almásy নামক মানচিত্রকার সেখানে দুর্গম ভূখন্ডের শরীরের ছবি আঁকতে আঁকতে পথভ্রষ্ট হয়, দিক হারায় অপ্রাপ্য এক নারীর শরীর-মনের অধরা মরীচিকার পিছনে। এ সব ঘিরেই কাহিনী এগোয়, এর বেশী বলে লাভ নেই। কাব্যের রস কি চুম্বকসারে ধরা দেয়?
ছবি/উপন্যাসের আরেকটি প্রসঙ্গ আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছিলো। নায়ক একটি জার্নাল সঙ্গে রাখে, যার পাতায় পাতায় সে গুঁজে রাখে ছোটো ছোটো নোট লেখা চিরকুট কিম্বা হাতে আঁকা স্কেচ। জার্নালটি আদতে একখানা বই, হেরোডোটাসের লেখা ইতিহাস। এই ব্যাপারটা আমার ভয়ঙ্কর রোমান্টিক লেগেছিলো, বিশেষতঃ সিনেমায় দেখে। ভেবেছিলাম বইটা কিনবো, কিন্তু পাঁচ-ছ'শো পাতার প্রাচীন ইতিহাস কদ্দুর পড়বো সে সন্দেহ থাকায় আর কেনা হয় নি।
ছবির অনেক কথাই আর মনে নেই, আবার দেখতে হবে একদিন। তবে চোখে ভেসে আছে সেই মরুভূমির ছবি, অনন্ত বালুকারাশি, ক্রুদ্ধ, বোবা আর ভয়ঙ্কর সুন্দর, আর বিশাল আকাশের গাঢ় নীল। সন্দেহ, ভয় ও শরীরী আকর্ষণ, গুপ্ত প্রেম ও পাগলামি, নীতিবোধ ও প্রবঞ্চনা, মানুষের এই সব তুচ্ছতার উপরে জেগে থাকে সমুদ্রের মতো অসীম নীল আকাশ আর সোনালি বালুরাশি।
পড়তে পড়তে আর দেখতে দেখতে পাঠক আর দর্শক মনে মনে এঁকে ফেলে সেই আদিম মরুভূমির মানচিত্র।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিভিউ থেকে (১৫ই নভেম্বর, ১৯৯৬) উদ্ধৃত করে দিচ্ছি শুরুর খানিকটা। যে তীব্র প্যাশন এই কাহিনীর সব অঘটন ঘটায়, এখানে তার বর্ণনা পাবেন। এও দেখতে পাবেন, শুধু অর্বাচীন ব্লগলেখকই নয়, এই ছবি উন্মনা করেছে পোড়-খাওয়া সমালোচককেও।
স্মৃতির অনলস্রোতে ভেসে চলা: "ইংলিশ পেশেন্ট"
কায়রো'য় ক্রিসমাস, ১৯৩৮
"ইংলিশ পেশেন্ট" ছবির অনেকগুলি অসম্ভব রোমান্টিক ও মন্ত্রমুগ্ধকর কারুকৃতির মধ্যে থেকে নেওয়া একটি অবিশ্বাস্য সুন্দর দৃশ্য এই রকম। ব্রিটিশ দূতাবাসের উঠোন, সৈনিকেরা টেবিলগুলো ঘিরে বসে রোদে তপ্ত হচ্ছে, আর ব্যাগপাইপে সুর বাজছে "নিঃশব্দ রাত্রি"র। হৃদয় আজ বাঁধ ভেঙেছে। মনে হচ্ছে যেন মাথা ঘুরছে, দিগ্বিদিক জ্ঞান নেই আর, রোজকার জীবনের রীতিনীতি মুলতুবি সব। পৃথিবীটা সত্যি সত্যিই আজ উল্টে গেছে।
শরীরজ্বালায় এই আগুনে গরমের চাইতেও বেশি জ্বলছে ক্যাথরিন ক্লিফটন, পার্টির মধ্যমণি সেই অভিজাত বিধবা নারীটি, এক অমোঘ টানে সে আকৃষ্ট হচ্ছে সেই জানলাটার দিকে যার পেছনে আছে তার সুপুরুষ দামাল প্রেমিক। সে তাকে সঙ্গে নিতে চায় এক অভিসারযাত্রায়, যেখান থেকে শুরু হবে স্মৃতির ভীড়াকীর্ণ এক পথ, এবং সেই যাত্রাপথের বিবরণই এই অবিস্মরণীয় ছবিটি। "মূর্চ্ছা যাবে? যাও", আবেগমথিত নারীকে আশ্বাস দেয় পুরুষটি, "আমি ধরবো তোমায়"। আশ্চর্য কি, এরপর যদি সে নারী জ্ঞান হারায় !
----------------------------------------------------------------------
The English Patient (1996)
Based on Michael Ondaatje's novel by the same name
Direction: Anthony Minghella (Talented Mr. Ripley, Cold Mountain)
Cast: Ralph Fiennes, Juliette Binoche, Kristin Scott Thomas, Willem Dafoe, Naveen Andrews, Colin Firth.
প্রিভিউ এখানে দেখতে পারেন।
মন্তব্য
আপনার সাদামটা বর্ননা মোটেই আকর্ষন করতে পারেনি, যতটা করেছে আপনার ছোট্ট আনুবাদ।
এক কথায় ক্লাস।
আরও অনুবাদ করুন।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
আপনার স্পষ্ট মতামতের জন্য ধন্যবাদ, না ব্যঙ্গ ক'রে নয়, সত্যিই বলছি। আকর্ষক না হলে দুঃখেরই কথা। আর সাদামাটা কেন বলছেন সেইটা একটু খোলসা করে বললে ভবিষ্যতে সতর্ক হই। আমার তো একেক সময় খুব Decorative/Ornate মনে হয় নিজের লেখা, সেটা অধিকাংশ পাঠকের পছন্দের নয় ব'লে আভরণ ঝরানোর চেষ্টা করতে থাকি বরং।
আমার অনুবাদ করার ব্যাপারে খুব ভীতি আছে। সমালোচকদের ভয়ে অনুবাদকদের যে ভাবে মেপেমেপে পা ফেলতে হয়, কোনো শব্দ মিস হলে চলবে না আবার কোনো নতুন শব্দ যোগও করা যাবে না, আক্ষরিক অনুবাদ করলে রসের হানি হবে আবার বেশী স্বাধীনতা নিলে ভাবানুবাদের পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে, এতো কিছু নিয়ম মেনে লিখলে প্রায় অঙ্ক-কষার মতো হয়ে যায় সেটা। আপনার প্রশংসা শুনে তাই খুব অবাক হলাম, ঐখানে প্রশংসার কোনো আশাই করি নি। ধন্যবাদ আপনাকে।
শেয়ালকে ভাঙা বেড়া দেখালে কী হয় জানেন তো? সিনেমা একটু তাকে তুলে রেখে কাল একটা কবিতার অনুবাদ পোস্ট করবো। ভালোমন্দ যা মনে হয় খোলাখুলি জানাবেন।
এত্তো সহজে পয়েন্ট দিয়া দিলে ক্যাম্নে কী ?
--
আমার এই দেশেতে জন্ম, যেন এই দেশেতেই মরি...
ছবিটা দেখি দেখি করেও দেখা হচ্ছে না।
আপনার রিভিউগুলো দারুণ হচ্ছে।
--
আমার এই দেশেতে জন্ম, যেন এই দেশেতেই মরি...
খুব ভালো লাগলো প্রশংসাবাক্য।
এই ছবিটা একটু মন্থরগতির, তবে মাস্টারপিস বলতে দ্বিধা নেই। দেখি দেখি করতে করতে ঝপ্ ক'রে দেখেই ফেলুন।
এই ছবিটা আমি দেখেছি। তিন তিনবার দেখেছি
আমার খুব প্রিয় ছবির একটা এটা ।
আপনার রিভিউ চালিয়ে যান পাঠক ভাই
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অনেক ধন্যবাদ, কীর্তিনাশা। নিশ্চয়ই লিখবো, এমন হাতে-গরম প্রশংসা পেলে না লিখে উপায় আছে?
তবে সিনেমা নিয়ে যখন লিখি তাতে অনেক পরিশ্রমও থাকে। এবং পড়তে পড়তে অনেক নতুন জিনিস জানতে পারি, কাজেই আখেরে আমারই লাভ। যেমন এই লেখাটা লিখতে গিয়ে রেফ ফিয়েন্সের সম্বন্ধে মজার গল্প দুখানা পড়লাম উইকি-তে, ওই পাতায় নীচের দিকে সোজা Controversy-তে চলে যান, পেয়ে যাবেন। তো সে যাই হোক, আজ অনুবাদেরও একটা প্রশংসা জুটেছে। তাই কাল একটা কবিতানুবাদ পোস্টাবো (চুপিচুপি বলি, এটা তৈরি-ই ছিলো প্রায়, তাই পরিশ্রম খুব কম)। তারপর আবার ফেরা যাবে সিনেমায়। এর মধ্যে আপনাদের প্রিয় কিছু ছবির নাম দিন না, দেখা বেরোলে তা নিয়েও লেখা যেতে পারে। আর না দেখা হলে আমার টু-সী লিস্টে নতুন নাম যোগ হবে।
রেফ ফিয়েন্সের কাহিনী পড়ে দারুণ মজা পেলাম। ব্যাটা তো দেখি আস্ত একটা আলু
কবিতা অনুবাদের অপেক্ষায় থাকলাম।
আর আমার প্রিয় ছবির লিস্ট অনেক বড়। বলে শেষ করতে পারবো বলে মনে হয় না। তার চেয়ে প্রিয় ছবি নিয়ে সচলে একবার আলোচনা হয়েছিল তার একটা লিঙ্ক দিয়ে দেই। আপনার কাজে লাগবে
সংগ্রহে রাখার মত ১০ টি ছবির নাম বলুন
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
এ তো এক সুদীর্ঘ আলোচনা, জনগণের মতামত জানা গেলো অনেকটাই। ধন্যবাদ।
এখানে একটা কথা বলি। লিস্টের অনেক ছবিই আছে যা আমারও খুব প্রিয়, তবে সেগুলো নিয়ে আমার লিখতে বসার সম্ভাবনা কম। যেমন ধরুন গডফাদার বা ম্যাট্রিক্স। এখানে আমি সব ছবি বা সব ধরণের ছবি নিয়ে লিখে উঠতে পারবো না, কাজেই লিখছি শুধু সেগুলো নিয়ে যারা লিখতে উদ্দীপিত করে। তবে এই লিস্ট অবশ্যই অনেক না-দেখা ভালো ছবির কথা জানালো। কাজ বেড়ে গেলো অনেক, কত্ত সিনেমা দেখতে হবে আরো, ভেবেই আঁতকে উঠছি!
আমার লেখা সার্থক তবে।
এই 'নান্দনিকতার' সাথে কিন্তু প্রডিউসারের ২৭ মিলিয়ন ডলারের সম্পর্ক আছে। নান্দনিকতা ম্যানুফ্যকচারিংয়েরও সম্পর্ক আছে। আছে মুক্ত যৌনতার (Free Sex) রাজনীতিও যা খুবই উদ্দীপক এবং জনপ্রিয়।
তাই কি? না কি সমস্যাটা হলো লাভ কে প্যাশনের মধ্যে লিমিট করে ফেলা, যেটা অবাস্তব। সুস্থ মানুষ ভালবাসার জন্য সব উচ্ছন্নে দিতে পারে কিন্তু প্যাশনের জন্য কেউ যদি সব উচ্ছন্নে দেয় তবে তার কিন্তু মনোরোগবিদের কাছে যাওয়া উচিত।
তাই কি? একটু ভাল করে আবার দেখুন।
শ্রীলঙ্কান বংশদ্ভুত নভেলিস্ট লিখলেন উপন্যাসটি, যেখানে দেখালেন যুদ্ধ কিভাবে কাহিনীর চার পাত্র পাত্রিদের জীবন তছনছ করে দেয়। প্রথমে না বুঝলেও, সাদারা এবং তাদের যুদ্ধই যে সকল নষ্টের গোঁড়া এটা বুঝে, এমন কি পারমানবিক বোমা পতনের খবর শুনে ভারতীয় শিখ বোমা নিষ্ক্রিয়কারী কিথ বলে, আমেরিকানরা কখনই সাদা চামড়াধারীরা উপর এই নৃশংসতা প্রয়োগ করতে পারত না। বুঝ আসার পর কলোনিস্ট ইংলিশদের উপর তার ঘৃনা লুকাবার কোন চেষ্টা লেখকও করেন নি। সে তার সাদা প্রেমিকাকেও ছেড়ে চলে যায়। নভেলে এই সাদা কালো বাদামীর শোষন, শাসন, রাজনীতি ও যুদ্ধ মুল উপজীব্য হলেও চলচিত্রে এসব কিছুই নেই।
তাতেও আমার আপত্তি নেই কিন্তু নিজেদের লোভ ও হীন স্বার্থে লাগানো যুদ্ধকে ‘বাস্তবতা’ এবং ভালবাসাকে তীব্র কামে সীমাবদ্ধ করার যে আধুনীক পশ্চীমা রাজনীতি আমি তারই বিরোধী – এই ছবি ঐ রাজনীতিরই একটি চমত্কার চকচকে উপাস্থপনা।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
বিশদে উত্তর দিচ্ছি, তবে একটু সময় নেব, হাত খালি নেই আপাততঃ। এমন মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য এবং সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে রাখি এইখানে।
শিল্প যেখানে ব্যবসা, এবং বিশাল বাজেটের ব্যবসা, সেখানে প্রযোজকের মুনাফার সম্পর্ক থাকবে এ আর আশ্চর্য কথা কি। আমি অবশ্য আমার ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাই মূলতঃ লিখেছি এখানে, কাজেই যদি প্রোডিউসারের কথা বাদ পড়ে গিয়ে থাকে তো সেটা অনভিপ্রেত ছিলো না।
"নান্দনিকতা ম্যানুফ্যকচারিং" বলতে কি এক শিবিরের লোকের দ্বারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মহান শিল্পের সংজ্ঞা তৈরি করার কথা বলছেন? তা হলে বলবো, সেটা ঘটে থাকে সর্বত্রই, একে বাদ দিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। আমার নান্দনিকতার বোধ আমার সাহিত্যপাঠ, ছবি ও সিনেমা দেখা, এবং নানা জীবন যাপনের ফল, এবং প্রায় সবার ক্ষেত্রেই তা হয়। কী পড়লাম কী দেখলাম (বা দেখতে পেলাম) তার পিছনে কোনো গোষ্ঠীর কোনো গোপন ষড়যন্ত্র আছে কি না জানা নেই। ধরুন টিভিতে যা দেখায় তা দেখি অনেকেই। যদি সরকারি টিভি ঋত্বিককে না দেখিয়ে সত্যজিতকে বেশি দেখায় কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে, তাহলে সে ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু আমি যা দেখি তা মূলতঃ আমার পছন্দের দ্বারা নির্ধারিত, রাষ্ট্রের তাতে হাত খুব সামান্যই। আর আমি সচেতন ভাবে কোনো প্রি-ম্যানুফ্যাকচার্ড এস্থেটিক্সের ফ্যান ক্লাবে যোগ দিই নি।
মুক্ত যৌনতার (Free Sex) রাজনীতি, প্যাশন ও লাভের ফারাক, ইত্যাদি নিয়ে যে সব কথা বলেছেন তার উত্তর দিতে গেলে সে এক দীর্ঘ আলোচনার সূত্রপাত হবে। তবু দু-একটা কথা বলি। "সুস্থ মানুষ ভালবাসার জন্য সব উচ্ছন্নে দিতে পারে": আমি একে সার্বজনীন সত্য মনে করি না। আবার "প্যাশনের জন্য কেউ যদি সব উচ্ছন্নে দেয় তবে তার কিন্তু মনোরোগবিদের কাছে যাওয়া উচিত" এ-ও ব্যক্তিগত ধারণা। আর যার চিকিৎসার দরকার আছে তাকে নিয়ে সাহিত্য বা সিনেমা সৃষ্টি হবে না কেন এ কথা বোঝা আমার পক্ষে কঠিন। নায়কের নামে জয়ধ্বনি তো দিই নি, এবং খানিকটা জানতাম যে এই জাতীয় কথা উঠবে, তাই সে কথা লিখেওছি।
সিনেমা কারোর কাছে নিছক বিনোদন, কারোর কাছে নীতির পাঠ। আমার কাছে শিল্পের মাধ্যম। আমার লেখাটি মূলতঃ "ইংলিশ পেশেন্ট" সিনেমা নিয়ে। উপন্যাসে অনেক কথা বলা যায়, সিনেমাকে সেই তুলনায় বেশী ফোকাসড হতেই হয়, তাই চলচ্চিত্রকার যদি কাহিনীর রাজনৈতিক উপাদান ব্যবহার না করে থাকেন তো সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত, এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। বরং সব কিছু এক সাথে এনে হিং-টিং-ছট না বানিয়ে তিনি রাজনীতির অসম্মান করেননি এটা কিছু খারাপ ব্যাপার নয় বলেই আমার ধারণা । তীব্র কাম ভালোবাসার একটা রূপ, কিন্তু একমাত্র রূপ বা সর্বশ্রেষ্ঠ রূপ, এ কথা ছবিতে পরিচালক বলেন নি, বা লেখাতে আমিও লিখি নি। এমন একটা কথা কল্পনা ক'রে তাকে নিয়ে আধুনিক পশ্চিমা রাজনীতির বিরোধিতা করতে চাইলে সেটা আপনার মত, বহুমতের সহাবস্থানকে সম্মান দিই বলে আপনার মত মনোযোগ দিয়েই শুনবো, কিন্তু এর বেশি আলোচনায় যাবো না প্রাসঙ্গিকতার খাতিরেই।
আমার অকিঞ্চিৎকর লেখা পড়ার জন্য এবং মতামত জানানোর জন্য আবারও ধন্যবাদ জানাই।
ইয়ে, কয়েকটি প্রশ্ন।
১। মুভি দেখার আগে রিভিউতে চোখ বোলান, নাকি পরে? সে ক্ষেত্রে কেন?
২। কোন উপন্যাসের চলৎচিত্রায়ন হলে কোনটা পছন্দ করেন? সিনেমা নাকি উপন্যাস? এখানে কি দেখার (বা পড়ে শেষ করার) টাইম কোনো ফ্যাক্টর?
৩। কোনটা বেশি ভালো লাগে? বই পড়তে নাকি সিনেমা দেখতে?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
উত্তর দিতে দেরি করার জন্য দুঃখিত।
১। মুভি দেখার আগে রিভিউতে চোখ বোলাই। টিকিট তো নেহাৎ সস্তা না, কাজেই একটু খোঁজখবর নিতেই হয়। সবসময় তাতেও রক্ষা হয় না, তাও খানিকটা আইডিয়া পাওয়া যায়। অনেকে সম্পূর্ণ সাদা ক্যানভাস নিয়ে থিয়েটারে যান, আমার জন্য সে পদ্ধতি নয়।
কখনো দেখার পরেও রিভিউ পড়ি, অনেক কারণেই। যার একটা হল এই, যখন দেখি নামী কোনো ছবি আদৌ ভালো লাগলো না, তখন জানতে ইচ্ছে হয় বিজ্ঞ সমালোচকেরা কী বলছেন।
২। কোনো উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ হলে কোনটা পছন্দ করি তার উত্তরটা সুনির্দিষ্ট নয়। যেহেতু সিনেমাই সর্বদা সাহিত্যকে অনুসরণ করে, উল্টোটা ঘটে না, তাই চলচ্চিত্রায়ণ কেমন হলো তার উপরেই মূলত এটা নির্ভর করে। এটা কয়েক রকমের হয়, যেমন:
(ক) মূল সাহিত্যকে অনুসরণ ক'রে নির্মিত, কিন্তু নিজস্বতা অর্জন করেছে, যেমন 'পথের পাঁচালি'
(খ) মূল সাহিত্যের থেকে অনেকাংশে আলাদা, কিন্তু শিল্পোত্তীর্ণ, যেমন 'অরণ্যের দিনরাত্রি'
(গ) সম্পূর্ণ মূলানুগ, যেমন ধরুন সাম্প্রতিক 'দেবদাস' (বাংলা)
(ঘ) মূল সাহিত্যের থেকে আইডিয়া নিয়ে একেবারে নতুন সৃষ্টি, যেমন 'দাদার কীর্তি'
(গ) ধরণের ছবি দেখলেও হয়, না দেখলেও হয়, যদি গল্পটা পড়া থাকে। যাঁরা দ্য ভিঞ্চি কোড কিম্বা ডিসক্লোসার দেখেছেন ও পড়েছেন তাঁরা হয়তো বুঝবেন কী বলছি। বাকি তিন রকম দেখতে ভালোই লাগে যদি ছবিটা ভালো হয়। তবে (ঘ)-এ একটু আশঙ্কা থাকে, অনেক সময় আমাদের প্রিয় উপন্যাসের বাড়াবাড়ি রকমের পরিবর্তন পীড়াদায়ক মনে হয়। তবে আমি চেষ্টা করি এই মনোভাবটাকে বেশি গুরুত্ব না দিতে, খোলা মনে দেখার চেষ্টা করি যতোটা পারা যায়। অনেকদিন আগে পড়া হলে সেটা সুবিধাই হয় কারণ বিস্মরণ খানিকটা সাহায্য করে মুক্ত মনে ছবি দেখতে। কাজেই টাইমটা ফ্যাক্টর তো বটেই।
৩। বই পড়তে নাকি সিনেমা দেখতে, কোনটা বেশি ভালো লাগে বলা মুশকিল। আজকাল পড়ার অভ্যেস কমে গেছে বলে সিনেমা দেখাই বেশী হয়, খাটুনি কম করতে হয় বলেই হয়তো। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একই কাহিনী থেকে বই ও সিনেমা বানানো হলে সাহিত্যেরই জয় হয়, অন্ততঃ আমার ক্ষেত্রে।
কেমন হলো ইন্টারভিউ? নিজেকে বেশ সেলিব্রিটির মতো লাগছে।
এট্টু ডিটেইল রিভিউ পড়তে মঞ্চায়
***************
শাহেনশাহ সিমন
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
মঞ্চাইলে নিশ্চয় হবে। তবে ডিটেইল বলতে সিনেমার কাহিনীর কথা বলছেন না আশা করি? সেইটা যত কম বলা যায় সেই চেষ্টা করি। কাজেই বিশদে লিখলে আরো বেশি থাকবে কী ভালো লেগেছে, কোন অনুভূতি জেগেছে, ইত্যাদির কথা। সেইটা পড়তেই মঞ্চায় তো?
আপ্নে তো আমার মুখের কথাই কাইড়া লইলেন
ছবিটি দেখিনি। তবে আপনার বর্ণনাকে আমার কাছে একেবারেই সাদামাটা মনে হচ্ছে না। বরং সহজ বর্ণনা। এটা অবশ্যই লেখক হিসেবে আপনার অসাধারণ গুন।
যেকোন খাবারকে সহজপাচ্য করে তোলে যে পাচক, তাকে অসাধারণ এক পাচক বলা যায়। অনেকেই সহজ আর সাদামাটাকে গুলিয়ে ফেলেন সহজেই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
অনেক ধন্যবাদ তীরন্দাজ, এমন প্রশংসার জন্য! লেখার উৎসাহ বেড়ে গেলো অনেক।
[আচ্ছা একটা অন্য প্রশ্ন অনেকদিন থেকেই করতে চাইছিলাম, আপনার সিগনেচারের গল্পটা কী? এটা কি কোনো উদ্ধৃতি? কার লেখা?]
চমৎকার লাগলো। ঢাকায় থাকতে অনেককাল আগে পড়েছিলাম ওনডাটজ়ি'র উপন্যাস - গদ্য না, পুরোটা মোটামুটি একটা ৩০০ পাতার কবিতাই মনে হয়েছিল। অনেক কিছু মনে নেই, তবে চুলের সিঁথির সাথে রাতের রাস্তার একটা উপমা টেনেছিলেন - সেটা কোন এক অজ্ঞাত কারণে এখনো মাথার ভেতর রয়ে গেছে।
ছবিটা সেই তুলনায় অত ভালো লাগেনি বোধ হয়। এই জাতীয় নভেল ছবিতে রূপান্তরিত করতেও বেজায় সাহস লাগে। যদিও কলাকুশলীরা কেউ কারো থেকে কম যাননি।
তবে হ্যাঁ, না গিয়ে থাকলে এই জীবনে অবশ্যই একবার মিশর যাবেন, এই আরজ! ইতিহাস আর রোমাঞ্চে যার আগ্রহ, তার জন্যে মিশর, কায়রো, আলেক্সান্দ্রিয়া, সব কিছুই এক বাস্তব স্বপ্নপুরী। বইয়ের সেটিং অর্থাৎ ওয়েস্টার্ন ডেজার্টেও যাওয়া যায়, বেশ পরিশ্রম করে। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মত ডেজার্ট সাফারি - এ জীবনে কবে সময় আর সুযোগ হবে?!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
মিশরে যাই নি, তবে না গিয়ে বোধ হয় রক্ষা নেই, সারা জীবন এমন অতৃপ্তি বয়ে বেড়ানোর চেয়ে ঘুরে আসা সহজ। তবে এমন লম্বা ছুটি পাই ক্যাম্নে?
কপালগুণে ইংলিশ পেশেন্ট-এর তিন প্রধান অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বাস্তবে দেখার সুযোগ হয়েছে। রেফ ফাইন্স-কে দেখেছি দুইবার - প্রথমবার, ফরাসী লেখিকা ইয়াসমিনা রেজা'র God of Carnage নামক কমেডি'তে। ফাইন্সের কমিক ডেলিভারি রীতিমত পেটে খিল ধরানো - In Bruges ছবিতে তার চরিত্রের কথা মনে পড়ছে। আর দ্বিতীয়বার মাস তিনেক আগে সফোক্লিস-এর ঈডিপাস চরিত্রে। সেটাও খারাপ ছিল না।
ওদিকে ক্রিস্টিন-কে একবারই দেখেছি - চেখভের দ্য সী-গাল নাটকে - যেদিন বাংলাদেশ ভারতকে বিশ্বকাপে হারালো সেদিন। কোন এক কারনে আস্ত নাটক'টাই প্রচন্ড বোরিং লেগেছিল। আর জুলিয়েট বিনোশ-কে দেখলাম আমাদেরই বৃটিশ-বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী আকরাম খানের সাথে একটি দ্বৈত নৃত্য-নাট্যে। দুঃখের বিষয় যে ভদ্রমহিলা বেশ বুড়িয়ে গেছেন। রোমান্টিক লীড করার দিন বোধ হয় শেষ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আপনার চিঠি পড়ে আবার পুরোনো দুঃখ জেগে উঠলো, লন্ডনে থাকতে আরো বেশি করে নাটক দেখিনি কেন সেই ভেবে।
আমি আপনার মূলত পাঠক
চালিয়ে যান ভাই, আপনার লেখা পড়ে দেখিতব্য তালিকায় নতুন নতুন সংযোজন ঘটছে। তবে কবে দেখার সময় পাবো তা জানি না।
উফ... জীবন থেকে অফুরন্ত সময়গুলো যে কই গেলো... এখন তো ব্লগ পড়ারই সময় পাই না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার মূলত পাঠক আপনি, সে এক সম্মান, ধন্যবাদ জানালে যথেষ্ট হবে না। তবে শুধু পাঠক থাকলে চলবে না, একটু আধটু টীকা-টিপ্পনিও চাই। সব না-দেখা ছবি নিয়ে লিখছি কি? তাহলে বলুন আপনার পছন্দের কিছু নাম, দেখি সেগুলো নিয়ে লেখা যায় কি না।
আমার খুব প্রিয় একটি চলচ্চিত্র। বড় বয়সে এসে মনে হয়েছে যে এই চলচ্চিত্রটা অস্কার পাওয়ার মত ছিল না হয়তো, তবে সেই সময়ে দারুণ লেগেছিল। উঠতি বয়স, বোঝেনই তো!
অস্কার নিয়ে এতো উচ্চ ধারণা রাখবেন না, অনেক মাঝারি ছবিই ওই পুরস্কার বগলদাবা ক'রে থাকে। আর আপনার যদি উঠতি বয়সে ভালো লেগে থাকে এই ছবি, তো সেটা কম কথা নয়। বেশ ধীর লয়ের সিনেমা, শরীরী প্রেমের কথা থাকলেও সেখানেই শেষ হয় না, এবং আমার মনে হয় এই ছবি উঠতি বয়সে ভালো লেগে থাকলে সেইটা আপনার ম্যাচিওরিটির কথাই বলে। তবে এ আমার ব্যক্তিগত মত, বিতর্ক এড়াতে সেইটাও বলে রাখি।
সে-বছর এরচেয়ে ভাল মুভি ছিলও না। এটা এখনও আমার খুব প্রিয় মুভি, স্রেফ বয়সের সাথে সাথে প্রেমের ছবির আবেদন কমে গেছে আমার কাছে।
এইটা খাঁটি কথা বলেছেন। একসময় "ন হন্যতে" কী ভালোই লেগেছিলো পড়তে। এখন ভাবি কেমন লাগবে! হাতের কাছে নেই, দেশে বইয়ের আলমারিতেই রয়ে গেছে, এবং সেটা হয়তো ভালোই হয়েছে। ভালোলাগাটা নষ্ট হয় নি।
পাঠক মশাই - আপনি মূলত আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছেন! আমার মাথায় কিঞ্চিৎ সমস্যা আছে - মাঝে মাঝে ভালো লেখা পড়লে কেমন যেন ক্ষিপ্ত-মতো হয়ে যাই! আর আপনার একের পর এক সিনেমাটিক মুভি রিভিউ পড়ে আমি তাব্দা এবং ক্ষুব্ধ! দয়া করে, কেন, সেটা আবার জিজ্ঞেস করতে যাবেন না যেন!
আর হ্যা, বিগ ফিশ দেখে আপনার কী মনে হয় জানার আগ্রহ আছে -
"বিগ ফিশ" একটা অসাধারণ সিনেমা। আমার খুব পছন্দের।
আপনি একটা রিভিউ লেখেন এই সিনেমাটা সম্পর্কে।
আহা - তুমি বলসো যখন অবশ্যই লিখবো! তুমি তোমার পহেলা ফাল্গুনের এলবামটা সচলায়তনে পোস্ট করো? তারপর লিখবো
আগে লেখেন তো আপনি!
আরে মশয়, আপনেরা তো দেখি লক্ষ্ণৌয়ের নবাব, খালি কন 'আপ পহলে আপ পহলে'? ন্যান, দুইজনই একত্রে লিখ্যা ফ্যালান!
তাইলে কি এট্টু খারাপ লিখতে কন? হে হে
তাব্দা খাইলেন বেশ কথা, আর ক্ষুব্ধ যদি লেখার গুণে হন তো আরও আনন্দ পাইলাম। জিভের ডগায় ব্রেক লাগাইলাম, জিগাইতে বারণ করছেন যে!
বিগ ফিশ কিউ'র শীর্ষে আনলাম, শিগগির দেখে ফেলা যাবে। কেমন লাগলো সেও জানাবো। আমার কেমন লাগলো এই নিয়ে আপনার আগ্রহ দেখে সম্মানিত বোধ করছি।
আমার ভীষণ প্রিয় একটা সিনেমা নিয়ে লিখেছেন। শুরুতে পোস্টের প্রিভিউতে ফটোটা আগে চোখে পড়েছিল। কোলাজের একটা ফটোতে রেফ ফাইনজকে দেখে অবাক হয়েছিলাম, কারণ মাত্রই আপনি "র্যাচেল গেটিং ম্যারেড" লিখেছিলেন। ওই সিনেমায় রেফ আসলো কোত্থেকে, এটাই ভাবছিলাম। পরে শিরোনাম, প্রিভিউয়ের শুরুর কয়টা লাইন এবং কোলাজের বাকি ফটোগুলো দেখে নিশ্চিত হলাম যে এটা "ইংলিশ পেশেন্ট"।
আমার কাছে আপনার এই রিভিউটা চমৎকার লাগল। বিশেষ করে অনুবাদটা তো দুর্দান্ত। আপনার অনুবাদ কবিতা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম। উপন্যাসটা কি ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে? পিডিএফ আকারে। আমি একটু খুঁজেছিলাম আজ, পেলাম না।
"ইংলিশ পেশেন্ট" কয়েকবার দেখেছি। ডুয়াল লেয়ারের ডিভিডিটা সংগ্রহে আছে। অসাধারণ একটা সিনেমা। সবার অভিনয়ই ভাল লেগেছে। বিশেষ করে রেফ আর জুলিয়েট বিনোশ তো ছিল দুর্দান্ত। ক্রিস্টিন স্কট থমাসকেও ভাল লেগেছিল। আমার পরিচিত কয়েকজন সিনেমাটাকে "স্লো এবং বোরিং" আখ্যায়িত করেছিল। তবে আমার অবস্থান যে বিপরীতে ছিল, তা তো বুঝতেই পারছেন। আপনার পোস্ট পড়ে সিনেমাটা আরেকবার দেখার ইচ্ছা প্রবল হলো। এই সপ্তাহান্তেই দেখতে বসব আবার।
রেফ ফাইনজের "দ্য কনস্ট্যান্ট গার্ডেনার" তো নিশ্চয়ই দেখেছেন। সম্ভব হলে পরবর্তীতে ওটা নিয়ে লিখুন। এই সিনেমাটা দেখার আমার এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা আছে। আপনার লেখনীতে আরেকবার না হয় ঝালিয়ে নেব সেই স্মৃতি।
আহা এতো প্রশংসা রাখি কোথায়? অনেক ধন্যবাদ। অনুবাদ কবিতাটা আজই পোস্টাবো, এখন পোস্ট করতে দিচ্ছে না ২৪ ঘন্টা হয়নি ব'লে, বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কার্টেন রেইসার হিসেবে মূল কবিতার লিঙ্কটা দিয়ে দিই বরং।
উপন্যাসটা আমি গ্রন্থাকারেই পড়েছি, আমি ডাউনলোড করার ব্যাপারে খুব অনভিজ্ঞ, সাহায্য করতে পারলাম না ব'লে দুঃখিত। বইটার দাম বোধ হয় খুব বেশী নয়, আমারটা ২০০৪-এ কেনা, দাম দেখছি তিন পাউন্ড।
"কনস্টান গার্ডেনার" দেখেছি, ভালো লেগেছিলো। তবে লিখতে গেলে যতোটা মনে থাকা দরকার ততোটা ডিটেইলস মনে নেই, সেটাই সমস্যা। আরেকবার না দেখে লেখা মুশকিল। তবে চেষ্টা করবো।
আপনার বর্ণনা চমতকার লাগলো।
আর সিনেমাটা যে কী পছন্দের।
আমি একে ওয়ান অফ দ্য বেস্ট রোম্যান্টিক বলি
আসলে ইতিহাস কিংবা নৈতিকতা বিচার করলে
অনেক কিছু বলা যায়। মার্ক কমিয়ে দেয়া যায় অনেক।
তাই এসব বিষয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলাম।
মুগ্ধ হয়ে দেখেছি রালফ ফিয়েন্স এর তীব্র ভাংচুর
আর ক্রিস্টিন টমাস এর দ্বন্দ
কলিন ফার্থ কখনই পছন্দ নন। কেন যে এলো ক্লিফটন কারেক্টারটা নষ্ট করতে।
আরেকজন কঠিন অভিনেতা ছিলেন উইলেম ডেফো, ডেভিডের চরিত্রে।
এ সিনেমার কিছু সংলাপ যে কী দুর্দান্ত।
I cut my heart everyday
in the mornning it's full again.
I thought I'd kill you.
do not kill me I died years ago.
I am in love with a ghost
He's in love with a ghost
আপনার টিকেট ব্ল্যাকিং চলুক
আমরা হাউসফুল হলে ঢুকে পড়ি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কলিন ফার্থকে আমার তেমন একটা ভাল্লাগে না কেন যেন। ডেফোকেও না।
আপনার উল্লেখ করা সংলাপগুলোর সাথে পছন্দের আরো কিছু যোগ করি:
*
- হোয়াট ডু য়্যু হেইট মোস্ট?
- আ লাই। হোয়াট ডু য়্যু হেইট মোস্ট?
- ওউনারশিপ। বিয়িং ওউনড। হোয়াট য়্যু লীভ হিয়ার য়্যু শুড ফরগেট মি।
*
- হোয়েন ওয়্যার য়্যু মোস্ট হ্যাপি?
- নাউ।
- হোয়েন ওয়্যার য়্যু লীস্ট হ্যাপি?
- নাউ।
*
- উইল উই বি অলরাইট?
- ইয়েস। ইয়েস, অ্যাবসলিউটলি।
- "ইয়েস" ইজ আ কমফোর্ট। "অ্যাবসলিউটলি" ইজ নট।
উইলিয়েম ডেফো কিন্তু বেশ ভালো অভিনেতা, ফার্থের সাথে এক ব্রাকেটে আসবেন না-ই মনে হয়। তবে এই ছবিতে চরিত্রটা বেশ বিরক্ত করেছে দর্শককে।
সংলাপ সুন্দর লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ রানা মেহের।
কলিন ফার্থকে বাদ দিয়ে বিলেতের চরিত্র নিয়ে সিনেমা করা বোধ হয় মুশকিল, নইলে সব জায়গাতেই উনি পৌছে যান কেন। আমারও কিছু প্রিয় নন, তবে এতো রাগও হয় না।
সংলাপ মনে রাখার মতো।
অপ্র
এতোবেশী ডুয়েল লেয়ার ডিভিডি থাকা ভালো না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
রানা, খেয়াল করসেন - অপ্র'র কিন্তু খুব বেশী বাড় বাড়সে!!
আমি আবার কী করলাম।
@রাপ্পু
আমার সংগ্রহে প্রচুর ডুয়াল লেয়ারের ডিভিডি আছে। লিস্ট দেব?
এককালে প্রচুর ডিভিডি কিনতাম। এবং যেসব কিনতাম, সেগুলো অধিকাংশই ছিল ডুয়াল লেয়ার। বেছে বেছেই কিনতাম। হেন দোকান নেই যে চেক করিনি। কাকলীর "আবুল উলিয়া" থেকে শুরু করে ধানমন্ডির "ক্যাপিটল", আরো বহুত দোকান ঘুরেছি।
আফসোসের কথা, এখন আর ডুয়াল লেয়ার পাওয়াই যায় না বলতে গেলে। সিঙ্গেল লেয়ারই পাওয়া যায় না ঠিকমত! সব লোকাল ব্লু ডিস্কে রাইট করা, কিন্তু দাম ঠিকই নেয় সিলভার ডিস্কের। এইসব ডিভিডি কেনাই বাদ দিয়েছি।
আপনার মতো যদি হলে গিয়ে এইসব সিনেমা দেখার সুযোগ থাকত, তাহলে তো কাজই হতো
স্নিগ্ধা আপু
অপ্রটার একটা বিশাল মাইর খাওয়া দরকার। নাহলে শোধরাবে না
মূলত পাঠক
কলিন ফার্থ এর ব্যাপারে একদম ঠিক বলেছেন।
সব জায়গায়ই কী করে যেন লম্বা নাকটা ঢুকিয়ে দেয়।
এমনকি মামা মিয়াতেও অবাক হয়ে দেখি সে। অসহনীয়।
অপ্র
ওই
তুই কোন সাহসে কলিন ফার্থ আর উইলিয়াম ডেফোকে একজায়গায় বসালি?
(পোয়েটিক না, সত্যিকারের তুইতোকারি)
আরো ডুয়েল লেয়ার ডিভিডি চাই?
এতো চাই কেন আপনার?
আবার সারাদিন টরেন্ট এ পড়ে থাকা হয়।
তবে ডিভিডির ব্যাপারটা আমিও খেয়াল করেছি।
শুধু ডিভিডি না সিডিও এখন ভালো কোয়ালিটি পাওয়া যায়না।
ঢাকার দোকানতো চিনিনা ভালো।
সিলেটের কিছু দোকানে ভালো ভালো সিনেমা গান পাওয়া যেতো একসময়।
শেষবার দেশে গিয়ে দেখি যাচ্ছেতাই অবস্থা।
সবই চিঙ্কুদের কৃপা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
নতুন মন্তব্য করুন