আজ একটা ডিনার ছিলো এক ভারতীয় ডিপ্লোম্যাটের সাথে, যিনি কিনা আমাদের স্কুলের অ্যালাম। তালেবর লোক, আই এ এস পরীক্ষায় ৫ম হয়েছেন ইত্যাদি। কিন্তু ওঁর সাথে সেই ভোজসভায় বিনি পয়সায় সুখাদ্য খাওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু করার ছিলো না আমার। খাঁটি কবিরা নাকি দুঃখে দারিদ্রে লেখার প্রেরণা পান, আমার তো দিব্বি কাব্যরস বইলো ফিলে মিনিয়ন খেতে খেতে (এতেই বোঝা যায় ভেজাল কবি)। তো সেই ভেজাল কাব্যরসই ঢেলে দিলাম আপনাদের পাতে, ছড়ার আকারে। চেখে বলুন কেমন লাগলো।
স্যাম ঠাকুরের আপন দেশে
আইন কানুন সর্বনেশে
দখিন হাওয়ায় ডলার বেড়ায় উ'ড়ে,
ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ
যাবৎ জীবন সুখেই জীবেৎ
এমন সময় হিসেব গেলো ঘু'রে ।
কলার-উঁচু ডলার-লোভী
তার খেলাতেই ভুলতো ভবি
ওয়াল স্ট্রীটের জোয়াল কাঁধে গোঁজা,
চৌদ্দ শত ডলার ঢেলে
আবর্জনার বালতি এলে
গণেশ ঠাকুর ক্যাম্নে থাকেন সোজা?
পড়াশুনা গাধায় করে,
খাটনি যতো চীনার ঘাড়ে,
আমরা শুধু ব'সে বাগাই ভুঁড়ি,
গাড়ির দোকান উঠলো লাটে
ভিখ মেগে খাই হাটেবাটে,
তাই বলে কি পেলেন ছাড়া ঘুরি?
প্রাণ বাঁচাবে নতুন রাজায়,
এই আশাতেই বগল বাজাই,
এমনি করেই সব যাবে ঠিক হ'য়ে,
না যদি হয়? সমস্যা কী?
সৈন্য পুষি এম্নি না কি?
একটা কোথাও দেবো নে পাঠিয়ে!
মন্তব্য
দাদা আপ্নার বড়ই যত্ন নিয়েচেন দেকচি
দাদা মানে সেই ডিপ্লোম্যাট? উনি কিছু যত্ন নেন নি, বরং ওনার যত্ন নেয়ার জন্য স্কুল গ্যাঁটের কড়ি খর্চা ক'রে পানাহারের আয়োজন করেছে। উনিও ফোকটে খেলেন, আমিও ফোকটে।
দুর্দান্ত। আপনি এখন থেকে নিয়মিত ছড়া পোস্ট করবেন কিন্তু।
অনেক ধন্যবাদ।
পোস্ট করতে কোনো আপত্তি নেই, তবে আমি ঠিক ন্যাচারাল ছড়াকার নই, তাই লেখার বিষয় খুঁজে পাই না। চাপান-উতোর হলে দিব্বি সুবিধা হয় লিখতে। এইটা নিজে নিজে লিখতে হল, অতি কষ্টে লিখলাম।
একটা বুদ্ধি দেই তাহলে। এখন থেকে নিয়মিত বিভিন্ন ডিপ্লোম্যাটদের সাথে ডিনারে যাবেন, তাঁদের সাথে 'ফিলে মিনিয়ন' খাবেন, তাহলেই দেখবেন ধমাধম লেখার বিষয় পেয়ে গেছেন
ডিপ্লোম্যাট লাগবে না, সুখাদ্য পেলেই চলবে। দেখি, কোনো ছড়াপ্রেমী স্পনসর খুঁজে বার করতে হবে।
ফিলে মিনিয়ন শুনে তো চিন্তায় পড়ে গেলাম ইহা কী বস্তু যাহা এখনো খাওয়া হয় নাই ...খুঁজিয়া পাইলাম ইহা বিফ স্টেকের (tenderloin steak ) ফ্রেঞ্চ নাম। এটার কথাই তো কইছেন, না কি?
হ্যাঁ, বিফ স্টেকই বটে, তবে স্টেকের মান ও স্বাদ অনেকাংশে নির্ভর করে গোরুর শরীরের কোন অংশ থেকে মাংসটা আসছে তার ওপর, সেই হিসেবে টেন্ডারলয়েন উৎকৃষ্ট গোস্ত, এবং এ থেকেই ফিলে মিনিয়ন রান্না হয়। যাক, স্টেক নিয়ে অনেক কথা হলো, ছড়াটা লাগলো কেমন?
সাধু সাধু সাধু
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
থ্যাংকু থ্যাংকু থ্যাংকু
এটাই আসল কথা ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
যা বলেছেন!
এমন মজাদার লেখা! আরো ঘন ঘন দেবেন তো!
শুনুন, প্রায়ই ডিপ্লোম্যাটিক ডিনারে যাবেন এখন থেকে।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আহা পারলে তো আজও যাই, গোটা একটা দিন পার হয়ে গেলো গোরু-অদর্শনে। কিন্তু রোজ রোজ কি আর জোটে সে সব?
লেখার টপিক বলুন, ছড়া লেখা যাবে। মৌলিকত্বের বড়োই অভাব, বুঝলেন না? ফরমায়েশি মাল সাপ্লাই দিতে সমস্যা নেই।
পাঠক মশাই, আপনি তো দেখি লোক্ষ্রাপ! একা একা ফিলএ মিনিয়ন খাচ্ছেন তো খাচ্ছেন, আবার খেতে খেতে কাব্যভাবে মজেও যাচ্ছেন?! মজা পেয়েছেন নাকি?!
বলি, কেন? আমরা কি খেতে জানি না? না কি কেউ আমাদের খেতে সাধলে আমরা কখনও 'না' করি? (ইয়ে, আমরা মানে গৌরবে বহুবচন আর কী )
ছড়াও অতি সুখাদ্য হয়েছে
ওই আর কি, ছড়াটাকেই আপাততঃ গোরু ভেবে চিবোন, কোনো দিন সাক্ষাৎ হলে আপনি চাইলে রঁেধে খাইয়ে দেবো, তাছাড়া দোকানবাজারের অপশনও রইলো। তদ্দিন ছড়া খান
বাহ ! বেশ।
ভাল্লাগছে? বাহ বাহ
'মূলত পাঠক' নামটা ঠিক হয় নাই দাদা, এইটা হওয়া দরকার ছিল 'মূলত ছড়াকার'!
বেশ ভাল লাগতেসে সচলায়তনে আরেকজন ছড়াকারের উপস্থিতি দেইখা..
ছড়া উপাদেয় হইসে... এখন থিকা নিয়মিত লেইখেন!
আরে আকতার ভাই যে! আপনে এমন কইরা লজ্জা দিবেন শ্যাষে?
যাক আপনের ভালো লাগছে, খুব আনন্দ পাইলাম।
এটা কোন ইস্কুল, প্রাক্তনকে খাওয়ায়?
চিঠি আছে প্রস্তুত , আসলে তো দান চায়;
ওয়াইন, ফিশ যাই হোক, এক আছে আর্জি-
পোর্ক মিনিয়ন হবে? গরুতে এলার্জি।
দূতাবাস-চাকুরীতে অফুরান টাকা নাই,
এমন অ্যালাম তরে হাত পেতে থাকা নাই
ইস্কুল জানে সেটা; চায় কিছু অন্য,
এইসব খানাপিনা রিলেশন-জন্য।
গোস্তে অসুখ? আহা, মনে পাই কষ্ট,
স্টেকের মজা তো তবে মাঠে হল নষ্ট!
মৎস্য বরাহ আদি, খাদ্য ও পানীয়
যেটা খেতে রুচি হয়, থালা ভ'রে তা নিও।
মারহাবা, মারহাবা!
ডাইনে বামে মিল পাবা।
হাবারা মার খায় ইন্টেলিজেন্স অভাবে,
চাণক্য চর্ব্য পায়, ছড়া কাটে স্বভাবে।
দশভূজার পুত্র-কন্যাদের কারো দুইটার বেশি ভূজ না থাকলেও "মূলত পাঠক"-এর ভূজের সংখ্যা যে দুই-এর অধিক সন্দেহ নেই। সিনেমা, গল্প, ছড়া সব লাইনেই এক এক ভূজ দিয়ে বাউণ্ডারী হাঁকিয়ে যাচ্ছেন, সাথে আরেক ভূজে ফিলে মিনিয়নও ধরে আছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
শ্যাষে আমারে রাবণ বানাইয়া ছাড়লেন?
এতো প্রশংসা সামলাতে অবশ্য অনেকগুলো হাত লাগবে। অনেক ধন্যবাদ এমন ভূয়সী প্রশংসার জন্য।
রাবণের মাথা দশটা হৈলেও হাত কিন্তু দুইটা, তাই না? আমি তাই রাবণ বলি নাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দশ মাথা বিশ হাত না? তাই তো জানতাম......
গনেশের কিন্তু চার ভূজ...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ভুল ধরার জন্য ধন্যবাদ। তবে আমাদের পাঠককে গজানণ হিসাবে ভাবতে পারি না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গজানন না হই, এইসব খাদ্যাখাদ্য খেলে লম্বোদর হতে কতক্ষণ?
ছবিতে Large Stomachটা লক্ষ্য করুন।
ছড়াটা খাসা হয়েছে। ভোজনটাও নিঃসন্দেহে
ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী
তুখোড়
থ্যাংক য়ু দাদা
ক্যান যে খালি 'পাঠক' হইলাম না ...
তাহলে ছড়া লেখন, ছবি দেখন, ডিপ্লোম্যাট দর্শন, ভোজন- সবই হইতো...
-------------------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
হইয়া যান, পাঠক কেলাবের মেমবারশিপ চান্দা লাগে না
হুমম ভালো হইছে, অতীব সুস্বাদু!
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
সুস্বাদু খানা তো ভালা কথাই, হের লগে ছড়াটাও সুপাঠ্য হইলে ভালা হইতো
ভাল লাগলো।
থাংকু সিরাত ভাই
নতুন মন্তব্য করুন