দেওয়ালে স্মৃতির মতো ঝুলে থাকে ফোটোগ্রাফ
বাকিদের ঠাঁই অ্যালবামে
অতীতকে বাক্সে ভ'রে, সযতনে সাজানো জীবন
তারও আছে নানাবিধ, হায়ারার্কিক্যাল
সেই িবধি মেনে নিয়ে চিলেকোঠা ঘরে
তক্তপোষের তলে দিদিমার রমণীর গুণ,
ভাঙা কাঁচ হাল ছাড়ে, ধুলোবালি
ফুরোনো প্রেমের ভাঁজে ভাঁজে
অস্বচ্ছ ঘোলাটে চোখে চেয়ে থাকে প্রপিতামহেরা
শৈশবও বয়স্ক হয়, কিশোর ভারতী
কারও ভোগে লাগবে না, দিন ফুরিয়েছে
সাঁঝের তারকা গান বিবর্ণ শরীর
সব খেলা সাঙ্গ হলে একে একে নিভিছে দেউটি
সন্ধ্যার বাতাসে তার বিষণ্ণতা ঢেলে চলে কামিনীর ফুল
সকলি তামাদি হয়, জীর্ণ হয় স্মৃতির মলাট
শতাব্দী সাগর পারে জাগে শুধু ধ্রুবতারা রবীন্দ্রনাথ।
মন্তব্য
শেষ দু'লাইন খুউব ভাল্লাগল।
ইয়ে, পাঠক ভায়া, যদি কিছু মনে না করেন, ভয়ে ভয়ে বলি - কবিতার মাঝে 'হায়ারার্কিক্যাল' শব্দটা আমার কাছে একটু কেমন-কেমন যেন লাগল। তবে আপনি তো জানেনই আমি কবি নই, কবিতার 'মূলত পাঠক' আমি, তাই আমার কথা আমলে না নিলেও চলবে
হা হা এতো যখন ভালোই লেগেছে তো আর আমার বিশেষ চাহিদা নেই। তাছাড়া প্রথম কমেন্ট, এর মূল্যই আলাদা।
আর ভয়ে ভয়ে কেন, নির্ভয়ে বলুন, কবিতা পাঠক হবার জন্য ডিগ্রি লাগে নাকি? নাকি সমালোচনা শুনলেই আমি তেড়ে আসি এমন রেপুটেশন বানিয়েছি?
আরে না না, আপনার রেপুটেশন তো বেজায় ভালো মানুষের। অভয় পেলাম, এখন থেকে পুরোদমে সমালোচনা চলবে (কিন্তু আপনি যে আপনার লেখায় সে সুযোগই দেন না!)
সে কি মশাই, সমালোচনার সুযোগ নেই এমন লেখা আজ অবধি কেউ লিখেছে? সজনীকান্ত রবীন্দ্রনাথকে অবধি ছাড়েন নি, সেই ডাইনোসরের সামনে আমাদের মতো পঁিপড়েদের তো ফুঁ দিয়ে ওড়ানো যায়।
আসলে আপনি ঠিক নিন্দা করার টেকনিকটা শেখেন নি, একদিন সময় নিয়ে বসে আপনাকে শিখিয়ে দেব'খন।
আসলে একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিলো নিঃসন্দেহে, যেটা আমি দিতে ভুলেছি। যেমন ধরুন আমরা বাবা-মায়ের ছবি ডিসপ্লে করে রাখি হয়তো, আর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা (বা মায়ের দিকেরও) হয়তো ভেতরের ঘরে থাকে। প্র-পিতা/মাতা মহ/মহী দের সে সৌভাগ্য কম হয়, তাঁরা বাক্সে ঠাঁই পান। তার ওপরের ধাপেরা সম্পূর্ণ বিস্মরণে যান। এইভাবে ধাপে ধাপে ডিমোশন। কন্যার আঁকা ছবি ফ্রিজে সাঁটাই আর ঠাকুমার সূচীশিল্পের বাঁধানো ছবি বেমানান হয়ে যায় আর চলে যায় চিলেকোঠাঘরে। এই ভাবে জেনারেশন ধরে ধরে এক হায়ারার্কি কাজ করে বাতিলের খেলায়।
রবীন্দ্রনাথ এই খেলায় আজও জিতে চলেছেন এইটে বোঝাতে এতো প্যাচাল।
স্তরায়ন বলা যায়?
হ্যাপি মাদারস ডে
কি জানি, যায় হয়তো, তবে বললে আমি নিজেই যে বুঝতাম না!
আপনার সব কবিতার নিচে এরকম একটা তর্জমা দিবেন, তাইলে আমি এবং আমার টাইপের বেরসিক লোকরাও অনুধাবন করতে পারি।
কবিতাটা প্রথম পড়ায় ভালই লাগছিলো, এইটা পড়ে বোঝার সাথে সাথে ভাল লাগার ডিগ্রী বেড়ে গেল! এই ক্রাচ দিয়ে ট্রেইনিং হোক, একসময় আর লাগবে না আশা করা যায়।
সত্যিকারের কবিরা ভয়ানক অফেন্ডেড হবে আপনার এই প্রস্তাবে, আমার মতো ভেজাল কবি তাই বঁেচে গেলেন এ যাত্রা।
তর্জমা দিতে আপত্তি নেই, কিন্তু কোন অংশে সমস্যা সেটা আমি বুঝব না। তার চেয়ে প্রশ্ন করুন, উত্তর দিই, সেটা সহজ।
@মূলত পাঠক(!)
ব্যাখ্যার জন্য অনেক ধন্যবাদ। পড়ার সময়ই বিষয়টা বুঝেছিলাম কিছুটা, কিন্তু আমার কাছে আসলে 'হায়ারার্কি' শব্দটাই কেমন কেমন যেন লাগছিল। অন্য কোন শব্দ দিয়ে বদলে দিতে পারলে হয়তো... যাই হোক, কবিতাটা চমৎকার, সেটাই আসল কথা।
আর কোনো শব্দ খুঁজে পাই নি যে!
কবিতাটা তো বেশ৷
আমাদের ছোটবেলায় সব বাড়ীতেই একটা রবীন্দ্রনাথ, একটা বিবেকানন্দ, একখান নেতাজী আর কারো কারো বাড়ীতে গান্ধিজীরও একখান করে ফোটো থাকতই৷ কিন্তু গত ৫ বছরে কারো বাড়ীতে, বিশেষ করে নতুন হওয়া বন্ধুবান্ধবদের বাড়ীগুলোতে এই ছবিগুলো দেখেছি কিনা মনে করার চেষ্টা করলাম৷ মাত্র একটা বাড়ীতে দেখেছি বলে মনে পড়ছে৷
----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
আপনার অবজারভেশনটা একদম সঠিক, অনেক পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ালো। আমাদের বাড়িতে অবশ্য ঠাকুরদেবতার ছবিই বেশি ঝুলতো, যাঁরা আজও অনেকেই ঝুলে আছেন তবে নতুন আর কেউ যোগ দিচ্ছেন না। আর ঐ আপনার লিস্টের ভদ্রলোকেদের সাথে কোনো কোনো ঘোর বামভাবাপন্ন বাড়িতে লেনিনকেও দেখেছি। পিতৃপুরুষকে মনে রাখার জন্য ছবিই ভরসা, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে তো আমাদের অনেক উপায় আছে, গ্রন্থাবলী তো মোটামুটি অনেকেই রাখেন বা তঁার আঁকা ছবি অনেকক্ষেত্রেই দেয়ালশোভা। তবে যে জন্য উনি টঁিকে গেলেন তার মূল কারণ আমার ধারণা ওঁর গান। ঐ গানের জন্যই হয়তো ভবিষ্যত প্রজন্মও ওঁকে মনে করতে বাধ্য হবে।
হায়ারার্কি ব্যাখ্যার জন্য কবিতাটি আরো উপাদেয় হোল।
খাদ্য উপাদেয় হইলে রান্ধনিরও আনন্দ
এইটা কয় মিনিটে লেখলেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইটার একটা গল্প আছে, সেইদিন স্নিগ্ধার সাথে কথায় কথায় বেরিয়ে গেছে। তা পাব্লিক হইলেই বা মন্দ কি! আসলে গত সপ্তাহে একদিন মাঝরাত্রে হঠাৎ খুব বেগ পেল, না অন্য কিছুর না স্রেফ কবিতার। তো ঝটিকাগতিতে তিন খানা লিখে ফেল্লাম (তার একটা ঐ জঙ্গল নিয়ে লেখাটা, আরেকটা জমানো আছে)। তো তার পর মাঝে দিন দুই সচলে ভালো করে ঘোরা হয় নি, এখানে খুব ব্যস্ত ছিলাম অনুষ্ঠান নিয়ে। তারপর ঢুকে দেখি সবাই রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কতো কিছু লিখে ফেলেছে। তো আমি চট করে ওই তিন নম্বর কবিতাটা নিয়ে শেষ দু লাইন বদলিয়ে ওটাকে রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে বানিয়ে পোস্ট করে দিলাম। রবিঠাকুর অন্তর্যামী, তিনি সব জানেন, ক্ষমাঘেন্না করে দিয়েছেন আশা করি।
তো আপনার প্রশ্নের উত্তরটা হবে ওই তিন মিনিটের কাছাকাছিই কিছু, নয়তো পাঁচ।
হুমমমমম ...... কিছু আর বললাম না ......
সে কি কেন, বলেই ফেলেন, লজ্জা কইরেন না।
সব খেলা সাঙ্গ হলে একে একে নিভিছে দেউটি
সন্ধ্যার বাতাসে তার বিষণ্ণতা ঢেলে চলে কামিনীর ফুল
সকলি তামাদি হয়, জীর্ণ হয় স্মৃতির মলাট
শতাব্দী সাগর পারে জাগে শুধু ধ্রুবতারা রবীন্দ্রনাথ।
হ্যাঁ, যদিও পাপ করলেন গুরুর সাথে, তবু আউটকাম ভালোই হৈছে।
অসাধারণ।
তবে,
তারও আছে নানাবিধ, হায়ারার্কিক্যাল
সেই বিধি মেনে নিয়ে ...
এখানে 'নানাবিধ' আর 'হায়ারার্কিক্যাল' দুইটার কোনো একটা অন্তত পার্টস-অব-স্পিচ-গত গণ্ডগোল আছে মনে হচ্ছে, সেন্টেন্সের ফাইনাল সেন্স-টা পাচ্ছি না। যদি ঠিকই থেকে থাকে, একটু কি বুঝিয়ে দিতে পারেন আমাকে খোলাসা করে?
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
হা হা, আপনি সত্যি মনে করেন কবিতায় অতশত সেন্টেন্সের ফাইনাল সেন্স থাকে? তাও আমার লেভেলের কবিদের?
তাও চেষ্টা করে দেখি:
দেওয়ালে স্মৃতির মতো ঝুলে থাকে ফোটোগ্রাফ, বাকিদের ঠাঁই অ্যালবামে। অতীতকে বাক্সে ভ'রে, সযতনে সাজানো (যে) জীবন, তারও আছে নানাবিধ, হায়ারার্কিক্যাল (অর্থাৎ অতীত জীবনের যে সাজানো রূপ, তারও রকমফের হয় হায়ারার্কি মেনে)। সেই িবধি মেনে নিয়ে চিলেকোঠা ঘরে
তক্তপোষের তলে দিদিমার রমণীর গুণ.... ইত্যাদি।
আউটকাম ভাল্লাগ্ছে জাইন্যা ভাল্লাগ্লো।
"যদিও পাপ করলেন গুরুর সাথে": কিসের কথা কইলেন ভালো বুঝলাম না।
না 'পাঠক', যে-জায়গাটা নিয়ে কনফ্যুশন হয়েছিল আমার, আপনার লম্বা ব্যাখ্যাতেও সেটা সেভাবেই না-ছোঁয়া রেখে দিয়েছেন আপনি। আমি যে ব্যাপারটার কারণে বলছিলাম- সেটা ছিল- 'নানাবিধ' শব্দটা তো বিশেষণ, আপনি তো ব্যবহার করেছেন 'তারও আছে নানা রকমফের' (বিশেষ্য) অর্থে (আমি যতোদূর বুঝতে পেরেছি আগেও এবং আপনার পরবর্তী ব্যখ্যায়ও)। আপনার মূল কবিতায় তো "তারও আছে নানাবিধ, হায়ারার্কিক্যাল"-এর পরের কথা একটা নতুন বাক্যের শুরু- "সেই বিধি মেনে ..." । এই বাক্যটার শুরু যদি ধরি 'হায়ারার্কিক্যাল' শব্দটা থেকে, তবে তো 'নানাবিধ' বিশেষণের খেলাটা ফাইনাল হলো না, মানে সেই বিশেষণটা ঠিক কোন্ বিশেষ্যকে কোয়ালিফাই করার জন্য এলো! আর, যদি এই বিশেষণটাই বরং 'হায়ারার্কি' বিশেষ্যটির জন্য এসে থাকে, তবে তো এটা বিশেষ্য হিসেবেই থাকার কথা, না কি? আপনি তো এখানেও আরেকটা বিশেষণ লিখেছেন- 'হায়ারার্কিক্যাল'। এজন্যই বলছিলাম।
কী জানি- আমিই আন্দাজে বেশি প্যাচায়ালাইলাম কি না বুঝবার পারতেছি না!
থাউকগ্যা, বাদ দ্যান। ব্যাপার না।
আর, আপনি অন্য কমেন্টের জবাবে বলেছিলেন-
তো আমি চট করে ওই তিন নম্বর কবিতাটা নিয়ে শেষ দু লাইন বদলিয়ে ওটাকে রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে বানিয়ে পোস্ট করে দিলাম। রবিঠাকুর অন্তর্যামী, তিনি সব জানেন, ক্ষমাঘেন্না করে দিয়েছেন আশা করি।
এইটার আড়িপাতা ক্রস-রেফারেন্স প্রেক্ষিতেই ওই "যদিও পাপ করলেন গুরুর সাথে" ফানটা করেছিলাম। কিলিয়ার?
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
একদম জ্যাক নিকলসনের ভাষায় বলি, ক্রিস্টাল!
আবার সিনেমা টেনে আনলাম, নাঃ এক্কেবারে ফিল্মি হয়ে গেছি!
চুপ, ফিল্মি কোথাকার!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন