ছোট্টো ডিসক্লেইমার: যাঁরা রাগটাগ ভালো জানেন বোঝেন তাঁরা এ লেখা পড়ে 'বোরড' হতে পারেন বা তন্দ্রাচ্ছন্ন, কারণ এটা তেমন উচ্চস্তরের কিছু হবে না। নেহাৎ বেসিক ব্যাপারস্যাপার আর কি।
আগের বারের মতোই সময় বাঁচাতে এইটে চালিয়ে দিয়ে পড়তে থাকুন।
রাগ নিয়ে আলোচনা পড়লে অব্দি যাদের রাগ হয়, তাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়ে শুরু করা যাক আজকের এই আড্ডা। জ্ঞানের ভাঁড়ার বাড়াতে নয়, স্রেফ আড্ডা মারতেই আসুন। ভালো না লাগলে না হয় চাট্টি গালাগাল করে বিদায় নেবেন, তা বলে একটু ট্রাই করবেন না সে কেমন কথা? সব কিছুই তো চেখে দেখতে হয়। আর যেতে যেতে বলে যাবেন কেন ভালো লাগলো না, তাহলে পরের আড্ডায় আপনাকে আটকানোর ব্যবস্থা করা যাবে আপনার কথামতোই। মোট কথা দু-এক জনে আড্ডা জমে না, আর সেইজন্যই সব্বাইকে চাই।
আসলে রাগকে আলমারির তাকে তুলে রেখে রেখেই আমাদের এমন বিতৃষ্ণা এসেছে। অথচ টুকটাক রাগ শুনে শুনেই কিন্তু আমরা বড়ো হয়েছি, এমন কে আছে যে সিনেমার গান শুনি নি, রাগসঙ্গীত না হয় নাই শোনা হল। সিনেমার গানেও কিন্তু প্রচুর রাগারাগি থাকে, যদিও প্রবণতাটা মূলত মিশ্রণের দিকেই ঝুঁকে রয়। নাচে যেমন একটু কত্থক একটু সালসা একটু ফোক মিশিয়ে অদ্ভু্ত আরক প্রস্তুত হয় খানিকটা সেই রকম। ধরুন নজরুল ইসলামের এই গানটা কে না শুনেছি, অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারী। সেদিন ই-স্নিপসে খয়রুল আনম শাকিলের কন্ঠে শুনে আবার একবার মুগ্ধ হলাম (নামের বানান ভুল হলে মার্জনা চাই, ইংরিজিতে পড়ে বাংলা করলাম কি না)। ডাউনলোড বা শোনার জন্য এই লিঙ্কে যেতে পারেন। এখানে কিন্তু রাগের মিশ্রণ হয় নি, ওটা মোটামুটি বিশুদ্ধ আহির ভৈরব রাগে। কী রাগ না জেনেও উপভোগে কোনো বাধা হয় না সে কথাও ঠিক, কাজেই কেউ যদি বলেন তা'লে জানার কী দরকার? সরাসরি কোনো উত্তর নেই এর, না জানলেও দিব্বি চলে। তবে জানতে শুরু করলে আগ্রহ বাড়তে থাকে, তারপর ঐ গানের খোসাটোসা ছাড়িয়ে ভিতরের রাগে ঢুকে পড়তে পারলে তো তখন কথাই নেই, তখন একেবারে পরমানন্দপ্রাপ্তি যারে কয়!
আপনি যদি হিন্দি সিনেমা মার্কা হন, তাহলেও চিন্তা নেই, একটা উদাহরণ দিতে পারি টাটকা টাটকা। তাও সলমন খানের মতো ফাজিল ছোকরা গেয়েছে সেখানে (মানে ওি লিপ দিয়েছে আর কি), কাজেই ভাবগম্ভীর গান যে হবে না সেটাও মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে। তবে সেটা একটু পরে আসছে, আগে অন্য কয়েকটা গান শুনে নিন। হীরাবাঈ বারোদেকর তাঁর অনন্য কন্ঠে গেয়েছেন, যশরাজ শেষ হলে এইটা শুনতে পারেন। এও আহির ভৈরব।
নামেই হয়তো বোঝা যায়, ভোরের রাগ। ভৈরব বা ভৈরোঁ নিজেও একটা রাগ, এ তারই একটা রূপান্তর, তবে সে ইতিহাসে যাচ্ছি না শুধু সংক্ষেপে বলি ভৈরব আর কাফি মিলে নাকি এর জন্ম (নাকি বললাম কারণ এই নিয়ে অল্প একটু বিতর্ক আছে)। আরোহী অবরোহীর কচকচিও থাক। কিন্তু এ ভৈরবের থেকে আলাদা কিসে সেইটা বোঝা যাক। এর নিচের দিকের নোটগুলোয় ভৈরবের চিহ্ন বেশি আর যতো উপরে ওঠে, কাফির মতো শোনায়। ভৈরবেও কোমল রে লাগে। ধরুন ভরদুপুর মার্কা রাগে অনেক সময়ই শুদ্ধ রে লাগে, যেটা অনেক উজ্জ্বল শোনায়। কিন্তু ভোরবেলা যখন আবছা আলো আর হয়তো অল্প কুয়াশাও আছে, তখন ঐ ব্রাইট জিনিস ঠিক খাপ খায় না, ঘুম থেকে উঠেই যদি ফটফট ইংরিজি বলতে হয় ঝকঝকে হেসে তাহলে যেরকম হয় তেমনি। আপনি যদি স্রেফ সা রে গা মা ও গাইতে জানেন তাহলে আপনি এক্ষুনি এটা ট্রাই করে দেখতে পারেন। সা রে গা মা শুধু এইটুকু একবার সব শুদ্ধগুলো লাগিয়ে গান, আর একবার কোমল রে লাগিয়ে গান, তফাৎটা সঙ্গে সঙ্গে নিজের কানে শুনতে পাবেন। প্রথমবারে সুন্দর সঁিড়ির ধাপের মতো পরিষ্কার আর পরেরটায় রে-তে এসে কেমন একটু ঢুলুনি আসবে, আন্দোলিন স্বরের মতো। যদিও রাগের চেহারাটা ফোটে পুরোটা মিলেই, কিন্তু ঐখানেই যেন জাত চিনিয়ে যায়, আমার এমনি কিছু একটা মনে হয়। আবার উপর দিকে গিয়ে কোমল নি লাগে, তাতেও বেশ একটা আমেজ আসে। সব কিছু ছবি দিয়ে বোঝানো গেলে চমৎকার হতো, কিন্তু আমি তো ঠিক ফেইনম্যান নই যে ফিজিক্স উপমা রূপক দিয়ে বোঝানোর ক্ষমতা থাবে। তবু চেষ্টা চলুক।
একেকটা রাগ রাগিণী আমার চোখে একেকটা মনুষ্যরূপ নেয়। যেমন ভৈরবী শুনলে মনে হয় এক ঈশ্বরপ্রাণা নারী, ভোরবেলা নদীতে স্নান করে ভগবানের নামগান করতে করতে ফিরছে বনপথ দিয়ে। আবার এই আহির ভৈরব শুনলে আমার মনে হয় এক সংসারবৈরাগী পুরুষ সব তুচ্ছতার ঊর্দ্ধে, যিনি ঈশ্বরকে জেনেছেন, কিন্তু সুরদাসের মতো দাস্যভাবে নয়, বিবেকানন্দের মতো তেজোদীপ্ত ভাবে তিনি ঈশ্বরকে কামনা করেন। তবে এ একান্তই আমার কল্পনা, আপনাদের মনে আহির ভৈরব শুনে কী ছবি ফুটে ওঠে সেটা জানাবেন, কৌতূহল হয় জানার জন্য।
এইখানে নিখিল ব্যানার্জির সেতার হোক একটু। তিন ভাগে আছে, সময়াভাবে একেবারে তৃতীয়ভাগটা শুনলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
ঐ নজরুলগীতিটার সুরে একটা হিন্দি গান আছে মান্না দের কন্ঠে, সেটা এখানে দিই। এটা পুরোটা শোনার খুব দরকার নেই, অরুণকান্তির সুরই একেবারে।
"বিজেতা" বলে একটা সিনেমা হয়েছিলো আশির দশকে, তাতে রেখার ইথারাল সৌন্দর্য্য আরো বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছিলো যখন তিনি তানপুরা নিয়ে এই গানটা গাইতে বসেন ভোর বেলায়। আহির ভৈরবের গান, যদিও কেমন একটু অন্য রাগের ছোঁয়া আছে পরের অংশে। গেয়েছেন আশা ভোঁসলে।
যাক রাগারাগির পালা আজকের মতো শেষ। যেতে যেতে সেই নতুনতর গানটা শুনতে থাকুন।
সঙ্গের ছবিটা ফ্লোরিডায় ফার্নান্দিনা তটে এক ভোরে তোলা। সঙ্গীদের কাউকে যখন বিছানা থেকে বার করা গেলো না তখন একা একাই ভোর দেখতে চলে গিয়েছিলাম। সুর্য একটু একটু করে ঢাকনা খুললো, সমুদ্র ভেসে গেলো আলোয়। এ তারই ছবি। আহির ভৈরব সেই ছবির আরেক রূপ।
মন্তব্য
অনেকখন ধরেই আবিষ্ট থাকলাম, অনেক কিছুই বুঝি নাই, ক্ষতি নাই। আমিও রাগ টাগ শুনি, না বুঝেই শুনি। আশা করি এতে কারোই ক্ষতিবৃদ্ধি ঘটবে না।
আপনার বর্ণণা পড়ে মনে হলো হারমোনিয়াম থাকলে ভালো হতো - practical'টা সাথে সাথে সেরে নিতাম
আপনার আঁকা ছবিগুলো পরে মেলাবো, এখন অফিসে
তবে টুকটাক যা শুনেছি, তাতে মনে হয় ঐ ছবিগুলোই ঠিক।
আরেব্বাস, লিখতে না লিখতেই মন্তব্য!
না বুঝে শুনলে তেমন কিছু ব্যাপার নেই, আসল কথা তো শোনা।
শুনতে থাকুন।
০১
আপনি ভাই এক দুর্ধষ লোক ! আপনার থলিতে আরো কী কী আছে বলে ফেলুন তো !
মুভি রিভিউ, ক্লাসিক্যাল মিউজিক,ফুলের বর্ণনা, ভ্রমন -- বাকিটা থাকলো কী !
০২
আমি একদমই "অসুর", তবে শুনতে ভালো লাগে দেখে ক্ল্যাসিকাল টুকিটাকি আমিও শুনি। আহিরাভোরণের নাম অবশ্য শুনেছিলাম অনেক আগে, আনন্দলোকের পূজা সংখ্যায় এক উপন্যাসে নায়িকার নাম ছিলো আহির। সেই নামের রহস্য ব্যাখ্যা করতে যেয়ে এই রাগের কথা এসেছিলো।
রেখার যেই গানটা দিলেন, সিনেমাটা খুঁজে পেলাম না, একই নামের ১৯৯৫ সালের একটা সিনেমা আছে, কিন্তু আশির দশকের কিছু পাচ্ছি না, এই ভিডিও ছাড়া। অডিওটা কোনভাবে সংগ্রহ করতে পারলে জানাবেন।
০৩
নামটা হবে খায়রুল আনাম শাকিল।
০৪
কোন এক বিচিত্র কারণে আপনার সব লেখাই পড়া হয় কিন্তু আলস্যে আর মন্তব্য করা হয় না। আজ বলে যাই, আপনার প্রতিটা লেখাই অসাধারণ।
এমন লেখার আশাতে কিন্তু আমি বসে থাকি...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এই সিনেমার গানগুলো শুনতে পারবেন এখানে, আর ওই গানটা যদি যোগাড় করতে পারি কোনভাবে, আপনাকে দিবনে পরে।
হা হা ...
আমি জানতাম সচলের কেউ না কেউ আমার জন্য ম্যাসিভ খোঁজাখুঁজির কাজটা করবে, তাই বেশি কষ্ট করি নাই।
এনিওয়ে ধন্যবাদ... পুরা গানগুলা দিতে পারলে আরো ধন্যবাদ দিবো...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
দেখি, আরো ধন্যবাদ পাওয়ার চেষ্টায় আছি তবে মনে হয় না পাবো
এই গানটা ই-স্নিপসে ডাউনলোডের জন্য পাওয়া গেলে আমারো চাই কিন্তু প্রহরী ভাই।
সবজান্তা, এই নেন—আশা ভোঁসলে আর সত্যশীল দেশপাণ্ডের গাওয়া 'মন আনন্দ আনন্দ ছায়ে':
পাঠক ভায়ার জন্য লিংক (ডাউনলোড অপশন দেয়া আছে)।
পুরো অ্যালবামটা কারো লাগলে আওয়াজ দিতে পারেন। আটটা ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিক আর (এইটাসহ) তিনটা গান আছে।
থাংকু রে ভাই, ডাউনলোড করে শুনছি আর প্রচুর আনন্দলাভ করছি। আহা কী গান!
আনন্দ পেয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগল।
'বিজেতা' সিনেমার সব গান যদি ডাউনলোড করতে চান, এখানে দেখুন। সাইজ: ৫৫.৮ মেগাবাইট।
এই গানগুলোই ই-স্নিপ্সে আপলোড করে দিয়েছি। এখানে পাবেন। প্রতিটা গানেই ডাউনলোড অপশন দেয়া আছে। যেটা খুশি, চাইলে, ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আবার থাংকু
ধন্যবাদ, সবজান্তা।
পারফর্মার অন্তত দু রকমের হয়, এক, যাঁরা নিজের আনন্দে শিল্পসৃষ্টি করেন, এঁদের শিল্পী বলাই ভালো। আর দু নম্বর হলো যারা "বচ্চালোগ বজাও তালি" বলে খেলা দেখায়, আর তালি কেমন বাজলো তার ওপর এদের মাদারি কা খেল কতক্ষণ চলবে তা নির্ভর করে। এই দলের সবচেয়ে ইলাস্ট্রেটিভ উদাহরণ হলো স্বঘোষিত ভাঁড় শাহরুখ খান আর সবচে' অকিঞ্চিৎকর হলাম আমি। কাজেই আপনার ঢালাও প্রশংসা শুনে প্রাণ জুড়োলো, মন্তব্য করবেন, এবং ভালো লাগার সাথে খারাপ কিছু লাগলে বা কোনো কিছুতে সাজেশনস থাকলে তাও নির্দ্বিধায় জানাবেন। সে সব কাজে লাগাতে পারবো কি না জানি না, তবে জানা তো দরকারি নিশ্চিত।
অতন্দ্র তো দেখলাম আমার তন্দ্রা ভাঙার আগেই লিঙ্ক দিয়ে দিয়েছে "বিজেতা" সিনেমাটার। ছোট্টবেলায় দূরদর্শনে দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, এখন জানি না কেমন লাগবে। তবে দেখতে পারেন, বিশেষত যদি মিলিটারি-জীবনের উপর ছবিতে আগ্রহ থাকে। এর নায়ক শশী কপুরের নিজের ছেলে, কুনাল কপুর। যদি ডাউনলোডের বদলে সরাসরি দেখতে চান তো গোটা সিনেমার ইউটিউব লিঙ্ক এখানে দিলাম, এমবেডেড করা রইল নীচে।
খায়রুল আনাম শাকিল জানানোর জন্য ধন্যবাদ। iTunes-এ ঠিক করে নিলাম।
আপনি আসলেই একটা দুর্ধষ লোক। পাঁচ তারা।
হা হা, আপনার পাঁচ তারার সম্মানের উত্তরে কী বলবো জানি না, তবে পড়ছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার মতামত জানাবেন সবসময়ই, ভালো না লাগলেও (যদিও প্রশংসা শুনতেই বেশি ভাল্লাগে )
চমতকার। অনেক কিছু শিখলাম। আরো লিখুন, এ বিষয়ে, কিস্তিতে।
"বৈষ্ণব জন তো" গানটা শুনতে শুনতে আগের বার লিখেছিলাম, তারপর সেটাকে এবার কিস্তি বানানোর ইচ্ছা হলো। আপনাদের ভালো লাগছে যখন তো নিশ্চয়ই চলতে থাকবে। অনেক ধন্যবাদ।
অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারী... গানটা আমি সেই ছাত্রকাল থেকেই সবচে মজা পেয়েছি অজয় চক্রবর্তী'র কণ্ঠে। পরবর্তীতে খায়রুল আনাম শাকিলের কণ্ঠেও শুনেছি। কিন্তু প্রথম প্রেমের মতো অজয়'ই লেগে আছে বুকে।
এককালে গানটাকে কণ্ঠেও তুলে নিয়েছিলাম। কাউকে শোনাতে নয়, অনির্বচনীয় আনন্দ পেতাম। কোমল 'রে'র পাতলা রশ্মির মতো চাকুটা বুকটা ফালা ফালা করে ফেলতো। মান্নার হিন্দি নজরুল গীতিটাও খুব আকর্ষণ করতো। এখনো করে।
মজার ব্যাপার হলো, তারও আগে সংগীতের বারোটা বাজানোর জন্য যখন সত্যি সত্যি গান শিখার তালিম নেবো বলে ঠিক করলাম, শুরুতেই ভাঁয়রো রাগটাই মনে ধরে গেলো। শেষপর্যন্ত গান আর শেখা হলো না। কিন্তু ভায়রোর ঠাটটা এখনো মুখস্ত আমার !
আরেকটা রাগ আমার বড়োই প্রিয়- ইমন কল্যান। গজলের ভক্ত হিসেবে এই রাগের ছোঁয়া কোথাও পেলে আর কথা নেই !
সে এক বিরাট ইতিহাস ! রামও নেই, অযোধ্যাও নেই। আমার অসাধ্য রামায়ণটাই রয়ে গেছে !
ধন্যবাদ রাজর্ষি দা'।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আরে দাদা, আমাদের জীবনগুলো সবই এইসব অপূর্ণ সাধের গল্প, সত্যি বলতে কী এদের জন্যই জীবন এতো রঙের। হায় রে আমার গীটার শেখা, কতো বার যে শুরু করেও আর এগোনো হলো না। আমার এক বন্ধু কলিন তার বাড়ি থেকে গীটারটা দিয়ে গেলো অবধি, কিন্তু শিক্ষক পেলাম না আর নিজের উদ্যমে শেখার মতো উৎসাহ নেই বলেই হয়তো সে এখনো বাক্সে বসে ঝিমোয় দেয়ালে হেলান দিয়ে।
আমার নিজের অবজারভেশন হলো, ক্লাসিক্যাল গানের শিল্পীদের কন্ঠে নজরুলগীতি চমৎকার খোলে। কাজেই অজয় চক্রবর্তী যে জমিয়ে দেবেন সে আর আশ্চর্য কি। এঁরা সবাই যে রবীন্দ্রসঙ্গীতে তেমন ভালো করেন তা কিন্তু না, ওঁর রবীন্দ্রসঙ্গীত কিন্তু সেইরকম রসোত্তীর্ণ লাগে নি অন্তত আমার কানে। মান্না দে'র বাংলা গজল-টাইপ আধুনিক শুনে পাগল হয়ে যাই কিন্তু একবার একটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম কিনে অবাক হয়ে দেখলাম গানগুলো আদৌ ভালো গান নি। এ রহস্যের কী ব্যাখ্যা কে জানে!
আপনার ভালো লাগছে জেনে আনন্দ পেলাম।
এখানে কারো বয়স তো জানি না, কাউকে দাদা বলি না সেই ভেবেই। আশা করি মনে কিছু করেন না। আপনি বলেছেন দেখলাম, সেই জন্যই জানিয়ে রাখলাম এই ফাঁকে।
গীটার !!! হা হা হা !
সেটা ৮৪ সালের ঘটনা। আমি অনার্সের ছাত্র তখন। যেদিন থেকে গীটার শেখার শুভসূচনা করতে বন্ধুর গীটারটা জোগার করেছি কেবল, সেদিনই অনাকাঙ্ক্ষিত এক অ্যাকসিডেণ্টে বাঁ হাত ভেঙে গলায় ঝুলে গেছে ! হা হা হা ! সেদিনের ইচ্ছেটা যে অবস্থায় ছিলো, হিমায়িত হয়ে ঠিক সেরকম রয়ে গেছে। একটুও নষ্ট হয় নি। আশা করি আগামীতেও বিন্দুমাত্র নষ্ট হতে দেবো না, যেরকম আছে ঠিক সেরকমই থাকবে ! হা হা হা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হিমায়িত ইচ্ছার কথায় খুব মজা পেলাম। কেমন ছবির মতো দেখতে পেলাম, পেটের ভেতর কোল্ডস্টোরেজে থরে থরে হিমায়িত ইচ্ছা বস্তায় ভরে রাখা।
আপনি মশাই সত্যিই এক দুর্দান্ত লোক। কী আর বলবো...
ফাটাফাটি পোস্ট। খুব ভালো লাগল। 'আলবেলা সাজন আয়ো-রে' আগেই শুনেছিলাম। কবিতা কৃষ্ণমূর্তির কণ্ঠে দারুণ লেগেছিল।
আমি দাদা রাগ-টাগ বুঝি না। শুধু শুনি মাঝে মাঝে, এই তো। আমার ভাণ্ডারে বেশ কিছু রাগ আছে। সুযোগ পেয়ে তার একটা দিলাম। শিব কুমার শর্মার মিশরা (নাকি মিশ্র?) পিলু। শুনেছেন নিশ্চয়ই আগেই।
সবশেষে বলি ফটোটার কথা। এটা এখন ডেস্কটপ ওয়ালপেপার বানিয়েছি। বুঝতেই পারছেন কতোটা ভালো লেগেছে। আপনার সঙ্গীদের বোকামিতে রীতিমতো রাগ লাগছে। এমন অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করার বদলে কেউ বিছানায় শুয়ে সময় কাটায়?
ভুলে গিয়েছিলাম, ভালো আপনি ধরিয়ে দিলেন। এই নিন অরুণকান্তি'র লিঙ্ক। ঐ ফোল্ডারে আরো অনেকগুলো গান আছে, ডাউনলোডেবল।
লেখা আর ছবি আপনার এতো ভালো লেগেছে জেনে খুন আনন্দ পেলাম। লেখা সার্থক। মিশ্র পিলু সুন্দর রাগ (অসুন্দর কোনোটা আছে নাকি! ), তবে আমার জন্য ডাউনলোড করার লিঙ্কটা লাগবে, সরাসরি চালাতে পারি না এমবেডেড হলে। আছে নাকি?
বেড়ানোর সংজ্ঞা একেকজনের একেক রকম। যারা চিল-আউট করতে বেড়াতে যায় তাদের জন্য ঘুমটা ভয়ানক জরুরী বোধ হয়। আমি ঘুম জমিয়ে রাখি, যা পারি দেখে নিই, বাড়ি ফিরে না হয় দু দিনে ঘুমের ঘাটতি মেটানো যাবে। ঐ ভোরটা সত্যি স্পেশাল ছিলো, আগের পর্বে যে ছবিটা দিয়েছিলাম সেটা এই ছবির আগের ধাপ।
এই নিন মিশ্র পিলুর লিংক, ডাউনলোড অপশন দেয়া আছে।
থাংকু প্রহরীভাই। দুটো লিঙ্কই খুব উপকারী।
ধন্যবাদ কাউকে দিতে হলে আপনাকে দেয়া উচিত। সত্যিই বলছি। আপনার কারণেই না এতো দারুণ দারুণ সব জিনিসের খোঁজ পেলাম।
আরে দাঁড়ান মশাই, আরো কতো কী আছে শোনার শোনানোর, এক্ষুণি ধন্যবাদ দিলে হবে নাকি! আগে সব শুনে পেট-টেট ভরিয়ে নিন।
পাঠক দাদা---এখন থেকে আপনার আসল নামে অর্থাৎ, রাজর্ষি দা নামেই ডাকব। আপনার লেখার গুনমুগ্ধ পাঠক আমি। এই সচলায়তনে শুধু মাত্র আপনাকে দেখছি ভারতীয় মার্গীয় সঙ্গীত নিয়ে লিখতে। তারচেয়ে বড় কথা, যে রকম প্রাঞ্জল আপনার বর্ণনা--সেটা পড়ে একেবারে 'প্রাণ জল' হয়ে যায়---
আপনার আহির-ভৈরব আর ভৈরবীর বর্ণনাটা আমার কাছে অসাধারন লাগল।
আপনার কাছে আমার একটা দাবী রইল--ছোট ভাই হিসেবে---এই রকম ক্ল্যাসিকাল কিছু লেখা ছাড়ুন নিয়মিত বিরতিতে।
লেখার জন্যে বিশ লক্ষ তারা----
হা হা, প্রাণ জল হয়ে গেলো একেবারে?
আসলে মার্গসঙ্গীত আমি জানি খুব অল্প, বিনয় করছি না, সত্যি কথা। কিন্তু তার একটা সুবিধা আছে। আমি বেশি কঠিন করে লেখা হলে পড়ে কিছু বুঝতে পারি না, পন্ডিতেরা কী যে সব লেখেন বাদী বিবাদী সম্বাদী প্রতিবাদী, মাথা বনবন করে ঘোরে। আমি তাই আমার লেভেলের মতো করে লিখি। তবে একটা ব্যতিক্রম হলো কুমারপ্রসাদের লেখা। উনি লিখলে সব কেমন বুঝতে পারি, মানে অনেকটাই বোঝা যায়। তবে সে হল এক গোটা জীবন উমদা মশলার আরকে জারানোর ফল, আমরা গাছ থেকে পড়েই সে সব আশা করি না। সহজ যদি লেগে থাকে তার আর একটা কারণ আমার মাস্টারমশাইও। ভদ্রলোক গান ধরলে বিশ সেকেন্ডে কাঁদিয়ে দেবেন এমন গানের গলা, অথচ কেউ চেনে না তাঁকে। হয়তো সেজন্যই অর্বাচীনেরও ওঁকে গুরু হিসেবে পায়, বিখ্যাত লোকেরা তো আর হেজিপেচি ছাত্র নেন না। আর ওঁর গানের বোধ অসাধারণ, তার এক শতাংশ পেলেও পান্ডিত্য এসে যাবে।
যাক, আপনাকে বিশ লক্ষ ধন্যবাদ, অনিকেতভাই।
এই তাইলে গঠনা? তাইলে অডিও ছাড়েন এইবার...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ওনার গান কিছু রেকর্ডেড আছে দেশে, সঙ্গে তো নেই। তাছাড়া ওনার গান রেকর্ড করার অনেক বাঙ্খাম, গানকে বড়ো বেশি সায়েন্টেফিক্যালি ডিল করার ফল। আমার নাগালে তো আর স্টুডিও ছিলো না।
আর যদি আমার অডিওর কথা বলেন তো এইবার বেগুনি না, এক্কেরে মিশকালো হয়ে শূন্যে মিলিয়ে যাবো। আমার গান আমি নিজেই শুনতে পারি না, বাথরুমে অবধি গাই না সেই ভয়ে। আপনাদের শোনাই, পাগল!
আপনি পাগল, সেই বিষয়ে অন্তত আমার সন্দেহ নাই। তো পাগলামীটা করে ফেলেন।
শোনেন, আমি বহুত বছর আগের একটা পত্রিকার সঙ্গীত পাতার সম্পাদক ছিলাম। তাই দেখিয়া লোকে ভাবিত আমি বুঝি গাইতে টাইতে পারি। সুধীজনের জলসায় মাঝে মাঝে বিব্রত হইতে হইতো এই কারণে। তো একবার সম্পাদকীয়তে লেখছিলাম খুব দুক্ষ কইরা যে, আল্লাহর অশেষ রহমতে পৃথিবীর সবচেয়ে বেসুরো কণ্ঠটার গর্বিত মালিক আমি। এই বিষয়ে আমার কোনো প্রতিদ্বন্দী নাই। কিন্তু তথাপিও আমি কখনোই গান গাইতে লজ্জা পাই না। এবং আমি কখনো বাথরুমেও গাই না। জনসম্মখে গাই। লোকে বিরক্ত হয় সেইটা তার ঝামেলা, আমার কী? গান আমার প্রাণের জিনিস, গলায় আসে না, তো আমি কী করুম?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সচলে কিছু দুরন্ত সাহসী লোকজন আছে ঠিকই, আর আপনে তাদের একজন পান্ডা। কিন্তু স্যার আমি হলাম নিরীহ ভিতু গোবেচারা মানুষ, আমার কি আর ঐ রকম সাহস? গান গাইতে বললে হাঁটু ঠোকাঠুকি হয় যে!
তবে আপনার কথা মাথায় রইল, সত্যি যদি দেওয়ার মতো কিছু নামাতে পারি তো পোস্টাবো। অবশ্য তার আগে কিছু টেকনিক্যাল বাধাবন্ধ (রেকর্ডিং সংক্রান্ত) দূর করতে হবে।
খুব শিগগিরই পাঠক ভায়ার গান শুনতে চাই। এক দফা, এক দাবী, মানতে হবে, মানতে হবে
সামনা সামনি দেখা হলে শোনাতে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু এইখানে আপলোড করার যা সব ঝক্কি সে সব বোধ হয় আমার দ্বারা হওয়া মুশকিল। তাছাড়া মাঠেঘাটে ভ্রমণ পথে যা হোক গাইলেই হয় খালি গলায়, এখানে যন্ত্রপাতি ছাড়া সে গান কি আর সুধীজনের সহ্য হবে? তবে চেষ্টা করবো, যদি মার্জিনালিও পাতে দেবার যোগ্য হয় তো আপলোড করে দেবো।
আপনার উৎসাহের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সামনাসামনি তো শুনতে চাই-ই রে ভাই, কিন্তু আপনিই তো টিকিটটা পাঠাচ্ছেন না!
দরকার হলে খালি গলাতেই কিছু রেকর্ড করে আপলোড করে দেন। আপনার তো সাধা-গলা, বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গাইলেও চমৎকার গাইবেন বলে বিশ্বাস করি।
'মুশকিল' শব্দটা আর উচ্চারণ কইরেন না। আপনাকে এতদিনে যা-ই একটু চিনলাম, তাতে করে মনে হলো, এই শব্দটা আপনার সাথে একদমই যায় না।
তাইলে তো প্রায় নেপোলিয়ন হয়্যা গেলাম
সকল 'অসম্ভব'ই 'মুশকিল', কিন্তু সকল 'মুশকিল' 'অসম্ভব' নয়
ইদানীং সচলে লেখার সাহসই পাই না। ভাগ্যিস এতোদিন আপনেরা ছিলেন না, নাইলে তো আমার সচল হওয়াই হইতো না।
ঘোষণা দিয়া আপনের ফ্যান হইলাম।
এইটা সিরিজ করেন বস... কঠিন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইভাবে কাউরে লজ্জা দিতে আছে? আবার বেগুনিবর্ণ হইলাম।
আরো লিখুম, নিশ্চয়ই।
পোস্টটার জন্য রীতিমত ধন্যবাদ দেয়ার ইচ্ছে হচ্ছে!
তা দিয়ে ফেললেই হয়, মাইন্ড করবো না প্রমিস।
বুঝলাম কম ('কম' মনে হয় আন্ডারস্টেটমেন্ট হয়ে গেল ), জানলাম অনেক! কত কিছুই যে এখনো অজানা, অচেনা। দুঃখও হয়, আবার আনন্দও হয় (কি বিশাল, বৈচিত্র্যময় পৃথিবী, কয়েক লাইফটাইমেও ফুরাবে না, এতে আনন্দ)।
দেখি, সামনে হয়তো কিছু ট্রাই মারবো এ ধরনের গান। লেখতে থাকেন মনের সুখে, রাজর্ষিদা!
এই ব্যাপারটাই আমার মাথায় ঢোকে না, গানের মধ্যে প্রথমেই বোঝার কথা আসে কেন। ডালহৌসি পাহাড়ে সূর্যোদয় দেখে তো মনে হয় না যে পুরোটা বুঝলাম না, তাহলে গান শুনেই বা কেন আমরা সেটা বলবো? আগে তো ভালো লাগার প্রশ্ন, সেটা যদি এইরকম কালজয়ী জিনিসে না হয় তাহলে ভাবতে হবে কোথায় গন্ডগোল হচ্ছে। আমাদের সুরের কান অনেকসময় অ-সুর শুনতে শুনতে খারাপ হয়ে যায়, তখন ভালো জিনিসের স্বাদও পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি মার্গসঙ্গীত ভালো লাগে তাহলে অর্ধেক কাজ সারা হয়ে গেছে। এবার শুনতে থাকুন, বোঝার ব্যাপারটা খানিকটা আপনা থেকেই হবে। অজানাকে জানার ইচ্ছাটা যখন আপনার আছে, এবং এতো কিছু শোনার দেখার জানার আছে জেনে যে আনন্দ পাচ্ছেন, এটা খুব চমৎকার ব্যাপার। জীবন এতো সুস্বাদু আর লোভনীয়, আমরা যে কী করে বিষণ্ণ হয়ে সেই আনন্দের খোঁজ ভুলে সময় নষ্ট করি সেটা ভাবলেই অবাক লাগে।
লিখবো তো নিশ্চয়ই, এতো জনে পড়ছেন, লিখে এতো আনন্দ পাচ্ছি বলে বোঝানো যাবে না। পড়ছেন, মতামত জানাচ্ছেন, এতে লেখার উৎসাহ আরো বেড়ে যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ।
খুব ভাল লাগল আপনার লেখা। নিখিল বাবুর বাজনাটা আয়েস করে শোনার জন্য রেখে দিলাম। আহা নিখিল বাবুর বাজনা! লোকটা এত তাড়াহুড়ো করে চলে গেলেন!
পরের কিস্তি পূরবী রাগ নিয়ে লেখার অনুরোধ রইল। পূরব দেশের পূর নারী বলে মেয়ের নাম রেখেছি পূরবী, কিন্তু রাগটা সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না।
যদি হাতের নাগালে থাকে তা হলো নিখিল বাবুর হাতে একটু পূরবী শোনাবেন।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
নিখিল বাবুর বাজনাটা আয়েস করে শোনার জন্য রেখে দিলাম।
এমন কথা শুনলে দিল খুশ হয়ে যায়! ছোটোবেলা যেমন জলখাবার খেয়ে সন্দেশটা থালা থেকে তুলে মুঠোয় রেখে দিতাম একটু একটু করে খাবো গল্পের বই পড়তে পড়তে, সেইরকম। আজকাল তো লোকে ভালো জিনিস শুনতে চায় না, সেখানে এমন ভালোবেসে তুলে রাখছেন দেখে যে কী ভালো লাগে!
পূরবীর কথা নিশ্চয়ই লিখবো। প্রহরীভাইয়ের ই-স্নিপসে খুব যাতায়াত, তিনিই হয়তো খুঁজে পেয়ে যাবেন নিখিলবাবুর পূরবী। আমিও খুঁজে দেখবো।
সবই সুন্দর। বড়ই সুন্দর। আপনার লেখার গুণেই বোধকরি আরো সুন্দর লাগলো। ধন্যবাদ।
হা হা, লেখার গুণ লাগে না, গানের গুণেই সুন্দর লাগে। ধন্যবাদ।
রাগ সঙ্গীত ব্যাপারে ধারণা নেই কোন। তবে গান শুনেছি অনেক এই যেমন অরুণকান্তি গানটা আমার ভীষণ প্রিয়। আলবেলা গানটাও খারাপ লাগে না। যাক আপনার পোস্ট পড়ে কিছু ধারণা হল। সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর রাগ বিষয়ক আরো পোস্ট আশা করছি পাঠক'দা।
ছবিটাও অসাধারণ হয়েছে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অনেক থাংকু কীর্তিনাশা ভাই।
জ্জীও পাগলা!
পুরো ঘ্যামচ্যাক হয়েছে ৷
পুণেতে শীতকালে ৪ দিনব্যপী "সওয়াই গন্ধর্ভ্ উত্সব' হয়৷ সে এক অভিজ্ঞতা বটে৷
------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
হা হা, ধ্রুপদী সঙ্গীত নিয়ে আপনার উদ্দীপনা দেখে প্রভূত আহ্লাদ হলো। কলকাতায় থাকতে কোনো কালে ডোভার লেনে যাইনি, ভাবলে লজ্জা হয়। যাক, কতো কিছুই তো না দেখা রয়ে গেলো।
এখন কিছু বলবনা, সবগুলো গান শুনে তার পর বলব। এখন শুধু একটা কথা বলি আপনার নিজের গুণগুলোর প্রতি আপনি মোটেও সুবিচার করেন না...ধুরো দাদা!
শোনেন শোনেন, শোনার জন্যই তো পোস্টাইলাম।
এখন নিজেকে কেমন গুণের তালগাছ মতো লাগছে, তা সুবিচার আবার কেমনে করে? এই তো লোক ডেকে ঢাক পিটিয়ে নিজের গুণগান করছি দৈনিক, সুবিচারের কিছু বাকি আছে নাকি?
মিয়া, আর কী কী লুকিয়ে রাখছেন? সব ছাড়েন!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আরে কি যে কন! সবুর করেন, বদহজম হইয়া যাইবো নাইলে।
"আলবেলা সাজান" গানটিকে একটু ভিন্ন সুরে গেয়েছিল আমানাত আলী "সারেগামা" প্রতিযোগীতায়। লিংকটি নীচে দিলাম।
http://www.youtube.com/watch?v=DBc1h8WOrRw&feature=related
হ্যাঁ এটা দেখেছিলাম, তবে একে তো লেখাটায় অনেকগুলো গান দেওয়া হয়েছে, তার উপর এখানে ভ্যারিয়েশন যা করেছে (করেছে খুবই ভালো), সবই গানটিকে আহির ভৈরবের থেকে আরো দূরে নিয়ে গেছে। তবে শুনতে ভালোই লাগে, পাঠকদের তরফে ধন্যবাদ জানবেন এটা শেয়ার করার জন্য।
রাগ বিরাগ তেমন বুঝিনা
লেখাও খুব মন দিয়ে পড়িনি
গানগুলো ভালো লাগলো খুব
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
তাহলেই আসল কাজ হয়েছে, গানের জন্যই এতো কথা।
সচলত্ব প্রাপ্তিতে অভিনন্দন!
পূর্ণ সচলত্ব প্রাপ্তির জন্য অভিনন্দন রইলো, পাঠক ভায়া
অনেক ধন্যবাদ, প্রহরী ভাই।
রাগে আমার জ্ঞান নাই, তবে অনুরাগ আছে।
আজকাল নেট-এ তো সবই পাওয়া যায়, তবু টান থাকা সত্ত্বেও এই ব্যস্ত ভেস্ত জীবনে খুব যে দেখাশোনা হয় সব পছন্দের বিষয় বের করে, তা তো নয়।
কী অদ্ভুত করে আপনি এইসব তুলে নিয়ে আসেন!
কী ভয়াবহ উজ্জ্বল আর চাক্ষুস!
আমিও বাই চয়েস ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়েও একটু ইন্টারঅ্যাকটিভ লিখি সাধারণত।
আমাদের সাথের পান্থ'র স্টাইলেও এটা প্রকট- হয়তো খেয়াল করে থাকতে পারেন।
আমরা বিজ্ঞাপনী মানুষ, পাবলিকের সাথেই কথা বলতে হয় সারাসময়, সেজন্যেই আমাদের ওই দুর্বলতা/প্রবণতা বেশি কি না কে জানে!
হ্যাঁ, ব্লগিং ব্যাপারটাও এমনিতেই অনেকই ইন্টারঅ্যাকটিভ।
তবে, যেই কথাটা বলার জন্য এই প্রসঙ্গটা পেড়ে আনলাম, সেটা হ'লো- আপনার লেখা এবং আপনি এজাতীয় এলাকায় আমার দেখা লেখকদের মধ্যে সবচে' বেশি ইন্টারঅ্যাকটিভ! মারাত্নকভাবে ইনভল্ভ করেন আপনি, বিপজ্জনকভাবে।
আর, আপনার ভার্সেটাইলিটি নিয়েও কতোজনই তো বিস্ময় আর মুগ্ধতা দাখিল করছেই শুরু থেকে, নতুন কী আর যোগ করবো!
সবচে' বড় সত্যি কথা- একজন মানুষের ব্যাপারে সবসময় এত ভালো ভালো বলতে বোরড লাগে বেশ।
"অতো ভালো ভালো না"টা যতোই মজাদার শোনাক, এটা কিন্তু মানুষ নামক প্রাণীটির মধ্যে ওনলি ন্যাচারাল।
আপনি আসোলে একটা যাচ্ছেতাই বলা চলে।
দাঁড়ান, এখন থেকে আপনার ছিদ্রাবলী অন্বেষণ করতে হবে খুব করে।
ভূমিকা বহুত হৈছে, এইবার আসোল (অন-টপিক) কথায় ফিইরা আসি।
আহির-ভৈরব-এ আমার এর আগে যতোটুকু এক্সপোজার হয়েছিল, তাতেই অনেক প্রেমেই ছিলাম আমি এটার।
এখন আপনি যেভাবে খুবচেনা ভালো পুরোনো গৃহশিক্ষকের মতোন এত জায়গা থেকে এত রসদ এনে আপনভাবে বলেন জানান ভাগাভাগি করেন, সেটা অনেক স্পেলবাইন্ডিংই হয় রীতিদস্তুর।
দেরি হৈলো ফলো করতে।
আমার বস ইদানিং সারাদিন পাশে বইস্যা পিসি-তে গিটার লেসন দ্যাখেশোনে নেট থেকে বের করে, তাই দিনে এই রাগারাগিগুলা শোনার অনুকুল পরিবেশ ছিল না।
আর, কাজের চাপও যাচ্ছে সেইরকম।
যাক, তাও যে পড়া-শোনা হলো দেরিতে হলেও, সেটা ভালোই হলো।
সবটা ফলো করেই পড়েছি অক্ষরে অক্ষরে।
নিখিলজি'রও আলাপ-সালাপ-সহ সবই শুনলাম, মহাভারতের অশুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা না করেই, বরং নিজ স্বার্থপরতায়।
সবই সিম্পলি ডেভাস্টেটিং আর ট্রিমেন্ডাস লাগলো!
'অরুণকান্তি' আর 'পুঁছোনা ক্যায়সে' কিন্তু আলাদা আলাদাভাবে শুনেছিলাম আগে, বেশ কিছুবার, কিন্তু বেশ অসংশ্লিষ্টভাবে, আশ্চর্য- এটা কখনও মাথায় আসেনি আগে যে এই দু'টোর এক সুর! এখন পড়তে পড়তে অরুণকান্তি'র কথা পড়ে নিচে এসে পুঁছোনা'র কথা লেখা দেখতেই খ্যাঁচ করে মাথায় এলো ব্যাপারটা।
আচ্ছা, আমি তো শুনি, কিন্তু বুঝি না, সিস্টেম্যাটিক স্টাডি তো নাই-ই।
"মেঘের পরে মেঘ জমেছে" কি আহির-ভৈরব রাগের? না কি আমি ভুল জেনে ছিলাম?
ইনফর্মেটিভ এবং বেনাভোলেন্ট পোস্ট-এর জন্য থ্যাংকস-ও কি দিতে হবে এত বাকওয়াসের পরেও?
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
বাঃ বেশ লম্বা চিঠি, খাসা! একে একে উত্তর দিই।
ইন্টারঅ্যাকটিভ আগে আমি বিশেষ ছিলাম না, কিন্তু যখন লক্ষ্য করে দেখলাম আমরা সেই সব ক্লাসে মনোযোগ দিয়ে শুনি যেখানে আমরাও আলোচনায় অংশ নিই, তখন থেকেই এই ব্যাপারটা আমার দরকারি মনে হয়েছে। একবার একটা ইন্টারঅ্যাক্টিভ থিয়েটার দেখে খুব ভালো লেগেছিলো, Complete Works of William Shakespeare বলে। ওরা ভারতেও এসেছিলো পরে, বাংলাদেশে এলে দেখতে পারেন, হাসতে হাসতে খুন হয়ে যাবেন এতো মজার! তাছাড়া আমার একসময় কপিরাইটার হওয়ার বাসনাও হয়েছিলো, ক্লারিয়ন বলে যে অ্যাড এজেন্সি তাদের ইন্টারভিউতে ভাগিয়ে দিলো কারণ আমার অন্য বিষয়ে ততোদিনে মাস্টার্স করা হয়ে গেছে শুনে। কাজেই ইন্টারঅ্যাকটিভ হওয়ার লোভ আমার প্রবল হবে সেইটা অস্বাভাবিক নয়।
আপনার যে গান নিয়ে লেখা ভালো লাগছে এতে খুব আনন্দ পাচ্ছি, লেখার উৎসাহও। ছিদ্রাণ্বেষী হোন না, ভালোই হয় তাহলে। ধন্যবাদ দেয়ার দরকার নেই, মতামত কিন্তু জানাতে হবে। আর আপনার বস তো বস লোক, অফিসে বসেই গীটার শিক্ষা!
আহির ভৈরবে কোনো রবীন্দ্রসঙ্গীত মনে আসছে না, আছে নিশ্চয়ই, কম গান তো বাঁধে নি বুড়ো।
'মেঘের পরে মেঘ'টা আপনার চিঠি পড়ার পর আবার শুনলাম, খুব মনে হচ্ছিলো দরবারি-তে গাওয়া। যদিও প্রথম লাইনের সুরটা অরুণকান্তির সাথে কিছুটা মেলে ঠিকই। কিন্তু দরবারির আন্দোলিত চরিত্রটা বেশ প্রমিনেন্ট। ঐ নজরুলগীতিটার সাথে কানে খুব মিল পাচ্ছিলাম, 'ওর নিশীথ সমাধি ভাঙিও না'।
তখন সার্চ করে জানলাম এটা নাকি মিশ্র সাহানায়। আমি এই রাগটা চিনি না, কাজেই এবার সাহানা নিয়ে খুঁজলাম। জানলাম এটা কর্ণাটিক ক্লাসিকালে খুব জনপ্রিয়, কিন্তু শুনে তার সাথে এই গানটার কোনো মিল পেলাম না। আরো খোঁজাখঁুজি, এবং তখন জানলাম হিন্দুস্তানীতে সাহানা নাকি একদম আলাদা, কর্ণাটিকেরটার সাথে কোনো মিল নেই। রবীন্দ্রনাথ অধিকাংশ হিন্দুস্তানীই ফলো করতেন, কাজেই এবার সেই অন্য সাহানার খোঁজ করলাম। জানা গেলো, এইটা নাকি কাফি ঠাটের, মধ্যরাতের রাগ, এবং তিনটি রাগের মিলনে এর সৃষ্টি, দরবারি, আড়ানা ও মল্লার। আমি আড়ানা চিনি না, মল্লারকে এবার দেখতে পেলাম কিছুটা আর দরবারির উপস্থিতিটা কনফার্মড হলো। জ্যামিতির উপপাদ্যের এক্সট্রাগুলো সমাধান করে যে আরাম পেতাম সেইটে আরেকবার পেলাম।
উরেব্বাস!
এ তো আরোোোোো লম্বাাাাাাাাা চিঠি!
না, অস্বাভাবিক বলে ঠাহর করিনি আপনার ইন্টারঅ্যাকটিভিটি, জাস্ট এরকম দেখলে মজা লাগে আর কি!
হ্যাঁ, আপনি বেশ কপিরাইটার-সুলভ আছেন কিন্তু। হতেও চেয়েছিলেন সেটা! শুনে বেশ মজা পেলাম। আসেন, একবার হাত মেলান।
মেঘের পরে মেঘ নিয়ে জিজ্ঞাসার পরে এই যে এত খোঁজাখুঁজি করলেন এবং অনুপুঙ্খ জানিয়েও গ্যালেন, সেইটার জন্য কিছু একস্ট্রা থ্যাংকস দিই?
আমার ধারণক্ষমতার চেয়ে এবার অবশ্য বেশ বেশিই হয়ে গ্যালো বস!
আমি তো পুরাই অশিক্ষিত শ্রোতা!
ভালো থাকেন।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
চলেন হাত মিলাই।
আরে খোঁজ করে তো লাভ হলো আমারই, না খুঁজে ছেড়ে দিলে কি জানতে পারতাম? ধন্যবাদের ব্যাপারই নাই। আরো প্রশ্ন মাথায় এলে জানাবেন, খুঁজে দেখা যাবে। বিপুলা এ পৃথিবী ইত্যাদি ইত্যাদি।
সেই।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন