"সিন সিটি" সিনেমাটা নিয়ে আমার উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। ফ্রাঙ্ক মিলারের একই নামের গ্রাফিক নভেল সিরিজের ভিত্তিতে তৈরি এই ছবির প্রতি আমার প্রেম মুখ্যত এর ভিস্যুয়াল ট্রিটমেন্টের কারণেই। গল্প কিছু যুগান্তকারী নয়, তবে যেহেতু অনেকগুলো বই থেকে নিয়ে বানানো এই ছবি, কাহিনীসূত্রের মধ্যে কিছুটা জটিলতা রয়েছে, ঘটনাগুলোর কালের ক্রমটাও ছবিতে আগেপরে করে দেওয়া আছে। এতে করে গল্পটা বেশ ইন্টারেস্টিং হয়ে ওঠে, খানিকটা পাজল-সমাধানের মতো। ছবি শুরু হয় একটা স্নিপেট বা ছোট্টো গল্পাংশ দিয়ে। কোথাও পড়েছিলাম, পরিচালক রডরিগেজ ও তাঁর বন্ধু তারান্তিনো (যিনি এ ছবির অতিথি পরিচালক, কী জিনিস সেটা খোদায় মালুম!) অনাগ্রহী লেখক মিলারকে রাজি করানোর জন্য এই অংশটা বানিয়ে দেখিয়েছিলেন। কিছুই আশ্চর্য নয় যে এর পর মিলার ভয়ানক উৎসাহ পেয়ে যান এই প্রজেক্টে, যদিও আগে তিনি ঘোর সন্দিহান ছিলেন এই নভেল-সিরিজের চলচ্চিত্রায়ণ আদৌ সম্ভব কি না সে বিষয়ে।
যাক, যাঁরা দেখেন নি সিনেমাটা তাঁদের জন্য সিনেমা থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে অনেক সময় খরচ করে এই স্নিপেট অংশটার একটা কমিক্স রূপ বানিয়ে ফেললাম (একে গোয়িং ব্যাক টু দ্য রুটস বলা যায় না?)। হাতেনাতে লাভ কিছু হয় নি তা বলবো না, কমিক লাইফ বলে সফটওয়্যারটার সম্পর্কে জ্ঞানার্জন হয়ে গেলো এই সুবাদে। শিগগিরই ভুতুম পোস্ট দেবেন এই কমিক্স সিরিজ নিয়ে, আমার আশা আছে অনিকেত সিনেমাটা নিয়ে বিশদে লিখবেন যদি সাইফ তাঁকে রাজি করাতে পারেন (আর যদি সুজন চৌধুরিকেও পাওয়া যায়, আহা!)। সিন সিটির দ্বিতীয় ভাগ তৈরি হচ্ছে পড়লাম, এবং তৃতীয় ভাগও বানানোর ইচ্ছে আছে নির্মাতাদের। তার আগে প্রথম ভাগটা যদি এই সব লেখাটেখার দৌলতে সুজন চৌধুরির ভাষায় চাবাইয়া খাওয়া যায় তো খাসা হয়।
এই ছোটো কাহিনীটার ব্যাখ্যা মিলার দিয়েছেন এক সাক্ষাৎকারে। ছবির নামহীন এই মেয়েটির এক মবস্টারের সাথে সম্পর্ক ছিলো যেখান থেকে মুক্তি চাইছিলো সে। তার হিংস্র প্রেমিক জানিয়েছিলো, সে রকম কিছু ঘটলে সে নিজে হাতে তাকে নৃশংসতম কোনো পদ্ধতিতে হত্যা করবে। তাই আত্মহত্যার উদ্দেশেই সে এই আততায়ীকে ভাড়া করে যাকে লোকে ডাকে সেলসম্যান বলে। ছবিতে এই গল্পের কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া নেই। ছবির একেবারে শেষে সেলসম্যানের আরেকবার দর্শন মেলে, আরেকটি খুনের ঘটনায়।
ইউটিউবে ছবির এই অংশটা দেখতে হলে এখানে যান।
ছবিগুলো এর ছোটো সাইজে দিলে পাঠযোগ্য থাকছে না, কিন্তু এই মাপে দিলে পাতা ঘঁেটে যাচ্ছে কি না জানতে চাই (আমার আপেলে ঠিক থাকলেও অনেক সময়ই সেটা ঘটে জানালাযন্ত্রে)। পাঠকেরা কেউ কি একটু জানাবেন মন্তব্যে?
মন্তব্য
সিনসিটি দেখে মজা পাই নাই।
তয়, আপনার কমিক স্ট্রীপটা জোস হইছে।
ফরম্যাট ঠিক আছে।
থ্যাংক য়ু আলাভোলা। এইটা বানাতে যথেষ্ট খাটনি গেছে, এর চেয়ে অনেক সোজা একটা রিভিউ কি কবিতা লিখে ফেলা যায়। ভাল্লাগছে জেনে ভাল্লাগছে।
সিন সিটি ফাটাফাটি। ফ্রাঙ্ক মিলার ও ফাটাফাটি। তার ৩০০ তো আরো বস।
আর আপনি যে পরিমান যত্ন করে একেকটা পোস্ট লেখেন, দেখে অবাক হই!!
লাইটার মুখের কাছে আনার সাথে সাথে চোখের রঙ সবুজ হয়ে যায়! এই ইফেক্ট টা দেখেই বাকি মুভি যাকে বলে এক দমে দেখে ফেলেছি।
(আর চুপি চুপি বলে রাখি। মুভির মেয়েরাও ... )
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। সবুজ চোখটা আমিও লক্ষ্য করেছিলাম। ইউটিউবের ভিডিওতেও সেটা দেখা যায় (যার লিঙ্ক দেয়া আছে লেখার শেষে)।
ভালো থাকুন।
হিইইইক্! এটা হেঁচকি ছিলো
এর চেয়ে বেশি কিছুই আর বলবো না!!!!
জল খান!
উরে বাবা এই স্ট্রীপ ক্যামনে বানাইলেন! অনেকেই এখন টীজড হবে সিনেমাটা দেখার জন্য।
মূল বইয়ের প্রতি এতটা সুবিচার কম সিনেমাই করতে পেরেছে। সিক্যুয়েল এর জন্য অপেক্ষা করছি বেশ অধীর হয়ে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
তাইলে খাটনি সার্থক হবে।
আপনার সিন্সিটিকমিক্স নিয়ে লেখাটা যেন বাদ না পড়ে।
ভাই আপনি তো জটিল আদম করছেন কি?
ছবিটা যারা এখনো দেখন্নাই তারা দেখতে পারেন এইখানে........
Watch "Sin City" Movie
আর যারা দেখেছেন তারা রিভাইস দিতারেন.....
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
আমার সচলেতিহাস খুব সুদীর্ঘ নয়, তবে আপনাকে দেখেছি বলে মনে করতে পারছি না। স্বাগতম (বা পুনর্স্বাগতম)
অনেক ধন্যবাদ, প্রশংসা এবং লিঙ্কের জন্য। এই সিনেমায় ছবির ব্যাপারটা এতো গুরুত্বপূর্ণ, সুযোগ থাকলে ভালো প্রিন্ট দেখতে অনুরোধ করবো।
আপনার কমিক স্ট্রীপ সিন সিটি সিনেমাটির চাইতে বেশি দুর্দান্ত লেগেছে।
হা হা, ধন্যবাদ দ্রোহীভাই।
আসেন
আইলাম
------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
থাংকু :)
পাগলা কমিক্স স্ট্রিপ। ভাইয়েরা আপনারা কেউ আমার হইয়া রাজর্ষিদারে একটা সাততারা দেন না!!
ওউ। আপনি লোক খুব খ্রাপ! এখন মুভিটা আবার দেখতে বাধ্য করবেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাত্র স্যান্ডম্যান পড়তেছিলাম। আরেক পাগলা! কি যে বলবো!
নাহ, সচল ইজ এ সুপার প্লেস! সুউউউউপার!
মাত্র সাত? কী যে কন মিয়া, চৌদ্দ দিবেন কই, তা না.....
যাক, ভালো লাগলে খাটনি সার্থক।
পাঠকদা, আপনার দেয়া তথ্য সঠিক, রড্রিগুয়েজের জুতার তলা ক্ষয় হবার অবস্থা হয়েছিল মিলারকে বাগে আনতে, কোনভাবেই তিনি রাজী হবেন না, তার বক্তব্য ছিল, তার সৃষ্টি প্রাণ হারাবে মুভি বানাতে গেলে, রড্রিগুয়েজকে তিনি পাত্তাই ডিবেন না, শেষমেস অনেক কষ্টে তিনি মিলারকে রাজী করালেন যে, শুরুর অংশটুকু তিনি বানাবেন নিজের খরচায়, মিলারের ভালো লাগলে টারা কাজ করবেন, নাহলে যে যার রাস্তা মাপবেন, ছবি নর্মান হয়েছে দেখে বুঝতেই পারছেন পরের ঘটনা। ৪৫ মিনিটের একটা সাক্ষাতকারে মিলার বলেছিলেন এ গল্প, পরে স্পেশাল এডিশন করে সিন সিটির সাথে এই সাক্ষাৎকারটি এসেছে মার্কেটে।
বাংলায় রূপান্তরিত "পাপের শহর দেখে আমি বাক্যহারা" একদম আর পাঠকদা কে
দেন দরবার করছি অনিকেতদা কে, দেখা যাক, উনি রাজি হন কিনা
এইটা ভাবলে ভালো লাগে যে একজন লেখক নাকডাকওয়ালা এক ছবিনির্মাতাকে খেদিয়ে দিচ্ছেন সাহিত্যের সার্থকতার কথা ভেবে।
এই স্নিপেট দেখে জশ হার্টনেটের অভিনয়ের ব্যাপারেও আমার ধারণার উন্নতি হয়েছে। এর আগে একে সেই গতে-বাঁধা অল-অ্যামেরিকান বয় মনে হতো। ছোকরার যে এক্সপেরিমেন্টে আগ্রহ আছে দেখে ভালো লেগেছিলো। যদিও হলিউডের বিখ্যাত অনেক অ্যাক্টরই ইন্ডি ছবি করে থাকে সুযোগ পেলে।
জাঝার জন্য ধন্যবাদ
দারুণ! দারুণ! দারুণ!
খুব খুব খুব ভাল হয়েছে।
ভেবেছিলাম রিভিউ লিখেছেন, তবে সেটা না পেলেও যা পেলাম, তাতে রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অসাধারণ লাগল।
বি:দ্র: হিংসা নিবৃত্তি প্রকল্প হাতে নিয়েছি...
অনেক ধন্যবাদ প্রহরী!
গ্রেইট !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
থ্যাংক য়ু !
পাঠকদা, আপনি মিলারের সম্পর্কে একটা গুরুত্ব পূর্ন কথা লিখেন নাই । মিলারের কমিক মানেই হাই কন্ট্রাস্ট ড্রইং । শুধু মাত্র সাদা আর কালো ব্যবহার করে সিন সিটি কমিকে মিলার অসংখ্য অসাধারন দৃশ্য চিত্রায়ন করেছেন । এইটা কেন কইলেন না । কেনু কেনু কেনু ????
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ওইটা, এবং আরো অনেক কথা, সব বলবে ভুতুম। তখন আমিও আপনার সাথে গলা মিলিয়ে বলবো, কেনু কেনু কেনু!
উরিম্মা! কি মারাত্মক!
আমি গেমসও ভালবাসি না আর কমিকসও তেমন ভাল লাগে না৷ কিন্তু এইটে দেখে পুরো ব্যোমকে গেছি৷ দেখি ....................... মুভিটা হয়ত দেখলেও দেখতে পারি৷
-----------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ভাল্লাগ্ছে জাইন্যা ভাল্লাগ্লো
গেমস খেলেন না ঠিকাছে তাই বলে অ্যাসটেরিক্স টিনটিন অবধি ভাল্লাগে না? কী যে কন!
Basin City নিয়া আসলে আপনি যা লেখছেন তারপর আর কিছু লেখার নাই ....
আপনার কমিক্সটা খুব ভালো হৈছে, আরো দেন........
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
কী যে কন মিয়া, ঐটা হইল মহাভারত, ভুতুম লিখবো'নে।
আপনে একটা কমিক্স করেন না? কী যে সখ দেখনের!
--------------------------------------------------------------------------------------
আপনার সব বাক্সে ঢুঁ মারা হয় নি এখনো। কিন্তু এটা হেব্বি লাগলো। আর ছবিটা যে কি অসম্ভব প্রিয় সে প্রসঙ্গে গেলাম না আর। রড্রিগেজ, টেরেনটিনো, মিলার-এঁদের কাজ এমনই যে শতবার দেখেও মন ভরে না। রড্রিগেজের আরেকটা ছবি "দ্য স্পিরিট" দেখেছেন কি? এটাও আমার প্রিয়র তালিকায় কাস্টিং এ ইভা মেন্ডেজ ছাড়া। সাধারন একটা একশন ছবিকে কিভাবে ক্লাসিক করে তোলা যায় তার বড় প্রমান টেরেনটিনোর-কিলবিল।
বসে আছি "ইন্ গ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস" এর অপেক্ষায়।
--------------------------------------------------------------------------------------
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি তারান্তিনোর একচেটিয়া ফ্যান নই, কিছু সিনেমা ভালো লাগে, যেমন পাল্প ফিকশন। স্পিরিট-এর রিভিউ খুবই ভয়াবহ ছিলো, দেখি নি। তবে ডিভিডিতে দেখে নেবো। 'কিল্ বিল' অনেকের চোখেই ক্লাসিকপ্রায়, আমার কিন্তু আদৌ ভালো লাগে নি, এর মহত্ব বোঝার চেষ্টা করে বিফল হয়েছি। কেউ যদি বোঝাতেন কেন ভালো........
নতুন মন্তব্য করুন