নগ্নপায়ে বালিকারা জলে নামে
সমুদ্রের ডাক
অবহেলা করা খুব কঠিন বোধ'য়।
উপত্যকা বেলাতট ঝিনুকের ছাপ
নির্লোম হাড়ের মতো, বালুকার গায়ে
ইতিহাস লেগে থাকে সমুদ্র শৈবাল।
জেলেডিঙি জাল ছুঁড়ে ছুঁড়ে
গোধূলির অন্ধকারে তুলে আনে বড়ো বড়ো মাছ।
সমুদ্র দেখে চাট্টি কবিতার ঢেউ জাগবে না যদি তা'লে কিসের সমুদ্র। প্রেমেন মিত্তির একটা গোটা কবিতার বই-ই লিখে ফেললেন, সেই "সাগর থেকে ফেরা" বলে, আমি একটা কবিতা লিখবো সে আর আশ্চর্য কী!
আমরা ছিলাম সাউথ বীচ এলাকায়, ঘোরাঘুরিও সেখানকার সমুদ্রতটেই হয়েছে মূলতঃ। সাদা বালির সুপ্রশস্ত বেলাভূমি, তার পর মায়াবী নীল-সবুজ অগভীর প্রশান্ত সমুদ্র, জল আর বালির সীমান্ত-বরাবর ভীড় থাকলেও জলে নেমে কিছুদূর গেলেই একেবারে ব্যক্তিগত সমুদ্র। ভূমির ঢালও খুব কম, ফলে অনেক দূর গিয়েও গলাজল অবধি যাওয়া হয় না, তাছাড়া ঢেউ এতো হাল্কা যে ডুবে যাওয়ার ভয়ও আসতে চায় না মনে। অনেকে এখানেও জেট-স্কি চালাচ্ছে, তাছাড়া প্যারা-সেইলিংও করছে অনেকে।
সমুদ্রের বালুতটের পরে চওড়া রাজপথ, তারপর সারি দিয়ে রেস্তোরাঁ বিস্ত্রো, সেখানে সুখাদ্য-পানীয়ের বন্যা বইছে। গরম পড়েছে বলে বিস্ত্রোর উপর সামিয়ানা টাঙানো, তাছাড়া জলীয় বাষ্প ছিটিয়ে তাপনিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সারাদিন ঘোরাঘুরি আর জলে দাপাদাপি করে ক্লান্ত ও রোদে-ভাজা হয়ে প্রায় বিকেল নাগাদ একটা এই জাতীয় জায়গায় খেতে গেলাম। জিনিসপত্র খুবই মহার্ঘ, খাদ্যের দাম তবু লেখা রয়েছে, পানীয়ের ক্ষেত্রে তাও দেখলাম না। যাক, ভালো জিনিস উপভোগ করার সময় টাকাপয়সার মায়া করলে চলে? মনকে এই বুঝিয়ে মেগাসাইজ মোহিতো অর্ডার করে বৈকালিক শোভা চাখতে লাগলাম। মেগা মোহিতোই বটে, গ্লাসটা নাক অবধি পৌছে গেছে, উঁচু হয়ে চুমুক দিতে হয়। তবে এতো সুস্বাদু মোহিতো কোনোকালে খাইনি, মুগ্ধ-আপ্লুত ইত্যাদি হয়ে ফুরফুরে মেজাজে আড্ডা চললো ধূমপানের সাথে। পায়েয়া-স্টেক ইত্যাদি সাবড়ে দেখি সন্ধ্যের কাছাকাছি, তখন উঠে পড়লাম। খানিক হঁেটে আরেক ওপেন বারে পৌছলাম যেখানে এক দশাশই সুন্দরী সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে মঞ্চে নাচাগানা করছেন, মার্গারিটা-সহযোগে সুন্দরীকে আরো সুন্দর লাগলো। স্নান ও বেড়ানোর সুবিধার্থে ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরোনো হয় নি অনেক সময়ই, তাই বর্ণনা শোনানোর বেশি কিছু করতে পারছি না এই জায়গাটায়।
মায়ামিতে অনেকগুলো জায়গাতেই সমুদ্রের সাথে মোলাকাত করা যায়। বে-ফ্রন্ট পার্ক তুলনায় আরেকটু সাজানো গোছানো, তবে স্নানের জায়গা নয় যদিও। পরদিন ওখানে সূর্যাস্ত দেখলাম, মায়ামি এয়ারপোর্টের দিকে রওনা হওয়ার আগে।
তবে পরদিন দিনের বেলাটা কেটেছিলো এভারগ্লেডস-এ। তার গল্প এবং অনেক ছবি নিয়ে পরের পর্ব (যা এই সিরিজের অন্তিম পর্বও বটে) আসছে এর পর।
মন্তব্য
আ:, চমৎকার!
ছবিগুলো দেখে তর হয়ে রইলাম। আহা যেমন নীল! আর সূর্যওয়ালা ছবিগুলো তো যাকে বলে আহা।
লেখা রয়েসয়ে পড়বো।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ তুলিরেখা।
মূলোদা, আপনার য় আর ড় এর ফোঁটাগুলি তো আর তাদের মালিকের নিচে থাকছে না, ঘর হতে তারা দুই পা ফেলে বেরিয়ে এসেছে। ঘটনা কী?
এর উত্তর আমার জানা নেই। প্রথম প্রথম অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি, কোনো সদুত্তর পাইনি।
আমি ম্যাক ব্যবহার করি, এবং ফোনেটিক ফন্টে লিখি। এই বাবদ হতে পারে, কিন্তু আমার সীমিত কারিগরি জ্ঞান দিয়ে এই রহস্যভেদ হয় নি।
মায়ামির মাইয়া গুলো খুব একটা স্লিম মনে হলনা । ছবি যা তুলেছেন সবই তো দেখি পেট মোটা । ঢাকার রাস্তায় এর থেকে অনেক সুন্দর মেয়েরা হাঁটে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আসল ছবি কি আর হাটের মাঝে দেখাবো, ঐগুলি আলাদা রাখা আছে, আপনারা পেটমোটাই দেখেন।
আমাদেরকে কলা দেখিয়ে আপনি মুলো খাবেন, তাতো হবেনা। ঝাতি পেটমোটা না, ডানাকাটা দেখতে চায়, এবং আরো ক্লোজ-আপে। D
ছবিগুলো অসাধারণ লাগলো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
থাংকু ভুতুম।
ঐটে ফাজলামি ছিলো, মোটারোগা কোনো পেটের ছবিই স্টকে নেই, আমি গাছপালা নদনদী এইসবের ছবি তুলেই টায়ার্ড হয়ে যাই, মানুষের ছবি আর তোলা হয় না।
কি অন্যায়! এমুন ক্যান আপনি? মামুন ভাই তো ট্যামিরে লুকায় নাই!
আরে দুয়ের ফারাক বোঝেন না মশয়? মামুন ভাই হিরো টাইপ, নারীরা স্বয়মাগতা হন তাঁর প্রতি। আর আমি ছবি তুলতে গেলে উল্টে পাদুকাপ্রহারিণী রূপ নেবেন। কাজেই ঐ গাছপালা ফুলপাখি ইত্যাদিই ভরসা।
সিরাতের কমেন্টের ওপর তো পুরা করাত চালায়া দিলেন!
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপইন মেল চেক করেন না?
-----------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
করি তো, তবে ঠিক করতে পারি না যখন কী লিখবো তখন ফেলে রাখি।
উত্তর দিয়েছি আজকেই। মজারুও পড়লাম।
দারুন ছবি। ভাল লেগেছে!
ধন্যবাদ সিরাত।
ভাবছিলাম এইটা এভারগ্লেডস পর্ব হবে। ক্ষতি নেই, যা পাওয়া গেলো তার জন্য এভারগ্লেডস অপেক্ষা করতে পারে।
এভারগ্লেডস আসিতেছে অতি দ্রুত
আমি আপনাকে হিংসা করলাম না, যান।
ইশ্... টিভিতে মায়ামি ভাইস সিরিয়াল দেইখা যায়গাটা আর সেখানকার সুন্দরীদের প্রেমে পড়ছিলাম। আপনে মিয়া এখনো শিখলেন না কোথায় গেলে গাছপালার ছবি আর কোথায় গেলে মানবীর ছবি তুলতে হয়...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খাঁটি কথা বলেছেন। একবার আপনার সাথে বেরোতে হবে বালিকাচিত্র বানাতে।
যাক, সিলেটিবালিকার কয় পিস ছবি তুলেছেন দেখি।
আরে সিলেটেই তো তুলতে হবে পাহাড় ঝর্ণার ছবি, আর মায়ামীমে তুলতে হবে মেয়েদের ছবি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সাউথ বীচ আসলেই একটা জায়গা রে ভাই!!!!!!!!!! আমি চর্মচক্ষে অনেকগুলো পেট দেখেছিলাম কিন্তু বউয়ের ভয়ে সেগুলো ক্যামেরাবন্দী করতে পারিনি। মুলোদাও মনে হচ্ছে একই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত।
কী ওয়েস্টের বীচের বাম দিকে যেখানে চেয়ারগুলো ভাড়া দেয়া হয়ে সেদিকে গিয়ে দেখি ৪/৫ জন উদ্ভিন্নযৌবনা নারী চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। শরীরে সুতা বলতে কিছু নাই। আমি ভাবলাম বেশ দারুণএকটা ইয়ে ব্যাপার হল। এবার খানিকটা আরাম করে বসে চোখ জুড়ানো যাবে। কিন্তু বেরসিক বউয়ের জ্বালায় তা আর হবার নয়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পুরাই সিস্টেম লস!
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
দেখুন আমি এই বিষয়ে বড়োই সহনশীল টাইপ, সবই ভাল্লাগে। কাপড়চোপড় কম পরে সমুদ্রে নাইছে, তায় আবার রোগামোটা বিচার করা কেন বাপু? পুরীর বীচে এমন কী লোলোব্রিজিদা দেখে বড়ো হয়েছি যে হঠাৎ করে আই এস ও ৯০০০ বিচার করতে যাবো।
আর ঐ সুতাহীন ছবি তুলতে যে প্রাণ চায় না তা নয় (না নিজের জন্য নয়, এই সচলের ছোটো ছোটো ভাইয়েরা দেখতে চায় বলেই, নইলে আমি তো ওই মানে ইয়ে....)। কিন্তু ঐ পাদুকাপ্রহারের ভয়ে আর বেশি কেরামতি দেখাই না। তাছাড়া একটা প্রাকটিক্যাল সমস্যা আছে। সমুদ্রে স্নান করতে গেলে ক্যামেরা নিয়ে যাওয়া এক ঝক্কি, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে কাঁহাতক ভালো লাগে।
ছবি বর্ণনা দুই-ই চমৎকার লাগলো।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
অনেক ধন্যবাদ, শামীম রুনা।
কবিতাটাই ভাল লাগল সবচেয়ে বেশি
ছবির সংখ্যা এত কম কেন? কই ভাবলাম বীচের ছবি একটু বেশি করে দিবেন, তা না...
ঠিকাছে এখানে না দিলেন, আলাদা করেই না হয় দেন, তবুও দেখে চোখ জুড়াই
থ্যাংক য়ু প্রহরী।
আসলেই ছবি কম তোলা হয়েছে এবার, সমুদ্রস্নানে ক্যামেরা নিয়ে যাওয়া মুশকিল বলে।
পরের পর্বে এভারগ্লেডসে অবশ্য সে সমস্যা ছিলো না তাই কিছু ছবি উঠেছে।
কী মায়াবী!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ, মায়ামির তরফে।
কোথায় মায়ামি...
কোথায় হায় আমি...
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
মন্তব্যেও ছড়া, এই না হলে ছড়াকার?
আজকাল কিন্তু খুব ফাঁকি মারছেন, লেখা কই?
নতুন মন্তব্য করুন