বেরিয়েছিলাম ফোর্থ অফ জুলাইয়ের আতশবাজি দেখতে, কিন্তু রাস্তার জ্যামে আটকে গিয়ে গাড়িতে বসে বাজির ধোঁয়ার গন্ধ শুঁকেই সাধ মেটাতে হলো। তখন কী আর করা, থিয়েটারে গিয়ে পৌছলাম কিছু একটা যদি দেখা যায় এই ভেবে। রাত এগারোটার পর অনেক মুভিরই আর শো থাকে না, কাজেই বাছাইয়ের সুযোগ কম। দেখলাম "পাবলিক এনিমিস"। এই পোস্টে মূলত তারই গল্প। দ্রোহী দেখলাম দেখতে আগ্রহী, যদি তাঁর কাজে লাগে তো আরো ভালো।
ডিপ্রেশনাক্রান্ত আমেরিকার মিড-ওয়েস্টের অপরাধের গল্প, সামাজিক তাৎপর্য্য নিয়ে বিশেষ কোনো বক্তব্য নেই। বরং জন ডিলিঙ্গার (জনি ডেপ) কেমন ঝপাঝপ ব্যাঙ্ক লুটতে পারে বা রমণীহৃদয়, সেই নিয়েই আখ্যান। সমস্যা হলো এই যে, "ক্যাচ মি ইফ য়ু ক্যান" ছবিতে যেমন প্রতারণার স্ট্রাটেজি বা পরিকল্পনা ব্যাপারটা থাকায় দেখতে চমৎকার লাগে এখানে সেই ব্যাপারটাই নেই। কাজেই বন্দুক উঁচিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকে গুলি টুলি চালিয়ে লুঠ তো হলো (এবং অনেক বার হলো), কিন্তু তা নিয়ে দর্শকের কেন আগ্রহ হবে সেইটে কিছু বোঝা গেলো না। যেহেতু বাজেট তেমন কিছু বেশি নয়, তাই পিরিয়ড পিসে পুরোনো আমেরিকা দেখার যে সুখ তাও বিশেষ জুটলো না। ট্রু স্টোরি নিয়ে ছবিও তো খুব কম হয় না কাজেই তাতেও পুলকিত হওয়া গেলো না। দেখতে দেখতে ভাবছিলাম শেষটায় নিশ্চয়ই কিছু চমক থাকবে, নইলে জনি ডেপ, মারিয়ন কোটিলার্ড আর ক্রিস্টিয়ান বেইল কেন করবে এই সিনেমা। কিন্তু সে গুড়েও বালি। শেষতক হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরলাম।
এই অবধি লিখে মনে হলো, হতাশার গল্পই শুধু শোনালাম, এটা ভালো কথা নয়। তাই সম্প্রতি থিয়েটারে গিয়ে আর যা যা ছবি দেখেছি তার মধ্যে বেশ উপভোগ করেছি "দ্য হ্যাঙ-ওভার"। যাঁরা "ড্যুড হোয়ার ইস মাই কার" দেখেছেন তাঁদের খুব চেনা লাগবে মোদ্দা ব্যাপারটা। ব্র্াডলে কুপার আমার ধারণা আগামী দিনে আরো সফল অভিনেতা হতে চলেছেন, ওঁর আগের ছবি দেখেই আমার এমন একটা ধারণা হয়েছিলো। এবার সেটা আরো পাকাপোক্ত হলো, যাঁদের সন্দেহ আছে তাঁরা ভবিষ্যতে মিলিয়ে নিতে পারেন। জাস্টিন বার্থা ন্যাশনাল ট্রেসার-এর মতো এক্সক্লুসিভলি বাচ্চাদের জন্য তৈরি সিনেমায় ভালোই করেছিলো কিন্তু এখানে বড়ো কম ফুটেজ পেলো। মজার সিনেমা, মন ভালো করে দেয়। সময় সুযোগ থাকলে দেখে আসতে পারেন। সাথে হিথার গ্রাহাম রয়েছে চোখের আরামার্থে।
রটেন টোমাটো সাইটে একটা ভালো জিনিস দেখলাম, আপনাদের সাথে শেয়ার করি। যাঁরা চলচ্চিত্রের পটভূমি ও স্থানমাহাত্ম্য নিয়ে আগ্রহী তাঁদের কাজে লাগবে। আমেরিকার প্রতিটি প্রদেশের পটভূমিতে যে সব পটভূমি-ইনটেনসিভ ছবি হয়েছে তার মধ্যে থেকে একটি করে বেছে নিয়ে এই তালিকা, মানচিত্রে কোনো প্রদেশে ক্লিক করলে তার রিপ্রেসেন্টেটিভ ছবির বর্ণনা পাওয়া যাবে। প্রদেশ ও ছবির নামের তালিকা বানিয়ে লাগিয়ে দিলাম।
Public Enemies (2009)
Directed by: Michael Mann
Cast: Johnny Depp, Christian Bale, Marion Cotillard, Billy Crudup, Channing Tatum, Leelee Sobieski, Lili Taylor
The Hangover (2009)
Directed by: Todd Phillips
Cast: Bradley Cooper, Justin Bartha, Heather Graham, Zach Galifianakis, Ed Helms, Mike Tyson, Rachael Harris
মন্তব্য
এইটুকু পইড়া আর বাকিটুকু পড়লাম না। ক্রিশ্চিয়ান বেল আমার খুব প্রিয় অভিনেতাদের একজন। ব্যাটম্যানে তাকে কেন ভালো লাগে না সেইটা নিয়ে গবেষনা হইতে পারে। তবে এটাও ঠিক যে শেষের ছবিতে ব্যাটম্যানের চেয়ে অনেক বেশি ফোকাস ছিলো জোকারের উপর।
যাই হোক, "দ্য প্রেস্টিজ" আর "দ্য মেশিনিস্ট" দেখার পর অন্তত ক্রিশ্চিয়ান বেলের ব্যাপারে এমন কিছুতে আমি সম্মত হইতে পারলাম না। স্যরি।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
স্পিলবার্গের 'এম্পায়ার অফ দ্য সান' দেখছেন না? ক্রিশ্চিয়ান বেইলের বাচ্চাকালের ছবি। দূর্দান্ত।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এই রিভিউ আমি পড়তাম না, মুভিটার জন্য অনেক দিন ধইরা অপেক্ষা করতাছিলাম। কিন্তু আপনার ক্রিস্টিয়ান বেইল বদনাম দেইখা কিছু আমারো বলার ইচ্ছা হইল। মাসল দেখাইছে ব্যাটম্যানে তাও ওইখানে মাসল দেখান দরকার দেইখাই দেখাইছে হেহে। ব্যাটম্যানেও খারাপ করে নাই, বিশেষ কইরা ফার্স্ট পার্টে, সেকেন্ডটায় তো সবাই জোকাররেই দেখসে। প্রেস্টিজ, দ্য মেশিনিস্ট এ কিন্তু মাসল দেখায় নাই, ( আর মেশিনিস্টে মাসল দেখাইছে কইলে তো কবিরা গুনাহ হইয়া যাইব হাহাহাহাহাহা ), অভিনয় দেখাইছে। এই দুইটা দেখার পর থিকাই আমি বেইলের ভক্ত।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ক্রিস্টিয়ান বেইল-কে নিয়ে ঐ অংশটা লিখে অবধি কিন্তু কিন্তু লাগছিলো, তবে কাউকে আহত করার জন্য লেখা নয়। সেই জন্যই এডিট করে দিলাম, বিশেষতঃ এই ছবির রিভিউর জন্য ঐ মন্তব্য খুব প্রাসঙ্গিক বা দরকারি ছিল না। তবে সবজান্তার মন্তব্যে পস্টারিটির খাতিরে অংশটা রয়ে গেলো।
আশা করি খুব বেশি সংখ্যক পাঠককে আহত করি নি, একটু আগেই পোস্টালাম যেহেতু। সবজান্তা এই বার চাইলে পড়তে পারেন। ছবিটি নিয়ে আমার মতামত অবশ্য বাজারে সব মিলিয়ে যা রিভিউ তার সাথে খুব মিলছে না, কাজেই ছবি দেখতে যাবেন কি যাবেন না সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে খুব সাহায্য হবে না হয়তো।
হা হা হা ... পাঠক হিসেবে নিজের ক্ষমতায় নিজেই অভিভূত। এক হুমকিতে কিনা লেখা পালটে ফেললাম
জোকস অ্যাপার্ট, এই অংশ পালটানো আসলে জরুরী ছিলো না। কারণ রিভিউ হচ্ছে আপনি যা অনুভব করবেন তাই লিখবেন। ক্রিশ্চিয়ান বেল কারো প্রিয় অভিনেতা হতেই পারে, এবং আপনার বক্তব্যে কেউ ক্ষুণ্ণ হতেই পারে - তাতে নিশ্চয়ই আপনার মত প্রকাশের অধিকার রুদ্ধ হয় না, বিশেষত ক্রিশ্চিয়ান বেলের সমালোচনা করলে যখন ধর্মানুভূতি (!!!!!!) তে লাগে না
যাই হোক সারবস্তু এটাই, আপনি যদি অনুভব করেন এটা পাল্টাতে হবে, তবেই পাল্টান। পাঠকের মনে আঘাত লাগবে ভেবে না পাল্টানোই সমীচিন।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কাউকে আঘাত না করার উদ্দেশ্যটা অবশ্যই ছিলো, কিন্তু ভেবে দেখলাম এ ছবির রিভিউতে ঐ অংশটা তেমন প্রাসঙ্গিকও নয়, তাই সরিয়ে দিলাম। তবে ভাববেন না এক মাঘে শীত যাবে, পরে বেইলবাবুর ছবির রিভিউ করতে বসলে সুদ-আসল ও ট্রান্সাকশন ফী, সব তুলে নেব।
আমি নিজে ক্রিস্টিয়ান বেইলের মহা ভক্ত। হলিউডে যে ক'জন লোক বার বার ফর্ম ভাঙ্গার সাহস দেখিয়েছেন---বেইল তাঁদের মাঝে অন্যতম। সেই 'আমেরিকান সাইকো' থেকে শুরু করে একের পর এক এই লোকটি ফর্ম ভাঙ্গা কাজ করে গেছেন।
সেই ছেলেবেলায় স্টিভেন স্পিলবার্গের 'Empire of the Sun' এ অসাধারণ অভিনয় করে বেইল জানান দিয়েছিলেন যে নতুন অভিনয় প্রতিভাকে বরণ করে নেবার সময় এসেছে। তারপর একের পর এক দুর্দান্ত সব কাজ---তাকে একশন-ধর্মী ছবিতে চান? দেখুন 3:10 to Yuma, Batman begins, The Dark Knight এবং হালের Public Enemy। সাই-ফাই তে চান? দেখুন Equilibrium, The Shaft এমনকি মাত্র কিছুদিন আগে থিয়েটার মাতিয়ে যাওয়া Terminator : Salvation। আর ভিন্ন ধর্মী কাজ যদি দেখতে চান, যদি সত্যি বুঝতে চান তাঁর অভিনয়ের গভীরতা---American Psycho, Machinist,The Prestige। দ্য মেশিনিস্ট ছবিতে অভিনয়ের জন্যে তাঁকে ওজন কমাতে হয়েছিল ভয়ানক রকমের---১৮০ পাউন্ড থেকে নেমে চলে এসেছিলেন ১২০ পাউন্ডে---শুধুমাত্র এক ক্যান টুনা আর একটা আপেল দিনের পর দিন খেয়ে খেয়ে। এইটা বলা হয় যে বেইলের এই প্রায় ষাট পাউন্ড ওজন কমিয়ে ফেলা একটা রেকর্ড---আর কোন অভিনেতা অভিনয়ের প্রয়োজনে এমন ওজন কমিয়েছেন বলে জানা যায় নি।
কাজেই----পাঠক দা---একমত হতে পারলাম না।
কোনভাবেই না।
আপনার কমেন্টে আমি দুঃখ পাইনি। কারণ আপনি আপনার ভাল লাগা জানিয়েছেন। কাজেই আশা করব আমার কমেন্টেও আপনি দুঃখ পাবেন না।
Equilibrium এই বেইলরে প্রথম দেখি, দারুণ একটা সাই ফাই। এরপর দেখি American Psycho , ব্যাটা সবসময়ই হরেক কিসিমের চরিত্রে অভিনয় করে।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
খাইসে, ক্রিস্টিয়ান বেইলের গল্প হয়ে গেল যে এইটা। জনি ডেপ তো বাদ পড়ে কাঁদছে কোনখানে গিয়ে।
হেহে জনি ডেপ কানবো কেন, সেতো আরেক ওস্তাদ, ওর কীর্তন শুরু হইলে তো শেষ হইবো না
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দেখতে হবে।
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
এই ছবিগুলো দেখার ব্যাপারে কেন যেন খুব একটা আগ্রহ পাই না। আপনার পোস্ট পড়েও ছবিটার প্রতি আগ্রহ জন্মালো না। দেখুম না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তয় আমি হাতের কাছে পাইলেই দেইখা ফালামু!
আমি প্রিভিউতে ডিজিটাল ধরণের ছবি দেখেই ঠিক করেছিলাম দেখবো না, আমার এই সব নিয়ে কিছু খুঁতখুঁতানি আছে। কিন্তু তালেগোলে দেখা হয়ে গেলো।
'পাবলিক এনিমিস' ছবিটি দেখার আশায় বসে রয়েছি। জনি ডেপের ভক্ত না হলেও তার অভিনয় দেখতে চেষ্টা করি। ভালোই লাগে।
রিভিউ পড়ে আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো। ক্যামেরার ছোটাছুটি বা সাউন্ড ইফেক্ট এর কথা শুনেই আমি পাগল হইছি...
______________________________________
বৃষ্টি ভেজা আকাশ
______________________________________
লীন
তাইলে তো ভালোই।
একেবারে রিসেন্ট ছবির রেটিং www.rottentomatoes.com এ নম্বই পারসেন্টের আশেপাশে না হইলে দেখতে ইচ্ছে করে না।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
রটেন টোমাটো খুবই কাজের জিনিস। যেহেতু অনেক রিভিউয়ারের মতামত নিয়ে রেটিং দেওয়া হয় তাই সেটা স্টাটিস্টিক্যালি কারেক্টেড হয়ে যায় অনেকটাই। যদিও সঠিক রেটিং বলে কিছু আছে কি না সে নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।
সিনেমাটা দেখেছিলাম এক ফাঁকে। একটু হতাশই হয়েছি। গল্পটা একেবারেই সাদামাটা। দুর্বৃত্তদের নিয়ে বানানো চলচ্চিত্র হয়তো একটা ঘরানায় দাঁড়িয়ে যাবে, থাগোগ্রাফি বা এরকম কোন নাম নিয়ে। তবে এ ধরনের সিনেমার মধ্যে ভালো লেগেছিলো বাগজি (Bugsy)।
হ্যাং ওভার দেখা হয়নি। দেখবো।
খাঁটি কথা। সত্যিকারের চরিত্র হলেও সে সময়ের তাৎপর্য নিয়ে উচ্চবাচ্য বিশেষ নেই, আর চরিত্রটিও তেমন কিছু আকর্ষক নয়। সব মিলিয়ে হতাশাব্যঞ্জক।
হ্যাংওভার অন্তত ভালো টাইমপাস।
দেরিতে হলেও জানাতে আসলাম যে রিভিউটা পড়ে আমার লাভ হয়েছে। পয়সা খরচ করে আর হলে যাইনি ছবিটা দেখতে।
সেই পয়সায় আইস এজ-থ্রী ডি দেখেছি।
যাক, লেখা সত্যিসত্যি সার্থক হলো। আপনাকে এই জন্য ধন্যবাদ।
দেখব সিনেমাটা।
আমার কাছে ক্রিশ্চিয়ান বেলকে বেশ লাগে। বিশেষ করে 'এম্পায়ার অভ দ্য সান'-এ তার বাচ্চাকালের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছি। 'ব্যাটম্যান বিগিনস', 'দ্য মেশিনিস্ট', 'দ্য প্রেস্টিজ' দেখেও ভয়াবহ ভাল লেগেছে।
দেখবেনই? একেবারেই ঠেকানো গেলো না?
নতুন মন্তব্য করুন