যদিও এই বিষয় নিয়ে অনেক খুচরো ছড়ানোছিটানো ভাবনা অনেক দিন ধরেই মাথায় ছিলো, সম্প্রতি সিরাতের 'সচলায়তন সম্পর্কে' পড়ে লেখার ইচ্ছেটা আকার নিলো। সিরাত শুরু করেছেন সচলায়তনে লিখে তিনি যে ব্যাপক আনন্দ পান সে কথা দিয়ে। আমি সচলে লিখে যে আনন্দ পাই না তা নয়, তবে আনন্দটা মূলত লিখেই পাই। প্রশ্ন থেকেই যায়, তাহলে সচলেই লেখা কেন। তার কারণগুলো খুব যে সার্বজনীন তা বলতে পারি না, তাই সে সব উল্লেখ করলে পাঠকের পড়ে বিশেষ প্রাসঙ্গিক না-ও লাগতে পারে। তবু বলি।
সারা জীবনে বাংলা বই অনেক পড়েছি। খুব ছোটোবেলায়, যখন স্কুলের চৌকাঠে ভীরু পা রেখেছি সবে, তখন থেকেই বাড়ির বইয়ের ভাণ্ডার সাবাড় করে চলেছি। এক সময় এমন হয়েছিলো যে না-পড়া বই আর নেই, কাজেই দাদাদের ভৌতবিজ্ঞানের বইয়ে অধ্যায়ের শুরুতে সামান্য দু লাইন গল্পের মতো থাকলে সে টুকুও চেটে খেয়েছি। একেই তো নেশা বলে? বাড়িতে বই পড়া নিয়ে খুব পৃষ্ঠপোষকতার পরিবেশ ছিলো, এইটা নেশারু হিসেবে খুব সুবিধাজনক পরিস্থিতি। কোনো বই পড়াতেই বাধা ছিলো না, তা কমিকসই হোক বা বঙ্কিমচন্দ্রের থানইঁট সমগ্র। এতো বই পড়ার কুফল হলো পড়ার বই পড়তে দেদার ফাঁকি দিতাম, আর সুফল টের পাই এতো কাল পরে, বাংলা লিখতে গিয়ে বানান বিশেষ হাতড়াতে হয় না। ব্যাকরণে যখন ণত্ববিধান শিখলাম ততোদিনে বানানগুলো গেঁথে গেছে দর্শনস্মৃতিতে। এখনো সন্দেহ হলে চোখ বুজে সেই পুরোনো ফোটোগ্রাফ ঘাঁটি। সচলে অনেকের লেখা যেমন নির্ভুল হয়, তেমনি অনেকের লেখায় প্রচুর বানান ভুলও থাকে। এখানকার পরিবেশটা এমন যে নতুন লিখছেন যাঁরা তাঁরা বানান ভুল করলেও শুধরে নিতে চান। এইটুকু আগ্রহ দেখলেই আমি পাঠক হিসেবে প্রচণ্ড খুশি হয়ে যাই। এক জন লেখক আমার জন্য লিখছেন, এবং তার মান উন্নয়নের কথাও ভাবছেন, এটা সম্মানের কারণ আমার পক্ষে। বানান ভুলের পথে একটা অন্য কারণও আছে, যেটা অনবধান। লিখে একবার প্রুফ রিডিংয়ের যে দরকার আছে এইটা আমরা ভুলে যাই কখনো কখনো। তবে অভিপ্রায় ভালো হলে এই সব নিয়ে বেশি ভাবার কারণ ঘটে না। এর ব্যতিক্রম খুব কম হলেওআছে অবশ্য। সচলের পাতায় একজন বোদ্ধা লেখকের লেখায় একবার দশ শতাংশ শব্দ বানান বা অন্য কারণে ভুল ছিলো। অনেকের লেখায় বানান ভুল ধরিয়ে দিই, যদি দেখি লেখাটা সুন্দর কিন্তু এই সামান্য ত্রুটিটুকু রয়ে গেছে। কিন্তু লেখকের অভিপ্রায়টা জানা জরুরী। যে লেখক পাঠককে সম্মান করতে আগ্রহী নন, তার জন্য বেগার খাটতে এই পাঠকও অনাগ্রহী। ভালো গল্প লেখা কঠিন কাজ, কিন্তু যত্ন নিয়ে লিখতে তো বাধা নেই। তারা দাগানোর কাজটা আমি বিশেষ করি না, তবে এ জাতীয় লেখায় এক তারা দিতে দ্বিধা হয় না। এই সঙ্গেই আসে মডারেশনের কথা।
ফারুক ওয়াসিফ প্রসঙ্গে এই মডারেশন নিয়ে অনেক আলোচনা ও তর্কবিতর্ক হয়েছিলো। ফারুক সাহেবের লেখা আমার পছন্দের, এবং এখানে ওঁকে নিয়ে ঠিক লিখছি না। প্রশ্নটা হলো মডারেশন ঠিক কতোটা থাকা উচিত। শিল্পের ব্যাপারে আমি মুক্তপন্থায় বিশ্বাসী, রাজনীতিতেও। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। যে ব্লগসাইট থেকে বেরিয়ে এসে এই সচল সৃষ্টি করেছেন কয়েক জন, সেখানে পূর্ণ স্বাধীনতার অপব্যবহার যে ভাবে হতে দেখেছি তাতে মডারেশনের দরকার নেই এ কথা আর বলতে পারি না। এবং মডারেশন যে শুধু মুখখিস্তি আটকাতেই জরুরী তাও বলি না। লেখার মান একটা স্তরের নিচে যাবে না এটা ঠিক করার জন্যও মডারেশনের প্রয়োজন আছে। যাঁরা সচলকে ভালোবাসেন তাঁরা হয়তো মানবেন, যে সব লেখা আমরা লিখি সচলের পাতায়, তার সব কটিই যে প্রকাশযোগ্য তা নয়। প্রশ্ন উঠতেই পারে, প্রকাশযোগ্যতা স্থির হবে কী ভাবে। সচলের মান নিয়ে আমরা যদি উচ্চাকাঙ্খী হই তা হলে এর উত্তর ভেবে পাওয়া খুব মুশকিল হয় না। মান যেমন বিষয়বৈচিত্রে, তেমনি যত্নেও প্রতিভাত হয়। অনেকে বলেন বেশি ঘষামাজা করলে লেখার স্বতস্ফূর্ততা কমে যায়। এটা পুরো ঠিক নয়, মনের আনন্দে লিখতে তো বাধা নেই, শুধু প্রকাশের আগে যাঁরা পড়বেন তাঁদের একটু শ্রদ্ধা দেখাতে অসুবিধা আছে বলে তো মনে হয় না। যে মডুরা লেখা বাছাইয়ের কাজ করছেন, বানান শুদ্ধির দায়িত্বটাও তাঁদের উপর চাপানো একটু বাড়াবাড়ি মনে হয়।
আরেকটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কথা না বললেই নয়। আমরা বাঙালিরা স্বভাবতঃ আন্তরিক হলেও সংবেদনশীলতা আমাদের মধ্যে একটু কমই আছে। আমরা নির্দ্বিধায় এমন সব মন্তব্য করে ফেলি একটু ভেবে দেখলে সেগুলো দ্বিতীয় বার বলতে আমাদেরই সংকোচ হবে। জাতিবৈরী, ধর্মভেদ ইত্যাদি অতিক্রম করে আমরা বাঙালি। মডারেশন করে ভদ্রতা শেখানো সম্ভব নয়, কাজেই সচল হিসেবে এ দায়িত্বটা আমাদেরই নিতে হবে, শুধু নিজে আঘাতমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা নয়, অন্যকেও জানানো যে সচলের পরিবেশে সৌহার্দ্য বজায় রাখা কতোটা জরুরী।
যাক, অনেক জ্ঞানের কথা হলো, এবার আপনাদের মতামত শোনার জন্য কর্ণময় হলাম। শুরু করুন।
মন্তব্য
পড়লাম । একটু ব্যস্ত আছি তাই আপাতত পাঁচ তারা দাগিয়ে লগ আউট হলাম ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
অনেক ধন্যবাদ। সময় সুযোগ মতো মন্তব্য জানাবেন।
সোজা কথায় আমি সচলের কঠিন মডারেশনের ভক্ত। আমি বিশ্বাস করি, যারা নতুন অনলাইনে লেখালেখি শুরু করেছেন- তাদের জন্যেই বিশেষ করে মডারেশন দৃঢ় করা দরকার। সব লেখাই কী প্রকাশযোগ্য নাকি ??
আর বানান প্রসঙ্গে মনে হয়, প্রতিটি পোস্ট পাঠের সময় সচেতন পাঠক যদি ভুলগুলো শুদ্ধ করেন - সেটাই যথেষ্ট।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
ঠিক কথা। নতুন বলে তুলোর বিছানা লাগবে, এমন কথা নতুনরাও তো বলে নি। চ্যালেঞ্জ থাকলে গুণগত মানও উন্নত হয়, নইলে কে আর বেশি খাটে।
এই প্রসঙ্গে মনে পড়লো, কিছু দিন আগে একটি কবিতায় আমি এক মন্তব্য করেছিলাম একটু ব্যঙ্গ সহযোগে। স্রেফ খারাপ কবিতা হলে কোনো মন্তব্যই করতাম না, কিন্তু এতে দুর্বোধ্যতা এনে তাকে মহান কবিতার রূপদানের একটা প্রচেষ্টা ছিলো। এটা কিছু নতুন কথা নয়, আমরা সবাই এই লোভের শিকার হই কখনো না কখনো। কিন্তু নতুন লেখক বলেই একে বাহবা দেওয়ার কারণ থাকে না। যাই হোক, অচিরেই সে কবিতাটিকে ঘ্যাচাং করা হলো। অঙ্কুরোদ্গমের সময় এতোটা কড়া রোদ হয়তো অনাকাঙ্খিত ছিলো।
পাঠক হিসেবে বানান শুদ্ধ করতে আমার আপত্তি নেই যদি হাতে সময় থাকে। তবে যে কথা লেখায় বলেছি, দু ধরণের লেখায় সে কাজ করি না: এক, যদি লেখা কাঙ্খিত মানের এতো নিচে হয় যে সেখানে এই কাজ পণ্ডশ্রম হবে, এবং দুই, লেখকের যদি মনে হয় বানান শুদ্ধ-অশুদ্ধে তাঁর কিছু এসে যায় না, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আর তাঁর লেখা পড়িও না।
হুঁ চিন্তার বিষয়
...........................
Every Picture Tells a Story
চিন্তার কী আছে মুস্তাফিজ ভাই? এই জাতের লেখকরা তো আমাদের মতো সাধারণ পাঠকদের জন্য লেখেন না, কাজেই এমন পাঠক দু-চার জন হারালে তাদের কোনো হেলদোল হবে না।
সুন্দর বিশ্লেষন। কিছু মন্ত্যব্যঃ
সত্যি বলতে কী, আমাদের সবারই একটা টার্গেট অডিয়েন্স আছে ......
আমরা যারা মোটামোটি নীরব পাঠক তাদেরও কিন্তু কিছু টার্গেটেড লেখক আছে। কখনো না কখনো হয়ত পড়া হয় সব লেখাই - কিন্তু সময় যখন বাধা হয়ে দাঁড়ায়, টার্গেটেড লেখকরাই প্রাধান্য পায়। সত্যি বলতে কী, আমার সচলায়তন পাড়ার নেশাটা কিন্তু এই টার্গেটেড লেখকের লেখা পড়তে পড়তে হয়েছে। কিছু কিছু পুরানো লেখা আমি এখনো পাড়ি। আমি নিজে খুব উপভোগ করি সচলদের 'সেন্স অব হিউমার'।
এ ব্যাপারে আমি আপনার সাথে পুর্নসহমত যে ব্লগের আর একটা গুরুত্বপুর্ন দিক হল এর ইন্টারঅ্যাকটিভিটি - পাঠক এবং লেখক সবার জন্য যা সমভাবে প্রযোজ্য।
মডারেশনের ব্যাপারটা আমার মনে হয় সচলায়তনের একটা আলাদা একটা শক্তি। প্রত্যাশা থাকবে মডারেশনের এই মান টা সবসময় ধরে রাখা হবে।
বানানের ব্যাপারটাও বেশ গুরুত্বপুর্ন। আমার পেশাগত জীবনে, যেখানে শুধুই ইংরেজী ভাষাই প্রযোজ্য, বানানের ব্যাপারে আমি যাকে বলে 'অতিরিক্ত সচেতন'। এই আমিই যখন মাস খানেক আগে 'অভ্র' র কল্যানে একটু আধটু বাংলা লেখছি, অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম আমার মাতৃভাষার বানানের ব্যাপারে আমি কতটা কাঁচা। বাংলা বানানের ব্যাপারটা আমি মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা হিসাবেই দেখতে চাই।
মন্তব্যও উপভোগ করি আমি - আমি নিশ্চিত যারা লেখালেখি করে তাদের জন্য এটা আরো গুরুত্বপুর্ন। সংবেদনশীলতার প্রশ্নটাতো আছেই - কিন্তু এই সংবেদনশীলতা ব্যাপারটার ভিতরদিয়েই কিন্তু আপনি আপনার সহ-লেখক সম্বন্ধে ভাল জানতে পারবেন। (আবার কাজেও লাগে কখনো কখনো - জীবনের 'কিছুটা অপরিনত' বয়সের একটা সময়ে একটা বড় দলে আমিই ছিলাম একমাত্র 'সিলেটি'। কিছু বন্ধু কিছু 'সিলেটি' উচ্চারণ নিয়ে কঠিন কঠিন সব মন্তব্য করত যা ছিল 'অসংবেদনশীলতার'ই নামান্তর। ছয় মাস পরে দেখলাম আমি সেইসব উচ্চারণ নিয়ে সচেতন।
ধন্যবাদ লেখার জন্য। ভাল থাকুন।
আপনার বিশদ মন্তব্য খুব ভালো লাগলো। পছন্দের লেখক তো থাকবেনই, আমাদের পছন্দের ভিন্নতাকে খাদ্য যোগানোর মতো বৈচিত্র্য সচলায়তনের আছে এইটা আশার কথা।
সংবেদনশীলতা বা তার অভাব, এটার সমস্যাটা বোঝা যায় নিজে সংখ্যালঘু হলে। অন্যকে বদলানোর কঠিন কাজটা করতে মন চায় না বলে মানুষ পরিমণ্ডল বদলে ফেলে, মেশে এমন সার্কেলে যেখানে মাইনরিটির যন্ত্রণা ভুগতে না হয়। কিন্তু যদি সার্কেলটা আপনার পছন্দের হয়, যেমন সচলায়তন? বা বদলানোর সুযোগ না থাকে, যেটা আপনার উদাহরণে ঘটেছে? কাজেই ভালো লাগুক না লাগুক, এই অপছন্দের কাজটা থেকে অব্যাহতি নেই।
আপনার নতুন ছবিটা সুন্দর হয়েছে। আপনার নিকের সাথে বেশ যায়
ধন্যবাদ শাহেনশাহ সিমন।
বানান নিয়ে অসতর্কতা এবং অবহেলা খুবই বিরক্তিকর এবং ক্ষমার অযোগ্য। এখানে একটু সাফাইও দিতে হচ্ছে কারণ আমার লেখায় বানান সব সঠিক তাও নয়। তবে আপনি যেটা বললেন, শেখার ও ভুল শুধরে নেবার আগ্রহ, সেটা থাকা খুব দরকার। সচলায়তনের শের-এ-বানান উদ্যোগটা কিন্তু দারুন ছিলো!
সচলের প্রকাশিত সব লেখাই প্রকাশযোগ্য নয়, এটা আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি। কিন্তু সমষ্টিগত ভাবে একটা সমস্যা আছে। দেখা যাবে আমার যেই লেখাটা ভালো লাগেনি সেই লেখাটাই একট বড় অংশ খুব পছন্দ করছে। অনেক লেখা হয়তো আমার পড়তে আগ্রহ হয় নি, জোর করে পড়া শুরু করলেও এক প্যারার বেশি এগুতে পারিনি, সেই একই লেখাতে দেখেছি পাঠকের উচ্ছ্বসিত মন্তব্য। এজন্য সচলে লেখার মানটা বেশ বড় বিস্তারেই গন্য করা হয় বলে আমার বিশ্বাস।
লেখায় যত্নের কথা আপনি যেটা বললেন তার সাথে আমি একমত। সেক্ষেত্রে কতৃপক্ষ পোস্টদাতাকে জানিয়ে দিতে পারেন যে, "আপনার লেখা ভালো হয়েছে, কিন্তু কিছু পরিমার্জন দরকার। বানান এবং অন্যান্য ঠিক করে লেখা আবার জমা দিন।"
সচলদের নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে যা বলেছেন তার সাথে সম্পূর্ণ একমত।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল
বিষয়ের ভিন্নতার কারণে এক-একটি লেখা পাঠকভেদে জনপ্রিয়তার বিভিন্ন স্তরে থাকলে কোনো বক্তব্যই থাকতো না। এই প্রসঙ্গ আসে এই কারণে যে অনেক সময় লেখার মান তেমন ভালো না হলেও অনেকে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে যান। অবশ্যই এটা পাঠকের স্বাধীনতা, এবং এতে হস্তক্ষেপের প্রশ্নই ওঠে না। যেমন তারা দাগানোর ব্যাপারটা। লক্ষ তারা দেবো না কোটি সেটা একান্তই আমার ব্যাপার। তবে কি না অনেককেই দেদার তারা দিলে তারার মূল্যটা আর থাকে না। দেশী টিভিতে গানের প্রতিযোগিতায় বিচারকেরা আজকাল দেখি উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেককেই দশে দশ দেন, সেই রকম আর কি। শেষে পয়েন্ট ব্যাপারটা একটা লৌকিকতার মতো বাহুল্যে পর্যবসিত হয়।
বানান ঠিক করার দায়িত্ব (এমন কী স্রেফ লেখককে জানান দেওয়াটা, যেমন আপনি বলেছেন) মডুদের ঘাড়ে দিতে ইচ্ছা হয় না, তাঁদের এমনিতেই অনেক কাজ করতে হয়। তবে লেখার মান নিয়ে তাঁদের আরো অনেক কড়া হওয়াটা দরকারি বলেই আমার মত। সচলের মান বজায় রাখতে বা উন্নততর করতে এ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখি না। ব্যক্তিগত জার্নাল হলেও তার সাহিত্যগুণ থাকাটা জরুরী।
অজ্ঞতার কারণে প্রচুর বানান ভুল করি। এবং কেউ ধরে দিলে খুশি হই। শিখতে চাই।
যদিও, বেশ কিছুদিন যাবত লেখার নেশা পাচ্ছে না
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমি আগেও এক জায়গায় বলেছিলাম, আমি হাতে সময় থাকলেই মিনিমাগনা প্রুফ রিডিং করে দেবো, শুধু একটাই শর্ত, লেখার মান ভালো হতে হবে।
লেখার আগ্রহ নিয়ে আমার টোটকাটা বলতে পারি, লেখার ইচ্ছে না হলে (অথচ লিখতে চান এমন হলে) একটা খুব কঠিন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। চ্যালেঞ্জের অভাবে অনেক সময় লেখালেখি পানসে লাগে, এই ভাবে সেই বাধাটা কাটানো যায়।
আমার নিজের লেখনিজট বাধলে আমি কিছু একটা অনুবাদ করতে বসে যাই। আপনার টোটকাটাও কাজে লাগিয়ে দেখবো।
আর এখন থেকে লেখার মান একটু ভালো হয়েছে মনে হলেই আপনাকে পাঠিয়ে দেব প্রুফ রিডিং এ!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
প্রুফ রিডিংয়ে আপত্তি নেই হাতে যখন সময় থাকে। তবে আপনি তো অতিথি নন, লিখে পোস্টিয়েই দেন না, পরে ঠিক করে দিতে পারবেন যখন।
পাঠুদা'র কলামিস্টিয় লেখাটা ভালো লাগলো। শুধু বই পড়লেই হয় না, নিজেরও কিছু থাকতে হয়। আপনার মত সব্যসাচী হতে শুধু বই পড়াই যথেষ্ট না।
এই লেখাটা পড়ে কিছুটা অতৃপ্তি রয়ে গেলো। আরও অনেক রকম ব্যাপার ছুঁয়ে যাবেন ভাবছিলাম।
শৌখিন ব্লগারু হিসেবে আমার কাছে সরাসরি মিথষ্ক্রিয়া দারুণ লাগে। আপনার লেখা পড়ে মনে করার চেষ্টা করছিলাম, আমার টার্গেট অডিয়েন্স কারা। ভেবে তেমন কিছু না পেলেও মনে মনে একটা তালিকা দাঁড়িয়ে গেলো। কিছু মানুষ অধমের লেখা পড়লে/মন্তব্য করলে সেটা আমলে নেই বেশি। এটা একদম ঠিক বলেছেন।
আমি খোলামেলা ভাবেই মডারেশনের পক্ষে। সচল ভালো লাগলে সেজন্য মডারেশনকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। এখানে সবাই অনেক ভদ্র, নম্র, শালীন। উষ্কানি ও কুপ্রবৃত্তিগুলোকে ছেঁটে না দিলে এই আমাদেরই অন্য রূপ দেখা দিতো।
মাথা গরম করে মন্তব্য করার দলে অধমের থাকা উচিত। কিছু মন্তব্য ফেরত নিতে মন চায়। কিছু দেখে মনে হয়, আরেকটু ভালো ভাবে গুছিয়ে লেখা যেতো। আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগে তেমনই কিছু কথা বলেছিলাম। ভুল বলিনি, কিন্তু ভুল ভাবে বলেছি। প্রকাশটা খুব বেশি কাঁচা ছিলো।
বানান শুদ্ধি অভিযান আমার খুবই প্রিয় ছিলো। নিজেও অনেক কিছু শিখেছি। মুজিব মেহদী ভাইয়ের কাছে আমি খুবই মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ এই প্রকল্পে অবদানের জন্য। তবে, এবার অন্য একটা কিছুতে হাত দেওয়া যায়। অনেক, অনেক দিন আগে শিমুল ভাইয়ের একটা কথা থেকে মনে হয়েছিলো। শুদ্ধ বানান তো অনেকেই জানি, শব্দের শুদ্ধ প্রয়োগ জানি কি? কথ্য ভাষায় অনেক শব্দই বে-জায়গায় ব্যবহার করি। সেগুলো ইদানীং লেখায়ও চলে আসে। এটার উপর আলোকপাত করা যায়।
পরিশেষে, "অপব্যবহার যে ভাবে হতে দেখেছি" হবে, নাকি "যেভাবে"? আমি দ্বিতীয়টা শুদ্ধ বলে জানি, কিন্তু প্রথমটা প্রচুর দেখি। খটকা অনেক দিনের।
সব্যসাচী বলে ভয়ানক লজ্জা দিয়েছেন, তবে ধন্যবাদ দেবো ভালোবেসে আমার লেখা পড়ার জন্য।
এই লেখায় অনেক কিছু বাদ গেলেও আশা আছে মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যে সে সবের অনেক কিছুই ছুঁয়ে যাওয়া হবে। এ লেখাটা লেখার সময় সেই রকম আশাই ছিলো।
আমি মডারেশনের ঘোরতর সমর্থক, এ নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। এতে সবটাই লাভ, কোনো ক্ষতি নেই। কেন বলছি এ কথা? লক্ষ্য করে দেখবেন অশালীন ভাষায় যাঁরা লেখেন বা মন্তব্য করেন তাঁদের নিজেদের লেখার সাহিত্য মান অত্যন্ত নিচু। তাঁদের লেখা ও মন্তব্য দিনের আলো না দেখলে আখেরে ভালোই হয়। উত্তপ্ত মস্তিষ্ক বয়সের ধর্ম হলেও তাকে অপ্রগ্রাহ হতে না দেওয়াটা প্রয়োজনীয়।
আমি বানান নিয়ে যা জানি তা সম্পূর্ণ ব্যবহার ভিত্তিক, ঠিক ভুল বলতে পারি না অনেক সময়ই। যেভাবে-টাই বোধ হয় ঠিক, তবে লজিক্যালি যে ভাবে কথাটাকেও ভুল বলতে পারি না।
একটু অন্য কথা বলি, আজকাল যে লিখছেনই না প্রায়, সে বিষয়ে কী বক্তব্য? আপনার পাঠককুলের দায়িত্ব কে নেবে?
মডারেশন নিয়ে আমি একটা কথা আগেও বলেছিলাম। প্রতিটা মানুষের মধ্যেই সুরাসুর আছে। আমাদের কুপ্রবৃত্তিগুলোর বের হয়ে আসতে কোনো প্রণোদনা লাগে না, কিন্তু সুকুমারবৃত্তিগুলোর প্রস্ফুটনের জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। এই কষ্ট, এই চ্যালেঞ্জের ভূমিকা ব্যাপক। বিশেষ করে আপনার এই চ্যালেঞ্জের কথার সাথেই আমি বেশি একমত।
লেখার মান নিয়ে আমি তেমন একটা আপত্তি করি না কারণ, নতুন অবস্থায় "নতুন" এবং "ভালো" লেখা দেওয়া বেশ কষ্টকর। সচলের গড় মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ লেখা দিতে গেলে হয়তো পুরনো লেখা ঘাঁটতে হতে পারে অনেককে। অনেকে জমিয়ে গল্প বলতে পারেন, কিন্তু অনেক দিন ধরে লেখালেখি থেকে দূরে। তাঁদের জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন খাপ খাইয়ে নিতে। এসব বিবেচনায় প্রথম দুয়েকটা লেখা একটু ঝুলে যেতেই পারে। আশার ব্যাপার হলো, প্রায় প্রত্যেক অতিথিই দারুণ উন্নতি করেছেন নিজেদের লেখার। অশালীন লেখার প্রসঙ্গে একদম পুরো সহমত
মাত্র দিন কয়েক হয় কলাম্বিয়ায় এলাম। এখনও নিজের বাসা পাইনি। এই মাসটা আরেক জনের বাসায় সাবলেট আছি। অগাস্ট থেকে নিজের ঘরে উঠবো। তখন হয়তো লেখায় হাত দিতে পারবো আবার। এখন তো একেবারেই যাযাবর। রিসার্চের কাজেও অকূল পাথারে আছি। কী সব বলে প্রোফেসর, মাথার উপর দিয়ে যায়!
বাসা নিয়ে আমার দশাও খানিকটা ঐ রকমই। নতুন বাসা পাবো অগাস্টের শেষে, আর দেড় মাসের ভ্রমণে বেরিয়েছি বলে পুরোনো বাসা আগেই ছেড়ে দিলাম, লিজ শেষ যখন হবে তখন সেখানে থাকতে গেলে বেড়ানোর মেয়াদ ছোটো হয়ে যেতো। কাজেই সব আসবাবপত্র স্টোরেজে তুলে দিয়ে এলাম। এতো বার বাসা বদল করতে করতে হয়রান হয়ে গিয়েছি। মেজাজটা এ নিয়ে একটু খারাপ আছে, তিক্তভাবটা কাটলে হয়তো সচলে একটা 'বাড়ি বদলে যায়' লিখে ফেলতে পারি।
দেড় মাসের ভ্রমণ নিয়ে কমপক্ষে ১০টি লেখা চাই। নাহলে খেলবো না। আর না বলে বাঙ্গালী-বাংলাদেশি নিয়ে লিখবেন? কই? ওহ, আর প্রেসিডেন্সী নিয়ে লেখা কই?! কই কই কই?
এই দেড় মাস ঠিক সেই অর্থে ভ্রমণ নয়, যদিও টুকটাক ঘোরাঘুরি হবে। লেখার ইচ্ছা আছে, তবে অতোগুলো হবে না বলাই বাহুল্য।
দুই বাংলা নিয়ে কিন্তু লিখবো বলি নি, আপনার মেইলের উত্তর দেবো এটুকু বলেছি।
প্রেসিডেন্সি নিয়ে ঠিক নয়, তবে মেমোয়ার গোছের লেখা হবে, এক পর্বেই আপাতত ঝুলে আছে সেটা।
এখন একটা মেমোয়ার পড়ছি, সেটা শেষ করে লিখবো সে বইটার কথা।
মডারেশন নিয়ে আলোচনায় একটু যুক্ত করতে চাই।
মডারেশন আর সম্পাদনা এক নয়। মডারেশনের উদ্দেশ্য - আমি যা বুঝি - ব্লগের মান ধরে রাখা আর সম্পাদনা - লেখা মানসম্পন্ন কিনা তা আগে যাচাই করা। মডারেশন থেকে সম্পাদনায় শিফট করলে আমার ধারনা ব্লগ অন-লাইন সাহিত্য পত্রিকায় পরিনত হয়।
দ্বিতীয়ত, ব্লগে আমরা কাদের লেখা আশা করি সেটাও বিবেচ্য। অনেকে শুরু থেকেই প্রচুর ভালো ও পরিনত লেখেন। অনেকে লিখতে লিখতে পরিনত হন। অনেকে কখনো ভালো , কখনো খারাপ লেখেন। আবার যখন খারাপ বা ভালো বলি তা তখন নান্দনিকতার আপেক্ষিকতাকেও নির্দেশ করে। সুতরাং বিচার প্রক্রিয়াটাও খুব সার্বজনীন নয়। তা হওয়াও কি সম্ভব? পাঠকপ্রিয়তা একটা মাপকাঠি হতে পারে হয়তো।
তবে সচলায়তন অনেক বেশী ইন্টারএক্টিভ - এটা এর বড় গতিশীলতা। লেখা ও পাঠক
বৈচিত্র্যও আছে। তাই লেখা কেমন হলো তার একটা মোটামুটি ঋদ্ধ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় বৈকি। তাই একে পড়ি, এতে লেখার চেষ্টা করি।
আপনার বক্তব্যের সাথে আমি এতোটাই সহমত যে আলোচনার অবকাশও নেই। আপনি আমার মনের কথাগুলোই বলেছেন। শুধু এ টুকু বলি, নান্দনিকতা ও সার্থকতা আপেক্ষিক হলেও সম্পূর্ণ অ্যাবস্ট্রাক্ট নয়, এবং কিছু লেখার মান বাস্তবিকই তেমন ভালো হয় না। মডারেশন সেগুলোর ক্ষেত্রে করা যেতেই পারে বলে আমার ধারণা।
পাঠকপ্রিয়তা নিয়ে একটা না-বলা কথা বলি বরং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা ভালো জিনিস, এবং এ নিয়ে লেখা সচলে খুবই পাঠকপ্রিয় হয়। শুধু সে কারণেই এই বিষয়ের সব লেখাকে ভালো লেখা বলতে দ্বিধা হয়। আমার মতে সচলদের দায়িত্ব এই বিষয়ক লেখাগুলোকে আরো ভালো করে লেখা, বিশেষত যখন জানি যে অনেকেই পড়বেন।
লেখাটা দারুণ লাগলো। পাঁচ না দিয়ে পারলাম না।
আমি মোটামুটি ৮৫% একমত।
তাইলে ঐ ১৫% নিয়া একখান লেখা দ্যান শিগগির!
থাংকু।
বানানে বিশেষজ্ঞ না হলেও সঠিক বানানে আগ্রহ অনেক ... তার একটা কারণ হল উৎকর্ষবাদীতা (perfectionism) আর অন্য প্রধান কারণটি হল এই ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা। তাই পোস্টের বানান শুদ্ধ করার পরামর্শ আসলে লজ্জিত এবং খুশি হই। ভুল বানানগুলো সকলের সামনে দাঁত কেলিয়ে আছে -- ভাবতেই খারাপ লাগে।
মডারেশন খুবই দরকারী এবং সমর্থন করি। কারণ আমরা সমষ্টিগতভাবে সেইরকম সভ্য হতে পারিনি। সচলায়তনের মডারেশনকে সমর্থন করি -- না করে উপায় নাই - কারণ, সমর্থন জানিয়েই সচল হতে হয়।
আপনার লেখা ভাল লেগেছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
একেবারে খাঁটি কথা বানানের ব্যাপারে বলেছেন। মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাটুকু থাকে অনেকেরই যাঁরা লিখতে আসেন, কিন্তু নিখুঁত লেখার প্রতি আগ্রহটায় আমাদের ঘাটতি আছে। ভাষা যোগাযোগের মাধ্যম বলেই যে কোনো মতে ভাবটুকু প্রকাশ করতে পারলেই কেল্লা ফতেহ, তা বোধ হয় ঘটনা নয়। পাঠক যে বানান পড়ে অভ্যস্ত তার হেরফের হলে পড়তে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়। লেখক সে দায়িত্ব কোনো অজুহাতেই এড়িয়ে যেতে পারেন না, ব্যক্তিগত জার্নাল গোত্রের ব্লগ হলেও নয়।
প্রবাসে থাকার সময় দেখেছি, ভারতীয়রা (আমি বাংলাদেশি প্রায় কাউকেই চিনি না বলে মন্তব্য করতে পারছি না) যথেষ্ট রেসিস্ট মন্তব্য নিজেদের সার্কেলে করে থাকেন, মূলত গাত্রবর্ণের ভিত্তিতে। এটা এক ভয়াবহ অভ্যাস, যদিও এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ফল কিছু হতে দেখি নি। সচলে আমার একটি লেখায় 'বাঙাল' শব্দের ব্যবহার নিয়ে এক পাঠক আহত হয়েছিলেন, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আজকের দিনে এটা আদৌ অবজ্ঞাসূচক নয়, তপন রায়চৌধুরীর বইয়ের নাম দেখেও তার খানিক আন্দাজ পাওয়া যায়। আমি লেখায় খারাপ ব্যঞ্জনার্থে ব্যবহারও করি নি সে শব্দ। তারপরে এক সচল দেখালেন এক অনেক পুরোনো লেখায় কলকাত্তাই লোকেদের নিয়ে আপত্তিকর একটি শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছিলো। সেখানে ব্যঞ্জনাও সেই রকমই ছিলো। যিনি লিখেছেন তিনি তো লিখেছেন, কিন্তু পাঠক হিসেবে আমাদের কর্তব্য সেটা শুধরে দেওয়া। বানান ভুল ধরিয়ে দেবার চাইতে এর গুরুত্ব আরো অনেক বেশি। আমার নিজের মত হলো, সচলায়তনের মতো ফোরামে এই নিয়ে লিখিত গাইডলাইন থাকা আবশ্যিক।
আপনার ভালো লেগেছে লেখা, জেনে ভালো লাগলো।
বাংলাদেশিরাও করেন। তবে কনটেক্সটে নেই বলে ঠিক 'ভয়াবহভাবে' বিরক্ত হই না। তবে বিরক্ত হই বেশ।
মডারেশন, অনলাইনে মানুষের আচরন এবং অনলাইন সমাজ নিয়ে একটা বিরাট লেখা লিখব বলে কয়েকটা পেপার পড়েছিলাম। এ নিয়ে একটা লেখা এখনও ড্রাফট বক্সে পড়ে আছে। সময়ের অভাবে লিখা হয়ে উঠে নাই।
অনলাইন ব্লগে এবং ফোরামে প্রচুর মানুষ নিজের আইডি লুকিয়ে আসেন। যে মানুষটা সমাজে অতিশয় ভদ্র এবং নিরীহ সেই মানুষটা ইন্টারনেটে অনলাইন নিকের আড়ালে ভয়াবহ হয়ে উঠেন। এটা কেন হয়?
যে কারনেই হোক মডারেশনের মাধ্যমে এটা ঠেকানো সম্ভব। আর মডারেশন আছে বলেই সচলায়তনে লেখকরা নিজ নিকে লিখেন এবং ব্যক্তি জীবনের মতো অনলাইনে জীবনে "এক্সপেক্টেড" আচরন করেন। এতে করে অন্যান্য নিরীহ ব্লগাররাও নিরাপদ অনুভব করেন। সচলায়তনের সেইফটি বলয় এভাবেই তৈরী।
এছাড়াও কিছু মানুষ আছেন যারা নিজ নিকে লেখলেও:
১। সময়ের সাথে বদলে গিয়ে অথবা অবস্থা বিশেষে অতিরিক্ত সেনসিটিভিটি দেখান। যেমনঃ ধর্ম বিষয়ে কেউ কিছু বললেই তিনি মনে করেন সেটা প্রতিবাদ করা তার দায়িত্ব। এটাকে অনেকে "ছাগুম্যানিয়া" বলে থাকেন।
২। নিজেকে জাহির করার জন্য ব্যস্ত হয়ে যান।
ইত্যাদি...
এইসব ক্ষেত্রে মডারেশনের দরকার পড়ে। তাছাড়া একটা ন্যুনতম মান তো ধরে রাখাই লাগে, না কি কন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি যে মডারেশনের ঘোর একবগ্গা সমর্থক সে কথা অনেক বারই বলেছি। মানুষ অনেক রকমের হয়, সবাইকে এক জায়গায় আনতে গেলে অনেকের জন্যই বাইরে থেকে সংযম ও নিয়ন্ত্রণ আমদানি করতে হয়। তথাকথিত অন্য ব্লগসাইটটিতে যে ভাবে সরাসরি গালি ব্যবহৃত হয় তার পরে অনিয়ন্ত্রিত প্রকাশ ব্যবস্থার সমর্থন করতে পারি না। অন্য এক দুনিয়ায় যেখানে মানুষ সভ্যভব্য আচরণ করবে সেখানে সে সব চলতে পারে, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা সকলে রুচির বিচারে এখনো সেই স্তরে পৌছতে পারি নি।
আপনি নূন্যতম মান ধরে রাখার কথা বলেছেন। আমি এই নূন্যতমকে আরো উপরে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী। কম্পিটিটিভ পরিমণ্ডলে সকলেরই লেখার মান বাড়ে। এটা মডারেশনের মাধ্যমে কিছুটা হয়। তবে পাঠকদের একটা দায়িত্ব আছে যেটা ভালোমানুষি দেখাতে গিয়ে আমরা অবহেলা করি। মুখের উপর নিন্দা করা যদি কুরুচিকর লাগে তাহলে অন্তত খারাপ বা মাঝারি লেখার প্রশংসা করাটা কমাতে হবে। ফিডব্যাক যে মাধ্যমে এতোটা গুরুত্বপূর্ণ সেখানে সৎ থাকাটাও জরুরী, এমন কি ভদ্রতার মূল্যে হলেও।
ধর্ম-জাত-দেশ ইত্যাদি নিয়ে সচলে লিখিত নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আপনার মতামত জানার কৌতূহল হয়।
অনেকটা একমত।
তবে ১) এর সাথে কিছুটা দ্বিমত। ছাগুম্যানিয়ার জন্য মডারেশন ঠিক আছে। তবে ধর্ম নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে যারা গঠনমূলক সমালোচনা বাদ দিয়ে খোচা দিয়ে লেখেন তাদের জন্য ও কি মডারেশন জরুরী না?
অবশ্যই দরকার। এরা মৌলবাদ বিরোধী ঘরানার এক্সট্রিমিস্ট। যে কোন ধরনের এক্সট্রিমিজমই বিপদজনক।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মডারেশন, অনলাইনে মানুষের আচরন এবং অনলাইন সমাজ নিয়ে আপনার লেখা কবে পাচ্ছি ?
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই, মডারেশন ও অনলাইন সমাজ বিষয়ে আপনার পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় আছি।
--১০০% একমত। সমাধানের অযোগ্য ধরণের বিতর্ক উস্কে দেয়া সব ধরনের লেখা ও মন্তব্য মডারেশনের কোপে পড়া উচিত। ধর্ম তার মধ্যে একটা। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী যে যার মতামত নিয়ে নিজের মতো থাকুক, নিজের মতো চর্চা করুক, সেটাই সাস্থ্যকর। কিন্তু জায়গায়-বেজায়গায়, প্রাসঙ্গিক- অপ্রাসঙ্গিকভাবে একে অন্যের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া খুব বাজে একটা অভ্যাস। এতে পরিবেশ নষ্ট হয়, ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ জন্মায়।
সচলের মডারেশন আমি কৃতজ্ঞচিত্তে সমর্থন করি।
আর মূলোদাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। উনি সচলের অলংকার আর আমাদের অহংকার।
এমন দেদার প্রশংসা আপনিই করতে পারেন। এমন করে মানুষকে লজ্জা দিতে আছে?
ধর্ম নিয়ে অন্য একটি মন্তব্যের উত্তরে লিখছি নিচে।
উঁহু, ডোন্ট গেট মি রং। আমি যেটাকে ঠিক বলে জানি সেটা আমি প্রচার করব এবং অন্যকে "কনভিন্স" করার চেষ্টা করব। অন্যরাও তাই করবে। এই জায়াগাটায় সামাজিক "ফ্রিকশন" থাকবে, তর্ক বির্তক চলবে। কিন্তু ছেলেমানুষী, অযৌক্তিক গালিবাজী এইগুলি আসলেই বিপদ।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
চমৎকার কথা বলেছেন। তবে অভিজ্ঞতা বলে, ধর্ম বা স্বাজাত্যবোধ (পেট্রিয়টিজম) নিয়ে তর্ক বাঁধলে আলোচনা ভব্যতার গন্ডি ছাড়াতে সময় নেয় না, এবং এ ঘটনা প্রতিটা তর্কেই ঘটে থাকে। তাই এই ঝামেলা এড়াতে অনেকে আলোচনাতেই যান না, যে যার মতো থাকার কথাটা মামুন ভাই সে প্রসঙ্গে বলেছেন বলেই আমার ধারণা।
মানুষের অনলাইন আচরণ নিয়ে আপনার লেখাটার অপেক্ষায় রইলাম৷ আমি নিজেও এই নিয়ে কিছু কিছু পড়াশোনা করেছি৷ খুব মোটাদাগে বলতে গেলে, অনেকেই অনেক অপূর্ণ ইচ্ছা মিটিয়ে নেন নেটের অ্যানোনিমিটির আড়ালে৷ আপনি লিখলে বিশদে আলোচনা করা যাবেখনে৷
--------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
বানান ভুলের জন্য একটা ভালো লেখাকেও একতারায় নামিয়ে আনবেন ? আমি তো মৌলিকত্ব, বিষয়, যুক্তি আর সংগঠনকেই বেশী পাত্তা দি।
আপনার পছন্দের বানান রীতি কিছুটা ধ্রুপদী - শব্দের অন্তে অনুচ্চারিত য-ফলা অনেকে পরিহার করেন। 'কী' কি আসলেই শুদ্ধ? 'কোন' বানানে কি হসন্ত প্রয়োজন? এ্যা ধ্বনি কিভাবে সৃষ্টি করবেন ? 'স্বতস্ফূর্ত' কি বিসর্গবর্জিত?
ণ-ত্ব আর ষ-ত্ব বিধির দিন কি শেষ হয়ে আসে নি ?
অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও ( নাকি 'এখনো' ) সুনির্ধারিত হয় নি।
কোরিয়ার এক রাজা প্রায় রাতারাতি বর্ণমালা (ও বানান) সরল করে তাদের ভাষায় এক নতুন যুগের সূত্রপাত করেন। কোরিয়ানরা খুব কৃতজ্ঞ, দেখলাম।
আমার বোঝানোর ভুল হয়েছে, দুঃখিত। বানান ভুল থাকলেই আমি এক তারা দিই না। দিই কেবল তখনই যখন দেখি লেখক অযত্নে অবহেলায় কোনো রকমে একটা কিছু লিখে আমাদের পাতে ছুঁড়ে দিয়েছেন। যে বানানটা জানি না সেটা তো ভুল হতেই পারে, তাতে পাঠক হিসেবে আমি মনঃক্ষুণ্ণ হই না। কিন্তু পাঠককুলকে প্রাপ্য সম্মান দিতে যে লেখকের আপত্তি থাকে তাঁর বেলায় পাঠক হিসেবে এই আমার প্রতি-অপমানের পন্থা।
এখানে অনেক নতুন মানুষ লেখক হিসেবে যোগ দেন, তাঁদের বানান ভুলে রূঢ়তা দেখাবো এতোটা অভব্য নই। বানান লিখতে লিখতে ক্রমশ শুদ্ধ হয়ে আসে, কাজেই প্রথম থেকেই সব ঠিকঠাক হবে এতোটা চাহিদাও নেই। এ ক্ষেত্রে আমি বিবেকানন্দের পলিসিটা মানি, ফল না দেখে অভিপ্রায় দেখি।
য-ফলা পরিহার করা কি ধ্রুপদী, না কি আধুনিক? আমি মূলত পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্যে যে ভাষা ব্যবহৃত হয় সেটা মানি, সেটা বাংলা আকাদেমির থেকে খুব আলাদা নয়। তবে আনন্দবাজারের মতো সব কিছুকে হ্রস্ব কার করে দেওয়াটা অনুসরণ করি না (যেমন তির, আমি তীর-ই লিখি)।
সচলে সাম্প্রতিককালে বানান নিয়ে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো সেখানে এই সব প্রশ্নের অনেকগুলোরই উত্তর মিলেছে। আমি আমার ধারণা মতো বলি, সব ঠিক হবে কি না জানি না। কি ও কী দুটোই ঠিক ধরা হয়, অর্থভেদে প্রয়োগ হয়: তুমি কি কেবলই ছবি/কী আশায় বাঁধি খেলাঘর। কোন দেশে তার বাস, এই অর্থে হসন্ত দেওয়াই উচিত যেহেতু কোনো শব্দকে অনেকে হসন্ত ছাড়া কোন বলে লিখতে পারেন। আমি খুব একটা হসন্ত দিই না, এ বিষয়ে লেখকেরা মোটামুটি শিথিল, আমি সেই ফাঁকির সুযোগটা নিই। তবে কোনো শব্দের শেষের ও-কারটা দিই সব সময়ই।
এয়া ধ্বনি নিয়ে রবীন্দ্র প্রকাশনায় দু রকম এ-কার লাগানো হতো, যেতে এবং কেমন এই দুই ধ্বনি বোঝাতে। একটায় উপরে বাঁ দিকে ছোটো একটা মাত্রা থাকতো, অন্যটায় থাকতো না। এখানে সেটা অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া কিছু জিনিস কনটেক্সটের উপর ছাড়া যেতে পারে হয় তো।
স্বতস্ফূর্ত বিসর্গ-বর্জিত নয়, ওটা আমার ভুল, দুঃখিত। লেখার সময় মনে হয়েছিলো বিসর্গটাই স্ফূর্ত-এর শুরুর যুক্ত স-টা দেয়, তখন ভাবি নি যে স্ফূর্ত-তে আগেই স রয়েছে।
আমরা উচ্চারণে ন/ণ অথবা স/শ/ষ-এ পার্থক্য করি না বলেই ণত্ব - ষত্ব অপ্রয়োজনীয় ঠেকে, এর প্রয়োজন আছে কি না এর উত্তর দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। আমি নেহাতই বিজ্ঞানের ছাত্র, ভাষাতত্ত্ব নিয়ে বলি কী ভাবে। তবে অবাঙালি ভারতীয়রা হিন্দিতে যখন গণেশ শব্দে মূর্ধন্য ণ সঠিক ভাবে লাগান তখন আমাদের আলস্যে গর্ব হয় না। অনেক ভাষায় (যেমন ওড়িয়া) আরো অক্ষর আছে, যেমন একটা অতিরিক্ত ল, যেটার উচ্চারণ ল আর ড়-এর মাঝামাঝি হয়, উদাহরণ পখাল (পান্তা)। এ দিকে আমরা অনেকেই ঘোড়া বলতে ঘোরা উচ্চারণ করি।
সংস্কৃতকে নীতির নিগড়ে বেঁধে যেমন এর মরণ ত্বরাণ্বিত করা হয়েছিলো, কোরিয়ার রাজা যা করেছেন তার ঠিক তার বিপরীতে অবস্থান। ভাষার প্রসার যাতে হয় তা-ই করা উচিত। তবে ভারতে বাংলা বানান মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কতদূর প্রভাব ফেলে এ নিয়ে সন্দেহ আছে, কিছু সরকারি কাজকর্ম ছাড়া সব-ই তো ইংরিজিতে হয়। যাঁরা সাহিত্য পড়েন বাংলায়, তাঁরা আমার ধারণা বানানের এই জটিলতাকে মেনে নিয়েছেন। কাজেই সব মিলিয়ে বাংলা ভাষা নিয়ে এমন উদ্যোগের প্রয়োজনটা ভারতে যে তেমন ব্যাপক নয় সেইটা বলতে পারি।
এই মন্তব্যটা একটা পার্ফেক্ট উদাহরন কি করে সচলের ড়্যাশনাল লেখকরা একে অন্যকে "সমঝে" চলেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
পাঠকদা, লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো, আর সেই সাথে লজ্জাও পেলাম অনেক, বানান ভুলের যে সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছি, জানি না কবে সেখানে সাতার কাটতে শিখব, আর লেখতে গেলে যেন আরো বেশী দ্বিধান্বিত হয়ে যাই, আর এত বানান ভুল থাকে যে চক্ষু লজ্জার চোটে কাউকে বলতেও পারি না দেখে ভুল ধরিয়ে দিতে। আর পুরো লেখাটাই আমার জন্যে আলোর দিশারী হয়ে থাকবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
যদি আমার মত জানতে চান তো বলি, বানান ভুল নিয়ে এতো ভাববেন না। লিখতে লিখতে উন্নতি হয়ে যায় বানানের, যদি ঠিক লেখার আগ্রহ থাকে। আপনি আপনার ডাক্তারি জীবনের অভিজ্ঞতার কথা লিখুন, মদ্যপান সংক্রান্ত লেখাটা যেমন। ঐ রকম লেখা পড়তে পাওয়া গেলে এই সব ত্রুটি নিয়ে ভাবি না।
আমার লেখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো।
পাঠকদা, আপনি এবং অন্যান্য ব্লগারেরা অনেক কথাই বললেন, যেগুলোর সাথে একেবারে সহমত।
একটা সম্পুর্ণ অনাবশ্যক কথা বলি। প্রায়শই দেখা যায়, সচলের নিয়মিত লেখকেরা অতিথিদের লেখা কম পড়ছেন বা কমেন্টাচ্ছেন কম। এর পেছনে আপনি যেটা বলেছিলেন-
এটাই কী মূল কারণ বলে মনে হয় ?? না কি টাইম ফ্যাক্টর ??
- সোজা কথায়, নতুন অতিথিদের প্রতি সচল কি বেশি রুক্ষ ?? [পরিচিত অনেক পাঠক, যারা লেখেন না- তাঁদের এই মত । ]
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আপনি যেটা বলেছেন সেটা অনাবশ্যক মনে হলো না, বরং আলোচ্যই বলবো। সময়াভাবের ব্যাপারটা তো আছেই, এবং সেটা অতিথি লেখকদের ক্ষেত্রেও সত্যি। তাঁরাও তো সর্বদা মন্তব্য করেন না, সেটা নজরে না পড়লেও ঘটে তো বটেই। সব সচলের হয়ে বলতে পারি না, আমি আমার অবস্থানটা জানাই। আমি সচলে ঢুকলে নতুন লেখা সব পড়ার চেষ্টা করি। সম্পূর্ণ সৎভাবেই বলি, লেখকের নাম এ ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলে না, দু-এক জন বাদে। ধরুন হিমুর লেখা আমার খুব পছন্দ, কিন্তু সময় কম থাকলে আমি হিমুর লেখা অদূর ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখি, কিন্তু সিরাতের লেখা পড়ি। এটা মূলত ওঁর বিষয়বস্তুর জন্যই হয়, এবং যখন সিরাত অতিথি ছিলেন তখনও এই রকমই করতাম।
যে সব লেখককে কখনও রেসিয়াল মন্তব্য করতে দেখেছি, তাদের লেখা পড়ি না। দু-একবার ব্যতিক্রম হয়, কোনো ভাবে পড়ে ফেললে এবং খুব ভালো লাগলে প্রশংসাও করেছি, তবে পারতপক্ষে পড়ি না। এদের লেখার সমালোচনা একেবারেই করি না। শাসন-বারণ তো নিজের লোকের জন্যেই, তাই না?
কোনো লেখা ভালো লাগলে মন্তব্য করি, সংক্ষেপে হলেও। কবিতা বুঝতে না পারলে মন্তব্য করি না, তাতে কবিতার মাননির্দেশ করার উদ্দেশ্য থাকে না। লেখার মান না ভালো লাগলে মন্তব্য করি না। এটা মোটামুটি মেনে চলি। আপত্তিকর কিছু পেলে মন্তব্যে সে কথা জানাই। আর নতুন লেখকদের লেখা (আমি নিজেও কিন্তু এখানে খুব পুরোনো নই) মোটামুটির নিচে হলে স্রেফ নতুন বলেই পিঠ চাপড়ানোর ইচ্ছা হয় না।
মোটামুটি বোঝাতে পারলাম আমার পলিসিটা?
এখানে টার্গেট পাঠকের ব্যাপারটা কাজ করে। এটা যে কোন ব্লগ মাধ্যমেই দেখা যায়। নতুন লেখককে টার্গেট পাঠক তৈরী করতে সময় লাগে। এই কারনে পাঠক কম পান। সামহোয়্যার ইনে আমার প্রথম দিককার কথা মনে আছে। একটা দুটা কমেন্ট পড়ত, আর সেটার জন্য আমার প্রতীক্ষার পালা শেষ হত না। ব্লগ যত বড় হবে নতুন পাঠকের উঠে আসা ততটাই শক্ত হবে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
প্রায়শই দেখা যায়, সচলের নিয়মিত লেখকেরা অতিথিদের লেখা কম পড়ছেন বা কমেন্টাচ্ছেন কম।
আসলেই কী তাই ? আমার কাছেতো উল্টো মনে হয়।
লেখা হিট হওয়া অথবা প্রচুর কমেন্ট পাওয়া লেখার মানের উপর নির্ভর করে।
খুব টাটকা উদাহরণ হিসাবে রাজর্ষিদা, সিরাত ভাই, মামুন হক ভাই এদের অতিথি হিসাবে করা পোস্টগুলো দেখতে পারেন। এখনো অতিথি সচল সাইফ ভাই, এমি আপু, দুষ্টু বালিকার পোস্টগুলো দেখেন।
এখানে একটু ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আমি কিন্তু অতিথি সচল বলিনি , বলেছি অতিথি। সাইফ ভাই, দুষ্টু বালিকারা কিন্তু স্বনামেই আমাদের কাছে পরিচিত। ...
অতিথি লেখকদের ব্লগে একটু দেখলেই বিষয়টা পরিষ্কার হবে- তাঁরা মন্তব্য একটু কমই পান (অবশ্যই কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া)।
তবে এর মানে যে সচলায়তন অতিথিদের প্রতি বিমুখ, আমার তা মান হয় না। ঐ যে টাইম ফ্যাক্টর- এটাই হচ্ছে বড় নিয়ামক।
শব্দশিল্পীর উত্তর হিসেবে এই মন্তব্য। অতিথিদের কথা বলছেন সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। আমি নিজে এ বিষয়ে পার্থক্য করি না, সত্যিই করি না। তবে তা সত্ত্বেও আমার মন্তব্য যদি কম থাকে তার কারণ লেখার মান। এবং যদি এই থিয়োরিটা আমরা মানি যে লিখতে লিখতে লেখার মান বাড়ে তাহলে তো আপনার এই পর্যবেক্ষণটা মন্তব্যকারী হিসেবে আমার ক্ষেত্রে ঠিকই খাটে। ক্রমে যখন তাঁদের লেখা আরো ভালো হয়ে ওঠে তখন আমি বেশি মন্তব্য করি, কিন্তু ততোদিনে তাঁরা অতিথি সচল হয়ে যান। তবে পূর্ণ অতিথিদের লেখাতেও আমার মন্তব্য দেখতে পাবেন, এইটুকু যোগ করি।
"অতিথিরা লেখায় পাঠকের মনোযোগ কম পান", এমনটা মনে হতে পারে বেশ কিছু কারণে। প্রথমত, অতিথি লেখকদের বেশিরভাগই অনিয়মিত, কারণ নিয়মিত লিখলে তাঁদের অতিথি সচলে পরিণত হবার কথা। অনিয়মিত হবার কারণে তাঁরা হয়তো পাঠক আকৃষ্ট করতে পারেন না। দ্বিতীয়ত, কী ধরনের লেখা তাঁরা লিখছেন, সেটাও বিবেচ্য। যেমন, কবিতার পাঠক একটু কম, কাজেই তিনি যদি কবিতা লিখে থাকেন, মনে হতে পারে তাঁর প্রতি পাঠকবর্গ অবহেলা করছেন। এক্ষেত্রে পূর্ণ সচলদের কবিতার রিডারশিপের সাথে তুলনা করলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। তৃতীয়ত, কেউ যদি কেবল নিজের পোস্টেই মন্তব্যের উত্তরে প্রতিমন্তব্য করে যান, তাহলে পাঠকরা ধরে নিতে পারেন যে ইনি একজন আত্মকেন্দ্রিক লেখক, তখন তাঁর লেখায় পরবর্তীতে মন্তব্য করতে উৎসাহ হারান অনেকে। আমি নিজে এই গোত্রের পাঠক। ব্লগের চরিত্র একটু নিষ্ঠুর কিসিমের, এখানে মনোযোগ খুব এক্সপেন্সিভ। বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারে মনোযোগপ্রত্যাশীরা কয়েকভাবে এই মনোযোগ অর্জন করে থাকেন, খুব ভালো লিখে, চরম ভুয়া লিখে, খুব ভালো মন্তব্য করে, পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করে (পডকাস্টিং, ফোটোব্লগিং, কার্টুনব্লগিং আর ভিডিওব্লগিঙের কথা বাদ দিলাম, এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি সেসব, যদিও আমরা আশা করছি সচলে শিগগীরই হয়তো এমন কিছু আমরা পাবো)। সচলায়তনে চরম ভুয়া লেখা আর পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া নিরুৎসাহিত করা হয়, তাই অতিথিদের হাতে অস্ত্র থাকে খুব ভালো লেখা আর মন্তব্য করার। মন্তব্য যদি হয় "ভাল্লাগ্লো" "চ্রম খ্রাপ্লাগ্লো" "হাহাপগে" কিংবা "চক্ষে পানি চইলা আসলো", তাহলে আসলে এর মূল্য একেবারে শূন্য না হলেও শূন্যের আশেপাশে। মন্তব্যে যেন মানুষটার ছাপ থাকে, তাঁকে যেন চিনতে পারা যায়, সেটা নিশ্চিত করাও জরুরি।
এখানে একটি কথা, সচলের কমেন্ট কালচারটা আমার পছন্দের কারণ সেটা বেশ বৈঠকী ঢংয়ের। এখানে একটা বিপত্তি আছে, আমরা যারা নবীন পাঠক, প্রবীণকূলের সাথে একটা ব্যবধান আমাদের আছে। তাই আমি চাইলেও আপনাদের লেখায় আপনাদের ঢংয়ে মন্তব্য করতে পারি না। আমি শব্দশিল্পীর যেকোন ব্লগে বেশ রসিয়ে কমেন্ট করব, কিন্তু হিমু ভাইয়ের একটা লিখায় আমি ওটার কাছাকাছি ঢংয়েও কিছু লিখব না।
লেখাটি একটি তথ্যবহ লেখা হলে হয়তো কিছু শেয়ার করতে পারব, কিন্তু এটা একটি মেজর মোয়াজ্জেম এর গল্প হলে বা প্রবাশে দৈবের বশে হলে আমার "ভাল্লাগ্লো" "চ্রম খ্রাপ্লাগ্লো" "হাহাপগে" কিংবা "চক্ষে পানি চইলা আসলো" ছাড়া আর কি বা লেখার থাকে???
#ওসিরিস
এমন অনেক লেখা আছে যা পড়ে ভালো লাগলেও মন্তব্য তেমন কিছু করার থাকে না। এটা যে সর্বদা নবীন-প্রবীন-ঘটিত সমস্যাবশতই হয় তাও নয়। তখন ঐ ভাল্লাগ্লো-ই লিখি।
তবে পাবলিক ফোরামে কে নতুন কে পুরোনো তা নিয়ে অতো ভাবার কী দরকার? অচেনা মানুষকে প্রয়োজনীয় ভব্যতাটুকু দেখালেই তো যথেষ্ট হয়, তাই না?
সচলে যাঁরা পুরোনো লোক, তাঁরা যে বয়সে প্রবীন তা কিন্তু ঘটনা নয়। কাজেই বড়োকে সম্মান দেওয়ার ব্যাপারটা এখানে তেমন প্রযোজ্য নয়।
ভাইজান আপনে কেডা? আমার মত নাদান বেকুব যে কিনা আবজাব লেইখা সচল দুর্গন্ধ করি, তারে নিয়া টানাটানি লাগাইসেন। অতিথি সচলদের মাঝে দুষ্ট বালিকা, প্রজাপতি এরা অনেক ভালো লিখে। আর যাদের নাম উল্লেখ করেন নাই, তাদের মাঝে শন্করদা, শাহেনসা সিমন, শব্দশিল্পী, ভুতের বাচ্চা, ভুতুম, নীড় সন্ধানী, স্বপ্নহারা, লীন, তাহসিন গালিব, উজান গাঁ, সচল জাহিদ সহ আরো অনেকে যারা আমার চাইতে বহুগুনে ভালো লেখেন, সাড়াও পান অনেক। একটা বাশের লাঠি, দুই খন্ড দড়ি আর একজন অভিজ্ঞ স্ত্রী। যিনি তার স্বামীর গলায় টাই বাধতে ওস্তাদ। কেউ যদি মন্তব্যের লোভে লেখে থাকেন, তাহলে তো মহা বিপদ। তবে ছোট একটা টিপস দেই, মন্তব্যের লোভ থাকলে আপনারে যেমন ভালো লেখা দিতে হবে, ঠিক তেমনই আপনারেও মন্তব্য করতে হবে। একজন অতিথি মানে তো হল যে, তিনি নতুন এসেছেন, তাঁকে তো কেউ চিনে না, তারপর লেখা যদি মান সম্মত না হয়, তাহলে কিভাবে তিনি সাড়া পাবেন?
আর আমি নিজের লেখার ব্যাপারে যেটা অনুভব করি যে, আমি আমার লেখার ক্ষমতার ১০% ও এখনও উম্মোচন করতে পারিনি, এখনও লাইনে লাইনে উন্নতি করার অবকাশ আছে। বানান এর কথা তো বাদই দিলাম, তাও অনেক সাড়া পাই কারন সচলের সবাই পরিবারের মত, ভালবেসে আমাকে পাত্তা দেন, কাজেই আমার পুরানো লেখা বের করে আমাকে না যত লজ্জা দিবেন, তার চেয়ে বেশী লজ্জা পাবেন নিজেরাই। মনে মনে বলবেন, এই বেকুবের নিক সচল করার জন্যে তেব্র পেতিবাদ আর দিক্কার !!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনি উল্লেখ করেছেন মন্তব্যের লোভের কথা, আমার কিন্তু আছে এই লোভ। এই লোভের জন্য আমি লেখা আর মন্তব্য, দুই-ই একটু ইন্টার-অ্যাকটিভ করি যাতে পাঠক লিখতে আগ্রহী বা অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হন।
নিজের লেখার মান নিয়ে সংশয় থাকা ভালো কথা, উন্নতির পথ সুগম হয়।
কিলিয়ার , এবং আমার ধারনা সচলদের অনেকাংশই এই পন্থা অবলম্বন করেন ।
ব্যাখ্যার জন্যে ধন্যবাদ ।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
খুবই গুছিয়ে লেখা। অবশ্যই চলুক।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ধন্যবাদ, পরিবর্তনশীল।
আপনার এই লেখাটিতে অনেক গুলো বিষয়েই সহমত পোষণ করছি।
আমি (যদি পর্যাপ্ত সময় পেতাম তাহলে) সচলে প্রকাশিত সব লেখাই পড়তাম, এবং মন্তব্য জানাতাম। এখন যা হয়, তা হচ্ছে যে মূলতঃ সাহিত্য-বিষয়ক লেখাগুলোই পড়ি বেশী। ভালো লাগলে সেটা বলি, ভালো না লাগলে কিছু বলিনা (কি দরকার একজনকে খামাখা মনে কষ্ট দেবার)। আবার কিছু কিছু জনের লেখা দেখলেই পড়ি (তা তিনি যা নিয়েই লিখুন না কেন)। আমি মাঝে মাঝে ভাবি যে সচলে কেন লিখি। বহুকাল ধরেই তো খাতায় বা হার্ডড্রাইভে জমে উঠছিল লেখা, নাহয় সেখানেই থাকতো। সচলে লিখি প্রধানতঃ অন্যেরা আমার লেখাটিকে কি ভাবে নিলো সেটি জানবার জন্যে। তখন আবার মনে প্রশ্ন জাগে, যেহেতু আমি সৎভাবে মন্তব্য করিনা, আমার লেখাটিতে পাওয়া অন্যের মন্তব্যগুলোও কতখানি সৎ, নাকি জাস্ট উৎসাহের পিঠ চাপড়ানি।
লেখার মান উন্নয়ন করার সময় এসেছে মনে হয়। আমরা সবাই যদি আমাদের মনের অনুভূতিটি সৎভাবে লিখি তাহলে একজন লেখক উপকৃতই হবেন আশাকরি।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
আপনি খুব দরকারি একটা কথা লিখেছেন। কোনো পত্রিকা বা সাইটের লেখার মান উন্নত করার জন্য সৎ ফিডব্যাক জরুরী। যাঁরা প্রশংসার বান ডাকেন তাঁদের উদারমনস্কতা বা স্নেহশীল স্বভাবের কথা বোঝা যায়, কিন্তু লেখকের তাতে উপকার একটু কম-ই হয়। আর যেহেতু সমালোচনার পরিবেশটা ততো প্রবল নয় তাই ভালো না লাগলে সে মন্তব্য করা থেকে পাঠকেরা অনেকেই বিরত থাকেন।
আমার মতে, সচলে যাঁরা লেখেন তাঁদের উচিত ভালো মন্দ দু-ধরনের মন্তব্যকেই স্বাগত জানানো। সমালোচনার পরিবেশটা জরুরী, পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানোতে উপকার বিশেষ হয় না সে কথা তো কারোর অজানা নয়। চলুন, এবার থেকে সবাই লেখার খারাপ দিকগুলোও দেখিয়ে দিই। এখানেই বলে রাখলাম, আমার ভবিষ্যতের লেখায় সকলেই দয়া করে সমালোচনা করবেন (প্রশংসা করার ইচ্ছে হলে তা বাদ দিতে বলছি না অবশ্য )।
সচলে এখন এতো ভালো ভালো লেখা আসে... পড়তে পড়তেই দিন পার হয়ে যায়। লেখার সময় আর সাহস একেবারেই পাই না।
আর আগে খুব কনফিডেন্টলি লিখে যেতাম... ভুল বানানটাও...
এখন লিখতে বসে নানান দ্বিধায় জানাশুদ্ধ বানানটাও ভুল লিখে ফেলি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সার্জনরা আফনেরে এনাটমি শিখাইয়া ফেলসে?
বাংলা বানান-পরীক্ষক কোমল-সম্ভার আপনার গণনা-যন্ত্রে স্থাপন করুন। দেখবেন আপনিই তখন সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী বিশেষজ্ঞ।
আমাকেও সংগ্রহ করতে হবে।
যে কথা তুলিরেখা তাঁর সচলাচরণে লিখেছিলেন, সে কথা বলি। এখানে এতো নানা পেশা ও আগ্রহের মানুষ আছেন যে সবাই নিজের অভিজ্ঞতার কথা লিখলেই এক সমৃদ্ধ পাঠ্য সৃষ্টি হয়, সেখানে বানান একটু আধটু ভুল হলেও সমস্যা থাকে না। নজরুল ইসলাম সাহেব লিখুন না আপনার নাটক জগতের কথা, আমরা নাটক দেখলেও তার সলতে পাকানোর ইতিহাস তো কিছুই জানি না, জানা হবে।
মূলত পাঠক - লেখার মান, বানান, মডারেশন নিয়ে আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। আমি ভালো লেখায় যেমন মন্তব্য করি, কোনো লেখা কোনো কারণে ভালো না লাগলে সেটাও সাধারণতঃ বলে থাকি। যদিও ইদানিংকালে এই নিয়ে কিছু দ্বিধায় ভুগছি। আমি তো লাগাতার সমালোচনা টোচনা করে যাচ্ছি, এদিকে আমার নিজের লেখা স্বতঃস্ফূর্তও নয়, তেমন একটা আহামরি কিছুও নয়, তারও ওপর আমি আবার ভয়ানক আল্সে, সব মিলিয়ে অতএব লিখি কম - আর তাই লোকজন আমার লেখার সমালোচনা করার চান্সও বেশি পায় না কেমন একটু একপেশে ব্যাপার দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো ...
আর সংবেদনশীলতা বিষয়ে? এ প্রসঙ্গে আপনার মনোভাব আমি জানি। সচলায়তন প্রধানত বাংলাদেশীদের ব্লগ ঠিকই, কিন্তু আপনি, তুলিরেখা, দময়ন্তী, অথবা সাম্প্রতিক অতিথি সচল শঙ্কর যখন লেখেন, আমি অন্তত আসলেই আপনাদের লেখা 'সচলায়তনের একজনের লেখা' হিসেবেই পড়ি, আপনারা এপার বাংলার না ওপার বাংলার আমার সত্যিই মনে থাকে না।
আমার ধারণা, বেশীরভাগ পাঠকই সেভাবে ভাবেন।
সচলায়তনে ভারতীয়দের নিয়ে ঢালাও কিছু মন্তব্যে আপনি আহত বোধ করেছেন। আপনাকে আমি বলেছিলাম, "ইন্ডিয়া মহা মাতব্বর - ইন্ডিয়ার সমালোচনা তো করা হবেই, আর সমালোচনা বা বকাবকি তো 'ভারত রাষ্ট্র'টাকে করা হছে ভারতীয়দের তো না" - তাতে করে আপনি আমাকে কয়েকটা মন্তব্য কোট করে দেখিয়েছিলেন - এরপর আমার আর যুক্তি ছিলো না। বলেছিলাম, "বাংলাদেশীদের নিয়ে কেউ ওরকম কথা বললে আমারও খুবই খারাপ লাগতো"।
আপনার অবস্থান আমি পুরোপুরি না বুঝলেও বোঝার চেষ্টা করি। এই বাংলাদেশী ফোরামে আপনি সংখ্যালঘু। বেশ কিছু বিষয়ে আপনি মন্তব্য/আলোচনায় অংশগ্রহন করতে ঠিক স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। আপনার সবচাইতে বড় ক্ষোভ যখন কেউ পাকিস্তানী আর ভারতীয়দের একই কাতারে ফেলে বিরূপ মন্তব্য করে।
এই কথাগুলো সর্বসমক্ষে একারণেই বলা, যাতে করে আপনার সচলায়তনে লেখালেখির অভিজ্ঞতার এই অংশটুকুও সবাই জানতে পারে।
সচলায়তন আমার পছন্দ শুধু লেখার মান আর মডারেশনের কারণেই নয়, এতে সমমনা/সমমানসিকতার মানুষদের সাথে মিথস্ক্রিয়া হয় বলে। একটু ক্লিশে শোনালেও বলি - এটা একটা 'প্রোগ্রেসিভ' দল/আড্ডাখানা/রাইটার্স ফোরাম বলে আমি মনে করি। তবে, শেষ পর্য্যন্ত সবই তো আপেক্ষিক - আমাদের আধুনিকতাও, সংবেদনশীলতাও, আর সহনশীলতাও
বাংলাদেশ যখন দুর্নীতিপরায়ণ হিসেবে প্রথম স্থানটা ছিনিয়ে নেয়, দাঁতে দাঁত চেপে শুনতেই হয় সেই উল্লেখ - অবাংলাদেশীদের মুখে। বুঝি যে 'আমাকে' বলছে না, তাও কিন্তু খারাপ লাগে ঠিকই, অথচ সেই সত্য অস্বীকারই বা করি কী করে?
টিপাইমুখ তো আছেই, তার ওপর কদিন আগেই বাংলাদেশে ভারতীয় দূত ইন্ডিয়ান এ্যাম্বেসীর সামনে বাংলাদেশীদের লাইন নিয়ে একটা অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছে - ভাবছি 'আপনাকে'ই তেড়ে ধরবো নাকি সেই নিয়ে
স্নিগ্ধার কমেন্টে
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
সমালোচনা করা নিয়ে দ্বিধায় ভুগবেন না। আখেরে ওতে লেখকের উপকারই হয়। তাছাড়া প্রতি-সমালোচনার সুযোগ তাঁরা পান না তো হয়েছে কী, সব কিছুরই প্রতিশোধ নিতেই হবে না কি তাঁদের? আর নেহাতই যদি খারাপ লাগে তাহলে বরং লেখালেখি চালু করুন, তাতে দু পক্ষেরই লাভ।
অসংবেদনশীল লোকেদের ব্যাপারে আমি ঘোর অ্যান্টি-সংবেদনশীল, দয়ামায়া নেই একেবারেই। তবু বিবাদ শুরু করি না নানা কারণে, সচলের পরিবেশ তার একটা। রেসিস্ট হওয়ার মতো সোজা কাজ ক'টা আছে? তাও যে কেন লোকে সেই কাজ করে এতো গর্ব বোধ করে কে জানে। জানি এখানে সব রকমের পাঠক আছেন। তাছাড়া সামান্য মন্তব্যের কারণে অভিমান করে বিদায় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না, বিশেষত সে মন্তব্য যখন সচল যাঁরা চালান তাঁদেরও মত নয়। এ নিয়ে লিখতে চাইলেও লেখা হয় না, আপনাকে ধন্যবাদ এই প্রসঙ্গটা এনে আমার কথাটা তুললেন, তাই আমি সংক্ষেপে হলেও আমার কথা জুড়ে দিলাম।
আরেকটা কথা হলো এই যে বাংলা ভাষাটা আমি সত্যিই বাজে রকমের ভালোবাসি। যে মানুষটা বাংলায় কথা বলে সে আমার নিজের লোক, এবং এ বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ পার্থক্য আমার চোখে পড়ে না। দ্বিপাক্ষিক রাজনীতি সবসময়ই প্রতিবেশীদের মধ্যে খারাপ সম্পর্কের কারণ হয়। পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্কও খুবই খারাপ। আমি কোনো উপদেশ শোনাতে এ কথা বলছি না, এমন ইঙ্গিতও করছি না যে সকলকে এ পথ নিতে হবে, তবু বলি, আমার সাথে পাকিস্তানি মানুষের আলাপ হলে আমি সেই ইতিহাসটাকে পেছনে রেখে আসি। অনেকে ভাবছেন হয়তো, নিজের ঘরে আগুন লাগলে তখন এই বিশ্বপ্রেম ঘুচে যেতো। হয়তো সে কথা ঠিক। তবে এ প্রসঙ্গে বলি, আমার পরিবার-পরিজনেরা অনেকেই হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার আঁচে ঘরবাড়ি খুইয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে রাতারাতি উদ্বাস্তু হয়েছেন। এই একই নীতি মানলে আজ তাঁদের উচিত হতো গুজরাতের দাঙ্গায় হাততালি দেওয়া। আমি কৃতজ্ঞ যে তাঁরা এর ঊর্দ্ধে উঠতে পেরেছেন। মানুষকে ধর্ম ও জাতিত্বের তুচ্ছতায় বিচার না করার কথা আর সৌহার্দ্যের বাণী তাই আমার কাছে কেতাবি লাগে না। নেতারা চিরকালই বজ্জাতি করবেন, তবু আমার খুব আশা একদিন আমরা সাধারণ মানুষরা সে সব ভুলে আরেকজনকে আপন করতে পারবো, ঘৃণার কথা বলে অন্যকে আঘাত দেবো না। আশা করতে দোষ কী, বলুন?
স্বাস্থ্যবান কমেন্টের এমন সমারোহ আগে কোনো পোস্টে চোখে পড়েছে কিনা মনে পড়ছে না।
এইজন্য আমি কিছু না বলে ফাঁকি দিলাম ঃ)
ফাঁকিবাজি চলবে না, কমেন্ট চাই কমেন্ট দাও, কর্তৃপক্ষ জবাব দাও!
শিমুল ভাইয়ের মতো আমারও একই কথা। বাপ রে! সে কী কমেন্ট!
রাজর্ষিদা, গল্প দেন গল্প! কেন লিখি, কীভাবে লিখি, এইসব বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আপনের মতো দুর্দান্ত গল্পকাররে মানায় না...
ভাই সিরিয়াসলি আপনের গল্পের লাইগা বহুদিন ধইরা বইসা আছি...
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
গল্প তো আমি বিশেষ লিখি নি, আপনি আমাকে দুর্দান্ত গল্পকারের সম্মান দিলেন কেম্নে? তবে দিয়েই যখন ফেলেছেন তো অজস্র ধন্যবাদ।
গল্প লিখতে মন চায়, সত্যি কথাই বলি, কিন্তু তরতর করে গল্প লিখবো সে ক্ষমতা নেই। আপনি একটা টপিক দেন, আমি লিখে ফেলি।
ভাই, দুর্দান্ত গল্পকার হতে হলে কি গল্পসমগ্র লিখতে হবে?
একটা ভালো গল্প লিখেই সেই জায়গায় চলে যাওয়া যায় অনায়াসে, যেমন আপনি গেছেন আমার কাছে অন্তত, "একটি ভৌতিক গল্প" দিয়ে...
সচলে কম আসা হয়েছে মাঝখানে, কিন্তু অবচেতনে আপনার গল্পের খোঁজ করেছি যখনই এসেছি!
টপিক বস কী আর দেব... ভৌতিক গল্পই দেন, খুব প্রিয় আমার...
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আসোলে, এ ধরনের লেখায় নির্দিষ্ট কমেন্ট করা কঠিন মনে হয় আমার, যদি না পার্টিকুলার কোনো বিষয়ে জোরালো-নির্দিষ্ট দ্বিমত কিংবা উচ্ছ্বাস পর্যায়ের সমমত থাকে।
বরং সিরাতের লেখা প'ড়ে আপনার যেমন এই লেখার ইচ্ছেটা শাণ পেলো, তেমন আমারও আপনার এই লেখার জবাব [ঠিক 'জবাব' বোধ হয় না ওই অর্থে, বলা ভালো 'অ্যান্টিথিসিস' (না, দ্বিমত না, প্রতি(কাউন্টার)মত)] বোধ হয় আর একটা লেখা দিয়েই দেয়া উচিত। জানি না দৌড়ের এই দৈনন্দিনে শেষমেশ পেরে উঠবো কি না। বিষয় আজকাল বিচিত্রই পাচ্ছি লেখার, যেটা আগে পেতাম না (এইটাও সচলায়তনেরই অন্যতম উপকারায়তন বা সুবিধায়তন), কিন্তু সময়সাধ্যের অভাবে লেখা হয় তার থোড়াই।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
বাঃ, তাহলে তো লিখে কাজের কাজই হলো একটা, আপনাকেও একটা লেখা লিখতে যদি আগ্রহী করা যায়। তো লিখেই ফেলুন না, এক সিটিংয়ে ঝটপট লিখে ফেলুন, না হয় একটু ছোটোই হলো।
বাহ!... লেখা আর মন্তব্য, দুটাই পড়ে খুব ভাল লাগল।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
না না আমি শিমুলের মত ফাঁকিবাজ নই৷ পরে এসে মন্তব্য করে যাবো৷
--------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
নিশ্চয়ই, প্রতীক্ষায় থাকলাম।
আমি চুপচাপ পড়ে যাচ্ছি শুধু, দেখে যাচ্ছি...
হ, চুপচাপ পড়লে হাড্ডিগুড্ডি ভাঙ্গনের ঝুঁকি নাই বললেই চলে।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
পাঠক দা,
সারাদিন নানান ব্যস্ততায় কেটেছে। কিন্তু যত ব্যস্ততাই থাকুক---ফাঁকফোকরে সচলে ঠিকই উঁকি দিয়ে যাই। আপনার লেখাটা দেখেছি সকালেই। আর এখন ভোর দুইটায় বসেছি মন্তব্য করতে।
প্রথমেই বলে নিই আপনার সাথে কিছু জিনিসে আমার সহমত। কিছু কিছু বিষয়ে ভিন্নমত। আর অনেক কিছু্র উত্তর এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছি। নীচে আমার কিছু ভাবনা জড়ো করার চেষ্টা করলামঃ
এক) বাংলায় লেখালেখির জন্যেই মূলতঃ আমার এইখানে আসা। আজ ঠিক মনেও পড়ছে না, কখন কী ভাবে সচলে এসে ঢুকেছিলাম। কিন্তু ঢোকার পর থেকে এখান থেকে আমার আর বেরুনো হয়নি। শুধু তাই নয়---আমার পথ ধরে এসেছেন আমার বাবা-মা-বোন। তারা লেখেন না। তারা শুধুই পাঠক। এবং মুখে না বললেও আমি জানি----আমার চাইতে অন্য আরো অনেকের লেখার তারা মহা ভক্ত।
দুই) আমি মাঝে মাঝে পাড়া বেড়াতে গিয়েছি। সেসব প্রথম দিককার কথা। সামু-তে গিয়ে একটা লেখা পড়ে আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম। লেখার বিষয়টা ছিল খুব সম্ভবত ধর্ম নিয়ে কিছু বিতন্ডা। পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর মন্তব্য পড়েছে। যেটা আমার কাছে আশ্চর্য লাগল---সেটা হল যে ভাষায় এবং যে ভাবে একে অন্যকে আক্রমন করা হচ্ছে সেখানে, সেটা মোটামুটি ভদ্রতার জিপ-কোড থেকে হাজার মাইল দূরে। গিয়েছিলাম শুধু উঁকি দিতে। ফিরে এলাম প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে। সচলে অনেকবার বিষ্ফোরক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে---কিন্তু কখনোই এত খারাপ ভাষায়
কথা আদান-প্রদান হয়েছে বলে মনে পড়ে না। এই জিনিসটার জন্যে সচলের অধিকর্তারা অকুন্ঠ ধন্যবাদ পেতে পারেন।
তিন) মডারেশান নামক অদ্ভূত জিনিসটার পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথাই হয়েছে। আপনি নিজেও বলেছেন যে এর পক্ষে আছেন। আমি ঠিক নিশ্চিত নই এই ব্যাপারে। আমি এই কথা মানি---সচলে যে আজকের পরিবেশ আমরা উপভোগ করি, সেটা বস্তুত কিছু লোকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল। সহজ কথায় তাদের মডারেশানের ফল। কিন্তু আমার যেখানটায় অস্বস্তি সেটা হল, মডারেশান এর কারণে শেষ পর্যন্ত একটা বিশেষ প্রজাতির মানুষরাই কিন্তু এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। একটু খোলাসা করে বলি। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধুকে পাকড়াও করেছিলাম। সে মাঝে মাঝে সচলে যায়। পড়ে-টড়ে চলে আসে। কিন্তু কখনো কিছু লেখেনা। সচলের খোঁজ আমিই তাকে দিয়েছিলাম। তাকে যখন চেপে ধরি যে সচলে সে লেখেনা কেন, তার উত্তরে সে আমাকে জানায়---সচল আসলে এক 'বিশেষ' ধারার লোকের আড্ডাস্থল। এখানে বিরুদ্ধমত কঠোর ভাবে দমন করা হয়। আমি প্রতিবাদ করাতে সে কিছু উদাহরণ টানে। এর মাঝে ফারুক ভাইয়ের, নিঝুমের, নুশেরার এবং আরো অনেকের সচল থেকে চলে যাবার ব্যাপারটি আছে। এইটা ঠিক যে এরা সকলে একই কারণে সচল ছেড়েছেন এমন নয়। কিন্তু একটা জায়গায় মিল আছে সবার। এরা সকলেই একটা পর্যায়ে মডুদের সাথে যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন। তাদের সাথে মডুদের যুদ্ধে কে সত্যের পথে আর কে অসত্যের পথে ছিলেন---সেটা নিয়ে
হয়ত বিস্তর ভিন্নমত আছে। কিছু শেষ ফলটা হল---আমরা বেশ কিছু বর্ণিল মানুষ হারিয়েছি।
আমার সেই বন্ধুর কথায় ফিরে যাই। সে বেশ ধার্মিক মানুষ। তার চিন্তা-ভাবনার একটা বিরাট অংশ জুড়েই আছে ধর্ম। তার কথা হল, সে সচলে নাকি কখনো ধর্ম-বিষয়ক কোন লেখা পড়েনি। ধর্ম-বিষয়ক বলতে ধর্মের পক্ষে কোন লেখার কথা সে বুঝিয়েছিল। আমি নিজে ধর্মের ঘোর বিরোধী। কিন্তু তাই বলে আমি কখনো আমার সে বন্ধুটিকে অবজ্ঞা করিনা। তার কথা আমি মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করি। একমত হইনা অনেক কিছুতেই। কথা চালাচালিও হয়। কিন্তু দিনের শেষে---সে আমার বন্ধু। তার এহেন অভিযোগ শুনে আমি খানিক চিন্তা করে দেখলাম---সত্যি তো! সচলে ধর্মের বিপক্ষে যত লেখা আসে (আমি নিজেই গুটিকতক লিখেছি), ধর্মের পক্ষে কোন লেখা আসতে দেখি না।
এর মানে কি? এখানে সবাই কী আমার মত নাস্তিক, নিরীশ্বর-বাদী?? তা নিশ্চয়ি নন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তারা কিছু লিখছেন না কেন? নাকি তাদের মনে কোন রকমের ভয় ঢুকে আছে যে, ধর্ম নিয়ে কথা বললেই এখানে হাস্যাস্পদ হতে হবে? বা যারা ধর্ম নিয়ে কথা বলে তারা 'খ্যাত' বা এই রকম কিছু!
মোটকথা, সচল যদিও বলে 'চিত্ত যেথা ভয় শূন্য---' আমার মনে হয় না এখানে পুরোপুরি 'ভয়শূন্য' ভাবে কেউ কিছু বলতে পারেন।
হয়ত এইটাই এখানের মডারেশান এর গুন বা দোষ। মডারেশান এর কারণেই হয়ত এখানে আমরা 'সমমনা কিছু লোক'(স্নিদ্ধা'পুর কথায় 'প্রোগ্রেসিভ' দল/আড্ডাখানা/রাইটার্স ফোরাম') এক হতে পেরেছি। হয়ত এই মডারেশানটুকু না থাকলে পরে সামু তে যা দেখে আমি ভয়ে পালিয়ে এসেছিলাম---সেই রকম একটা পরিস্থিতি এখানেও হত!
আমি জানিনা এর সমাধান কি। হয়ত এইরকমটাই ভালো।
হয়ত এই 'সম-মনায়তন' ধারণাটাই ঠিক।
হয়ত শান্তির একটা মানে হল বিতর্কহীনতা।
নিরন্তর শুভেচ্ছা!
অনিকেত ভাই,
বিশ্লেষন ভাল লাগল। পাঠক হিসাবে ছোট্ট একটা মন্তব্য করতে চাই।
আপনার ৩ নং পয়েন্টের অস্বস্তির সাথে আমি কিছুটা দিমত পোষন করি। কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? আমি বিশ্বাস করি এধরনের ভাল একটা উদ্যোগের পিছনে একটা বড় 'ফিলসফি' কাজ করে এবং এই ফিলসফিই কিন্তু সাফল্যের একটা পূর্বশর্ত (একাডেমিক হয়ে যাচ্ছে? - কিন্তু বড় বড় সাফল্য গুলোর দিকে চেয়ে দেখুন)। হয়ত এই ফিলসফির জন্যই অনেকের কাছে 'বিশেষ' ধারার লোকের আড্ডাস্থল মনে হতে পারে। এবং এই ফিলসফি রক্ষার জন্য 'ভয়শূন্য'তার দরকার আছে - লেখক এবং মডারেটর দুই পক্ষেরই। এখন সচলায়তন কে যদি মডারেশন বাদ দিয়ে 'ফ্রি রেইন' টাইপ করে দেয়া হয় - কী দাঁড়াবে চিন্তা করুন।
এখানে বিরুদ্ধমত কঠোর ভাবে দমন করা হয়। - তাই কী? আমি তো খুব সুন্দর বিতর্ক দেখেছি। এখন এই বিরুদ্ধমত কঠোর ভাবে দমন বলতে যদি 'বেইস-লেস মন্তয়ব্য় করা বা আক্রমন করা ', 'স্বাধীনতার বিপক্ষে ঢালাও ভাবে কথা বলা', 'ধর্মীয় গোঁড়ামীর পাক্ষে শক্ত যুক্তি দেয়া' অথবা “চুড়ান্ত অসংবেদনশীলতার” বিরুদ্ধে কথা বলা বা পদক্ষেপ নেয়াকে বুঝায় - তবে তাই কী কাম্য নয়? আপনি দেখুন কোন খবরের রেফারেন্সএর বয়্পারে অথবা 'পেটেন্ট' এর বয়্পারে সচলায়তন কতটা সচেতন। (অনেক প্রথম ধাপের পত্রইকা থেকে বেশী।
যাই হোক। একজন পাঠক হিসাবে আমি সচলায়তনকে এভাবেই দেখতে চাই।
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
আমার মতে এটা একটা বহুল প্রচলিত myth.
ধর্ম নিয়ে লেখা কম আসা মানেই কিন্তু প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সচলায়তন ধর্ম-বিরোধী হয়ে যাওয়া না। উদাহরণ দেই। আপনি, তুলিরেখা আপু, আর শিক্ষানবিস বাদ দিলে Physics নিয়ে আদৌ ক'জন লিখেছেন সচলে? মোট পোস্টের সংখ্যা হয়তো সাকুল্যে ১০ পেরোবে না। এখন, কেউ যদি স্রেফ frequency বিচার করেন, তাহলে কিন্তু সচলকে "পদার্থবিজ্ঞান-বিরোধী" বলেও লেবেল সেঁটে দেওয়া দুষ্কর না। ধর্ম নিয়ে মৌলিক, চিন্তাপূর্ণ লেখা খুব কম। আয়াত তুলে দেওয়া কিংবা তফসির টুকে দেওয়া জাতীয় লেখা যত কম আসে ততই ভালো। কারণ, সেগুলো মানসম্মত রচনা না। সচলে কোনোদিন কাউকে জোর করে ধর্মীয় লেখা থেকে তো নিরুৎসাহিত করা হয়নি।
আর, সমমনায়তন না বলে সুষমআচরণায়তন বললে বোধহয় মেনে নেওয়া যেতো। কাউকে তো তাঁর "মতামত" বা "বিশ্বাস"-এর কারণে কোনো প্রকার সমস্যায় পড়তে হয়নি। এখানে অনেক সচল প্রায় দু'বছর ধরে আছেন, অনেক রকম বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই কিন্তু অর্বাচীন বা আপত্তিকর প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ খড়্গ নেমে এসেছে। এর জন্য আচরণ দায়ী, মতামত না।
ইশ্তি,
ঠিক এই কথার প্রসঙ্গে আমার মন্তব্য থেকে একটা অংশ উল্লেখ করিঃ
আমার কথাটা ছিল এই 'ভয়' পাওয়া অংশটুকু নিয়ে। আমি যখন পদার্থবিজ্ঞান বা বিজ্ঞান নিয়ে লিখতে বসি--তখন প্রচুর পাঠক সমাগম আশা করি না এইটা সত্যি। কিন্তু সেইসাথে লিখতে বসে কোন ভয় কাজ করে না---মনে হয় না যে কেউ আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করতে পারে। আমার বন্ধুটির সাথে কথা বলে আমার যা মনে হয়েছে---সেটা হল, সে মনে করে এইখানে 'বিশ্বাসী' মানুষজন ধর্মের পক্ষে লেখেন না তার মূল কারণ হল হাস্যাস্পদ হবার ভয় বা 'খ্যাত' হিসেবে পরিগণিত হবার ভয়।
তুমি আমার চেয়ে বেশি সময় ধরে এখানে আছ, তাই তোমার চোখে হয়ত পড়ে থাকতে পারে---কিন্তু আমার মনে পড়ছে না শুধু ধর্ম এর পক্ষ নিয়ে কোন লেখা পড়েছি কি না। ধর্ম আমার আগ্রহের বিষয় নয়। আমি প্রায় ঘোষনা করেই এর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আছি। তাই আমি ঠিক হয়ত বলতে পারব না ধর্মের পক্ষ নিয়ে কী রকম লেখা দেয়া যেতে পারে এখানে। সেইটা ধর্ম-বিশ্বাসীরা ভাল করে হয়ত বলতে পারবেন।কিন্তু মোদ্দা কথা হল----এইখানে এই রকম লেখা আমার চোখে পড়েনি।
আমার ধারণা একটা 'ভ্রান্ত ধারমা' হলে আমি বরং খুশিই হবো।
মনে হচ্ছে প্রতিমন্তব্যটা আপনার মন্তব্যের আগেই পোস্ট করে ফেলেছি। আমারটা পোস্ট করে দেখি আপনি লিখেছেন।
সম্ভবত ৩৩ নম্বর মন্তব্যে আমার জবাবটা আছে। ধর্ম অনেক বেশি স্পর্শকাতর বলেই অনেকে এড়িয়ে চলেন। সমকামিতা নিয়ে দুর্ধর্ষ সিরিজটার কথা ভেবে দেখুন। ওটার সাথে কিন্তু বিজ্ঞান, ধর্ম, সমাজ, ইত্যাদি সব চলে আসে। যেখানে সমকামিতা নিয়ে লেখা যায়, সেখানে ধর্ম নিয়ে লেখা যাবে না কেনো? প্রসঙ্গ তাই মডারেশনের না, লেখা মানসম্মত হওয়ার।
ছেলেবেলায় সত্যজিতের বইয়ে পুজার গল্প পড়েছি। আমার খুব ইচ্ছা সেটা নিয়ে কিছু পড়ার। মনে মনে অপেক্ষায় আছি কেউ বেদের শ্লোক নিয়ে কিছু লিখবার। খ্রীষ্ট ধর্মের wedding vow -এর কথাগুলো আমার অসামান্য লাগে। আমার জানতে ইচ্ছা করে কথাগুলো কোথা থেকে এলো। Good Samaritan, Brother's Keeper, ইত্যাদি নিয়ে জানতে ইচ্ছা হয়। বৌদ্ধ ধর্মের "জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক" নিয়ে জানতে ইচ্ছা হয়। আমি প্রতি মুহূর্তে অপেক্ষা করি এগুলো নিয়ে পড়তে, জানতে। প্রতি শুক্রবার জুম্মায় গিয়ে খুতবা শুনি। কিছু খুতবা শুনে মনে হয়, এর ভেতরে নিহিত জীবনদর্শনটা নিয়ে আরও জানতে পারলে দারুণ হতো। এগুলো নিয়ে লেখা আসতেই পারে। আমি জানি কম, তাই সরাসরি ধর্ম নিয়ে লিখি না। সমাজে ধর্মের প্রভাব বুঝি, সেটা নিয়েই লিখি।
যাঁরা ধর্ম জানেন, তাঁরা কিন্তু প্রচুর ফাঁকি মারেন। ধর্ম জানেন, বোঝেন, ধর্মগ্রন্থ পাঠ করেন, এমন মানুষ কিন্তু কোনো একটা গ্রন্থ থেকে কিছু উদ্ধৃত করে দিয়েই খালাস। এ-রকম লেখা কিন্তু ধর্মকে খাটো করে। তাঁরা কেনো জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ধর্মের তাৎপর্য নিয়ে লেখেন না? ধর্ম নিয়ে লিখতে গেলেই কেনো তা অন্যকে ধর্মান্তরিত করার গুপ্ত প্রয়াস নিয়ে লিখতে হবে? আমার বিবেচনায়, ধর্ম হলো দর্শনের সবচেয়ে গোছানো ধারাগুলোর একটি। তবে, কালের সাথে সাথে দর্শনের গায়ে বিশ্বাস আর রাজনীতির চর্বি যুক্ত হয়ে ধর্মের দর্শন হারিয়ে গেছে।
আমরা চেষ্টা করি আমেরিকার স্কুল-কলেজে বাঙালি সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের ইতিহাসের কথা জানাতে। এর পেছনে তো আমেরিকানদের বাঙালি/বাংলাদেশি করার উদ্দেশ্য কাজ করে না। দেশে পর্যটন বাড়ানোর জন্যও তো করি না। এটা করি *আমার* সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। এভাবে লিখলে কিন্তু ধর্ম নিয়ে দুর্দান্ত সব লেখা আসা সম্ভব। জগতের বড় সমস্যাগুলো নিয়ে প্রতিটি ধর্ম আলোকপাত করেছে। কেনো আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনামূলক লেখা পাই না?
টুকলিফাইড লেখা এবং ধর্মান্তরের বাসনা বাদ দিতে পারলে ধর্ম নিয়ে লেখাগুলো অনেক সম্ভাবনাময়। আমি অপেক্ষায় থাকি সেরকম লেখার। পাই না।
ইশতি, আপনার এরকম মন্তব্য আর দর্শনের জন্যই মামুন বলে আপনার হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দিয়ে নিশ্চিত হয়ে বসে থাকা যাবে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য
---কেনু,কেনু,কেনু?
--অপেক্ষায় না থেকে তুমি নিজে লিখছ না কেনু, কেনু, কেনু?
ঠিক এরকম একটা কিছু বলতে চেয়ে কথাগুলো গুছিয়ে আনতে পারছিলাম না। দারুণ মন্তব্য ইশতিয়াক। প্রকৃতিপ্রেমিকের সাথে একমত।
দারুণ মন্তব্য।
এ নিয়ে সামনে লেখার ইচ্ছা রইলো।
ইশতিয়াক ইত্যাদিরা কিন্তু ধর্ম নিয়ে ইন্টেলিজেন্ট লেখা লিখেছেও। তবে হ্যাঁ, ফ্রিকোয়েন্সি কম।
ভুতুম, একটা লেখা না!
লিখে ফেলুন, দেরি কিসের।
ভুতুমকে বলে লাভ নেই, তিনি সিন সিটি নিয়েই লিখলেন না এখনো!
৩) সচলায়তনে কোন বিশেষ ধরনের প্রচার নিরুৎসাহিত করা হয় (নীতিমালা দ্রষ্টব্য)। ধর্ম নিয়ে প্রচার ছাড়া আর কিছু লিখার থাকলে অবশ্যই লেখক লিখবে। কিন্তু সমস্যা হল ধার্মিক লোকদের সংবেদনশীলতা। যেহেতু এটা পুরোপুরি বিশ্বাসের একটা ব্যাপার, যুক্তিযুক্ত কিছু বললেই তারা আক্রান্ত বোধ করেন আর আক্রমন করে বসেন। যেহেতু আপনার বন্ধু ধার্মিক তাই উল্লেখিত ব্যক্তিদের দোষগুলি তার চোখে পড়বে না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
একটু যোগ করি। কোনো নতুন লেখক একটা গল্প লিখে জমা দিলেন, মানের বিচারে বাদ পড়লো সে লেখা। তাতে তিনি বন্ধুদের হয়তো বললেন, এরা বড়ো নাক-উঁচু, ব্যাপারটা ওখানেই শেষ হবে। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত লেখাটা যদি ধর্মবিষয়ক হতো তো অন্য অর্থ দাঁড়াবে, সমস্যা সেখানেই। ধর্ম যদি এমন শক্তপোক্ত একটা জিনিসই হয় তাহলে এর সমর্থকরা এতো স্পর্শকাতর হন কেন কে জানে।
মুখফোড়ের এই গল্পটা পড়ে দেখতে পারেন।
এইটা আসলেই আমার মনের কথা। ধর্ম-বিশ্বাসীরা কেন জানি সবসময়ে নিজেদের আক্রান্ত ভাবতে পছন্দ করেন। হয়ত সেই কারণেই আমার বন্ধুও ভাবছে যে এখানে লেখা দিলেই সে 'আক্রান্ত' হবে।আর সেই কারণেই হয়ত সে এখানে লিখতে ভরসা পায় না।
কে জানে?
যত্ন করে পড়া ও মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ, অনিকেত। আপনার প্রথম দুটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করছি না, শুধু তৃতীয় পয়েন্টটার কথা বলি।
মডারেশন-বিহীন বস্তির খেউড়, না মডারেটেড সভ্য আলোচনা, কোনটা বেছে নেবো এ নিয়ে আপনার সাথে আমিও সহমত। প্রশ্নটা যেখানে ধর্মালোচনা নিয়ে, সেখানে কিছু কথা থাকে। তবে তার আগে বর্ণিল মানুষদের হারানোর কথায় বলি, আমি ঐ অধ্যায়ের কথা খুব বিশদে জানি না, একমাত্র ফারুক ওয়াসিফের ঘটনাটা দেখেছিলাম। দুর্ভাগ্যজনক, সন্দেহ নেই। তবে একসাথে সব কিছু তো পাওয়া যায় না। ওটুকু নিয়েই বাঁচতে হয়, কিছু অপূর্ণতা, কিছু অভাব।
ভিশন/মিশন স্টেটমেন্ট ও প্রকৃত অবস্থার মধ্যে দুরত্ব কিছুটা হয়ে যায় যদি না ভিশন স্টেটমেন্ট বেশি রকমের লো-হ্যাঙ্গিং ফ্রুট হয়। এ ক্ষেত্রেও হয়তো কিছুটা তাই হয়েছে, সম্পূর্ণ লক্ষ্যভেদ এখনো তাই হয়ে ওঠে নি। তবে ধর্ম বা যে কোনো বিষয় নিয়েই সদর্থক আলোচনা এখানে হওয়া সম্ভব বলেই আমার মনে হয়। যাঁরা এ নিয়ে সন্দিহান, তাঁরা কি লিখে কোনো সমস্যায় পড়েছেন? জানতে ইচ্ছে হয় এটা পুরোপুরিই হাইপোথেটিকাল ধারণা কি না। সত্যি ঘটে থাকলে লিঙ্ক দিন না , জানার / পড়ার কৌতূহল হয়। প্রশ্ন আমার তরফেও একটা আছে। ঠিক কী জাতীয় ধর্মালোচনার কথা বলছেন এই ধার্মিক মানুষেরা সেটা জানতে চাই। ধরুন কেউ যদি অথর্ববেদ থেকে ধর্মাচরণের বর্ণনা করেন তাহলে তার প্রাসঙ্গিকতাও থাকতে হবে। না থাকলে মুণ্ডচ্ছেদ হবে না, কিন্তু জনপ্রিয়তা আশা না করাই ভালো। বেশি পাঠক মন্তব্য করবেন না হয়তো তাতে। একই কথা বলা যায় কোনো আয়াতের সাদাসরল বর্ণনা নিয়েও। লিখতে বারণ আছে বলে তো মনে হয় না, কেউ যদি অনুবাদ করেন তো অসুবিধে কোথায়। তবে লেখার গুণ না থাকলে লোকে পড়বে কম, স্রেফ ধর্ম নিয়ে লেখা বলেই পেন্নাম কি সালাম করতে হবে কেন।
ধর্ম নিয়ে সমস্যা একটা মনে আসে, যেহেতু এটা ধর্মভিত্তিক ফোরাম নয়, কাজেই নানা ধর্মের মানুষ এখানে আসেন। এমন কোনো লেখা দেওয়া অনুচিত হবে যেখানে স্বধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের প্রচেষ্টা দেখা যায়। এবং এইটা সব ধর্মই করে থাকে, প্রত্যক্ষে বা পরোক্ষে। সে কারণেও অনেক সংবেদনশীল আধুনিক মানুষ নাস্তিক না হলেও এ বিষয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান পাবলিক ফোরামে, কারোর মনে আঘাত না লাগে যাতে সেই উদ্দেশে্য। ধর্ম নিয়ে এতো মারামারি-কাটাকাটির পরে এই প্রচেষ্টা আমার চোখে প্রশংসনীয়ই লাগে। তবু কেউ যদি লিখতে চান, সহিষ্ণুতার সঙ্গে, কাউকে আঘাত না দিয়ে লিখুন না। আমার ধারণা মডারেশনে সেটা আটকাবে না। আমি নিজে লিখবো না, কারণ এই রকম স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে লেখার মতো জ্ঞান আমার নেই। এ বিষয়ে আগ্রহও নেই, স্পিরিচুয়ালিটি ও রিলিজিয়নের মধ্যে আমি প্রথমটিকেই বাছবো। তবে ধর্ম-বিষয়ক ইতিহাস লিখলে পড়তে আগ্রহী।
সচলায়তন একেবারে নিখুঁত এমন কোনো ভুল স্বর্গে আমার বাস নয়। স্নিগ্ধার মন্তব্যে তার কিছু আভাস পাবেন। অনেক পাবলিক ফোরামের মতো এখানেও নানা মতের লোক থাকবেন, এবং কিছু বাজে বিতর্কের সূত্রপাতও ঘটবে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো সে বিতর্ক কীভাবে সামলানো হচ্ছে। বাংলাভাষাকে ভালোবেসে যদি কেউ আসেন এখানে, তাঁকে ধৈর্যশীলও হতে হবে কিছুটা। অল্পেতে অভিমান করে চলে গেলে চলবে কী করে? এ কথাটা ফারুক ওয়াসিফের প্রসঙ্গে বলছি না, বলছি ধর্মের প্রসঙ্গে। ধর্মালোচনায় স্পর্শকাতরতা এতো প্রবল থাকে যে একটুতেই বিবাদের সূচনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকে সে কথা ভেবেই হয়তো লেখেন না। যিনি সত্যি সত্যি আগ্রহী, তাঁকে এগিয়ে এসে লিখতে হবে, এবং ভব্যতার সীমারেখায় বসেই লিখতে হবে। লেখার পরে দেখা যাক ঘটনা কী দাঁড়ায়। আগে থেকেই হার মানলে চলবে কী করে।
আশা করি আমার বক্তব্য বোঝাতে পারলাম।
---আমার মনে হয় এইটে আসলেই একটা ভাল ব্যাখ্যা। আমার মনে হয় এই কারণেই অনেক বিশ্বাসী মানুষ ধর্ম নিয়ে লেখেন না। কিন্তু সেইসাথে আমার এটাও মনে হয় যে শুধুমাত্র সংবেদনশীলতাই কিন্তু একমাত্র কারণ নয়। অনেকেই 'আক্রান্ত' হবার ভয়ে লেখেন না। উপরে ইশতির মন্তব্যে এই নিয়ে কিছু লিখেছি মনে হয়।
চমৎকার একটা লেখার জন্যে আপনাকে বিশ লক্ষ তারা---!!!
খুবি ভাল পোস্ট। :।
--------------------------------------------
<ঘ্যাচাত, ঘ্যাচাত, ঘ্যাচাত> - আমার সিগনেচার
--------------------------------------------
বানান ভুল হইতেই পারে........
ধন্যবাদ, গোপাল ভাঁড়।
আমি সব দেখেশুনে ক্ষেপে গিয়ে বলি, "চুপ থাকাই উত্তম!"
ক্ষেপে গেলেন ক্যান?
আলোচনা খুবই ভাল লাগলো। সবাইকে ধন্যবাদ।
দ্রোহী ভাই এর কমেন্ট একদম ঝাল তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়ার পর মিষ্টি দই! আহা!
আসলে এই লেখাটি আর তার সাথে সাথে এইসব মূল্যবান কমেন্টসমগ্র এই হলো আসল ভালো জিনিস। লেখকের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে, ভালো আলোচনা চলছে।
পুরো আলোচনা ও একসঙ্গে করে একটা আলাদা পোস্ট হতে পারে, মডুরা কেউ ভেবে দেখুন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ, তুলিরেখা।
আলাদা পোস্ট নিয়ে কী বলেছেন ঠিক বুঝলাম না। এটা তো আলাদা পোস্টই, লেখা ও মন্তব্য সমেত। আপনি কি কমেন্টগুলো আলাদা করে পোস্ট হোক এইটা বলছেন?
আমি ভাবছিলাম নানাবিষয়ের যেমন নেটজীবনে মানুষের আচরণ, জাতিধর্মদেশ ইত্যাদি স্পর্শকাতর বিষয়ে কিভাবে কেউ নেটে বলেন আর বাস্তবে বলেন, গালাগালবিষয়ে কতটা সতর্ক হওয়া প্রয়োজন, বাকস্বাধীনতা মানে আসলে কি, আসলেই কি ভয়শূন্য হয়ে কথা বলা যায় কিনা- এইসব সাবটপিক গুলোর বিষয়ে কমেন্টগুলোকে জড়ো জড়ো করে করে একটা বড়ো পোস্টে যদি দেওয়া হতো, কমেন্ট স্ক্রোল করে করে মাঝে মাঝে ওভারহোয়েলমড লাগে। এত বড় বড় কমেন্ট!
কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম এই যে পোস্ট আর এত কমেন্ট, এভাবেও থাকাটা ভালোই, একসাথে ভালো ভালো দরকারি জিনিস সব রইলো। কিভাবে আলোচনা শুরু হয়েছিলো তাও বোঝা গেল।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ব্যক্তিগত মত হলো, ধর্মের সাথে বিজ্ঞান বা বিজ্ঞানের সাথের ধর্মের মিল নিয়ে বেশি উচ্চকন্ঠ হওয়ার বিপদ আছে। ধর্ম হলো বিশ্বাসের ব্যাপার। আর বিজ্ঞান হলো পরীক্ষালব্ধ একটা বিষয়। বিজ্ঞানের কোন কিছু দিয়ে যদি আমার ধর্মবিশ্বাস দৃঢ় ভিত্তি পায় আমি সেটা গ্রহণ করি। তাই বলে উল্টোটার কারণে ধর্মকে আমি দোষও দেইনা, বিজ্ঞান থেকে দূরেও থাকিনা। এটা আমার অবস্থান।
অনেকেই ধর্মের বিরুদ্ধে (বিশেষত ইসলাম) নিয়ে অনেক কিছু লেখে। তাদের যুক্তি তাদের কাছে হয়তো শক্ত, কিন্তু অনেকক্ষেত্রে আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়। কিন্তু নিজের যেহেতু এবিষয়ে পড়াশুনা নাই সেহেতু অহেতুক যুক্তি দাঁড়া করাতে যাইনা। আমি এতটা জ্ঞানী এখনো হইনি যে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করবো। আমার কাছে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করার চেয়ে গ্রহণ করাটাই সহজ মনে হয়। প্রফেট (স.) এর মিরাজের পরে যখন ঘটনাটা বর্ণনা করলেন তখন হযরত আবু বকর (রা.) বিনা বাক্যে, বিনা প্রশ্নে সেটা বিশ্বাস করছিলেন। আর সেকারণেই তাঁকে সিদ্দিক বলা হয়। অথচ মিরাজের ঘটনা প্রমাণ করে বিশ্বাস করার মতো অবস্থা তখনো ছিলনা, এখনো বোধহয় নেই। বিশ্বাসে আমার কাছে বস্তু মেলে, তর্কে বহুদূর যাওয়ার কোন খায়েশ নেই। এতে মানসিক শান্তিও পাই, আর দুনিয়ার কাজ কর্মেও কোন অসুবিধা হয়না। ফলে সেটাই করি। পরকাল থাকলে তো লাভবানই হবো, না থাকলে তো লস হলোনা । কিন্তু আমি কেন বিশ্বাস করলাম সেটা নিয়ে কেউ যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে খোঁচাখুঁচি করে তাহলে ব্যাপারটা অন্যরকম হবে। সচলায়তনে এখন পর্যন্ত তেমনটা দেখিনি বলেই মনে হয়। বরং চরম যুক্তিবাদী, এবং ধর্মে অবিশ্বাসী অনেকের সাথেই আমার অতি ভালো সম্পর্ক। এমনটাই আমি আশা করি। এমনটাই পেয়েছি।
অনিকেতের বন্ধু যা বলেছেন সেটা অনেকেরই মনে হতে পারে। এটাও ধর্ম নিয়ে সংবেদনশীলতার একটা প্রকাশ, যেটা খারাপ তা বলছিনা কিন্তু। এ বিষয়ে ইশতির মন্তব্যে কিছুটা ব্যাখ্যা এসেছে। নিজেকে দিয়ে বলতে পারি, সহাবস্থানের ফলে আমার কোনই সমস্যা হয়নি, আশা করি ভবিষ্যতেও হবেনা।
ধর্ম, বর্ণ, দেশ, ভাষা, লিঙ্গ, ইত্যাদি নিয়ে *খোলামেলা* আলোচনার আগে পরষ্পরের উপর অনেক বেশি আস্থা ও বিশ্বাস লাগে। বৈষম্য আর পরিচয়ের ভিত্তি সব সময় একই। আমি বাংলাদেশি, বাঙালি, মুসলমান, পুরুষ। এগুলো আমার পরিচয়, একে মুছে দিলে আমি বিলীন হয়ে যাবো। জাত্যভিমানও এসব পরিচয়ের ভিত্তিতেই হয়। আমার মতে, এ-ধরনের ব্যাপারে আলোচনার আগে তাই একটু নিশ্চিত হয়ে নিতে হয় অপর পক্ষ কোনো প্রকার জাত্যভিমানের সাথে কথা বলছেন কিনা। এটুকু নিশ্চিত হতে পারলেই আলোচনা অনেক সহজ ও সাবলীল হয়ে যায়।
উদাহরণ দেই। আমার প্রোজেক্টমেট একটা সাদা ছেলে। সাউথে বড় হওয়া, ইজরায়েলে বেড়িয়ে আসা। প্রথম দিনেই আমার পাশের কালো ছেলেটার কাঁধে হাত রেখে এই সাদা ছেলে বলে, "দিস ইজ হোয়াট উই কল এ ব্ল্যাক পারসন"। সাদা-কালো হয়েও দু'জন খুব অন্তরঙ্গ বন্ধু বলেই এটা বলতে পারা গেছে। আমার দিক থেকেও মার্কিনিদের প্রতি কোনো অন্ধ বিদ্বেষ নেই নিশ্চিত হয়েই এটা বলেছে।
এই আস্থাটা অর্জন করে নিতে হয়। এর পেছনে সময় দিতে হয়। কাজটা ব্যাক্তিগত পর্যায়েই সময়-সাপেক্ষ। পাবলিক ফোরামে তো আরও বেশি সময় লাগা খুব স্বাভাবিক। আমাকে মামুন ভাই বা পাঠুদা খুব সরাসরি ধর্ম নিয়ে কিছু বললে আমি একেবারেই কিছু মনে করবো না, কারণ আমি জানি তাঁদের অন্তরটা পরিষ্কার। একই জায়গায় অচেনা কেউ "অতিথি" নামের আড়ালে লঘু/তির্যক কিছু বলে গেলে অনুভূতিটা অন্য রকম হবে। এটাও আমার মতে ধর্ম নিয়ে লেখালেখি কম হওয়ার একটা বড় কারণ। আমি নিজে ধর্মের রেফারেন্স দিয়েছি আমার কিছু লেখায়। মনে পড়ে, অসংখ্য বার দেখে নিতে হয়েছে। নিশ্চিত হয়ে নিতে হয়েছে যেনো কাউকে অজান্তেই আঘাত করে না বসি। আড্ডার ছলে যেটা আমি পাঠুদাকে বলতে পারি, সেই একই কথা কিন্তু অন্যের চোখে আপত্তিকর ঠেকতে পারে।
সেটাই সমস্যা। পাবলিক ফোরামে যাঁরা পড়বেন তাঁদের সবার সংবেদনশীলতার মাত্রা জানা নেই, তাই ধর্মটর্ম নিয়ে কথা বলে অনেকেই ঝামেলা বাড়াতে চান না।
আপনার মন্তব্যগুলো চমৎকার লাগলো।
লেখাটা খুবই ভালো লাগলো, আপনার সাথে ১মত। কয়েকটা মন্তব্যে অবশ্য ২মত আছে (আপনার মন্তব্য না), তবে এখন হাতে ঠিক ত্যানা প্যাচানোর সময় নাই,কিন্তু কোনদিন নিশ্চুই বলতে হবে।
গল্প দ্যান মশাই.........
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
নাঃ গল্প দেখি লিখে ফেলতেই হবে, আপনি আর মৃদুল বলছেন যে ভাবে, এর পর না লিখলে সেটা ভয়ানক অসভ্যতা হয়ে যায়।
লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
দারুন একটা পোষ্ট এবং অনেক মূল্যবান মন্তব্যের সমারোহ। এখানে কিছু বলার
মতো বয়স আমার এখনো হয়নি, এজন্য শুধু পড়ে যাচ্ছি।
আমাদের বয়স নিয়ে তীর্যক ইঙ্গিত? আপনার বয়স কম কে বললে, তাইলে আপনি শুঁয়োপোকা নন কেন?
সে অর্থে বলিনি পাঠকদা, সচলে আমি মাত্র এসেছি, বুঝে উঠাই শুরু করিনি সব কিছু। এত গম্ভীর আলোচনায় আমার মতামত দেয়ার মত অভিজ্ঞতা বা সাহস কোনটাই হয়নি, এটাই বলতে চেয়েছিলাম।
আরে ফাইজলামি না বুঝলে তো মুশকিল, তাইলে তো আর পিছনে লাগা যায় না
পুরাই হা হা প গে, বুঝছেন মূলোদা আসছিল পিন ফুটাইতে, কিন্ত পাল্টা পিনের খোঁচা খাইতে রাজী না,
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
অত হাইসেন না... প্রজাপতি বলে কি মাথা ব্যাথা হতে পারে না? খুব খিয়াল কৈরা!
তির্যক না?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হ্যা ('হ্যাঁ' আমি লিখি না ইচ্ছা করেই, হুঁহ!) তুলিরেখা - তির্যক, মূলত পাঠকও বানান ভুল করেন দেখে যে কীইই ভালু লাগ্লো
আপনি মশাই ভীষণ খ্রাপ লোক! আমি তো প্রায়ই ভুল করি বানান। সচল হওয়ার ফায়দা তুলে পরে এডিট করে দিই।
অনেক দিনের ইচ্ছা আপনার লেখা মন্তব্য-টন্তব্য করে, বানান ভুল ধরে একেবারে ফর্দাফাই করে দেই, কিন্তু বছরে একটা করে লিখলে আর কী করার থাকে! অনেক কাল হলো, এবার একটা লেখা লিখেই ফেলেন।
কী জানি, আমার চোখে তো দীর্ঘ ঈ টাও ঠিকই লাগে, আরেক জন কেউ বলুন।
আমার কাছেও তীর্যকটাই ঠিক মনে হত। কিন্তু এখানে দেখলাম "তির্যক"টাই ঠিক।
ধর্ম নিয়ে আমার অনুভূতি অনেকটা ১০০ নম্বর মন্তব্যে প্রকৃতিপ্রেমিক এর মতই।
ধর্মাচরণে আমি শান্তি পাই। ধর্ম নিয়ে লিখতে পারলে খুবই ভালো হতো। কিন্তু আমার জানার পরিধি এত কম যে লিখতে সাহস পাইনা।
মূলত পাঠককে ধন্যবাদ এইরকম একটা প্রয়োজনীয় এবং ভালো লেখার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ, বইখাতা।
দুই বাংলা.. এই বিষয়ের উপর লিখুন না। এই দুই বাংলার মিল ও অমিলগুলো, মানুষরা কে কি ভাবে যানা যাবে...।
খুবই সংবেদনশীল বিষয় এটা, লিখলে কেউ কেউ আহত হতে পারেন, তাই দ্বিধা হয়। এক জীবনে কতো জনকে আঘাত দেওয়া উচিত সেটাই প্রশ্ন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই পোস্টে মন্তব্য দিতে এসে ভুলে "আপত্তি জানান" বোতামে চাপ পড়ে গিয়েছিল। যাহোক, কি আর বলব? গড়াগড়ি হাসি দেই।
সচলের প্রসঙ্গে ঐ মন্তব্য নয়। এখানে ফাজলামি করে অশ্লীলতার যে কথা আসে সেগুলো আমি নিজেই খুব উপভোগ করি, শিঙালো ছড়া বা নিমকি ছড়া। কাজেই ও সব নিয়ে আপত্তি করার অধিকারই আমার নেই। কখনোই সীমা ছাড়ায় না এখানের লেখা এমন দাবি করছি না, সদুদ্দেশ্যে হলেও অনেক সময় সেই বাবদ লেখার ওজন খানিক কমে যায়। তবে এ সবই লেখকের ব্যক্তিগত মতামতের ব্যাপার। খারাপ জিনিস হয় যখন নাম ভাঁড়ানো পাঠক ঢিল ছুঁড়ে পালায়। অন্যত্র লেখায় অকারণ নোংরামোও দেখেছি, সচলায়তনে মডারেটরদের বদান্যতায় সে সব দিনের আলো দেখএ না। এই সব করে তাদের কোন গোপন বাসনা চরিতার্থ হয় আমার জানা নেই, তবে আমার আঙ্গুল ঐ দিকেই তুলেছিলাম।
লেখাটা এবং তার সাথে দীর্ঘ এবং মূল্যবান সব মন্তব্য অফলাইনে পড়েছিলাম। অত্যন্ত সার্থক লেখা, জানিয়ে গেলাম।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
মূলত পাঠক কোথায় হারিয়ে গেলেন কে জানে? ভদ্রলোককে লিখতে দেখি না অনেক দিন।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মডারেশন নিয়ে বলতেও ভয় লাগে
নতুন মন্তব্য করুন