গল্প লেখার প্রচুর হ্যাপা, একে তো অনেক টাইপ করা, তার উপর কাহিনীরস-টস নিয়ে প্রচুর কিছু ভাবতে টাবতে হয়। নাজেহাল অবস্থা হয় একেবারে, ভূতের গল্প লিখতে গিয়েই বুঝেছি। তাই ঐ পথ আর মাড়াচ্ছিলাম না, কিন্তু মৃদুল আর সুজঞ্চৌধুরি আবার মনে করিয়ে দিলেন। এমন প্রশংসা শুনেও যদি না লিখি তো নেহাত অসভ্যতা হয়। অতএব লিখলাম, তবে অণুগল্প, খাটনি কম। মতামত জানান, এ জাতীয় প্রচেষ্টা আর করা ঠিক হবে কি না ইত্যাদি বিষয়ে।
----------------------------------------------------------
এই সময় বাসটা একটা গুমটিতে দাঁড়ালো, ফিরিওয়ালার হাঁকডাক ইত্যাদিতে জায়গাটা সরগরম। এটা একটা মাঝারি মাপের শহর, কাজেই অনেক লোকজন ওঠানামা করবে, বাসটা দাঁড়াবেও কিছুক্ষণ। কেয়া আড়মোড়া ভেঙে এক গাল হাসি দিলো, বললো, নামবে না? আমার সীট ছেড়ে যাবার কোনো ইচ্ছেই নেই, কাজেই সে একা নামলো, আবার নিশ্চয়ই কিনবে কিছু খাবারদাবার। আমি লোকজন জরিপ করছিলাম সময় কাটাতে।
দু চার জন নেমে গেলো এখানে, কয়েক জন উঠে সীট খুঁজে বসেও পড়লো। বাসের দরজার কাছাকাছিতেই একজোড়া যুবক যুবতী কী সব বাকবিতন্ডা করছে, শোনার চেষ্টা করলাম। মেয়েটির গলার ভল্যুম ভালোই, শুনতে সমস্যা হয় না। ছেলেটির ব্যায়াম করা স্বাস্থ্য, কিন্তু ক্ষীণ ও দুর্বল কণ্ঠে সে অনুনয় করছে মেয়েটিকে, এমন কোরো না প্লিজ। মেয়েটি অবশ্য তাতে বিশেষ পাত্তা দিচ্ছে না, সে বরং দাবড়ে দিলো ছেলেটিকে, এতো প্যান প্যান কোরো না, জার্নির আগে মুড নষ্ট কোরো না আমার। এটা বোধ হয় সী-অফ দৃশ্য নয়, পাকাপাকি ব্রেক আপ। ছোকরা মুষড়ে পড়ে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেখলাম, আমাকে কেন ছেড়ে যাচ্ছো সেইটাও কি আমাকে বলবে না? উষ্মা প্রবলতর হলো মেয়েটির, বললেই বুঝবে? অনেক চেষ্টা তো করলাম, কিন্তু তোমার এই মোটাদাগের জীবনে আমি পোষাতে পারবো না। চেহারা আর টাকাপয়সাটাই তো সব না! বুঝলাম ইনি সেই আরো কিছু চান যা গজফিতেয় মাপা যায় না। যাক, আমি ভালো করে চেহারাটা দেখতে লাগলাম। কোমর সরু, পাছা চওড়া, এবং কুচযুগ যথাস্থানে যথাবিধি শোভিত। ভালোই লাগছিলো দেখতে, কিন্তু বাস ছাড়ার সময় হয়ে গেছে বোধ হয়, ছোকরাকে বিদেয় করে কন্যা বাসে উঠে এলো। পেছন দিকে একটা ডাবল সীটে একজন চশমাধারী সিড়িঙ্গে পুরুষের পাশে গিয়ে বসলো যখন অবলীলায়, তখন বুঝলাম ইনিই সেই আরো কিছু। বেশ কথা, এই বার বোধ হয় কামু-কাফকা শুরু হবে, কান খাড়া করলাম আবার। সিড়িঙ্গে বলছে শুনলাম, আর বোলো না, হাজার রকমের সন্দেহ, কোথায় যাচ্ছি কেন যাচ্ছি। এত খোঁজে দরকার কী, বাচ্চা সামলাও না, আমাকে রেহাই দাও। মেয়েটি সায় দিলো, যা বলেছো।
এই সময় কেয়া উঠে এলো, হাতে খাবারের ঠোঙা। প্রথম আলাপ হবার সময় একবার ওকে বলেছিলাম ওর হাসিটা সুন্দর, সেই থেকে এখন কারণে-অকারণে হাসে। এই হাসিটা অবশ্য কারণেই, যে হারে ফুলছে তাতে এই সব খাবার ওর না খাওয়ার কথা, তবু লোভে পড়ে খাচ্ছে, সেই বাবদ এই অ্যাপোলোজেটিক হাসি। আমিও একটা হাফ-হাসি দিলাম জবাবে। সীটে বসে সে আমার হাতটা তার কাঁধের উপর চাপিয়ে নিলো, বাহুলগ্না হয়ে হুমদো বেড়ালের মতো আহ্লাদে নানা রকম শব্দ করতে লাগলো। আমি একবার ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনের মালটিকে ভালো করে দেখে নিলাম। আহা, এই রকম সরু কোমর হলে জাপটে ধরে পেড়ে ফেলা যায়। সে অবশ্য চশমাওলার মেচেতা-মুখের বাণী শুনতে ব্যস্ত, তাতেই অর্গ্যাজমের সুখ পাচ্ছে বোধ হয়, আমি এই ফাঁকে বুকের মাপটাও নিয়ে নিলাম গুছিয়ে। বাকি রাস্তাটা মালটার খোসা ছাড়াবো মাথার ভেতর।
বাসটা ছেড়ে দিলো, রতিস্বপ্নে ডুব দেওয়ার জন্য চোখ বোজার আগে জানলা দিয়ে তাকালাম। সেই হ্যান্ডু ছোকরা ভোম্বল মুখে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। কেয়ার ঘামের হাল্কা গন্ধ নাকে আসছে। আমি চোখ বুজে পেছনের মেয়েটার ব্লাউসের হুক খুলতে লাগলাম।
মন্তব্য
মুলোদি জানতে পারলে আপনাকে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেবে!
হা হা
এইটা কিন্তু গল্প, আত্মকথাটথা নয়!
ভালো হয়েছে মূলোদা। তবে আরো ভালো হতে পারত। তুমি আমার মতো তাড়াহুড়া করে না লিখে আরেকটু সময় নিলে অসাধারণ সব গল্প বেরোবে !!
ধন্যবাদ মামুন ভাই।
কম সময়ে লেখা ঠিকই, তবে এই গল্পটা সময় নিয়ে লিখলেও ছোটোই হতো, রমানাথ রায় কাটিং
আপনে মিয়া পারেনও
চালাইয়া যান
...........................
Every Picture Tells a Story
থাংকু মুস্তাফিজ ভাই।
আপনেরা আছেন বইলাই সচলায়তনে প্রতিদিন গোত্তা খাই। লেখা ভালা লাগছে, তবে আরেকটু বড় করলেও পারতেন। লেখা চলুক...
ভালো লেগেছে জেনে আনন্দ পেলাম। আপনিও লিখুন না এখানে, আমাদের সবারই কিছু না কিছু বলার কথা আছে।
বলার আছে অনেক কিছু, কিছুই বলা হয়না,
পেটের মাঝে কত কথা, আর তো প্রাণে সয়না।
লিখবো লিখবো। পছন্দের টপিক যাচাই বাছাই করে নিই।
এই গল্পটায় ওভার্ট ডিসপ্লে অব মাচোইজমটা আমার খুব একটা ভাল লাগল না৷
আর ইয়ে মেচেদা না হয়ে ওটা মনে হয় "মেচেতা' হবে৷
------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
একটু সাফাই গাই, ঐ ব্যাপারটা এক চরিত্রের মনোভাব, গল্পের মূল সুর বা গল্পকারের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। মাচোইজমের চেয়েও ব্যাপারটা অনেকটাই সেক্সুয়াল, ছোকরা অতি তেএঁটে বজ্জাত।
মেচেতা সারিয়ে দিলাম। থাংকু।
আপনার গল্পের নায়ক দেখি আমার মতো দূশ্চরিত্রওয়ালা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কী জানি, আপনি নিজের চরিত্র নিয়ে গল্প তো আর লিখলেন না, নাটকও বানালেন বলে শুনি নি। এখন কনফার্ম করি কেম্নে, ভাবীরে জিগামু কিনা সেইটাই ভাবি।
অন্যরকম আরেকটা গল্প লেখেন পাঠক মহাশয়। এটাও গল্প হিসেবে ভালোই তবে রস ততটা পাইনি।
আসলে আমি নিজেও বেশ বিস্তার করে বর্ণনা-ব্যাখ্যান করে লিখতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করি, তবে তাতে এতো সময় লাগে, আমার হিসেবে হপ্তাখানেক, যে এই জাতীয় ছোট্ট ছোট্ট গল্প লেখার লোভ খুবই হয় যাতে খাটনি ঢের ঢের কম। অন্যরকমও লিখবো। আপনাদের খোলাখুলি বন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
পাঠকের চাপে পড়ে আবার লেখা বন্ধ করে দিয়েননা
আরে না না, লিখে যদ্দিন ভাল্লাগবে আর হাতে সময় থাকবে লেখা বন্ধ হবে না।
ইয়ে, পাঠক মশাই - হুমমম ...
মানে, আপনার আরো একটু বিস্তৃত লেখা আমার ভালো লাগে বেশী
সে তো বুঝলাম কিন্তু আমার যে খুব ফাঁকি মারতে ভালো লাগে
পাঠক দা কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি। লেখাটি কি বেশি তাড়াহুড়া করে লেখা?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মনে করার প্রশ্নই নেই। গল্পটা লিখতে সময় খুব কম লেগেছে কিন্তু তাড়াহুড়ো করে লেখা তা বলবো না। মৃদুল যে কথা বলেছেন আমারও তাই মত। এটা বেশি সময় নিয়ে লিখলেও ইতরবিশেষ হতো না, এটা এইরকম হাল্কা চালেরই গল্প ছিলো।
ধন্যবাদ,পাঠকদা,গল্পটা জবর (রসময়) তবে কেন জানিনা... কথকের পরস্ত্রী-কাতরতায় শেষটা এ্যান্টিসিপেট করতে পারছিলাম। ইলাস্ট্রেশানটা বড্ড সিরিয়াস ( রসময় কাতরতা নাই... হেহেহে )।
আরো দ্যান বিভিন্ন রসের গল্প।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
এ গল্পটার শেষে টুইস্ট রাখার কথা ভাবি নি, যাক ছোটো মাপের তো, পড়ে ভালোমন্দ যাই লাগুক অনেক সময় লাগে না পড়তে বলে কেউ হতাশ হবেন না আশা করি।
ছবির ব্যাপারটা ঠিকই ধরেছেন, আমারই করা অনেক পুরোনো একটা অলংকরণ থেকে ঝেড়ে দিলাম, সেটার কনটেক্সট আলাদা ছিলো, কাজেই
আশাহত হওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা বরং প্রবলাশা জাগ্রত হয়!!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
আশা করি আপনার প্রবলাশাকে হতাশ করবো না। অনায়াসে গল্প লেখার কলমের জোর নেই, অন্তত এখনো তাই মনে হয়, তুলিরেখার মতো এ বেলা ও বেলা একটা করে মাথা-ঘুরিয়ে দেয়া গল্প লিখতে অন্য জাতের প্রতিভা লাগে। তবে চেষ্টা করতে তো দোষ নেই, জগতে সবার জন্যই স্লট আছে আলাদা আলাদা।
রসালো, কঠিন রসালো, মূলোদা, লেখায় উত্তম
ইয়ে মানে খোলার পরের পর্বকি পাবো?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
পেতেও পারেন, আজকাল সব কিছুরই তো সিকোয়েল হয়, এটারও হতেই পারে।
ব্লগে গল্প লেখার কিছু যন্ত্রণা আছে বলে আমার মনে হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাঠক মনে করে নেয়, গল্পটা লেখকের আত্মজীবনী গোছের কিছু। উত্তম পুরুষে হলে তো আর কথাই নেই। এই ব্যাপারটি মনে হয় ব্লগে গল্প লিখতে গেলে লেখকের সরল চিন্তাধারার স্বতঃস্ফূর্ততাকে কিছুটা থমকে দেয়।
একটা গল্পকে গল্প হিসেবেই নেয়া উচিত।
রাজর্ষিদা আরো যদি সময় হাতে নিয়ে লিখতেন, এই গল্পটা এর চেয়ে আরো মারাত্মক কিছু হত বলে মনে হয় না। এই গল্পটার ধরনই এরকম।
আমার তো দারুণ লাগল! থেমে যাওয়া বাস, একঘেয়ে পেটুক স্ত্রী, চোখের সামনে জীবন্ত নাটক, তাদের কথা কাটাকাটির মজাদার ডায়লগ, লেখকের অবজারভেশন, পরিশেষে গল্পের নায়িকার দিকে বর্ণনাকারীর এগিয়ে যাওয়া... দৈনন্দিন জীবনের ট্রিমেনডাস এক টুকরো!
আর বর্ণনার ঢঙ এবং ডায়লগ (ডায়লগ খুব কঠিন জিনিস, সব লেখক যথাযথ ডায়লগ বসাতে পারেন না, অথচ যেটা একটা গল্পের চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার সবচে দরকারি জিনিস) তো আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে!
তবে... মূলত পাঠকের পিছনে যে মূলত লেখক লুকিয়ে আছেন, তার কাছে আমাদের আরো চাওয়া তো থাকতেই পারে! আপনার লেখার হাত আছে, আর আমরা পিপাসু পাঠক, কাজেই আপনি আরো বড় লেখা খেটে হলেও লিখবেন না কেন আমাদের জন্য?
আপনার লেখার ক্ষেত্রে শুধু একটা কথাই মনে হয়, আপনি অনেক বড় প্যারা দিয়ে লেখেন। একটু পর পর ভেঙ্গে নতুন প্যারা করে না দিলে পড়তে অসুবিধা হয়!
এগিয়ে যান গুরু... জাত লেখকের জিনিস আছে আপনার ভিতরে... আমাদেরই বা বঞ্চিত করবেন কেন? আর নিজেই বা আমাদের ভক্তি থেকে বঞ্চিত হবেন কেন?
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনি এতো প্রশংসা করেছেন যে আপনার সাথে কিছু পয়েন্টে ভয়ানক সহমত হয়েও সে কথা বলতে একটু দ্বিধা হচ্ছে। এ গল্পটা খুবই হাল্কা চালের এবং শেষে টুইস্ট থাকবে এমন গোত্রেরও নয়, তবে সচলের অণুগল্পে সাধারণত সেটা থাকে বলে অনেকে হতাশ হয়েছেন বুঝতে পারলাম। কোনো প্রত্যাশা ছাড়া পড়া খুব কঠিন কাজ, সে জন্যই পাঠককে এ বাবদ দোষ দিই না। যাঁরা রমানাথ রায়ের গল্প পড়েন তাঁরা হয়তো গোত্রটা ধরতে পারবেন সহজেই, যদিও ওঁর লেখার তুলনায় এ গল্পটা একটু বেশি আমিষ।
এর একটা স্ট্রাকচারাল মিল অনেক পুরোনো এবং অসাধারণ এক গল্পের সাথে আছে, সে কথা পরের মন্তব্যে লিখছি। এতো যত্ন করে পড়ার জন্য আপনাকে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিতে পারবো না।
ভৌতিক গল্পে প্যারা ভাগ করার ব্যাপারটা আমারও নজরে ছিলো, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে গতি ব্যাহত না হয় এই ভেবে করতে পারি নি। ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবো।
আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে লেখাটি (জেনেরিক পিঠ চাপড়ানি মন্তব্য না)।
গল্পটি যেহেতু উৎমপুরুষে বর্ণনা করা হয়েছে, এতে মূল চরিত্রটির ভাবনাগুলো একদম নিখুঁত ভাবে উঠে এসেছে। সব গল্পেই যে শেষে একটা চমক থাকতে হবে তা নয়, এবং এই গল্পটির সমাপ্তিটাও বোঝা গিয়েছিল আগেই। গল্পের নামটি অবশ্য আমার কাছে যথাযথ মনে হয়নি।
বটমলাইনঃ- লেখা চলতে থাকুক। থামানো যাবে না।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
নন-জেনেরিক মন্তব্য বলেই খুশি হলাম, লেখালেখি নিয়ে আগের নিবন্ধে ও মন্তব্যে এই বিষয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ভয়ানক রকমের সৎ ফিডব্যাক পেলে ভালোমন্দ দুই-ই, অনেক উপকার হয়।
আপনি আমার ভাবনাটা ধরতে পেরেছেন ভেবে তৃপ্তি লাগছে। এ গল্পটা ঠিক পঞ্চব্যঞ্জন নয়, বরং ফুটের হোটেলের গোস্ত, লংকাগুঁড়ো দেয়া আর ওপরে তেল ভাসছে, মোটেও স্বাস্থ্যকর খাবার নয়। নামকরণের একটা ব্যাখ্যা আছে, সেইটা চোখে না পড়লে যথাযথ না লাগাই স্বাভাবিক। পরশুরামের প্রেমচক্র গল্পের ভেতরের সেই ভুণ্ডিলমুনির গল্প যাতে হারিত লারিত জারিত আর তমিতা নমিতা শমিতা আছে এখানে সে জাতীয় একটা প্রেম হেক্সাগন রয়েছে, তাই ঐ নাম। প্রথমে চরিত্রগুলোর নামও রেখেছিলাম ঐ জাতীয়, কেয়া পিয়া দিয়া এই সব, বাহুল্য মনে হওয়ায় পরে বাদ দিয়েছি। ছেলেদের নামেরও একই গতি হয়েছে, দেখলাম এইটুকু গল্পে এতোগুলো নাম দিলে তার ওজন বইতে গল্পের দৈর্ঘ্য আরো বাড়াতে হয়, তাতে মজাটা পানসে হয়ে যায়, তাই ঐ ব্যবস্থা।
আরো লিখবো, নিশ্চয়ই।
পরশুরামের প্রেমচক্র গল্পটা দুর্দান্ত... সাইক্লিক অর্ডারে প্রেম, অনেক দিন পরে মনে পড়লো।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
আহা এমন জিনিস তিনিই লিখতে পারেন, সেই ইলাসট্রেশন সমেত বেলকাঠের কৌপিন, ভুন্ডিলমুনির রোলে অতসীদিকে গোঁফ লাগবে না, চাট্টি দাড়ি লাগিয়ে নিলেই হবে, কিংবা বাংলা সংখ্যা দিয়ে মেয়েদের মুখ আঁকা! এই গল্পটা আর সুকুমারের কালাচাঁদের ছবি, এমন জিনিস কি আর হবে?
ধুর মশাই! দিলেন তো দিনটা মাটি করে।
এখন এগুলো পাই কৈ ! আবার পড়তে ইচ্ছা করছে!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
ও আচ্ছা- এটা তাহলে গল্পের গল্প। এতক্ষণে বুঝলাম "নবপ্রেমচক্র" নামকরণের শানে নুযুল। তাহলে একটা গল্প বলি। সত্য ঘটনা।
তখন কেবল বিদেশে এসেছি। একবার এক পত্রিকার একটা জোক ছাপা হোল অনেকটা এই রকম:
Q: Why did the chewing gum cross the street?
A: Because it was stuck to the chicken's foot.
কিছুই বুঝলাম না যে এটা কি ভাবে জোক হোল? এর মানেই বা কি? এর একটা তদন্ত হওয়া দরকার। পৃষ্ঠাটি এক আমেরিকান সহকর্মীকে দেখালাম। সে তো এটা পড়ে মহা আনন্দ। হা হা করে হাসলো কিছুক্ষণ। আমিতো আরো বোকা বনে গেলাম। তখন সে আমাকে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করলো।
আসলে ওটা ছিল জোকের জোক। আসল জোকটা ছিল এই রকম:
Q: Why did the chicken cross the street?
A: To go to the other side.
বুঝলাম যে মূল জোকটি জানে, সেইই কেবল বুঝতে পারবে চিউইং গামের সাথে চিকেন ফুট এর সম্বন্ধটা কি। অন্যেরা হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে আমার মতোন।
পরশুরামের লেখাটি আমি পড়িনি বলেই নামকরণটি ধরতে পারিনি। দেখি যদি কোথাও পাই পড়ে ফেলবো।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
এ গল্পটা বুঝতে বা উপভোগ করতে প্রেমচক্র পড়া থাকতে হবে তা নয়, তবে নামটার মানেটা তাহলে বোঝা যাবে এই আর কি। তবে এহ বাহ্য, ওটা বাংলা ছোটো গল্পের শ্রেষ্ঠ একখানা নমুনা, ও জিনিসের অনুবাদ হয় না নইলে বিলিতি বন্ধুদেরও পড়ে শোনাতাম। আপনি অবশ্যই পড়ুন। আমার কাছে আছে বইটা, কিন্তু এখন আমি বাড়িতে নেই, দেড় মাসের সফরে বেরিয়েছি, না হলে স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিতাম।
বস, স্ক্যান করলে কোথাও আপলোড কইরেন, আমিও চাই এক কপি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
শিগগির তো হবে না, সেই অগস্টের শেষে ফিরবো। তবে মনে থাকবে আপনার কথাটা।
পাঠকদা, সচলায়তনে যে কয়েকজনের লেখা পড়ার জন্য ঢু'মারি, তাদের মধ্যে আপনি একজন। যদিও এটি প্রথম মন্তব্য। এতদিন আপনার বিশ্লেষণধর্মী লেখার ফ্যান ছিলাম... এই লেখা পড়ে আপনার অনুগল্পেরও ফ্যান হয়ে গেলাম। গল্পের চরিত্র গুলি এত সুন্দর করে ফুটে উঠেছে..., ডায়ালগ, বর্ণনা, বিষয়বস্তু (ভিন্নধর্মী) ও জটিল হয়েছে। গল্পের নামটা মনমত হয়নি।
আপনার সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি দ্রুত আপনার আরো কিছু নতুন লেখা পড়তে পারবো।
বিশাল সম্মানের কথা বললেন। খুব আনন্দ পেলাম ভালো লাগার কথা শুনে। আজকেই আরেকটা গল্প পোস্ট করছি, এক্ষুনিই। নামকরণের ব্যাখ্যা আরেকটা মন্তব্যে লিখেছি তাই আরেক বার লিখলাম না এখানে।
আপনিও লিখুন না কিছু, সচল লেখকের সংখ্যায় অধিকন্তু ন দোষায়।
প্রতিটা সচলের গল্পই আমি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি, এটাও পড়লাম। পাঠকদার গল্পের হাত ও বেশ ভালোই দেখা যাচ্ছে...।
তবে এটা মনে হয় আপনি গল্পেই দীর্ঘায়িত করতে পারতেন। 'অণু' কেনো যেন এই গপ্পের সাথে ঠিক যাচ্ছে না।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভাল্লাগ্লো। আপনার কথাই ঠিক, এটা চরিত্রে আদৌ অণুগল্প নয়, মাপে হলেও হতে পারে। ট্যাগটা সরিয়ে দিলাম তাই।
পাঠকদা, আপনার আগের প্রোফাইল পিকচারটাই বেশী ভালো লাগতো।
আরেক জন বললেন এই ছবিটাই নাকি বেশি ভালো। যাক গে, দু দিনের দুনিয়ায় সবই অনিত্য, এ ছবিও বদলে যাবে।
ও: হারিত জারিত লারিত! তমিতা জমিতা শমিতা! ঐ হেক্সাগোনাল ডায়াগ্রাম! বাপরে!
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাংলা ভাষার সবসেরা মজার গল্প ওটা।
পাঠক'দা, আমার কাছে কিন্তু অনেক ভালো লেগেছে গল্পটা। দারুণ হয়েছে। আরো অণুগল্প আসুক আপনার কাছ থেকে
নিশ্চয়ই, আরো লিখবো। অণুগল্প হবে কি না জানি না, এটাও যে ঠিক অণুগল্প ছিলো তা বোধ হয় না, যাক লিখবো ঠিকই। আজকে আরেকটা পোস্টও করে দিয়েছি, পড়লে কেমন লাগলো জানাবেন।
অনেক ধন্যবাদ।
আমার খুব ভাল লেগেছে...সাধারণ বর্ণনায় অসাধারণ! আপনি চমৎকার লেখেন দাদা!
আমার একজন প্রিয় গল্পকার ছিলেন নরেন্দ্রনাথ মিত্র...অনেকদিন পড়া হয়না।।:(
-------------------------------------
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
অনেক ধন্যবাদ স্বপ্নহারা ভাই। ভালো লাগলো এমন প্রশংসা পেয়ে, এইমাত্র একজনের কথা শুনে খুব মনমেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো, আপনি মন ভালো করে দিলেন। অথচ একে আপ্যায়ন করে খাওয়ালাম।
পাঠক'দা যথারীতি জটিল হৈছে!!
আহারে নরেন্দ্রনাথ মিত্র!!!অনেক দিন পর মনে পড়লো ... ওনার একটা অসাধারণ গল্প ছিলো 'গুড়', এটা থেকে বাংলা-হিন্দী দুই ভাষাতেই সিনেমা হয়েছিলো... হিন্দীটার নাম ছিলো 'সওদাগর' অমিতাভ বচ্চন অভিনয় করেছিলেন নাম ভূমিকায়.......
ভাই স্বপ্নহারা আপনার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
নরেন্দ্রনাথ মিত্রের সেই গল্পের নাম ছিল "রস", "গুড়" নয়।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ঠিক!! ঠিক!! ভুলে গেছিলাম ভাই, সুধরে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মৃদুল'দা।
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
অনেক ধন্যবাদ শল্লকী ভাই।
ছি ছি! কী খ্রাপ!!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
সত্যিই তো, খুব খ্রাপ!
ইদানীং কেন যেন সিনেমা বানাতে মঞ্চায়। সত্যি সত্যি ক্যামেরার পেছনে যদি কখনো দাঁড়াই, এই গল্পটার জন্যে গুঁতা দিব আপনাকে।
সিনেমা বানানো আমারও একটা স্বপ্ন, তবে মূলত স্ক্রিপ্ট লেখারই ইচ্ছে হয়। আপনার এমন মন্তব্যে চমৎকৃত হলাম, এতো ভালো লেগেছে আপনার এই যৎসামান্য গল্প, তা জেনে। অবশ্যই জানাবেন, গল্প বাবদ দক্ষিণা নেবো এক টাকা, এখন থেকেই বলে রাখলাম। বিনা পয়সায় হবে না।
নতুন মন্তব্য করুন