বরফের রঙ

মূলত পাঠক এর ছবি
লিখেছেন মূলত পাঠক (তারিখ: শনি, ০১/০৮/২০০৯ - ১:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ মেঘবৃষ্টি কিছু নেই, সামান্য তুষার পড়ছে, এর জন্য অফিস কামাই করার মানেই হয় না। তবু যাই নি কাজে, আজ অফিস যাবার দিন নয়, আমার জন্য। কাল সন্ধের পর থেকে আমার আকাশ ভার করে আছে।

অফিস থেকে এইমাত্র চারু ফোন করেছিলো। গোটা অফিসে একমাত্র ভারতীয় সে, আমার খোঁজখবর নেয়, আমিও নিই। আমাকে না দেখে ফোন করে হৈচৈ জুড়ে দিয়েছিলো, অনু তোর শরীর ভালো তো? জ্বরজ্বারি নয়? দেখ সিরিয়াস কিছু হলে বল, আমি নিয়ে যাবো ডাক্তারের কাছে। অনেক করে তাকে সামলেছি, কথা বলতে ইচ্ছে না হলেও এইটুকু বলতেই হলো যে আমি ঠিক আছি, ফাঁকি মারার ইচ্ছে হলো বলে আর ডুব দিলাম। ওকে বলা যায় না ম্যাটের কথা। ও জানে না কিছুই, যখনকার কথা তখন ওর সাথে আমার আলাপও ছিলো না, চারু এ শহরেই থাকতো না। তিন বছরে সে সব কিছু হয়ে গেছে গতজন্মের পার।

জানলা দিয়ে বাইরের ছবিটা প্রায় সাদাকালো, ঘোলা আকাশ, কংক্রিটের হাঁটাপথটুকুর বরফ পরিষ্কার করেছে, ঘাস বরফে ঢাকা। গাছপালাও সব নিষ্পত্র বলে সেখানেও রঙ নেই এতটুকু। একটা ঘুঘু ডালে বসে বোকার মতো বরফে ভিজছে। কফির মগ হাতে আমি ওকে দেখতে থাকি, ওদিকে আমার কফি ঠান্ডা হয়। রুম হিটারের একঘেয়ে আওয়াজ ছাড়া চরাচরে আর কোনো শব্দ নেই, বরফপাত শিশিরের মতোই নিঃশব্দ, আরও বিষণ্ণ। আমার নিজেকে ঘুঘুটার মতোই বোকা বোকা লাগে। দৈন্যের এক বোধ গ্রাস করে বিষণ্ণতাকে। সব তো ভুলেই গিয়েছিলাম, আবার কেন হাওয়ায় অতীতের শুকনো পাতারা উড়ে এসে পড়ে আমার শূন্য কোলে?

কালকে তাড়াতড়ি বেরিয়েছিলাম অফিস থেকে। এখানে একটা বড়ো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়, আমার কয়েক জন বন্ধু আয়োজকদের মধ্যে থাকায় গিয়েছিলাম ছবি দেখতে আর ওদের সাথে দেখা করতে। যদি জানতাম ম্যাট আসবে তাহলে নিশ্চিত যেতাম না। এই ছোট শহরে জানা অসম্ভব ছিলো না, পরে স্টিভ বললো ম্যাটকে ও-ই টিকিট জোগাড় করে দিয়েছে। কিন্তু আমি যে চোখ বুজে রাখবো ঠিক করেছিলাম অনেক দিন আগেই, আমার সামনে যে ওর নাম নেওয়াও বারণ এক রকম। একসময় ওদেরকে জনে জনে বলে দিয়েছিলাম সেকথা, এখন ওরা কী করতো আর! সিনেমা শেষ হতে থিয়েটার থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সাথে আলাপ করছি, এমন সময় উদয় হলো সে। তাও ভালো একা এসেছিলো, না হলে আরো ধাক্কা খেতাম বোধ হয়। নাকি একা না এলেই ভালো হতো? সেক্ষেত্রে পুরোনো দিনের খাতিরে কফি খেতে যেতাম না, আর এমন দুরবস্থা হতো না। কিসে যে ভালো হয় আর কিসে খারাপ, সে হিসাব মেলাতে পারি না আর।

বরফ পড়লে অনেকেরই মন খারাপ হয়, আমার কিন্তু ভালো লাগতো খুব। চারিদিক নিষ্কলঙ্ক সাদা চাদরে ঢাকা পড়ে, অন্তত তাজা বরফ পড়লে তেমনটাই হয়। তুষারে প্রতিফলিত আলোর একটা মায়াময় চেহারা আছে, সিনেমার মতো। এরকম বরফঢাকা দিনেই ম্যাটের সাথে আলাপ হয়েছিলো আমার। ভাঙা হৃদয় জুড়োচ্ছি তখন, দেশ থেকে দূরে এসে। এখানে লোকে এতো কথা জানতেও চায় না, সিঙ্গেল হলেই ম্যাচমেকিংয়ের তীব্র বাসনা নিয়ে লোকে ঝাঁপিয়েও পড়ে না, এইটা একটা বিশাল সুবিধা ছিলো। তাছাড়া চেনাজানা লোকও বিশেষ নেই যে আমার একাকীত্বের বিলাসে বাধা দেবে। মাঝে মাঝে সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরে খুব একঘেয়ে লাগলে পাড়ার ক্যাফেতে চলে যেতাম, ধূমায়িত কফিকাপ নিয়ে একটা বই কি ল্যাপটপ খুলে বসতাম, কয়েক ঘন্টা পার হয়ে যেতো স্বচ্ছন্দে। ঘরোয়া কফিশপ, চেইনভুক্ত নয় বলে চরিত্রেও সেইরকম আন্তরিক। কাউন্টারের শার্লিনের সাথে ভালো খাতির হয়ে গিয়েছিলো। নাকে কানে ঠোঁটে মাকড়ি পরা কলেজবালিকা, দোকানে ঢুকলেই একগাল ঝলমলে হাসি দিয়ে মন ভালো করে দিতো। ম্যাটও আসতো নিয়মিত, আমিই আত্মমগ্ন থাকতাম বলে লক্ষ্য করিনি। এক সন্ধ্যায় সে 'হ্যালো' বলে আমার টেবিলে এসে বসে, আমার হাতের বইটা নিয়ে গল্প জুড়ে দেয়। অনেক বইপত্র পড়েছে, আমি তো এ লেখকের নামও বিশেষ জানতাম না। গায়ে পড়া লোক আমার ভালো লাগতো না একেবারেই, কিন্তু সে জানতো পাশের চেয়ারে বসেও কী করে দুরত্ব রাখা যায়। এরপর থেকে মাঝে মাঝেই একসাথে কফিশপে সময় কাটতো আমাদের। আমরা সময় ঠিক করে আসতাম না কিন্তু প্রায়ই দেখা হয়ে যেতো, এবং এক টেবিলে বসে কফি নিয়ে কিছু আলাপ সেরে আমরা নিজের নিজের কাজ করতাম। ম্যাট শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচআর দপ্তরে কাজ করে, ছাত্রদের সমস্যা দেখে, সদালাপি, যদিও ঠিক হুল্লোড়বাজ ধরনের নয়, বরং তার চোখের নিচে বিষাদের ছায়া দেখতে পেয়েছিলাম যেন। হয়তো সেজন্যেই আমাদের একের অন্যকে ভালো লাগে, সমব্যথীর সহমর্মিতায়। সে একটা পরীক্ষা দিচ্ছিলো বলে পড়াশোনা থাকতো তার, তাই আমাদের আলাপটা একসাথে এক টেবিলে বসে পড়াশুনো করতে করতে যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সে পর্যায়েই ছিলো কিছু দিন। এই সময়ের দিনগুলোর স্মৃতি আমার খুব বিশদে মনে নেই, হয়তো দিনগুলো খুব এক রকমের ছিলো বলেই। আমাদের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিলো খুব দ্রুত, ফোন নম্বর বিনিময়ও হয়েছিলো, কিন্তু তার পর আর এগোয়নি।

একবার অফিসের কাজে আমি বাইরে গিয়েছিলাম হপ্তাখানেকের জন্য, তখন ম্যাটের ফোন। তাকে বলে যাওয়া হয়নি, ফোনে সে বললো সে নাকি চিন্তায় ছিলো আমি ঠিকঠাক আছি কি না তাই নিয়ে। আগে লোকের এই উদ্বেগ আমাকে বিরক্তই করতো, একা থাকার অভ্যেস হয়ে গিয়েছিলো বলেই হয়তো। কিন্তু ম্যাটের গলা শুনে খুব ভালো লাগলো, আমি বোধ হয় একা থেকে ক্লান্তও হয়ে গিয়েছিলাম ততো দিনে। তাকে আসতে বলেছিলাম আমার অ্যাপার্টমেন্টে, ডিনারে।

অনেক দিনের অসাক্ষাত কি মানুষকে হঠাৎ কাছে এনে দেয়? না কি বাইরের শৈত্য ছেড়ে ঘরের ওম আমাদের আসঙ্গপ্রত্যাশী করে তুলেছিলো? ওর কোট নিয়ে ক্লসেটে ঝুলিয়ে রাখতে গিয়েই শরীরে শরীরের ছোঁয়া লেগেছিলো, কিন্তু ভেতরে বারুদ না জমা থাকলে সেই স্পর্শে বিস্ফোরণ তো হয় না। দীর্ঘ শীতে কি কামনারা ঘুমোয় না? আমাদের শরীরে শরীর মিলে যাচ্ছিলো যখন তখন এতো কথা মনে আসে নি, সিনেমায় যেমন ফায়ারপ্লেসের আগুনের সামনে শরীরে আগুন লাগে আমাদেরও সেই রকম হয়েছিলো, সেই পুরোনো ধাঁচের অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরেও ছিলো একটা ফায়ারপ্লেস, তার আগুনের রঙ আমাদের শরীরের উপর মোমের মতো গলে গলে যাচ্ছিলো। ম্যাট উন্মাদের মতো খুঁড়ে ফেলছিলো আমার শরীর, সে উষ্ণতার কথা ভেবে আজকের বরফঝরা দিনেও আমার কপালে স্বেদবিন্দু জাগে।

শরীরী মিলন মানেই প্রেম এমন ভাববো ততোটা অজ্ঞ আমি ছিলাম না, কিন্তু এই ঘটনার পরে আমাদের বন্ধুত্বের সংজ্ঞাটা বদলে গেলো একেবারে। আগে আমরা একে অন্যের ব্যক্তিগত জীবন আর অতীত নিয়ে বিশেষ কিছুই জানতাম না। এরপর সে সব কথা আর ভদ্রতার খাতিরে দূরে রাখলাম না। ম্যাটকে বললাম আমার বেদনাময় বিচ্ছেদের গল্প। ম্যাট বললো তার অতীতের কথা। সে ছিলো বিষাদের রোগী, রীতিমতো চিকিৎসাধীন। প্রায় তিন চার বছর নিয়মিত ওষুধ খেয়েছে, এক রকম বাড়ির ভেতরেই দিন কাটিয়েছে সে। আমেরিকানদের সর্বগ্রাসী ডিপ্রেশানের কথা শুনেছি অনেক, কিন্তু এতো কাছ থেকে সে গল্প শুনিনি কারোর কাছে। এ গল্পও এক দিনে বলেনি আমায়, আমরা ধীরে ধীরে যতো কাছে এসেছি ততো সে খুলে দিয়েছে তার মন। সতেরোয় সে প্রথম এলএসডি ধরে, মূলত কৌতূহলের বশে, 'পার্টি' করতে। একুশ বছর বয়স হওয়ার আগেই দেড় থেকে দু'শো বার এলএসডির হিট নেওয়া সাঙ্গ হয়। এরপর এলএসডি ছেড়ে দিতে পারলেও এক্সট্যাসি ছাড়ে না তাকে। আতঙ্কের সঙ্গে সে লক্ষ্য করে তার মাথা আর বিশেষ কাজ করছে না, কো-অর্ডিনেশান হারিয়ে গেছে কাজেকর্মে, মাঝেমাঝেই অ্যাংসাইটি অ্যাটাক হচ্ছে। তারপরেও নেশার গ্রাস থেকে মুক্ত হতে পারে না সে, এবং একদিন ওভারডোজ হয়ে যায়, তিন ঘন্টায় তিনখানা পিল নিয়ে। তখন সীজার হয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়ে সে এবং তার বাবা-মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে অনেক দূর এসেছে সে, এখন নিয়মিত প্যাক্সিল খেতে হয়, যদিও আগের মতো বুদ্ধির ধার আর নেই তার। এই সব ঘটনায় তার জীবনের অনেকগুলো বছর হারিয়ে গিয়েছে। এই সময়টায় সে পুরোপুরি অসামাজিক এক জীবনযাপন করেছে, বাবা-মায়ের বাড়ির দোতলায়, মায়ের তত্ত্বাবধানে। এই পিছিয়ে পড়ার খেদ থেকে কিছুটা, বাকিটা একজাতীয় নিউরাল টক্সিসিটি ডিসঅর্ডার-বশত সে ঘোর ডিপ্রেশানে ভুগতে শুরু করে। নেশার জীবনে সে ডেটিং করেছে, কিন্তু একবার বিষাদের কূপে ডুবতে থাকলে সঙ্গ খুঁজে নেওয়ার সামর্থও হারায় মানুষ। গত তিন-চার বছর সে এক রকম গৃহবন্দী করে রেখেছিলো নিজেকে। অবশেষে বিষাদের জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আবার চাকরি শুরু করেছে, সামাজিক হয়ে উঠছে ক্রমে। এমন সময়েই আমার সাথে তার আলাপ।

ম্যাটকে দেখতে অপরূপ সুন্দর, গ্রীক দেবতাদের মতো। আমি সে তুলনায় যথেষ্ট সাধারণ চেহারার। তাই কৌতূহল ছিলো, কীসে আমার প্রতি আকৃষ্ট হলো সে প্রথম দিনে। প্রেম তো প্রথমেই হয় না, দর্শনধারীর ব্যাপারটা তো থাকেই। ম্যাট অবশ্য আমার সৌন্দর্যের প্রশংসা করলো, তারপর বললো, আমার যা ওকে আকৃষ্ট করেছিলো সেই কফিশপের সন্ধ্যায় তা আমার বিষাদমগ্নতা। সে অনেক দিন ধরেই দেখেছিলো আমার বিষণ্ণ চোখদুটি। বিষাদই কি বিষাদকে আকর্ষণ করে? আহত হৃদয় কি আরেকটি করুণ হৃদয় খোঁজে সাহচর্যের আশায়? আমার বিষাদ অবশ্যই ওর থেকে আলাদা, এবং সে বিষাদে আমার হৃদয় ছেয়ে গেলো ওর কথা শুনে। প্রেম না মমতা, ওর জন্য কী অনুভব করেছিলাম জানা নেই। কিন্তু তারপর থেকে অনেক ভাবে নিজেকে শিক্ষিত করে তুলতে শুরু করলাম, এই নেশা ও তার ফলস্বরূপ ঘটে যাওয়া ডিপ্রেশনের বিষয়ে।

এলএসডি ও এক্সট্যাসির কথা জানতাম, কিন্তু নিজের বা পরিচিত কারোর এ বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না, তাই পড়াশোনা করতে শুরু করলাম। জানলাম এক্সট্যাসি বা এমডিএমএ এমন ভাবে প্রোগ্রামড যে সেটা সোজা গিয়ে মস্তিষ্কের সেরাটোনিন কোষকে হত্যা করে, সেই সব কোষ যাদের মানুষের মেজাজমর্জি, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে, এমন কি খাওয়া ঘুমের মতো কাজেও ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া ডোপামিন কোষকেও ছাড়ে না এই ড্রাগ, যার ফলে পার্কিনসন'স রোগের লক্ষণও দেখা যায়। ওষুধ দিয়ে সেরাটোনিন কোষ আবার গজাতে পারে, যদিও তার সম্ভাবনা সীমিত। আমার সাথে দেখা হওয়ার আগে থেকেই ম্যাট ড্রাগ ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণ 'সোবার', কিন্তু এ মারণনেশা ছাড়লেও তার যন্ত্রণা ও বিষ শরীর ছেড়ে যেতে চায় না। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করতাম ওকে আনন্দে রাখার। কিন্তু এ দেশে ব্যক্তি সাতন্ত্র্য নিয়ে মানুষ এতো সদাসতর্ক, সব সময় ভয় হতো কোথাও সীমারেখা অতিক্রম করে ফেললাম কি না তা নিয়ে। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি তো বলিনি, তাই সে সতর্কতা বজায় রাখতেই হতো। কিন্তু আমার প্রাচ্যদেশীয় চরিত্র, মন দিয়ে ফেললে সে কথা বারবার বলে আকাশবাতাস ভরিয়ে দিতে মন চায়, সেই অবস্থায় এমন সন্তর্পন পদচারণা যে কী কঠিন তার হিসেব এই আমেরিকান কী বুঝবে! শারীরিক সম্পর্কে এক্সক্লুসিভ হওয়ার অঙ্গীকার অবধি করিনি আমরা খোলাখুলি, কিন্তু মন দেওয়া হয়ে গেলে শরীরের হিসাব তামাদি হয়ে যায়, কাজেই আমার জগতে তখন আর কারো প্রবেশাধিকার নেই। ম্যাটও কি তাই ভাবে? সে খবর জানতে পারলে জীবন সহজ আর স্বাভাবিক হয়, কিন্তু জানার কোনো উপায় নেই। এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় না, সম্পর্ক সুদৃঢ় হওয়ার আগে এ প্রশ্ন করলে যদি সব খেলা ভেঙে যায় এ আশঙ্কা তো ছিলোই। অতএব ধৈর্য ধরা ছাড়া কিছু করার ছিলো না। তাছাড়া ওর মানসিক স্থৈর্যের উপরেও ভরসা রাখবো সে কথা ভাবা কঠিন ছিলো, সামান্য উদ্বেগে ডিপ্রেশান বেড়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায় থাকতাম সর্বক্ষণ।

এই সময় একদিন আমাকে সে নিয়ে গেলো তার মা-বাবার সাথে আলাপ করাতে। ঠিক মীট দ্য পেরেন্টস গোত্রের আলাপ নয়, খুবই ক্যাজুয়াল ভাবে দেখা হলো। ভদ্রমহিলাকে উদারমনস্ক মনে হলো, ছেলেকে ভালোওবাসেন খুব, নইলে এতো ঝঞ্ঝাট সইতে পারতেন না। যদিও অফিসিয়াল আলাপ নয়, তবু আমার মন তখন আনন্দে উদ্বেল। প্রেমের যে চিহ্ন আমি তখন খুঁজে ফিরি ম্যাটের কথায় আর আচরণে, তার সামান্য স্বীকৃতিও আমার জন্য গভীর মূল্যবান। সে আনন্দেই সে রাতে আমি বাঁধনহারা হয়ে গিয়েছিলাম। ওর আলিঙ্গনে শুয়ে রতিক্লান্ত শরীরে আমি অস্ফূটে বললাম সেই কথাটি, যা সুমেরুশিখরে দাঁড়িয়ে দিগন্তব্যাপী আকাশকে সাক্ষী রেখে বলতে চেয়েছিলাম, "আমি তোমাকে ভালোবাসি!" ম্যাটের চোখেও ভালোবাসার ছায়া ঘন হয়ে এলো, আমাদের ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ার আগে সেও উচ্চারণ করলো সে কথা। গভীর রাতের অন্ধকার আকাশে রামধনু আঁকা হলো সেই উচ্চারণে, আনন্দাশ্রুতে অভিষেক হলো আমার প্রেমের।

এর পরের দিনগুলো আমার কেটেছিলো প্রজাপতির পাখায় ভর করে, নববসন্তের প্রকৃতি আমার সুখেই বোধ হয় সেজে উঠেছিলো। উত্তুরে শীতের এই দেশে মানুষ প্রতীক্ষা করে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের, সেই বসন্তে আমার পৃথিবী সোনাঝলমল হয়ে উঠলো। কাজের সময়ও আমার মন উড়ুউড়ু থাকতো, কখন ওকে দেখবো সেই আশায়। আমরা একসাথে থাকতাম না, ওর বাস মূল শহর থেকে একটু দূরে। তবে অধিকাংশ দিনই থেকে যেতো আমার বাড়িতে। আমিও মন ভরে খাতিরযত্ন করতাম, রন্ধনকলা যা জানি সব কিছুর পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিলো এই দিনগুলোতে। আমার খুশির বন্যাতেই বোধ হয়, ম্যাটও হয়ে উঠেছিলো খুশিয়াল, বাইরে ডিনার খেতে গেলাম কিংবা ছবি দেখতে, হাতে হাত ধরে পথ চলতাম সারাক্ষণ। চিকিৎসার কারণে গৃহবন্দী হয়ে থেকে পুরোনো বন্ধুদের সাথে ওর যোগাযোগ কমে গিয়েছিলো, আমাকে ছাড়া কাছের লোক খুব বেশি ছিলোও না, তাই একের অন্যের জন্য সময়ের অভাব হতো না। দিনের পর দিন ওকে খুশি থাকতে দেখে আমার চিকিৎসা শাস্ত্রের অমোঘ বাণীর উপর সন্দেহ হচ্ছিলো। ড্রাগের অভ্যাসের পরবর্তী ডিপ্রেশান যে কতো ভয়ানক এবং এর থেকে মুক্তি যে কী কঠিন তা নিয়ে অনেক কিছু পড়েছিলাম। দেখাই যাচ্ছিলো সে সব আগাগোড়া ভুল, ভালোবাসা আর মমতা দিয়ে সে আশঙ্কা দূর করে দেওয়া যায় এই বিশ্বাস জেগে উঠেছে ততোদিনে। আমার সুখের কুঞ্জে কখন যে গোপনে ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে তার আভাস পাইনি।

ঝড়ের হাওয়া টের পেলাম একদিন মাঝরাতে ঘুম ভেঙে। ম্যাট বিছানায় নেই, বাতি জ্বালিয়ে দেখি লিভিং রুমও খালি। অবশেষে বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় গিয়ে দেখি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছে সে। পিঠে হাত রাখতেই চমকে উঠলো, তার চোখে বিরক্তির ছায়া দেখলাম মনে হলো যেন। 'ঘরে হাঁসফাঁস লাগছিলো তাই নিচে এলাম খোলা হাওয়ায়', এই যুক্তিটা মেনে নিতে সমস্যাই নেই। কিন্তু তখন বুঝি নি, আমার লড়াই সবে শুরু। এর পর থেকে মাঝে মাঝেই বেপাত্তা হয়ে যেতো সে, কোনো একটা বাহানা শুনতে পেতাম পরে, সন্দেহও কিছু হয়নি। কিন্তু সেই সকালের রোদ্দুরের মতো হাসি ক্রমে নিষ্প্রভ হয়ে আসছিলো, সেটুকু চোখে পড়তো। জানতে চাইলে কিছু বলতো না সে, হাসি দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করতো। কিন্তু সে ক্লিষ্ট হাসিতে দীনতাই ফুটে ওঠে, বেদনা ঢাকা পড়ে না।

পূর্ণিমার পরের রাতগুলোর মতো আমার চাঁদে গ্রহণ লাগলো ধীরে ধীরে। আমি এর সমাধান জানি না, যে অমাবস্যা এগিয়ে আসছে ধীর পায়ে তাকে থামাবো কী অস্ত্রে? মমতার যে প্রকাশে আগে সে খুশি হতো এখন তাতে বিরক্ত হয়ে ওঠে, ভদ্রতাবশত মুখে সবসময় না বললেও আমি বুঝতে পারি, সুর মিলছে না আর। ওর মনের অন্দরমহলে উঁকি মারা গেলে দেখতাম সেখানে কী বিপাক ঘটেছে, কিন্তু সে উপায় তো জানি না। এই ভাবে মাসখানেক কাটার পর এক দুর্যোগের সন্ধ্যায় ওর আসতে দেরি দেখে আমি যখন দুশ্চিন্তা করছি তখন শেষ দৃশ্যের পর্দা উঠলো। কয়েক ঘন্টা দেরিতে পৌঁছলে আমি যখন মোটামুটি একটা দুর্ঘটনা হয়েছে ধরে নিয়েছি, তখন এলো সে। আমার স্বরে সে উদ্বেগ গোপন ছিলো না, শুনে রীতিমতো খেপে গেলো ম্যাট, 'এই শ্বাসরোধ-করা মমতার চাপ আর নিতে পারছি না আমি।' আমি হতবাক, প্রস্তুত ছিলাম না এই অভিযোগের জন্য! একে একে সব অভিযোগ করে গেলো সে, সব কিছুর জন্য যে আমি দায়ী তা নয়, কিন্তু তাতে কী এসে যায়। আমার আগে সে বিশেষ কাউকে ডেট করেনি, এবং সে বাবদও তার মনে অপ্রাপ্তিবোধ রয়েছে, এই চরম সত্যের উত্তরে আমার আর কিছু বলার ছিলো না। ডিপ্রেশানে হারিয়ে যাওয়া বছরের অভাব যে এতোটা গভীর, ভাবিনি আগে। অনেকে উল্টে ওকে দোষ দিতো হয়তো, কিন্তু আমার মাথা তখন শূন্য। ভালোবাসার মানুষকে কী নিয়ে অভিযোগ করা যায়? লড়াই করে যা মেলে তা আমার চোখে ভালোবাসা নয়। আমি নীরবে শুনলাম, ক্ষোভ জানাতে জানাতে ম্যাটও বুঝতে পারছিলো তার ভুলটা, তার চোখের অশ্রুবাষ্প সে কথা বলছিলো, কিন্তু এ পথে পিছনে হাঁটা কঠিন। সে রাতেই ব্রেক-আপ হয়ে গেলো আমাদের। আমি শেষ পর্যন্ত সতর্ক থাকলাম যাতে এমন কিছু না বলি যা ওর হতাশার কারণ হয়। মমতার চাপ যা দিয়েছি তা তো আর ফেরানো যাবে না, অন্তত ওর মানসিক সমস্যাকে আরো না বাড়াই সে চেষ্টা করা যেতে পারে। ওর সামনে কাঁদি নি, কোনো অপরাধবোধের বোঝা ওর কাঁধে দেবো না সে প্রতিজ্ঞায়। প্রেমাষ্পদ থেকে আমরা স্রেফ বন্ধু হয়ে গেলাম।

তারপর তিন বছর কেটে গেছে, বেদনা আর উচ্চকিত নেই, স্মৃতি ফিকে হয়েছে অনেক। জোর করে ডেট করেছি কয়েক জনকে, কিন্তু আমার এই বিষাদপ্রতিমা নিয়ে নতুন প্রেমের গান গাইতে মন সাড়া দেয়নি। তবু ধীর লয়ে কেটে যাচ্ছিলো জীবন, কাল সন্ধেটা আবার নাড়া দিয়ে গেছে মর্মমূলে। ভেবেছিলাম ভুলে গেছি, কিন্তু ভীড়ের মাঝেও দূর থেকে ওর হাসিটুকু দেখে কেঁপে উঠেছি, গতজন্মের স্মৃতি মানুষের রূপ ধরে সামনে এসে দাঁড়ালে যেমনটা হয়। তারপর সামাজিক হাসি, আলাপমুখর হওয়া সবই করেছি, একসাথে কফি খেতেও গিয়েছি। কিন্তু এক চেনা বিষাদে ছেয়ে যাচ্ছিলো আমার চারপাশের বায়ুস্তর, যার সাথে লড়াই আমার নিত্যদিনের। সে বিষাদ সমুদ্রের মতো ছড়িয়ে পড়ছিলো চারপাশে। আমি প্রাণপণে শক্ত করে মুঠো করে রেখেছিলাম আমার হাত, যাতে হঠাৎ করে ছুঁয়ে না ফেলি ওর আঙ্গুলগুলো। তারপর কফি ফুরিয়েছে এক সময়, ম্যাট চলে গেছে ওর গাড়িতে উঠে, আমি বসে ছিলাম অনেকক্ষণ ঠান্ডা হয়ে যাওয়া কফির মগ হাতে নিয়ে।

জানলার বাইরে ঘুঘুটা ডেকে ওঠে তখন, আমাকে ফিরিয়ে আনে বর্তমানে। ঘোলা আকাশ বেয়ে এখনো বরফ পড়ে চলেছে অবিরাম। অশ্রুর চেয়ে হাল্কা সে তুষারে চরাচর ঢেকে যাচ্ছে ক্রমশ। কফি জুড়িয়ে গেছে, আমি উঠে পড়ি জানলার সামনে থেকে। আবার গরম কফি মাগে ঢেলে নিই, তারপর আলমারি খুলে বার করি প্রোজ্যাকের বোতলটা। গরম কফি দিয়ে একটা বড়ি গিলে নিই, অবসাদ দূর হয়ে যাক আপাতত। রোজ রোজ তো আর অফিস কামাই করা যায় না।


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

এ গল্পের সাহিত্যরসে ঘাটতি থাকতে পারে, ঘটনাটা চেনা তাই বলতে ইচ্ছা হলো। সুদীর্ঘ লেখা, দুভাগে দিলে ভালো হতো হয়তো, কিন্তু চা খাওয়ার অভিযোগের ভয়ে এক লপ্তেই দিয়ে দিলাম।

মতামত, ভালো ও মন্দ, জানার আশায় রইলাম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসামান্য, পাঠক'দা! পূর্ণাঙ্গ একটি গল্প। কি বর্ণনায়, কি কাহিনীবিন্যাসে, সবদিক দিয়েই অসাধারণ। এই গল্পের কথা বহুদিন মনে থাকবে আমার।

বেশ কয়েকটা পয়েন্ট তুলে ধরলাম, কিছু মনে হলো (হয়তো) ভুল, আর কিছু নিজের কনফিউশনের জন্যই। এই সুযোগে দূর করা যাবে কনফিউশনগুলো।

  1. পরে স্টিভ বললো ম্যাটকে ও-ই টিকিট জোগাড় করে দিয়েছে।
    যোগাড়

  2. সেক্ষেত্রে পুরোনো দিনের খাতিরে কফি খেতে যেতাম না, আর এমন দুরবস্থা হত না।
    হতো

  3. কয়েক ঘন্টা পার হয়ে যেতো স্বচ্ছন্দে।
    ঘণ্টা

  4. ম্যাটও আসতো নিয়মিত, আমিই আত্মমগ্ন থাকতাম বলে লক্ষ্য করি নি
    করিনি

  5. কিন্তু তার পর আর এগোয় নি
    তারপর, এগোয়নি

  6. তাকে বলে যাওয়া হয় নি
    হয়নি

  7. কিন্তু এতো কাছ থেকে সে গল্প শুনি নি কারোর কাছে
    শুনিনি

  8. এ গল্পও এক দিনে বলে নি আমায়,
    বলেনি

  9. একুশ বছর বয়স হওয়ার আগেই দেড় থেকে দু শো বার এলএসডির হিট নেওয়া সাঙ্গ হয়।
    দুশো/দু'শো

  10. মাঝেমাঝেই অ্যাঙ্গসাইটি অ্যাটাক হচ্ছে।
    অ্যাংসাইটি/অ্যাংজাইটি

  11. তিন ঘন্টায় তিনখানা পিল নিয়ে।
    ঘণ্টায়

  12. ম্যাটকে দেখতে অপরূপ সুন্দর, গ্রীক দেবতাদের মতো।
    ম্যাট অথবা ম্যাটকে দেখতে অপরূপ সুন্দর লাগে/দেখায়

  13. আমি সে তুলনায় আমি যথেষ্ট সাধারণ চেহারার।
    একটা 'আমি' বাদ পড়বে

  14. যার ফলে পার্কিন্সনস রোগের লক্ষণও দেখা যায়।
    পার্কিনসন'স

  15. আমরা একে অপরকে ভালোবাসি তো বলি নি
    বলিনি

  16. শারীরিক সম্পর্কে এক্সক্লুসিভ হওয়ার অঙ্গীকার অবধি করি নি আমরা খোলাখুলি,
    করিনি

  17. ম্যাটের চোখেও ভালোবাসার ছায়া ঘন হয়ে এল,
    এলো

  18. আমার সুখের কুঞ্জে কখন যে গোপনে ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে তার আভাস পাই নি
    পাইনি

  19. কিন্তু তখন বুঝি নি, আমার লড়াই সবে শুরু।
    বুঝিনি

  20. সন্দেহও কিছু হয় নি
    হয়নি

  21. কয়েক ঘন্টা দেরিতে পৌছলে আমি যখন মোটামুটি একটা দুর্ঘটনা হয়েছে ধরে নিয়েছি, তখন এলো সে।
    ঘণ্টা, পৌঁছলে/পৌঁছুলে

  22. ডিপ্রেশানে হারিয়ে যাওয়া বছরের অভাব যে এতোটা গভীর, ভাবি নি আগে
    ভাবিনি

  23. আমার আগে সে বিশেষ কাউকে ডেট করে নি,
    করেনি

  24. অনেকে উল্টে ওকে দোষ দিতো হয়তো, কিন্তু আমার মাথা তখন শূন্য।
    উল্টো

  25. কিন্তু আমার এই বিষাদপ্রতিমা নিয়ে নতুন প্রেমের গান গাইতে মন সাড়া দেয় নি
    দেয়নি

  26. সন্ধে, সন্ধ্যা - দুটোই এসেছে দেখলাম।
আরেকবার বলি, অসাধারণ লেগেছে গল্পটা। আপনার কাছ থেকে আরো বহু গল্প পড়ার প্রত্যাশায় থাকলাম। হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ, প্রহরী। কাল রাতে লিখতে বসে রাত কাবার হয়ে গেলো, ভোর সাড়ে চারটের সময় আর প্রুফ রিডিং করার মতো উৎসাহ অবশিষ্ট ছিলো না। মনে মনে জানতাম কেউ করে দেবে হাসি

অধিকাংশই শুধরে দিলাম, যেগুলোর দু রকমই চলে সেগুলো বাদে (যেমন জোগাড়)। ঘন্টা তৎসম শব্দ নয়, ওতে দন্ত্য ন-ই হয়, যেহেতু এর উদ্ভব ঘটিকা থেকে। দণ্ড ইত্যাদিতে ণ লাগে। পৌঁছলে ইত্যাদিতে আজকাল চন্দ্রবিন্দু অনেকে লাগায় না, তবে লাগিয়ে দিলাম। "ম্যাটকে দেখতে অপরূপ সুন্দর" এই ব্যবহারটা চলে, অন্তত পশ্চিমবঙ্গীয় বাংলায়। একই কথা "অনেকে উল্টে ওকে দোষ দিতো হয়তো"-এর ক্ষেত্রেও।

আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি এতো পরিশ্রমের জন্য।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

প্রহরী'র ধরার মধ্যেও ভুল আছে! চোখ টিপি

৩.এ যা ধরা হয়েছে, ওই বাক্যেই 'স্বচ্ছন্দে' আছে, যেটা ধরা হয়নি। এটা ভুল, এটা হবে 'স্বাচ্ছন্দ্যে'।

৪.এ যা ধরা হয়েছে, ওই বাক্যেই 'লক্ষ্য করিনি' আছে, যেটা ধরা হয়নি। এটাও ভুল। এই 'লক্ষ'-তে আসোলে য-ফলা নাই।

আরো টুকটাক আছে, যা ধরা হয়ইনি। কিন্তু এমন গল্পে আমার এখন ফ্রেশলি ওগুলো ধরতে ইচ্ছে করছে না। দেঁতো হাসি

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

মূলত পাঠক এর ছবি

স্বচ্ছন্দের প্রয়োগ তো ঠিকই আছে মনে হয়। আর এক লাখ অর্থ বাদ দিলে উদ্দেশ্য বা তাকানো, দু জায়গাতেই য-ফলা লাগে জানতাম। আসলে আমিও আপনার মতো ভাবতাম কিন্তু গৌতম আমাকে এটা শুধরে দিয়েছিলেন বাবামা প্রজেক্টের সময়।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

না, 'স্বচ্ছন্দ' শব্দটি বিশেষণ, যার বিশেষ্য 'স্বাচ্ছন্দ্য'। 'এ' লাগিয়ে ক্রিয়া বিশেষণ করতে গেলে বিশেষ্যটির পরেই লাগাতে হবে, বিশেষণের পরে নয়। যেমন- আরামে, কষ্টে, আনন্দে,...
আর, লক্ষ্য শুধু উদ্দেশ্য। লক্ষ করুন, লক্ষ রাখুন- এই কোনো লক্ষেই য-ফলা নেই, শতসহস্র'র একই বানান এটি, কিচ্ছু করার নেই। এক্ষেত্রে আমি বরং আগে য-ফলা জানতাম, কিন্তু অফিসে একবার আনিস ভাই আমার ভুল ধ'রে অভিধান-সহ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। হাসি
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

জাহিদ হোসেন এর ছবি

লেখাটি কয়েক ঘন্টা পরে পড়ে জানাবো কেমন লেগেছে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মূলত পাঠক এর ছবি

অপেক্ষায় থাকবো আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার। খুব ভাল লাগলো পড়তে।

নৈশী।

মূলত পাঠক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, নৈশী।

ঋদ্ধ [অতিথি] এর ছবি

জটিল লেখা... খুব ভালো লাগলো।
পাঁচ তারা দিতে ইচ্ছা করছে।

মূলত পাঠক এর ছবি

আমি মনে মনে আপনার তারা গ্রহন করলাম। অনেক ধন্যবাদ এমন প্রশংসার জন্য।

স্নিগ্ধা এর ছবি

("সমালোচনা চাই, সমালোচনা চাই" বলে তো বিরাট হাহাকার করতেসিলেন - এই ন্যান সমালোচনা দেঁতো হাসি )

গল্পটা খুবই ভালো - বর্ণনার বুনোট, কাহিনীর 'গড়ে ওঠা', চরিত্র(গুলো)র প্রতি পাঠকের সহমর্মিতা আদায় করে নেয়া - এ সবকিছুই আপনি খুবই সাফল্যের সাথে করতে পেরেছেন। আপনার লেখার ভঙ্গি নিয়ে আগেও বেশ কয়েকবার বলেছি, আবারও বলছি - দারুণ!

কিন্তু ...... হাসি

ডিপ্রেশানে হারিয়ে যাওয়া বছরের অভাব যে এতোটা গভীর, ভাবি নি আগে।
এই লাইনটা একটু খাপছাড়া লাগলো। ম্যাটের ওই হাঁপিয়ে ওঠাটা ওর ডিপ্রেশনের সাথে কীভাবে জড়িত সেটা স্পষ্ট নয় - এমনিতেও তো সেটা হতেই পারে।

প্যাক্সিল, প্রোজেইক যে এন্টাইডিপ্রেসেন্ট এটা বলে না দিলে বেশীরভাগেরই বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা, বিশেষ করে যারা আমেরিকার বাইরে থাকেন। আর শেষে যেহেতু প্রোজেইকের বোতলের উপস্থিতি গল্পের জন্য খুব জরুরী, কারো না জানা থাকলে গল্পটা তার কাছে সম্পূর্ণ হবে না হয়তো।

আপনার গল্প বলার ভঙ্গিতে যেটাকে বলে 'মুন্সীয়ানা' প্রচুর - কিন্তু একটু একমাত্রিক। একমাত্রিক বলতে আমি বোঝাতে চাইছি, যে - গল্পের টোনটা ওঠানামা করে না, পুরো ঘটনা/কাহিনী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একইভাবে বর্ণনা করে - যেখানে আপনি মূল চরিত্রের কষ্ট বা এসব কিছু বর্ণনা করেন সেখানেও। আমি এটা বলছি না যে 'উচ্ছ্বাস' দেখাতে হবে, তা কিন্তু একেবারেই নয়। কিন্তু, একটু লাইনব্রেক এর মতো বর্ণনায় একটা ব্রেক থাকলে আরো ভালো হতো - এই আর কি হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

এক্ষুণি দৌড়বো সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্য, এসে আপনার উত্তর দিচ্ছি।

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনার থেকে এমন প্রশংসা পেয়ে খুব গদগদ লাগছে। ধন্যবাদ দেয়ার মতো কাজ না করাই ভালো বোধ হয়, গালাগাল খাবো।

এ গল্পটা নিয়ে আমার খুব বেশি উচ্চাশা ছিলো না, সাধারণত লম্বা গল্প লিখলে আমি আপনাদের কাউকে দিয়ে আগে রিভিউ করিয়ে নিই। এই গল্পটা সরাসরি লিখে পোস্ট করে দিয়েছিলাম, এবং ভয় ছিলো যে এতে মেসেজের বাড়াবাড়ি আছে এমন অভিযোগ শুনবো। কেউ করেন নি যখন তখন হয়তো বাড়াবাড়ি করে ফেলি নি।

খাপছাড়া লাইনের কথাটা ঠিকই বলেছেন, একটু বদল করে দিলাম ওখানটা।
অ্যান্টাই ডিপ্রেসেন্টের ব্যাখ্যা দেবার কথা ভেবেছিলাম কিন্তু মনে হলো ওটা দিয়ে দিলে কেমন মোটাদাগের ব্যাপার হয়ে যাবে। একই কারণে 'ডিপ্রেশান' ট্যাগও লাগাই নি। আশা করছি পাঠক আন্দাজ করতে পারবেন।

একমাত্রিকতাটা চমৎকার পর্যবেক্ষণ। এর দুখানা কারণ ভেবে পাচ্ছি। আমি আবেগের বহিঃপ্রকাশ নিয়ে একটু দ্বিধায় থাকি, সেটা লেখায় ছাপ ফেলে, তাই আবেগের মডুলেশানটা লেখায় কম আসে। তাছাড়া গল্প লেখার ক্ষমতা নিয়ে সংশয় আছে প্রচুর, এ কাজে হাত দিয়েইছি খুব অল্প দিন হলো। তাই ভয়ে ভয়ে থাকি কোথায় তাল কেটে যায়। সে বাবদও ঐ ব্যাপারটা হয়ে থাকতে পারে। কারণ যাই হোক, ভবিষ্যতে এ দিকে নজর দেবো।

সবশেষে বলি, এ গল্পটা ফিকশন নয়, যদিও অনেক কিছু বদলে দিয়েছি গল্পের খাতিরেই। লেখার সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নিরাবেগ ছিলাম না। বিশুদ্ধ ফিকশন হলে এটা হয়তো লিখতামই না, লেখার আগেই সন্দেহ হতো প্লটটা দাঁড়াবে না। কিন্তু এ গল্প অনেকটাই সত্যি, তাই এ সমস্যার কথা জানাতে ইচ্ছে হলো সবাইকে। পড়ে আপনারা খানিকটা আনন্দ পেলেই লেখা সার্থক।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভাল লাগল। স্নিগ্ধা আপুনি মোটামোটি ভাবে আমার মন্তব্যটা করে দিয়েছেন। পাঁচ তারা দেবার সামর্থ্য থাকলে দিতাম!

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মূলত পাঠক এর ছবি

ধন্যবাদ বালিকা। তারায় কী আছে এমন, ভালো লাগাটুকু জেনেই আনন্দ পেয়ে গেলাম অনেক।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

জোস্...

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মূলত পাঠক এর ছবি

প্রকাশক মশায়ের প্রশংসা শুনে ভরসা জাগছে, একদিন হয়তো আমার মতো লেখকের লেখাও কাগজের মুখ দেখবে। হাসি

স্বপ্নহারা এর ছবি

সামর্থ্য থাকলে পাঁচ তারা দিতাম! আমি আগেই বলেছি এই সহজ-সরল বলার ভঙ্গিটা আমার খুব পছন্দ..এত চমৎকার লেখেন কি করে?!!

হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

ভাই স্বপ্নহারা,
অন্যের পোস্টের নিচে আপনার কমেন্টের নিচে একটু ফোড়ন কাটছি ব'লে! (কী করবো বলেন?! আমার পোস্টে তো পাচ্ছি না আপনাকে!) কিছু মনে করবেন না যেন!
কিছু না, জাস্ট একটু খেয়াল করিয়ে দেয়া-
আপনার সিগনেচার-টা কি উপরে একটা কিছু দিয়ে আলাদা করা দরকার না?! সব জায়গায় চোখে লাগছে ব'লেই না ব'লে পারলাম না! দ্যাখেন তো আপনি নিজেও একবার চেয়ে- স্বাক্ষরকে তো পুরোই কমেন্টের অংশ মনে হচ্ছে। পরপর প'ড়ে গিয়ে মারাত্নক ধাক্কা খেয়ে উপরে ফিরে আসতে হয়!
আর শব্দটা 'হশ্বাস' না কি 'হতাশ্বাস'?! একটু দেখবেন?
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ওনার সাইন পড়ে আমিও প্রায়ই বিভ্রান্ত হই হাসি
একটা লাইন দিয়ে আলাদা করা যায়। আলাদা লাইন দেয়া একদম সহজ।
<×hr> বসিয়ে দিন। × চিহ্নটা ছাড়া। এটা দিলে একটা আনুভূমিক লাইন বসবে।

এই দেখুন


এখানে সিগনেচার বসান।

মূলত পাঠক এর ছবি

স্বপ্নহারা, আপনার দেওয়া পাঁচ তারা ধন্যবাদের সহিত গৃহিত হইলো। হাসি

ভালো লেগেছে এইটা জেনেই খুশি হয়ে গেলাম, তারা নিয়ে করতাম কী বলেন?

দময়ন্তী এর ছবি

হুঁ .............
---------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

মূলত পাঠক এর ছবি

এর জবাবে কী বলি, হাঁ? হাসি
আপনার কথামতো সেই লেখা ছবি কিছুই তো হচ্ছে না। ছবি এই ভবঘুরে অবস্থায় আঁকা একটু কঠিন, মালমশলা লাগবে (বইখাতা রঙচঙ স্ক্যানার ইত্যাদি)। আর ওখানকার লেখা পড়ে সন্দেহ হয়, ঐ মেজাজের লেখা লেখার সাধ্য আমার আছে কি না। আপনাকে যে মেইল করবো তা আর হয়ে ওঠে না, একটু লজ্জাই হয় এভাবে ঝুলিয়ে রেখেছি বলে।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

এইবার মূপাসা! আপনাকে বলি!- হাসি
গপ্প সেইরকম হয়েছে মাইরি!
তারা নিয়ে আমার ব্যাকুলতা নেই, নিজের লেখায় তারার হিসেবও করি না একেবারেই।
কিন্তু এমন কিছু লেখা আপনারা কেউ কেউ মাঝে মাঝে লেখেন, যেখানে পাঁচতারা না দিয়ে গেলে পরে রীতিমতো শব্দহারামি করা হয়ে যায় লেখকের সাথে! হাসি
আপনার লেখার স্টাইল তো বরাবরই সহজের মধ্যে মোটামুটি সবচেয়ে বেশি সুন্দরের কাতারে পড়ে। আমার মতো প্যাঁচাপেঁচির মধ্যে আপনি একদমই নাই। অথচ কী ভীষণ ভিতরে ভিতরে বুনটে বুনটে থেকে যায় কতো সুন্দর সুন্দর অন্বয়, উপমা, বর্ণনা, এমনকি তত্ত্বও! অ্যাতো ল্যুসিড! অ্যাতো ফ্লুয়েন্ট! অ্যাতো ভিভিড! ভাষণ ছাড়াই প্যাঁচে প্যাঁচে কী ভীষণ মনস্তত্ত্ব!
(অনেক অভ্যস্ত বড় লেখকের অ্যাট্রিবিউট এগুলো। আপনাকে বলছি মাতাল হয়ে নয়, জাস্ট সত্ হয়েই! আপনার দখল এ বিষয়গুলোর উপরে অ্যাতো ভালো, যে রীতিমতো সহজাত ব'লে সন্দেহ হয়!)
অথচ কী পীড়াহীন! একটু শুধু ঈর্ষা হয় মাঝেমধ্যে। এমনিতে আপনি তো ভালোই। চোখ টিপি
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

মূলত পাঠক এর ছবি

ঈর্ষা চমৎকার জিনিস, বিশেষত অন্যের মধ্যে জাগানো গেলে। এর জন্যে মানুষ কতো কী করে! হাসি

জোকস অ্যাপার্ট, এমন প্রশংসা শুনলে লজ্জায় লালনীল হয়ে যাই। এর উত্তরে ধন্যবাদ দেওয়া যায় না বোধ হয়। এমনিতেই এমন লম্বা গল্প পড়েছেন সেটাই অনেক।

আমি নিজে সুনীল গাঙ্গুলির গদ্যের স্টাইলের ভক্ত, মসৃণ লেখা পড়ে সুখ পাই, চেষ্টাও থাকে মসৃণভাবে লেখার। সচলে লেখালেখির আগে এ নিয়ে ঘোর সন্দেহ ছিলো, এখনও যে সেটা দূর হয়েছে তা নয়, তবু চেষ্টা চালু থাকছে। তবে 'সুন্দর অন্বয়, উপমা, বর্ণনা' কদ্দূর আনতে পারি সন্দেহ থাকে। এ ব্যাপারে সচলে তুলিরেখা অনন্য, কিন্তু কেন কে জানে ওঁর লেখায় আমাদের মন্তব্যের সংখ্যা খুবই কম থাকে। আমি সে চান্স নিই না, খুব চেষ্টা করি যাতে ইন্টার-অ্যাকটিভ রাখা যায়, পাঠকের মতামতের জন্য যতো রকম ফাঁদ পাতা যায় সব পেতে দিই, তারপর আবার খোলাখুলি জানতেও চাই মতামত। একেবারে নির্লজ্জ যাকে বলে, স্নিগ্ধা কি এমনি গাল পাড়েন? হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হ্যাঁ, আপনার ইন্টারঅ্যাকটিভিটি নিয়ে তো আগেও কথা হয়েছে।
সাধু এমন ফাঁদ, যা এমনটিই আদায় করতে পারে!
আর, হ্যাঁ, তুলিরেখা আমারও অনেক পছন্দের লেখক এখানে, কোনো সন্দেহ নাই। বরঞ্চ, বলতে গেলে- সুন্দর থেকে সুন্দরতর মধুমায়াজালে লেখাকে অন্যমার্গে নিয়ে যাওয়ায় সেরা বোধ করি তিনিই এই আয়তনে, কিন্তু, ওই যে, সচরাচর তার লেখাগুলো আপনারগুলোর মতো অতো সহজিয়া-টি থাকে না, সফিস্টিকেশন বেশি চ'লে আসে, তুলনায় অনেক অকার্যকর হ'লেও আমারও যেমনটি চেষ্টা থাকে অবচেতনেই।
লীলেন ভাইয়ের লেখার স্টাইলে আবার এ-দু'টোই থাকে মিলেমিশে।
আর কী?! আর কতো শুনতে চান নিজের প্রশংসা? হ্যাঁ? চোখ টিপি
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

মূলত পাঠক এর ছবি

ফাঁদটা তাহলে ভালোই পেতেছিলাম, আবার এক চোট প্রশংসা জুটে গেলো। অনেক ধন্যবাদ।

আপনার বানান নিয়ে মন্তব্য পড়লাম, বানান শুদ্ধ হলো আরও। তার জন্যও ধন্যবাদ।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হাসি
স্বাগতম!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

মামুন হক এর ছবি

মূলোদা গল্প দুর্দান্ত হয়েছে। পাঁচে পাঁচ হাসি
কিন্তু স্নিগ্ধাপার সাথে আমিও একমত। টোন নিয়ে আরেকটু নাড়াচাড়া করলে আরও ভালো লাগত। তুমি বোধ হয় মন খারাপ নিয়ে লিখতে বসেছিলে।
এইবার একটা কাকতালীয় ঘটনা শোনাই, আজ সকালে উঠেই চেখভের ছোট গল্প সমগ্র থেকে একটা গল্প পড়তে শুরু করি, সেখানেও চমৎকার বরফের বর্ণনা, সেটাও একটা রগরগে প্রেমের গল্প। আর এই অধম নিজেও একটা ছোট গল্প নিয়ে দুদিন যাবত ভেবে যাচ্ছে যেখানে বরফ হয়ে যাওয়া রমনীর কথা আছে।
আর তুমি এর মধ্যেই বরফের রঙ নামের গল্প নামিয়ে দিলে, টেলিপ্যাথিও জান নাকি টুক টাক?

মূলত পাঠক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, মামুন হক।

এ গল্পের বরফটা বাস্তব, টেলিপ্যাথি লাগে নি। তবে মন খারাপের কথাটা ভুল নয়, এমন দুঃখের গল্প মনে পড়লে মন খারাপ হয় বৈ কি। তুষাররমণীর গল্প লিখে ফেলুন।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সচলীয় মোঁপাসা বলবো নাকি ?? দেঁতো হাসি

পাঠুদা, একটা পুর্ণাঙ্গ গল্প হলো। আরেকবার মনে মনে পাঁচতারা নিন।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

মূলত পাঠক এর ছবি

নামের দরকার কী, গল্প পড়ে ভালো লাগলেই আমি খুশি। হাসি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

মূলত পাঠক এর ছবি

থ্যাঙ্ক য়ু, শাহেনশাহ সিমন।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দু'তিন বার চেষ্টার পরে পড়ে শেষ করতে পারলাম। না, আপনার লেখার জন্য নয়, সময় নিয়ে বসতেই পারছিলাম না।

যদিও এটা ঠিক আমার পছন্দের টাইপের প্লট না, লেখার ধরণ, মন্তব্যে-প্রতিমন্তব্যে কিছু ব্যাখ্যা, সব মিলিয়ে ভালোই লাগলো।

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ, যুধিষ্ঠির।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এতক্ষণে সময় পেলাম। গত দুদিন এখানে আসবার সময় পাইনি।
এবারে আপনার এই লেখাটি সম্পর্কে বলি। প্রথমতঃ এই জাতীয় লেখা (যেখানে পুরো ঘটনাটি অতীতে ঘটেছে এবং গোটা লেখাটি শুধু তার বর্ণনা) বেশ কঠিন। কেননা গোটা কাহিনীটিতে ঘটনার ওঠা-নামা নেই, আর সেই সাথে কেবলই ঠাসবুনোন লেখা। তারপরেও আপনার লেখার ভংগী খুবই ভালো বলে পুরোটা শেষ করেছি এবং শেষে এসে ভালও লেগেছে। তবে আমার মনে হয় যদি আপনি এমন করে লিখতেন যে ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটে যাচ্ছে, এবং পাঠকেরাও চরিত্রগুলোর সাথে সাথে চলছে, তাহলে মনে হয় আরো হৃদয়গ্রাহী হোত।
এসবই আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত। আর আমার মত মতোই সবাইকে লিখতে হবে তারও কোন কথা নেই।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনার পর্যবেক্ষণটি খাঁটি। তবে এ গল্পটাকে ঐ ভাবে লেখার কথা ভাবলেও লিখতে পারি নি। ভবিষ্যতে অন্য গল্পে ঐ ফরম্যাট ব্যবহার করবো অবশ্যই। যত্ন করে পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।