যাঁরা বিদেশে থাকেন কোনো দেশিঘন শহরে তাঁরা আমার আজকের আনন্দটা ঠিক বুঝবেন না হয়তো, কারণ তাঁদের কাছে এটা দুর্লভ ঘটনা নয়। কিন্তু যাঁরা ছোটো শহরটহরে থেকেছেন তাঁরা আশা করি বুঝবেন। সবার সাথে আনন্দ ভাগ করে নিলে আনন্দ বাড়ে, সেই উদ্দেশ্যেই লিখছি।
বিদেশে বসে আমি দেশকে ভয়ানক মিস করি এমনটা নয়। কলকাতাতে থাকতে খুব বেশি গ্রুপ থিয়েটার বা বাংলা গানের অনুষ্ঠান দেখতাম না, কাজেই ঐ জিনিসটা এখানে মেলে না বলে দুঃখ করাটাও সাজে না। সিনেমা তো আজকাল দেখাই যায় চেষ্টা করলে, বাংলা হিন্দি সবই। হুমায়ূনী হিমু যেমন ঢাকার পথে টইটই করে ঘুরে বেড়ায় তেমনটা কখনোই করিনি, বরং বিদেশে এসেই ঘোরাঘুরি বেশি হয়, "নতুন জায়গা দেখবো না?" এই কথা ভেবে, কাজেই আমার শহর নিয়ে মাতামাতিও খাঁটি জিনিস হতো না। বাংলা সাহিত্য আজকাল হতাশ করে খুব, এটা বয়সের লক্ষণ না কি সত্যি সত্যিই মান নেমে গেছে জানি না, কিন্তু শারদীয়া না পড়তে পারলে আগে যেমন ছটফট করতাম আজকাল তা আর হয় না। তাছাড়া বই তো পাওয়াও যায় তেমন জরুরী হলে, কাউকে দিয়ে আনানো যায় বা নেটে কিনে নেওয়া যায় (যদিও কিনি নি কখনো এভাবে)। বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজনদের মিস করি ঠিকই (মিস করার বাংলা কী হবে? অভাববোধ করা?), কিন্তু নতুন বন্ধু হয়, সম্পর্ক যখন আরো গাঢ় হয় তখন বন্ধু আর আত্মীয়তে ফারাক বিশেষ থাকে না। ভালোবাসা কি আর রক্তস্রোত বেয়ে চলে?
কাজেই দেখা যাচ্ছে দেশের মোটামুটি সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে দূরে থেকেও, খাঁটি বিশ্বায়ন আর কাকে বলে! কিন্তু একটা জিনিস ভয়ানক ভয়ানক মিস করি, তা হলো বাঙালি খাবার। ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁয় যা পাওয়া যায় তা আমার কোনোকালেই মুখে রোচে না, একে তো মাছ পাওয়া যায় না আদৌ, আর অন্য কিছুও যা জোটে সবই ঐ এক বালতি মসলায় রাঁধা মাংস কি শাকসব্জি। খুব দায়ে না পড়লে ও পথ মাড়াই না। একমাত্র উপায় হলো বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ। তা গত দু বছর যেখানে ছিলাম সেখানে ও বস্তু ছিলো না। নতুন শহরে এসে খুঁজেপেতে একটা বেশ নামী বাংলাদেশি খাদ্যবিপনী পেলাম, একবার ফুড নেটওয়ার্কে এদের উপর অনুষ্ঠানও দেখেছিলাম, কাজেই অনেক আশা নিয়ে গেছিলাম একবার। খেতে গিয়ে এমন আশাহত কমই হয়েছি, ওটাকে বাংলাদেশি বলার কী কারণ থাকতে পারে মাথায় আসে নি। মাছ বলতে সেই ক্যাটফিশ, তাও উত্তর ভারতীয় স্টাইলে (যদি সেরকম কোনো স্টাইল আদৌ থাকে মাছ রাঁধার), এবং বেশ বাজে লাগলো খেয়ে। পালং শাক দেখে ভাবলাম যদি কাছাকাছি হয়, কিন্তু হা হতোস্মি! সব মিলিয়ে বেশ দুঃখজনক ব্যাপার। কাজেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।
তারপর খোঁজ পেলাম খোকনদার রেস্তোরাঁর, ভদ্রলোকের আরেক নাম শফিকভাই। দোকান অ্যাটলান্টার নরক্রসে, তাজ মহল নাম। যে বন্ধু খোঁজ দিয়েছিলো সে হতভাগা কাচকী মাছের পাতুড়ী চাখতে চাখতে ফোন করে বলেছিলো, আমি তখন অন্যত্র, ওহায়োর এক শহরে। শুনে চিড়বিড় করা ছাড়া উপায় কী! আজ পুজোর সকালে এক বাঙালি বন্ধুর সাথে সাঁট করলাম, আনন্দময়ীর পুজো উদযাপন করার আর বেটার কী পদ্ধতি হতে পারে, কে না জানে সুখাদ্যেই প্রাণের আনন্দ, আত্মার আরাম! অতএব পৌছে গেলাম। ভাবী যত্ন করে খাবারের বর্ণনা শোনালেন, আমার তো খারাপ অবস্থা, টেবিল ভিজিয়ে ফেলি আর কী! শেষে যা যা ছিলো মোটামুটি সব পদ নেওয়া হলো (আজ পদ কম ছিলো, ওঁরা একটা পুজোর খাদ্য সরবরাহ করার বরাত পেয়েছেন বলে একটু ব্যস্ত ছিলেন)। লাল শাক (আহা!), ডাল-পটলভাজা-চিংড়ি ভর্তা, আইর মাছের কালিয়া, ইলিশ মাছ ভাজা, শেষে সন্দেশ, এবং মিষ্টি পান। কলকাতার ভজহরি মান্নার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো, তবে ওঁরা আরেকটু বেশি রসিয়ে রাঁধেন। যাঁরা জানেন না তাঁদের বলি, ফেলুদার সিনেমার তোপসে ঐ রেস্তোরাঁর যৌথ মালিকদের একজন, এবং দোকানে এসে দেখাশোনাও করে থাকেন, আমি আদি দোকানে (একডালিয়া) অনেক বার ওঁকে দেখেছি কাউন্টারে।
যাক, পান চিবুতে চিবুতে যখন শরতের আকাশের মেঘগুলোকে প্রায় পুজোর মেঘের মতোই লাগছিলো তখন রওনা হলাম ঠাকুর দেখতে। ছোটোবেলায় এই শব্দটার দ্যোতনাই ছিলো আলাদা, অন্ততঃ যখন স্কুলে পড়তাম তখন। আমরা থাকি ঘোর উত্তরে, এক দিন বন্ধুরা মিলে যেতাম দক্ষিণ কলকাতায়। বাসে চেপে সোজা পদ্মপুকুর, সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে যোধপুর পার্ক অবধি, সে অনেকটা পথ, কিন্তু নবকিশোরের পায়ে তখন অনেক জোরও ছিলো। মাঝে মাঝেই ফুচকাটুচকা খেয়ে রসদ জোগাড় করা, প্রচুর ঝাড়িবাজি করা (সৌন্দর্যাবলোকন, শুদ্ধ ভাষায়), এবং হো হো আড্ডা চলতে চলতেই। ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজোর প্রতি সকলেরই একটা অতিরিক্ত আকর্ষণ ছিলো, সঙ্গত কারণেই। একবার ঢাকুরিয়া কালীবাড়ির পুজো দেখতে গিয়ে একটি সদ্য-প্রস্ফূটিতাকে দেখে সবাই ধরাশায়ী, সে আমাদের কাকে পথ ছাড়ার জন্য 'এক্সকিউস মি' বলেছিলো সেটা তার পর কয়েক বছর অবধি আমাদের গবেষণাবিষয় ছিলো। আজকে ততোটা আশা করি নি, তাই বিকেল নাগাদ পৌছে সিঁদুরখেলা দেখে বেশি কালক্ষয় হলো না। দু জায়গায় ঠাকুর দেখে তারপর মুদিখানা থেকে ভবিষ্যতের জন্য প্রচুর দেশি মাছ ও পাঁঠা কিনে বাড়ি ফিরলাম যখন, তখন মনে হচ্ছিলো পুজো জিনিসটা তেমন মন্দ নয়।
[নামকরণ সাইফুলাক্বর্খান]
মন্তব্য
খিদা লাগায়ে দিলেন।
আমি বড়ো হয়েছি বাঙলাদেশে, পুরানো ঢাকায়। বাড়ির কাছে আরমানীটোলা মাঠ ছিলো, ওখানে মন্ডপ দেখতে গিয়েছি অনেক ছোটোবেলায়।
পুজো শব্দটা শুনলেই কেমন একটা ঘোর লাগানো অনুভুতি হয় আমার। জমানো আনন্দমেলা আর দেশের ঢাউস পূজোবার্ষিকী গুলো এখনো ঢাকায়, আমার ঘরে রাখা। এখন কি অবস্থা আনন্দমেলা আর দেশের, কে জানে।
আমি মুসলমানের ছেলে, কিন্তু ছোটোবেলা থেকে হিন্দু বাঙালী লেখকদের লেখা বেশী পড়ে ফেলায় পুজোকেই বেশী আপন লাগে। শত শত লেখকের শত শত লেখায় পুজোর ছুটির বর্ণনা, বাড়ি যাবার গল্প, শরৎকালের প্রকৃতির কথা মাথার ভেতরে তালগোল পাকিয়ে একটা আলাদা পৃথিবী তৈরী করে নিয়েছে।
আপনার লেখাটা ওই পৃথিবীর আয়তন একটু বাড়ালো; অনেক ধন্যবাদ।
পুজো, ছুটি, উৎসব, এ সব সার্বজনীন অনুভূতি। খিদের মতোই। আমার কখনো ইফতারের সুযোগ হয় নি, কিন্তু সচলে ইফতারি গল্প শুনে জিভ কি আর কম লালায়িত হয়?
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দ পেলাম। ভালো থাকুন।
আটলান্টায় 'বেঙ্গল' নামে এক বাংলাদেশী দোকান আছে - প্রচুর মাছ পাবেন সেখানে। আর দেশী খাবার তো ভার্জিনিয়ায় বন্ধুর বাড়ি থেকে কিছু কম খেয়ে যান নাই, তাও তো দেখি হাউস কমে না!!!
লেখা+ছবি=অতিউত্তম
আপনাকে পূজার শুভেচ্ছা
পুজোর শুভেচ্ছা আপনাকেও জানাই।
প্রশংসার জন্য থাংকু।
আর ঐ যে মাছ ও পাঁঠা কিনলাম, সে ঐ বেঙ্গল থেকেই। আমার বাড়ি থেকে বেশি দূরও নয়, দশ বারো মিনিটের ড্রাইভ। কাজেই বুঝতেই পারছেন, আগামীতে পেটপুজো ভালোই হবে। বাঙালের খাওয়ার হাউস কমুক এই কি চান? কী আছে জীবনে?
দারুণ তো!
কোনদিন দেখবেন গিয়া হাজির, নানাবিধ উৎপাত কইরা ও খাইয়াদাইয়া সাতদিনের কড়ারে সাতটা বই ধার কইরা লইয়া আমু।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সে তো নিশ্চয়ই, চলে আসেন না!
তবে বইয়ের ব্যাপারটা বুঝলাম না, তাও আবার আজকেই লিখেছেন নজরুলের ঐ েলখার পরে?
বইয়ের ব্যাপার বুঝলেন না?
পরের বই আপন করে নিবো আরকি!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাহ! অনেকদিন পর ভারতীয় বাংলা সাহিত্যের স্বাদ পেলাম
কিন্তু খাবারের লিস্টি না দিলেই কি চলছিলো না?
পূজার শুভেচ্ছা রইলো
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ইহা সাহিত্য? আওয়াজ দিলেন নাকি মিয়া?
নাঃ খাবারের লিস্ট না দিলে চলছিলো না। আনন্দ ভাগ করার পিছনে যারে বাংলায় কয় আল্টেরিয়র মোটিভ, সেইটা আর কী ছিলো তাইলে?
আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই।
চমেতকার! আইচ্ছা আগে না আপ্নে কিছু রেসিপি দিতেন?
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
দিছিলাম ত। আর চাই আপনের?
থাংকু
মনে হয়---মন পুড়ে। উদাহরণঃ তাকে খুব মিস করি----তার জন্যি খুব মন পুড়ে!
লেখাটা জবর হয়েছে বস।
পূজোর শুভেচ্ছা রইল।
আজ ঐ বাঙালি খাবার খেতে বসেছিলাম যখন তখন দোকানে কী গান বাজছিলো জানেন? 'মনপুরা' ছবির। আপনার অনুবাদটা শুনে সেকথা মনে পড়ে গেলো, লেখার মধ্যে উল্লেখ করতে ভুলেছিলাম।
ভালো লেগেছে জেনে আনন্দ হলো। আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই।
অনিকেতদার অনুবাদের কথা শুনে তারপর আপনার খাবারের দোকানে "মনপুরা" চলচ্চিত্রের গানের কথা শুনে আমারও একটা জিনিস মনে পড়ে গেলো। সেটা হচ্ছে আমাদের বিডু (অতন্দ্র প্রহরী) ভাইয়ের নতুন নাম "মনবুড়া" [নামটা আমি দেই নাই]
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
প্রহরী কি শোনেন দুষ্ট পোলাপান আপনের মতো প্রবীন লোকেরে নিয়া কেমন মস্করা করে?
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
প্রবীন!
আমার নামে (সত্য)অপপ্রচার করার জন্য রায়হান আবীরের যাবজ্জীবন ফাঁসি চাই
আহা রাগ কইরেন না, পোলাপান মানুষ কী কইতে কী কইসে, মুরুব্বি হইয়া আপনে মাইন্ড খাইবেন?
আবার! খেলব না!
রায়হান, বাঁচতে চাইলে অনেক অনেক কম্বল যোগাড় করো। কারণ এক মাঘে শীত যায় না...
রাগ কইরেন না, কইতে মঞ্চায় যে মুরুব্বিগো রাগ করা শোভা দ্যায় না কিন্তু কইলে বোধ হয় আরো রাগবেন তাই কইলাম না।
যান যান, আর রাগবো না। এইবার মনের দুঃখে বরং একটু হাসি...
এইটা ভালা করসেন। ফোগলা দাঁতে হাসি বড়োই সৌন্দর্য পাই, তা পেরথম শৈশব হউক কি দ্বিতীয়।
মিস করা- 'পেট পুড়ে' ও হইতে পারে। ময়মনসিংহের দিকের লোকেরা কথাটা খুব ব্যবহার করে। আমার পিচ্চি কাজিনটা প্রায়ি বলত 'দাদা, মন্টুর জন্য পেট পুড়ে' । প্রথম প্রথম ভাবতাম ও মনে হয় এসিডিটির কথা বলতাসে! ... FYI মন্টু হইল ওর বেশি কিউট কুত্তা্টার নাম।
শারদ শুভেচ্ছা!
- তন্ময়
আমার গ্রামে বলা হয় 'পরাণ পুড়ে' ।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এইটা নেহাৎ ভুল না, বেশি টেনশন করলে অ্যাসিডিটি হয় ডাক্তারেই বলে। আর স্বজনবিরহে মনে কষ্টদুঃখটেনশন তো হতেই পারে।
শুভেচ্ছা আপনাকেও।
পুজোর শুভেচ্ছা...
লেখাটা সুন্দর হয়েছে...
কেন যেন কোলকাতা আমার খুব ভালো লাগে। অনেকবার গেছি। কিন্তু গত ৪ বছরে একবারও যাইনি। খুব যেতে ইচ্ছে করছে। কোরবানী ঈদে কেউ ঠেকাতে পারবে না আমাকে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা জানালাম।
আমার নতুন নতুন শহরে ঘুরতে খুব ভালো লাগে, পাহাড় জঙ্গলের চেয়ে কম মজা নয়। ঢাকা এখনো অদেখাই আছে, একদিন হবে নিশ্চয়ই।
বাহ! ভাল লাগল আপনার পুজোর গল্প শুনে
এটা শুনে হাসতে হাসতে পরে গেলাম
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সাবধানে পড়বেন, চোট দিল পে লাগাই ভালো, হাতে পায়ে লাগাটা খুব ভালো কথা নয়।
অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
আরে এই খোকনদার কত গল্প শুনেছি অভ্যুদয়-তীর্থঙ্করের কাছে৷ পুণেতে আমিও খুব এইসব খাবারদাবার মিস করতাম৷ তারপর জীবনে এল "রিলায়েন্স ডিলাইট'৷ সেখানে গিয়ে দেখি, ইলিশ, চিতল, ট্যাংরা, পার্শে সবই সাজানো থরে থরে৷ এমনকি হাঁসের ডিম পর্যন্ত৷
ভজহরি মান্নার সল্ট লেক সেক্টর ফাইভের দোকানে ক'মাস আগে এক টিসিএসের ছেলের ডালে আরশোলা পাওয়া গেছিল৷ তারপর তারা দায়িত্ব নিয়ে দুনিয়াকে ছবিসহ মেল করেছে৷ আমরা গত সপ্তাহে গিয়ে ওদের শুধু একবার বলেছি "আপনাদের ডালে নাকি ----' ব্যাস! যা খাতির জুটল না! তবে ভ-ম আর ৬ বালিগঞ্জ প্লেসের খাবার বড় সুস্বাদু৷
আজ তো দশমী৷ "আপোনাকে জানাই সুভো বিজয়ার প্রীতি ও সুভেচ্ছা' (না না বানান ভুল নয় কিন্তু)৷
আর হ্যাঁ চাট্টি কুচোনিমকি আর নারকোল নাড়ুও রেখে গেলাম৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
আরে এ তো দারুণ খবর। আমার পুণে-নিবাসী বন্ধুরা এর কথা জানে কি না খোঁজ নিতে হবে তো!
আমি ভজহরিদের একটি দোকানেই গিয়েছি, ঐ ডোভার লেন/একডালিয়ারটায়। জায়গা খুব ছোটো, পুজোপার্বনে ভীড়ও হয় পাগলের মতো, তবু নোলার টানে চলে যাই।
আপনার ই-নাড়ু আর ই-নিমকী পেলাম,ই-খেলাম। থাংকু। আজকাল সুভো বলছে বুঝি লোকে? তাইলে আপনাকেও সুভেচ্ছা।
পুজোর শুভেচ্ছা। বেগুন ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে উঠে এই বর্ণ্না!!!
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
ক্যান বেগুন ভর্তা খারাপ জিনিস নাকি? আমার বাবা তিন বচ্ছর ঐ খেয়ে ছিলেন উত্তর প্রদেশে (অন্তত তিনি তাই দাবি করেন), কারণ তাঁদের চাকরটা নাকি আর কিছু বানাতে জানতো না আর তিনি নিজে জল গরম করতেও জানেন না। কাজেই ও জিনিসের নিন্দা প্রাণে ধরে সইবো না।
আপনাকেও জানাই পুজোর শুভেচ্ছা।
লেখাটা সুন্দর হয়েছে...পূজোর শুভেচ্ছা রইল।
নৈশী।
ধন্যবাদ নৈশী (সুন্দর নাম), আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
মূলত পাঠক (এইটা ডাহা মিথ্যা কথা!)
'মূলত লেখক'কে অভিনন্দন। এবং
বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
হা হা
আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
এ তো দেখছি বহুলাংশে পেটপূজার গল্প।
ইহা সম্পূর্ণই পেটপূজার গল্প। খাওয়ার হাতছানি না থাকলে গাড়ি নিয়ে বেরোতো এই বান্দা?
- এবার পূজায় যাওয়া হয় নাই। কনুই ডুবিয়ে খাওয়াও হয় নাই। তবে পূজার খাওয়া মিস হয় নাই। আহা, খিচুড়িটা আসলেই সেরকম ছিলো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনে রান্ধছিলেন?
দাদা এর পরের বার পূজায় কলকাতায় যাইতে পারি, থাকলে দেখা হইবো, বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
থাকলে অবশ্যই দেখা করার জোরদার চেষ্টা করা হবে, তবে পুজোয় আমার যাওয়ার সম্ভাবনা সাধারণত কমই থাকে। এই মুলুকে আসলে আওয়াজ দিয়েন।
পূজার শুভেচ্ছা পাঠুদা...
পূজা মানে ছোটবেলা থেকে আমি যা বুঝি- সেটা হইলো বিশাল একটা আনন্দমেলা; সেটায় সুনীল-শির্ষেন্দু-মতি নন্দীদের সব দারুন দারুণ উপন্যাস... আর ঢাকের শব্দ... এই দুইটাই আমার কাছে একটা উৎসব উৎসব আমেজ আনে...
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
আমিও আগে তাই বুঝতাম, এখন আনন্দমেলা আর টানে না, বুড়া হয়ে গেলাম নাকি ওরাই ভালো লেখে না কোনটা ঠিক কে জানে। ঢাকের শব্দ অবশ্য পুরোনো হয় না।
পুজোর শুভেচ্ছা রইল।
আটলান্টায় শুনেছি বেশ ভাল কিছু বাঙালি রেস্তোরা আছে। এদিক দিয়ে আমি পুরা অভাগা। আগে যখন অস্টিনে থাকতাম সেখানেও কিছু ছিল না, এরপর যখন সানফ্রানসিসকো বে এরিয়াতে মুভ করি, তখন দুইটা ছিল, সেদুইটাও বন্ধ হয়ে গেল। এরপর কোন শহরের সর্বনাশ করা যায় ভাবছি।
পুজার কথা মনে হলেই আমার মনে পড়ে ঢাউশ আনন্দমেলা আর দেশে ফেলুদার উপন্যাসের কথা। এবারে আনন্দমেলাটা যে কিভাবে যোগাড় করব !
অস্টিন তো শুনেছি চমৎকার জায়গা, আমার এ দেশি বন্ধুরা ওখানকার মিউজিক সীন নিয়ে সর্বদা উচ্ছ্বসিত থাকে, তাছাড়া টেক্সাসে হলেও ঐ শহরে মানুষ নাকি তুলনামূলক ভাবে উদারমনস্ক। বে এরিয়া তো দেশিদের ঘাঁটি, ওখানে অভাব হচ্ছে দেশি খাবারের? একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন, পাবেন নিশ্চয়ই।
অ্যাটলান্টায় বাঙালি খাবারের দোকানের খোঁজ জানা থাকলে বলেন। পানাহারের নাম নিয়েন না, ঐ টা দেখা হয়ে গেছে বললামই তো।
আনন্দমেলা দেখলাম এখানে বাংলাদেশি গ্রসারিদোকানে পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টারনেটে আনন্দ থেকে মেইলেও আনাতে পারেন।
অস্টিন খুবই সুন্দর শহর আর সেখানকার মানুষজনও চমৎকার। কিন্তু আমার আক্ষেপটা হল বাংলাদেশের খাবারের অভাবজনিত। সাবকন্টিনেন্টাল/দেশি খাবার আসলে সবখানেই আছে আর বেএরিয়াতে তো বেশ উন্নতমানের খাবার জায়গা আছে অনেকগুলো। কিন্তু ঐ যে, বঙ্গদেশের ছোঁয়া বিবর্জিত।
পুজোর শুভেচ্ছা রইল, পাঠক'দা।
লেখাটা ভাল্লাগল। যদিও বেশিরভাগই খাওয়ার কথা শুধু, তবে আমি খাওয়া নিয়ে খুব একটা হিংসা করি না
থাংকু প্রহরীভাই।
প্রবীন বয়সে খাওয়ার লোভ অনেকেরই কমে আসে, শুনেছি মুরুব্বিদের মুখে। ঠিকই বলেছেন তাঁরা, আজ বুঝলাম।
:-(
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
ওহে শয়তান, তোর শিং দুটো মল্লিকা শেরাওয়াতের পোশাকের মতো খসে পড়ুক, এই বদ দোয়া দিলাম
মল্লিকা তো জীবনে পুষাকই কিনল না (খুব গরীব তো), তার পুষাক খইস্যা যায় ক্যাম্নে? বিকিনির আঁচল য্যাম্নে খসে ত্যাম্নে?
খালি গরীব? ওর যে আবার খুব গরমও লাগে! বেচারির দোষ নাই, কী করবে ও, কন?
'বিকিনির আঁচল'!!
খুব খিদে পেয়ে গেল এই লেখাটি পড়ে। পরের পর্ব দিয়ে দিয়েছেন দেখলাম, সেটা পড়ে কী অবস্থা হবে তাই ভাবছি !
খিদেই তো মানডসভ্যতার চালিকাশক্তি।
পরের পর্বে খাওয়ার ব্যাপার নেই, তবে পড়ে কেমন লাগলো জানতো চাইবো অবশ্যই।
পাঁচাইলাম। আপনার এই জাতের লেখাগুলা দারুণ!
আমরা ৫ পাইলে খুশি হই কিন্তু কারুর মুখ বাংলার ৫ হইলে তাহাকে দুঃখী বলে কেন?
পরশুরামের প্রেমচক্রে সংখ্যা দিয়ে মুখ আঁকার টেকনিকটা পড়েছো তো?
আরো ভাল লাগলো কেন জানেন? আমরা কেউ তো কলকাতার না, ফলে জানিও না ঠিকমত পুজা-টুজায় ওখানে কি হয়। আপনার লেখায় সেই স্বাদ পেলাম। বাংলাদেশী-বাঙ্গালী কালচারের ঠেকায় পড়ে মিলমহব্বতও বেশ ভাল লাগলো রে ভাই!
মিলমোহব্বত খাসা জিনিস, আর পুজোর গল্পের তো শেষ নেই। ভালো লেগেছে যখন আবার শোনানো যাবে।
খেতে খেতে ভাবছিলাম পূজো কই? যাক, শেষে এসে ঠাকুরের মাস্তুল দেখা গ্যালো তবে। যা-ই বলেন, ইন্ডিপেন্ডেন্টলি হেডিং ভালো হয় নাই। আবার উপরে গিয়ে পূজোর গল্প'র পরে ১-টা দেখে সেই শোক ভোলার চেষ্টায় আছি।
বেশ।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
হেডিংটা সত্যিই বড়ো জেনেরিক হয়ে গেছে, তবে লেখাটাও খুব সোজাসাপটা তাই আর কিছু বিশেষ ভাবি নি। 'ঠাকুরের মাস্তুল' কথাটা মজার লাগলো।
আপনে একটা নাম সাজেস্টান, তাইলে পর্ব ৩ সেই নামে লেখা যাবে।
তাইলে ২ নম্বরটা আগে পইড়া লই।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন