আমরা তিন বোন এক ভাই। তবে আমাদের সবার বড় এক বোন নাকি জন্মের মাত্র এক মাসের মাথায় মারা গিয়েছিলেন। সে হিসেবে চার বোন এক ভাই। অবশ্য সেকথা আলাদা। আমার বেঁচে থাকা তিন বোন হচ্ছেন সোহেলী আপা, শিউলী আপা, আর পারুল আপা। সবার শেষে আমি, আমাদের বংশের বাত্তি। কিন্তু বংশের বাত্তি কিভাবে হলাম, আপারা কেন হতে পারলো না, সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি যে বাত্তি, বংশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, সেটা আমি জেনেছি আমার দাদীজানের কাছ থেকে। উনিতো প্রায়ই বলেন, ‘এক পাল মাইয়া কি কামে লাগে? বাঘের এক ব্যাটাই একশ, বংশের বাত্তি হইয়া জ্বলে’।
কিন্তু আমার এই বাত্তি হওয়ার ব্যাপারটা একমাত্র দাদী ছাড়া আর কারো কাছে কোন গুরুত্বই পায় না। এতোবড় গুরুত্বপূর্ন মানুষ হবার পরেও মাছের মুড়োটা, মুরগীর বড় টুকরাটা নিয়মিত আমার প্লেটে আসার কথা থাকলেও প্রায়ই সেটা আসে না। সেটা সবসময়ই যায় আব্বা নয়তো চাচার প্লেটে। আর তারা দুজনই সেটা ভাগ করে তিন আপার প্লেটে দিয়ে দেন। আমার দিকে তারা ফিরেও তাকাননা। অন্তত এ ব্যাপারে আব্বা আর চাচার এককথা – ‘আমার মেয়েগুলা/ভাতিজিগুলা বিয়ের পর কই কই যাইবো, কি খাইবো কে জানে? বাপের বাড়িতেই সব শখ পূরন হউক।’ চাচাতো আবার এককাঠি সরেস। ভাগের শেষে সবচেয়ে ছোট টুকরাটা নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলবেন, ‘তুই নিবি?’ আমাকে তখন লজ্জায় পড়েই মাথা নাড়তে হয়। চাচা তখন সেই টুকরাটা দিয়ে দেন বড়বু সোহেলী আপাকে। চাচারতো কোন ছেলে মেয়ে নাই, তাই আমরাই সব। আব্বার ভাগও বেশিরভাগ সময়ই সমান হয় না। আমি খেয়াল করেছি, বড়বু’রটা একটু বড় হয়।
বড়বু’র প্রতি এই আলাদা টানের একটা কারন আছে। আমার এই বোনটা একটু বোকা টাইপ। আসলে একটু না, বেশ বোকা। যে যা বলে তাই বিশ্বাস করে, নিজে বকা খেলে মুচকি মুচকি হাসে, আর আমরা কেউ খেলে মন খারাপ করে বসে থাকে, বিশেষ করে আমি। ও আরেকটা ব্যাপার, বড়বু পড়াশোনায় এক্কেবারে গাধী। ঠিকমতো এগুলে এতোদিনে ক্লাস নাইনে থাকার কথা, অথচ আটকে আছে ক্লাস সিক্সে আমার সাথে। তবে এতো কিছুর পরেও বড়বু বাড়ির সবার সবচে প্রিয়। আমাদের কাজের বুড়ি সখিনার মা থেকে শুরু করে একেবারে আব্বা পর্যন্ত। একমাত্র দাদীজান বড়বু’কে খুব একটা পছন্দ করেননা। বিরক্তি নিয়ে বলেন, ‘এক্কেতো মাইয়া, তারউপরে বেকুব। এই মাইয়া আমগো বংশে ক্যামনে আইলো?’ কিন্তু বড়বু যেভাবে আব্বা বাইরে থেকে আসার পর গলা জড়িয়ে ধরে, মাথার চুল টেনে দেয়, আমি অবাক হই। বড়বু এতো সাহস পায় কই?
কারন আমাদের আব্বা কোন যেনতেন লোক না। শুধু বাড়ির না, পুরো গ্রামের লোকজন তাঁকে ভয় পায়। আব্বা রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে গ্রামের একেবারে বুড়োরা পর্যন্ত সালাম দেয়। এমনকি আমাদের যে হেডস্যার, যার ধমকে সেদিন ক্লাস থ্রি’র পরিমল প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছিলো, তিনি পর্যন্ত আব্বার সামনে কেমন যেন ন্যাতিয়ে যান। এইতো সেদিন আব্বা হেডস্যারকে ডেকে বললেন বড়বু’কে যেন আর ফেল না করানো হয়, যেভাবেই হোক আমার সাথে সাথে মেট্রিক পর্যন্ত বড়বু’র যেতে হবে, হেডস্যার শুধু চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললেন, ‘জ্বি তালুকদার সাহেব, আপনি কোন চিন্তা করবেননা’।
গ্রামের বেশিরভাগ লোকই কিন্তু আব্বাকে বড় সাহেব বলে ডাকে। বিশেষ করে উত্তরপাড়ার লোকেরা। আর চাচাকে ছোট সাহেব। দাদীজান বলেছেন উত্তরপাড়ার সবাই নাকি একসময় আমাদের রাইয়ত ছিল। এখনো অনেকে আমাদের বাড়ীতে কামলা খাটে। আরো বলেছেন, এক সময় নাকি আমাকেও সবাই সাহেব বলে ডাকবে। কিছুদিন পরই তিনি সব কামলাকে বলে দিবেন আমাকে যেন তারা কুটি সাহেব বলে ডাকে। এরপর থেকে আর ভাইজান, চাচাজি এসব ডাক চলবে না। কিন্তু আমার কুটিসাহেব ডাক পছন্দ না। আমার পছন্দ বড় সাহেব। দাদীজান বলেছেন আমি বড় হলে আমাকে বড় সাহেব বলে ডাকা হবে। ছোট বেলায় আমাদের বাড়ির বড় ছেলেকে কুটি সাহেব বলাটাই নিয়ম।
দাদীজান যেহেতু এখনো কাউকে কিছু বলেননি, তাই সবাই আমাকে ভাইজান, চাচাজি এসব বলেই ডাকে। ক্লাসের ছেলেমেয়েরাতো নাম ধরেই ডাকে, এমনকি উত্তরপাড়ার ছেলেগুলাও। আমরাতো এক ক্লাসেরই ছাত্র, আমরা তুই তুকারিও করি। শুধু বড়বু’কে সকলে সোহেলী আপা বলে। বলবেই বা না কেন? উনিতো ক্লাসে সবার বড়। আমি আর আমার বড় বোন একই ক্লাসে পড়ি- ব্যাপারটা নিয়ে প্রথমে আমার একটু একটু লজ্জা লাগলেও এখন সেটা কেটে গেছে। বড়বু তো ক্লাসে কোন কথাই বলে না। বেঞ্চের এক কোনায় চুপচাপ বসে থাকে। স্যাররা আপারা পর্যন্ত উনাকে কিছু জিজ্ঞেস করেননা। ছুটির ঘন্টা বাজার সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠে, ঠিক যেন বিড়ালের ল্যাজে কেউ পাড়া দিয়েছে। আর পুরা স্কুলে বড়বু’র কোন সই নেই। স্কুলে একটু বড় ক্লাসে সব মেয়েরই একজন করে সই থাকে, যে হয় সারা জীবনের জন্য প্রানের বন্ধু। ক্লাসে মেয়েরা নিজের সইয়ের পাশে বসে, হাফ টাইমে একসাথে খেলে বা গল্প করে, কারো সাথে ঝগড়া লাগলে সইয়ের পক্ষ নিয়ে সই কোমর পেঁচিয়ে ঝগড়া করে। অবশ্য সই একটা মেয়েলী ব্যাপার।এটা শুধু মেয়েদের থাকে, ছেলেদের থাকে না।
বছরের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমাদের ক্লাসে ভর্তি হল সালেহা। সে আমাদের গ্রামের মেয়ে হলেও এতোদিন থাকতো তার নানাবাড়িতে, সেখানেই পড়তো। এখন আবার চলে এসেছে নিজের বাপের বাড়ি। ভর্তি হয়েছে আমাদের স্কুলে। সালেহার দাদা ইসমাঈল পুথী একসময় আমাদের বাড়িতেই কাজ করতেন। আমার দাদাজানের হুকো বরদার ছিলেন। সে অবশ্য অনেক আগের কথা। আমার জন্মেরও আগের। দাদাজানের কাছের লোক হিসাবে ইসমাঈল পুথীর তখন আলাদা ক্ষমতা ছিল। বলতে গেলে তিনি ছিলেন সকল কাজের লোকের সর্দার। এখনও উত্তরপাড়ায় তার একটা প্রভাব আছে। পাড়ার ছোটখাট বিচার তিনিই করেন। দাদাজানের ইন্তেকালের পর অবশ্য তিনি আর কোন নির্দিষ্ট কাজ করতেন না। এমনিতে আসতেন, ক্ষেতের কামলাদের তদারকি করতেন। আর আব্বাও তো হুক্কা খান না, সিগারেট খান। সিগারেট জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য কাউকে দরকার হয়না।
ইসমাঈল পুথী এখন বেশ বুড়ো হয়ে গেছেন। প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসেন। কোন কাজ করতে নয়, এমনি। বারান্দায় বসে আব্বা নয়তো চাচার সাথে গল্প করেন। পুথীর ছেলে, উমর আলী, মানে সালেহার বাবা, একসময় আমাদের বাড়ীতে কাজ করেছেন। কিন্তু সালেহার জন্মের কিছুদিন পরেই উমর আলী এক মাসের অসুখে মারা যান। আব্বা নাকি গঞ্জ থেকে ডাক্তার আনিয়ে দেখিয়েছিলেন, ওষুধের টাকাও দিয়েছিলেন, কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
ইসমাঈল পুথীর সাথে আমার খুব খাতির। শুধু আমার না, আমার বোনদেরও। আমাকে দেখলেই ‘কেমুন আছ ভাইডু’ বলে ফোকলা দাঁতে হাসেন। ছোটবেলায়তো আমাকে কাঁধে করে সারা গ্রাম ঘুরতেন। আমার সাতারটাও তার কাছে শেখা।
সে যাই হোক, ইসমাঈল পুথীর নাতনী সালেহার সাথে কিভাবে যেন বড়বু’র খুব ভাব হয়ে যায়। দুজন একসাথে বসে, ক্লাসের মধ্যেও গুটুর গুটুর গল্প করে, হাফ টাইমে বারান্দার কোনায় বসে সেই একই কাজ। কি এতো কথা বলে কে জানে! সালেহা বড়বু’র জন্য প্রায়ই এটাসেটা নিয়ে আসে। গাছের কলা, বরই এসব। বড়বু’ও সালেহার জন্য নেয়। এমনই ভাব। একদিন সালেহা বড়বু’কে তার সই হবার প্রস্তাব দেয়। এই প্রথম বড়বু’কে কেউ সই হবার প্রস্তাব দিল। সেতো খুশিতে আটখানা। কিন্তু মুখে হ্যা/না কিছু বলে না। শুধু বলে মাকে জিজ্ঞেস করে জানাবে। অবশ্য এটাই নিয়ম। কারন কাউকে জন্মের বন্ধু বানাতে হলেতো বাড়ী থেকে অনুমতি নিতেই হয়।
পরের দুদিন – শুক্র শনিবার, স্কুল বন্ধ। বড়বু’র সাথে সালেহার দেখা হয় না, বড়বু’ও কথাটা মাকে বলেনা। রোববার সকালে স্কুলে যাবার আগে যখন আমরা নাস্তা করছিলাম, তখন কথাটা পাড়ে।
-‘জানো মা, সালেহায় না আমারে…’, মূল কথা আসার আগেই বড়বু মিইয়ে যায়।
-‘সালেহায় তোরে কি?’
বড়বু একটু সময় নেয়।
-‘সালেহায় না আমারে তার সই হইতে কইছে’, এই সাধারন কথাতেই বড়বু’র সংকোচের শেষ নেই।
-‘তাই নাকি, বেশ বেশ।’ মা’র বদলে জবাব দেন আব্বা।‘তা কোন সালেহা যেন? কার মাইয়া? কোণ গেরাম?’
-‘আরে আমাগো ইসমাঈল পুথীর নাতনী। ঐ যে তার নানার বাড়ীত চইলা গেসিলো’, বড়বু’র হয়ে শিউলি আপাই জবাব দেন।
-‘ও আইচ্ছা’, আব্বা আর কিছু বলেননা। একটু গম্ভীর হয়ে যান।
-‘কি কইলি? ইসমাঈলের মাইয়া সইয়ালা পাতবো আমার নাতনীর লগে?’ খ্যাকখ্যাক করে উঠেন দাদীজান।
-‘ক্যান, কি হইছে?’
-‘চুপ কর, কতা কইছ না। একেতো বেকুব, তারউপ্রে সইয়ালা পাতবো বান্দিবেটির লগে। শুন, এইসব সই-ফই পাতন যাইবো না। আমি এক্কেরে কইয়া দিলাম।’
-‘আমি সালেহারে কি কমু?’ মিনমিনিয়ে জানতে চান বড়বু।
-‘কি আবার কবি? মুখের উপ্রে কইবি তোর চৌদ্দগুষ্ঠী আমরার কামলা খাটসে। তুই বান্দি আমার সই হইতে চাস কোন সাহসে? কি, কইতে পারবিনা?’
বড়বু মাথা ঝাকায়।
-‘মনে থাকবো? হেই বেকুব।’
-‘জ্বি, মনে থাকবো। সালেহায় যদি কিছু কয়?’
-‘হে আবার কি কইবো? যদি কিছু কয়, যদি কিছু কয়…’ দাদীজান জবাব হাতড়ান। হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘ছেমড়ি যদি কিছু কয়, তুই পোলা কইষা একটা থাপ্পড় দিবি বান্দির গালে। পারবি না?’
আমি সজোরে মাথা ঝাকাই।
-‘বাদদেন আম্মা, বাচ্চা মানুষ’, মা এবার কথা বলেন।
-‘তুমি চুপ কর। ছোটলোকরে বেশি লাই দিতে নাই।’ দাদীজান মুখঝামটা মারেন।
মা আর কোন কথা বলেননা। মারামারি করার পারিবারিক সম্মতি পেয়ে আমি বেশ খুশি হই।
স্কুলে পৌছুতে পৌছুতে বেশ দেরি হয়ে যায়। প্রথম ক্লাসটা শুরু হয়ে গেছে। সালেহার পাশে জায়গা থাকলেও বড়বু অন্য একটা বেঞ্চে বসে। সালেহা বার বার আড়চোখে তাকায়, ইশারা করে, কিন্তু বড়বু মাথা নিচু করে থাকে। হাফটাইম হতেই সালেহা দৌড়ে আসে বড়বু’র কাছে।
-‘কি হইলো, তুমি কি আমার উপ্রে গোসা করছো?’
বড়বু মাথা নাড়ে।
-‘তাইলে যে কিছু কওনা?’
-‘তো…তো…তোর’, বড়বু তোতলায়। আর আমি তক্কে তক্কে থাকি সুযোগের অপেক্ষায়।
-‘কি হইলো?’
-‘তোর চৌদ্দগুষ্ঠী আমরার কামলা খাটসে। তুই বান্দি…’,দাদীজানের শিখিয়ে দেয়া জবাবটা শেষ করতে পারেনা বড়বু। কিন্তু সালেহা যা বোঝার তা বুঝে নেয়। তার চোখে পানি আসে।
-‘তুমি আমারে বান্দি কইলা?’
আমি আর অপেক্ষা করিনা। ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেই সালেহার গালে। গলার রগ ফুলিয়ে বলি, ‘চুপ কর হারামজাদী। তোরে বান্দি কইবো নাতো কি রাজকইন্যা কইবো?’
পরেরদিন সালেহা স্কুলে আসেনা। এর পরের দিনও না। স্কুল থেকে আসার পথে হঠাৎ দেখি বড় রাস্তা ধরে ইসমাঈল পুথী হেটে আসছেন। বেশ কিছুদিন ধরে দেখা নাই। অসুখে পড়েছিলেন। আমি দৌড়ে তার কাছে যাই। জিজ্ঞেস করি, ‘কেমন আছ পুথী?’
পুথী একটু পিছিয়ে যান। মাথায় হাত ঠেকিয়ে বলেন, ‘স্লামালেকুম কুটিহুজুর, আপনে কেমুন আছেন?’
মন্তব্য
চমতকার
অসাধারণ গল্প রাজু।
সিম্পলি অসাধারণ।
এতো সুন্দর একটা গল্প লিখলি কী করে?
ঘুম ভেঙ্গেই কেমন ঝিম ঝিম লাগছে লেখাটা পড়ে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আগুন।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
খাইছে, পানি ঢাল।
কি অসাধারণ একটা গল্প যে হয়েছে লেখক নিজেই হয়তো সেটা বুঝতে পারছেনা।
একটি জীবন্ত গল্প। সমস্ত চরিত্রগুলিকে চোখের সামনে দেখতে পেয়েছি যেন।
আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ গগ্প
অসাধারণ লেখা !!
মেঘের পরে
মেঘের কথকতা
অসাধারণ!
গুরুত্বপূর্ণ মানুষের লেখা গুরুত্বের সাথে পড়িয়া আনন্দ লইলাম।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দারুণ একটা গল্প পড়লাম। কাহিনী বিন্যাসের সাধারণত্ব লেখনী আর চরিত্রগুলোর কথোপকথনের বৈশিষ্ট্যে অনন্য হয়ে উঠেছে। গল্পটা আসলেই অনেকদিন মনে থাকবে!
অসাধারণ!
অসাধারণ একটা গল্প! একটুও না থেমে পড়ে গেলাম। কাহিনী, রচনাশৈলী, শব্দের ব্যবহার চমৎকার! যেমন এই লাইনটার কথাই ধরি,
আপনার কাছ থেকে আরো গল্প পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আপনাকে ধন্যবাদ।
সব জেবতিকরাই দেখি বস! গল্প দুর্দান্ত।
দারুন লাগল
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
শব্দশিল্পীর শব্দ-ভান্ডারে কিছু নেই গল্পটিকে বিশেষিত করবার জন্যে...।
অনন্য...!!!
নিজের দেখা অনেক কিছুর সাথে মিলে গেলো।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
দুর্দান্ত একটা গল্প পড়লাম।
আড়ালে ক্যান? সামনে আয়
চমত্কার গল্প।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
মুগ্ধ হয়ে গেলাম!!!!! আর, নামটাও এতো যথাযথ ......
নামকরনের কৃতিত্বটা আমার নয়। বন্ধু গৌরীশের। সে এক বিরা...ট ইতিহাস
দারুণ গদ্য! অসাধারণ গল্প!
আপনার গল্পে মন্তব্য করার জন্যই লগ-ইন করলাম।
এটা বলার জন্য যে, লেখালেখি তো অনেকেই করেন, কেউ সময় কাটাতে লেখেন, কেউ সিরিয়াসলি লেখেন। লেখালেখির একটা নিজস্ব আনন্দ আছে, এই আনন্দে কিছুদিন লেখালেখি করার পর আমরা অন্যদিকে হেলে যাই, জীবনের অন্যান্য দিকে মনোযোগী হয়ে উঠি। লেগে থাকি না।
অনেক মেধাবি লেখক স্রেফ লেখক হতে চান না বলেই ঝরে যান, জীবনের অন্য কোনো জায়গার তার মেধা বিনিয়োগ করে।
এত কথা বলার কারণ একটাই, আমি চাই আপনি লেগে থাকুন। লিখতে থাকুন।
প্রচুর পরিমাণ বাংলা বই পড়লে লেখার শক্তি বাড়ে, গদ্যের একটা বিশেষ প্রয়োগভঙ্গি মাথার ভেতরে তৈরি হয়ে যায়। আমি লিখি কম, কিন্তু বিভিন্ন ধাঁচে লিখতে পারি বলে আমার মনের ভেতরে ছোট্ট এক টুকরো অহঙ্কার আছে। আপনার লেখা পড়ে আমার এতদিনের পরিশীলিত, যত্নে গড়ে তোলা গদ্যের সাম্রাজ্য নড়ে উঠেছে।
আমি ভেবেছিলাম, আপনি সত্যি সত্যি আপনার জীবনের কাহিনী লিখছেন। কোনো বাঁকাচোরা লাইন নেই, কাব্যিক উপমা নেই। অনেকটা রহস্য পত্রিকার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা/ভালো লাগার অভিজ্ঞতা টাইপ।
শেষ ধাক্কাটা খাওয়ার পরই চমকে গেলাম। পরে দেখি যে, আপনি জানিয়েছেন এটি গল্প।
অথচ আমি ধরেই নিয়েছিলাম, এটি আপনার জীবনের একটি সত্যিকার অভিজ্ঞতা।
আমার কাছে এটাই লেখকের সবচে বড় শক্তি মনে হয়।
গদ্যের জাদু, উপমায় এসব আসলে কিছুই না। পাঠক যেই মুহূর্তে মনে করতে শুরু করে, এটি আসলে জীবনের বাস্তব কাহিনী এবং কাহিনীটার চুম্বকটানে পড়ে যায়, তখনই সেটা সার্থক লেখা।
আমার পড়া একটি সেরা গল্প আপনারটি।
অভিনন্দন।
শেষ করি তিতা কথা দিয়ে। দারুণ একটি গল্প লিখে, সবাইকে মাতিয়ে দিয়ে, বিস্ময় কেড়ে নিয়ে এরপর আগামি তিন মাস বগল না বাজিয়ে এরকম আরো কিছু ভালো গল্প লিখে ফেলুন। নিজের মেধাটা যথার্থভাবে খরচ করুন। এরকম আরো সাত-আটটি গল্প তৈরি করে ফেলতে পারলে সামনের বইমেলায় আপনার বই আমিই প্রযোজনা করব... ঘটনা কি বোঝা গেছে?
---------------------------------------------
আমাকে ছুঁয়ো না শিশু... এই ফুল-পাখি-গান সবই মিথ্যা!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
শেষ করতে চাইলেন তিতা কথা দিয়ে। কই? এই অংশ তো আরো মিঠা! বিশেষকরে,
টুকরাখানতো জব্বর মিঠা
দারুণ একখানা গল্প! এ রকম গল্প আরো আশা করছি।
মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
Lina Fardows
বরাবরের মত এবারো আমি মুগ্ধ পাঠক। আরও চাই।
Lina Fardows
রাজু
মৃদুল আহমেদ এর কথাগুলো মনে রাখিস।
এরকম চমতকার মন্তব্য সবসময় পড়া হয়না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
বিশেষ করে এই অংশটুকু আরো অনেকেরই মনে রাখা দরকার , তাই না রানা ?
ওহো , তোর জন্য অবশ্য প্রযোজ্য নয় , তুই তো গতবছর এপ্রিলে একটা লেখা লিখেইছিলি । মাঝখানে মাত্র ১১ মাস গেছে ।
আরিফ ভাইয়া আমাকে বকা দিলে?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
বালাই ষাট , বালাই নব্বুই ।
রানা, বকা খাইয়া এইবার একখান কোবতে লেখ
দারুণ গল্প, টানটান এবং নির্মেদ।
আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??
হায়, সব ভালো গল্প লেখার ক্ষমতা যদি জেবতিকরাই নিয়ে যায়, আমাদের কী হবে ?
দুর্ধষ লেখা, কেন যেন চোখ এড়িয়ে গিয়েছিলো... লেখার জন্য পাঁচতারাও কম হচ্ছে...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
যারা আমার লিখাটি পড়েছেন এবং মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কী করে মিস করেছিলাম অসাধারণ এই লেখাটা? ধন্যবাদ নজমুল আলবাবকে লিংকটা দেবার জন্য।
আমি আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম।
.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...
.......................................................................................
Simply joking around...
আমারও একই কথা, নাজমুল লিঙ্ক না দিলে এই অসাধারণ গল্পটা চোখের আড়ালেই থাকতো।
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.
...........................
Every Picture Tells a Story
কি অনন্য কি অসাধারণ সব লেখা যে সময়মত পড়া হয়নি সচলে! অপূর্ব। এই গল্পের পর যিনি ন'মাস কিছু লেখেন না, তিনি আমার মতে কঠিন অপরাধী।
ভয়াবহ সুন্দর!!!
"জেবতিক" শব্দটার মধ্যেই কিছু একটা আছে মনে হয়...
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দুর্ধর্ষ!
নতুন মন্তব্য করুন